অবতার
পৃথিবীতে অবতরণ বা আবির্ভাব উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
হিন্দুধর্মে অবতার (সংস্কৃত: अवतार; অব+তর+ষ্ণ = অবতরণ)[১][২] বলতে সৃষ্টিকর্তা বা স্বয়ং ঈশ্বর দেহধারণ পূর্বক পৃথিবীতে অবতীর্ণ করাকে বুঝায়। হিন্দু অনুসারীগণ বিশ্বাস করেন, সৃষ্টিকর্তা স্বয়ং অবতীর্ণ হয়ে দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালন করে পৃথিবীতে ধর্মকে রক্ষা করেন।

বৈদিক সাহিত্যে অবতার শব্দটি পাওয়া যায় না।[৩] তবে বেদ-পরবর্তী সাহিত্যে এটি ক্রিয়াপদ আকারে উল্লিখিত হয়েছে। খ্রিস্টীয় ৬ষ্ঠ শতাব্দীর পরে রচিত পৌরাণিক সাহিত্যেই এই শব্দটিকে স্বতন্ত্রভাবে বিশেষ্য পদের আকারে ব্যবহার করা হয়েছে।[৪] ঋগ্বেদের বর্ণনা অনুসারে, ইন্দ্র একটি রহস্যময় শক্তির বলে ইচ্ছামতো যে কোনও রূপ ধারণ করতে পারেন।[৫][৬] ভগবদ্গীতা গ্রন্থে অবতার মতবাদটি বিস্তারিত ও সুস্পষ্ট ভাবে ব্যাখ্যা হলেও সেখানে অবতার শব্দটির পরিবর্তে অন্যান্য পারিভাষিক শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে।[৪][৭]
হিন্দু দেবতা বিষ্ণুর সঙ্গেই অবতারবাদের বিশেষ সম্পর্ক। যদিও এই মতবাদ কিছু ক্ষেত্রে অন্য কয়েকজন দেবদেবীদের ক্ষেত্রেও প্রযুক্ত হয়।[৮] হিন্দু ধর্মগ্রন্থগুলিতে বিষ্ণুর অবতারগুলির ভিন্ন ভিন্ন তালিকা পাওয়া যায়। গরুড় পুরাণ গ্রন্থে বিষ্ণুর দশাবতার ও ভাগবত পুরাণ গ্রন্থে বিষ্ণুর দশটি অবতারের বর্ণনা পাওয়া যায়। যদিও শেষোক্ত পুরাণটিতে এও বলা হয়েছে বিষ্ণুর অবতারের সংখ্যা অগণিত।[৯] বৈষ্ণব ধর্মতত্ত্বে অবতারবাদ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি মতবাদ। হিন্দুধর্মের দেবী-কেন্দ্রিক শাক্তধর্মে মহাশক্তির বিভিন্ন অবতারের রূপ বর্ণিত হয়েছে। তাদের মধ্যে কালী, দুর্গা ও ত্রিপুরাসুন্দরী সর্বাধিক পরিচিত।[১০][১১][১২] মধ্যযুগে রচিত কয়েকটি হিন্দু ধর্মগ্রন্থে গণেশ ও শিব প্রমুখ অন্য কয়েকজন দেবতার অবতারের কথা উল্লিখিত হলেও সেই গ্রন্থগুলি অপ্রধান ও স্বল্পপরিচিত।[১৩] উল্লেখ্য, হিন্দুধর্মের বৈষ্ণব ও শৈব সম্প্রদায়ের মধ্যে অন্যতম প্রধান পার্থক্যই হল এই অবতারবাদ।
বৌদ্ধধর্ম,[১৪] খ্রিস্টধর্ম[১৪] ও অন্যান্য কয়েকটি ধর্মেও[১৪] অবতারবাদের অনুরূপ ধারণা দেখা যায়। শিখধর্মের ধর্মগ্রন্থগুলিতে অসংখ্য হিন্দু দেবদেবীর নাম উল্লিখিত হলেও সেখানে মানুষের ত্রাণকর্তা অবতারের ধারণাটিকে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। শিখেরা এই ব্যাপারে নামদেব প্রমুখ হিন্দু ভক্তিবাদী সন্তদের মত অনুসরণ করেন। তাদের মতে, নিরাকার নিত্য ঈশ্বর মানব হৃদয়ে অবস্থান করেন এবং মানুষ নিজেই নিজের রক্ষাকর্তা।[১৫]
