চেলসি ফুটবল ক্লাব
অ্যাসোসিয়েশন ফুটবল ক্লাব উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
চেলসি ফুটবল ক্লাব লন্ডনের ফুলহ্যাম এলাকায় অবস্থিত একটি ইংরেজ পেশাদার ফুটবল দল। ১৯০৫ সালে প্রতিষ্ঠিত এই ক্লাবটি ইংরেজ ফুটবলের শীর্ষ বিভাগ প্রিমিয়ার লিগে প্রতিযোগিতা করে। চেলসি ইংল্যান্ডের সবচেয়ে সফল ক্লাবগুলির মধ্যে অন্যতম। ক্লাবটি ত্রিশটির বেশি প্রতিযোগীতামূলক শিরোপা জিতেছে যার মধ্যে ছয়টি লিগ শিরোপা এবং ছয়টি ইউরোপীয় ট্রফি উল্লেখযোগ্য। তাদের নিজস্ব মাঠ হচ্ছে স্ট্যামফোর্ড ব্রিজ।[৫]
![]() | ||||
পূর্ণ নাম | চেলসি ফুটবল ক্লাব | |||
---|---|---|---|---|
ডাকনাম | দ্য ব্লুজ[১] | |||
সংক্ষিপ্ত নাম | সিএফসি, সিএইচই | |||
প্রতিষ্ঠিত | ১০ মার্চ ১৯০৫[২] | |||
মাঠ | স্ট্যামফোর্ড ব্রিজ | |||
ধারণক্ষমতা | ৪০,৩৪৩[৩] | |||
স্থানাঙ্ক | ৫১°২৮′৫৪″ উত্তর ০°১১′২৮″ পশ্চিম | |||
মালিক | ব্লুকো[৪] | |||
সভাপতি | টড বোলি | |||
প্রধান কোচ | এনজো মারেস্কা | |||
লিগ | প্রিমিয়ার লিগ | |||
২০২৩–২৪ | ৬ষ্ঠ | |||
ওয়েবসাইট | ক্লাব ওয়েবসাইট | |||
| ||||
ক্লাবটি এ পর্যন্ত বেশিরভাগ সময়ে ইংল্যান্ডের ফুটবলে শীর্ষ দশে অবস্থান করেছে। তারা দুটি সময়ে সফলতা পেয়েছে, একটি হচ্ছে ১৯৬০ দশকের শেষভাগ ও ১৯৭০ দশকের শুরুতে এবং ১৯৯০ দশকের শেষভাগ থেকে বর্তমান পর্যন্ত। চেলসি প্রথম ইংলিশ লিগ শিরোপা অর্জন করে ১৯৫৫-৫৬ মৌসুমে। ১৯৬৫ থেকে ১৯৭১ সাল সময়কালে আরো কিছু কাপ প্রতিযোগিতায় ক্লাবটি জয়লাভ করে। ১৯৯৭ সাল থেকে ২৩টি শিরোপা জিতে দলটি গত দুই দশক ধরে ধারাবাহিকভাবে সাফল্য অর্জন করছে। চেলসি নিজেদের ইতিহাসে আটটি এফ.এ. কাপ শিরোপা, পাঁচটি লিগ কাপ, দুটি উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, দুটি উয়েফা ইউরোপা লিগ, দুটি উয়েফা কাপ উইনার্স কাপ, এবং দুইটি উয়েফা সুপার কাপ অর্জন করেছে। চেলসি হলো ইতিহাসের প্রথম ক্লাব যারা উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতার পরের বছরই উয়েফা ইউরোপা লিগ জিতেছে।[৬] চেলসি উয়েফার তিনটি মূল ক্লাব প্রতিযোগিতায় জয়লাভ করা পাঁচটি দলের একটি, উয়েফা ত্রয়ী জয়ী প্রথম ইংরেজ ক্লাব এবং চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ী একমাত্র লন্ডনের ক্লাব।
ক্লাবের ঐতিহ্যবাহী পোশাক হচ্ছে রাজকীয় নীল রংয়ের জামা ও শর্টস এবং সাদা মোজা। নিজেদের ভাবমূর্তি আধুনিকায়নের জন্য নিজেদের ইতিহাসে বেশ কয়েকবার ক্লাবটি নিজেদের প্রতীক পরিবর্তন করেছে। বর্তমান প্রতীকে একটি রাজকীয় নীল সিংহকে একটি লাঠি ধরে থাকতে দেখা যায়, যা ক্লাবটির ১৯৫০ এর দশকের একটি প্রতীকের আধুনিক রূপ।[৭] ইংলিশ ফুটবলের ইতিহাসে সর্বকালের গড় উপস্থিতির তালিকায় ক্লাবটির অবস্থান ষষ্ঠ। চেলসি যুক্তরাজ্যের অন্যতম জনপ্রিয় দল। তাদের সমর্থক সংখ্যা আনুমানিক চার মিলিয়ন।[৮] এছাড়া জনপ্রিয় সংস্কৃতিতেও ক্লাবের ভূমিকা রয়েছে। বিভিন্ন চলচ্চিত্র ও গানে চেলসি অংশ নিয়েছে। ফোর্বস ম্যাগাজিনের ২০১৭ সালের একটি জরিপে বিশ্বের সবচেয়ে দামী ক্লাবগুলোর তালিকায় চেলসির অবস্থান ৭ম এবং ২০১৬-১৭ মৌসুমে ৪ কোটি ২৮ লাখ পাউন্ড উপার্জন করে ক্লাবটি বিশ্বের সবচেয়ে বেশি উপার্জন করা ক্লাবগুলোর মধ্যে অষ্টম স্থান অর্জন করে। ২০২২ সালে চেলসির মালিকানা টড বোলির নেতৃত্বে ক্লিয়ারলেক ক্যাপিটাল, মার্ক ওয়াল্টার ও হ্যানসিয়র্গ ভাইসদের গ্রুপ ৪২৫ কোটি পাউন্ড দিয়ে কিনে নেয়।[৯]
ইতিহাস
সারাংশ
প্রসঙ্গ

১৯০৫-১৯৫২: প্রতিষ্ঠা এবং প্রাথমিক সময়
১৯০৪ সালে গাস মিয়ার্স ফুলহ্যামের স্ট্যামফোর্ড ব্রিজ অ্যাথলেটিক্স স্টেডিয়ামটিকে একটি ফুটবল মাঠে পরিণত করার লক্ষ্যে অধিগ্রহণ করেন। নিকটবর্তী ফুলহ্যাম ফুটবল ক্লাবকে এটি ইজারা দেওয়ার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান হওয়ার পর মিয়ার্স স্টেডিয়াম ব্যবহার করার জন্য তার নিজস্ব ক্লাব প্রতিষ্ঠা করার সিদ্ধান্ত নেন। যেহেতু তখন উক্ত এলাকায় ফুলহ্যাম নামে একটি ক্লাব ইতোমধ্যে ছিলো, মিয়ার্স নিজের ক্লাবের জন্য পার্শ্ববর্তী এলাকা চেলসির নামটি বেছে নেন। কেন্সিংটন ফুটবল ক্লাব, স্ট্যামফোর্ড ব্রিজ ফুটবল ক্লাব এবং লন্ডন ফুটবল ক্লাব এর মতো নামগুলোও বিবেচনা করা হয়েছিল।[১০] চেলসি এফ.সি. প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ১০ মার্চ ১৯০৫ সালে দ্য রাইজিং সান পাবে (বর্তমানে দ্য বুচার'স হুক) যা ফুলহ্যাম রাস্তায় মাঠের বর্তমান প্রধান প্রবেশদ্বারের বিপরীতে অবস্থিত।[২][১১] এর কিছু সময় পরেই ক্লাবটি ফুটবল লিগে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল।
চেলসি তাদের দ্বিতীয় মৌসুমে প্রথম বিভাগে পদোন্নতি অর্জন করে, এবং তাদের শুরুর দিকের বছরগুলিতে প্রথম এবং দ্বিতীয় বিভাগের মধ্যে ইয়ো-ইয়োর মতো ওঠানামা করেছিল। তারা ১৯১৫ এফএ কাপের ফাইনালে পৌঁছেছিল, যেখানে তারা ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে শেফিল্ড ইউনাইটেডের কাছে পরাজিত হয় এবং ১৯২০ সালে প্রথম বিভাগে তৃতীয় স্থান লাভ করে, যা ঐ সময়ে ক্লাবের সেরা লিগ অবস্থান।[১২] তারকা খেলোয়াড়দের সই করার জন্য চেলসির খ্যাতি ছিল[১৩] এবং বিশাল সংখ্যক দর্শক টানতে সক্ষম হয়েছিল। ক্লাবটির দশটি পৃথক মৌসুমে ইংলিশ ফুটবলে সর্বোচ্চ গড় উপস্থিতি ছিল[১৪] যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ১৯০৭-০৮,[১৫] ১৯০৯-১০,[১৬] ১৯১১-১২,[১৭] ১৯১২-১৩,[১৮] ১৯১৩-১৪,[১৯] ১৯১৯-২০ মৌসুম।[২০][২১] তারা ১৯২০ এবং ১৯৩২ সালে এফএ কাপের সেমিফাইনালিস্ট ছিল এবং ১৯৩০-এর দশক জুড়ে প্রথম বিভাগেই ছিল, কিন্তু আন্তঃযুদ্ধের বছরগুলিতে সাফল্য অধরা থেকে যায়।
১৯৫২-১৯৮৩: আধুনিকীকরণ এবং প্রথম লিগ শিরোপা

প্রাক্তন আর্সেনাল এবং ইংল্যান্ডের সেন্টার-ফরোয়ার্ড টেড ড্রেক ১৯৫২ সালে ম্যানেজার হিসেবে যোগ দেন এবং ক্লাবটির আধুনিকীকরণের কাজ শুরু করেন। তিনি ক্লাবের চেলসি পেনশনার ক্রেস্ট সরিয়ে ফেলেন, যুব সেট-আপ এবং প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা সুসংগঠিত করেন, নিচের বিভাগ এবং অপেশাদার লিগ থেকে বিচক্ষণতা দিয়ে খেলোয়াড় কেনার মাধ্যমে দলটিকে পুনর্গঠন করেন। অবশেষে, ড্রেক চেলসিকে তাদের প্রথম বড় ট্রফি অর্জনে নেতৃত্ব দেন। তার অধীনে চেলসি ১৯৫৪-৫৫ মৌসুমে লিগ চ্যাম্পিয়নশিপ অর্জন করে। পরের মৌসুমে উয়েফা ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স কাপ শুরু করে, কিন্তু ফুটবল লিগের আপত্তির পর চেলসি প্রতিযোগিতা শুরু হওয়ার আগেই প্রতিযোগিতা থেকে নাম প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়েছিল।[২২][২৩] চেলসি এরপর পুনরায় সাফল্যের মুখ দেখতে ব্যর্থ হয় এবং ১৯৫০-এর দশকের বাকি সময়টা মধ্য-টেবিলে কাটায়। ১৯৬১ সালে ড্রেককে চাকরিচ্যুত করা হয় এবং খেলোয়াড়-ম্যানেজার টমি ডোচার্টি তার স্থলাভিষিক্ত হন।
ডোচার্টি ক্লাবের যুব সেট-আপ থেকে উঠে আসা প্রতিভাবান তরুণ খেলোয়াড়দের নিয়ে একটি নতুন দল গড়ে তোলেন, এবং চেলসি ১৯৬০-এর দশক জুড়ে শিরোপার জন্য লড়াই করে বেশ কয়েকবার শেষ মুহুর্তের ব্যর্থতার সম্মুখীন হয়। তারা ১৯৬৪-৬৫ মৌসুমের চূড়ান্ত পর্যায়ে লিগ, এফএ কাপ এবং লিগ কাপের ট্রেবলের জয়ের পথে ছিল, কিন্তু শেষ পর্যন্ত লিগ কাপ জিতে বাকি দুই ক্ষেত্রে তীরে এসে তরী ডুবেছিল।[২৪] তিন মৌসুমে দলটি তিনবার সেমিফাইনালে পরাজিত হয় এবং এফএ কাপ রানার্স আপ হয়। ডোচার্টির উত্তরসূরি ডেভ সেক্সটনের অধীনে চেলসি ১৯৭০ সালে এফএ কাপ জিতেছিল। পুনরনুষ্ঠিত হওয়া ফাইনালে তারা লিডস ইউনাইটেডকে ২-১ গোলে হারিয়েছিল। পরের বছর চেলসি উয়েফা কাপ উইনার্স কাপ জিতে তাদের প্রথম ইউরোপীয় শিরোপা অর্জন করে। এইবার এথেন্সে আরেকটি পুনরনুষ্ঠিত ফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে বিজয়ী হয়।
১৯৮৩-২০০৩: উন্নয়নকাজ এবং আর্থিক দুর্ভোগ
১৯৭০-এর দশকের শেষ থেকে ৮০-এর দশক পর্যন্ত চেলসির জন্য একটি উত্তাল সময় ছিল। স্ট্যামফোর্ড ব্রিজের একটি উচ্চাভিলাষী উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ক্লাবের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতাকে হুমকির মুখে ফেলেছিল,[২৫] তারকা খেলোয়াড়দের বিক্রি করা হয়েছিল এবং দলটি অবনমিত হয়েছিল। অন্যান্য সমস্যার মধ্যে সমর্থকদের ভেতর এক কুখ্যাত গুন্ডাবাহিনী ছিল যা পুরো দশক জুড়ে ক্লাবকে ভুগিয়েছিল।[২৬] ১৯৮২ সালে চেলসির যখন খুবই করুণ দশা তখন কেন বেটস ক্লাবটিকে মিয়ার্স-এর নাতি ব্রায়ান মিয়ার্সের কাছ থেকে নামমাত্র £১ এর বিনিময়ে ক্রয় করেন। বেটস ক্লাবের নিয়ন্ত্রক অংশীদারিত্ব কিনেছিলেন এবং মার্চ ১৯৯৬ সালে চেলসিকে এআইএম স্টক এক্সচেঞ্জে উন্মুক্ত করেছিলেন।[২৭] যদিও ততোদিনে স্ট্যামফোর্ড ব্রিজের ফ্রিহোল্ড সম্পত্তি ডেভেলপারদের কাছে বিক্রি করা হয়েছিল, যার মানে ক্লাবটি তাদের নিবাস হারানোর সম্ভাবনার সম্মুখীন হয়েছিল।[২৮] মাঠে দলের পারফরম্যান্সও খুব একটা ভালো ছিল না। দলটি প্রথমবারের মতো তৃতীয় বিভাগে অবনমনের কাছাকাছি চলে এসেছিল। কিন্তু ১৯৮৩ সালে ম্যানেজার জন নিল স্বল্প ব্যয়ের মাধ্যমে একটি আকর্ষণীয় নতুন দল গড়ে তুলেছিলেন। চেলসি ১৯৮৩-৮৪ সালে দ্বিতীয় বিভাগের শিরোপা জিতেছিল এবং দুটি শীর্ষ-ছয় স্থানে শেষ করার মাধ্যমে শীর্ষ বিভাগে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছিল। কিন্তু ১৯৮৮ সালে তারা পুনরায় অবনমিত হয়। পরের মৌসুমেই দ্বিতীয় বিভাগ চ্যাম্পিয়নশিপ জিতে ক্লাবটি দ্রুত ফিরে আসে।
