Loading AI tools
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ও সাহিত্যে নোবেল পুরষ্কার বিজয়ী উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
উইনস্টন চার্চিল (৩০শে নভেম্বর, ১৮৭৪ – ২৪শে জানুয়ারি, ১৯৬৫) ইংরেজ রাজনীতিবিদ ও লেখক। তিনি যুক্তরাজ্যের দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে অধিক পরিচিত। চার্চিলকে যুক্তরাজ্য ও বিশ্বের ইতিহাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নেতা হিসেবে গণ্য করা হয়। প্রথম জীবনে তিনি ব্রিটিশ নৌবাহিনীর সদস্য ছিলেন। ১৯৫৩ সালে তিনি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। ২০০২ সালে বিবিসির এক জরিপে তিনি সর্বকালের সেরা ব্রিটেনবাসী হিসেবে মনোনীত হন।
The Right Honourable স্যার উইনস্টন চার্চিল | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
কাজের মেয়াদ ২৬ অক্টোবর ১৯৫১ – ৫ এপ্রিল ১৯৫৫ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
সার্বভৌম শাসক | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ডেপুটি | এন্টোনি ইডেন | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
পূর্বসূরী | ক্লিমেন্ট এট্লি | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উত্তরসূরী | এন্টোনি ইডেন | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
কাজের মেয়াদ ১০ মে ১৯৪০ – ২৬ জুলাই ১৯৪৫ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
সার্বভৌম শাসক | ষষ্ঠ জর্জ | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ডেপুটি | ক্লিমেন্ট এট্লি (১৯৪২–১৯৪৫) | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
পূর্বসূরী | নেভিল চেম্বারলিন | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উত্তরসূরী | ক্লিমেন্ট এট্লি | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ফাদার অব দা হাউস অব কমনস | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
কাজের মেয়াদ ৮ অক্টোবর ১৯৫৯ – ২৫ সেপ্টেম্বর ১৯৬৪ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
পূর্বসূরী | ডেভিড গ্রেনফেল | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উত্তরসূরী | রাব বাটলার | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যক্তিগত বিবরণ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | Winston Leonard Spencer Churchill ৩০ নভেম্বর ১৮৭৪ Blenheim, Oxfordshire, England | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
মৃত্যু | ২৪ জানুয়ারি ১৯৬৫ ৯০) Kensington, London, England | (বয়স||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
সমাধিস্থল | St Martin's Church, Bladon | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
রাজনৈতিক দল |
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
দাম্পত্য সঙ্গী | Clementine Hozier (বি. ১৯০৮) | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
সন্তান |
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
পিতামাতা |
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শিক্ষা |
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বেসামরিক পুরস্কার | সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার (১৯৫৩) | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
সামরিক পরিষেবা | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আনুগত্য | যুক্তরাজ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শাখা | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
কাজের মেয়াদ | 1893–1924 | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