বিষ্ণুর অবতার
সারাংশ
প্রসঙ্গ
হিন্দুধর্মে অবতারবাদ মূলত বিষ্ণুকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠেছে। বিষ্ণু ত্রিমূর্তির অন্যতম দেবতা ও হিন্দু বিশ্বাস অনুযায়ী জগতের পালক ও রক্ষাকর্তা।অবতার হল, হিন্দু শাস্ত্রমতে ভগবানের বিষ্ণুর মনুষ্যরূপে অথবা প্রানিরূপে পৃথিবীতে আগমন। বিভিন্ন গ্রন্থে অবতারের মোট সংখ্যা নিয়ে বিভিন্ন মতামত পাওয়া যায়। অবতারের সংখ্যা চার থেকে ঊনচল্লিশ যে কোন একটি সংখ্যা হতে পারে। অবতার দুই প্রকার আংশিক ও পূর্ণাবতার। বিষ্ণু পরিপূর্ণভাবে আভির্ভূত হলে তাকে বলে পূর্ণবতার এবং আংশিকভাবে আভির্ভূত হলে তাকে বলে অংশাবতার।
দশাবতার
গরুড় পুরাণ মতে বিষ্ণুর দশ অবতার

বিষ্ণুর দশ সর্বাধিক প্রসিদ্ধ অবতার দশাবতার নামে পরিচিত। দশাবতারের তালিকাটি পাওয়া যায় গরুড় পুরাণ গ্রন্থে।[১৬] এই দশ অবতারই মানব সমাজে তাদের প্রভাবের ভিত্তিতে সর্বাপেক্ষা অধিক গুরুত্বপূর্ণ বলে গণ্য হন।
দশাবতারের প্রথম চার জন অবতীর্ণ হয়েছিলেন সত্যযুগে। পরবর্তী তিন অবতারের আবির্ভাব ত্রেতাযুগে। অষ্টম অবতার দ্বাপরযুগে এবং নবম অবতার কলিযুগ অবতীর্ণ হন। পুরাণ অনুসারে, দশম অবতার এখনো অবতীর্ণ হননি। তিনি ৪২৭,০০০ বছর পর কলিযুগের শেষ পর্বে অবতীর্ণ হবেন।[১৭]
গরুড় পুরাণ অনুসারে বিষ্ণুর দশ অবতার হলেন:
- মৎস্য, মাছের রূপে সত্যযুগে অবতীর্ণ
- কূর্ম, কচ্ছপের রূপে সত্যযুগে অবতীর্ণ
- বরাহ, শূকরের রূপে সত্যযুগে অবতীর্ণ
- নৃসিংহ, অর্ধনরসিংহ রূপে সত্যযুগে অবতীর্ণ
- বামন, বামনের রূপে ত্রেতাযুগে অবতীর্ণ
- পরশুরাম, পরশু অর্থাৎ কুঠারধারী রামের রূপে ত্রেতাযুগে অবতীর্ণ
- রাম, অযোধ্যার রাজপুত্রের রূপে ত্রেতাযুগে অবতীর্ণ
- বলরাম, দ্বাপর যুগে অবতীর্ণ হন, কৃষ্ণের জোষ্ঠ ভ্রাতা।
- শ্রীকৃষ্ণ অবতার,দ্বাপরযুগের বিষ্ণুদেবের অবতার।
- কল্কি, সর্বশেষ অবতার। হিন্দু বিশ্বাস অনুযায়ী, কলিযুগের অন্তে তাঁর আবির্ভাব ঘটবে।
ভাগবত পুরাণ অনুসারে বলরাম শেষনাগের অবতার। কোনো কোনো বৈষ্ণব শাস্ত্রে তাকে বিষ্ণুর নবম অবতার মনে করা হয়। উল্লেখ্য, এই সকল গ্রন্থে বুদ্ধের কোনো উল্লেখ নেই।