দীর্ঘদিন ধরে চলা আইনি লড়াইয়ের পর বেটস ১৯৯২ সালে স্টেডিয়াম ফ্রিহোল্ডকে ক্লাবের সাথে পুনরায় একত্রিত করেন। এর জন্য তিনি প্রপার্টি ডেভেলপারদের ব্যাংকের সাথে একটি চুক্তি করেন। প্রপার্টি ডেভেলপাররা এর আগে এক বাজার ধ্বংসের কারণে দেউলিয়া হয়ে গিয়েছিল।[২৯] ১৯৯০-এর দশকের মাঝামাঝি চেলসির সমর্থক এবং ব্যবসায়ী ম্যাথিউ হার্ডিং একজন পরিচালক হন এবং নতুন উত্তর স্ট্যান্ড তৈরি করতে এবং নতুন খেলোয়াড় কেনার জন্য ক্লাবকে £২৬ মিলিয়ন ঋণ দেন।[৩০] নতুন প্রিমিয়ার লিগে চেলসির ফর্ম আহামরি ছিল না, যদিও তারা ১৯৯৪ এফএ কাপ ফাইনালে পৌঁছেছিল। ১৯৯৬ সালে খেলোয়াড়-ম্যানেজার হিসাবে রুদ গুলিতকে নিয়োগ করার পর দলের ভাগ্যের উত্থান শুরু হয়। তিনি বেশ কয়েকজন সেরা আন্তর্জাতিক খেলোয়াড়দের দলে যোগ করেন এবং ১৯৭১ সালের পর ক্লাবকে তাদের প্রথম বড় ট্রফি এফএ কাপ এনে দেন। গুলিতের স্থলাভিষিক্ত হন জিয়ানলুকা ভিয়ালি, যার আমলে চেলসি ১৯৯৮ সালে লিগ কাপ, উয়েফা কাপ উইনার্স কাপ এবং উয়েফা সুপার কাপ এবং ২০০০ সালে এফএ কাপ জিতেছিল। তারা ১৯৯৮-৯৯ মৌসুমে একটি শক্তিশালী শিরোপা লড়াইয়ে অবতীর্ণ হয় কিন্তু বিজয়ী ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড থেকে চার পয়েন্ট পিছিয়ে থেকে শেষ করে। এছাড়া, এই মৌসুমে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে তাদের প্রথম উপস্থিতি ছিল। ক্লদিও রেনিয়েরিকে নিয়োগ দেওয়ার জন্য ভিয়ালিকে বরখাস্ত করা হয়েছিল। রেনিয়েরি চেলসিকে ২০০২-০৩ মৌসুমে এফএ কাপ ফাইনাল পৌঁছাতে এবং চ্যাম্পিয়ন্স লিগের যোগ্যতা অর্জন করতে সাহায্য করেছিল।
২০০৩-২০২২: আব্রামোভিচ যুগ
"আমি আমার টাকা ফেলে দিতে চাই না তবে সত্যি বলতে মজা করাই আসল উদ্দেশ্য এবং তার মানে সাফল্য ও ট্রফি।"
— রোমান আব্রামোভিচ, মালিকানা বদলের পরে বিবিসির সাথে একটি সাক্ষাৎকারে।[৩১]
ক্লাবটি যখন এক আর্থিক সংকটের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলো[৩২] তখন বেটস আকস্মিকভাবে চেলসি ফুটবল ক্লাবকে জুন ২০০৩ সালে ৬০ মিলিয়ন পাউন্ডের বিনিময়ে বিক্রি করেন।[৩৩] এর মাধ্যমে তিনি ১৯৮২ সালে যে ক্লাবকে ১ পাউন্ড দিয়ে কিনেছিলেন তা থেকে ১৭ মিলিয়ন পাউন্ডের মুনাফা অর্জন করেন (সময়ের সাথে তার অংশীদারিত্বের মাত্রা ৩০% এর কিছুটা নিচে নেমে গিয়েছিল)। ক্লাবের নতুন মালিক ছিলেন রুশ অলিগার্ক এবং ধনকুবের রোমান আব্রামোভিচ। তিনি ক্লাবের £৮০ মিলিয়ন ঋণের দায়িত্বও নিয়েছিলেন এবং দ্রুত এর কিছু পরিশোধ করেছিলেন। সের্গেই পুগাচেভ অভিযোগ করেছিলেন চেলসিকে পুতিনের নির্দেশে কেনা হয়েছিল। আব্রামোভিচ অভিযোগটি অস্বীকার করেছেন।[৩৪] বেটস উল্লেখ করেছেন যে আব্রামোভিচ ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড এবং টটেনহ্যাম হটস্পারকে কেনার জন্য পায়তারা করছিলেন। কিন্তু তিনি অবশেষে চেলসির ক্রয়ের চুক্তি একদিনের মধ্যে সম্পন্ন করেছিলেন।[৩৫]

নতুন খেলোয়াড়দের পিছনে £১০০ মিলিয়নেরও বেশি ব্যয় করার পরও রেনিয়েরি কোনো ট্রফি জিততে না পারায় তাকে সরিয়ে হোসে মরিনহোকে কোচ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।[৩৬][৩৭] মরিনহোর অধীনে চেলসি টানা দুইটি লিগ শিরোপা (২০০৪-০৫ এবং ২০০৫-০৬) অর্জন করে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর মাত্র পঞ্চম ক্লাব হিসেবে এই কীর্তি গড়েছিল।[৩৮] সেই সাথে চেলসি একটি এফএ কাপ (২০০৭) এবং দুইটি লিগ কাপ (২০০৫ ও ২০০৭) জিততে সক্ষম হয়েছিল। ২০০৭-২০০৮ মৌসুমে শুরুটা খারাপ হওয়ার কারণে মরিনহোর স্থলাভিষিক্ত হন আব্রাম গ্রান্ট।[৩৯] তিনি ক্লাবকে তাদের প্রথম উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে নিয়ে যায় যেটি তারা ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কাছে পেনাল্টিতে হেরে যায়। আব্রামোভিচের মালিকানার প্রথম নয় বছরে ক্লাবটি মুনাফা অর্জন করতে পারেনি এবং জুন ২০০৫ সালে £১৪০ মিলিয়নের রেকর্ড লোকসান করেছিল।[৪০]
আমি বিশেষ প্রকৃতির এক ভক্ত। আমি প্রত্যেকটি খেলার আগে উত্তেজিত থাকি। পুরো প্রক্রিয়ার চেয়ে শেষের ট্রফিটি বেশি গুরুত্বপূর্ণ না।
— চেলসিতে দুটি ট্রফি-খচিত বছর নিয়ে আলোচনা করার সময় আব্রামোভিচ (২০০৬)।[৪১]
২০০৯ সালে, তত্ত্বাবধায়ক ম্যানেজার গাস হিডিঙ্কের অধীনে চেলসি আরেকটি এফএ কাপ জিতেছিল।[৪২] ২০০৯-১০ মৌসুমে, তার উত্তরসূরি কার্লো আনচেলত্তি তাদের প্রথম প্রিমিয়ার লিগ এবং এফএ কাপ দ্বৈত অর্জনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। এছাড়াও চেলসি ১৯৬৩ সালের পর এক মৌসুমে ১০০টি লিগ গোল করা প্রথম ইংরেজ শীর্ষ বিভাগের ক্লাবের গৌরব অর্জন করে।[৪৩] ২০১২ সালে, রবার্তো দি মাতেও চেলসিকে তাদের সপ্তম এফএ কাপ[৪৪] এবং পেনাল্টিতে বায়ার্ন মিউনিখকে ৪-৩ গোলে পরাজিত করে তাদের প্রথম উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা অর্জনে সাহায্য করেন। এর মাধ্যমে প্রথম লন্ডন ক্লাব হিসেবে চেলসি এই ট্রফি জিতে।[৪৫] পরের বছর ক্লাবটি উয়েফা ইউরোপা লিগ জিতে নেয়,[৪৬] যার অর্থ তারা প্রথম ক্লাব হিসেবে একই সাথে দুটি বড় ইউরোপীয় শিরোপা ধারণ করতে সক্ষম হয়। এই শিরোপা অর্জনের মাধ্যমে চেলসি মাত্র পাঁচটি ক্লাবের মধ্যে একটিতে পরিণত হয় যারা তিনটি প্রধান উয়েফা ট্রফি জিতেছে।[৪৭] মরিনহো ২০১৩ সালে ম্যানেজার হিসাবে ফিরে আসেন এবং মার্চ ২০১৫ সালে চেলসিকে লিগ কাপ সাফল্যে নেতৃত্ব দেন[৪৮] এবং দুই মাস পরে প্রিমিয়ার লিগ শিরোপা জয় করেন।[৪৯] পরের মৌসুমে খারাপ শুরুর চার মাস পর বরখাস্ত হন মরিনহো।[৫০]
নভেম্বর ২০১২-এ চেলসি ৩০ জুন ২০১২ সালে শেষ হওয়া বছরের জন্য ১.৪ মিলিয়ন পাউন্ড মুনাফার ঘোষণা করেছিল। এটি ছিল প্রথমবারের মতো আব্রামোভিচের মালিকানায় ক্লাবের লাভের নজির।[৪০][৫১] এর পরে ২০১৩ সালে ক্ষতি হয়েছিল এবং তারপরে জুন ২০১৪ পর্যন্ত বছরের জন্য তাদের সর্বোচ্চ £১৮.৪ মিলিয়ন লাভ হয়েছিল৷[৫২] ২০১৮ সালে চেলসি রেকর্ড £৬২ মিলিয়ন কর-পরবর্তী লাভের ঘোষণা করেছিল৷[৫৩]
২০১৭ সালে নতুন কোচ আন্তোনিও কন্তের অধীনে চেলসি তাদের ষষ্ঠ ইংরেজ শিরোপা জিতেছিল এবং পরের মৌসুমে তাদের অষ্টম এফএ কাপ জিতেছিল।[৫৪] ২০১৮ সালে পঞ্চম স্থান অর্জনের পর কন্তেকে বরখাস্ত করা হয় এবং তার স্থলাভিষিক্ত হন মরিজিও সারি।[৫৫][৫৬] উনার অধীনে চেলসি লিগ কাপের ফাইনালে পৌঁছেছিল, যেটি তারা ম্যানচেস্টার সিটির কাছে পেনাল্টিতে হেরেছিল[৫৭] এবং আর্সেনালকে ৪-১ গোলে হারিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো ইউরোপা লিগ জিতেছিল। সারি এরপর ক্লাব ছেড়ে গিয়ে ইয়ুভেন্তুসের ম্যানেজার হন এবং তার জায়গায় নিয়োগ পেয়েছিলেন চেলসি কিংবদন্তি ফ্রাঙ্ক ল্যাম্পার্ড।[৫৮]
ল্যাম্পার্ডের প্রথম মৌসুমে তিনি চেলসিকে প্রিমিয়ার লিগের চতুর্থ স্থানে নিয়ে যান এবং এফএ কাপের ফাইনালে পৌঁছান যেখানে আর্সেনালের কাছে ২-১ গোলে পরাজয়ের স্বাদ লাভ করেন।[৫৯] ল্যাম্পার্ডকে ২০২১ সালের জানুয়ারিতে অপসারণ করা হয়েছিল এবং তার জায়গায় থমাস টুখেল এসেছিলেন।[৬০][৬১]

টুচেলের অধীনে চেলসি এফএ কাপের ফাইনালে পৌঁছায় যেখানে লেস্টার সিটির কাছে ১-০ গোলে পরাজয় বরণ করতে হয়। এরপর পোর্তোয় অনুষ্ঠিত উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে ম্যানচেস্টার সিটির বিরুদ্ধে ১-০ ব্যবধানে জয়ের মাধ্যমে তাদের দ্বিতীয় শিরোপা অর্জন করে।[৬২] ক্লাবটি বেলফাস্টে অতিরিক্ত সময় শেষে ১-১ ব্যবধানে থাকার পর পেনাল্টি শুটআউটে ভিলারিয়ালকে ৬-৫ গোলে পরাজিত করে দ্বিতীয় উয়েফা সুপার কাপ জিতেছিল।[৬৩] আবুধাবিতে অনুষ্ঠিত ২০২১ ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপে ব্রাজিলীয় পালমেইরাসকে ২-১ ব্যবধানে হারানোর পর ক্লাবের ইতিহাসে প্রথম বারের মতো এই শিরোপা জয় করে।[৬৪]
১৮ এপ্রিল ২০২১ সালে চেলসি ঘোষণা করে যে তারা একটি নতুন ইউরোপীয় সুপার লিগে যোগ দেবে যেখানে ইউরোপের বৃহত্তম ক্লাবসমূহ একসাথে প্রতিযোগিতায় অংশ নিবে।[৬৫] সমর্থকদের বিরূপ প্রতিক্রিয়ার পরে ক্লাবটি কয়েকদিন পরে সেখান থেকে সরে আসার ঘোষণা দেয়।[৬৬]