পদ | See list | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
কমান্ড | 6th Battalion, Royal Scots Fusiliers | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
যুদ্ধ |
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
সামরিক পুরস্কার | See list |
প্রায় ৫০ বছর তিনি রাজনীতির প্রথম সারিতে ছিলেন। বিভিন্ন সময়ে ক্যাবিনেটের বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেন। ১৯০০ সালে তিনি হাউস অফ কমন্সে নির্বাচিত হন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের আগে তিনি প্রেসিডেন্ট অব দ্য বোর্ড অব দ্য ট্রেড, হোম সেক্রেটারি ও যুদ্ধকালে আসকুইথ লিবারেল গর্ভমেন্টের ফার্স্ট লর্ড অব দ্য অ্যাডমিরালটির দায়িত্ব পালন করেন। তিনি রয়্যাল স্কটস ফাসিলিয়ার্সের ৬ নাম্বার ব্যাটেলিয়ানের ওয়েস্টার্ন ফ্রন্টের কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করেন। যুদ্ধ থেকে ফিরে মিনিস্টার অব মিউনিশনস, সেক্রেটারি অব স্টেট ফর ওয়ার এবং সেক্রেটারি অব স্টেট ফর এয়ারের দায়িত্ব পালন করেন। যুদ্ধের পর রক্ষণশীল বাল্ডউইন সরকারের (১৯২৪-২৯)চ্যান্সেলর অব দ্য এক্সচেকুয়ার ছিলেন। ত্রিশের দশকে তিনি হিটলারের উত্থান নিয়ে সচেতন করেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তিনি আবার ফার্স্ট লর্ড অব দ্য অ্যাডমিরালটি নিযুক্ত হন। যুদ্ধকালেই ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী হন। সে সময় তার বক্তৃতা ও রেডিও কথামালা ব্রিটিশদের খুবই প্রভাবিত করে। তার সফল নেতৃত্বের কারণে জার্মান বাহিনী যুদ্ধে পরাজিত হয়। তিনি কূটনীতিতে বেশ পারদর্শী ছিলেন। যুদ্ধকালীন সময়ে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সফল মৈত্রী গড়ে তুলেন। তার শাসনামলে ভারতে রাখা কিছু ভূমিকার কারণে তিনি বিতর্কিত হন। বিশেষ করে যুদ্ধকালীন দুর্ভিক্ষের জন্য তাকে দায়ী করা হয়। ১৯৪৫ সালের নির্বাচনে কনজারভেটিভ পার্টি হারলে তিনি বিরোধী দলীয় নেতা হন। ১৯৫১ সালে আবার তিনি প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। অবসর নেন ১৯৫৫ সালে।
স্যার উইনস্টন চার্চিলের পুরো নাম উইনস্টন লিওনার্ড স্পেন্সার চার্চিল। রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান চার্চিল ১৮৭৪ সালের ৩০ নভেম্বর অক্সফোর্ডশায়ারে দাদার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। দাদা জন স্পেন্সার চার্চিল ছিলেন সেসময়কার ডিউক। বাবা বিখ্যাত রাজনীতিবিদ লর্ড র্যান্ডলফ চার্চিল ও মা জেনি জেরোমের দুই ছেলের মধ্যে উইনস্টন চার্চিলই বড়, ছোট ভাই জ্যাক চার্চিল (১৮৮০-১৯৪৭) মিলিটারি অফিসার ছিলেন।
চার্চিলের শৈশব, কৈশোর দুই-ই কাটে আয়ারল্যান্ডের ডাবলিন শহরে। তখনকার ডিউক ছিলেন তার দাদা, আর তারই রাজনৈতিক কর্মকর্তা ছিলেন তার বাবা। পারিবারিক পরিবেশেই পড়ালেখার হাতেখড়ি। ছোটবেলা থেকে তিনি স্বাধীনচেতা ও বিদ্রোহী স্বভাবের ছিলেন। একাডেমিক রেকর্ড খুব একটা ভালো ছিল না। প্রায়শ শাস্তিও পেতেন। স্বাধীনচেতা চার্চিল পড়ালেখায় ছিলেন বরাবরই উদাসীন। আর তার ছাপও পড়লো পরীক্ষার ফলাফলে। ১৮৮৮ সালে লন্ডনের হ্যারোও আবাসিক স্কুলে ভর্তি হন। কিন্তু এর কয়েক সপ্তাহ পরই তিনি যোগদান করেন হ্যারোও রাইফেল কর্পোরেশনে এবং কর্মক্ষেত্র হিসেবে বেছে নেন সেনাবাহিনীকে। এরপর বিভিন্ন সময়ে ভারত, সুদান, মিশরসহ কয়েকটি দেশে মিলিটারি সার্ভিসে নিযুক্ত ছিলেন। বাবা-মাকে খুব বেশি কাছে পাননি চার্চিল, তবুও তাদের প্রচণ্ড ভালোবাসতেন। এমনটাও কথিত আছে যে, চার্চিল তার বাবাকে চিনেছেন অন্যদের মুখ থেকে, বাবা-ছেলের ঘনিষ্ঠতা থেকে নয়। মা জেনিন জেরোমও খুব একটা যেতেন না ছেলেকে দেখতে, যদিও চার্চিল প্রায়ই মাকে চিঠি লিখতেন। তার যখন ২১ বছর বয়স, তখন তার বাবা মারা যান, যার ফলে বাবা-ছেলের দূরত্বটা কখনোই মেটেনি।