মৎস্য হল বিষ্ণুর প্রথম অবতার। মহাপ্লাবনের সময় বিষ্ণু একটি মাছরূপে পৃথিবীতে আসেন। অবতারবেশে বিষ্ণু, এ সময়ে তার শিং এর সাথে মনুর নৌকা বেঁধে রাখেন। প্লাবন শেষে মনু পুনারায় এই বিশ্ব সৃষ্টি তৈরী করেন।
বরাহ বিষ্ণুর তৃতীয় অবতার। বরাহ অর্থ শূকর। দানব হিরণ্যক্ষ পৃথিবীকে সমুদ্রতলে নিয়ে গেলে বরাহ তার সাথে এক হাজার বছর যুদ্ধ করে তাকে বধ করেন।
নৃসিংহ বিষ্ণুর চতুর্থ অবতার। হিরণ্যকশিপু নামে এক দানব তার পুত্র প্রহ্লাদকে হত্যা করতে গেলে বিষ্ণু নৃসিংহরূপে আবির্ভূত হন এবং প্রহ্লাদকে উদ্ধার করেন।
বামন বিষ্ণুর পঞ্চম অবতার। দানবরাজ বলি স্বর্গ, মর্ত্য ও পাতাল দখল করে নেয় এবং প্রচন্ড অত্যাচার শুরু করে। তার হাত থেকে মানব ও দেবতাদের রক্ষা করার জন্য মানবরূপে বিষ্ণুর আবির্ভাব হয়। তিনি বলির নিকট তিন পদক্ষেপ সমপরিমান জমি পাবার জন্য আবেদন করেন। ক্ষুদ্রকায় বামনের তিন পদক্ষেপ জমি খুবই সামান্য বিবেচন করে বলি তা দিতে রাজি হন। বামন দুই পদক্ষেপে স্বর্গ ও মর্ত্য অধিকার করে নেন। বলি তখন বামনরূপী বিষ্ণুকে চিনতে পারেন এবং তার বশ্যতা স্বীকার করে নেন।[১৮]
গৌড়ীয় বৈষ্ণব মতানুসারে, ভাগবত পুরাণের শেষের দিকের শ্লোকগুলিতে রাধারানির ভাবকান্তি সংবলিত শ্রীকৃষ্ণের চৈতন্য রূপে অবতার গ্রহণের কথা বর্ণিত হয়েছে। চৈতন্য মহাপ্রভুর পূর্বাশ্রমের নাম গৌরাঙ্গ বা নিমাই। তাঁর গাত্রবর্ণ স্বর্ণালি আভাযুক্ত ছিল বলে তাঁকে গৌরাঙ্গ বা গৌর নামে অভিহিত করা হত।
ভাগবত পুরাণ মতে বিষ্ণুর অবতার

ভাগবত পুরাণ–এর প্রথম স্কন্দে সংখ্যাক্রম অনুসারে বিষ্ণুর যে বাইশ অবতারের বর্ণনা দেওয়া হয়েছে, তা নিম্নরূপ:[১৯]
- চতুষ্কুমার [ভাগবত ১।৩।৬] (ব্রহ্মার চার পুত্র)
- বরাহ [ভাগবত ১।৩।৭] (বন্য শূকর)
- নারদ [ভাগবত ১।৩।৮] (ভ্রাম্যমাণ ঋষি)
- নর-নারায়ণ [ভাগবত ১।৩।৯] (যমজ)
- কপিল [ভাগবত ১।৩।১০] (দার্শনিক)
- দত্তাত্রেয় [ভাগবত ১।৩।১১] (ত্রিমূর্তির যুগ্ম অবতার)
- যজ্ঞ [ভাগবত ১।৩।১২] (সাময়িকভাবে ইন্দ্রের ভূমিকা গ্রহণ করা বিষ্ণু)
- ঋষভ [ভাগবত ১।৩।১৩] (রাজা ভরত ও বাহুবলীর পিতা)
- পৃথু [ভাগবত ১।৩।১৪] (যে রাজা পৃথিবীকে সুন্দর ও আকর্ষণীয় করে তুলেছিলেন)
- মৎস্য [ভাগবত ১।৩।১৫] (মাছ)
- কূর্ম [ভাগবত ১।৩।১৬] (কচ্ছপ)
- ধন্বন্তরী [ভাগবত ১।৩।১৭] (আয়ুর্বেদের জনক)
- মোহিনী [ভাগবত ১।৩।১৭] (সুন্দরী নারী)
- নৃসিংহ [ভাগবত ১।৩।১৮] (নর-সিংহ)
- বামন [ভাগবত ১।৩।১৯] (খর্বকায়)
- পরশুরাম [ভাগবত ১।৩।২০] (পরশু অর্থাৎ কুঠার সহ রাম)
- ব্যাসদেব [ভাগবত ১।৩।২১] (বেদ সংকলক)