প্রাক্তন চেলসি খেলোয়াড় টনি ক্যাসকারিনো জানান যে কোভিড-১৯ এর বৈশ্বিক মহামারি চলাকালীন সময়ে ক্লাবটি প্রাক্তন খেলোয়াড়দের কল দিয়ে তাদের স্বাস্থ্যের খোঁজখবর নিয়েছিল।[৬৭][৬৮] ক্লাবটি তাদের ম্যাচের দিনের বাইরের কর্মচারিদের অবৈতনিক কর্মবিরতির বিপক্ষে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। জানা গেছে যে আদেশটি আব্রামোভিচ নিজেই দিয়েছিল। চেলসি জাতীয় স্বাস্থ্য পরিষেবাকে সাহায্য করা প্রথম ক্লাবগুলির মধ্যে একটি এবং তারা এনএইচএস কর্মীদের জন্য ক্লাবের মালিকানাধীন মিলেনিয়াম হোটেলটি ধার দিয়েছিল।[৬৮]
"[চেলসি] গত ১০-২০ বছর ধরে সাফল্যের এক যন্ত্র। এটি শুধুমাত্র টাকা দিয়ে আসেনি, আমরা ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড এবং আর্সেনালে দেখেছি যেখানে তারা দলে বিলিয়ন বিলিয়ন অর্থ ঢেলেছে এবং চেলসির মতো সাফল্য পায়নি। চেলসি সান্ত্বনা পেতে পারে ভেবে যে তাদের ধনী মালিক থাকবে, কিন্তু তাদের কি ফুটবল স্মার্ট মালিক থাকবে? কারণ আব্রামোভিচ তাই ছিল।
— আব্রামোভিচের প্রভাব নিয়ে গ্যারি নেভিল।[৬৯]
২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের প্রতিক্রিয়া হিসাবে পশ্চিমা সরকারদের রুশ অলিগার্কদের উপর আর্থিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে থাকায় আব্রামোভিচ ২৬ ফেব্রুয়ারি বলেছিলেন যে তিনি চেলসি ফাউন্ডেশনের ন্যাসরক্ষকদের কাছে চেলসির দায়ভার হস্তান্তর করবেন।[৭০] ইংল্যান্ড এবং ওয়েলসের জন্য দাতব্য কমিশনের নিয়ম সম্পর্কে আইনি উদ্বেগের কারণে ন্যাসরক্ষকরা অবিলম্বে সম্মত হননি।[৭১] এক সপ্তাহ পরে আব্রামোভিচ ক্লাবের মালিকানা থেকে নেওয়া ১.৫ বিলিয়ন পাউন্ড ঋণ বাতিল করে দেন এবং ক্লাবটিকে বিক্রি করে দেওয়ার ঘোষণা দেন। একইসাথে বিক্রি থেকে পাওয়া অর্থ ইউক্রেনের যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্তদের দান করার প্রতিশ্রুতি দেন।[৭২][৭৩]
১০ মার্চ ২০২২ সালে ব্রিটিশ সরকার চেলসিকে ৩১ মে পর্যন্ত একটি বিশেষ অনুজ্ঞাপত্রের অধীনে কাজ করার অনুমতি দিয়ে আব্রামোভিচের উপর নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেছিল।[৭৪][৭৫] ইউক্রেন এবং রাশিয়ার মধ্যে একটি শান্তি চুক্তির মধ্যস্থতায় এবং অবরুদ্ধ ইউক্রেনীয় শহরগুলিতে নিরাপদ স্থানান্তর করিডোর জোগাড় করায় আব্রামোভিচের জড়িত থাকার প্রতিবেদন পরের কয়েক সপ্তাহে প্রকাশিত হয়েছিল।[৭৬][৭৭] একজন আমেরিকান সরকারী কর্মকর্তা ফাঁস করেছেন যে ইউক্রেনের রাষ্ট্রপতি ভলোদিমির জেলেনস্কি যুদ্ধের ত্রাণ প্রচেষ্টায় আব্রামোভিচের গুরুত্বের কারণে তার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ না করার জন্য মার্কিন সরকারকে অনুরোধ করেছিলেন।[৭৮]
২০২২-বর্তমান: বোলি-ক্লিয়ারলেক যুগ
৭ মে ২০২২-এ, চেলসি নিশ্চিত করে যে ক্লাবটি অধিগ্রহণের জন্য টড বোলি, ক্লিয়ারলেক ক্যাপিটাল, মার্ক ওয়াল্টার এবং হ্যান্সজর্গ উইসের নেতৃত্বে একটি নতুন মালিকানা দলের জন্য শর্ত সম্মত হয়েছে।[৭৯] মে মাসের ২৫ তারিখে £৪২৫ কোটি মূল্যের বোলির নেতৃত্বাধীন ঐক্যজোটকে সরকার চেলসির স্বত্বাধিকারের অনুমোদন দেয়।[৮০] ২০২২ সালের ৩০ মে আব্রামোভিচের ১৯ বছরের ক্লাব মালিকানার সমাপ্তি ঘটে।[৮১]
আমরা একাগ্রচিত্ত – ১০০% – প্রতি ম্যাচের প্রতি মিনিটে। মালিক হিসেবে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি পরিষ্কার: আমরা ভক্তদের গর্বিত করতে চাই।
— টড বোলি, মালিকানা বদলের পরে গণমাধ্যমকে দেয়া বক্তব্য।[৮২]
এরপর ২০ জুন ক্লাব ঘোষণা দেয় যে ব্রুস বাক, যিনি ২০০৩ সাল থেকে সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন, ৩০ জুন কার্যকরী ভূমিকা থেকে পদত্যাগ করবেন যদিও তিনি জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা হিসেবে ক্লাবকে সমর্থন দিয়ে যাবেন। বোলি সভাপতি পদে অধিষ্ঠ হবেন।[৮৩] পরবর্তীকালে ক্লাবটির বোর্ডের পুনর্গঠন হয় এবং ২২ জুন দীর্ঘকালীন ক্লাব পরিচালক এবং কার্যত খেলা পরিচালক মারিনা গ্রানোভস্কায়ার প্রস্থানের ঘোষণা আসে।[৮৪] পেটার চেক পাঁচ দিন পর প্রযুক্তিগত ও কর্মক্ষমতা উপদেষ্টার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নেন।[৮৫]
চেলসির ২০২২-২০২৩ মৌসুমের সূচনা যথেষ্ট ভালো ছিল যেখানে প্রথম ১১টি খেলার মধ্যে ছয়টি জিতেছিল। তবে পরে তাদের ধারাবাহিকতার নাটকীয় পতন ঘটে। চেলসি বাকি ২৭টির মধ্যে মাত্র ৫টি ম্যাচ জিততে সক্ষম হয়। শুধুমাত্র লিডস ইউনাইটেড এবং সাউদাম্পটন একই সময়ে চেলসির চেয়ে কম ম্যাচ জিতেছে। ক্লাবটি পুরো মৌসুমে সবচেয়ে কম ৩৮ গোল করে এবং ১৯৯৫-৯৬ মৌসুমের পর প্রথমবারের মতো নিম্নার্ধে শেষ করে।[৮৬]
লিগের ইতিহাস
|
স্ত১ = ফুটবল লিগ সিস্টেমের প্রথম স্তর; স্ত২ = ফুটবল লিগ সিস্টেমের দ্বিতীয় স্তর
স্টেডিয়াম
সারাংশ
প্রসঙ্গ

চেলসির শুধু একটি ঘরের মাঠ রয়েছে যা হলো স্ট্যামফোর্ড ব্রিজ। প্রতিষ্ঠার পর থেকে তারা সেখানে খেলে আসছে। এটি আনুষ্ঠানিকভাবে ১৮৭৭ সালের এপ্রিল মাসে খোলা হয়েছিলো। প্রথম ২৮ বছর এটি লন্ডন অ্যাথলেটিক ক্লাব কর্তৃক অ্যাথলেটিকস মিটিংয়ের ক্রীড়াঙ্গন হিসাবে ব্যবহৃত হয়েছিলো। এখানে তখন ফুটবল খেলা হতো না। ১৯০৪ সালে ব্যবসায়ী গাস মিয়ার্স এবং তার ভাই জোসেফ এই মাঠটি অধিগ্রহণ করে। তারা ফুটবল ম্যাচ পরিচালনা করার লক্ষ্যে নিকটস্থ ১২.৫ একর (৫১,০০০ বর্গমিটার) জমিও (আগে একটি বড় বাজারের বাগান) কিনেছিলেন।[৮৭] স্ট্যামফোর্ড ব্রিজটি মিয়ার্স পরিবারের জন্য ডিজাইন করেছিলেন প্রখ্যাত ফুটবল স্থপতি আর্চিবাল্ড লিচ। তিনি ওল্ড ট্র্যাফোর্ড, আইব্রক্স, ক্রেভেন কটেজ এবং সেলহার্স্ট পার্কের নকশাও করেছিলেন।[৮৮] বেশিরভাগ ফুটবল ক্লাব প্রথমে প্রতিষ্ঠিত হয়, এবং তারপরে খেলার জন্য মাঠ খুঁজেছিলো। তবে চেলসি স্ট্যামফোর্ড ব্রিজের জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো।
একটি খোলা বাটির মতো নকশা এবং আসনসহ একটি গ্র্যান্ডস্ট্যান্ড দিয়ে শুরু করে স্ট্যামফোর্ড ব্রিজের মূল ধারণক্ষমতা ছিল প্রায় ১,০০,০০০। এটি ক্রিস্টাল প্যালেসের পরে ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্টেডিয়াম ছিলো।[৮৭] ১৯৩০ এর দশকের শুরুর দিকে মাঠের দক্ষিণ পাশে ছাদ নির্মিত হয় যা স্ট্যান্ডের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ ঢেকে রাখে। ছাদটি ঢেউ খেলানো লোহার শেডের অনুরূপ হওয়ায় এই স্ট্যান্ডটি "শেড এন্ড" নামে পরিচিতি লাভ করে। যদিও এই নামটি প্রথমে কে তৈরি করেছিলেন তা জানা যায়নি। ১৯৬০ এর দশক থেকে শুরু করে এটি চেলসির সবচেয়ে অনুগত এবং জোরালো সমর্থকদের বাড়ি হিসাবে পরিচিতি লাভ করে।[৮৭] ১৯৩৯ সালে "নর্থ স্ট্যান্ড" নামে আরেকটি ছোট আসনযুক্ত স্ট্যান্ড যুক্ত করা হয়, যা ১৯৭৫ সালে ভেঙে ফেলার আগ পর্যন্ত ছিলো।[৮৭]
১৯৭০ এর দশকের গোড়ার দিকে, ক্লাবের মালিকরা স্ট্যামফোর্ড ব্রিজকে আধুনিকায়ন করে একটি অত্যাধুনিক ৫০,০০০ অল-সিটার স্টেডিয়ামের পরিকল্পনা ঘোষণা দিয়েছিলেন। ১৯৭২ সালে কাজ শুরু হয়েছিল তবে প্রকল্পটি বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিল এবং শেষ পর্যন্ত কেবল পূর্ব স্ট্যান্ডটিই সম্পন্ন হয়েছিল। সমস্ত ব্যয় ক্লাবকে দেউলিয়ার কাছাকাছি এনেছিল। শেষ পর্যন্ত স্বত্ব প্রোপার্টি ডেভেলপারদের কাছে বিক্রি করতে হয়। দীর্ঘ আইনী লড়াইয়ের পরে ১৯৯০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে স্টেডিয়ামে চেলসির ভবিষ্যত সুরক্ষিত হয় এবং সংস্কার কাজ আবার শুরু হয়। মাঠের উত্তর, পশ্চিম এবং দক্ষিণ অংশ অল-সিটার স্ট্যান্ডে রূপান্তরিত হয়েছিল এবং পিচের কাছাকাছি নিয়ে আসা হয়। এই প্রক্রিয়াটি ২০০১ সালে সমাপ্ত হয়েছিল। পূর্ব স্ট্যান্ডে ১৯৭০ এর দশকের উন্নয়নকাজ বজায় ছিলো। ১৯৯৬ সালে ক্লাবের পরিচালক এবং পৃষ্ঠপোষক ম্যাথিউ হার্ডিং বছরের শুরুতে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছিল। তার স্মৃতিতে উত্তর স্ট্যান্ডটির নামকরণ ম্যাথু হার্ডিং স্ট্যান্ড করা হয়।

স্ট্যামফোর্ড ব্রিজটি যখন বেটস যুগে পুনর্নবীকরণ করা হয়েছিল তখন কমপ্লেক্সে দুটি মিলেনিয়াম ও কোপথর্ন হোটেল, অ্যাপার্টমেন্ট, বার, রেস্তোঁরা, চেলসি মেগাস্টোর এবং চেলসি ওয়ার্ল্ড অফ স্পোর্ট নামে একটি ইন্টারেক্টিভ দর্শক আকর্ষণসহ অনেক অতিরিক্ত জিনিস যুক্ত হয়েছিল। উদ্দেশ্য ছিল যে এইসব স্থাপনা ব্যবসায়ের ফুটবল দিক সমর্থন করার জন্য অতিরিক্ত উপার্জন সরবরাহ করবে। তবে সেসব আশানুরূপ সাফল্য অর্জন করতে পারেনি। ২০০৩ সালে আব্রামোভিচ অধিগ্রহণের আগে এজন্য নেয়া ঋণ ক্লাবের উপর একটি বড় বোঝা ছিল। টেকওভারের পর খুব শীঘ্রই "চেলসি ভিলেজ" ব্র্যান্ড বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবং চেলসিকে একটি ফুটবল ক্লাব হিসাবে পুনরায় ফোকাস দেওয়া হয়। তবে স্টেডিয়ামকে মাঝে মাঝে "চেলসি ভিলেজ" বা "দ্য ভিলেজ"-এর অংশ হিসাবে উল্লেখ করা হয়।
