ইথিওপিয়া
উত্তর-পূর্ব আফ্রিকার একটি দেশ উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
উত্তর-পূর্ব আফ্রিকার একটি দেশ উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
ইথিওপিয়া (আমহারীয়: ኢትዮጵያ, প্রতিবর্ণীকৃত: Ītyōṗṗyā উচ্চারণ [i.tjo.p’ja], অরমো: Itiyoophiyaa, সোমালি: Itoobiya, তিগ্রিনিয়া: ኢትዮጵያ, প্রতিবর্ণী. Ítiyop'iya, আফার: Itiyoppiya) পূর্ব আফ্রিকার একটি স্থলবেষ্টিত রাষ্ট্র। এর পূর্ণ সরকারি নাম হলো ইথিওপিয়া যুক্তরাষ্ট্রীয় গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র। দেশটি "আফ্রিকার শিং" তথা সোমালি উপদ্বীপ অঞ্চলটিতে অবস্থিত। ইথিওপিয়ার উত্তরে ইরিত্রিয়া, উত্তর–পূর্বে জিবুতি, পূর্বে সোমালিয়া, দক্ষিণে কেনিয়া, পশ্চিমে দক্ষিণ সুদান ও উত্তর-পশ্চিম সীমানায় সুদান অবস্থিত এবং দেশটির আয়তন প্রায় ১১,২৭,১২৭ বর্গকিলোমিটার (যা বাংলাদেশের প্রায় ৮ গুণ)। এখানে প্রায় ১০ কোটি ৫০ লক্ষ লোক বসবাস করে এবং এটিই আফ্রিকা মহাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জনবহুল রাষ্ট্র (নাইজেরিয়ার পরেই)।
এই নিবন্ধটি ইংরেজি থেকে আনাড়িভাবে অনুবাদ করা হয়েছে। এটি কোনও কম্পিউটার কর্তৃক অথবা দ্বিভাষিক দক্ষতাহীন কোনো অনুবাদক কর্তৃক অনূদিত হয়ে থাকতে পারে। |
ইথিওপিয়া যুক্তরাষ্ট্রীয় গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র | |
---|---|
নীতিবাক্য: নেই | |
রাজধানী ও বৃহত্তম নগরী বা বসতি | আদ্দিস আবাবা |
সরকারি ভাষা | আমহারী |
স্বীকৃত আঞ্চলিক ভাষা | অন্যান্য ভাষাসমূহ আলাদার মধ্যে আধিকারিক ইথি্নসিটিস এবং তাদের নিজ নিজ অঞ্চলসমূহ। |
নৃগোষ্ঠী | অরমো ৩৪.৫%, এমহারা ২৬.৯১%, সোমালি ৬.২০%, তিগ্রিনিয়া ৬.০৭%; সেদামা ৪%, গ্রেজ ২.৫%, ওয়েলেডা ২.৩%[1][2] এবং আসে পাশে অন্যান্য আশিটি ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক দলা আছে। |
ধর্ম | ৬২.৮% খ্রিস্টান —৪৩.৫% ইথিওপিয়ান অর্থোডক্স —১৮.৬% প্রটেস্ট্যান্ট) —০.৭% ক্যাথলিক ৩৩.৯% ইসলাম ২.৬% ঐতিহ্যগত বিশ্বাসী ০.৭% অন্যান্য[3] |
সরকার | কেন্দ্রীয় প্রজাতন্ত্র সংসদীয় প্রজাতন্ত্র |
• রাষ্ট্রপতি | Girma Wolde-Giorgis |
• প্রধানমন্ত্রী | আবি আহমেদ |
প্রতিষ্ঠিত প্রায় ১০ম শতাব্দী খ্রীষ্টপূর্বাব্দ | |
• ঐতিহ্যবাহী তারিখ | ৯৮০ খ্রীষ্টপূর্বাব্দ |
৮ম শতাব্দী খ্রীষ্টপূর্বাব্দ | |
• আকসুমের রাজ্য | প্রায় ৪ম শতাব্দী খ্রীষ্টপূর্বাব্দ |
• স্বাধীনতা অবেসিনিয়া | ১১৩৭ |
• আংশিকভাবে ইতালি দ্বারা অধিকৃত অঞ্চল | ১৯৩৬–১৯৪১ |
১৯৪১–১৯৪৪ | |
• সংবিধান | ১৯৩৩, ১৯৫৫(রাজতন্ত্র), ১৯৮৭ (PDRE),১৯৯৫ (FDRE) |
• গণপ্রজাতন্ত্র | ১৯৯১ |
• পানি (%) | ০.৭% |
জনসংখ্যা | |
• ২০০৯ আনুমানিক | ৮৫,২৩৭,৩৩৮[4] (১৪তম) |
• ২০০৭ আদমশুমারি | ৭৩,৯১৮,৫০৫ |
জিডিপি (পিপিপি) | ২০০৯ আনুমানিক |
• মোট | $৭৭.৬০৫ বিলিয়ন[5] (৬৯তম) |
• মাথাপিছু | $৯৫৫.২৯[5] (১৭৩তম) |
মানব উন্নয়ন সূচক (২০০৮) | ০.৩৮৯ ত্রুটি: মানব উন্নয়ন সূচক-এর মান অকার্যকর · ১৬৯তম |
মুদ্রা | বির (ETB) |
সময় অঞ্চল | ইউটিসি+৩ |
ইউটিসি+৩ (পর্যবেক্ষণ করা হয়নি) | |
কলিং কোড | ২৫১ |
ইন্টারনেট টিএলডি | .et |
1Ethiopia is ostensibly a democracy, but has a dominant-party system led by the Ethiopian People's Revolutionary Democratic Front. 2Rank based on 2005 population estimate by the United Nations |
দেশটির রাজধানী ও বৃহত্তম নগরীর নাম আদ্দিস আবাবা; অন্যান্য প্রধান নগরীগুলি হল দিরে দাওয়া, নাজরেত, গোন্দের, দেসে এবং মেকেলে। অতীতে আবিসিনিয়া নামে পরিচিত এই দেশটি সমগ্র ইতিহাস জুড়েই বিদেশী পরাশক্তির শাসন থেকে স্বাধীন ছিল, যা দেশটির জাতীয় ঐক্যের অন্যতম ভিত্তি।[6] আধুনিক ইথিওপিয়া রাষ্ট্রটি ১৮৯৬ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয়। এখানে একটি যুক্তরাষ্ট্রীয় প্রজাতান্ত্রিক সংসদীয় সরকার ব্যবস্থা বিদ্যমান। এখানে একটি দুইকক্ষবিশিষ্ট আইনসভা আছে; রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রের প্রধান এবং প্রধানমন্ত্রী সরকার প্রধান।
ইথিওপিয়া একটি স্থলবেষ্টিত দেশ, এর কোনও সামুদ্রিক উপকূল নেই। ইথিওপিয়ার মধ্যভাগ ও উত্তরভাগে উচ্চভূমি এবং পূর্বে ও পশ্চিমে নিম্নভূমি। মধ্যভাগের উচ্চ মালভূমিকে ভেদ করে মহা গ্রস্ত উপত্যকা নামের নিম্নভূমিটি দক্ষিণ-পশ্চিম থেকে উত্তর-পূর্ব দিকে চলে গিয়েছে এবং একে পূর্ব উচ্চভূমি ও পশ্চিম উচ্চভূমিতে বিভক্ত করেছে। মহা গ্রস্ত উপত্যকার পূর্বের উচ্চভূমির পূর্ব দিকে মরুময় নিম্নভূমি এবং উত্তর-পশ্চিমে পার্বত্য অঞ্চল অবস্থিত। ইথিওপিয়ার সর্বোচ্চ শৃঙ্গ রাস দেজেন পর্বতের উচ্চতা ৪৬২০ মিটার। উচ্চভূমির জলবায়ু মৃদু, তবে নিম্নভূমিগুলিতে জলবায়ু অপেক্ষাকৃত উষ্ণ। বছরে দুইটি বর্ষাকাল আছে। কিন্তু মাঝে মাঝেই দেশটিতে ভয়াবহ খরার সৃষ্টি হয়। উঁচু পার্বত্য অঞ্চলগুলিতে তুহিন জমাট বাঁধে ও তুষারপাত হয়।
ইথিওপিয়ার সিংহভাগ এলাকাই তৃণভূমিতে আচ্ছাদিত। উচ্চভূমিগুলিতে ক্রান্তীয় অরণ্যের দেখা মেলে, তবে কৃষিক্ষেত্র নির্মাণের জন্য অনেক অরণ্য নিধন করা হয়েছে। ইথিওপিয়াতে অনেক বিরল প্রজাতির প্রাণী আছে, যেগুলিকে জাতীয় উদ্যান ও সংরক্ষিত অঞ্চল সৃষ্টি করে সুরক্ষা প্রদান করা হয়েছে। এদের মধ্যে ওয়ালিয়া আইবেক্স নামের এক প্রজাতির পাহাড়ি ছাগল, সিমিয়েন প্রজাতির খেঁকশিয়াল ও জেলাদা প্রজাতির বানর উল্লেখযোগ্য। এছাড়া ইথিওপিয়াতে সিংহ, হাতি, চিতাবাঘ, জেব্রা, মহিষ, গণ্ডার ও জিরাফ আছে, যেগুলির অস্তিত্ব হুমকির সম্মুখীন।
ইথিওপিয়াতে প্রায় ৮০টি ভিন্ন জাতির লোক বাস করে এবং এরা প্রায় ৯০টি স্বতন্ত্র ভাষায় কথা বলে, যেগুলির অনেকগুলির আবার একাধিক উপভাষা আছে। জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ ওরোমো জাতি এবং প্রায় এক-চতুর্থাংশ (২৭%) আমহারা জাতির লোক। অন্যান্য জাতির মধ্যে সোমালি, তিগ্রে ও সিদামা জাতি উল্লেখযোগ্য। আমহারীয় ও ওরোমো ভাষা দেশটির সবচেয়ে বেশি প্রচলিত দুইটি ভাষা; এছাড়া তিগ্রিনিয়া, গুয়ারাগিঙ্গা, সোমালি ও আরবি ভাষা গুলিও উল্লেখ্য। ওরোমো সর্বাধিক ব্যক্তির মাতৃভাষা হলেও বিভিন্ন জাতির লোক আমহারীয় ভাষাতেই ভাবের আদান প্রদান করে এবং কেন্দ্রীয় সরকারও এই ভাষাই ব্যবহার করে। অন্যদিকে সুপ্রাচীন গে-এজ ভাষা (ও গে-এজ লিপি) ইথিওপীয় খ্রিস্টান গির্জার ধর্মীয় ভাষা হিসেবে এখনও গুরুত্বপূর্ণ।[7] ইথিওপিয়ার জনগণের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ (৬৩%) লোক খ্রিস্টান, এবং এদের সিংহভাগ ইথিওপীয় প্রথাগত খ্রিস্টান মন্ডলীর সদস্য, বাকীরা প্রতিবাদী মন্ডলীর সদস্য। ইথিওপিয়াতে খ্রিস্টধর্মের ইতিহাস অত্যন্ত প্রাচীন। তবে বর্তমানে দেশের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ লোক ইসলাম ধর্মাবলম্বী। তিন-চতুর্থাংশ লোক গ্রামাঞ্চলে, বিশেষ করে উচ্চভূমি অঞ্চলে বাস করে। ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিকভাবে সমৃদ্ধ ইতিহাসের অধিকার ইথিওপিয়াতে আফ্রিকার সমস্ত দেশের মধ্যে সর্বাধিক সংখ্যাক ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান রয়েছে।[8]
ইথিওপিয়া বিশ্বের সবচেয়ে দরিদ্র দেশগুলির একটি। মাথাপিছু আয় মাত্র প্রায় ১ হাজার ডলার। দেশের অর্থনীতি প্রায় সম্পূর্ণ কৃষিনির্ভর। কিন্তু অনুর্বর জমি, যুদ্ধের কারণে অবকাঠামোগত ক্ষতি এবং কিছু বছর পর পর ভয়াবহ খরার কারণে কৃষিখাতে প্রবৃদ্ধি দুরূহ। ভুট্টা, আখ, গম, যব ও জোয়ার এখানকার প্রধান খাদ্যশস্য। কিন্তু দেশটি খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ নয়, বরং খাদ্য সাহায্যের উপর বহির্বিশ্বের উপরে অতি-নির্ভরশীল। ইথিওপিয়াতে উৎপাদিত কফি ও পশুচর্ম বিদেশে রফতানি হয়। গবাদি পশু, ভেড়া ও ছাগল থেকে মাংস ও চামড়ার চাহিদা পূরণ হয়। শিল্পখাতের আয়তন অত্যন্ত ছোট। এখানে প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, পানীয়, বস্ত্র, চামড়ার দ্রব্য ও রাসায়নিক দ্রব্য উৎপাদন করা হয়। এছাড়া খনিতে লবণ, সোনা ও অন্যান্য খনিজ পদার্থ উত্তোলন করা হয়। ইথিওপিয়ার মুদ্রার নাম বির (১ বির = ১০০ সেন্ট)। ২০১০ সালে এসে দেশটি কেনিয়াকে ছাড়িয়ে পূর্ব আফ্রিকার বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হয়।[9][10][11] এত উন্নতি সত্ত্বেও ইথিওপিয়া বিশ্বের সবচেয়ে দরিদ্র দেশগুলির একটি।[12] এখানে দারিদ্র্য, খাদ্যাভাব, দুর্নীতি, দুর্বল অবকাঠামো, মানবাধিকার লঙ্ঘন, শিক্ষা (সাক্ষরতার হার মাত্র ৫১%) ও স্বাস্থ্যসেবার অপ্রতুলতা আজও বিরাট কিছু সমস্যা।[13] মানব উন্নয়ন সূচকে দেশটির অবস্থান দেশের তালিকার শেষ চতুর্থাংশেই ওঠানামা করে।
ইথিওপিয়াতে জীবাশ্মবিদরা সবচেয়ে প্রাচীন কিছু মানুষ বা মানুষ-সদৃশ প্রাণীর জীবাশ্ম খুঁজে পেয়েছেন।[14] লুসি নামের একটি এপ-জাতীয় প্রাণীর যে অস্থিগুলি পাওয়া গেছে, সেগুলির বয়স ৩০ থেকে ৪০ লক্ষ বছর। অনেক বিশেষজ্ঞের মতে আধুনিক মানব প্রজাতি এই ইথিওপিয়া অঞ্চল থেকেই প্রথমে মধ্যপ্রাচ্য ও পরে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে।[15][16][17] ভাষাবিজ্ঞানীদের মতে নব্যপ্রস্তর যুগে এখানে আফ্রো-এশীয় ভাষা পরিবারের আদি ভাষাগুলিতে কথা বলা মানুষেরা বসতি স্থাপন করে।[18] খ্রিস্টানদের ধর্মগ্রন্থ বাইবেলে এলাকাটিকে কুশ হিসেবে উল্লেখ করা আছে। একদা এটি প্রাচীন মিশরীয় রাজার অধীনে ছিল। খ্রিস্টপূর্ব ২য় সহস্রাব্দ থেকেই ইথিওপিয়াকে বিভিন্ন স্থানীয় রাজবংশ শাসন করে এসেছে। মৌখিক সাহিত্য অনুযায়ী শেবার রাণী ও রাজা সলোমনের উত্তরসূরী রাজা ১ম মেনেলিক এখানে সর্বপ্রথম রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন, যে রাজ্যের নাম ছিল আবিসিনিয়া।[19] খ্রিস্টপূর্ব ৭ম শতকে এখানে গে-এজ ভাষাভাষী ও কৃষিনির্ভর দা-আমাত রাজ্যের শাসকেরা শাসন করতেন। খ্রিস্টপূর্ব ৩য় শতক নাগাদ এখানে আকসুম রাজ্য ছিল। ৪র্থ শতকে আকসুম যখন খ্রিস্টধর্ম গ্রহণ করে, তখন এটি ছিল রোম ও গ্রিসের বাইরে প্রাচীন যুগে খ্রিস্টধর্ম গ্রহণকারী অন্যতম প্রধান রাজ্য। খ্রিস্টীয় প্রথম শতকগুলিতে আকসুম রাজ্য অঞ্চলটিতে একটি একীভূত সভ্যতা বজায় রাখে।[20][21][22][23] নিকটবর্তী আরব দেশ থেকে খ্রিস্টীয় ৭ম শতকে যখন ইসলাম ধর্ম ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে, তখনও ইথিওপিয়ার জনগণের অংশবিশেষ ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিল। আফ্রিকাতে মুসলমানদের সর্বপ্রাচীন বসতি নেগাশ এই ইথিওপিয়াতেই অবস্থিত। পরবর্তীতে ১১৩৭ সালে প্রতিষ্ঠিত ইথিওপীয় সাম্রাজ্য দেশটিকে একত্রিত রাখে। ১৫শ শতকে পর্তুগিজদের আগমনের সাথে সাথে ইউরোপের সাথে ইথিওপিয়ার সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়। ১৬শ শতকে আরব সেনারা ইথিওপিয়া আক্রমণ করলে পর্তু গিজেরা ইথিওপীয়দেরকে সেই যুদ্ধে জয়ী হতে সাহায্য করে। সম্রাট ২য় তেওদোরোসসের অধীনে ইথিওপিয়ার জাতিগুলি একত্রিত হয় একটি সংঘবদ্ধ দেশে পরিণত হয়। ১৯শ শতকের শেষভাগে ইউরোপীয় ঔপনিবেশিক শক্তিগুলি যখন আফ্রিকার বিভিন্ন অঞ্চল দখলের লড়াইয়ে লিপ্ত ছিল, তখন কেবলমাত্র লাইবেরিয়া ও ইথিওপিয়া তাদের সার্বভৌমত্ব ধরে রেখেছিল। সেসময় ইতালি সমগ্র ইথিওপিয়াকে একটি উপনিবেশ বানাতে চেয়েছিল, যার উদ্দেশ্যে তারা দেশটির উপকূলীয় অংশে উপনিবেশ স্থাপন করে। কিন্তু সম্রাট ২য় মেনিলেকের নেতৃত্বে ইথিওপীয়রা আক্রমণকারী ইতালীয় সেনাদেরকে পরাজিত করে এবং ১৮৯৬ সালে তাদেরকে উৎখাত করে। ইতালীয়রা আবার ১৯৩৫ সালে ইথিওপিয়া আক্রমণ করে এবং ১৯৩৬ সালে ইতালীয় পূর্ব আফ্রিকা নামক অঞ্চলের একটি অংশ হিসেবে ঘোষণা দেয়। ইতালীয় শাসনের সময় ইথিওপিয়া থেকে দাসপ্রথা রদ করা হয় এবং নগরায়ন বৃদ্ধি পায়।[24] ১৯৪১ সালে ব্রিটিশ সেনারা ইতালীয়দেরকে অঞ্চলটি থেকে বিতাড়িত করে। ১৯৪৫ সালে ইথিওপিয়া প্রথম স্বাধীন আফ্রিকান রাষ্ট্র হিসেবে জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভ করেছিল (এর আগে লিগ অভ নেশনসেও তাই হয়েছিল)।[25] ১৯৫২ সালে ইথিওপিয়া ইরিত্রিয়া নামের অঞ্চলটি দখলে নেয়। ১৯৭৪ সালে ইথিওপিয়ার সেনাবাহিনী সম্রাট হাইলে সেলাসিকে ক্ষমতাচ্যুত করে এবং এর ফলে দেশটিতে রাজতন্ত্রের পতন ঘটে। দের্গ নামের এই সামরিক সরকারটি ইথিওপিয়াকে একটি মার্ক্সবাদী সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রে রূপান্তরিত করে, যার পেছনে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের সমর্থন ছিল। ১৯৭০ ও ১৯৮০-র দশকে বিদ্রোহী কিছু দল সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালায়। একই সময়ে বহু হাজার হাজার ইথিওপীয় খরা ও দুর্ভিক্ষের কারণে মৃত্যুবরণ করে। ১৯৮৭ সালে সামরিক সরকার দেশটিতে গণতন্ত্রের প্রবর্তন করে।১৯৯১ সালে বিদ্রোহীরা ইথিওপীয় জনগণের বিপ্লবী গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট নামক দলের নেতৃত্বে সামরিক সরকারের পতন ঘটায়। তখন থেকে এই দলটিই ইথিওপীয় রাজনীতিতে আধিপত্য বিস্তার করে চলেছে। ১৯৯৩ সালে ইরিত্রিয়া ইথিওপিয়া থেকে পৃথক হয়ে যায় ও স্বাধীনতা লাভ করে। ১৯৯৫ সালে ইথিওপিয়াতে প্রথমবারের মত গণতান্ত্রিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৯৮ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত ইথিওপিয়া ও ইরিত্রিয়া মধ্যে একট সীমান্ত যুদ্ধ সংঘটিত হয়। ২১শ শতকে এসেও দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা অব্যাহত থাকে। প্রতিবেশী সোমালিয়ার সাথেও দেশটির সংঘাত আছে।
