Loading AI tools
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
হয়গ্রীব হলেন বিষ্ণুর অবতার।তিনি হিন্দু ধর্মের জনপ্রিয় দেবতা।ভারতের বিভিন্ন স্থানে তার পূজা করা হয় । আসামের হয়গ্রীব মাধব মন্দির তার মধ্যে অন্যতম।তার নামে হয়গ্রীব উপনিষদ রয়েছে।
'মধু' এবং 'কৈটভ' নামের দুটি অসুর বেদের সৃষ্টির সময়ে ব্রহ্মার থেকে সেগুলি চুরি করে নেয়। ব্রহ্মা বিষ্ণুকে যোগনিদ্রা থেকে জাগিয়ে বেদ উদ্ধারের জন্য অনুরোধ করেন। তখন বিষ্ণু 'হয়গ্রীবে'র রূপ ধারণ করে রসাতলে যান এবং বেদসমূহ উদ্ধার করে এনে ব্রহ্মাকে দেন। [1] এর পরে বিষ্ণু উত্তর-পূর্বে এসে হয়গ্রীব রূপে শুয়ে পড়েন। মধু এবং কৈটভ ঘুরে এসে বিষ্ণুকে যুদ্ধ করতে বলে। সেই যুদ্ধে বিষ্ণু অসুর দুজনকে পরাস্ত করে প্রাণনাশ করেন।
আরেক মতে ভগবান বিষ্ণু ঔর্বঋষির তপস্যা ভঙ্গকারী জ্বরাসুর, হয়াসুর ইত্যাদি পাঁচজন অসুরকে বধ করে হয়গ্রীব মাধব নামের পর্বতে অবস্থান করে আছেন। কালিকা পুরাণ মতে, এই তীর্থস্থানের প্রতিষ্ঠাতা ঔর্বঋষি।।[2]
দেবীভাগবত পুরাণেও এক আশ্চর্য কাহিনির সন্ধান মেলে। সূর্যের ছেলে রেবন্ত কোনো এক সময় উচ্চৈঃশ্রবা নামক ঘোড়ায় চড়ে বৈকুণ্ঠে বেড়াতে এসেছিলেন। উচ্চৈঃশ্রবা একে অশ্বরাজ, সে ও লক্ষ্মীর মতোই সমুদ্রমন্থনের সময় উদ্ভূত। ঘোড়াটিকে লক্ষ্মী নিজের ভাইয়ের মতো দেখতেন। তাই উচ্চৈঃশ্রবা বৈকুণ্ঠে আসতেই তিনি স্বামীকে ছেড়ে ঘোড়ার আদরযত্ন নিয়ে পড়লেন। ঘোড়ার পিঠে বসে থাকা রেবন্তকে দেখে অবাক হলেন নারায়ণও। তিনি লক্ষ্মীকে জিজ্ঞাসা করলেন, “এই ছেলেটি কে?” লক্ষ্মী তখন ঘোড়ার আপ্যায়নে ব্যস্ত। কয়েকবার জিজ্ঞাসা করেও কথার উত্তর না পেয়ে লক্ষ্মীর উপর বেজায় খাপ্পা হয়ে উঠলেন নারায়ণ। স্ত্রীকে অভিশাপ দিয়ে বসলেন, “ঘোড়া নিয়ে এত আদিখ্যেতা যখন, তখন মর্ত্যে মাদীঘোড়া হয়ে জন্মাও গে!” যতই হোক, নারায়ণ লক্ষ্মীর স্বামী; লক্ষ্মীও নারায়ণের স্ত্রী। অভিশাপ শুনে লক্ষ্মীর খুব কষ্ট হল। নারায়ণকে জিজ্ঞাসা করলেন, কীভাবে তিনি শাপমুক্ত হয়ে আবার বৈকুণ্ঠে ফিরতে পারবেন। নারায়ণ বললেন, মর্ত্যে গিয়ে লক্ষ্মীর নারায়ণ-তুল্য এক ছেলে হবে। তারপরই লক্ষ্মী বৈকুণ্ঠে ফিরতে পারবেন। এরপর যথারীতি মর্ত্যে মাদী ঘোড়া হয়ে জন্মালেন লক্ষ্মী। মর্ত্যে গিয়ে তিনি শিবের তপস্যা করলেন। তপস্যায় তুষ্ট হয়ে শিব বর দিতে এলে লক্ষ্মী বললেন, তার সন্তান যেন নারায়ণের ঔরসেই জন্মায়। শিবের পরামর্শে নারায়ণ হয়গ্রীব অবতার গ্রহণ করে ঘোটকীরূপিণী লক্ষ্মীকে বিয়ে করলেন। তাদের ছেলে হলে লক্ষ্মী শাপমুক্ত হয়ে বৈকুণ্ঠে ফিরে গেলেন।
অন্যমতে, ঋষি কশ্যপ ও দনুর পুত্র হয়গ্রীব আদ্যাশক্তি মহামায়ার বরে বলীয়ান হয়ে ইন্দ্রের অমরাবতী আক্রমণ করে। দেবীর বরে অন্য কোনো হয়গ্রীবই তাকে হত্যা করতে পারবে। তখন দেবতারা ভগবান বিষ্ণুর কাছে যান। ভগবান বিষ্ণু মধু -কৈটভের সাথে যুদ্ধ করে ক্লান্ত হয়ে ধনুকের উপর মাথা রেখে নিদ্রায় মগ্ন ছিলেন। তখন ব্রহ্মা ভম্রিদের আদেশ দেন ভগবান বিষ্ণুর ধনুকটির জ্যা কর্তন করার। পরিবর্তে, ভম্রিরা যজ্ঞের বেদির বাহিরে পরে থাকা আহুতি পাবে। তখন জ্যা কাটতেই ভগবান বিষ্ণুর মস্তক কেটে লবণ সাগরে পড়ল। দেবতারা তখন দেবী মহামায়ার স্তব করলে দেবী মহামায়া বলেন যে তার মায়াতেই এসব ঘটেছে। পূর্বে বিষ্ণু দেবী লক্ষ্মীর দিকে তাকিয়ে হাসলে দেবী লক্ষ্মী মনে করেন যে বিষ্ণু তার রূপকে অবহেলা করছেন। দেবী লক্ষ্মী তখন ভগবান বিষ্ণুকে অভিশাপ দিয়ে বসেন যে তার এই সুন্দর মস্তক কেটে যাবে। সে অভিশাপই সত্য হয়েছে। তখন তিনি ব্রহ্মাকে বিষ্ণুর মস্তকে হয় বা অশ্বের মস্তক লাগাতে বলেন। ব্রহ্মা তা-ই করলেন। তখন বিষ্ণুর নাম হয় হয়গ্রীব। ভগবান হয়গ্রীব তখন দানব হয়গ্রীবকে যুদ্ধে পরাস্ত করে তাকে হত্যা করেন।[3] হয়গ্রীব ছিলেন মহাজ্ঞানী। তিনি মহর্ষি অগস্ত্যকে ললিতোপাখ্যান শ্রবণ করান।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.