স্ট্যামফোর্ড ব্রিজ ফ্রিহোল্ড, পিচ, টার্নস্টাইল এবং চেলসির নামাধিকার এখন চেলসি পিচ অউনার্স (সিপিও)-এর মালিকানাধীন। সিপিও একটি অলাভজনক সংস্থা যেখানে ভক্তরা শেয়ারহোল্ডার। এটি তৈরির উদ্দেশ্য ছিল যাতে নিশ্চিত করা যায় যে স্টেডিয়ামটি আর কখনো ডেভেলপারদের কাছে বিক্রি করা হবে না। চেলসি এফসি নাম ব্যবহার করার শর্ত ছিল ক্লাবকে স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে তার প্রথম দলের ম্যাচ খেলতে হবে। যার মানে হলো যদি ক্লাবটি নতুন স্টেডিয়ামে চলে যায় তাহলে দলের নাম পরিবর্তন করতে হতে পারে। চেলসির ট্রেনিং গ্রাউন্ড সারের কোবহ্যামে অবস্থিত।[৮৯] চেলসি ২০০৪ সালে কোবহ্যামে চলে আসে। হার্লিংটনে তাদের আগের প্রশিক্ষণ স্থলটি কিউপিআর ২০০৫ সালে নিয়ে নেয়।[৯০] কোবহ্যামে নতুন প্রশিক্ষণকেন্দ্র নির্মাণ ২০০৭ সালে সম্পন্ন হয়।[৯১]

স্ট্যামফোর্ড ব্রিজ ১৯২০ থেকে ১৯২২ পর্যন্ত এফএ কাপ ফাইনাল আয়োজন করেছিল।[৯২] এখানে দশটি এফএ কাপ সেমিফাইনাল (সর্বশেষ ১৯৭৮ সালে), দশটি এফএ চ্যারিটি শিল্ড ম্যাচ (শেষ ১৯৭০) এবং তিনটি ইংল্যান্ড আন্তর্জাতিক ম্যাচ হয়েছিল, ১৯৩২ সালে সর্বশেষ। এটি ১৯৪৬ সালে একটি অনানুষ্ঠানিক ভিক্টোরি ইন্টারন্যাশনালের ভেন্যুও ছিল।[৯৩] এটি ২০১৩ মহিলা চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালও আয়োজন করে।[৯৪] স্টেডিয়ামটি অন্যান্য খেলাধুলার জন্যও ব্যবহৃত হয়েছে। ১৯০৫ সালের অক্টোবর মাসে এখানে অল ব্ল্যাকস এবং মিডলসেক্সের মধ্যে একটি রাগবি ইউনিয়ন ম্যাচ আয়োজন করা হয়[৯৫] এবং ১৯১৪ সালে সফরকারী নিউইয়র্ক জায়ান্টস এবং শিকাগো হোয়াইট সক্সের মধ্যে একটি বেসবল ম্যাচ আয়োজন করা হয়।[৯৬] এটি বিশ্ব ফ্লাইওয়েট চ্যাম্পিয়ন জিমি ওয়াইল্ড এবং জো কনের মধ্যে ১৯১৮ সালে একটি বক্সিং ম্যাচের স্থান ছিল।[৯৭] রানিং ট্র্যাকটি ডার্ট ট্র্যাক রেসিংয়ের জন্য ১৯২৮ থেকে ১৯৩২ সাল,[৯৮] গ্রেহাউন্ড রেসিংয়ের জন্য ১৯৩৩ থেকে ১৯৬৮ সাল পর্যন্ত এবং ১৯৪৮ সালে মিজেট কার রেসিংয়ের জন্য ব্যবহৃত হয়েছিল।[৯৯] ১৯৮০ সালে স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে যুক্তরাজ্যে প্রথম আন্তর্জাতিক ফ্লাডলাইট ক্রিকেট ম্যাচ আয়োজন করেছিল,[১০০] এসেক্স এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যে। এটি ১৯৯৭ মৌসুমের জন্য লন্ডন মনার্কস আমেরিকান ফুটবল দলের হোম স্টেডিয়ামও ছিল।[১০১]
বর্তমান ক্লাবের মালিকানা বলেছিল যে চেলসির একটি বড়ো স্টেডিয়াম প্রয়োজন প্রতিদ্বন্দ্বী ক্লাবগুলির সাথে প্রতিযোগিতামূলক থাকার জন্য যাদের উল্লেখযোগ্যভাবে বড়ো স্টেডিয়াম রয়েছে, যেমন আর্সেনাল এবং ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড।[১০২] এর অবস্থান একটি প্রধান সড়ক এবং দুটি রেল লাইনের পাশে হওয়ার কারণে ভক্তরা কেবল ফুলহ্যাম রোড এক্সিটের মাধ্যমে স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে প্রবেশ করতে পারে। স্বাস্থ্য এবং সুরক্ষা বিধিবিধানের কারণে যা সম্প্রসারণে বাধা দেয়।[১০৩] ক্লাব ক্রমাগত চেলসিকে তাদের বর্তমান স্টেডিয়ামে রাখার ইচ্ছাকে নিশ্চিত করেছে।[১০৪][১০৫] কিন্তু তা সত্ত্বেও আর্লস কোর্ট এক্সিবিশন সেন্টার, ব্যাটারসি পাওয়ার স্টেশন এবং চেলসি ব্যারাকসহ নিকটবর্তী বিভিন্ন জায়গায় ক্লাবের স্থানান্তরের গুঞ্জন শোনা গেছে।[১০৬] ২০১১ সালের অক্টোবরে মাসে ক্লাবের পক্ষ থেকে স্ট্যামফোর্ড ব্রিজের জমির ফ্রিহোল্ড কেনার জন্য একটি প্রস্তাব চেলসি পিচ ওউনার্সের শেয়ারহোল্ডাররা বাতিল করেছিলো।[১০৭] ২০১২ সালের মে মাসে, ক্লাবটি ব্যাটারসি পাওয়ার স্টেশন কেনার জন্য একটি আনুষ্ঠানিক বিড করেছিল।[১০৮] ক্লাবের উদ্দেশ্য ছিল জায়গাকে একটি নতুন স্টেডিয়ামে উন্নীত করা। কিন্তু তারা মালয়েশিয়ার একটি কনসোর্টিয়ামের কাছে হেরে যায়।[১০৯] ক্লাব পরবর্তীতে স্ট্যামফোর্ড ব্রিজকে ৬০,০০০ আসনের স্টেডিয়ামে পুনর্নির্মাণের পরিকল্পনা ঘোষণা করে[১১০] এবং ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে এই পরিকল্পনা হ্যামারস্মিথ এবং ফুলহাম কাউন্সিল অনুমোদন করে।[১১১] কিন্তু ক্লাবটি ২০১৮ সালের ৩১ মে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে জানায় যে নতুন স্টেডিয়াম প্রকল্পটি অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত রাখা হয়েছে। এর কারণ হিসেবে "বর্তমান বিনিয়োগের প্রতিকূল আবহাওয়া" উল্লেখ করা হয়।[১১২]
২০২২ সালের জুলাই মাসে ক্লাবের নতুন মালিক টড বোলি স্টেডিয়ামের সংস্কারের সার্বিক তত্ত্বাবধানের জন্য মার্কিন স্থপতি জ্যানেট মেরি স্মিথকে নিযুক্ত করেছেন।[১১৩]
পরিচিতি
সারাংশ
প্রসঙ্গ
ক্রেস্ট
চেলসির চারটি প্রধান ক্রেস্ট ছিল, যার সবগুলোকেই ছোটখাটো পরিবর্তন করা হয়েছে। যখন ক্লাবটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল তখন প্রথমটি গৃহীত হয়েছিল। এটিতে একজন চেলসি পেনশনভোগীর চিত্র ছিল, যারা কাছাকাছি রয়্যাল হসপিটাল চেলসিতে থাকা সাবেক সেনাসদস্য ছিলেন। এই কারণে ক্লাবের প্রাথমিক ডাকনাম "পেনশনার" হয়েছিল এবং তা পরবর্তী অর্ধশতক পর্যন্ত রয়ে গিয়েছিল, যদিও এটি শার্টে কখনো দেখা যায়নি। ১৯৫২ সালে যখন টেড ড্রেক চেলসির ম্যানেজার হন, তখন তিনি ক্লাবটিকে আধুনিকীকরণ শুরু করেন। চেলসি পেনশনার ক্রেস্টকে সেকেলে মনে করে তিনি এটি বদলানোর জন্য জোর দিয়েছিলেন।[১১৪] একটি সাময়িক ব্যাজ যা ছিল ক্লাবের আদ্যক্ষর সি.এফ.সি. এক বছরের জন্য গৃহীত হয়েছিল। ১৯৫৩ সালে, ক্লাব ক্রেস্টটি পরিবর্তন করে একটি দাঁড়ানো নীল সিংহ করা হয় যা একটি দন্ড ধরে পিছনের দিকে তাকিয়ে ছিল। এটি চেলসির মেট্রোপলিটান বরো-এর কোট অফ আর্মসের উপাদানের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছিল এবং "লায়ন র্যাম্প্যান্ট রেগেন্যান্ট" নামক সিংহটি নেয়া হয় তৎকালীন ক্লাব সভাপতি ভিসকাউন্ট চেলসির আর্মস থেকে এবং দন্ডটি ওয়েস্টমিনস্টারের অ্যাবটদের থেকে নেয়া যারা চেলসির প্রাক্তন লর্ডস অফ দ্য ম্যানর। এতে ইংল্যান্ডের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য তিনটি লাল গোলাপ এবং দুটি ফুটবলও ছিল। ১৯৬০ এর দশকের গোড়ার দিকে এটি শার্টে ব্যবহার করা প্রথম চেলসির ক্রেস্ট ছিল। ১৯৭৫ সালে, কলেজ অফ আর্মস ইংলিশ ফুটবল লীগে ব্যবহারের জন্য চেলসিকে একটি আভিজাত্যপূর্ণ ব্যাজ প্রদান করে। ব্যাজটিতে পরিচিত সিংহ এবং দন্ড একটি নীল বৃত্ত দ্বারা ঘেরা ছিল কিন্তু কোনো অক্ষর ছিল না এবং লাল গোলাপ ও লাল ফুটবল ছিল না ("আ লায়ন র্যাম্প্যান্ট রেগার্ড্যান্ট অ্যাজ্যুর সাপোর্টিং উইথ দ্য ফরপস অ্যা ক্রোজিয়ার অর অল উইদিন এ অ্যানুলেট অ্যাজুর" লেখা প্রদর্শিত ছিল)।[১১৫]
১৯৮৬ সালে, কেন বেটস তৎকালীন নতুন ক্লাব মালিক হিসেবে চেলসির ক্রেস্ট আবার পরিবর্তন করেছিলেন। এর কারণ ছিল আধুনিকীকরণের আরেকটি প্রচেষ্টা এবং পুরানো সিংহ ব্যাজটিকে ট্রেডমার্ক করা যায়নি।[১১৬] নতুন ব্যাজটিতে একটি অধিক প্রাকৃতিক আভিজাত্যবিহীন সিংহ ছিল। এটি সিএফসি আদ্যক্ষরের উপরে দাঁড়িয়ে ছিল এবং এর রঙ ছিল সাদা, নীল নয়। এটি পরবর্তী ১৯ বছর ধরে টিকে ছিল। সাদা রঙ ফিরে আসার আগে ১৯৮৭ থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত লাল এবং ১৯৯৫ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত হলুদসহ বিভিন্ন রঙের ব্যবহারের মতো কিছু পরিবর্তন দেখা যায়।[১১৭] রোমান আব্রামোভিচের নতুন মালিকানা, এবং ক্লাবের শতবর্ষ ঘনিয়ে আসার সাথে ১৯৫০-এর দশকের জনপ্রিয় ব্যাজ পুনরুদ্ধার করার জন্য ভক্তদের দাবির কারণে ২০০৫ সালে ক্রেস্টটি আবার পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। নতুন ক্রেস্টটি ২০০৫-০৬ মৌসুমের শুরুতে আনুষ্ঠানিকভাবে গৃহীত হয়েছিল। এর ফলে ১৯৫৩ থেকে ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত ব্যবহৃত পুরানো ডিজাইন ফিরে আসে যেখানে একটি দন্ড ধরে থাকা একটি নীল আভিজাত্যপূর্ণ সিংহ ছিল। শতবর্ষ মৌসুমের জন্য এই ক্রেস্টের উপরে এবং নীচে যথাক্রমে '১০০ বছর' এবং 'শতবর্ষ ২০০৫-২০০৬' শব্দগুলি ছিল।[৭]
রঙ







চেলসির প্রথম ঘরের রঙ (১৯০৫ – আনুমানিক ১৯১২)[১১৮]

উইকিমিডিয়া কমন্সে চেলসি ফুটবল ক্লাব সংক্রান্ত মিডিয়া রয়েছে।
চেলসি সবসময় নীল রঙের শার্ট পরে থাকে। যদিও তারা প্রথমে ফ্যাঁকাসে ইটন নীল ব্যবহার করতো, যা তৎকালীন ক্লাব সভাপতি আর্ল ক্যাডোগানের দৌঁড় প্রতিযোগিতার রং থেকে নেওয়া হয়েছিল এবং সাথে সাদা শর্টস এবং গাঢ় নীল বা কালো মোজা পরা হতো।[১১৯] ১৯১২ সালের দিকে হালকা নীল শার্ট বদলে আসে রাজকীয় নীল শার্ট।[১২০] ১৯৬০-এর দশকে চেলসি ম্যানেজার টমি ডোচার্টি জার্সিটি আবার পরিবর্তন করেন। নীল শর্টস (যা তখন থেকে বর্তমান) এবং সাদা মোজায় পরিবর্তনের মাধ্যমে তিনি বিশ্বাস করেন যে এটি ক্লাবের রঙকে আরো আধুনিক এবং অনন্য করে তুলে। এর কারণ অন্য কোন বড়ো দল এই সমাহারটি ব্যবহার করেনি। এই জার্সিটি প্রথম ১৯৬৪-৬৫ মৌসুমে পরা হয়েছিল।[১২১] তারপর থেকে চেলসি সবসময় তাদের ঘরের জার্সির সাথে সাদা মোজা পরে। এর মাঝখানে ১৯৮৫ সাল থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত নীল মোজা পুনরায় চালু ছিল।
