নিউজিল্যান্ড
ওশেনিয়া মহাদেশের রাষ্ট্র উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
ওশেনিয়া মহাদেশের রাষ্ট্র উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
নিউজিল্যান্ড (ইংরেজি: New Zealand, মাওরি: Aotearoa [aɔˈtɛaɾɔa]) দক্ষিণ–পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরের ওশেনিয়া অঞ্চলে অবস্থিত একটি দ্বীপ রাষ্ট্র এবং মানচিত্রে এটি মহাদেশীয় রাষ্ট্র অস্ট্রেলিয়ার কাছাকাছি অবস্থিত বলে মনে হলেও প্রকৃতপক্ষে এটি অস্ট্রেলিয়া থেকে দক্ষিণ-পূর্বে প্রায় ২০০০ কিমি দূরত্বে তাসমান সাগরে অবস্থিত। ভৌগোলিকভাবে বিচ্ছিন্ন দেশ নিউজিল্যান্ডের প্রতিবেশী দেশের মধ্যে ফিজি, টোঙ্গা ও নুভেল কালেদোনি উল্লেখযোগ্য।
নিউ জিল্যান্ড New Zealand | |
---|---|
জাতীয় সঙ্গীত: | |
দক্ষিণ গোলার্ধে নিউজিল্যান্ডের অবস্থান | |
রাজধানী | ওয়েলিংটন |
বৃহত্তম নগরী | অকল্যান্ড2 |
সরকারি ভাষা | ইংরেজি (৯৮%)3 মাওরি (৪.২%)3 সাংকেতিক ভাষা (0.6%)3 |
নৃগোষ্ঠী | 78% ইউরোপীয়/Other4 14.6% মাওরি4 9.2% এশিয়ান4 6.9% প্রশান্ত মহাসাগরীয় জনগণ4 |
জাতীয়তাসূচক বিশেষণ | নিউজিল্যান্ডীয়, কিউই (colloquial) |
সরকার | সংসদীয় গণতন্ত্র এবং সাংবিধানিক রাজতন্ত্র |
• রাজা | তৃতীয় চার্লস |
• গভর্নর জেনারেল | আনন্দ সাতিআনন্দ |
• প্রধানমন্ত্রী | জাসিন্ডা আরডার্ন |
• স্পীকার | ডঃ লকউড স্মিথ |
• প্রধান বিচারপতি | ডেম সিয়ান ইলিয়াস |
স্বাধীনতা থেকে যুক্তরাজ্য | |
• ১ম সংসদ | ২৫ মে ১৮৫৪5 |
• ডোমিনিয়ন | ২৬ সেপ্টেম্বর ১৯০৭5 |
• সংবিধি ওয়েস্টমিনিস্টার | ১১ ডিসেম্বর ১৯৩১ (গৃহীত ২৫ নভেম্বর ১৯৪৭) |
• সংবিধান আইন ১৯৮৬ | ১৩ ডিসেম্বর ১৯৮৬ |
আয়তন | |
• মোট | ২,৬৮,০২১ কিমি২ (১,০৩,৪৮৩ মা২) (75th) |
• পানি (%) | 2.1 |
জনসংখ্যা | |
• ২০২৪ আনুমানিক | এক্সপ্রেশন ত্রুটি: অপরিচিত বিরামচিহ্ন অক্ষর ","।[৪] (123rd) |
• 2020 আদমশুমারি | 5,093,230 6 |
• ঘনত্ব | ১৬.১/কিমি২ (৪১.৭/বর্গমাইল) (201st) |
জিডিপি (পিপিপি) | 2010 আনুমানিক |
• মোট | $115.412 billion[৫] |
• মাথাপিছু | $28,722[৫] |
জিডিপি (মনোনীত) | 2010 আনুমানিক |
• মোট | $135.723 billion[৫] |
• মাথাপিছু | $31,067[৫] |
জিনি (1997) | 36.2 মাধ্যম |
মানব উন্নয়ন সূচক (2009) | 0.950[৬] ত্রুটি: মানব উন্নয়ন সূচক-এর মান অকার্যকর · 20th |
মুদ্রা | নিউজিল্যান্ড ডলার (NZD) |
সময় অঞ্চল | ইউটিসি+12 (NZST7) |
ইউটিসি+13 (NZDT) | |
