মিশ্র অর্থনীতি
এক প্রকারের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
মিশ্র অর্থনীতি এমন একটি অর্থনৈতিক ব্যবস্থা যা একটি অর্থনীতির বিভিন্ন উপাদানগুলিকে একটি পরিকল্পিত পদ্ধতির আওতায় একত্রীত করে। মিশ্র অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপের সাথে মুক্ত বাজার বা বেসরকারী উদ্যোগের সংমিশ্রণ করে।[১][২][৩] যদিও মিশ্র অর্থনীতির কোন একক সংজ্ঞা নেই, বিভিন্নভাবে এর সঙ্গায়ন করা যায় তবে এর একটি সংজ্ঞা হল রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপের পাশাপাশি বেসরকারী বিনিয়োগের ব্যবস্থা যে অর্থনীতিতে থাকে তাকে মিশ্র অর্থনীতি বলে। আরেকভাবে বলতে গেলে পুঁজিবাদী এবং সমাজতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গির সক্রিয় সহযোগিতা মনোভাব মূলক সহবস্থানই মিশ্র অর্থনীতি।[৪] এই অর্থনৈতিক ব্যবস্থা মূলত অরাজনৈতিক প্রকৃতির একটি অর্থনীতির যেখানে ব্যক্তিগত উদ্যোগের সঙ্গে সরকারি উদ্যোগের মিশ্রণ রয়েছে।[৫][৬] উল্লেখ্য বাংলাদেশেও মিশ্র অর্থনীতি ব্যবস্থা চালু রয়েছে।
বৈশিষ্ট্য
সারাংশ
প্রসঙ্গ
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মিশ্র অর্থনীতির বৈশিষ্ট্য আলাদা হয়ে থাকে। তবে সব মিশ্র অর্থনীতিতে মূল কিছু বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায়। সেগুলো হল-[৭][৮]
- সম্পদের ব্যক্তিগত, সমবায় ও সরকারি মালিকানা: মিশ্র অর্থব্যবস্থায় ব্যক্তি তার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি অবাধে ভোগ করতে পারে ও ক্রয়-বিক্রয় করতে পারে। পাশাপাশি গণদ্রব্য (মহাসড়ক) ও সেবা (স্বাস্থ্যসেবা) উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানসমূহ প্রধানত সরকার পরিচালনা করে।
- ব্যক্তিগত উদ্যোগ: মিশ্র অর্থনীতিতে উৎপাদন, ব্যবসা-বাণিজ্য বণ্টন ও ভৌগসহ অধিকাংশ অর্থনৈতিক কার্যাবলি ব্যক্তিগত উদ্যোগে সংগঠিত ও পরিচালিত হয়।
- সরকারি উদ্যোগ: মিশ্র অর্থনীতিতে ব্যক্তি উদ্যোগের পাশাপাশি সরকারি উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। দেশের মৌলিক ও ভারী শিল্প, জাতীয় নিরাপত্তা ও জনগুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানসমূহ সরকার পরিচালনা করে থাকে।
- মুনাফা অর্জন: মিশ্র অর্থনীতিতে বেসরকারি খাতে অর্থনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করার মাধ্যমে মুনাফা অর্জন করা সম্ভব হয়। তবে তা অতিরিক্ত একচেটিয়া মুনাফা নয়৷
- ভোক্তার স্বাধীনতা: এ ব্যবস্থায় ভোক্তা সাধারণ দ্রব্য ক্রয়-বিক্রয় ও ভোগের ক্ষেত্রে অবাধ স্বাধীনতা ভোগ করে। তবে সরকার প্রয়োজন মনে করলে দ্রব্যের দামের উপর প্রভাব বিস্তার করতে পারে এবং প্রয়োজন অনুসারে কোনো দ্রব্যের উৎপাদন নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।
- যৌথ বিনিয়োগঃ মিশ্র অর্থব্যবস্থায় কোন সম্পদ উৎপাদনের ক্ষেত্রে যৌথভাবে বিনিয়োগ করা সম্ভব হয়। বেসরকারি (এনজিও) এবং সরকারি উদ্যোগ পাশাপাশি বিরাজ করায় যৌথভাবে বিনিয়োগ করা সম্ভব হয়।
- সরকারের জবাবদিহিতা: মিশ্র অর্থব্যবস্থায় সরকারের জবাবদিহিতা স্বীকৃত। যদি সরকারি প্রতিষ্ঠান লাভজনক হয় তাহলে তার লভ্যাংশের কিছু অংশ জনগণের সেবায় কাজে লাগানো হয়। এছাড়াও কেন্দ্রীয় ব্যাংক এই মুনাফা ও সম্পদ বন্টনে তদারকি করে থাকেন।
- মুদ্রাস্ফীতির উপস্থিতি: মিশ্র অর্থনীতিতে যেহেতু ব্যক্তি উদ্যোগ স্বীকৃত এবং মুনাফাভিত্তিক উৎপাদন কার্যক্রম পরিচালিত হয়, তাই অনেক সময় অতি উৎপাদন বা কম উৎপাদন হতে পারে। সে ক্ষেত্রে মুদ্রাস্ফীতিও দেখা দিতে পারে।
আরও দেখুন
তথ্যসূত্র
আরও পড়ুন
বহিঃসংযোগ
Wikiwand - on
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.