ইথিওপিয়া জাতিসংঘের পাশাপাশি জি-২৪, জোট নিরপেক্ষে আন্দোলন, জি-৭৭ এবং আফ্রিকান ঐক্য সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। ইথিওপিয়ার রাজধানী আদ্দিস আবাবাতে আফ্রিকান ঐক্য (আফ্রিকান ইউনিয়ন), সর্ব-আফ্রিকা চেম্বার অভ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি, আফ্রিকাতে জাতিসংঘের অর্থনৈতিক কমিশন এবং আরও বহু আফ্রিকাভিত্তিক আন্তর্জাতিক বেসরকারী সংস্থা"র প্রধান কার্যালয়গুলি অবস্থিত।
এই অনুচ্ছেদটি সম্প্রসারণ করা প্রয়োজন। |
ইথিওপিয়ার রাজনীতি একটি কেন্দ্রীয় সরকার-শাসিত যুক্তরাষ্ট্রীয় সংসদীয় প্রজাতন্ত্রের কাঠামোয় সংঘটিত হয়, যেখানে প্রধানমন্ত্রী হলেন সরকার প্রধান।
এই অনুচ্ছেদটি সম্প্রসারণ করা প্রয়োজন। |
১১,০৪,৩০০ বর্গকিলোমিটার (৪,২৬,৩৭২.৬১ মা২),[26] ইথিওপিয়া হল বিশ্বের ২৮তম বৃহত্তম দেশ, যা আয়তনে বলিভিয়ার সাথে তুলনীয়।এটি তৃতীয় সমান্তরাল উত্তর এবং 15 তম সমান্তরাল উত্তর এবং দ্রাঘিমাংশের 33 তম মেরিডিয়ান পূর্ব এবং 48 তম মেরিডিয়ান পূর্বের মধ্যে অবস্থিত।
ইথিওপিয়ার প্রধান অংশ হর্ন অফ আফ্রিকায় অবস্থিত, যা আফ্রিকান ল্যান্ডমাসের পূর্বতম অংশ।ইথিওপিয়ার সাথে যে অঞ্চলগুলির সীমান্ত রয়েছে সেগুলি হল উত্তরে ইরিত্রিয়া এবং তারপরে, ঘড়ির কাঁটার দিকে চলে যাওয়া, জিবুতি, সোমালিল্যান্ড, সোমালিয়া, কেনিয়া, দক্ষিণ সুদান এবং সুদান।ইথিওপিয়ার মধ্যে পাহাড়ের একটি বিস্তীর্ণ উচ্চভূমি কমপ্লেক্স এবং গ্রেট রিফ্ট ভ্যালি দ্বারা বিভক্ত মালভূমি, যা সাধারণত দক্ষিণ-পশ্চিম থেকে উত্তর-পূর্ব দিকে চলে এবং নিচুভূমি, স্টেপস বা আধা-মরুভূমি দ্বারা বেষ্টিত।জলবায়ু, মৃত্তিকা, প্রাকৃতিক গাছপালা এবং বসতি স্থাপনের ধরণে বিস্তৃত বৈচিত্র্য সহ ভূখণ্ডের বিশাল বৈচিত্র্য রয়েছে।
ইথিওপিয়া একটি পরিবেশগতভাবে বৈচিত্র্যময় দেশ, যা পূর্ব সীমান্ত বরাবর মরুভূমি থেকে দক্ষিণে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় বন থেকে উত্তর ও দক্ষিণ-পশ্চিম অংশে বিস্তৃত আফ্রোমন্টেন পর্যন্ত বিস্তৃত।উত্তরে টানা হ্রদ নীল নদের উৎস।এছাড়াও এর অনেক স্থানীয় প্রজাতি রয়েছে, বিশেষ করে গেলডা, ওয়ালিয়া আইবেক্স এবং ইথিওপিয়ান নেকড়ে ("সিমিয়েন ফক্স")।উচ্চতার বিস্তৃত পরিসর দেশটিকে বিভিন্ন পরিবেশগতভাবে স্বতন্ত্র অঞ্চল দিয়েছে এবং এটি পরিবেশগত বিচ্ছিন্নতায় স্থানীয় প্রজাতির বিবর্তনকে উত্সাহিত করতে সহায়তা করেছে।
জাতিটি একটি ভৌগোলিক বৈপরীত্যের দেশ, বিস্তীর্ণ উর্বর পশ্চিমে, এর বনাঞ্চল এবং অসংখ্য নদী, এর উত্তরে বিশ্বের সবচেয়ে উষ্ণতম বসতি ডাল্লোল পর্যন্ত বিস্তৃত।ইথিওপিয়ান হাইল্যান্ডস হল আফ্রিকার বৃহত্তম ক্রমাগত পর্বতশ্রেণী এবং সোফ ওমর গুহা মহাদেশের বৃহত্তম গুহা ধারণ করে।ইথিওপিয়াতে আফ্রিকার দ্বিতীয় বৃহত্তম ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট রয়েছে। [27]
প্রধান জলবায়ুর ধরন হল গ্রীষ্মমণ্ডলীয় বর্ষা, বিস্তৃত টপোগ্রাফিক-প্ররোচিত বৈচিত্র সহ।ইথিওপিয়ান পার্বত্য অঞ্চলগুলি দেশের বেশিরভাগ অংশ জুড়ে রয়েছে এবং একটি জলবায়ু রয়েছে যা নিরক্ষরেখার অনুরূপ কাছাকাছি অবস্থিত অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় সাধারণত যথেষ্ট শীতল।দেশের বেশিরভাগ প্রধান শহরগুলি প্রায় ২,০০০–২,৫০০ মি (৬,৫৬২–৮,২০২ ফু) উচ্চতায় অবস্থিত সমুদ্রপৃষ্ঠের উপরে, ঐতিহাসিক রাজধানী যেমন গন্ডার এবং আক্সাম সহ।
আধুনিক রাজধানী, আদ্দিস আবাবা, মাউন্ট এন্টোটোর পাদদেশে প্রায় ২,৪০০ মিটার (৭,৯০০ ফু) ) উচ্চতায় অবস্থিত ।এটি সারা বছর একটি হালকা জলবায়ু অনুভব করে।সারা বছর তাপমাত্রা মোটামুটি অভিন্ন থাকায়, আদ্দিস আবাবায় ঋতুগুলি মূলত বৃষ্টিপাত দ্বারা সংজ্ঞায়িত করা হয়: অক্টোবর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত একটি শুষ্ক ঋতু, মার্চ থেকে মে পর্যন্ত একটি হালকা বৃষ্টির ঋতু এবং জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত একটি ভারী বর্ষাকাল।গড় বার্ষিক বৃষ্টিপাত প্রায় ১,২০০ মিলিমিটার (৪৭ ইঞ্চি) ।
প্রতিদিন গড়ে সাত ঘণ্টা রোদ থাকে।শুষ্ক ঋতুটি বছরের সবচেয়ে রৌদ্রোজ্জ্বল সময়, যদিও জুলাই এবং আগস্টে বর্ষাকালের উচ্চতায় এখনও সাধারণত প্রতিদিন কয়েক ঘন্টা উজ্জ্বল রোদ থাকে।আদ্দিস আবাবায় গড় বার্ষিক তাপমাত্রা ১৬ °সে (৬০.৮ °ফা), দৈনিক সর্বোচ্চ তাপমাত্রা গড় ২০–২৫ °সে (৬৮.০–৭৭.০ °ফা) সারা বছর ধরে, এবং রাতারাতি সর্বনিম্ন গড় ৫–১০ °সে (৪১.০–৫০.০ °ফা) ।
ইথিওপিয়ার বেশিরভাগ প্রধান শহর এবং পর্যটন সাইটগুলি আদ্দিস আবাবার সমান উচ্চতায় অবস্থিত এবং একটি তুলনামূলক জলবায়ু রয়েছে।কম উঁচু অঞ্চলে, বিশেষ করে ইথিওপিয়ার পূর্বে নীচে অবস্থিত ইথিওপিয়ান জেরিক তৃণভূমি এবং গুল্মভূমিতে, জলবায়ু উল্লেখযোগ্যভাবে গরম এবং শুষ্ক হতে পারে।ডালোল, এই পূর্বাঞ্চলের ডানাকিল নিম্নচাপে, বিশ্বের সর্বোচ্চ গড় বার্ষিক তাপমাত্রা ৩৪ °সে (৯৩.২ °ফা) ।
ইথিওপিয়া জলবায়ু পরিবর্তনের অনেক প্রভাবের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।এর মধ্যে রয়েছে তাপমাত্রা বৃদ্ধি এবং বৃষ্টিপাতের পরিবর্তন।এই ধরনের জলবায়ু পরিবর্তন খাদ্য নিরাপত্তা এবং অর্থনীতিকে হুমকির মুখে ফেলে, যা কৃষিভিত্তিক। [28] অনেক ইথিওপিয়ান তাদের বাড়িঘর ছেড়ে উপসাগর, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ইউরোপ পর্যন্ত যেতে বাধ্য হয়েছে। [29]
এপ্রিল 2019 সাল থেকে, ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদ বিউটিফাইং শেগারকে প্রচার করেছেন, একটি উন্নয়ন প্রকল্প যার লক্ষ্য হল জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব - অন্যান্য জিনিসগুলির মধ্যে - কমানো - রাজধানী শহর আদ্দিস আবাবায়। [30] পরের মে মাসে, সরকার "ডাইন ফর শেগার" এর আয়োজন করেছিল, একটি তহবিল সংগ্রহের ইভেন্ট যাতে $1 এর মধ্যে কিছু কভার করা যায়। জনসাধারণের মাধ্যমে বিলিয়ন প্রয়োজন। [31] $25 ব্যয়বহুল ইভেন্টের মাধ্যমে মিলিয়ন উত্থাপিত হয়েছিল, উপস্থিতি এবং অনুদানের খরচ উভয়ের মাধ্যমে। [32] চীন এবং ইথিওপিয়ার মধ্যে বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের অধীনে দুটি চীনা রেল কোম্পানি মোট 56 কিলোমিটারের মধ্যে 12টি উন্নয়নের জন্য তহবিল সরবরাহ করেছিল। [33]
ইথিওপিয়ায় 31টি স্থানীয় প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী রয়েছে। [34] আফ্রিকান বন্য কুকুর প্রাগৈতিহাসিকভাবে এই অঞ্চলে ব্যাপকভাবে বিস্তৃত ছিল।যাইহোক, ফিনিচা'এ শেষ দেখার সাথে, এই ক্যানিডটি সম্ভাব্য স্থানীয়ভাবে বিলুপ্ত বলে মনে করা হয়।ইথিওপিয়ান নেকড়ে সম্ভবত ইথিওপিয়ার সমস্ত বিপন্ন প্রজাতির মধ্যে সবচেয়ে বেশি গবেষণা করা হয়েছে।
ইথিওপিয়া এভিয়ান বৈচিত্র্যের একটি বিশ্বব্যাপী কেন্দ্র।আজ অবধি ইথিওপিয়ায় 856 টিরও বেশি পাখির প্রজাতি রেকর্ড করা হয়েছে, যার মধ্যে বিশটি দেশটিতে স্থানীয়। [35] ষোলটি প্রজাতি বিপন্ন বা সমালোচনামূলকভাবে বিপন্ন।এই পাখিদের অনেকগুলি প্রজাপতি খাওয়ায়, যেমন বাইসাইক্লাস অ্যানানা । [36]
ঐতিহাসিকভাবে, সমগ্র আফ্রিকা মহাদেশ জুড়ে, বন্যপ্রাণীর জনসংখ্যা দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে লগিং, গৃহযুদ্ধ, দূষণ, শিকার এবং অন্যান্য মানবিক কারণের কারণে। [37] একটি 17 বছরের দীর্ঘ গৃহযুদ্ধ, গুরুতর খরা সহ, ইথিওপিয়ার পরিবেশগত অবস্থাকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করেছিল, যার ফলে আবাসস্থলের আরও বৃহত্তর অবক্ষয় ঘটে। [38] বাসস্থান ধ্বংস একটি কারণ যা বিপন্নতার দিকে পরিচালিত করে।যখন একটি বাসস্থানে পরিবর্তন দ্রুত ঘটে, তখন প্রাণীদের সামঞ্জস্য করার সময় থাকে না।মানবিক প্রভাব অনেক প্রজাতিকে হুমকির মুখে ফেলে, গ্রিনহাউস গ্যাস দ্বারা প্রবর্তিত জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে আরও বেশি হুমকি প্রত্যাশিত৷ [39] 2010 সালে 6,494,000 টন কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমনের সাথে, ইথিওপিয়া গ্রীনহাউস গ্যাসের বার্ষিক মানব সৃষ্ট মুক্তিতে অবদান রাখে মাত্র 0.02%। [40]
ইথিওপিয়াতে অনেক প্রজাতি রয়েছে যা সমালোচনামূলকভাবে বিপন্ন এবং বিশ্বব্যাপী বিলুপ্তির ঝুঁকিতে রয়েছে।ইথিওপিয়াতে বিপন্ন প্রজাতিগুলিকে তিনটি বিভাগে বিভক্ত করা যেতে পারে ( আইইউসিএন রেটিংগুলির উপর ভিত্তি করে): সমালোচনামূলকভাবে বিপন্ন, বিপন্ন এবং দুর্বল । [34]
ইথিওপিয়া বিশ্বের চাষকৃত উদ্ভিদের উৎপত্তির আটটি মৌলিক এবং স্বাধীন কেন্দ্রের একটি । [41] যাইহোক, বন উজাড় করা ইথিওপিয়ার জন্য একটি প্রধান উদ্বেগের কারণ গবেষণায় দেখা গেছে যে বনের ক্ষতি মাটির ক্ষয়, মাটিতে পুষ্টির ক্ষতি, প্রাণীর আবাসস্থলের ক্ষতি এবং জীববৈচিত্র্য হ্রাসে অবদান রাখে।20 শতকের শুরুতে, প্রায় 420,000 ইথিওপিয়ার ভূমির 2 কিমি (বা 35%) বৃক্ষ দ্বারা আচ্ছাদিত ছিল, কিন্তু সাম্প্রতিক গবেষণা ইঙ্গিত করে যে বনের আচ্ছাদন এখন প্রায় 11.9% এলাকা। [42] দেশটির একটি 2018 ফরেস্ট ল্যান্ডস্কেপ ইন্টিগ্রিটি ইনডেক্স মানে 7.16/10 স্কোর ছিল, এটি 172টি দেশের মধ্যে বিশ্বব্যাপী 50তম স্থানে রয়েছে। [43]
ইথিওপিয়া আনুমানিক 1,410 হারায় প্রতি বছর প্রাকৃতিক বনের 2 কিমি.1990 থেকে 2005 সালের মধ্যে দেশটি প্রায় 21,000 হারিয়েছে বনের 2 কিমি। [44] বন উজাড় নিয়ন্ত্রণের জন্য বর্তমান সরকারী কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে শিক্ষা, পুনর্বনায়ন কর্মসূচির প্রচার, এবং কাঠের বিকল্প কাঁচামাল সরবরাহ করা।গ্রামীণ এলাকায় সরকার বনের আবাসস্থল ধ্বংস না করে কৃষিকে উন্নীত করার জন্য অ-কাঠের জ্বালানীর উত্স এবং অ-বনভূমিতে অ্যাক্সেস সরবরাহ করে। [45]
এসওএস এবং ফার্ম আফ্রিকার মতো সংস্থাগুলি বন ব্যবস্থাপনার একটি ব্যবস্থা তৈরি করতে ফেডারেল সরকার এবং স্থানীয় সরকারগুলির সাথে কাজ করছে। [46] প্রায় 2.3 অনুদানের সাথে কাজ করা মিলিয়ন ইউরো, ইথিওপিয়ান সরকার সম্প্রতি ক্ষয় কমাতে এবং সঠিক সেচ কৌশল ব্যবহার করার জন্য লোকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু করেছে যা বন উজাড় করতে অবদান রাখে না।এই প্রকল্পটি 80 টিরও বেশি সম্প্রদায়কে সহায়তা করছে।
ইথিওপিয়ান এয়ারলাইনস, স্টার অ্যালায়েন্সের সদস্য, দেশটির পতাকাবাহী সংস্থা, এবং এটি সম্পূর্ণভাবে ইথিওপিয়া সরকারের মালিকানাধীন। [47] বোলে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তার হাব থেকে, এয়ারলাইনটি 102 আন্তর্জাতিক যাত্রী, 20টি অভ্যন্তরীণ যাত্রী এবং 44টি কার্গো গন্তব্যের একটি নেটওয়ার্ক পরিষেবা দেয়। [48][49] এটি শিল্প এবং মহাদেশের দ্রুততম বর্ধনশীল ক্যারিয়ারগুলির মধ্যে একটি। [50]
এই অনুচ্ছেদটি সম্প্রসারণ করা প্রয়োজন। |
ইথিওপিয়াকে বলা হয় বহুজাতিক ও বৈচিত্রময় সংস্কৃতির দেশ। ইথিওপিয়ার কিছু বিশেষ শিষ্টাচার আছে, যার মধ্যে অভিবাদন অন্তর্ভুক্ত, ঐতিহাসিকভাবে যা করমর্দন না করার কথা বলে। জটিল সামাজিক ব্যবস্থার জন্য তারা খ্যাত যার মধ্যে পড়ে আইন ও নিয়মের সাথে সামঞ্জস্যতা, শালীনতা ও অতিথিপরায়ণতা। [৪২৪][৪২৫]
ইথিওপিয়া ও ইরিত্রিয়া তে কফি পরিবেশন পদ্ধতি অন্যান্য দেশের মত না। কফি পরিবেশন করা হয় সামাজিক মিলন অনুষ্ঠানে সেটা হতে পারে পরিবারের সদস্যদের, বন্ধুদের অথবা প্রতিবেশীদের। ৩ পর্বে কফি পান করা হয়, প্রথম পর্বকে বলা হয় "আওল", দ্বিতীয়টিকে "টোনা" ও তৃতীয়টিকে "বারাকা" নামে ডাকা হয়। কফির ইতিহাস বলতে গেলে কেফফা এলাকার কালদি নামে এক ছাগলের রাখালের কথা উঠে আসে, যিনি দেখেছিলেন তার ছাগলগুলো একটি গুল্ম জাতীয় গাছ খেয়ে ফেলার পর উত্তেজিত হয়ে উঠেছে এবং উন্মত্ততার সাথে নাচানাচি করছে। এরপর সেই গাছের ফলগুলো নিয়ে তিনি কাছের একটি আশ্রমের যাজকদের কাছে যান। এক সন্ন্যাসী তার এহেন কাজকে "শয়তানের কাজ" বলে আখ্যা দেন ও ফলগুলো আগুনে ফেলে দেন যেটা সুগন্ধ তৈরি করে। জনশ্রুতি আছে যে কালদি ৮৫০ খ্রিষ্টাব্দে বাস করতেন এবং এ থেকে ধারণা করা হয় যে নবম শতাব্দী থেকে ইথিওপিয়াতে কফি চাষ শুরু হয়। [৩২৮]
গ্রীক নাম Αἰθιοπία ( Αἰθίοψ থেকে, Aithiops, "an Ethiopian") একটি যৌগিক শব্দ। এ নামটি দুটি গ্রীক শব্দ থেকে উদ্ভূত। αἴθω + ὤψ ( aithō অর্থ "আমি পোড়া" + ōps অর্থ "মুখ")।
ঐতিহাসিক হেরোডোটাস সাহারার দক্ষিণ আফ্রিকার সেই অংশগুলিকে বোঝাতে এই নামটি ব্যবহার করেছিলেন। এ নামটি তখন ইকুমেন (বাসযোগ্য বিশ্ব) এর মধ্যে পরিচিত ছিল। [51] যেহেতু গ্রীকরা এই শব্দটিকে "অন্ধকারমুখী" হিসাবে বোঝে, তাই তারা ইথিওপিয়ানদের দুটি ভাগে বিভক্ত করেছিল: আফ্রিকায় বসবাসকারী ইথিওপিয়ান এবং তুরস্ক থেকে ভারত পর্যন্ত অঞ্চলে বসবাসকারী ইথিওপিয়ান। [52] এই গ্রীক নামটি আমহারিক ভাষায় ኢትዮጵያ বাʾĪtyōṗyā হিসাবে ব্যবহৃত হয়েছিল।
গ্রেকো - রোমান এপিগ্রাফে, ইথিওপিয়া ছিল প্রাচীন নুবিয়ার একটি নির্দিষ্ট উপনাম। [53] অন্তত ৮৫০ সালের আগে,[54] নুবিয়া নামের অনুবাদ হিসেবে ইথিওপিয়া নামটি ওল্ড টেস্টামেন্টের অনেক অনুবাদে পাওয়া যায়। প্রাচীন হিব্রু গ্রন্থগুলি নুবিয়াকে কুশ হিসাবে চিহ্নিত করে। [55] যাইহোক, নিউ টেস্টামেন্টে কুশের রাণী কান্দাকের একজন দাসকে উল্লেখ করার জন্য গ্রীক শব্দ আইথিওপসের ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়।[56]
হেলেনিক এবং বাইবেলের ঐতিহ্য অনুসরণ করে আকসুমাইট সাম্রাজ্যের অন্তর্গত তৃতীয় শতাব্দীর শিলালিপি মনুমেন্টাম অ্যাডুলিটানাম ইঙ্গিত করে যে আকসুমের তৎকালীন শাসক এমন একটি এলাকা শাসন করতেন যা পশ্চিমে ইথিওপিয়া এবং সাসু অঞ্চলের সংলগ্ন ছিল।