চেলসির বাইরের রঙ সাধারণত নীল প্রান্তসহ পুরো হলুদ বা পুরো সাদা হয়। অতি সম্প্রতি, ক্লাবটি অনেক কালো বা গাঢ় নীল বাইরের জার্সি তৈরি করেছে যা প্রতি বছর অদল-বদল হয়।[১২২] বেশিরভাগ দলের মতো, তাদেরও কিছু অস্বাভাবিক জার্সি ছিল। ডোচার্টির নির্দেশে, ১৯৬৬ এফএ কাপের সেমিফাইনালে তারা ইন্টার মিলানের জার্সির মতো নীল এবং কালো ডোরাকাটা দাগ পরেছিল।[১২৩] ১৯৭০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে, বাইরের পোষাক ছিল লাল, সাদা এবং সবুজ জার্সি যা ১৯৫০-এর দশকের হাঙ্গেরিয় জাতীয় দল থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে তৈরি।[১২৪] অন্যান্য বাইরের জার্সিগুলির মধ্যে রয়েছে ১৯৮৬ থেকে ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত পরা পুরো জেড রঙের পোষাক, ১৯৯০ থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত লাল ও সাদা হীরা, ১৯৯৪ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত গ্রাফাইট এবং কমলা এবং ২০০৭ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত উজ্জ্বল হলুদ জার্সি।[১২২] গ্রাফাইট এবং কমলা রঙের জার্সিটি সবচেয়ে খারাপ ফুটবল জার্সির বিভিন্ন তালিকায় স্থান পেয়েছে।[১২৫]
গান এবং সমর্থন স্লোগান
"ব্লু ইজ দ্য কালার" গানটি ১৯৭২ সালের লিগ কাপ ফাইনালের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে একক সঙ্গীত হিসেবে প্রকাশ করা হয়েছিল। এখানে চেলসির প্রথম দলের স্কোয়াডের সকল সদস্যরা গেয়েছিলেন। এটি যুক্তরাজ্য একক তালিকার পাঁচ নম্বরে পৌঁছায়।[১২৬] গানটি এরপর থেকে ভ্যাঙ্কুভার হোয়াইটক্যাপস ("হোয়াইট ইজ দ্য কালার" হিসেবে)[১২৭] এবং সাসকাচোয়ান রফরাইডার্স ("গ্রিন ইজ দ্য কালার" হিসেবে)সহ বিশ্বের বেশ কয়েকটি অন্যান্য ক্রীড়া দল গ্রহণ করেছে।[১২৮]
চেলসি ১৯৯৪ সালের এফএ কাপ ফাইনালে পৌঁছানোর পর "নো ওয়ান ক্যান স্টপ আস নাউ" (কেউ এখন আমাদের থামাতে পারবে না) গানটি প্রকাশ করে। এটি যুক্তরাজ্য একক তালিকায় ২৩ নম্বরে পৌঁছায়।[১২৯] ১৯৯৭ সালের এফএ কাপ ফাইনালের জন্য, সুগস এবং চেলসি স্কোয়াডের সদস্যদের দ্বারা পরিবেশিত "ব্লু ডে" (নীল দিন) গানটি যুক্তরাজ্য একক তালিকার ২২ নম্বরে পৌঁছেছিল।[১৩০] ২০০০ সালে, চেলসি "ব্লু টুমরো" (আগামীকাল নীল) গানটি প্রকাশ করে। এটিও যুক্তরাজ্য একক তালিকায় ২২ নম্বরে পৌঁছায়।[১২৯]
চেলসি সমর্থকরা ম্যাচের সময় বিভিন্ন গান গায়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু হচ্ছে "কেয়ারফ্রি" ("লর্ড অফ দ্য ডান্স" এর সুরে, যার কথা সম্ভবত সমর্থক মিক গ্রিনাওয়ে লিখেছিলেন),[১৩১][১৩২] "টেন ম্যান ওয়েন্ট টু মো", "উই অল ফলো দ্য চেলসি" ("ল্যান্ড অফ হোপ এন্ড গ্লোরি" এর সুরে), "জিগা জাগা" এবং উদ্যাপন সঙ্গীত "সেলারি"। শেষ গানটি গাওয়ার সাথে সাথে প্রায়শই সমর্থকরা একে অপরের দিকে সেলারি নিক্ষেপ করে। তবে ২০০৭ সালের লিগ কাপ ফাইনালে আর্সেনাল মিডফিল্ডার সেস্ক ফেব্রেগাসের সাথে হওয়া একটি ঘটনার পরে স্ট্যামফোর্ড ব্রিজের ভিতরে এই সবজি নিষিদ্ধ করা হয়েছিলো।[১৩৩] জনপ্রিয় সমর্থন স্লোগানের মধ্যে রয়েছে, "সুপার চেলসি", "সুপার ফ্র্যাঙ্ক" (সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতা ফ্র্যাঙ্ক ল্যাম্পার্ডকে উৎসর্গ করে), "উই লাভ ইউ চেলসি" (আমরা তোমাকে ভালোবাসি চেলসি) এবং "কাম অন চেলসি" (চলো চেলসি)। এছাড়াও, কিছু নির্দিষ্ট পরিস্থিতি বা নির্দিষ্ট দলের জন্য স্লোগান আছে যার উদ্দেশ্য বিপক্ষ দল, ম্যানেজার অথবা খেলোয়াড়দের খেপিয়ে তোলা।[১৩৪]
সমর্থন
সারাংশ
প্রসঙ্গ

চেলসি বিশ্বের সর্বাধিক সমর্থিত ফুটবল ক্লাবগুলির মধ্যে অন্যতম।[১৩৫][১৩৬] ইংলিশ ফুটবলে তাদের সর্বকালের সর্বমোট ষষ্ঠ সর্বোচ্চ উপস্থিতি রয়েছে[১৩৭] এবং স্ট্যামফোর্ড ব্রিজের নিয়মিত ৪০,০০০ এরও বেশি অনুরাগীকে আকর্ষণ করে। তারা ২০১৩-১৪ মৌসুমে গড় উপস্থিতি ৪১,৫৭২ নিয়ে সপ্তম সেরা সমর্থিত প্রিমিয়ার লিগ দল ছিলো।[১৩৮] চেলসির ঐতিহ্যবাহী সমর্থকবৃন্দ গোটা গ্রেটার লন্ডন অঞ্চল জুড়ে রয়েছে। এর মধ্যে যেমন হ্যামারস্মিথ এবং ব্যাটারসির মতো শ্রমজীবী এলাকার বাসিন্দারা আছে, তেমনি চেলসি এবং কেনসিংটনের মতো ধনী অঞ্চল এবং হোম কাউন্টিও অবস্থিত। যুক্তরাজ্য এবং সারা বিশ্বে অসংখ্য স্বীকৃত সমর্থক ক্লাব রয়েছে।[১৩৯] ২০০৭ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে, বার্ষিক জার্সি বিক্রিতে চেলসি বিশ্বজুড়ে চতুর্থ স্থান অর্জন করেছে। যার বিক্রির পরিমাণ ছিলো গড়ে ৯১০,০০০।[১৪০] ২০১৮ সালে, চেলসির সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলিতে ৭২.২ মিলিয়ন অনুসরণকারী ছিলো, যা ফুটবল ক্লাবগুলির মধ্যে চতুর্থ সর্বোচ্চ।[১৪১]
চেলসি সমর্থকরা ১৯৭০ এবং ১৯৮০-এর দশকে বিশেষ করে ফুটবল গুণ্ডামীর সাথে যুক্ত ছিলেন। ক্লাবটির "ফুটবল ফার্ম", যা প্রথমে চেলসি শেড বয়েজ হিসাবে পরিচিত ছিল এবং পরে চেলসি হেডহান্টারস নামে, ফুটবল সহিংসতার জন্য জাতীয়ভাবে কুখ্যাতি অর্জন করেছিলো। ওয়েস্ট হ্যাম ইউনাইটেডের ইন্টার সিটি ফার্ম এবং মিলওয়ালের বুশওয়্যাকার্সের মতো অন্যান্য ক্লাবের গুন্ডা সংস্থাগুলির পাশাপাশি তারা ম্যাচের আগে, ম্যাচের সময় এবং পরে সহিংসতার ঘটনা ঘটাতো।[১৪২] ১৯৮০-এর দশকে গুন্ডামির ঘটনা বৃদ্ধির ফলে তাদের পিচে আক্রমণ চালানো থেকে বিরত রাখার উদ্দেশ্যে চেয়ারম্যান কেন বেটস বৈদ্যুতিক বেড়া নির্মাণের প্রস্তাব করেছিলেন। গ্রেটার লন্ডন কাউন্সিল সেই প্রস্তাবটি প্রত্যাখ্যান করেছিলো।[১৪৩]
১৯৯০ এর দশক থেকে কঠোর পুলিশিং, মাঠে সিসিটিভি এবং অল-সিটার স্টেডিয়ামের আবির্ভাবের ফলে খেলায় দর্শক গন্ডগোল উল্লেখযোগ্য রকম হ্রাস পেয়েছে।[১৪৪] ক্লাবটি নিজেদের মাঠের ম্যাচগুলোর পরিবেশের উন্নতি করতে দ্য ব্যাক টু শেড ক্যাম্পেইনটি চালু করেছিল যা উল্লেখযোগ্য সাফল্য লাভ করে। হোম অফিসের পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০০৯-১০ মৌসুমে ১২৬ জন চেলসি সমর্থকদের ফুটবল-সম্পর্কিত অপরাধের জন্য গ্রেপ্তার করা হয়েছিলো যা লিগে তৃতীয় সর্বোচ্চ এবং ২৭টি নিষেধাজ্ঞার আদেশ জারি করা হয়েছিলো যা লিগের মধ্যে পঞ্চম সর্বোচ্চ।[১৪৫]
প্রতিদ্বন্দ্বিতা
চেলসির সাথে উত্তর লন্ডনের ক্লাব আর্সেনাল এবং টটেনহ্যাম হটস্পারের দীর্ঘদিনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা রয়েছে।[১৪৬][১৪৭] লিডস ইউনাইটেডের সাথে ১৯৬০ এবং ১৯৭০ এর দশকে বেশ কয়েকটি উত্তপ্ত এবং বিতর্কিত ম্যাচের মাধ্যমে এক শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা আরম্ভ হয়েছিলো। এর মধ্যে ১৯৭০ সালের এফএ কাপ ফাইনাল উল্লেখযোগ্য।[১৪৮] কাপ প্রতিযোগিতায় বারবার সংঘর্ষের পরে লিভারপুলের সাথে সম্প্রতি একটি প্রতিযোগিতা তৈরি হয়েছে।[১৪৯][১৫০] চেলসির নিকটস্থ পশ্চিম লন্ডনের দল ব্রেন্টফোর্ড, ফুলহ্যাম এবং কুইন্স পার্ক রেঞ্জার্সকে সাধারণত প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসাবে বিবেচনা করা হয় না। কারণ ক্লাবগুলি প্রায়শই পৃথক বিভাগে থাকায় তাদের মধ্যকার ম্যাচের সংখ্যা খুব সীমিত।[১৫১]
প্ল্যানেটফুটবল.কমের ২০০৪ সালের একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে চেলসি ভক্তরা তাদের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে বিবেচনা করে: আর্সেনাল, টটেনহাম হটস্পার এবং ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। একই সমীক্ষায়, আর্সেনাল, ফুলহাম, লিডস ইউনাইটেড, কিউপিআর, টটেনহ্যাম এবং ওয়েস্ট হ্যাম ইউনাইটেডের ভক্তরা তাদের তিনটি প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে একটি হিসাবে চেলসিকে দাবি করে।[১৫২] ২০০৮ সালে দ্য ফুটবল ফ্যানস সেনসাসের পরিচালিত একটি জরিপে চেলসি ভক্তরা তাদের সবচেয়ে অপছন্দ ক্লাব হিসাবে লিভারপুল, আর্সেনাল এবং ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে উল্লেখ করে। একই সমীক্ষায় "আপনি অন্য কোন ইংরেজ ক্লাবকে সবচেয়ে বেশি অপছন্দ করেন?" এই প্রশ্নের শীর্ষ উত্তর ছিল "চেলসি"।[১৫৩] সারা দেশের শীর্ষ চারটি লিগ বিভাগের ১২০০ সমর্থকদের মধ্যে পরিচালিত ২০১২ সালের একটি জরিপে দেখা গেছে যে অনেক ক্লাবের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী ২০০৩ সালের পর থেকে পরিবর্তিত হয়েছিলো। চেলসি ভক্তরা জানিয়েছিলো যে তারা টটেনহামকে আর্সেনাল এবং ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের উপরে তাদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসাবে বিবেচনা করে। এছাড়া, আর্সেনাল, ব্রেন্টফোর্ড, ফুলহাম, লিভারপুল, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, কিউপিআর, টটেনহ্যাম এবং ওয়েস্ট হ্যামের ভক্তরা চেলসিকে তাদের শীর্ষ তিনটি প্রতিদ্বন্দ্বী হিসাবে মনে করেছিলো।[১৫৪]
রেকর্ড
সারাংশ
প্রসঙ্গ