চার্চিল তার ঘটনাবহুল সৈনিক জীবনকে খুবই উপভোগ করছিলেন। ১৮৯৫ সালের পর ব্রিটেনের চতুর্থ রানীর নিজস্ব অশ্বারোহী বাহিনীতে যোগদান করেন এবং সুদানের সীমান্তে অবস্থান করেন, যেখানে তিনি অমদুরমানের যুদ্ধ প্রত্যক্ষ করেন। যুদ্ধ চলাকালীন যুদ্ধের ভয়াবহতা নিয়ে পাইওনিয়ার মেইল এবং ডেইলি টেলিগ্রাফকে নিয়মিত প্রতিবেদন লিখতেন। এসকল অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে তিনি লিখেছেন ‘দ্য ম্যালাকান্ড ফিল্ড ফোর্স’ (১৮৯৮), ‘দ্য রিভার’ (১৮৯৯) এর মতো বিখ্যাত বই।
রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে অধিক সমাদৃত স্যার উইনস্টন চার্চিল সাহিত্যকর্মেও ছিলেন জগতখ্যাত। ১৮৯৯ সালে চার্চিল সেনাবাহিনী ত্যাগ করে মর্নিং পোস্টের একটি রক্ষণশীল দৈনিক পত্রিকায় যোগদান করেন। দক্ষিণ আফ্রিকায় বোয়ার যুদ্ধ চলাকালে একটি স্কাউটিং অভিযানে তিনি আটক হন। মোজাম্বিকের পর্তুগিজ অঞ্চল থেকে ৩০০ মাইল ভ্রমণ করে তিনি আবার ব্রিটেনে ফিরে আসেন। এই অভিজ্ঞতা তিনি তুলে ধরেছেন তার বই ‘লেডিস্মিথ’ (১৯০০) এ। তার স্ত্রীর নাম ক্লেমেন্টাইন ওগিলভি হোজিয়ের। তাদের প্রথম দেখা হয় ১৯০৪ সালে এবং ১৯০৮ সালের ১২ সেপ্টেম্বর বিয়ে করেন। পাঁচ সন্তানের বাবা-মা ছিলেন ইতিহাসখ্যাত এই দম্পতি।
১৯০০ সালে ম্যানচেস্টারের ওল্ডহ্যামের কনজারভেটিভ পার্টির সদস্য হিসেবে যোগ দেন উইনস্টন চার্চিল। বাবার স্বাধীন চেতনাকে অনুসরণ করে সামাজিক সংস্কারক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে তোলেন নিজেকে। তার এই স্বাধীনচেতা ভাবনার সাথে মিল না থাকায় তিনি কনজারভেটিভ পার্টি ছেড়ে ১৯০৪ সালে লিবারেল পার্টিতে যোগ দেন। ১৯০৮ সালে লিবারেল পার্টি থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং বোর্ড অফ ট্রেডের সভাপতি হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর মন্ত্রিসভায় দায়িত্ব পালন করেন।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সদ্য নিযুক্ত চ্যান্সেলর লয়েড জর্জের সাথে নৌবাহিনী সম্প্রসারণের বিরোধিতা করেন তিনি। এছাড়াও কারাগার ব্যবস্থার জন্য বেশ কিছু সংস্কার সাধন করেন। তিনিই প্রথম শ্রমিকদের জন্য ন্যূনতম মজুরি চালু করেন এবং শ্রম বিনিময় ও বেকারত্ব বীমা তৈরিতে মুখ্য ভূমিকা পালন করেন। ১৯১১ সালে এডমিরালটির প্রথম লর্ড হিসেবে নিযুক্ত হন উইনস্টন চার্চিল। ব্রিটিশ নৌবাহিনীকে আধুনিকায়নে সহায়তা করেন এবং যুদ্ধজাহাজগুলোতে কয়লাভিত্তিক ইঞ্জিনের পরিবর্তে তেলে চালিত ইঞ্জিন ব্যবহারের নির্দেশ দেন, যা ছিল একটি অভাবনীয় সিদ্ধান্ত।
১৯৩৯ সালের ৩ সেপ্টেম্বর ব্রিটেন জার্মানির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। এদিনই চার্চিল এডমিরালটির প্রথম লর্ড ও যুদ্ধ সভার সদস্য হিসেবে নিযুক্ত হন। ১৯৪০ এর এপ্রিলে তিনি সামরিক সমন্বয় কমিটির চেয়ারম্যান পদে নিযুক্ত হন। মে মাসের দিকে জাতীয় সংসদে নরওয়েজিয় সংকটের কারণে প্রধানমন্ত্রী চেম্বারলেইনের উপর সবাই আস্থা হারিয়ে ফেলে। একই কারণে ১৯৪০ সালের ১০ মে রাজা ষষ্ঠ জর্জ চার্চিলকে প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেন। এর কয়েক ঘণ্টা পরেই জার্মান সেনাবাহিনী নেদারল্যান্ড, বেলজিয়াম ও লুক্সেমবার্গ আক্রমণ করে, যা মিত্রবাহিনীর ওপর প্রথম বড় আক্রমণ ছিল।