আকসুমাইট রাজা ইজানা শেষ পর্যন্ত পরের শতাব্দীতে নুবিয়া জয় করেন এবং তারপরে আকসুমাইটরা তাদের নিজস্ব রাজ্যের জন্য "ইথিওপিয়ান" উপাধিটি বরাদ্দ করে। এই নতুন নামটি পরবর্তীকালে সাবাইক ভাষায় 'হবস ('আহবাশ) এবং আরবি ভাষায় হাবাশা হিসাবে উপস্থাপিত হয়েছিল। [53]
১৫তম শতাব্দীর গিজ বুক অফ অ্যাক্সাম-এ ইতিওপ'স নামে একজন কিংবদন্তি ব্যক্তির নাম হিসেবে এ শব্দটি উল্লেখ করা হয়েছে।ইতিওপস ছিলেন হ্যামের পুত্র। বলা হয় যে ইতিওপস অ্যাক্সাম শহরটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। [57]
ইংরেজিতে এবং ইথিওপিয়ার বাইরে এই দেশটি ঐতিহাসিকভাবে আবিসিনিয়া নামে পরিচিত ছিল।এই শীর্ষস্থানীয় নামটি প্রাচীন হাবাশের ল্যাটিনাইজড ফর্ম থেকে উদ্ভূত হয়েছিল। [58]
বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার ইথিওপিয়া এবং এর আশেপাশের অঞ্চলকে এগিয়ে নিয়ে গেছে। ইথিওপিয়ায় এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত প্রাচীনতম হোমিনিড হল ১৯৯৪ সালে টিম ডি. হোয়াইট দ্বারা আবিষ্কৃত ৪.২ মিলিয়ন বছর পুরানো আর্ডিপিথিকাস রামিডাস (আরডি) [59] সবচেয়ে সুপরিচিত হোমিনিড আবিষ্কার হল Australopithecus afarensis ( Lucy )। স্থানীয়ভাবে ডিনকিনেশ নামে পরিচিত নমুনাটির সন্ধান পান ডোনাল্ড জোহানসন। তিনি ১৯৭৪ সালে আফার অঞ্চলের আওয়াশ উপত্যকায় এটির সন্ধান পান। এটি এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত প্রাপ্তবয়স্ক অস্ট্রালোপিথেসাইন জীবাশ্মগুলির মধ্যে সবচেয়ে সম্পূর্ণ এবং সেরা সংরক্ষিত। এই হোমিনিড ৩.২ মিলিয়ন বছর আগে বেঁচে ছিল বলে অনুমান করা হয়। [60][61][62]
ইথিওপিয়া শারীরবৃত্তীয়ভাবে আধুনিক মানুষ বা হোমো সেপিয়েন্সের আবির্ভাবের প্রথম দিকের স্থানগুলির একটি। এই স্থানীয় জীবাশ্মগুলির মধ্যে প্রাচীনতম ওমো দেহাবশেষগুলি দক্ষিণ-পশ্চিম ওমো কিবিশ এলাকায় খনন করা এলাকায় পাওয়া গিয়েছে। এগুলো দুই লক্ষ বছর আগে মধ্য প্যালিওলিথিক যুগের দেহাবশেষ বলে মনে করা হয়। [63] উপরন্তু, মধ্য আওয়াশ উপত্যকার একটি স্থানে হোমো সেপিয়েন্স ইডাল্টুর কঙ্কাল পাওয়া গেছে। আনুমানিক ১,৬০,০০০ বছর আগে তারা হোমো সেপিয়েন্সের একটি বিলুপ্ত উপ-প্রজাতি ছিল। তারা শারীরবৃত্তীয় আধুনিক মানুষের পূর্বপুরুষদের প্রতিনিধি ছিল। [64] মরক্কোর জেবেল ইরহাউড সাইটে খনন করা প্রত্নতাত্ত্বিক হোমো সেপিয়েন্সের জীবাশ্মগুলি প্রায় ৩,০০,০০০ বছর আগে প্রাপ্ত [65] তবে দক্ষিণ ইথিওপিয়ার ওমো-কিবিশ আই (Omo I) বর্তমানে প্রাচীনতম শারীরবৃত্তীয় আধুনিক হোমো স্যাপিয়েন্স কঙ্কাল হিসেবে পরিচিত। [66]
ভাষাবিদদের মতে, নীল উপত্যকা,[18] বা নিকট প্রাচ্যের পরিবারের প্রস্তাবিত উরহেইমাট ("আসল জন্মভূমি") থেকে পরবর্তী নিওলিথিক যুগে এই অঞ্চলে প্রথম আফ্রোএশিয়াটিক-ভাষী জনগোষ্ঠীর আগমন ঘটে। [67] অন্যান্য পণ্ডিতরা প্রস্তাব করেন যে আফ্রোএশিয়াটিক জনগোষ্ঠী হর্নের সিটুতে বসতি স্থাপন করেছিল এবং পরবর্তী সময়ে তাদের উত্তরাধিকারীরা সেখান থেকে বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছিল। [68]
২০১৯ সালে প্রত্নতাত্ত্বিকরা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩,৪৬৯ মিটার উচ্চতায় বেল পর্বতমালার ফিঞ্চা হাবেরা সাইটে ৩০,০০০ বছরের পুরনো মধ্য-প্রস্তর যুগের একটি শিলাশ্রয় খুঁজে পেয়েছেন। এই উচ্চতায় মানুষ হাইপোক্সিয়া এবং চরম আবহাওয়া উভয়ের জন্যই সংবেদনশীল।সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত একটি সমীক্ষা অনুসারে, এই বাসস্থানটি প্রাচীনতম মানুষের পেশার প্রমাণ। এখানে হাজার হাজার প্রাণীর হাড়, শত শত পাথরের সরঞ্জাম এবং প্রাচীন অগ্নিকুণ্ড আবিষ্কৃত হয়েছে। [69][70][71][72][73][74][75]
২০১৩ সালে ইথিওপিয়ান গাদেমোত্তার সাইট থেকে আবিষ্কৃত হয়েছিল প্রাচীনতম হোমো সেপিয়েন্সের একটি বৈশিষ্ট্যযুক্ত হাতিয়ার এবং জ্যাভেলিন বা বর্শা নিক্ষেপের পাথর। এসব অস্ত্র প্রায় ২,৭৯,০০০ বছর আগের পুরাতন। [76][77]
ইথিওপিয়া ল্যান্ড অফ পান্টের (২৫০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ - ৯৮০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ) অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল। [78] Dmt ছিল বর্তমান ইরিত্রিয়া এবং ইথিওপিয়ার টাইগ্রে অঞ্চলের প্রাচীনতম সুসংগঠিত রাজ্য। এটি ৯৮০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের কাছাকাছি সময়ে গঠিত হয়। এটি দক্ষিণ আরবের কাছাকাছি অঞ্চলে অবস্থিত ছিল। ইয়েমেনের রাজধানী ইয়েহাতে অবস্থিত ছিল, যা এখন উত্তর ইথিওপিয়ার অংশ। বেশিরভাগ আধুনিক ইতিহাসবিদরা এই সভ্যতাটিকে স্থানীয় ইথিওপিয়ান সভ্যতার অংশ বলে মনে করেন। তবে পূর্ববর্তী সময়ে অনেক ইতিহাসবিদ উল্লেখ করেছিলেন, এটি লোহিত সাগরের আধিপত্যের কারণে সাবীয় জাতি দ্বারা প্রভাবিত ছিল। [21]
অন্যান্য পণ্ডিতরা D'mt সভ্যতাকে কুশিটিক এবং সেমেটিক শাখার আফ্রো-এশিয়াটিক ভাষী সংস্কৃতির মিলনের ফলাফল হিসাবে গণ্য করেন। যেমন স্থানীয় আগাও জনগণ এবং দক্ষিণ আরবের সাবায়িয়ানরা একসাথে ইথিওপিয়ায় বসবাস করতেন। যাইহোক, ইথিওপিয়ার প্রাচীন সেমেটিক ভাষা হল গিজ। দক্ষিণ সেমেটিক ভাষাগুলির মধ্যকার সাবায়িয়ান ভাষা থেকে স্বাধীনভাবে বিকশিত হয়েছে বলে মনে করা হয়। ২০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের গোড়ার দিকে অনেক সেমেটিক ভাষাভাষী ইথিওপিয়া এবং ইরিত্রিয়াতে বসবাস করছিলেন যেখানে গিজ ভাষার বিকাশ ঘটেছিল। [79][80] পরবর্তীতে সাবায়িয়ান প্রভাব তুলনামূলক গৌণ এবং কয়েকটি এলাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে গিয়েছিল। কয়েক দশক বা এক শতাব্দী পরে অদৃশ্য হয়ে গেছে বলে মনে করা হয়। এটি ডিএমটি বা অন্য কোন প্রোটো-অ্যাক্সুমাইট রাষ্ট্রের ইথিওপিয়ান সভ্যতার সাথে জোটবদ্ধভাবে একটি বাণিজ্য বা সামরিক উপনিবেশ গঠনের ফলে হতে পারে। [21]
খ্রিস্টপূর্ব চতুর্থ শতাব্দীতে Dʿmt-এর পতনের পর, ইথিওপিয়ান মালভূমিতে ছোট উত্তরসূরি রাজ্যের আধিপত্য আসে। খ্রিস্টীয় প্রথম শতাব্দীতে, আকসুম রাজ্যের আবির্ভাব ঘটে যা বর্তমান টাইগ্রে অঞ্চল এবং ইরিত্রিয়া নিয়ে গঠিত। মধ্যযুগীয় বুক অফ অ্যাক্সাম অনুসারে, রাজ্যের প্রথম রাজধানী মাজাবের নামক অঞ্চলে স্থাপন করা হয়েছিল। এটি কুশের পুত্র ইতিওপিস দ্বারা নির্মিত হয়েছিল। [57] আকসুম শাসন একসময়ে লোহিত সাগরের অপর পারে ইয়েমেন পর্যন্ত দখল করার মাধ্যমে রাজ্য প্রসারিত করেছিল। [81] পার্সিয়ান নবী মানি ৩য় শতাব্দীতে রোম, পারস্য এবং চীনের সাথে আক্সামকে তার যুগের চারটি মহান শক্তির একটি হিসাবে তালিকাভুক্ত করেছিলেন। [82] এটিও বিশ্বাস করা হয় যে এক সময়ে মিশরীয় এবং ইথিওপিয়ান গীর্জার মধ্যে একটি সংযোগ ছিল। আকসুমাইটরা তাদের রাজকীয় শিলালিপির মাধ্যমে শেবার রাণীর সাথে যুক্ত ছিল এমন প্রমাণ রয়েছে, তবে তা নগণ্য প্রমাণ হিসেবে গণ্য করা হয়। [83]
৩১৬ খ্রিস্টাব্দের দিকে ফ্রুমেন্টিয়াস এবং তার ভাই এডেসিয়াস টায়ার থেকে তাদের চাচার সাথে ইথিওপিয়ায় সমুদ্রযাত্রায় গিয়েছিলেন। যখন জাহাজটি একটি লোহিত সাগর বন্দরে থামে, তখন স্থানীয়রা দুই ভাই ছাড়া সমস্ত যাত্রীকে হত্যা করে এবং তাদেরকে দাস হিসাবে আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। রাজা তাদের প্রশাসনিক উচ্চ পদ দিয়েছিলেন এবং তারা রাজদরবারের সদস্যদের খ্রিস্টান ধর্মে রূপান্তরিত করেছিলেন। ফ্রুমেন্টিয়াস আকসুমের প্রথম বিশপ হন। [84] ৩২৪ সালের একটি মুদ্রা প্রদর্শন করে যে যে ইথিওপিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে খ্রিস্টান ধর্ম গ্রহণকারী দ্বিতীয় দেশ ছিল (আর্মেনিয়া ৩০১ সালে প্রথমবারের মতো নিজেদের খ্রিস্টান রাজ্য হিসেবে ঘোষণা দেয়)। তবে ধর্মটি প্রথমে আদালতের বৃত্তের মধ্যকার অঞ্চলে সীমাবদ্ধ ছিল। আকসুমাইটরা গ্রিক এবং রোমানদের সঙ্গে বাণিজ্য করতে অভ্যস্ত ছিল, কিন্তু সিল্ক রোডের মাধ্যমে ভারতীয় উপমহাদেশ এবং রোমান সাম্রাজ্যের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সাংস্কৃতিক বন্ধন এবং বাণিজ্য সংযোগ শুরু করে এবং প্রাথমিকভাবে হাতির দাঁত, কাছিমের খোল, সোনা ও পান্না রপ্তানি করে এবং মশলা ও সিল্ক আমদানি করে। [85][86][83]
চতুর্থ শতাব্দীতে ইজানার রাজত্বকালে রাজ্যটি "ইথিওপিয়া" নামটি গ্রহণ করে। ৩৩০ সালে কুশ রাজ্যের বিজয়ের পর, আকসুমাইট অঞ্চলটি ৫ম থেকে ৬ষ্ঠ শতাব্দীর মধ্যে তার শীর্ষসময়ে পৌঁছেছিল যাকে "স্বর্ণযুগ" বলা হয়। [21] ৫৭৫ সাল থেকে, আকসুমাইটরা তার চার বছরের রাজত্বকালে ইথিওপিয়ার দাসর গভর্নর সাইফ ইবনে ধী ইয়াজানকে হত্যা করার পর সানা অবরোধ করে এবং পুনরুদ্ধার করে। আদুলিস বন্দরটি ৮ম শতাব্দীতে আরব মুসলমানরা বিজয় করেন ও নিজেদের অধিকৃত করে তৎকালীন মুসলমানরা বন্দরটি, যা রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য পথের পতনের অগ্রদূত ছিল এবং ৬৪৬ সালে লোহিত সাগর রাশিদুন খিলাফতের কাছে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। [21][87]
ইথিওপিয়ার সাথে ইসলামিক নবী মুহাম্মাদ(সাঃ) প্রথম মিথস্ক্রিয়াটি ছিল আসহামা ইবনে আবজারের শাসনামলে, যিনি সেই সময়ে আক্সামের সম্রাট ছিলেন এবং ৬১৪ খ্রিস্টাব্দে আকসুম রাজ্যে বেশ কয়েকজন মুসলমানকে আশ্রয় দিয়েছিলেন। [88] অন্যান্য লেখকদের মতে, আশামা রাজা আরমাহ বা তার পিতা বা পুত্রের মতো একই ব্যক্তি হতে পারে। [89][90][91]
ইথিওপিয়ার সাথে মুহাম্মাদ সাঃ দ্বিতীয় মিথস্ক্রিয়া ছিল যায়েদ ইবনে হারিসার অভিযানের সময়। তখন তিনি আমর বিন উমাইয়া আল-দামরিকে ইথিওপিয়ার (তৎকালীন আবিসিনিয়া) রাজার কাছে পাঠান। [92]
৯ম শতাব্দীতে পৌত্তলিক রানী গুডিত আকসুমের শেষ রাজাকে পরাজিত করার মাধ্যমে অদম্য আকসুম রাজবংশের সমাপ্তি ঘটে। গুডিটের রাজত্ব ৪০ বছর ধরে চলেছিল এবং তার লক্ষ্য ছিল খ্রিস্টান ধর্মের সকল গীর্জা পুড়িয়ে দেওয়া এবং অর্থোডক্স তেওয়াহেডো চার্চের প্রতি বিশ্বস্ত লোকদের ক্রুশবিদ্ধ করা (উল্লেখ্য সেই সময়ে খ্রিস্টধর্ম বিবেচিত হয়েছিল রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে)। [93] গুডিত অনেক লোককে তাদের ধর্ম পরিবর্তন করতে বাধ্য করার চেষ্টা করেছিলেন এবং অ্যাক্সুমাইট রাজবংশের অনেক ঐতিহাসিক ঐতিহ্যকে ধ্বংস করেছিলেন যার ফলে তিনি ইয়োডিত উপাধি অর্জন করেছিল।
গুডিটের ধ্বংসযজ্ঞের ফলে আকসুমাইট জনসংখ্যার অবশিষ্টাংশ দক্ষিণাঞ্চলে স্থানান্তরিত হয় এবং জাগওয়ে রাজবংশ প্রতিষ্ঠা করে, তাই এর রাজধানী পরিবর্তন করে লালিবেলায় স্থানান্তরিত করা হয়েছিল। আনুমানিক ৯১২ সাল থেকে রাজবংশটি জাতিগত আগাও দ্বারা শাসিত হয়েছিল, যদিও বেশিরভাগ স্থানীয় সূত্র অনুসারে ১১১৩৭ সালে এ রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা মারা টাকলা হায়মানট শেষ আকসুমাইট রাজা দিল নাওদকে উৎখাত করেছিলেন এবং তার কন্যাকে বিয়ে করেছিলেন। জাগওয়ে রাজবংশ আকসুমের পরে খ্রিস্টধর্মের পুনরুজ্জীবনের জন্য পরিচিত ছিল এবং ১৩ শতকের মধ্যে খ্রিস্টধর্ম শেওয়ান অঞ্চলে পৌঁছেছিল যার ফলে পরবর্তীতে সেমিটিক আমহারা জনগোষ্ঠী গঠিত হয়েছিল। [94] জাগওয়ের অস্তিত্ব বাকি বিশ্বের কাছে অপরিচিত ছিল, তবে এটির মিশর এবং জেরুজালেমের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় ছিল। [95] মিশরে ইথিওপিয়ানদের অস্তিত্বের একটি বিরল প্রমাণ ১২ম এবং ১৩শ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে সেন্ট অ্যান্টনির মঠে গিজ পাণ্ডুলিপির খণ্ডিত অংশ আবিষ্কারের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছিল। [96] অধিকন্তু, ইথিওপিয়ানরা ১৩ শতকের অর্ধেক পর্যন্ত জেরুজালেমে বসবাসকারী হিসেবে প্রমাণিত হয়েছিল। [97] রাজা লালিবেলাকে লালিবেলা সভ্যতায় অভিযোজন করার জন্য প্রভাবিত করেছিল, যিনি অ্যাডেফাতে ১১টি একাকী গীর্জা নির্মাণের কৃতিত্বও দিয়েছিলেন। জাগওয়ের পরিচয় সম্ভবত এই সময়ে অস্পষ্ট ছিল। এমনকি রাজাদের সংখ্যা এবং শাসনকাল নিয়েও ঐতিহাসিক ও একাডেমিক অধ্যয়নের মধ্যে অনেক বিতর্ক রয়েছে।[98] পল বি. হেনজে অন্তত ১৬টি নাম সম্বলিত একটি তালিকার অস্তিত্বের কথা জানিয়েছেন। [99]
জাগওয়ের শাসনের অবসান ঘটে যখন একজন আমহারা সম্ভ্রান্ত ব্যক্তি ইয়েকুনো আমলাক শেষ রাজা ইয়েতবারকের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেন। তিনি সন্ন্যাসীর চার্চম্যানদের পৃষ্ঠপোষকতায় এটি করতে সক্ষম হয়েছিলেন। সে সময় সেন্ট টেকলে হায়মানট এবং ইস্তিফানোস মঠের মঠ আইয়াসুস মোয়া উভয়ই রাজতন্ত্রকে উৎখাত করার প্রাথমিক উদ্বেগজনক ব্যক্তিত্ব হিসেবে চিহ্নিত ছিলেন। অন্যান্য নথিপত্রে বলা হয়েছে যে তিনি জাগওয়ের রাজা জা-ইলমাকনুন দ্বারা হস্তক্ষেপের পর ১২৭০ সালে আনসাতার যুদ্ধে শোভা সালতানাতের মুসলিম রাজ্যের সাথে সহযোগিতায তাকে উৎখাত করেছিলেন। [100] তাদেসে তামরাট উল্লেখ করেছেন যে জাগওয়ের শেষ রাজা ছিলেন ইয়েতবারক কারণ তার স্পষ্ট নাম লেখা হয়নি এবং স্থানীয় ফর্মের কারণে তার নাম ড্যামনাটিও মেমোরিয়া সরকারী রেকর্ডে তালিকাভুক্ত করা নিষিদ্ধ হয়েছিল। [101] অন্যদিকে, গেটাচেউ মেকোনেন হাসেন যুক্তি দিয়েছিলেন যে শেষ রাজা ছিলেন না'কুয়েতো লা'ব । [102]
