কোরীয় যুদ্ধ
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
কোরীয় যুদ্ধ (২৫ জুন ১৯৫০ – ২৭ জুলাই ১৯৫৩)[২৯][ক][৩১] জাতিসংঘ সমর্থিত কোরিয়া প্রজাতন্ত্র এবং সোভিয়েত ইউনিয়ন, গণপ্রজাতন্ত্রী চীন সমর্থিত গণতান্ত্রিক গণপ্রজাতন্ত্রী কোরিয়া মধ্যকার ১৯৫০-এর দশকের প্রথম দিকে শুরু হওয়া তিন বছরের অধিক সময় ব্যাপী সংঘটিত হওয়া একটি আঞ্চলিক সামরিক যুদ্ধ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষ দিকে সংঘটিত হওয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় যুদ্ধ নিয়ে বিজয়ী মিত্রশক্তির মধ্যকার একটি চুক্তিকে কেন্দ্র করে কোরীয়দের মধ্যে রাজনৈতিক বিভাজন এই যুদ্ধের প্রাথমিক কারণ ধরা হয়। ১৯১০ সাল থেকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত জাপান সাম্রাজ্য কোরীয় উপদ্বীপ শাসন করে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপান সাম্রাজ্যের আত্মসমর্পণের পর মার্কিন প্রশাসন উপদ্বীপটিকে ৩৮তম সমান্তরাল রেখায় ভাগ করে, এর মধ্যে মার্কিন সামরিক বাহিনী দক্ষিণ অর্ধেক নিজেদের দখলে আনে এবং সোভিয়েত সশস্ত্র বাহিনী উত্তর অর্ধেক অধিকারে আনে।[৩২]
কোরীয় যুদ্ধ (한국전쟁) (조선전쟁) | |||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
মূল যুদ্ধ: স্নায়ুযুদ্ধ | |||||||||
![]() ![]() ![]() | |||||||||
| |||||||||
বিবাদমান পক্ষ | |||||||||
সাম্যবাদ বিরোধী বাহিনী: যুদ্ধে সমর্থন
অন্যান্য সহায়তা |
সাম্যবাদী বাহিনী: | ||||||||
সেনাধিপতি ও নেতৃত্ব প্রদানকারী | |||||||||
|
| ||||||||
শক্তি | |||||||||
মোটঃ ৯,৭২,২১৪ |
মোটঃ ১৬,৪২,৬০০ | ||||||||
হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতি | |||||||||
মোটঃ১,৭৮,৪২৬ জন মৃত এবং ৩২,৯২৫ জন নিখোঁজ বিস্তারিত
|
মোট মৃতঃ ৩,৬৭,২৮৩-৭,৫০,২৮২ বিস্তারিত
| ||||||||
কোরীয় উপদ্বীপের উত্তরে প্রতিষ্ঠিত হয় সাম্যবাদী সরকার আর অন্যদিকে দক্ষিণে মার্কিনিদের সহয়তায় প্রতিষ্ঠিত ডানপন্থী সরকার। ৩৮তম সমান্তরাল রেখা ক্রমেই দুই কোরীয় রাষ্ট্রের মধ্যে রাজনৈতিক ভাগ সৃষ্টি করে। যদিও যুদ্ধ শুরু হওয়ার মাস পূর্ব পর্যন্ত আলোচনার জন্য যোগাযোগ চলতে থাকে, ধীরে ধীরে দু পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। সীমানাপাড়ে বিচ্ছিন্ন লড়াই সংঘটিত হয়। পরিস্থিতি রণাঙ্গনে রূপান্তরিত হয় যখন ১৯৫০ সালের ২৫ জুন উত্তর কোরিয়া দক্ষিণ কোরিয়া আক্রমণ করে।[৩৩] সোভিয়েত ইউনিয়ন ১৯৫০ সালে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ বর্জন করে। সোভিয়েত ইউনিয়নের ভেটো না পাওয়ায় নিরাপত্তা পরিষদে যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য নিরাপত্তা সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকারী রাষ্ট্র কোরিয়ায় একটি সামরিক হস্তক্ষেপ অনুমোদন পাস করে।
দক্ষিণ কোরিয়ার পক্ষে আন্তর্জাতিক তিন লাখ একচল্লিশ সৈন্যের ৮৮ শতাংশই মার্কিনিরা প্রদান করে এবং জাতিসংঘের অন্য বিশ সদস্য রাষ্ট্র সহায়তা প্রদান করে। প্রথম দুই মাস গুরুতর হতাহত সহ্য করার পর প্রতিরক্ষাকর্মীদের পুসান প্যারামিটারে অবস্থান নিতে বাধ্য করা হয়। এর-ই মধ্যে উত্তর কোরিয়ার পক্ষে লড়াই করার জন্য গণপ্রজাতন্ত্রী চীন যুদ্ধে প্রবেশ।[৩৩] চীনা মধ্যস্ততায় দক্ষিণী স্বজাতীয় বাহিনী ৩৮তম সমান্তরাল রেখার পিছনে পশ্চাদপসরণ করে। যতক্ষণ পর্যন্ত সোভিয়েত ইউনিয়ন সরসরি যুদ্ধে না নিলেও তারা উত্তর কোরীয় ও চীনা উভয় বাহিনীকে সরঞ্জামিক সহয়তা প্রদান করে। এই যুদ্ধ সমাপ্ত হয় যখন ২৭ জুলাই ১৯৫৩-এ কোরীয় যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এর ফলে কোরীয় অসামরিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা হয় যা দুই কোরীয় রাষ্ট্রের মাঝখানে অবস্থিত একটি আড়াই মাইল (৪ কি.মি.) চওড়া সুরক্ষিত বাফার জোন। এখনো ছোটখাটো সংঘর্ষ চলছে।
এই যুদ্ধ শুরু হয় স্থানীয় সময় ২৫ জুন ১৯৫০ ভোর সাড়ে চারটায় এবং যুদ্ধবিরতি স্বাক্ষরের মাধ্যমে শেষ হয় ২৭ জুলাই ১৯৫৩-এ। অনুমান করা হয় ২৫ লাখের উপরে বেসামরিক মানুষ এই যুদ্ধের ফলে হতাহত হয়েছে। বর্তমানে এখনও মার্কিনিরা দক্ষিণ কোরীয়দের বিভিন্নভাবে সামরিক সহয়তা করে আসছে। অনেকের বিশ্লেষণে এই যুদ্ধ স্নায়ুযুদ্ধের অংশ হিসেবে গণ্য।
পদটীকা
- As per armistice agreement of 1953, the opposing sides had to "insure a complete cessation of hostilities and of all acts of armed force in Korea until a final peaceful settlement is achieved".[৩০]
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
Wikiwand - on
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.