দুদিন পর অ্যাডলফ হিটলারের জার্মান বাহিনী ফ্রান্সে প্রবেশ করে। ব্রিটেন তখন হিটলারের জার্মান সেনাবাহিনীকে একাই প্রতিহত করে চলেছে। প্রধানমন্ত্রী পদে নিযুক্ত হওয়ার পর তৎক্ষণাৎ তিনি লেবার, লিবারেল ও কনজারভেটিভ পার্টির নেতাদের সমন্বয়ে মন্ত্রিসভা গঠন করেন। বুদ্ধিমান ও প্রতিভাবানদের নিযুক্ত করেন গুরুত্বপূর্ণ সব পদে। ১৯৪০ সালের ১৮ জুন ‘হাউজ অফ কমন্স’ এ গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ প্রদান করেন স্যার উইনস্টন চার্চিল। ততদিনে তিনি সোভিয়েত ইউনিয়ন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সম্মিলিত হয়ে গেছেন।
১৯৪১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধে প্রবেশ চার্চিলকে জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী করে তোলে। তার সুকৌশলী যুদ্ধনীতি ও মিত্রপক্ষের সম্মিলিত জোটের কাছে জার্মান বাহিনী পরাজিত হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষে সামাজিক সংস্কারের পরিকল্পনা করেন তিনি, কিন্তু তা তিনি সাধারণ জনতাকে বোঝাতে পারেননি। যার ফলে ১৯৪৫ সালের সাধারণ নির্বাচনে তিনি পরাজিত হন। পুনরায় প্রধানমন্ত্রী পদে নির্বাচনে পরাজয়ের ছয় বছরের মধ্যে তিনি প্রধান বিরোধী দলীয় নেতা হয়ে উঠেছিলেন এবং বৈশ্বিক সম্পর্কের ওপর ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে চলছিলেন। ১৯৪৬ সালের মার্চে যুক্তরাষ্ট্র সফরে তিনি তার বিখ্যাত ‘আয়রন কার্টেন’ ভাষণ প্রদান করেন, যা ছিল ইউরোপে সোভিয়েত ইউনিয়নের আধিপত্যের ওপর সতর্কবাণী। ১৯৫১ সালের নির্বাচনে তিনি জয়লাভ করেন এবং দ্বিতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী পদে নিযুক্ত হন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের বাংলায় যে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ হয়েছিল (১৯৪৩ সালে) সেজন্যে অনেকেই চার্চিলের নীতিকে দোষারোপ করে থাকেন।যে দুর্ভিক্ষে প্রায় ত্রিশ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়।
চার্চিল শুধু রাজনীতিবিদ বা সুবক্তাই ছিলেননা তার লেখার প্রভূত সম্ভার ইংরেজি ভাষাকে সমৃদ্ধ করেছে। সৈনিক জীবনেই তিনি যে রিপোর্ট গুলি পাঠাতেন তা ছাপা হয় 'দি পাওনিয়র' ও 'ডেলি টেলিগ্রাফ' এ। আত্মজৈবনিক রচনার জন্যে সাহিত্যে নোবেল পান ১৯৫৩ তে। তার বৈচিত্র্যময় ও বিস্তৃত লেখার সম্ভারের মধ্যে একটিই মাত্র ছোটগল্প লেখেন। তার নাম 'ম্যান ওভারবোর্ড'[১]
এছাড়া তিনি চল্লিশটির বেশি বই রচনা করেছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্ব পেয়েছে ছয় খণ্ডে প্রকাশিত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ইতিহাস। ১৯৫৩ সালে তিনি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। তার উল্লেখযোগ্য বই হল- দ্য স্টোরি অব দ্য মালাকান্ড ফিল্ড ফোর্স (১৮৯৮), দ্য রিভার ওয়ার (১৮৯৯), সাভরোলা (১৯০০), লন্ডন টু লেডিস্মিথ ভায়া প্রেটোরিয়া (১৯০০), আয়ান হামিল্টনস মার্চ (১৯০০), লর্ড রানডলফ চার্চিল (১৯০৬), মাই আর্লি লাইফ: আ রোভিং কমিশন (১৯৩০), গ্রেট কনটেম্পরিয়াস (১৯৩৭), দ্য সেকেন্ড ওয়ার্ল্ড ওয়ার (১৯৪৮-৫৪) ও আ হিস্ট্রি অব দ্য ইংলিশ-স্পিকিং পিপলস (১৯৫৬-৫৮)।
১৯৫৩ সালে ২য় রানী এলিজাবেথ স্যার উইনস্টন স্পেন্সার চার্চিলকে ‘নাইট’ উপাধিতে ভূষিত করেন। একই সালে তিনি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৬৫ সালের ১৫ জানুয়ারি গুরুতর স্ট্রোক করেন চার্চিল, এর ঠিক ন’দিন পর ১৯৬৫ সালের ২৪ জানুয়ারি ব্রিটেনের এই মহান রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব তার লন্ডনের বাড়িতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাকে সেন্ট মার্টিন চার্চের পারিবারিক কবরস্থানে সমাহিত করা হয়। তার ওপর লেখা হয়েছে বেশ কিছু বই। সম্প্রতি তার জীবনী নিয়ে বানানো ডার্কেস্ট আওয়ার নামে একটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন গ্যারি ওল্ডম্যান এবং এতে এই অভিনেতা অস্কার লাভ করেন।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.