ইয়েকুনো আমলাকের সিংহাসনে আরোহণ ইথিওপিয়ান সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠা করে (যা "অ্যাবিসিনিয়া" নামে পরিচিত)। তিনি বাইবেলের সলোমন এবং শেবার রাণীর সাথে সম্পর্কিত হাউস অফ সলোমন নামে তার নতুন গঠিত রাজবংশের সাথে সম্পর্কিত একটি দাবি করেছিলেন যে মেনেলিক প্রথম তাদের রাজবংশের উদ্বোধন করেছিলেন এবং খ্রিস্টপূর্ব দশম শতকে ইথিওপিয়ার প্রথম সম্রাট ছিলেন। মধ্যযুগীয় ইথিওপিয়ান ক্রনিকল কেবরা নাগাস্ট অনুসারে (১৩২১ সালে গিজেতে অনুবাদ করা হয়েছিল) তার নাম ছিল বেইনা লাহকম ( আরবি: ابن الحكيم থেকে ), Ibn Al-Hakim, "জ্ঞানীর পুত্র" [103] )। তার বাবা সলোমন তার মা শেবার রাণীকে ঘুমের মধ্যে ফেলে দিয়েছিলেন যখন মেনেলিককে গর্ভধারণ করা হয়েছিল। তিনি ইথিওপিয়াতে একজন ইহুদি হিসাবে তার মায়ের দ্বারা বড় হয়েছিলেন এবং তার বিশ বছর বয়সে প্রথমবারের মতো জেরুজালেমে ভ্রমণ করেছিলেন। যদিও সলোমন মেনেলিককে তার অভিভাবকত্বের অধীনে থাকার জন্য অনুরোধ করেছিলেন, তবুও মেনেলিক শাসনের জন্য ইথিওপিয়ায় ফিরে আসেন। বাইবেলের অর্থ অনুসারে, সলোমন তার রাজতন্ত্রকে সমর্থন করার জন্য অনেক ইস্রায়েলীয়কে পাঠিয়েছিলেন এবং ইথিওপিয়ার রাজার স্মরণার্থে চুক্তির সিন্দুক দেয়ার প্রস্তাব করেছিলেন। তার মা মারা গেলে শীঘ্রই তাকে রাজা হিসাবে মুকুট দেওয়া হয়েছিল। আইন ৮ :২৬-৪০ এ উল্লেখিত কিংবদন্তি প্রসঙ্গে ইথিওপিয়া থেকে জেরুজালেমে তীর্থযাত্রায় ইথিওপিয়ান রাজকীয় কর্মকর্তার ১ম শতাব্দীর বিবরণ চিত্রিত হয়েছে। [104][105][106][107][108]
১৫ শতকের গোড়ার দিকে, ইথিওপিয়া আকসুমাইট যুগের পর প্রথমবারের মতো ইউরোপীয় রাজ্যগুলির সাথে কূটনৈতিক যোগাযোগ করতে চেয়েছিল। ইথিওপিয়ান সম্রাটের কাছে ইংল্যান্ডের চতুর্থ হেনরির একটি চিঠি রক্ষিত আছে। [109] ১৪২৮ সালে, ইয়েশাক আমি আরাগনের আলফোনসো ভি-এর কাছে দুইজন দূত পাঠান। [110] ইউরোপীয় দেশের সাথে প্রথম অবিচ্ছিন্ন সম্পর্ক শুরু হয়েছিল ১৫০৮ সালে পর্তুগালের সাথে দাওয়িত দ্বিতীয়(লেবনা দেঙ্গেল) এর শাসনামলে, যিনি তার পিতার কাছ থেকে উত্তরাধিকারসূত্রে সিংহাসন পেয়েছিলেন। [111] ১৪৮৭ সালে, পর্তুগালের রাজা দ্বিতীয় জন পেরো দা কোভিলহা এবং আফনসো নামক দুইজন দূতকে প্রাচ্যে পাঠান। ডি পাইভা আফনসো এই মিশনে মারা যান। [112]
ইথিওপিয়ান সাম্রাজ্য আঞ্চলিক সম্প্রসারণ শুরু করেছিল শক্তিশালী নেতা আমদা সিওন প্রথমের আমল থেকে। তিনি ১৪ শতকে এই অঞ্চলের প্রথম মুসলিম রাষ্ট্র ইফাত সালতানাত জয় করেছিলেন। [113] সাদ আদ-দীন দ্বিতীয় ছিলেন ইফাতের অন্যতম প্রধান শাসক। তার শাসনামল স্বল্পস্থায়ী হওয়া সত্ত্বেও আবিসিনিয়ান সম্রাটদের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী মারাত্মক যুদ্ধের জন্য তিনি পরিচিত ছিলেন। তার উত্তরসূরি আদল সালতানাত ১৪১৩ সালে বর্তমান সোমালিল্যান্ডে অবস্থিত জেলিয়াতে রাজধানী প্রতিষ্ঠা করেছিল। [114] আত্মসমর্পণের পর হাদিয়া রাজকুমারী এলেনির সাথে ইথিওপিয়ার সম্রাট জারা ইয়াকবের মধ্যে আন্তঃবিবাহ সম্পর্কিত কারণের ফলে শত্রুতা দৃশ্যমান হয়ে ওঠে।
অটোমান তুর্কিদের দ্বারা সমর্থিত অ্যাডালরা ১৫২৯ সালে ইমাম আহমাদ ইবনে ইব্রাহিম আল-গাজি (আহমেদ গ্রান) বাহিনীর অধীনে ইথিওপিয়ান সাম্রাজ্য দখল করার চেষ্টা করে, যা ইথিওপিয়ান-আদল যুদ্ধের সূচনা করে। অ্যাডালরা ইম্পেরিয়াল রেগালিয়ার মতো বেশ কয়েকটি সম্পত্তি দখল করেছিল এবং অ্যাট্রোনসা মরিয়ম সহ বেশ কয়েকটি গীর্জা ধ্বংস করেছিল। [115] ১৫৪০ সালে দাউয়িত দ্বিতীয়র মৃত্যুর ফলে তার পুত্র মেনাস এবং সম্রাজ্ঞী এলেনিকে ইমাম অবরুদ্ধ করে রেখেছিলেন। [116] ক্রিস্টোভাও দা গামা যুদ্ধে একটি বিশিষ্ট ভূমিকা পালন করেছিলেন। তিনি তৎকালীন ইরিত্রিয়ান রাজ্য মেদ্রি বাহরির বন্দর মাসাওয়া হয়ে ইথিওপিয়ান সাম্রাজ্যকে ৪০০ মাস্কেটিয়ার দিয়ে সাহায্য করেছিলেন,তার অত্যাবশ্যক প্রচেষ্টা অবশেষে ওফলা যুদ্ধে (১৫৪২) তার মৃত্যু ঘটায়। অন্যদিকে, মেদরি বাহরি শাসক ইয়েশাক পর্তুগিজ সৈন্যদের সাথে ৫০০ জন মাস্কেটিয়ার এবং যুদ্ধক্ষেত্রের তথ্য নিয়ে এগিয়ে যান। ১৫৪৩ সালে, সম্রাট গেলাউডেওসের নেতৃত্বে আবিসিনিয়ান সৈন্যরা ওয়েনা দাগার যুদ্ধে অ্যাডাল বাহিনীকে চূড়ান্তভাবে পরাজিত করে এবং দা গামার মৃত্যুর প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য আক্রমণ শুরু করে। জোয়াও দ্য গ্যালিসিয়ান নামে পর্তুগিজ মাস্কেটিয়ারের বিবরণ অনুসারে ইমাম মারাত্মকভাবে আহত হন। তার মৃত্যু দেখে আদাল সৈন্যরা অবিলম্বে এলাকাটি প্রত্যাহার করে। [117]
ততদিনে আদাল সালতানাত সম্পূর্ণরূপে বিপর্যস্ত হয়নি। ইমামের ভাতিজা আমির নুর ইবনে মুজাহিদ আহমেদের তৎকালীন স্ত্রী বাতি দেল ওয়াম্বারার সাথে বিবাহের পর ক্ষমতা পুনরুজ্জীবিত করেছিলেন। [118] তাদের বিবাহ ইমামের মৃত্যুর পাল্টা আক্রমণাত্মক প্রতিশোধের মাধ্যমে আবিসিনিয়ান অস্তিত্বকে জড়িয়ে ফেলে, যার ফলে নূর ইবনে মুজাহিদ আবিসিনিয়ান শহর ওয়াজকে বরখাস্ত করেন এবং ফাটাগারের যুদ্ধে (১৫৫৯) গেলাউদেওসকে পরাজিত ও শিরচ্ছেদ করেন। [119][120] জবাবে, আবিসিনিয়ান রাস হামালমাল আদল শহর হারারকে বরখাস্ত করে এবং সুলতান বারাকাত ইবনে উমর দিনকে ঘেরাও করে এবং হত্যা করে [121][122] অনেক ইতিহাসবিদদের মতে, এই দ্বন্দ্বগুলি প্রমাণ করে যে ইথিওপিয়া এবং সোমালিয়ার আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক সম্পর্কের সূচনা হয়েছে এবং এর পথ প্রশস্ত করেছে। ১৬ শতকের ওরোমোরা উত্তরের উচ্চভূমিতে স্থানান্তরিত হয়। [123]
১৬ শতকে মধ্যযুগের শেষের দিকে, এই অঞ্চলের উত্তর অংশে জাতিগত ওরোমোর অভিবাসন প্রবাহ সাম্রাজ্যের শক্তিকে খণ্ডিত করে, যাকে " বৃহত্তর ওরোমো সম্প্রসারণ " বলা হয়। বর্তমানের গুজি এবং বোরেনা জোন নামক ফোকাল এলাকা থেকে যাত্রা শুরু করে এ যাত্রা শুরু হয়। ওরোমোস জনগোষ্ঠী মূলত বেশ কিছু লোকসাহিত্যিক ধারণা দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিল - মোগ্গাসা [124] এবং লিকিমসা [125] - যার মধ্যে অনেকগুলি অংশ তাদের অভিযানের সাথে সম্পর্কিত। [126] [127] আব্বা বাহরির মতে, সম্রাট দ্বিতীয় দাউইট (লুবা মেলবাহ) এর অধীনে রাজ্যটির প্রথম সম্প্রসারণ ঘটেছিল, যখন তারা আদাল সালতানাতের (আহমেদ গুরে) আক্রমণ করার আগে বেলে দখল করেছিল। [128]
ওরোমো আন্দোলনের "স্কাউটিং, নাইট টাইম সারপ্রাইজ অ্যাটাক এবং সেটেলমেন্ট" এ তিনটি আক্রমণ ১৫৩০ সালে সংঘটিত হয়েছিল। তারা রাতের বেলা অ্যামবুশ করে বিচ্ছিন্ন সম্প্রদায়ের সাথে যোদ্ধা শত্রুদের খতম করার জন্য শুরু হয়েছিল। তারপর যোদ্ধা শ্রেণীকে হত্যা করার পরে আক্রমণকারীরা অবরুদ্ধ সম্প্রদায়কে একত্রিত করতে শুরু করে।
সম্রাট সার্সা ডেঙ্গেল ( শা. ১৫৬৩–১৫৯৭ ) ১৫৭২ সালে ওয়েজের (অ্যাম্বিসা) দখল নেওয়ার পরে তারা দক্ষিণ দিকের বিদ্রোহ ও আক্রমণকে দমন করার চেষ্টা করেছিল কিন্তু লাভ হয়নি। [129] তা সত্ত্বেও, সার্সা ডেঙ্গেল সাম্রাজ্যের উত্তর সীমান্ত অটোমান সাম্রাজ্যের দখলে থাকা সত্ত্বেও তাদের সাথে প্রচণ্ডভাবে জড়িত হতে সক্ষম।বাহরে তার সৈন্যদের যুদ্ধক্ষেত্রে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য তার কৌশলের প্রশংসা করেছিলেন। [126]
ইথিওপিয়া ১৭ শতক থেকে পর্তুগালের সাথে বড় আকারের কূটনৈতিক যোগাযোগ শুরু করেছিল,যা প্রধানত ধর্মকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হচ্ছিল। ১৫৩৭ সালের শুরুতে, পর্তুগিজ জেসুইটরা সাম্রাজ্যের মধ্যে রোমান ক্যাথলিকদের শাসন করার চেষ্টা করেছিল এবং ধর্মটি রাষ্ট্র ধর্মে পরিণত হয়েছিল। বেশ কিছু ব্যর্থ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার পর তারা ১৬০৩ সালে বেশ কয়েকটি ধর্মপ্রচারক দল পাঠায়, যার মধ্যে সবচেয়ে প্রভাবশালী ছিলেন স্প্যানিশ জেসুইট পেড্রো পাইজ। পাইজ এর উৎসাহী সম্পর্ক রাজনৈতিক ক্ষেত্রে ব্যাপক অনুকূল প্রভাব রেখেছিল। মানোয়েল ডি আলমেদা, ম্যানোয়েল ব্যারাডাস এবং জেরোনিমো লোবো ইথিওপিয়ানদের সাথে প্রথম মিথস্ক্রিয়া এবং এক শতাব্দীর প্রথমার্ধে রিপোর্ট সম্পর্কে দেড় ডজন ইতিহাস লিখেছেন। তবে তাদের বইটি ২০ শতকের আগে পর্যন্ত অজানা ছিল। বিংশ শতাব্দীতে এটি সম্পূর্ণরূপে প্রকাশিত হয়েছিল; বারাদেস, লোবো এবং পাইজের উদ্ধৃতির কিছু অংশ ইংরেজিতে প্রকাশিত হয়েছে, কিন্তু মেন্ডেসের মতো বিখ্যাত হতে পারেনি। তার ইতিহাস, চিঠিপত্র এবং প্রতিবেদন কখনোই অনুবাদ করা হয়নি কারণ বেশিরভাগই ল্যাটিন ভাষায় লেখা। [130]
সম্রাট সুসেনিওস প্রথমের অধীনে, রোমান ক্যাথলিক ধর্ম ১৬২২ সালে ইথিওপিয়ান সাম্রাজ্যের রাষ্ট্র ধর্মে পরিণত হয়। [131] এই নজিরবিহীন সিদ্ধান্ত অবিলম্বে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে অর্থোডক্স জনগণের দ্বারা সম্রাটের বিরুদ্ধে গুরুতর বিদ্রোহ করেছিল। [132] এটি আংশিকভাবে পাইজ-এর প্রভাব এবং সুসেনিওসের চিঠি বিনিময়ের প্রমাণ। [133] সুসেনিওস তার সাম্রাজ্যে ক্যাথলিক মিশনারিদের জন্য জমি দেওয়ার আশা করেছিলেন, প্রাথমিকভাবে তানা লেকের উপদ্বীপে অবস্থিত গোরগোরা অঞ্চলে জমি দেয়ার কথা উল্লেখ করেছিলেন। [132]
১৬৩২ সালে তার পুত্র ফাসিলিডস নেতৃত্ব গ্রহণ করার পর, সম্রাট ফাসিলিডস (শা. 1632–1667) সফলভাবে রোমান ক্যাথলিক রাজ্য প্রশাসনকে থামিয়ে দেন এবং অর্থোডক্স তেওয়াহেডোকে রাষ্ট্রীয় ধর্ম হিসাবে আবার চালু করেন। [131] ফ্যাসিলাইডের রাজত্ব সাম্রাজ্যিক শক্তির দৃঢ়তা এবং রাজধানী গন্ডারের প্রতিষ্ঠার সূচনা করে, যা "গন্ডারিন পিরিয়ড" নামে পরিচিত একটি পরিবর্তনের সময়কাল শুরু করে। [134] ফ্যাসিলাইডরা দখলকৃত জমি পুনরুদ্ধার করে এবং তাদের ফ্রেমোনায় ছেড়ে দিয়ে সমগ্র জেসুইটদের বহিষ্কার করে। তার শাসনামলে, তিনি তার রাজত্বের শুরুতে ফাসিল ঘেব্বির সবচেয়ে বিখ্যাত রাজকীয় দুর্গগুলির মধ্যে একটি তৈরি করেছিলেন। এটি প্রতিটি পরবর্তী সম্রাটদের দ্বারা অর্থায়ন লাভ করেছিল। তিনি পুরো সাম্রাজ্যে ৪৪টি গীর্জা [135] নির্মাণ করেছিলেন। ইথিওপিয়ান শিল্পকে গন্ডারিন আমলে পুনরুজ্জীবিত করা হয়েছিল। লাস্তার আগাও জনসংখ্যার বিদ্রোহ তার পিতার শাসনামলে প্রজ্বলিত সংস্কারকে অযৌক্তিকভাবে সহ্য করেছিল। ফাসিলাইড লাস্তায় শাস্তিমূলক অভিযান পরিচালনা করেছিলেন এবং সফলভাবে এটিকে দমন করেছিলেন। উসমানীয়-নিয়ন্ত্রিত মাসাওয়ার মাধ্যমে বাণিজ্য রুট নিয়ে আলোচনা করার জন্য ফাসিলাইডস ১৬৪২ এবং ১৬৪৭ সালের মধ্যে ইয়েমেনি ইমাম আল-মুতাওয়াক্কিল ইসমাঈলের সাথে দৃঢ় সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা করেছিলেন, যা পরে ব্যর্থ হয়েছিল। [136]
১৭৬৯ এবং ১৮৫৫ সালের মধ্যে, ইথিওপিয়া একটি বিচ্ছিন্নতার সময় অনুভব করেছিল যাকে জেমেন মেসাফিন্ট বা "রাজকুমারদের বয়স" বলা হয়। সম্রাটরা আঞ্চলিক প্রভুদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হচ্ছিলেন এবং টাইগ্রের <i id="mwAvs">রাস</i> মিকেল সেহুল , টাইগ্রের রাস ওল্ডে সেলাসি এবং ওয়ারা শেহের ইয়েজু ওরোমো রাজবংশের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ছিলেন। জেমেন মেসাফিন্টের আগে, সম্রাট আইওস আমি আমহারিকের পরিবর্তে আদালতে ওরোমো ভাষা ( আফান ওরোমো ) চালু করেছিলেন। [137][138]
ইথিওপিয়ান বিচ্ছিন্নতাবাদ একটি ব্রিটিশ মিশনের পরে শেষ হয়েছিল যা দুটি জাতির মধ্যে একটি জোটের সমাপ্তি ঘটায়। কিন্তু ১৮৫৫ সালে উত্তর ইথিওপিয়ার আমহারা রাজ্যগুলি (গোন্ডার, গোজ্জাম, শেওয়া) সংক্ষিপ্তভাবে একত্রিত হয়েছিল যখন দ্বিতীয় টেওড্রোসের রাজত্ব ক্ষমতা পুনরুদ্ধার করা হয়েছিল। [139] তার ক্ষমতায় আরোহণের পর, তিনি ইথিওপিয়াকে আধুনিকীকরণ করতে শুরু করেন এবং সম্রাটের কাছে ক্ষমতার সাম্প্রতিকীকরণ শুরু করেন। ইথিওপিয়া আবারও বিশ্বব্যাপারে অংশ নিতে শুরু করে। [140] দ্বিতীয় তেওড্রোস একত্রীকরণ, কেন্দ্রীকরণ এবং রাষ্ট্র-নির্মাণের একটি প্রক্রিয়া শুরু করেছিলেন যা পরবর্তী সম্রাটদের দ্বারা অব্যাহত ছিল। এই প্রক্রিয়াটি আঞ্চলিক শাসকদের ক্ষমতা হ্রাস করে, সাম্রাজ্যের প্রশাসনকে পুনর্গঠন করে এবং একটি পেশাদার সেনাবাহিনী তৈরি করে। এই পরিবর্তনগুলি ইথিওপিয়ান রাষ্ট্রের কার্যকর সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতা প্রতিষ্ঠার ভিত্তি তৈরি করেছে। [141]
বিপরীতভাবে, টেওড্রোস তার সাম্রাজ্যের অভ্যন্তরে বেশ কয়েকটি বিদ্রোহের শিকার হন। উত্তর ওরোমো মিলিশিয়া, তিগ্রায়ান বিদ্রোহ এবং লোহিত সাগরের কাছে অটোমান সাম্রাজ্য এবং মিশরীয় বাহিনীর ক্রমাগত আক্রমণ টেওড্রোস দ্বিতীয়-এর দুর্বলতা এবং চূড়ান্ত পতন ঘটায়। ১৮৬৮ সালে মগডালার যুদ্ধে আবিসিনিয়ায় ব্রিটিশ অভিযানের সাথে শেষ লড়াইয়ের সময় তিনি আত্মহত্যা করেন।
তেওড্রোসের মৃত্যুর পর, দ্বিতীয় টেকেলে গিয়রগিসকে সম্রাট ঘোষণা করা হয় কিন্তু জুলাউ (২১ জুন ১৮৭১) এবং আডওয়া (১১ জুলাই ১৮৭১) যুদ্ধে পরাজিত হন।
বিজয়ী মের্চা কাসাইকে পরবর্তীকালে ২১ জানুয়ারী ১৮৭২ সালে চতুর্থ ইয়োহানেস ঘোষণা করা হয়। ১৮৭৫ এবং ১৮৭৬ সালে অটোমান-মিশরীয় বাহিনী অনেক ইউরোপীয় এবং আমেরিকান উপদেষ্টা সহ, দুবার আবিসিনিয়া আক্রমণ করেছিল কিন্তু প্রাথমিকভাবে পরাজিত হয়েছিল। একবার গুন্ডিতের যুদ্ধে ৮০০ জন লোক মারা যান এবং তারপরে দ্বিতীয় আক্রমণে, সম্রাট ইয়োহানেসের দ্বারা চূড়ান্তভাবে পরাজিত হয়।[142] ১৮৭৮ সালে বোরু মেদার কাউন্সিলে, ইয়োহানেস একটি ডিক্রি নিয়ে এসেছিলেন যে ইথিওপিয়ান মুসলমানদের অবশ্যই খ্রিস্টান ধর্ম গ্রহণ করতে হবে বা নিষিদ্ধ করতে হবে। যারা প্রত্যাখ্যান করেছিল তাদের ঘটনাস্থলেই মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। হাজার হাজার মানুষ নিহত হয় এবং তাদের জমি ও জিনিসপত্র ছেড়ে হারার, বেলে, আরসি, জিম্মা, এমনকি সুদানে পালিয়ে যায়। [143] ১৮৮৫ থেকে ১৮৮৯ সাল পর্যন্ত ইথিওপিয়া ব্রিটেন, তুরস্ক এবং মিশরের সাথে সুদানী মাহদিস্ট রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে মিত্র মাহদিস্ট যুদ্ধে যোগ দেয়। ১৮৮৭ সালে, শেওয়ার রাজা মেনেলিক দ্বিতীয় চেলেনকোর যুদ্ধে জয়ের পর হারার আমিরাত আক্রমণ করেন। [144] ১৮৮৯ সালের ১০ মার্চ, ইয়োহানেস চতুর্থ সুদানী খলিফা আবদুল্লাহর সেনাবাহিনীর হাতে নিহত হন যখন তিনি গালাবাতের যুদ্ধে (যাকে মেটেমার যুদ্ধও বলা হয়) তার সেনাবাহিনীর নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। [145]