- রাম [ভাগবত ১।৩।২২] (অযোধ্যার রাজা)
- বলরাম [ভাগবত ১।৩।২৩] (কৃষ্ণের জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা)
- কৃষ্ণ [ভাগবত ১।৩।২৩] (রাখাল বা স্বয়ং ভগবান)
- বুদ্ধ [ভাগবত ১।৩।২৪] (জ্ঞানী)
- কল্কি [ভাগবত ১।৩।২৫] (ধ্বংসকারী)
এই বাইশ অবতার ছাড়াও উক্ত গ্রন্থের পরবর্তী অংশে আরও তিন অবতারের কথা আছে:
- প্রশ্নিগর্ভ [ভাগবত ১।৩।৪১] (প্রশ্নির সন্তান)
- হয়গ্রীব [ভাগবত ২।৭।১১] (অশ্ব)
- হংস [ভাগবত ১১।১৩।১৯] (রাজহংস)
কল্কি অবতারের বর্ণনা দেওয়ার পর ভাগবত পুরাণ–এ ঘোষিত হয়েছে, বিষ্ণুর অবতার অসংখ্য।[২০] যদিও উপরি উল্লিখিত পঁচিশ অবতারের গুরুত্বই সর্বাধিক।
ভাগবত পুরাণ–এর একটি শ্লোক,[২১] মহাভারত-এর কতকাংশ এবং অন্যান্য পৌরাণিক ধর্মগ্রন্থের মতে,[২২] চৈতন্য মহাপ্রভু হলেন বিষ্ণুর অন্যতম অবতার। গৌড়ীয় বৈষ্ণব ঐতিহ্য অনুসারে তাকে অবতার রূপে পূজা করার বিধান রয়েছে। এই কারণেই চৈতন্য মহাপ্রভুকে গৌরাঙ্গ অবতার নামে অভিহিত করা হয়। এছাড়াও ঠাকুর রামকৃষ্ণ পরমহংস দেবকে যুগাবতার বলা হয়।দক্ষিণেশ্বর কালী মন্দিরে তন্ত্র সাধিকা ভৈরবী যোগেশ্বরী তাঁকে অবতার হিসাবে প্রমাণ করেন।
বৈষ্ণবধর্মে অন্যান্য অবতার
সারাংশ
প্রসঙ্গ
সাধারণত বিষ্ণুকে সকল অবতারের উৎস বলে গণ্য করা হলেও, হিন্দু বৈষ্ণব শাখায় বিষ্ণু একক দিব্য সত্ত্বা যা নানা রূপে প্রকাশিত হয়েছে। এই ধর্ম মতে নারায়ণ, বাসুদেব ও কৃষ্ণ দিব্য চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য অনুসারে একাধিক নামে অভিহিত হন, যা অনেক সময়েই অবতারকল্প রূপ ধারণ করে। এছাড়াও হিন্দুধর্মে অবতার শব্দের অন্য অর্থ ও ব্যাখ্যাও রয়েছে।
পুরুষ অবতার
অনেক সময় নিম্নোক্ত পুরুষ অবতারদের মহাবিশ্বে বিষ্ণু বা কৃষ্ণের প্রকৃত অবতার বলে গণ্য করা হয়:[২৩][২৪]
গুণ অবতার
হিন্দু ত্রয়ী দেবতা ত্রিমূর্তি অনেক সময় গুণ অবতার নামে অভিহিত হয়ে থাকেন। এর কারণ তাদের প্রকৃতির এক-একটি গুণের নিয়ন্ত্রক রূপে কল্পনা করা হয়।[২৪] যদিও তারা কখনই জীবের রূপ ধারণ করে মর্ত্যে অবতীর্ণ হন না, তবুও তাদের অভিধার সঙ্গে অবতার কথাটি যুক্ত করা হয়:
মন্বন্তর অবতার
মন্বন্তর অবতারগণ বিশ্বজুড়ে বংশধর উৎপাদনের জন্য দায়ী। তারা সংখ্যায় অসংখ্য[২৫] এবং তাদের কোনোপ্রকার জন্মগ্রহণ নেই।মন্বন্তর অবতার মোট ১৪ জন।তারা হলেন যজ্ঞ,বিভু,সত্যসেন, হরি,বৈকুণ্ঠ,অজিত,বামন,সার্বভৌম,ঋষভ,বিশ্বকসেন ,ধর্মসেতু, সুধামা ,যোগেশ্বর,বৃহদ্ভভানু।[২৬]