চেলসির হয়ে সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলেছেন প্রাক্তন অধিনায়ক রন হ্যারিস, যিনি ১৯৬১ সাল থেকে ১৯৮০ সালের মধ্যে ক্লাবের হয়ে ৭৯৫টি প্রতিযোগিতামূলক খেলায় অংশ নিয়েছেন।[১৫৫] অন্য চারজন খেলোয়াড়ের ক্লাবের হয়ে ৫০০-এর বেশি উপস্থিতি রয়েছে: পিটার বোনেটি (৭২৯; ১৯৫৯–১৯৭৯), জন টেরি (৭১৭; ১৯৯৮–২০১৭), ফ্রাঙ্ক ল্যাম্পার্ড (৬৪৮; ২০০১–২০১৪) এবং জন হলিন্স (৫৯২; ১৯৬৩–১৯৭৫ এবং ১৯৮৩–১৯৮৪)। ইংল্যান্ডের হয়ে ১০৩ টি ক্যাপ (ক্লাবে থাকাকালীন ১০১) নিয়ে ল্যাম্পার্ড চেলসির সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলা করা আন্তর্জাতিক খেলোয়াড়। চেলসির ২০১৩–২০১৪ মৌসুমের ৫৭টি খেলার প্রতিটির খেলা শুরু করা খেলোয়াড় ছিল পূর্ণাঙ্গ আন্তর্জাতিক - একটি নতুন ক্লাব রেকর্ড।[১৫৬]
ল্যাম্পার্ড চেলসির সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতা।[১৫৫] তিনি ৬৪৮ খেলায় (২০০১-২০১৪) ২১১ গোল করেছেন। তিনি ২০১৩ সালের মে মাসে ববি ট্যাম্বলিংয়ের ২০২ গোলের দীর্ঘস্থায়ী রেকর্ড অতিক্রম করেন।[১৫৭] অন্য আটজন খেলোয়াড় চেলসির হয়ে ১০০ টির বেশি গোল করেছেন: জর্জ হিলসডন (১৯০৬–১৯১২), জর্জ মিলস (১৯২৯–১৯৩৯), রয় বেন্টলি (১৯৪৮–১৯৫৬), জিমি গ্রীভস (১৯৫৭-১৯৬১), পিটার ওসগুড (১৯৬৪-১৯৭৪ এবং ১৯৭৮-১৯৭৯), কেরি ডিক্সন (১৯৮৩–১৯৯২), দিদিয়ের দ্রগবা (২০০৪–২০১২ এবং ২০১৪–২০১৫), এবং এডেন হ্যাজার্ড (২০১২–২০১৯)। গ্রীভসের এক মৌসুমে সর্বাধিক গোল করার ক্লাব রেকর্ড রয়েছে (১৯৬০-৬১ সালে ৪৩)। এছাড়াও, চেলসির খেলোয়াড় থাকাকালীন সময়ে গ্রীভস ইংলিশ টপ-ফ্লাইটে ১০০ গোল করা সর্বকালের সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড়ের রেকর্ড গড়েন। এ সময় তাঁর বয়স ২০ বছর এবং ২৯০ দিনে ছিলো।[১৫৮]

প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে চেলসির সবচেয়ে বড়ো ব্যবধানে জয় ১৩–০, যা ১৯৭১ সালে কাপ উইনার্স কাপে জিউনেসি হচারেজের বিপক্ষে অর্জন করে।[১৫৯] উইগান অ্যাথলেটিকসের বিরুদ্ধে ২০১০ সালের ৮-০ জয় ক্লাবের ইতিহাসের সবচেয়ে বড়ো ব্যবধানের শীর্ষ-বিভাগের জয়, যা ২০১২ সালে অ্যাস্টন ভিলার সাথে পুনরাবৃত্তি ঘটে।[১৬০] ১৯৫৩ সালে উলভারহ্যাম্পটন ওয়ান্ডারার্সের বিপক্ষে ৮–১ হার চেলসির ইতিহাসের সবচেয়ে বড় পরাজয় ছিলো।[১৬১][১৬২] ১৯৭১ সালে উয়েফা কাপ উইনার্স কাপে জিউনেসি হচারেজের বিরুদ্ধে ক্লাবের দুই লেগ মিলিয়ে ২১-০ অ্যাগ্রেগেটে বিজয় ইউরোপীয় প্রতিযোগিতায় একটি রেকর্ড।[১৬৩] আনুষ্ঠানিকভাবে চেলসির ঘরের মাঠে সর্বোচ্চ উপস্থিতি ৮২,৯০৫ জন ১৯৩৫ সালের ১২ অক্টোবর আর্সেনালের বিপক্ষে প্রথম বিভাগের ম্যাচে হয়েছিলো। যদিও, ১৯৪৫ সালের ১৩ নভেম্বর সোভিয়েত দল ডায়নামো মস্কোর বিরুদ্ধে একটি প্রীতি ম্যাচে আনুমানিক ১০০,০০০-এর বেশি জনতার সমাগম ঘটেছিলো।[১৬৪][১৬৫]
২০ মার্চ ২০০৪ থেকে ২৬ অক্টোবর ২০০৮ পর্যন্ত চেলসি ঘরের মাঠে টানা ৮৬টি লিগ ম্যাচ অপরাজিত থাকার রেকর্ড গড়ে।[১৬৬][১৬৭] এটি ১৯৭৮ সাল থেকে ১৯৮০ সালের মধ্যে লিভারপুলের করা ৬৩টি ম্যাচ অপরাজিত থাকার পূর্বের রেকর্ড ভেঙে দেয়। চেলসি এক লিগ সিজনে সবচেয়ে কম গোল হজম করার (১৫) রেকর্ড, প্রিমিয়ার লিগের একটি সিজনে সামগ্রিকভাবে সর্বোচ্চ সংখ্যক ক্লিন শীট (২৫) (উভয় রেকর্ড ২০০৪-০৫ সিজনে সেট করা হয়েছে),[১৬৮] এবং একটি লিগ সিজন শুরু হওয়ার পর থেকে টানা সবচেয়ে বেশি ক্লিন শীট (৬, ২০০৫-০৬ মৌসুমে) এর রেকর্ড গড়ে।[১৬৯] ৫ এপ্রিল ২০০৮ থেকে ৬ ডিসেম্বর ২০০৮ সালের মধ্যে চেলসির টানা এগারোবার অ্যাওয়ে লিগ ম্যাচ জয়ের ধারাটি ইংলিশ শীর্ষ পর্যায়ের জন্য একটি রেকর্ড।[১৭০] চেলসিই একমাত্র প্রিমিয়ার লিগ দল যারা ২০০৫-০৬ মৌসুমে তাদের প্রথম নয়টি লিগ খেলা জিতেছে।[১৭১][১৭২] ২০০৯ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত চেলসি রেকর্ড ২৯ টানা এফএ কাপ ম্যাচে অপরাজিত ছিল (পেনাল্টি শুট-আউট বাদে)।[১৭৩]
২৫ আগস্ট ১৯২৮ সালে চেলসি ও আর্সেনাল সর্ব প্রথম ক্লাব হিসেবে শার্টের পিছনে নম্বর ব্যবহার করে। চেলসিকে সোয়ানসি টাউনের বিপক্ষের ম্যাচে এই নম্বর ব্যবহার করতে দেখা যায়।[১৭৪] ১৯ এপ্রিল ১৯৫৭ সালে যখন তারা নিউক্যাসল ইউনাইটেডের বিপক্ষে খেলতে যায়, তখন তারা প্রথম ইংলিশ দল হিসেবে একটি ঘরোয়া দূরের ম্যাচে বিমানে ভ্রমণ করেছিল[১৭৫] এবং ২৭ জানুয়ারি ১৯৭৪ সালে সর্বপ্রথম একটি প্রথম বিভাগের দল হিসেবে একটি রবিবারের দিন একটি ম্যাচ খেলতে স্টোক সিটির মুখোমুখি হয়েছিল। ২৬ ডিসেম্বর ১৯৯৯ সালে, চেলসি সাউদাম্পটনের বিরুদ্ধে একটি প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে সম্পূর্ণ বিদেশী শুরুর একাদশ (কোন ব্রিটিশ বা আইরিশ খেলোয়াড় ছাড়া) নামানো প্রথম ব্রিটিশ দল হয়ে ওঠে।[১৭৬] ২০০৭ সালের মে মাসে, চেলসিই ছিল নতুন ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে এফএ কাপ জেতা প্রথম দল, একই সাথে তারা পুরানো ওয়েম্বলিতে সর্বশেষ জেতা দলও ছিল।[১৭৭] তারাই প্রথম ইংরেজ ক্লাব হিসেবে ২১শ শতাব্দীতে উয়েফার পাঁচ বছরের গুণাঙ্ক পদ্ধতির অধীনে ১ নম্বর স্থান অর্জন করে।[১৭৮] তারাই প্রথম প্রিমিয়ার লিগের দল, এবং ১৯৬২-৬৩ সালের পর ইংরেজ শীর্ষ বিভাগের প্রথম দল, যারা ২০০৯-১০ মৌসুমে এক মৌসুমে কমপক্ষে ১০০ গোল করার মাইলফলক স্পর্শ করে।[৪৩] চেলসি একমাত্র লন্ডনের ক্লাব যারা উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতেছে।[১৭৯][১৮০] ২০১২-১৩ উয়েফা ইউরোপা লিগ জেতার পরে, চেলসি প্রথম ইংরেজ ক্লাব হিসেবে চারটি উয়েফা ক্লাব ট্রফি জেতার কৃতিত্ব অর্জন করে এবং একই সময়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ এবং ইউরোপা লিগ ধরে রাখা একমাত্র ক্লাবের অনন্য নজির স্থাপন করে।[১৮১]
চেলসি তিনবার ব্রিটিশ ক্লাবের সর্বোচ্চ ট্রান্সফার ফি দেওয়ার রেকর্ড ভেঙেছে। ২০০৬ সালের জুনে এসি মিলান থেকে ৩০.৮ মিলিয়ন পাউন্ডে আন্দ্রি শেভচেঙ্কোর ক্রয় একটি ব্রিটিশ রেকর্ড ছিল।[১৮২] এই রেকর্ডটি ২০০৮ সালের সেপ্টেম্বরে রবিনহোর জন্য ম্যানচেস্টার সিটি ৩২.৫ মিলিয়ন পাউন্ড দিয়ে ভেঙে ফেলে।[১৮৩] ২০১১ সালের জানুয়ারিতে লিভারপুল থেকে ফের্নান্দো তোরেসকে চেলসি রেকর্ড ৫০ মিলিয়ন পাউন্ডে কিনে[১৮৪] যা আনহেল দি মারিয়া আগস্ট ২০১৪ সালে ৫৯.৭ মিলিয়ন পাউন্ডে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের জন্য চুক্তিবদ্ধ হওয়া পর্যন্ত টিকে ছিল।[১৮৫] ২০১৮ সালের আগস্টে চেলসি কেপা আরিসাবালাগাকে কিনতে £৭১ মিলিয়ন খরচ একটি গোলরক্ষকের জন্য দেওয়া বিশ্ব রেকর্ড ফি হিসাবে এখনো বজায় আছে।[১৮৬]
১২ ফেব্রুয়ারী ২০২২ সালে, চেলসি কাই হাভের্ৎসের শেষ দিকের পেনাল্টি গোল দিয়ে পালমেইরাসকে পরাজিত করে ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ জিতেছিল।[১৮৭] তারা প্রথম লন্ডন ক্লাব হিসেবে এই ট্রফি জিতে। চেলসি শীতকালীন দলবদলের সময়ে আটটি নতুন খেলোয়াড়ের পিছনে £২৮৯ মিলিয়ন ব্যয়ের মাধ্যমে ব্যয়ের রেকর্ডটি ভাঙে, এনজো ফার্নান্দেজকে চুক্তিবদ্ধ করতে £১০৭ মিলিয়ন পাউন্ড খরচ করে ব্রিটিশ দলবদলের রেকর্ড ভেঙেছে।[১৮৮]
মালিকানা এবং আর্থিক সংস্থান
সারাংশ
প্রসঙ্গ

১৯০৫ সালে গাস মিয়ার্স চেলসি ফুটবল ক্লাব প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯১২ সালে তার মৃত্যুর পর তার বংশধররা ১৯৮২ সাল পর্যন্ত ক্লাবটির মালিকানা ধরে রাখেন। এরপরে কেন বেটস ১৯৮২ সালে মিয়ার্সের ভাইপো ব্রায়ান মিয়ার্সের কাছ থেকে ১ পাউন্ডের বিনিময়ে ক্লাবটি কিনে নেন। বেটস ক্লাবের একটি নিয়ন্ত্রক পর্যায়ের অংশীদারিত্ব ক্রয় করেন এবং চেলসিকে এআইএম স্টক এক্সচেঞ্জে ১৯৯৬ সালের মার্চ মাসে উন্মুক্ত করেন।[২৭] ১৯৯০-এর দশকের মাঝামাঝি চেলসির ভক্ত এবং ব্যবসায়ী ম্যাথিউ হার্ডিং একজন পরিচালক হন এবং নতুন নর্থ স্ট্যান্ড নির্মাণের জন্য এবং নতুন খেলোয়াড়ের জন্য বিনিয়োগ করতে ক্লাবকে ২৬ মিলিয়ন পাউন্ড ঋণ দেন।[৩০]
২০০৩ সালের জুলাই মাসে রোমান আব্রামোভিচ চেলসি ভিলেজ পিএলসি-এর শেয়ার মূলধনের ৫০% এর কিছু বেশি অংশ £৩০ মিলিয়ন দিয়ে ক্রয় করেন যার মধ্যে বেটসের ২৯.৫% অংশীদারি ছিল। পরবর্তী কয়েক সপ্তাহে আব্রামোভিচ বাকি ১২,০০০ শেয়ারহোল্ডারদের প্রতি শেয়ার ৩৫ পেন্স ধরে অধিকাংশই শেয়ার ক্রয় করেন। এভাবে চেলসির £১৪০ মিলিয়ন মালিকানা বদল সম্পন্ন হয়। এই সময় অন্যান্য শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে ম্যাথিউ হার্ডিং এস্টেট (২১%), বিস্কাইবি (৯.৯%) এবং বিভিন্ন বেনামী অফশোর ট্রাস্ট অন্তর্ভুক্ত ছিল।[১৮৯]
আব্রামোভিচ মালিকানা গ্রহণের সময় ক্লাবের প্রায় ১০০ মিলিয়ন পাউন্ডের ঋণ ছিল, যার মধ্যে ১৯৯৭ সালে স্ট্যামফোর্ড ব্রিজের ফ্রিহোল্ড কেনার জন্য এবং স্টেডিয়ামের পুনঃউন্নয়নের অর্থায়ন করতে বেটস কর্তৃপক্ষ কর্তৃক গৃহীত দশ বছরের £৭৫ মিলিয়ন ইউরোবন্ড। ঋণের ৯% সুদের কারণে এর জন্য ক্লাবকে বছরে প্রায় ৭ মিলিয়ন পাউন্ড ব্যয় করতে হয় এবং ব্রুস বাকের মতে, চেলসি জুলাই ২০০৩ সালে প্রাপ্য একটি কিস্তির টাকা দিতে হিমশিম খাচ্ছিলো।[১৯০] আব্রামোভিচ সেই ঋণের কিছু অবিলম্বে পরিশোধ করেছিলেন, কিন্তু ইউরোবন্ডের বকেয়া £৩৬ মিলিয়ন পুরোপুরি পরিশোধ করতে ২০০৮ সাল পর্যন্ত সময় লাগে।[১৯১] তখন থেকে ক্লাবের কোনো বাহ্যিক ঋণ নেই।[১৯২]