ইথিওপিয়া মোটামুটিভাবে তার বর্তমান আকারে শুরু হয়েছিল মেনেলিক দ্বিতীয়ের শাসনামলে, যিনি ১৮৮৯ সাল থেকে ১৯১৩ সালে তাঁর মৃত্যু পর্যন্ত সম্রাট ছিলেন। শেওয়া প্রদেশে তার ঘাঁটি থেকে মেনেলিক দক্ষিণ, পূর্ব এবং পশ্চিমে অঞ্চলগুলিকে সংযুক্ত করতে যাত্রা করেন [146] — ওরোমো, সিদামা, গুরেজ, ওয়েলেটা এবং অন্যান্য জনগণের অধ্যুষিত অঞ্চলগুলি তিনি দখল করতে সক্ষম হন। [147] তিনি রাস গোবানা দাচে'র শেওয়ান ওরোমো মিলিশিয়ার সহায়তায় এটি অর্জন করেছিলেন। সেইসাথে তিনি অন্যান্য অনেক অঞ্চল দখল করেন যেগুলি কখনও ইথিওপিয়ান শাসনের অধীনে ছিল না। [148] ওরোমো জয়ের সময়, ইথিওপিয়ান আর্মি ওরোমো জনসংখ্যার বিরুদ্ধে নৃশংসতা চালায় যার মধ্যে গণহত্যা এবং দাসত্ব অন্তর্ভুক্ত ছিল। [149][150] বিজয়ের ফলে নিহত মানুষের সংখ্যার লক্ষাধিক হতে পারে বলে অনুমান করা যায়। [149][151][152] ডিজি জনগণ এবং কাফা রাজ্যের জনগণের বিরুদ্ধেও বড় আকারের নৃশংসতা সংঘটিত হয়েছিল। [152][153] তার সেনাবাহিনীর বাইরে ওরোমোসের বিরুদ্ধে মেনেলিকের অভিযান ছিল মূলত শতবর্ষের ওরোমো সম্প্রসারণবাদ এবং জেমেন মেসাফিন্টের প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য, যে সময়কালে ওরোমো সামন্ত শাসকদের উত্তরাধিকারী উচ্চভূমির উপর আধিপত্য বিস্তার করেছিল। [154] এর মধ্যে প্রধান ছিলেন ইয়েজ্জু রাজবংশ, যার মধ্যে ইয়েজ্জুর আলীগাজ এবং তার ভাই ইয়েজ্জুর আলী প্রথম অন্তর্ভুক্ত ছিল। পরবর্তীরা আমহারা অঞ্চলে ডেব্রে তাবর শহর প্রতিষ্ঠা করেন, যা রাজবংশের রাজধানী হয়ে ওঠে। [155]
দ্বিতীয় মেনেলিক ছিলেন হেইলে মেলেকোট, যিনি শেওয়ার নেগাস এবং প্রাসাদের সেবক এজেগায়েহু লেমা আদেয়ামোর পুত্র। [156] তিনি ওরোমো অঞ্চলের অ্যাঙ্গোলালায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং শেওয়ান ওরোমোসের সাথে তার প্রথম বারো বছর কাটিয়েছিলেন, যার সাথে তার অনেক মিল ছিল। [157] মেনেলিকের শাসনামলে, রাস্তা নির্মাণ, বিদ্যুৎ এবং শিক্ষার অগ্রগতি হয় এবং একটি কেন্দ্রীয় কর ব্যবস্থা গড়ে ওঠে। ফিনফিন শহরটি পুনর্নির্মাণ করা হয় এবং আদ্দিস আবাবা নামকরণ করা হয়। ১৮৮৯-১৮৯১ সালে এটি ইথিওপিয়ান সাম্রাজ্যের নতুন রাজধানী হয়ে ওঠে।
তার নেতৃত্বের জন্য সমাজের আরও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের বিরোধিতা সত্ত্বেও দ্বিতীয় মেনেলিককে জাতীয় বীর হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছিল। তিনি ১৮৮৯ সালের মে মাসে ইতালির সাথে উচালের চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিলেন, যার মাধ্যমে ইতালি ইথিওপিয়ার সার্বভৌমত্বকে স্বীকৃতি দেবে যতক্ষণ না ইতালি ইথিওপিয়ার উত্তরে একটি এলাকা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে (বর্তমানে আধুনিক ইরিত্রিয়ার অংশ)। বিনিময়ে, ইতালি মেনেলিককে অস্ত্র সরবরাহ করবে এবং তাকে সম্রাট হিসাবে সমর্থন করবে। ইতালীয়রা তাদের আঞ্চলিক দাবি সম্প্রসারণের জন্য চুক্তি স্বাক্ষর এবং ইতালীয় সরকার কর্তৃক অনুমোদনের মধ্যে সময় ব্যবহার করেছিল। এই প্রথম ইতালো-ইথিওপিয়ান যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে ১৮৯৭ সালের ১ মার্চ আডওয়ার যুদ্ধে, যেখানে ইতালির ঔপনিবেশিক বাহিনী ইথিওপিয়ানদের কাছে পরাজিত হয়। [147][158] ১৮৯৬ সালে উচালের চুক্তির পরিবর্তে আদ্দিস আবাবার চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল, যা ইথিওপিয়ার জন্য আরও অনুকূল শর্তগুলির বয়ে এনেছিল।
গ্রেট ইথিওপিয়ান দুর্ভিক্ষে (১৮৮৮ থেকে ১৮৯২) জনসংখ্যার প্রায় এক তৃতীয়াংশ মারা গিয়েছিল। [159][160]
২০ শতকের গোড়ার দিকে সম্রাট হাইলে সেলাসি ইথিওপিয়ার রাজত্ব লাভ করেছিলেন। লিজ ইয়াসু ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর তিনি ক্ষমতায় আসেন এবং 1916 সাল থেকে একটি দেশব্যাপী আধুনিকীকরণ অভিযান শুরু করেন যখন তাকে সম্রাজ্ঞী রেগন্যান্ট জেউডিতুর জন্য রাস এবং রিজেন্ট (ইন্দেরেজ) করা হয় এবং তিনি ইথিওপিয়ান সাম্রাজ্যের প্রকৃত শাসক হন। জেউডিতুর মৃত্যুর পর ১৯৩০ সালের ২ নভেম্বর তিনি সম্রাট হিসাবে স্থলাভিষিক্ত হন। [161] ১৯৩১ সালে, হাইল সেলাসি ইথিওপিয়াকে ইম্পেরিয়াল জাপানের ১৮৯০ সালের সংবিধানের অনুকরণে তার প্রথম সংবিধান প্রদান করেন, যার মাধ্যমে মধ্য ইউরোপ ইথিওপিয়ান সাম্রাজ্যের জন্য একক এবং একজাতীয় জাতি-ভাষাভিত্তিক জাতি-রাষ্ট্রের মডেল গৃহীত হয়েছিল। [162]
ইথিওপিয়ার স্বাধীনতা দ্বিতীয় ইতালো-ইথিওপিয়ান যুদ্ধের দ্বারা বাধাগ্রস্ত হয়েছিল। ১৯৩৫ সালের অক্টোবরের শুরুতে এটি ফ্যাসিবাদী ইতালির আক্রমণের শিকার হয়েছিল এবং যুদ্ধে ইতালীয় বিজয়ের পরবর্তী সময়ে ইতালীয় শাসনের (১৯৩৬-১৯৪১) কারণে এর স্বাধীনতা বাধাগ্রস্ত হয়। [163] এই সময়ে, হেইল সেলাসি নির্বাসিত হন এবং ১৯৩৫ সালে লীগ অফ নেশনস -এর কাছে আবেদন করেন যা তাকে বিশ্বব্যাপী বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব এবং ১৯৩৫ সালের টাইম ম্যান অফ দ্য ইয়ার করে তোলে। [164] যেহেতু ইথিওপিয়ার জনসংখ্যার অধিকাংশই গ্রামীণ শহরে বাস করত, ইতালি ইথিওপিয়ার উপর তার শাসন জুড়ে নগর কেন্দ্রগুলিতে অবিরত প্রতিরোধ এবং অতর্কিত হামলার সম্মুখীন হয়েছিল। হেইল সেলাসি ইংল্যান্ডের বাথের ফেয়ারফিল্ড হাউসে নির্বাসনে পালিয়ে যান।মুসোলিনি ইতালীয় ইথিওপিয়া ঘোষণা করতে সক্ষম হয়েছিলেন এবং ইতালীয় রাজা ভিত্তোরিও ইমানুয়েল তৃতীয় দ্বারা সাম্রাজ্যের উপাধি গ্রহণ করেছিলেন। [165]
১৯৩৭ সালে, ইয়েকাটিট ১২ -এর ইতালীয় গণহত্যা সংঘটিত হয়েছিল, যাতে প্রায় ৩০,০০০ বেসামরিক লোক নিহত হয় এবং অনেককে কারারুদ্ধ করা হয়। [166][167][168] এই গণহত্যাটি ছিল ইতালীয় পূর্ব আফ্রিকার ভাইসরয় রোডলফো গ্রাজিয়ানিকে হত্যার চেষ্টার প্রতিশোধ। [169] ইতালীয়রা তাদের ইথিওপিয়ান আক্রমণে শ্বাসরোধকারী রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করেছিল।ইতালীয়রা ইথিওপিয়া জুড়ে নিয়মিত বোমা ফেলে যা সরিষার গ্যাস বহন করে এবং ইথিওপিয়ান বাহিনীকে দুর্বল করে দেয়। সামগ্রিকভাবে, ইতালীয়রা প্রায় ৩০০ টন মাস্টার্ড গ্যাসের পাশাপাশি হাজার হাজার অন্যান্য আর্টিলারি ব্যবহার করে। রাসায়নিক অস্ত্রের এই ব্যবহার মারাত্মক যুদ্ধাপরাধের পরিমান। [170]
ইতালীয়রা ইথিওপিয়ার উপর তাদের শাসনের সময় ইথিওপিয়ার অবকাঠামো উন্নয়নে বিনিয়োগ করেছিল। তারা আদ্দিস আবাবা এবং মাসাউয়ার মধ্যে তথাকথিত "ইম্পেরিয়াল রোড" তৈরি করেছিল। [171] ৯০০ এর বেশি কিমি রেলপথ পুনর্গঠন করা হয়েছিল, বাঁধ এবং জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরি করা হয়েছিল এবং অনেকগুলি সরকারী ও বেসরকারী কোম্পানি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ইতালীয় সরকার দাসপ্রথা বিলুপ্ত করেছিল যা দেশে বহু শতাব্দী ধরে বিদ্যমান ছিল। [24]
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ইতালির প্রবেশের পর, ব্রিটিশ সাম্রাজ্য বাহিনী, আরবেগনোচ (আক্ষরিক অর্থে, "দেশপ্রেমিক", সশস্ত্র প্রতিরোধের সৈন্যদের উল্লেখ করে) সাথে ১৯৪১ সালে পূর্ব আফ্রিকান অভিযানের সময় ইথিওপিয়াকে মুক্ত করে। একটি ইতালীয় গেরিলা যুদ্ধ অভিযান ১৯৪৩ সাল পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। ১৯৪৪ সালের ডিসেম্বরে যখন অ্যাংলো-ইথিওপিয়ান চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় [172] তখন কোনো বিশেষ ব্রিটিশ সুযোগ-সুবিধা ছাড়াই ইথিওপিয়ার পূর্ণ সার্বভৌমত্বকে ব্রিটিশ স্বীকৃতি দিয়েছিল। 1947 সালের শান্তি চুক্তির অধীনে, ইতালি ইথিওপিয়ার সার্বভৌমত্ব এবং স্বাধীনতাকে স্বীকৃতি দেয়।
২৬ আগস্ট ১৯৪২-এ, হেইল সেলাসি একটি ঘোষণা জারি করেন যা দাসত্বের আইনি ভিত্তিকে সরিয়ে দেয়। [173] বিশ শতকের গোড়ার দিকে ইথিওপিয়াতে মোট জনসংখ্যা প্রায় ১১ মিলিয়নের মধ্যে দুই থেকে চার মিলিয়ন ক্রীতদাস ছিল। [174]
১৯৫২ সালে, হেইলে সেলাসি ইরিত্রিয়ার সাথে একটি ফেডারেশন গঠন করেন। তিনি ১৯৬২ সালে এটি বিলুপ্ত করেন এবং ইরিত্রিয়াকে সংযুক্ত করেন, যার ফলে ইরিত্রিয়ার স্বাধীনতা যুদ্ধ হয়। হেইল সেলাসিকে প্রায় ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছিল ১৯৬০ সালের অভ্যুত্থানের ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে। প্রধানত প্রগতিশীল বিরোধী গোষ্ঠীর নেতৃত্বে ভাই জারমেম এবং মেঙ্গিস্তু নেওয়ায়ের নেতৃত্বে ব্রাজিলে রাষ্ট্রীয় সফরের সময় ষড়যন্ত্র হয়। মঙ্গলবার ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যায়, একটি দল ইম্পেরিয়াল ক্রাউনের মন্ত্রী এবং গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের জাতীয় প্রাসাদে প্রবেশের নামে প্রতারণা করে এবং তাদের জিম্মি করে। [175] পরের দিন প্রাথমিকভাবে অনুগত সাম্রাজ্যবাদী সেনাবাহিনী (কেবুর জেবেগনা) এবং জেনারেল সেগে এবং কর্নেল ওয়ারকেনার নেতৃত্বে বিদ্রোহীদের মধ্যে লড়াই শুরু হয়। এটি শুরু করার সময় জারমেম এবং তার সহযোগী যোদ্ধারা জেনেটা লিউল প্রাসাদে বন্দী ১৫ জনকে হত্যা করে।এর মধ্যে কেন্দ্রীয় কর্মকর্তা ছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রাস আবেবে আরেগাই, মাকোনেন হাবতে-ওল্ডে এবং মেজর জেনারেল মুলুগেতার মতো গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। [176] সাম্রাজ্যের সেনাবাহিনীর দ্বারা প্রচণ্ডভাবে পরাজিত হয়ে, জেনারেল সেগে যুদ্ধে নিহত হন, কর্নেল ওয়ারকেনাহ আত্মহত্যা করেন,[177] এবং ভাই মেঙ্গিস্তু এবং জারমামে নেওয়া ২৪ ডিসেম্বর মোজোর কাছে ছিলেন, যাদের শীঘ্রই আদ্দিস আবাবার গির্জা চত্বরে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয় কিন্তু জার্মামে আত্মহত্যা করে দণ্ড এড়িয়ে গেছে। [178] ১৯৭৪ সালের ইথিওপিয়ান বিপ্লব পর্যন্ত অভ্যুত্থান হাইলে সেলাসির জন্য একটি গুরুতর হুমকি হিসাবে বিবেচিত হয়েছিল। ১৯৬৩ সালে, হেইলে সেলাসি আফ্রিকান ইউনিটি (OAU) সংগঠন গঠনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। [179]
বিশ্বব্যাপী ১৯৭৩ সালের তেল সংকটের কারণে ১৩ ফেব্রুয়ারী ১৯৭৪ থেকে পেট্রলের দামে তীব্র বৃদ্ধির কারণে হেইলে সেলাসির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ হয়েছিল। পেট্রোলের উচ্চ মূল্য ১৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৪ সালে ট্যাক্সি ড্রাইভার এবং শিক্ষকদের ধর্মঘটে যেতে অনুপ্রাণিত করে এবং আদ্দিস আবাবার ছাত্র ও শ্রমিকরা ২০ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৪ সালে সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু করে [180]। ফলে খাদ্য সংকট, উত্তরাধিকার নিয়ে অনিশ্চয়তা, সীমান্ত যুদ্ধ এবং আধুনিকায়নের মাধ্যমে মধ্যবিত্তের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়। [181] আকলিলু হাবতে-ওল্ডের সামন্ততান্ত্রিক অলিগার্কিকাল মন্ত্রিসভা ভেঙে দেওয়া হয়েছিল এবং এন্ডেলকাচেউ মাকোনেনকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব দিয়ে একটি নতুন সরকার গঠন করা হয়েছিল। [182]
হেইলে সেলাসির শাসন 12 সেপ্টেম্বর 1974-এ শেষ হয়, যখন তিনি আমান আন্দমের নেতৃত্বে সামরিক ও পুলিশ কর্মকর্তাদের নিয়ে গঠিত একটি অ-আদর্শিক কমিটি ডারগ দ্বারা ক্ষমতাচ্যুত হন। [183] 1974 সালের নভেম্বরে আমান সহ 60 জন প্রাক্তন সরকারী ও সামরিক কর্মকর্তাদের মৃত্যুদন্ড কার্যকর করার পর,[184] নতুন অস্থায়ী সামরিক প্রশাসনিক পরিষদ এখন জেনারেল তাফারি বেন্টির নেতৃত্বে 1975 সালের মার্চ মাসে রাজতন্ত্র বিলুপ্ত করে এবং ইথিওপিয়াকে একটি মার্কসবাদী-লেনিনবাদী রাষ্ট্র হিসাবে প্রতিষ্ঠা করে। একটি অস্থায়ী সরকারে ভ্যানগার্ড পার্টি । [185]সামন্ততন্ত্রের বিলুপ্তি, সাক্ষরতা বৃদ্ধি, জাতীয়করণ, এবং ইথিওপিয়ান পার্বত্য অঞ্চল থেকে পুনর্বাসন এবং গ্রামীকরণ সহ ব্যাপক ভূমি সংস্কার অগ্রাধিকারে পরিণত হয়েছে। [186]
1977 সালের ফেব্রুয়ারিতে চেয়ারম্যান তাফারি বেন্টি এবং তার সমর্থকদের কয়েকজনের মৃত্যুদণ্ড এবং নভেম্বর 1977 সালে ভাইস-চেয়ারম্যান আতনাফু আবেতের ফাঁসি কার্যকরের ফলে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের পর, মেঙ্গিস্তু হালি মারিয়াম ডেরগের অবিসংবাদিত নেতৃত্ব লাভ করেন। [187]
দার্গ বেশ কয়েকটি অভ্যুত্থান, অভ্যুত্থান, বিস্তৃত খরা এবং একটি বিশাল শরণার্থী সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিল।1977 সালে, সোমালিয়া, যেটি আগে ইউএসএসআর থেকে সহায়তা এবং অস্ত্র পেয়ে আসছিল, ওগাডেন যুদ্ধে ইথিওপিয়া আক্রমণ করেছিল, ওগাডেন অঞ্চলের কিছু অংশ দখল করে।ইউএসএসআর, কিউবা, দক্ষিণ ইয়েমেন, পূর্ব জার্মানি,[188] এবং উত্তর কোরিয়ার সোভিয়েত ব্লকের দেশগুলি থেকে ব্যাপক সামরিক সাহায্য পেতে শুরু করার পর ইথিওপিয়া এটি পুনরুদ্ধার করে।এর মধ্যে প্রায় 15,000 কিউবান যুদ্ধ সৈন্য অন্তর্ভুক্ত ছিল। [189][190]