শাক্ত্যাবেস ও অবেস অবতার
অবতারদের দুটি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়:
- সাক্ষাৎ
- অবেস
যখন বিষ্ণু স্বয়ং অবতীর্ণ হন, তখন তাকে সাক্ষাৎ বা শাক্ত্যবেসাবতার বলা হয়। কিন্তু যখন তিনি নিজে অবতীর্ণ না হয়ে কারোর মাধ্যমে প্রকাশিত হন, তখন তাকে বলা হয় অবেস অবতার।[২৭]
মনে করা হয়, অবেস অবতারের সংখ্যা অনেক। বিশিষ্ট অবেস অবতার হলেন নারদ, শাক্যমুণি বুদ্ধ ও পরশুরাম। পরশুরামই প্রসিদ্ধ দশাবতারের অন্যতম যিনি প্রত্যক্ষভাবে বিষ্ণুর অংশসম্ভূত নন।
হিন্দুধর্মের শ্রী বৈষ্ণব সম্প্রদায়ের মতে প্রধান ও প্রত্যক্ষ অবতারদের দুটি শ্রেণি, পূর্ণ অবতার ও অংশরূপাবতার:
- পূর্ণ অবতার সেইগুলিই যেগুলির ক্ষেত্রে বিষ্ণু প্রত্যক্ষভাবে অবতীর্ণ হন এবং ঈশ্বরের সকল শক্তি ও গুণাবলি প্রদর্শন করেন। (যেমন, নৃসিংহ, রাম ও কৃষ্ণ) [২৮]
- অংশরূপাবতারের ক্ষেত্রেও বিষ্ণু প্রত্যক্ষভাবে অবতীর্ণ হন, কিন্তু তিনি আংশিকভাবে সেই রূপে আত্মপ্রকাশ করেন। (যেমন, মৎস্য ও পরশুরাম)।
অবেস অবতারগণ পরমেশ্বর রূপে পূজিত হন না। কেবলমাত্র প্রত্যক্ষ ও প্রধান অবতারগণই ওইরূপে পূজিত হন। প্রকৃতপক্ষে যে সকল প্রত্যক্ষ অবতার আজ পূজিত হন তারা হলেন পূর্ণ অবতার নৃসিংহ, রাম ও কৃষ্ণ। অধিকাংশ বৈষ্ণব সম্প্রদায়ের মতে, কৃষ্ণ হলেন সর্বোচ্চ পূর্ণ অবতার। যদিও ইসকন সহ চৈতন্য মহাপ্রভু, নিম্বার্ক ও বল্লভ আচার্যের অনুগামীদের দার্শনিক মত রামানুজাচার্য ও মধবাচার্যের মতো অপরাপর বৈষ্ণবদের থেকে পৃথক। তারা কেবল কৃষ্ণকে অবতার বলেই মানেন না, তাকে সর্বোচ্চ ঈশ্বর মনে করেন। তবে সকল হিন্দুই বিশ্বাস করেন বিষ্ণু ও তার অবতারদের পূজার মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। কারণ সকলেই বিষ্ণুর সঙ্গে সংযুক্ত। দ্বৈত দর্শনের প্রবক্তা মধ্বাচার্যের মতে, বিষ্ণুর সকল অবতার শক্তি ও অন্যান্য গুণে একে অপরের সমান। তাদের উচ্চনিচ ক্রম নেই। তাদের মধ্যে ভেদবুদ্ধি করা মহাপাপ।
অবতারত্বের দাবিদার
পুরাণ-বর্ণিত অবতারগণের পাশাপাশি ভারতে অনেক ব্যক্তি নিজের বা তাদের গুরুদের অবতারত্বও দাবি করেন। এই রকম কয়েকটি উদাহরণ হল:
আরও দেখুন
- মহাভারতে অবতারগণ
- হিন্দুধর্মে গৌতম বুদ্ধ
- হিন্দু দেবদেবী
- অবতারত্ব দাবিদারগণের তালিকা
- স্বয়ং ভগবান
- দ্বাদশ মহাজন
পাদটীকা
বহিঃসংযোগ
Wikiwand - on
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.