আব্রামোভিচ ক্লাবের মালিকানার নাম পরিবর্তন করে চেলসি এফসি পিএলসি করেন। এটির চূড়ান্ত মাতৃ সংগঠন ছিল ফোর্ডস্ট্যাম লিমিটেড, যা তার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ছিল।[১৯৩] চেলসিকে আব্রামোভিচ তার হোল্ডিং কোম্পানি ফোর্ডস্ট্যাম লিমিটেডের মাধ্যমে সুদমুক্ত নমনীয় ঋণের মাধ্যমে অতিরিক্ত অর্থায়নের ব্যবস্থা করেছিলেন। ২০০৯ সালের ডিসেম্বর মাসে যখন ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় ৭০৯ মিলিয়ন পাউন্ডে, তখন সেগুলিকে আব্রামোভিচ ইক্যুইটিতে রূপান্তরিত করেছিলেন। এর ফলে ক্লাবটি ঋণমুক্ত হয়ে যায়,[১৯৪][১৯৫] যদিও ঋণটি ফোর্ডস্ট্যামের কাছে ছিল।[১৯৬]
আব্রামোভিচের মালিকানার প্রথম নয় বছরে চেলসি কোনো লাভ করতে পারেনি, এবং জুন ২০০৫ সালে £১৪০ মিলিয়নের রেকর্ড লোকসান করেছিল।[৪০] নভেম্বর ২০১২ সালে, চেলসি ৩০ জুন ২০১২ সালে শেষ হওয়া অর্থবছরের জন্য ১.৪ মিলিয়ন পাউন্ড লভ্যাংশ ঘোষণা করেছিল, যা আব্রামোভিচের মালিকানায় ক্লাবটি প্রথমবার মুনাফা অর্জন করে।[৪০][৫১] এর পরের বছর ২০১৩ সালে লোকসান হয়েছিল এবং তারপর জুন ২০১৪ পর্যন্ত বছরের জন্য তাদের সর্বোচ্চ £১৮.৪ মিলিয়ন লভ্যাংশ অর্জন করে৷[৫২] ২০১৮ সালে চেলসি কর-পরবর্তী রেকর্ড £৬২ মিলিয়নের লভ্যাংশ ঘোষণা করেছিল৷[৫৩]
চেলসিকে একটি বিশ্ব ব্র্যান্ড হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে; ব্র্যান্ড ফাইন্যান্সের ২০১২ সালের রিপোর্টে ফুটবল ব্র্যান্ডগুলির মধ্যে চেলসি পঞ্চম স্থান অর্জন করে এবং ক্লাবের ব্র্যান্ড মূল্য ৩৯৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ছিল – আগের বছরের তুলনায় ২৭% বৃদ্ধি। এছাড়াও তাদের মূল্যায়ন ষষ্ঠ স্থানে থাকা লন্ডনের প্রতিদ্বন্দ্বী আর্সেনালের তুলনায় $10 মিলিয়ন মার্কিন ডলার বেশি এবং ব্র্যান্ডটিকে এএ (খুব শক্তিশালী) এর শক্তি রেটিং দিয়েছে।[১৯৭][১৯৮] ২০১৬ সালে, ফোর্বস ম্যাগাজিন চেলসির মূল্য £১.১৫ বিলিয়ন ($১.৬৬ বিলিয়ন) হিসাব করে বিশ্বের সপ্তম মূল্যবান ফুটবল ক্লাব হিসাবে স্থান দিয়েছে।[১৯৯] ২০১৬ সালের হিসাবে, চেলসি £৩২২.৫৯ মিলিয়নের বার্ষিক বাণিজ্যিক আয়ের মাধ্যমে ডেলয়েট ফুটবল মানি লীগে অষ্টম স্থানে অর্জন করে।[২০০]
২০২২ সালের মে মাস পর্যন্ত, ফোর্বস অনুসারে চেলসি এখনও ৮ম স্থানে রয়েছে।[২০১] তার সাথে ৪৯৩.১ মিলিয়ন ইউরো বার্ষিক বাণিজ্যিক আয় দিয়ে ডেলয়েট প্রকাশিত তালিকায় ৮ম স্থানে রয়েছে।[২০২]
ক্লাবের সাম্প্রতিক অ্যাকাউন্টিং রেকর্ড দেখায় যে তাদের প্রাক্তন প্রধান কোচ আন্তোনিও কন্তেতে বরখাস্ত করার জন্য এবং তার সহযোগী কর্মীদের এবং পরবর্তী আইনি খরচ পরিশোধ করার জন্য ক্ষতিপূরণ হিসেবে £২৬.৬ মিলিয়ন প্রদান করতে হয়েছে।[২০৩]
২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২২ সালে, রুশো-ইউক্রেনীয় যুদ্ধের সময়, আব্রামোভিচ চেলসি এফসির "অভিভাবকত্ব এবং তত্ত্বাবধান" চেলসি চ্যারিটেবল ফাউন্ডেশনের কাছে হস্তান্তর করেছিলেন।[২০৪] আব্রামোভিচ ২ মার্চ ২০২২-এ একটি আনুষ্ঠানিক বিবৃতি প্রকাশ করে নিশ্চিত করেন যে তিনি ইউক্রেনের চলমান পরিস্থিতির কারণে ক্লাবটি বিক্রি করছেন।[২০৫] যদিও যুক্তরাজ্য সরকার আব্রামোভিচের "ক্রেমলিনের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক" থাকার কারণে ১০ মার্চ তার সম্পদ জব্দ করে, তবে এটি স্পষ্ট করা হয়েছিল যে চেলসি ক্লাবকে ফুটবল সম্পর্কিত কার্যকলাপ নিয়ে কাজ করার অনুমতি দেওয়া হবে।[২০৬] ১২ মার্চ, প্রিমিয়ার লীগ চেলসি ফুটবল ক্লাবের পরিচালক হিসাবে আব্রামোভিচকে অযোগ্য ঘোষণা করে।[২০৭]
১৯ মার্চ ২০২২ সালে, চেলসি এফসি অধিগ্রহণের জন্য পাঁচটি নিশ্চিত প্রস্তাবনা ছিল যেগুলো রেইন ক্যাপিটালে জমা দেওয়া হয়েছিল যারা ক্লাবের বিক্রয় পরিচালনা করছিলেন। এর মধ্যে কয়েকটি ছিল লিভারপুলের প্রাক্তন চেয়ারম্যান স্যার মার্টিন ব্রটনের নেতৃত্বে একটি কনসোর্টিয়াম, রিকেটস পরিবারের নেতৃত্বে বিনিয়োগকারীদের একটি দল (তাদের মধ্যে জো এবং পিট রিকেটস), সুইস এবং আমেরিকান ব্যবসায়ী হ্যান্সইয়র্গ উইস এবং টড বোলি, পর্তুগিজ রিকার্ডো সান্তোস সিলভার নেতৃত্বে এথেল পার্টনারস এবং প্রাক্তন চেলসি স্ট্রাইকার জিয়ানলুকা ভিয়ালির সমর্থনসহ ব্রিটিশ মাল্টি-মিলেনিয়ার ব্যবসায়ী নিক ক্যান্ডি।[২০৮]
৭ মে, ক্লাবটি অবশেষে নিশ্চিত করে যে টড বোলি এবং ক্লিয়ারলেক ক্যাপিটালের নেতৃত্বে একটি নতুন মালিকানা গ্রুপের জন্য "শর্তাবলী সম্মত হয়েছে"।[২০৯] ৩০ মে, বোলি এবং ক্লিয়ারলেক ক্যাপিটালের নেতৃত্বে একটি সংস্থা ক্লাবটির ক্রয় সম্পন্ন করেছে বলে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসে। সংস্থায় উইস এবং মার্ক ওয়াল্টারও অংশীদার হিসেবে রয়েছেন।[২১০] ওয়াল্টার এবং বোলি একত্রে লস অ্যাঞ্জেলেস ডজার্স, লস অ্যাঞ্জেলেস লেকার্স এবং লস অ্যাঞ্জেলেস স্পার্কসের মালিক। চুক্তিটি যুক্তরাজ্য এবং পর্তুগাল সরকার, প্রিমিয়ার লীগ এবং অন্যান্য কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে সমস্ত প্রয়োজনীয় অনুমোদন পেয়েছে।[২১১][২১২]
স্পনসরশিপ
২০১৭ সালের জুলাই মাস থেকে নাইকি চেলসির কিট প্রস্তুত করছে। এর আগে, অ্যাডিডাস কিট তৈরি করতো। তাদের সাথে প্রথমত ২০০৬ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ক্লাবের কিট সরবরাহ করার জন্য চুক্তি হয়েছিল। এই পার্টনারশিপটি ২০১০ সালের অক্টোবর মাসে ১৬০ মিলিয়ন পাউন্ড মূল্যের চুক্তিতে আট বছর বাড়ানো হয়েছিল।[২১৩] আবার ২০১৩ সালের জুন মাসে আরও দশ বছরের জন্য £৩০০ মিলিয়ন মূল্যের একটি চুক্তির মাধ্যমে দীর্ঘায়িত করা হয়েছিল।[২১৪] ২০১৬ সালের মে মাসে, অ্যাডিডাস ঘোষণা করেছিল যে পারস্পরিক সম্মতির মাধ্যমে, কিট স্পনসরশিপটি ৩০ জুন ২০১৭ সালে ছয় বছর পূর্বে শেষ হবে।[২১৫] চেলসি অ্যাডিডাসকে £৪০ মিলিয়ন ক্ষতিপূরণ দিয়েছিল। অক্টোবর ২০১৬-এ, ২০৩২ সাল পর্যন্ত ১৫ বছরে £৯০০ মিলিয়ন মূল্যের একটি চুক্তিতে, নাইকিকে নতুন কিট পৃষ্ঠপোষক হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছিল।[২১৬] পূর্বে, চেলসির কিট প্রস্তুত করেছিল আমব্রো (১৯৭৫-৮১), লে কক স্পোর্টিফ (১৯৮১-৮৬), দ্য চেলসি কালেকশন (১৯৮৬-৮৭), আমব্রো (১৯৮৭-২০০৬), এবং অ্যাডিডাস (২০০৬-২০১৭)।
চেলসির প্রথম শার্ট স্পনসর ছিল গালফ এয়ার যা ১৯৮৩-৮৪ মৌসুমে চুক্তিবদ্ধ হয়েছিল। ১৯৮৯ সালে কমোডোর ইন্টারন্যাশনালের সাথে একটি দীর্ঘমেয়াদী চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার আগে ক্লাবটিকে গ্র্যাঞ্জ ফার্মস, বাই লিন টি এবং সিমোড স্পনসর করেছিল। এছাড়া, কমোডোরের একটি শাখা আমিগা শার্টে উপস্থিত ছিল। চেলসি পরবর্তীকালে কুরস বিয়ার (১৯৯৪-৯৭), অটোগ্লাস (১৯৯৭-২০০১), এমিরেটস (২০০১-০৫), স্যামসাং মোবাইল (২০০৫-০৮), স্যামসাং (২০০৮-১৫)[২১৭][২১৮] এবং ইয়োকোহামা টায়ারস (২০১৫-২০) দ্বারা স্পনসর হয়েছিল। জুলাই ২০২০ সাল থেকে, চেলসির স্পনসর ছিল থ্রি,[২১৯] তবে তারা আব্রামোভিচের বিরুদ্ধে যুক্তরাজ্য সরকারের নিষেধাজ্ঞার প্রতিক্রিয়ায় ২০২২ সালের মার্চ মাসে তাদের স্পনসরশিপ সাময়িকভাবে স্থগিত করে।[২২০] কিন্তু ক্লাবের মালিকানা পরিবর্তনের পর তারা তাদের স্পন্সরশিপ পুনরধিষ্ঠিত করে।[২২১]
প্রিমিয়ার লীগে আস্তিন স্পনসরের প্রবর্তনের পর, ২০১৭-১৮ মৌসুমে চেলসির প্রথম আস্তিন স্পনসর হিসেবে অ্যালায়েন্স টায়ার ছিল।[২২২] ২০১৮-১৯ মৌসুমে হিউন্দাই মোটর কোম্পানি এই ভূমিকায় আসে।[২২৩] ২০২২-২৩ মৌসুমে অ্যাম্বার গ্রুপ নতুন আস্তিন স্পন্সর হয়, যেখানে তাদের ফ্ল্যাগশিপ ডিজিটাল অ্যাসেট প্ল্যাটফর্ম হোয়েলফিন পুরুষ এবং মহিলা উভয় দলেরই কিটের আস্তিনে প্রদর্শিত হয়।[২২৪]
এছাড়াও ক্লাবটির বিভিন্ন ধরনের অন্যান্য স্পনসর এবং আনুষ্ঠানিক অংশীদার রয়েছে, যার মধ্যে ক্যাডবেরি, ইএ স্পোর্টস, জিও মার্কেটস, হুবলট, লেভি রেস্তোরাঁ, এমএসসি ক্রুজেস, প্যারিম্যাচ, সিংঘা, ট্রিভাগো এবং জ্যাপ উল্লেখযোগ্য।[২২৫]
কিট প্রস্তুতকারক এবং শার্ট স্পনসর
সময়কাল | কিট প্রস্তুতকারক | শার্ট স্পনসর (বুক) | শার্ট স্পনসর (আস্তিন) |
---|---|---|---|
১৯৭৫–১৯৮১ | আমব্রো | — | — |
১৯৮১–১৯৮৩ | লে কক স্পোর্টিফ | ||
১৯৮৩–১৯৮৪ | গালফ এয়ার | ||
১৯৮৪–১৯৮৬ | — | ||
১৯৮৬–১৯৮৭ | — | বাই লিন টি/সিমদ | |
১৯৮৭–১৯৯৩ | আমব্রো | কমোডোর | |
১৯৯৩–১৯৯৪ | আমিগা | ||
১৯৯৪–১৯৯৭ | কুরস | ||
১৯৯৭–২০০১ | অটোগ্লাস | ||
২০০১–২০০৫ | এমিরেট্স | ||
২০০৫–২০০৬ | স্যামসাং | ||
২০০৬–২০১৫ | আডিডাস | ||
২০১৫–২০১৭ | ইয়োকোহামা টায়ার্স | ||