1976-78 সালে, লাল সন্ত্রাসের ফলে 500,000 পর্যন্ত নিহত হয়েছিল,[191] বিভিন্ন বিরোধী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে দার্গের একটি সহিংস রাজনৈতিক দমন অভিযান, বিশেষ করে মার্কসবাদী-লেনিনবাদী ইথিওপিয়ান পিপলস রেভোলিউশনারি পার্টি (EPRP)। [181] রেড টেররটি করা হয়েছিল যাকে ডার্গ 'হোয়াইট টেরর' বলে অভিহিত করেছে, একটি হিংসাত্মক ঘটনা, গুপ্তহত্যা এবং হত্যাকাণ্ডের একটি শৃঙ্খল যা এটি " পেটি বুর্জোয়া প্রতিক্রিয়াশীল" বলে সম্পাদিত হয়েছিল যারা 1974 সালের বিপ্লবকে উল্টে দিতে চেয়েছিল। [192][193] 1987 সালে, ডারগ নিজেকে দ্রবীভূত করে এবং সংশোধিত বিধান সহ সোভিয়েত ইউনিয়নের 1977 সালের সংবিধানের আদলে ইথিওপিয়ার 1987 সালের সংবিধান গ্রহণ করে পিপলস ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অফ ইথিওপিয়া (PDRE) প্রতিষ্ঠা করে। [194]
ইথিওপিয়ায় 1983-85 সালের দুর্ভিক্ষ প্রায় 8 মিলিয়ন মানুষকে প্রভাবিত করেছিল, যার ফলে এক মিলিয়ন মারা গিয়েছিল।কর্তৃত্ববাদী শাসনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ছড়িয়ে পড়ে, বিশেষ করে ইরিত্রিয়া এবং টাইগ্রের উত্তরাঞ্চলে।টাইগ্রে পিপলস লিবারেশন ফ্রন্ট (TPLF) 1989 সালে অন্যান্য জাতিগত ভিত্তিক বিরোধী আন্দোলনের সাথে একীভূত হয়, যা ইথিওপিয়ান পিপলস রেভোলিউশনারি ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (EPRDF) নামে পরিচিত জোট গঠন করে। [195]
একইসঙ্গে, মিখাইল গর্বাচেভের অধীনে, সোভিয়েত ইউনিয়ন গ্লাসনোস্ট এবং পেরেস্ট্রোইকা নীতির দিকে বিশ্ব কমিউনিজম গড়ে তোলা থেকে পিছু হটতে শুরু করে, যা সমাজতান্ত্রিক ব্লকের দেশগুলি থেকে ইথিওপিয়াকে সাহায্যের নাটকীয় হ্রাসকে চিহ্নিত করে।এর ফলে উত্তরে গেরিলা বাহিনীর দ্বারা নির্ধারিত আক্রমণের মুখে আরও অর্থনৈতিক কষ্ট এবং সামরিক বাহিনীর পতন ঘটে।সাধারণভাবে মার্কসবাদ-লেনিনবাদের পতন, এবং 1989 সালের বিপ্লবের সময় পূর্ব ইউরোপে, 1990 সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ইথিওপিয়াকে সম্পূর্ণভাবে সাহায্য বন্ধ করার সাথে মিলে যায়।আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায়ের জন্য মেঙ্গিস্তু একটি মিশ্র অর্থনীতি এবং একটি দলীয় শাসনের অবসান ঘটিয়েছিলেন কিন্তু তার শাসন বাঁচাতে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছিল। [196][197]
ইপিআরডিএফ বাহিনী 1991 সালের মে মাসে আদ্দিস আবাবায় অগ্রসর হয় এবং সোভিয়েত ইউনিয়ন সরকারের পক্ষকে বাঁচাতে হস্তক্ষেপ করেনি।মেঙ্গিস্তু দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান এবং জিম্বাবুয়েতে আশ্রয় পান, যেখানে তিনি এখনও থাকেন। [198][199]
2006 সালে, 12 বছর ধরে চলা একটি বিচারের পর, আদ্দিস আবাবায় ইথিওপিয়ার ফেডারেল হাইকোর্ট মেঙ্গিস্তুকে অনুপস্থিতিতে গণহত্যার জন্য দোষী সাব্যস্ত করে। [200] তার সরকারের আরও অনেক শীর্ষ নেতাও যুদ্ধাপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন।মেঙ্গিস্তু এবং অন্যান্য যারা দেশ ছেড়ে পালিয়েছিল তাদের অনুপস্থিতিতে বিচার করা হয়েছিল এবং সাজা দেওয়া হয়েছিল।বহু প্রাক্তন আধিকারিক মৃত্যুদণ্ড পেয়েছিলেন এবং আরও কয়েক জন পরবর্তী 20 বছর কারাগারে কাটিয়েছিলেন, যাবজ্জীবন কারাদণ্ড থেকে ক্ষমা করার আগে। [201][202][203][204]
জুলাই 1991 সালে, EPRDF একটি 87-সদস্যের প্রতিনিধি পরিষদের সমন্বয়ে গঠিত ইথিওপিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য একটি জাতীয় সম্মেলন আহ্বান করে এবং একটি জাতীয় সনদ দ্বারা পরিচালিত হয় যা একটি অন্তর্বর্তী সংবিধান হিসাবে কাজ করে। [205] জুন 1992 সালে, ওরোমো লিবারেশন ফ্রন্ট সরকার থেকে প্রত্যাহার করে; মার্চ 1993 সালে, দক্ষিণ ইথিওপিয়া পিপলস ডেমোক্রেটিক কোয়ালিশনের সদস্যরাও সরকার ত্যাগ করে। [206][207] এপ্রিল 1993 সালে, ইরিত্রিয়া একটি জাতীয় গণভোটের পর ইথিওপিয়া থেকে স্বাধীনতা লাভ করে। [208] 1994 সালে, একটি নতুন সংবিধান লেখা হয়েছিল যা একটি দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট আইনসভা এবং একটি বিচার ব্যবস্থা সহ একটি সংসদীয় প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিল। [209]
প্রথম বহুদলীয় নির্বাচন 1995 সালের মে মাসে হয়েছিল, যেটি ইপিআরডিএফ জিতেছিল। [205] অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের রাষ্ট্রপতি, EPRDF নেতা মেলেস জেনাউই, ফেডারেল ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অফ ইথিওপিয়ার প্রথম প্রধানমন্ত্রী হন এবং নেগাসো গিদাদা তার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। [210] ডেরগ-পরবর্তী ইথিওপিয়ার সংবিধানে (1995 সালে প্রবর্তিত), EPRDF শুধুমাত্র দেশের 80 টিরও বেশি জাতিগোষ্ঠীর জন্য ডারগের সোভিয়েত-অনুপ্রাণিত সাংস্কৃতিক ও প্রশাসনিক স্বায়ত্তশাসনের প্রতিশ্রুতিই গ্রহণ করেনি বরং সোভিয়েত্যু থেকে স্বাধীনতার (বিচ্ছিন্নতা) অধিকারও ধার করেছে। .এই পদ্ধতিতে, ইথিওপিয়ার জন্য রাষ্ট্রীয়তার একটি জাতিগত অঞ্চলের ফেডারেল মডেল গৃহীত হয়েছিল (যেমনটি মূলত অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরির মধ্য ইউরোপীয় সাম্রাজ্য এবং আন্তঃযুদ্ধ সোভিয়েত ইউনিয়নে বিকশিত হয়েছিল)। [211]
মে 1998 সালে, ইরিত্রিয়ার সাথে একটি সীমান্ত বিরোধ ইরিত্রিয়ান-ইথিওপিয়ান যুদ্ধের দিকে পরিচালিত করে, যা জুন 2000 পর্যন্ত স্থায়ী হয়েছিল এবং উভয় দেশের জন্য আনুমানিক $1 খরচ হয়েছিল। দিনে মিলিয়ন [212] এটি ইথিওপিয়ার অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছিল,[213] কিন্তু ক্ষমতাসীন জোটকে শক্তিশালী করেছিল।
15 মে 2005-এ ইথিওপিয়ার 3য় বহুদলীয় নির্বাচন অত্যন্ত বিতর্কিত ছিল, অনেক বিরোধী দল জালিয়াতির দাবি করেছিল।যদিও কার্টার সেন্টার প্রাক-নির্বাচন শর্ত অনুমোদন করেছে, তবে এটি নির্বাচন-পরবর্তী ঘটনা নিয়ে তার অসন্তোষ প্রকাশ করেছে।ইউরোপীয় ইউনিয়নের নির্বাচন পর্যবেক্ষকরা ইপিআরডিএফ প্রচারণার জন্য রাষ্ট্রীয় সমর্থনের পাশাপাশি ব্যালট গণনা এবং ফলাফল প্রকাশে অনিয়মের কথা উল্লেখ করেছেন। [214] 2000 সালের নির্বাচনে মাত্র 12টি আসনের তুলনায় বিরোধী দলগুলি 200 টিরও বেশি সংসদীয় আসন লাভ করেছিল।বেশিরভাগ বিরোধী প্রতিনিধি সংসদে যোগদানের সময়, CUD পার্টির কিছু নেতা যারা তাদের সংসদীয় আসন গ্রহণ করতে অস্বীকার করেছিল তাদের নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতা উসকে দেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছিল এবং তাদের কারারুদ্ধ করা হয়েছিল।অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল তাদের " বিবেকের বন্দী " বলে বিবেচনা করে এবং পরবর্তীতে তাদের মুক্তি দেওয়া হয়। [215]
2010 সালের আইনসভা নির্বাচনে ইপিআরডিএফ-এর সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য 2009 সালে বিরোধী দল এবং কিছু ব্যক্তিদের একটি জোট প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।মেলসের দল, যেটি 1991 সাল থেকে ক্ষমতায় রয়েছে, 10 অক্টোবর 2009-এ আদ্দিস আবাবায় তার 65-পৃষ্ঠার ইশতেহার প্রকাশ করে।আদ্দিস আবাবায় বিরোধীরা বেশির ভাগ ভোট জিতেছে, কিন্তু ইপিআরডিএফ কয়েকদিন ধরে ভোট গণনা বন্ধ করে দিয়েছে।এটি হওয়ার পরে, এটি জালিয়াতি এবং ভয় দেখানোর অভিযোগের মধ্যে নির্বাচন দাবি করে। [216]
2011-এর মাঝামাঝি সময়ে, পরপর দুটি বর্ষাকাল মিস করায় পূর্ব আফ্রিকায় 60 বছরের মধ্যে দেখা সবচেয়ে খারাপ খরা দেখা দেয়।2012 সাল পর্যন্ত খরার প্রভাব থেকে সম্পূর্ণ পুনরুদ্ধার ঘটেনি, উন্নয়ন সংস্থাগুলির সাথে জাতীয় সরকারের দীর্ঘমেয়াদী কৌশলগুলি সবচেয়ে টেকসই ফলাফল দেয় বলে বিশ্বাস করে৷ [217]
মেলস 20 আগস্ট 2012 সালে ব্রাসেলসে মারা যান, যেখানে তিনি একটি অনির্দিষ্ট অসুস্থতার জন্য চিকিৎসাধীন ছিলেন। [218] উপ-প্রধানমন্ত্রী হেইলেমারিয়াম ডেসালেগন 2015 সালের নির্বাচন পর্যন্ত একজন নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত হন,[219] এবং পরবর্তীতে প্রতিটি সংসদীয় আসনের নিয়ন্ত্রণে তার দলের সাথে ছিলেন। [220]
5 আগস্ট 2016-এ সারাদেশে বিক্ষোভ শুরু হয় এবং কয়েকশ বিক্ষোভকারী পরবর্তীকালে পুলিশ কর্তৃক গুলিবিদ্ধ ও নিহত হয়।বিক্ষোভকারীরা মানবাধিকার লঙ্ঘনের অবসান, রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তি, এক দশকেরও বেশি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ফলে সৃষ্ট সম্পদের ন্যায্য পুনর্বণ্টন এবং আমহারা অঞ্চলে উলকায়েত জেলা ফেরত দেওয়ার দাবি জানায়। [221][222][223] ইথিওপিয়ান সরকার নভেম্বর এবং ডিসেম্বর 2015 সালে ওরোমিয়া অঞ্চলে বিক্ষোভের সময় কমপক্ষে 75 জন নিহত হওয়ার পর থেকে ঘটনাগুলি সাব-সাহারান আফ্রিকায় বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে সবচেয়ে সহিংস ক্র্যাকডাউন ছিল। এসব বিক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিতে ইথিওপিয়া ৬ তারিখে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে অক্টোবর 2016। [224] আগস্ট 2017 সালে জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার করা হয়েছিল। [225]
16 ফেব্রুয়ারী 2018-এ, ইথিওপিয়া সরকার প্রধানমন্ত্রী হাইলেমারিয়াম ডেসালেগনের পদত্যাগের পর দেশব্যাপী ছয় মাসের জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে। [226] হাইলেমারিয়াম আধুনিক ইথিওপিয়ার ইতিহাসে প্রথম শাসক যিনি পদত্যাগ করেন; আগের নেতারা পদে মারা গেছেন বা ক্ষমতাচ্যুত হয়েছেন। [227] তিনি বলেছিলেন যে তিনি সংস্কারের পথ পরিষ্কার করতে চান।
নতুন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন আবি আহমেদ, যিনি 2018 সালে ইরিত্রিয়ায় একটি ঐতিহাসিক সফর করেছিলেন , দুই দেশের মধ্যে বিরোধের অবসান ঘটিয়েছিলেন। [228] ইথিওপিয়া এবং ইরিত্রিয়ার মধ্যে 20 বছরের দীর্ঘ যুদ্ধের অবসান ঘটাতে তার প্রচেষ্টার জন্য, আবি আহমেদকে 2019 সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার দেয়া হয়। [229] হয়।2018 সালের এপ্রিলে দায়িত্ব নেওয়ার পর,৪৮ বছর বয়সী আবি রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তি দিয়েছেন, 2019 সালের জন্য সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এবং ব্যাপক অর্থনৈতিক সংস্কারের ঘোষণা দিয়েছেন। [230]৬ জুন ২০১৯-এর হিসাব অনুযায়ী[হালনাগাদ][231][232][233][234]
রাজনৈতিক অস্থিরতার সাথে জাতিগত সহিংসতা বেড়েছে ।ওরোমো-সোমালিদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে, যারা দেশের বৃহত্তম জাতিগোষ্ঠী গঠন করে এবং জাতিগত সোমালিদের মধ্যে 400,000 পর্যন্ত 2017 সালে বাস্তুচ্যুত হয়েছে। [235][236] 2019 থেকে শুরু করে, মেটেকেল সংঘাতে, ইথিওপিয়ার বেনিশাঙ্গুল-গুমুজ অঞ্চলের মেটেকেল জোনে লড়াইয়ে আমহারাস এবং আগাওসের বিরুদ্ধে গুমুজ জনগণের মিলিশিয়ারা জড়িত বলে জানা গেছে। [237] যাইহোক, 2020 সালের মার্চ মাসে, ফ্যানো নামক একটি গোষ্ঠীর নেতা, সলোমন আতানাও, বলেছিলেন যে বেনিশাঙ্গুল-গুমুজ অঞ্চলের মেটেকেল অঞ্চল এবং ওয়েলকাইত এবং রায়ার টিগ্রে অঞ্চলের জেলাগুলিকে নিয়ন্ত্রণে ফিরিয়ে না দেওয়া পর্যন্ত ফ্যানো নিরস্ত্র হবে না। আমহারা অঞ্চল । 2018 সালের সেপ্টেম্বরে, ইথিওপিয়ার রাজধানী আদ্দিস আবাবার কাছে ওরোমিয়ার বিশেষ অঞ্চলে সংঘটিত সংখ্যালঘুদের বিক্ষোভে 23 জন নিহত হয়েছিল। [238] কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে আদ্দিস আবাবা এবং ওরোমিয়া স্পেশাল জোনে 35 জন নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে কয়েকজন পুলিশের হাতে নিহত হয়েছে। [239]
22 জুন 2019-এ, এই অঞ্চলের নিরাপত্তা বাহিনীর উপদলগুলি আঞ্চলিক সরকারের বিরুদ্ধে একটি অভ্যুত্থানের চেষ্টা করেছিল, যার সময় আমহারা অঞ্চলের রাষ্ট্রপতি, অ্যাম্বাচেউ মেকোনেনকে হত্যা করা হয়েছিল। [240] A bodyguard siding with the nationalist factions assassinated General Se'are Mekonnen – the Chief of the General Staff of the Ethiopian National Defense Force – as well as his aide, Major General Gizae Aberra.[240] প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় আমহারা অঞ্চলের নিরাপত্তা বাহিনীর প্রধান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আসমানিউ সিগেকে [241] চক্রান্তের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য অভিযুক্ত করে। [242]
ফ্যানো মিলিশিয়া হল ইথিওপিয়ার একটি আমহারান যুব গোষ্ঠী, যাকে হয় প্রতিবাদী দল বা সশস্ত্র মিলিশিয়া হিসাবে বিবেচনা করা হয়। [243]ফ্যানো ইউনিট 10-11 জানুয়ারী 2019,[244] সময় মেটেম্মায় 58 জন কেম্যান্ট লোক সহ জাতিগত গণহত্যায় অংশগ্রহণের জন্য এবং 2020 সালের নভেম্বরে টাইগ্রে সংঘর্ষের সময় হুমেরায় সশস্ত্র কর্মকাণ্ডে অংশ নেওয়ার জন্য অভিযুক্ত। [245] 29 শে জুন 2020-এ ওরোমো সঙ্গীতশিল্পী হাচালু হুনডেসা [246] হত্যার পরে ইথিওপিয়া জুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে, যার ফলে কমপক্ষে 239 জন মারা যায়। [247]