(Sep to Apr) | |
তারিখ বিন্যাস | dd/mm/yyyy |
গাড়ী চালনার দিক | left |
কলিং কোড | +64 |
ইন্টারনেট টিএলডি | .nz8 |
1 "God Save the Queen" হল দেশের জাতীয় সংগীত।.[২][৭] 2 অকল্যান্ড দেশটির আয়তন ও জনসংখ্যার দিক থেকে বৃহত্তম শহর; Auckland City বৃহত্তম বাণিজ্যিক শহর. 3 শতকরা মোট হিসেব ১০০% এর বেশি কারণ শহরের বেশিরভাগ মানুষ একাধিক ভাষা জানেন।[৮] 4 শতকরা মোট হিসেব ১০০% এর বেশি কারণ কিছু মানুষ একাধিক জাতীয়তা ধারণ করেন .[৯] 5 There is a multitude of dates that could be considered to mark independence (see Independence of New Zealand). 6 Number of people who usually live in New Zealand.[১০] 7 The Chatham Islands have a separate time zone, 45 minutes ahead of the rest of New Zealand. 8 The territories of Niue, the Cook Islands and Tokelau have their own cctlds, .nu, .ck and .tk respectively. |
নিউজিল্যান্ড দুইটি প্রধান বৃহৎ দ্বীপ নিয়ে গঠিত, যেগুলিকে উত্তর দ্বীপ ও দক্ষিণ দ্বীপ বলে। কুক প্রণালী নামের একটি অপেক্ষাকৃত সরু সামুদ্রিক প্রণালী দ্বীপ দুইটিকে পৃথক করেছে। এছাড়া এখানে অসংখ্য ক্ষুদ্র দ্বীপ আছে, যাদের মধ্যে স্টুয়ার্ট দ্বীপ ও চ্যাথাম দ্বীপপুঞ্জটি উল্লেখযোগ্য। নিউজিল্যান্ডের রাজধানী ওয়েলিংটন উত্তর দ্বীপে অবস্থিত। এটি বিশ্বের সমস্ত রাজধানীর মধ্যে সবচেয়ে দক্ষিণে অবস্থিত। নিউজিল্যান্ডের বৃহত্তম শহর অকল্যান্ড উত্তর দ্বীপেই অবস্থিত। নিউজিল্যান্ডের উভয় দ্বীপই পাহাড়-পর্বতে পূর্ণ। দক্ষিণ দ্বীপে একটি দীর্ঘ পর্বতশৃঙ্খল অবস্থিত, যার নাম দক্ষিণ আল্পস। পর্বতগুলি মহাসাগরীয় আর্দ্র বায়ুগুলিকে ধরে রাখে এবং এর ফলে এগুলির চারপাশে প্রায়ই ঘন কুয়াশার মত মেঘের আবরণ দেখতে পাওয়া যায়।
বর্তমানে নিউজিল্যান্ডের অধিকাংশ মানুষ ইউরোপীয় বংশদ্ভূত শ্বেতাঙ্গ। নিউজিল্যান্ডের আদি অধিবাসী জাতির নাম মাওরি; তারা বৃহত্তম সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠী। এছাড়া উল্লেখযোগ্য সংখ্যক এশীয় বংশদ্ভূত মানুষও এখানে বসবাস করে, বিশেষ করে পৌর এলাকায়। ইংরেজি নিউজিল্যান্ডের সর্বাধিক প্রচলিত ভাষা। আদিবাসী মাওরিদের মাতৃভাষা হল মাওরি ভাষা। মাওরিরা পলিনেশিয়া নামক প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ অঞ্চল থেকে নিউজিল্যান্ডে আগমন করে। তারা এই দেশটিকে "আওতেয়ারোয়া" নামে ডাকত, যার অর্থ "দীর্ঘ শুভ্র মেঘের