ফেডারেল সরকার, সমৃদ্ধি পার্টির অধীনে, অনুরোধ করেছে যে ইথিওপিয়ার জাতীয় নির্বাচন বোর্ড COVID-19 সম্পর্কে স্বাস্থ্য এবং সুরক্ষা উদ্বেগের কারণে 2020 সালের নির্বাচন বাতিল করে।সেই সময়ে পরবর্তী নির্বাচনের জন্য কোনও আনুষ্ঠানিক তারিখ নির্ধারণ করা হয়নি, তবে সরকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে একবার COVID-19 এর জন্য একটি ভ্যাকসিন তৈরি করা হলে নির্বাচন এগিয়ে যাবে। [248] Tigrayan শাসক দল, Tigray People's Liberation Front বা TPLF, নির্বাচন বাতিলের বিরোধিতা করেছিল এবং, যখন ফেডারেল সরকারের কাছে তাদের নির্বাচন অনুষ্ঠানের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল, TPLF যেভাবেই হোক 9 সেপ্টেম্বর 2020 তারিখে নির্বাচন করার জন্য এগিয়ে যায়।তারা আঞ্চলিক বিরোধী দলগুলোর সাথে কাজ করেছে এবং নির্বাচন প্রক্রিয়ায় আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের অন্তর্ভুক্ত করেছে। [249] এটি অনুমান করা হয়েছিল যে 2.7 লাখ লাখ মানুষ নির্বাচনে অংশ নেয়। [250]
নির্বাচনের পরে ফেডারেল সরকার এবং টাইগ্রে আঞ্চলিক সরকারের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটে,[251] এবং 4 নভেম্বর 2020-এ, আবি সেখানে অবস্থানরত সেনা ইউনিটগুলিতে আক্রমণের প্রতিক্রিয়া হিসাবে টাইগ্রে অঞ্চলে একটি সামরিক আক্রমণ শুরু করে, যার ফলে হাজার হাজার শরণার্থী পালিয়ে যায়। প্রতিবেশী সুদান এবং টাইগ্রে যুদ্ধের সূত্রপাত । [252][253] স্থানীয় মিডিয়া অনুসারে, 9 নভেম্বর 2020 তারিখে মাই কাদ্রা শহরে একটি গণহত্যায় 500 জন বেসামরিক লোক নিহত হতে পারে। [254][255] 2021 সালের এপ্রিলে, ইরিত্রিয়া নিশ্চিত করেছে যে তার সৈন্যরা ইথিওপিয়ায় যুদ্ধ করছে। [256]
ইথিওপিয়া একটি ফেডারেল সংসদীয় প্রজাতন্ত্র, যেখানে প্রধানমন্ত্রী হলেন সরকারের প্রধান, এবং রাষ্ট্রপতি হলেন রাষ্ট্রের প্রধান কিন্তু বেশিরভাগ আনুষ্ঠানিক ক্ষমতা সহ।নির্বাহী ক্ষমতা সরকার এবং ফেডারেল আইন প্রণয়ন ক্ষমতা দ্বারা প্রয়োগ করা হয় যা সরকার এবং সংসদের দুটি কক্ষ উভয়ের মধ্যে ন্যস্ত থাকে।হাউস অফ ফেডারেশন হল 108 টি আসন সহ দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট আইনসভার উপরের কক্ষ এবং নিম্ন কক্ষ হল 547 টি আসন সহ হাউস অফ পিপলস রিপ্রেজেন্টেটিভস (HoPR)।হাউস অফ ফেডারেশন আঞ্চলিক পরিষদ দ্বারা বাছাই করা হয় যেখানে HoPR-এর এমপিরা সরাসরি নির্বাচিত হন, পরিবর্তে, তারা ছয় বছরের মেয়াদের জন্য রাষ্ট্রপতি এবং 5 বছরের মেয়াদের জন্য প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন করেন।
1994 ইথিওপিয়ার সংবিধানের 78 অনুচ্ছেদের ভিত্তিতে, বিচার বিভাগ নির্বাহী এবং আইনসভা থেকে সম্পূর্ণ স্বাধীন। [257] এটি নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রীর মনোনয়ন নিয়ে সংসদ কর্তৃক নিযুক্ত সুপ্রিম কোর্টের উপ-রাষ্ট্রপতি ও রাষ্ট্রপতি মো.একবার নির্বাচিত হলে, কার্যনির্বাহী ক্ষমতার অফিস থেকে অপসারণের কোনো ক্ষমতা নেই।অন্যান্য বিচারকদের স্বচ্ছ মানদণ্ডের ভিত্তিতে ফেডারেল জুডিশিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ কাউন্সিল (FJAC) দ্বারা মনোনীত করা হয় এবং HoPR-এ নিয়োগের জন্য প্রধানমন্ত্রীর সুপারিশের ভিত্তিতে।সব ক্ষেত্রে, বিচারকদের তাদের দায়িত্ব থেকে অপসারণ করা যাবে না যদি না তারা অবসর গ্রহণ করেন, শৃঙ্খলা সংক্রান্ত নিয়ম লঙ্ঘন করেন, স্থূল অসামঞ্জস্যতা, বা অসুস্থ স্বাস্থ্যের কারণে অযোগ্যতার জন্য অদক্ষ।বিপরীতে, HoPR-এর সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে রাষ্ট্রীয় বিচারকদের ক্ষেত্রে ফেডারেল বিচার বিভাগীয় স্তর বা রাজ্য কাউন্সিলে অপসারণ অনুমোদনের অধিকার রয়েছে। [258] 2015 সালে, ফ্রিডম হাউসের তৈরি একটি প্রতিবেদনে এই বিধানের বাস্তবতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছিল। [259]
2010 সালের শেষের দিকে যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট দ্বারা প্রকাশিত গণতন্ত্র সূচক অনুসারে, ইথিওপিয়া একটি "স্বৈরাচারী শাসন" ছিল, 167টি দেশের মধ্যে 118তম-সবচেয়ে গণতান্ত্রিক হিসাবে স্থান পেয়েছে। [260] ইথিওপিয়া 2006 সাল থেকে তালিকায় 12 টি স্থান নেমে গেছে এবং 2010 সালের রিপোর্টে 2010 সালের সংসদ নির্বাচনের আগে বিরোধী কার্যকলাপ, মিডিয়া এবং সুশীল সমাজের উপর সরকারের দমন-পীড়নের জন্য দায়ী করা হয়েছে, যে রিপোর্টটি ইথিওপিয়াকে <i id="mwBZc">কার্যত</i> এক-দলীয় করে তুলেছিল। রাষ্ট্র
যাইহোক, 2018 সালে আবি আহমেদকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগের পর থেকে পরিস্থিতি দ্রুত বিকশিত হয়েছে।
রাজতান্ত্রিক শাসনের অধীনে ইথিওপিয়া কেন্দ্রীভূত আঞ্চলিক শক্তি ছিল, আকসুমাইট যুগ থেকে উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত রাজনৈতিক অখণ্ডতা ঔপনিবেশিকতা ও আক্রমণের বিভিন্ন প্রচেষ্টাকে প্রতিরোধ করে।1995-পরবর্তী শাসনব্যবস্থা দেশে উদারীকরণ নিয়ে আসে এবং সর্বব্যাপী সংস্কারের প্রচার করে।আজ, এর অর্থনীতি মিশ্র, বাজার-ভিত্তিক । [258]
1994 সালের জুন মাসে 547 সদস্যের গণপরিষদের প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।এই সমাবেশ 1994 সালের ডিসেম্বরে ফেডারেল ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অফ ইথিওপিয়ার সংবিধান গ্রহণ করে।ইথিওপিয়ার প্রথম জনপ্রিয়ভাবে নির্বাচিত জাতীয় সংসদ এবং আঞ্চলিক আইনসভার নির্বাচন মে এবং জুন 1995 সালে অনুষ্ঠিত হয়েছিল।অধিকাংশ বিরোধী দল এই নির্বাচন বর্জন করেছে।ইথিওপিয়ান পিপলস রেভল্যুশনারি ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইপিআরডিএফ) ভূমিধস বিজয় ছিল।আন্তর্জাতিক এবং বেসরকারী পর্যবেক্ষকরা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন যে বিরোধী দলগুলি যদি তারা এটি করতে পছন্দ করত তবে তারা অংশগ্রহণ করতে সক্ষম হত। নতুন সংবিধানের অধীনে ইথিওপিয়ার প্রথম সরকার 1995 সালের আগস্টে রাষ্ট্রপতি হিসাবে নেগাসো গিদাদাকে ইনস্টল করা হয়েছিল।প্রধানমন্ত্রী মেলেস জেনাভির ইপিআরডিএফ-এর নেতৃত্বাধীন সরকার আঞ্চলিক, জাতিগতভাবে ভিত্তিক কর্তৃপক্ষের কাছে উল্লেখযোগ্য ক্ষমতা হস্তান্তর করে জাতিগত ফেডারেলিজমের নীতি প্রচার করে।ইথিওপিয়াতে আজ এগারোটি আধা-স্বায়ত্তশাসিত প্রশাসনিক অঞ্চল রয়েছে যাদের নিজস্ব রাজস্ব বাড়ানো এবং ব্যয় করার ক্ষমতা রয়েছে।বিগত সরকারের আমলে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা সহ কিছু মৌলিক স্বাধীনতা খর্ব করা হয়েছিল। [261]
রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন নেটওয়ার্ক ব্যতীত অন্যান্য মিডিয়াতে নাগরিকদের খুব কম অ্যাক্সেস ছিল এবং বেশিরভাগ বেসরকারী সংবাদপত্রগুলি খোলা থাকার জন্য লড়াই করেছিল এবং সরকারের কাছ থেকে পর্যায়ক্রমে হয়রানির শিকার হয়েছিল। [261] 2005 সালের নির্বাচন থেকে শুরু করে, অন্তত 18 জন সাংবাদিক যারা সরকারের সমালোচনামূলক নিবন্ধ লিখেছেন, গণহত্যা এবং রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।সরকার তার নীতির সমালোচনাকারী সাংবাদিকদের ভয় দেখানোর জন্য মানহানি নিয়ন্ত্রণকারী প্রেস আইন ব্যবহার করেছে। [262]
মেলসের সরকার 2000 সালে প্রথম বহুদলীয় নির্বাচনে নির্বাচিত হয়েছিল; যাইহোক, ফলাফলগুলি আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের দ্বারা ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়েছিল এবং বিরোধীরা প্রতারণামূলক বলে নিন্দা করেছিল।ইপিআরডিএফ 2005 সালের নির্বাচনে জয়লাভ করে এবং মেলসকে ক্ষমতায় ফিরিয়ে দেয়।যদিও নির্বাচনে বিরোধীদের ভোট বেড়েছে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং অন্যত্র বিরোধী দল এবং পর্যবেক্ষক উভয়ই বলেছে যে ভোটটি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের জন্য আন্তর্জাতিক মান পূরণ করেনি। [261] ইথিওপিয়ান পুলিশ 193 জন বিক্ষোভকারীকে গণহত্যা করেছে বলে জানা গেছে, বেশিরভাগই রাজধানী আদ্দিস আবাবায়, মে 2005 সালের নির্বাচনের পর ইথিওপিয়ান পুলিশ গণহত্যায় সহিংসতায়। [263]
সরকার প্রদেশগুলিতেও ক্র্যাকডাউন শুরু করেছে; ওরোমিয়া অঞ্চলে, কর্তৃপক্ষ নির্বাচনের পর সমালোচকদের, বিশেষ করে নিবন্ধিত বিরোধী দল ওরোমো ন্যাশনাল কংগ্রেস (ONC)-এর প্রতি সহানুভূতিশীল ব্যক্তিদের নির্বাক করার জন্য নির্যাতন, কারাবাস এবং অন্যান্য দমনমূলক পদ্ধতি ব্যবহার করার জন্য বিদ্রোহ ও সন্ত্রাসবাদের উদ্বেগ ব্যবহার করেছিল। [262] সরকার 2007 সাল থেকে ওগাডেন অঞ্চলে বিদ্রোহীদের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত রয়েছে।2005 সালে সবচেয়ে বড় বিরোধী দল ছিল কোয়ালিশন ফর ইউনিটি অ্যান্ড ডেমোক্রেসি (CUD)।বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ বিভাজনের পর, সিইউডি পার্টির বেশিরভাগ নেতা বিচারক বিরতুকান মিদেকসার নেতৃত্বে নতুন ইউনিটি ফর ডেমোক্রেসি অ্যান্ড জাস্টিস পার্টি প্রতিষ্ঠা করেছেন।দেশটির ওরোমো জাতিগত গোষ্ঠীর সদস্য, বিরতুকান মিদেকসা ইথিওপিয়াতে একটি রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বদানকারী প্রথম মহিলা।
2008 সালে, শীর্ষ পাঁচটি বিরোধী দল ছিল বিচারক বিরতুকান মিদেকসার নেতৃত্বাধীন গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচারের জন্য ঐক্য, বেইনে পেট্রোসের নেতৃত্বে ইউনাইটেড ইথিওপিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্সেস, বুলচা দেমেক্সার নেতৃত্বে ওরোমো ফেডারেলবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন, ওরোমো পিপলস কংগ্রেস, মেরার ইউনাইটেড ইথিনাওপিন । ডেমোক্রেটিক পার্টি - লিদেতু আয়ালেউয়ের নেতৃত্বে মেদিন পার্টি।2015 নির্বাচনের পর, ইথিওপিয়া তার একক অবশিষ্ট বিরোধী এমপিকে হারিয়েছে;[264] 2015 সাল নাগাদ ইথিওপিয়ার পার্লামেন্টে কোনো বিরোধী সাংসদ ছিল না। [265]
প্রাচীনকালে ইথিওপিয়া ছিল একটি বাণিজ্য জাতি, যা ল্যান্ড অফ পান্ট থেকে শুরু করে, প্রধানত সোনা, হাতির দাঁত, বহিরাগত প্রাণী এবং ধূপের মতো পণ্য রপ্তানি করত। [266] অনেক ইতিহাসবিদ এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন যে ইথিওপিয়ার আধুনিক কূটনৈতিক সম্পর্ক সম্রাট দ্বিতীয় টেওয়েড্রোসের অধীনে শুরু হয়েছিল, যার রাজত্ব ইথিওপিয়ান সীমান্ত স্থাপনের জন্য চাওয়া হয়েছিল এবং পরে 1868 সালের ব্রিটিশ অভিযানে ব্যর্থ হয়েছিল। [267] তারপর থেকে, মাহদিস্ট যুদ্ধের প্রভাবের কারণে সুয়েজ খাল খোলার আগ পর্যন্ত বিশ্ব শক্তির দ্বারা দেশটিকে অপ্রয়োজনীয় দেখা যায়। [268]
বর্তমানে, ইথিওপিয়া চীন, ইসরায়েল, মেক্সিকো এবং ভারতের পাশাপাশি প্রতিবেশী দেশগুলির সাথে দৃঢ় সম্পর্ক বজায় রাখে।গ্র্যান্ড ইথিওপিয়ান রেনেসাঁ বাঁধ প্রকল্পের কারণে সুদান এবং মিশরের সাথে সম্পর্ক কিছুটা বিতর্কিত অবস্থায় রয়েছে, যা 2020 সালে বৃদ্ধি পায়। [269][270] 2010 সালে ছয়টি উজানের দেশ (ইথিওপিয়া, কেনিয়া, উগান্ডা, রুয়ান্ডা, বুরুন্ডি এবং তানজানিয়া ) সমবায় ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়া সত্ত্বেও, মিশর এবং সুদান জল বণ্টন চুক্তি প্রত্যাখ্যান করেছে যে নীল নদ অববাহিকায় জলের পরিমাণ হ্রাস করা তাদের জল অধিকারের ঐতিহাসিক সংযোগকে চ্যালেঞ্জ করে। .[271][272] 2020 সালে, প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদ সতর্ক করেছিলেন যে "কোনও শক্তি ইথিওপিয়াকে বাঁধ নির্মাণ থেকে আটকাতে পারবে না।যদি যুদ্ধে যাওয়ার প্রয়োজন হয়, আমরা লক্ষ লক্ষ প্রস্তুত থাকতে পারি।" [273] মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক অবশ্যই সৌহার্দ্যপূর্ণ, উপরন্তু ইথিওপিয়া গ্লোবাল ওয়ার অন টেররিজম এবং আফ্রিকান গ্রোথ অ্যান্ড অপর্চুনিটি অ্যাক্ট (AGOA) এর কৌশলগত অংশীদার। [274] যুক্তরাষ্ট্রেরপ্রাক্তন রাষ্ট্রপতি বারাক ওবামা জুলাই 2015 সালে ইথিওপিয়া সফরে প্রথম দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিলেন, আফ্রিকা ইউনিয়নে বক্তৃতা দেওয়ার সময়, তিনি ইসলামী সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কথা তুলে ধরেন। [275][276] ইথিওপিয়া ইউরোপের দেশগুলিতে প্রধানত ইতালি, সৌদি আরব, যুক্তরাজ্য, কানাডা, সুইডেন এবং অস্ট্রেলিয়ায় অভিবাসীদের কেন্দ্রীভূত করেছে।ইথিওপিয়ায় 2019 সাল পর্যন্ত ইস্রায়েলে প্রায় 155,300 ইহুদি অভিবাসী রয়েছে।তারা সম্মিলিতভাবে বেটা ইজরায়েল নামে পরিচিত।ইথিওপিয়া গ্রুপ অফ 24 (G-24), জোট নিরপেক্ষ আন্দোলন এবং G77 এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য।2002 সালে, আফ্রিকান ইউনিয়ন আদ্দিস আবাবায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল যার প্রধান কার্যালয় সংখ্যাগরিষ্ঠ ছিল।এছাড়াও, এটি প্যান আফ্রিকান চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি, আফ্রিকার জন্য জাতিসংঘের অর্থনৈতিক কমিশন, আফ্রিকান স্ট্যান্ডবাই ফোর্স এবং আফ্রিকার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করা অনেক বৈশ্বিক এনজিওর সদস্য।
ইথিওপিয়া আফ্রিকান দেশগুলির মধ্যে একটি এবং 20 শতকের প্রথম দিকে ঔপনিবেশিক যুগের অন্তত শেষের পর থেকে লিগ অফ নেশনস এখন জাতিসংঘের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য।ইথিওপিয়ায় জাতিসংঘের কাজগুলি প্রাথমিকভাবে মানবিক সমস্যা এবং উন্নয়ন।উদাহরণ স্বরূপ, ইথিওপিয়ায় ইউএন কান্ট্রি টিম (ইউএনসিটি) 28টি জাতিসংঘের তহবিল ও কর্মসূচি এবং বিশেষায়িত সংস্থার প্রতিনিধি রয়েছে।এর কিছু সংস্থা আফ্রিকা এবং আফ্রিকান ইউনিয়নের জন্য জাতিসংঘের অর্থনৈতিক কমিশনের সাথে আঞ্চলিক লিগ্যাচার বাধ্যতামূলক করে।জাতিসংঘ ইথিওপিয়াতে সর্ব-বিস্তৃত বিষয়গুলিতে মনোযোগ দেয়, দুটি লক্ষ্য প্রদান করে: টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (SDGs) এবং জাতীয় উন্নয়ন অগ্রাধিকার।এর মধ্যে রয়েছে দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াই, টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, জলবায়ু পরিবর্তন নীতি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা প্রদান, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি এবং পরিবেশ সুরক্ষা। [277]
ঐতিহাসিকভাবে, ইথিওপিয়া ব্যাপকভাবে সামরিক শক্তির উপর নির্মিত হয়েছিল এবং বহিরাগত শক্তির বিরুদ্ধে সিদ্ধান্তমূলক আক্রমণ দেখেছিল।পর্তুগাল, রাশিয়া, ফ্রান্স এবং ব্রিটেনের মতো ইউরোপীয় দেশগুলির সহায়তায় সজ্জিত আধুনিক অস্ত্র থাকা সত্ত্বেও, ইথিওপিয়ান সেনাবাহিনী মূলত সামন্ততান্ত্রিক ব্যবস্থার উপর নির্ভর করেছিল, তাই এর সেনাবাহিনী প্রায় কৃষক মিলিশিয়া নিয়ে গঠিত।আমদা সিয়ন I- এর অধীনে, 14 শতকে চেওয়া রেজিমেন্ট নামে একটি সৈন্যদল গঠিত হয়েছিল, মধ্যযুগীয় সময়ে প্রভাবশালী সামরিক শক্তিতে পরিণত হয়েছিল।এটি সাধারণত কয়েক হাজার পুরুষ পর্যন্ত গঠিত হয়েছিল।আধুনিক সামরিক বাহিনী 1917 সালে তাফারি মাকোনেন দ্বারা তৈরি করা হয়েছিল যা কেবুর জাবাগনা বলা হত।1950 সাল থেকে কোরিয়ান যুদ্ধে জড়িত কাগনিউ ব্যাটালিয়ন ইউনিটের অধীনে ইথিওপিয়ান সেনাবাহিনী, জাতিসংঘের কমান্ডের অংশ হিসাবে যুদ্ধ করেছিল।কিছু প্রকাশনায় বলা হয়েছে যে ইথিওপিয়ান সৈন্যরা 15 বছর ধরে রয়ে গেছে, যদিও অন্যরা বলেছে যে তারা 1975 সাল পর্যন্ত জাতিসংঘের কমান্ডের অংশ হিসেবে চলে গেছে। [278] যুদ্ধের সময় ব্যাটালিয়নের আকার ছিল 6,037 সৈন্য।
ইথিওপিয়ান ন্যাশনাল ডিফেন্স ফোর্স আফ্রিকার বৃহত্তম সামরিক বাহিনী [279] এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় দ্বারা পরিচালিত হয়।অন্যান্য সামরিক শাখার মধ্যে রয়েছে স্থল বাহিনী, বিমান বাহিনী এবং পূর্বে নৌবাহিনী ।1996 সাল থেকে ল্যান্ডলকড ইথিওপিয়ায় কোনো নৌবাহিনী নেই কিন্তু 2018 সালে প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদ রাষ্ট্রীয় টিভিতে বলেছিলেন: "আমরা আফ্রিকার সবচেয়ে শক্তিশালী স্থল ও বিমান বাহিনী তৈরি করেছি। ... ভবিষ্যতে আমাদের নৌবাহিনীর সক্ষমতা তৈরি করা উচিত।" [280]
সংবিধান ইথিওপিয়ান ফেডারেল পুলিশকে (EFP) আইন প্রয়োগের দায়িত্বের নিশ্চয়তা দেয়।EFP ফেডারেল স্তরে সুরক্ষা এবং জনকল্যাণের জন্য দায়ী।1995 সালে প্রতিষ্ঠিত, ফেডারেল পুলিশ ফেডারেল পুলিশ কমিশনার দ্বারা জরিপ করা হয়েছে অক্টোবর 2000 থেকে; ফেডারেল পুলিশ কমিশনার তারপরে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের কাছে টাস্ক রিপোর্ট করেন, তবে 2018 সালে রাজনৈতিক সংস্কারের পরে এটি বাতিল হয়ে যায় এবং সংসদে নির্দেশিত হয়।পূর্ববর্তী বছরগুলিতে, ফেডারেল পুলিশ সরাসরি মন্ত্রণালয়ের কাজগুলি রিপোর্ট করে।উপরন্তু, ফেডারেল পুলিশ সাহায্যের জন্য আঞ্চলিক পুলিশ কমিশনগুলি প্রকাশ করার ক্ষমতা রাখে।স্বাধীনভাবে, স্থানীয় মিলিশিয়ারা নিরাপত্তা বজায় রাখে।
আজকাল, ঘুষ একটি মৌলিক উদ্বেগ, বিশেষ করে ট্রাফিক পুলিশ পর্যবেক্ষণ করে।সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পুলিশি বর্বরতা প্রকট আকার ধারণ করেছে।26 আগস্ট 2019-এ, আদ্দিস আবাবায় একজন বয়স্ক মহিলার দৃশ্যে হস্তক্ষেপ করায় দুই পুলিশ কর্মকর্তার হাতে হাতকড়া পরা ব্যক্তিকে মারধরের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল।সাম্প্রতিক পুলিশের অসদাচরণকে ফেডারেল পুলিশ কমিশনারের সংবিধানের 52 অনুচ্ছেদ মেনে চলার ব্যর্থতা বলা হয়, যা বল প্রয়োগের বেআইনি ব্যবহারের তদন্ত এবং সেই অসদাচরণকারী অফিসারকে বরখাস্ত করার কথা বলে৷আফ্রিকান ইউনিয়নের লুয়ান্ডা এবং রবেন দ্বীপ নির্দেশিকা বা ক্ষমতার অপব্যবহারের শিকারদের জন্য ন্যায়বিচারের বিষয়ে জাতিসংঘের ঘোষণা এবং বল ও আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার সম্পর্কিত তাদের মৌলিক নীতিগুলি একবার ইথিওপিয়ান সরকারের শৃঙ্খলা কমিটির কাছে ব্যক্তিগত এবং উভয় ক্ষেত্রেই পুলিশের বর্বরতা মোকাবেলা করতে বাধ্য। সিস্টেমিক স্তর। [281]
মানবাধিকার লঙ্ঘন প্রায়ই দেশটিতে সহ্য জাতিগত ও সাম্প্রদায়িক সহিংসতার সাথে থাকে । [282] 2016 সালের একটি বিক্ষোভে, ওরোমিয়া এবং আমহারা অঞ্চলে সরাসরি সরকারি বন্দুকযুদ্ধে 100 জন শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছিল। [283] জাতিসংঘ এই ঘটনার তদন্তের জন্য ইথিওপিয়ার মাটিতে জাতিসংঘের পর্যবেক্ষকদের আহ্বান জানিয়েছে,[284] তবে ইপিআরডিএফ-প্রধান ইথিওপিয়ান সরকার এই আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছে। [285] বিক্ষোভকারীরা ভূমি দখল এবং তাদের প্রতিনিধি নির্বাচনের স্বাধীনতার মতো মৌলিক মানবাধিকারের অভাবের প্রতিবাদ করছে।TPLF-প্রধান ইপিআরডিএফ জালিয়াতি দ্বারা চিহ্নিত একটি নির্বাচনে 100% জিতেছে যার ফলস্বরূপ ইথিওপিয়ার বেসামরিক নাগরিকরা নির্বাচন-পরবর্তী বিক্ষোভে অদৃশ্য মাত্রায় প্রতিবাদ করেছে। [286]
ওরোমো পিপলস কংগ্রেসের নেতা মেরেরা গুদিনা বলেছেন, পূর্ব আফ্রিকার দেশটি একটি "চৌরাস্তায়" রয়েছে।তিনি রয়টার্সের সাথে সাক্ষাৎকারে যোগ করেছেন: "মানুষ তাদের অধিকার দাবি করছে," তিনি বলেছিলেন।“এক শতাব্দীর এক চতুর্থাংশ ধরে শাসক যা করছে তাতে মানুষ বিরক্ত।তারা জমি দখল, ক্ষতিপূরণ, চুরি করা নির্বাচন, জীবনযাত্রার ক্রমবর্ধমান ব্যয়, অনেক কিছুর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছে।"যদি সরকার দমন করতে থাকে যখন জনগণ তাদের অধিকার দাবি করে লক্ষ লক্ষের মধ্যে তা (গৃহযুদ্ধ) সম্ভাব্য পরিস্থিতিগুলির মধ্যে একটি।" [286]
2003 সালে ইথিওপিয়ায় ঐতিহ্যগত অনুশীলন সংক্রান্ত জাতীয় কমিটির সমীক্ষা অনুসারে, অপহরণ দ্বারা বিবাহ দেশের 69% বিবাহের জন্য দায়ী, যার প্রায় 80% বৃহত্তম অঞ্চল, ওরোমিয়াতে এবং সর্বাধিক 92% দক্ষিণ দেশ, জাতীয়তাতে, এবং জনগণের অঞ্চল । [287][288] সাংবাদিক ও কর্মীদের ইথিওপিয়াতে COVID-19 মহামারীর কভারেজের জন্য হুমকি বা গ্রেপ্তার করা হয়েছে। [289]
দক্ষিণ ইথিওপিয়ার ওমোটিক করো-ভাষী এবং হামের জনগণের মধ্যে, প্রাপ্তবয়স্ক এবং শারীরিক অস্বাভাবিকতাযুক্ত শিশুদেরকে মিঙ্গি বলে মনে করা হয়, " আচারগতভাবে অশুদ্ধ"।পরেরটি অন্যদের উপর খারাপ প্রভাব ফেলে বলে বিশ্বাস করা হয়; প্রতিবন্ধী শিশুদের ঐতিহ্যগতভাবে সঠিকভাবে দাফন ছাড়াই হত্যা করা হয়। [290] করো 2012 [291] জুলাই মাসে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুশীলন নিষিদ্ধ করেছিল।
2013 সালে, ওকল্যান্ড ইনস্টিটিউট গাম্বেলা অঞ্চলে ইথিওপিয়ান সরকারকে "তাদের জমি থেকে লক্ষ লক্ষ আদিবাসীদের" স্থানান্তর করতে বাধ্য করার অভিযোগ করে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে৷ [292] সংস্থার বেশ কয়েকটি প্রতিবেদন অনুসারে, যারা প্রত্যাখ্যান করেছিল তারা শারীরিক এবং যৌন নির্যাতন সহ বিভিন্ন ধরনের ভয় দেখানোর কৌশলের বিষয় ছিল, যা কখনও কখনও মৃত্যুর দিকে নিয়ে যায়। [293][294][295]হিউম্যান রাইটস ওয়াচের অনুরূপ 2012 সালের প্রতিবেদনে ইথিওপিয়ান সরকারের 2010-2011 গাম্বেলায় গ্রামীণ কর্মসূচির বর্ণনা দেওয়া হয়েছে, অন্যান্য অঞ্চলে অনুরূপ পুনর্বাসন চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে। [296] ইথিওপিয়ান সরকার ভূমি দখলের অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং পরিবর্তে উন্নয়ন কর্মসূচির সুবিধার প্রমাণ হিসাবে দেশের অর্থনীতির ইতিবাচক গতিপথের দিকে ইঙ্গিত করেছে। [295] ওরোমিয়া অঞ্চলে কেন্দ্রীভূত হিংসাত্মক প্রতিবাদের একটি দেশব্যাপী সিরিজ, 23 অক্টোবর 2019 থেকে শুরু হয়, কর্মী এবং মিডিয়া মালিক জাওয়ার মোহাম্মদের অভিযোগ যে নিরাপত্তা বাহিনী তাকে আটক করার চেষ্টা করেছিল তার কারণে।সরকারী রিপোর্ট অনুযায়ী, 86 জন নিহত হয়েছে। [297] 29 মে 2020-এ, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ইথিওপিয়ার নিরাপত্তা বাহিনীকে গণ আটক ও বিচারবহির্ভূত হত্যার অভিযোগ এনে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে 2019 সালে, ওরোমো লিবারেশন আর্মিকে সমর্থন করার সন্দেহে অন্তত 25 জন, ওরোমিয়া অঞ্চলের কিছু অংশে বাহিনী দ্বারা নিহত হয়েছিল।এছাড়াও, জানুয়ারী থেকে সেপ্টেম্বর 2019 এর মধ্যে, সন্দেহজনকভাবে কমপক্ষে 10,000 জনকে আটক করা হয়েছিল, যেখানে বেশিরভাগই "নৃশংস মারধরের শিকার" হয়েছিল। [298]
ইথিওপিয়াতে সমকামী কাজ অবৈধ।পেনাল কোড ধারা 629 অনুসারে, সমকামী কার্যকলাপের শাস্তি 15 বছর পর্যন্ত যাবজ্জীবন কারাদণ্ড । [299] ইথিওপিয়া একটি সামাজিকভাবে রক্ষণশীল দেশ।অধিকাংশ মানুষ এলজিবিটি লোকদের প্রতি বিদ্বেষী এবং ধর্মীয় ও সামাজিক নিয়মের কারণে নিপীড়ন সাধারণ ব্যাপার।2008 সালের মন্ত্রী পরিষদের কাছে ব্যর্থ আবেদনের পর থেকে দেশে সমকামিতা প্রকাশ্যে আসে এবং আদ্দিস আবাবার মতো প্রধান মেট্রোপলিটন অবস্থানগুলিতে এলজিবিটি দৃশ্য কিছুটা উন্নতি করতে শুরু করে।শেরাটন অ্যাডিস এবং হিলটন হোটেলের মতো কিছু উল্লেখযোগ্য হোটেল কথিত তদবিরের জন্য অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। [300]
ইথিওপিয়ান অর্থোডক্স চার্চ বিরোধিতায় সামনের ভূমিকা পালন করে; এর কিছু সদস্য সমকামী বিরোধী সংগঠন গঠন করে।উদাহরণ স্বরূপ, দেরেজে নেগাশ, একজন বিশিষ্ট কর্মী, 2014 সালে "জিম আনলেম" প্রতিষ্ঠা করেন, যা একটি ঐতিহ্যবাদ এবং লিঙ্গ-বিরোধী আন্দোলন। [301] 2007 পিউ গ্লোবাল অ্যাটিটিউড প্রজেক্ট অনুসারে, 97 শতাংশ [302] ইথিওপিয়ানরা বিশ্বাস করে যে সমকামিতা এমন একটি জীবনধারা যা সমাজকে মেনে নেওয়া উচিত নয়।এটি জরিপ করা 45টি দেশে অগ্রহণযোগ্যতার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ হার ছিল। [303]
1996 সালের আগে, ইথিওপিয়া তেরোটি প্রদেশে বিভক্ত ছিল, অনেকগুলি ঐতিহাসিক অঞ্চল থেকে প্রাপ্ত।জাতিতে এখন একটি স্তরবিশিষ্ট সরকার ব্যবস্থা রয়েছে যা আঞ্চলিক রাজ্য, অঞ্চল, জেলা ( ওরেডা ) এবং কেবেলেস ("প্রতিবেশী") তত্ত্বাবধান করে একটি ফেডারেল সরকার নিয়ে গঠিত।
ইথিওপিয়া এগারোটি জাতিগতভাবে ভিত্তিক এবং রাজনৈতিকভাবে স্বায়ত্তশাসিত আঞ্চলিক রাজ্যে বিভক্ত ( কিলিলোচ, একক কিলিল ) এবং দুটি চার্টার্ড শহর ( অস্তেদাদার আকাবিওচ, একবচন অস্টেদাডার আকাবাবি ), পরেরটি হচ্ছে আদ্দিস আবাবা এবং ডায়ার দাওয়া ।কিলিলোচকে আটষট্টিটি জোনে বিভক্ত করা হয়েছে এবং তারপরে আরও 550টি ওরেডা এবং বেশ কয়েকটি বিশেষ পোশাকে বিভক্ত করা হয়েছে।
সংবিধান আঞ্চলিক রাজ্যগুলিকে ব্যাপক ক্ষমতা প্রদান করে, যারা তাদের নিজস্ব সরকার এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে পারে যতক্ষণ না এটি ফেডারেল সরকারের সংবিধানের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ থাকে।প্রতিটি অঞ্চলের শীর্ষে একটি আঞ্চলিক পরিষদ রয়েছে যেখানে সদস্যরা সরাসরি জেলাগুলির প্রতিনিধিত্ব করার জন্য নির্বাচিত হয় এবং কাউন্সিলের কাছে অঞ্চলগুলির অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলি পরিচালনা করার জন্য আইন প্রণয়ন এবং নির্বাহী ক্ষমতা রয়েছে।
অধিকন্তু, ইথিওপিয়ার সংবিধানের 39 অনুচ্ছেদ প্রতিটি আঞ্চলিক রাষ্ট্রকে ইথিওপিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার অধিকার দেয়।তবে বিতর্ক রয়েছে, সংবিধানে কতটা ক্ষমতা নিশ্চিত করা হয়েছে তা আসলে রাজ্যগুলিকে দেওয়া হয়েছে।কাউন্সিলগুলি একটি নির্বাহী কমিটি এবং আঞ্চলিক সেক্টরাল ব্যুরোর মাধ্যমে তাদের আদেশ বাস্তবায়ন করে।কাউন্সিল, এক্সিকিউটিভ এবং সেক্টরাল পাবলিক প্রতিষ্ঠানের এই ধরনের একটি বিস্তৃত কাঠামো পরবর্তী স্তরে প্রতিলিপি করা হয় ( woreda )।
অঞ্চল বা শহর | রাজধানী | ক্ষেত্রফল (কিমি২) | জনসংখ্যা [304] | ||||
---|---|---|---|---|---|---|---|
১৯৯৪ সালের অক্টোবরের আদমশুমারি | ২০০৭ সালের মে মাসের আদমশুমারি | ২০১২ সালের জুলাইয়ের আদমশুমারি | ২০১৭ সালের আদমশুমারি [305] | ||||
আদ্দিস আবাবা | astedader | আদ্দিস আবাবা | ৫২৬.৯৯ | ২,১০০,০৩১ | ২,৭৩৮,২৪৮ | ৩,০৪১,০০২ | ৩,৪৩৩,৯৯৯ |
আফার | কিল | সেমেরা | ৭২,০৫২.৭৮ | ১,০৫১,৬৪১ | ১,৪১১,০৯২ | ১,৬০২,৯৯৫ | ১,৮১২,০০২ |
আমহারা | কিল | বাহির দার | ১৫৪,৭০৮.৯৬ | ১৩,২৭০,৮৯৮ | ১৭,২১৪,০৫৬ | ১৮,৮৬৬,০০২ | ২১,১৩৪,৯৮৮ |
বেনিশাঙ্গুল-গুমুজ | কিল | আসোসা | ৫০,৬৯৮.৬৮ | ৪৬০,৩২৫ | ৬৭০,৮৪৭ | ৯৮২,০০৪ | ১,০৬৬,০০১ |
ডায়ার দাওয়া | astedader | ডায়ার দাওয়া | ১,৫৫৮.৬১ | ২৪৮,৫৪৯ | ৩৪২,৮২৭ | ৩৮৭,০০০ | ৪৬৬,০০০ |
গাম্বেলা | কিল | গাম্বেলা | ২৯,৭৮২.৮২ | ১৬২,২৭১ | ৩০৬,৯১৬ | ৩৮৫,৯৯৭ | ৪৩৫,৯৯৯ |
হারারি | কিল | হারার | ৩৩৩.৯৪ | ১৩০,৬৯১ | ১৮৩,৩৪৪ | ২১০,০০০ | ২৪৬,০০০ |
ওরোমিয়া | কিল | আদ্দিস আবাবা | ২৮৪,৫৩৮.০০ | ১৮,৪৬৫,৪৪৯ | ২৭,১৫৮,৪৭১ | ৩১,২৯৪,৯৯২ | ৩৫,৪৬৭,০০১ |
সিদামা | কিল | হাওয়াসা | (~১২,০০০) | ||||
সোমালি | কিল | জিজিগা | ২৭৯,২৫২.০০ | ৩,১৪৪,৯৬৩ | ৪,৪৩৯,১৪৭ | ৫,১৪৮,৯৮৯ | ৫,৭৪৮,৯৯৮ |
দক্ষিণ পশ্চিম | কিল | বোঙ্গা | (~৩৯,৪০০) | ||||
দক্ষিণী জাতি, জাতীয়তা এবং জনগণ | কিল | হাওয়াসা | (~৫৪,৪০০) | ১০,৩৭৭,০২৮ | ১৫,০৪২,৫৩১ | ১৭,৩৫৯,০০৮ | ১৯,১৭০,০০৭ |
টাইগ্রে | কিল | মেকেল | ৪১,৪১০ | ৩,১৩৪,৪৭০ | ৪,৩১৪,৪৫৬ | ৪,৯২৯,৯৯৯ | ৫,২৪৭,০০৫ |
বিশেষ গণনাকৃত অঞ্চল | ৯৬,৫৭০ | ১১২,৯৯৯ | ১২৩,০০১ | ||||
মোট | ১,১২৭,১২৭.০০ | ৫১,৭৬৬,২৩৯ | ৭৩,৯১৮,৫০৫ | ৮৪,৩২০,৯৮৭ | ৯৪,৩৫১,০০১ | ||
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.