দেশ"। নিউজিল্যান্ডে ঐতিহ্যবাহী মাওরি সংস্কৃতি এখনও বেঁচে আছে। কিন্তু সেটি এখন আধুনিক নিউজিল্যান্ডের ইউরোপীয় সংস্কৃতির সাথে মিলেমিশে গেছে। আজও নিউজিল্যন্ডে ঐতিহ্যবাহী মাওরি সঙ্গীতে বাঁশির সুরে সুরে বাজানো হয় এবং ঐতিহ্যবাহী মাওরি নৃত্যও পরিবেশন করা হয়। কাঠে খোদাই শিল্প, চিত্রশিল্প, শনের বুননে তৈরি হস্তশিল্প বা দারু শিল্প মাওরি সংস্কৃতির অংশ।
নিউজিল্যান্ড একটি উন্নত দেশ, এটি আন্তর্জাতিকভাবে প্রচলিত মানব উন্নয়ন সূচকের উপরের দিকে অবস্থান করে আছে। এছাড়া দেশটির জীবনযাত্রার মান, প্রত্যাশিত আয়ুষ্কাল, শিক্ষার হার, শান্তি ও অগ্রগতি, অর্থনৈতিক স্বাধীনতা, ব্যবসা-বাণিজ্যের সুযোগ, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, রাজনৈতিক অধিকার রক্ষা ইত্যাদি ক্ষেত্রে অগ্রসরমান একটি দেশ। পৃথিবীর সর্বাধিক বাসযোগ্য শহরগুলোর মধ্যে নিউজিল্যান্ডের শহরগুলো অন্যতম। নিউজিল্যান্ড মেরিনো প্রজাতির ভেড়ার জন্য সুবিদিত, যেগুলির পশম বিশ্বখ্যাত। দক্ষিণ দ্বীপের বিভিন্ন পাহাড়ে বহু বিশালাকার ভেড়ার খামার ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। ভেড়ার পশম ছাড়াও নিউজিল্যান্ড উৎকৃষ্ট মানের মাখন, পনির ও মাংস উৎপাদন করে।
নিউজিল্যান্ডের রাষ্ট্রপ্রধান হলেন যুক্তরাজ্যের রাজা তৃতীয় চার্লস। তার প্রতিনিধি নিউজিল্যান্ডের সরকার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অধিকারী। প্রকৃতপক্ষে রাষ্ট্রের রাজনৈতিক ব্যাপারে রাজার কোন প্রভাব নেই, রাজা কেবল আনুষ্ঠানিকভাবে রাষ্ট্রপ্রধান। গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীর অধীন সংসদই হল রাষ্ট্রক্ষমতার অধিকারী। প্রধানমন্ত্রীই নিউজিল্যান্ডের সরকার প্রধান।
এদেশের পরিবেশ এবং প্রাণীকুল বৈচিত্র্যময় ও অনন্য প্রকৃতির। মনুষ্যবসতি প্রতিষ্ঠার পূর্বে এখানে প্রচুর স্থানীয় পাখি ছিল যার মধ্যে অনেক প্রজাতিই জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে ক্রমান্বয়ে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। দীর্ঘ চঞ্চুবিশিষ্ট কিন্তু উড়তে অক্ষম কিউই নামের একটি পাখি কেবল নিউজিল্যান্ডেই দেখতে পাওয়া যায়। কিউই পাখি নিউজিল্যান্ডের একটি জাতীয় প্রতীক। এমনকি নিউজিল্যান্ডের অধিবাসীদেরকেও মাঝে মাঝে প্রচারমাধ্যমে "কিউই" নামে ডাকা হয়।
প্রায় ৭০০ বছর আগে পলিনেশীয় বিভিন্ন জাতি নিউজিল্যান্ড আবিষ্কার করে ও এখানে বসতি স্থাপন করে। এরা ধীরে ধীরে একটি স্বতন্ত্র মাওরি সংস্কৃতি গড়ে তোলে। ১৬৪২ সালে প্রথম ইউরোপীয় অভিযাত্রী, ওলন্দাজ আবেল তাসমান, নিউজিল্যান্ডে নোঙর ফেলেন। ১৮শ শতকের শেষ দিক থেকে অভিযাত্রী, নাবিক, মিশনারি, ও বণিকেরা নিয়মিত এখানে আসতে থাকে। ১৮৪০ সালে ব্রিটিশ সাম্রাজ্য ও নিউজিল্যান্ডের মাওরি গোত্রগুলি চুক্তি স্বাক্ষর করে এবং এর ফলে নিউজিল্যান্ড ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অধীনে আসে। মাওরিদেরকে ব্রিটিশ নাগরিকদের সমান মর্যাদা দেওয়া হয়। এসময় নিউজিল্যান্ডে ব্যাপকভাবে ইউরোপীয় বসতি স্থাপন শুরু হয়। ইউরোপীয় অর্থনৈতিক ও বিচার ব্যবস্থা আরোপের ফলে মাওরিরা তাদের বেশিরভাগ জমিজমা ইউরোপীয়দের কাছে হারিয়ে দরিদ্র হয়ে পড়ে।
১৯৩০-এর দশকে নিউজিল্যান্ডকে একটি কল্যাণমুখী রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলা হতে থাকে। অর্থনীতিতে সরকারের হস্তক্ষেপ বাড়ানো হয়। একই সময়ে মাওরিদের মধ্যে এক ধরনের সাংস্কৃতিক বিপ্লব বা রনেসঁস ঘটে। মাওরিরা বিরাট সংখ্যায় শহরে বসতি স্থাপন করা শুরু করে এবং নিজেদের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে আন্দোলন শুরু করে।
১৯৮০-এর দশকে অর্থনীতিতে সরকারি হস্তক্ষেপ হ্রাস করা হয় এবং অনেক উদারপন্থী নীতি বাস্তবায়ন করা হয়। বৈদেশিক সম্পর্কের ব্যাপারে অতীতে নিউজিল্যান্ড যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের অনুসারী ছিল, তবে বর্তমানে এ ব্যাপারে দেশটি অনেক স্বাধীন।
নিউজিল্যান্ডে'র প্রধান রাজনৈতিক দল দুটি। বর্তমান ক্ষমতাসীন "লেবার পার্টির নেতা জাসিন্ডা আরডার্ন দলীয় প্রধান। প্রধান বিরধী দল ন্যাশনাল পার্টির প্রধান কলিন্স
দেশটির সঙ্গে অন্যান্য দেশের সুসম্পর্ক রয়েছে। এই দেশের পাসপোর্টে ১১২টি দেশে বিনা ভিসায় ভ্রমণ করা যায়, যা পাসপোর্ট শক্তি সূচকে ৬ঠ স্থানে রয়েছে। [১১]
দেশটিতে বড় আন্তর্জাতিক মানের স্টেডিয়ামের খুব ঘাটতি রয়েছে। একমাত্র ওয়েলিংটন রিজিওন্যাল স্টেডিয়াম-টি মূলত ক্রিকেট মাঠ। ইডেন পার্ক ও ম্যাকলিন পার্ক মূলত রাগবি মাঠ। ল্যাংকাস্টার পার্ক পুনর্নিমানের মধ্যে চলছে। এছাড়া অন্যান্য কিছু খোলা মাঠ রয়েছে যেখানে আন্তর্জাতিক ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। অস্ট্রেলিয়ার সহযোগে ক্রিকেট বিশ্বকাপ দুবার আয়োজন করেছে। তিনবার মহিলা ক্রিকেট বিশ্বকাপ আয়োজন করতে চলেছে। তিনবার যুব ক্রিকেট বিশ্বকাপ আয়োজন করেছে।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.