২০১৭–২০১৮ | নাইকি | অ্যালায়েন্স টায়ার কোম্পানি | |
২০১৮–২০২০ | হুন্দাই | ||
২০২০–২০২২ | থ্রি | ||
২০২২–২০২৩ | হোয়েলফিন | ||
২০২৩–২০২৪ | ইনফিনিট অ্যাথলিট | বিংএক্স | |
২০২৪– | ফিভার |
জনপ্রিয় সংস্কৃতি
সারাংশ
প্রসঙ্গ
১৯৩০ সালে সর্বপ্রথম ফুটবল চলচ্চিত্রগুলোর একটি, দ্য গ্রেট গেমে চেলসি প্রদর্শিত হয়েছিল।[২২৬] চেলসির এক সময়ের সেন্টার ফরোয়ার্ড, জ্যাক কক, যিনি তখন মিলওয়ালের হয়ে খেলছিলেন, ছিলেন চলচ্চিত্রের তারকা। স্ট্যামফোর্ড ব্রিজের পিচ, বোর্ডরুম এবং ড্রেসিংরুমে এর বেশ কয়েকটি দৃশ্যধারণ করা হয়েছিল। এতে চেলসির তৎকালীন খেলোয়াড় অ্যান্ড্রু উইলসন, জর্জ মিলস এবং স্যাম মিলিংটন অতিথি চরিত্রে উপস্থিত ছিলেন।[২২৭]
ক্লাবের সাথে চেলসি হেডহান্টার্স নামের যুক্ত একটি ফুটবল ফার্মের কুখ্যাতির কারণে, চেলসি ২০০৪ সালের দ্য ফুটবল ফ্যাক্টরিসহ ফুটবল গুন্ডামি সম্পর্কিত বিভিন্ন চলচ্চিত্রে স্থান পেয়েছে।[২২৮] হিন্দি চলচ্চিত্র ঝুম বারাবার ঝুমেও চেলসিকে দেখা গেছে।[২২৯] ২০১১ সালের এপ্রিল মাসে মন্টিনেগ্রেও কমেডি সিরিজ নিজেসমো মি অদ জুচের একটি পর্ব তৈরি করে যেখানে চেলসিকে উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগে খেলার যোগ্যতা অর্জনের জন্য এফকে সুতেস্কা নিকসিচের বিপক্ষে খেলেছিল।[২৩০]
১৯৫০-এর দশকের আগ পর্যন্ত, ক্লাবটির সাথে মিউজিক হলের দীর্ঘদিনের সম্পর্ক ছিল; তাদের সাফল্যের ঘাটতি প্রায়ই জর্জ রোবের মতো কৌতুকাভিনেতাদের জন্য মালমশলার যোগান দিতো।[২৩১] এটির চুড়ান্ত রূপ ছিল ১৯৩৩ সালে কৌতুকাভিনেতা নর্মান লংয়ের একটি হাস্যরসাত্মক গান, যার শিরোনাম ছিল "অন দ্য ডে দ্যাট চেলসি ওয়েন্ট অ্যান্ড ওন দ্য কাপ", যার গানের কথায় বিভিন্ন অদ্ভুত এবং অসম্ভাব্য ঘটনার ধারাবাহিক বর্ণনার মাধ্যমে এমন এক কাল্পনিক দিনের কথা ফুটিয়ে তোলে যখন চেলসি অবশেষে একটি ট্রফি জিতেছিল।[১৩] আলফ্রেড হিচককের ১৯৩৫ সালের চলচ্চিত্র দ্য থার্টি নাইন স্টেপসে, মিস্টার মেমরি দাবি করেছেন যে চেলসি শেষবার কাপ জিতেছিল ৬৩ খ্রিস্টপূর্বাব্দে, "সম্রাট নিরোর উপস্থিতিতে।"[২৩২] মাইন্ডারের ১৯৮০ সালের একটি পর্বের দৃশ্য স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে চেলসি এবং প্রেস্টন নর্থ এন্ডের মধ্যে একটি বাস্তব ম্যাচ চলাকালীন সময় চিত্রায়িত হয়েছিল যেখানে টেরি ম্যাকক্যান (ডেনিস ওয়াটারম্যান) ছাদবারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকে।[২৩৩]
খেলোয়াড়
সারাংশ
প্রসঙ্গ
বর্তমান দল
- ১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ পর্যন্ত হালনাগাদকৃত।[২৩৪]
টীকা: পতাকা জাতীয় দল নির্দেশ করে যা ফিফার যোগ্যতার নিয়মের অধীনে নির্ধারিত হয়েছে। খেলোয়াড়দের একাধিক জাতীয়তা থাকতে পারে যা ফিফা ভুক্ত নয়।
|
|
ধারে অন্য দলে
- ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ পর্যন্ত হালনাগাদকৃত।[২৩৫]
টীকা: পতাকা জাতীয় দল নির্দেশ করে যা ফিফার যোগ্যতার নিয়মের অধীনে নির্ধারিত হয়েছে। খেলোয়াড়দের একাধিক জাতীয়তা থাকতে পারে যা ফিফা ভুক্ত নয়।
|
|
ডেভেলপমেন্ট স্কোয়াড এবং একাডেমি
- যেসব খেলোয়াড় চেলসির হয়ে অন্তত একটি ম্যাচ খেলেছে।
টীকা: পতাকা জাতীয় দল নির্দেশ করে যা ফিফার যোগ্যতার নিয়মের অধীনে নির্ধারিত হয়েছে। খেলোয়াড়দের একাধিক জাতীয়তা থাকতে পারে যা ফিফা ভুক্ত নয়।
অধিনায়কদের তালিকা
|
বর্ষসেরা খেলোয়াড়
|
|
|
সূত্র: চেলসি এফ.সি.
ব্যবস্থাপনা
সারাংশ
প্রসঙ্গ
কোচিং স্টাফ
পদ | কর্মী |
---|---|
প্রধান কোচ | ![]() |
সহকারী কোচ | ![]() |
প্রথম দলের কোচ | ![]() |
![]() | |
গোলরক্ষক কোচ | ![]() |
![]() | |
সহকারী গোলরক্ষক কোচ | ![]() |
বৈশ্বিক গোলরক্ষণের প্রধান | ![]() |
ফিটনেস কোচ | ![]() |
কারিগরি বিশ্লেষক | ![]() |
ক্রীড়া বিশ্লেষক | ![]() |
ধার সংক্রান্ত কারিগরি কোচ | ![]() |
যুব উন্নয়নের প্রধান | ![]() |
যুব উন্নয়ন দল সহকারী | ![]() |
![]() | |
অনূর্ধ্ব-১৮ ম্যানেজার | ![]() |
অনূর্ধ্ব-১৮ সহকারী | ![]() |
![]() |
Source: Chelsea F.C.
উল্লেখযোগ্য ম্যানেজার
নিম্নলিখিত ম্যানেজাররা চেলসির দায়িত্ব থাকাকালীন সময়ে কমপক্ষে একটি ট্রফি জিতেছেন:
নাম | মেয়াদকাল | শিরোপা |
---|---|---|
![]() |
১৯৫২-১৯৬১ | প্রথম বিভাগ চ্যাম্পিয়নশীপ, চ্যারিটি শিল্ড |
![]() |
১৯৬২-১৯৬৭ | লিগ কাপ |
![]() |
১৯৬৭-১৯৭৪ | এফএ কাপ, উয়েফা কাপ উইনার্স কাপ |
![]() |
১৯৮১-১৯৮৫ | দ্বিতীয় বিভাগ চ্যাম্পিয়নশীপ |
![]() |
১৯৮৫-১৯৮৮ | ফুল মেম্বার্স কাপ |
![]() |
১৯৮৮-১৯৯১ | দ্বিতীয় বিভাগ চ্যাম্পিয়নশীপ, ফুল মেম্বার্স কাপ |
![]() |
১৯৯৬-১৯৯৮ | এফএ কাপ |
![]() |
১৯৯৮-২০০০ | এফএ কাপ, লিগ কাপ, চ্যারিটি শিল্ড, উয়েফা কাপ উইনার্স কাপ, উয়েফা সুপার কাপ |
![]() |
২০০৪-২০০৭ ২০১৩-২০১৫ |
৩ প্রিমিয়ার লিগ, ৩ লিগ কাপ, এফএ কাপ, কমিউনিটি শিল্ড |
![]() |
২০০৯ ২০১৫-২০১৬ |
এফএ কাপ |
![]() |
২০০৯-২০১১ | প্রিমিয়ার লিগ, এফএ কাপ, কমিউনিটি শিল্ড |
![]() |
২০১২ | এফএ কাপ, উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ |
![]() |
২০১২-২০১৩ | উয়েফা ইউরোপা লিগ |
![]() |
২০১৬-২০১৮ | প্রিমিয়ার লিগ, এফএ কাপ |
![]() |
২০১৮-২০১৯ | উয়েফা ইউরোপা লিগ |
![]() |
২০২১–২০২২ | উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ, উয়েফা সুপার কাপ, ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ |
ক্লাব কর্মকর্তা
পদ | নাম |
---|---|
সভাপতি | ![]() |
আজীবন প্রেসিডেন্ট | ![]() |
পরিচালকবৃন্দ | ![]() |
![]() | |
![]() | |
![]() | |
![]() | |
![]() | |
![]() | |
![]() | |
![]() | |
প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা | ![]() |
ব্যবসা সভাপতি | ![]() |
ফুটবল কর্মকাণ্ড পরিচালক | ![]() |
সহ-সভাপতিমন্ডলী | ![]() |
![]() | |
![]() |
Source: Chelsea F.C.
সম্মাননা
২০১২-১৩ উয়েফা ইউরোপা লিগ জেতার পর চেলসি "ইউরোপিয়ান ট্রেবল" বিজয়ী ইতিহাসের চতুর্থ ক্লাব হয় যারা ইউরোপিয়ান কাপ/উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, উয়েফা কাপ/উয়েফা ইউরোপা লীগ, এবং ইউরোপিয়ান কাপ উইনার্স কাপ/উয়েফা কাপ উইনার্স কাপ অর্জন করেছে। এর আগে জুভেন্টাস, আয়াক্স ও বায়ার্ন মিউনিখ এই কৃতিত্ব লাভ করে। চেলসি প্রথম ইংরেজ ক্লাব যারা তিনটি বড় উয়েফা ট্রফি জিতেছে।
ঘরোয়া
লিগ
- ১৯৫৪-৫৫, ২০০৪-০৫, ২০০৫-০৬, ২০০৯-২০১০, ২০১৪-১৫, ২০১৬-১৭
- ১৯৮৩-৮৪, ১৯৮৮-৮৯
কাপ
- এফ.এ. কাপ: ৮
- ১৯৬৯-৭০, ১৯৯৬-৯৭, ১৯৯৯-২০০০, ২০০৬-০৭, ২০০৮-০৯, ২০০৯-১০, ২০১১-১২, ২০১৭-১৮
- লিগ কাপ: ৫
- ১৯৬৪-৬৫, ১৯৯৭-৯৮, ২০০৪-০৫, ২০০৬-০৭, ২০১৪-১৫
- এফএ চ্যারিটি শিল্ড/কমিউনিটি শিল্ড[২৩৯]: ৪
- ১৯৫৫, ২০০০, ২০০৫, ২০০৯
- ফুল মেম্বার্স কাপ: ২
- ১৯৮৬, ১৯৯০
ইউরোপীয়ান
- ২০১১-১২, ২০২০-২১
- ২০১২-১৩, ২০১৮-১৯
- ১৯৭০-৭১, ১৯৯৭-৯৮
- ১৯৯৮, ২০২১
বিশ্বব্যাপী
- ২০২১
উয়েফা ক্লাব কোএফিশিয়েন্ট র্যাংকিং
র্যাংক | দল | পয়েন্ট |
---|---|---|
৭ | ![]() | ৮৫.০ |
৮ | ![]() | ৮২.০ |
৯ | ![]() | ৮২.০ |
১০ | ![]() | ৮১.৫ |
১১ | ![]() | ৭৮.০ |
- ১ আগস্ট ২০২৪ [২৪০] পর্যন্ত হালনাগাদকৃত।
চেলসি নারী
সারাংশ
প্রসঙ্গ
চেলসি একটি নারী ফুটবল দলও পরিচালনা করে যার নাম চেলসি ফুটবল ক্লাব উইমেন, যা আগে চেলসি লেডিস নামে পরিচিত ছিল। তারা ২০০৪ সাল থেকে পুরুষ দলের সাথে যুক্ত[২৪১] এবং ক্লাবের কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামের অংশ। তারা কিংসমিডোতে তাদের ঘরের ম্যাচ খেলে। মাঠটি পূর্বে ইএফএল লিগ টু ক্লাব এএফসি উইম্বলনের ঘরের মাঠ ছিল। দক্ষিণ বিভাগের বিজয়ী হিসেবে দলটি ২০০৫ সালে প্রথমবারের মতো প্রিমিয়ার বিভাগে উন্নীত হয়। ক্লাবটি ২০০৩ থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে নয়বার সারে কাউন্টি কাপ জিতেছিল।[২৪২] ২০১০ সালে, চেলসি লেডিস এফএ উইমেনস সুপার লিগের আটটি প্রতিষ্ঠাতা সদস্যের একজন ছিল।[২৪৩] ২০১৫ সালে, চেলসি লেডিস ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে নটস কাউন্টি লেডিসকে পরাজিত করে প্রথমবারের মতো এফএ উইমেনস কাপ জিতেছিল[২৪৪] এবং এক মাস পরে তাদের প্রথম এফএ ডব্লিউএসএল শিরোপা জেতার মাধ্যমে লিগ এবং কাপ দ্বৈত অর্জন করেছিল।[২৪৫] ২০১৮ সালে, তারা দ্বিতীয় বারের মতো লিগ এবং এফএ কাপ ডাবল জিতে।[২৪৬] দুই বছর পর, ২০২০ সালে, তারা তৃতীয় লিগ শিরোপা এবং প্রথমবারের মতো এফএ নারী লীগ কাপ জিতে তাদের দ্বৈত সাফল্যের পুনরাবৃত্তি করে।[২৪৭][২৪৮] ২০২০-২১ মৌসুমে, চেলসি লিগ, এফএ কাপ এবং লিগ কাপ জিতে ঘরোয়া ট্রেবল অর্জন করে।[২৪৯] এছাড়া, তারা প্রথমবারের মতো উয়েফা উইমেনস চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে পৌঁছায় যেখানে বার্সেলোনার কাছে ৪-০ গোলে হেরে যায়।[২৫০]
চেলসি পুরুষ দলের প্রাক্তন অধিনায়ক জন টেরি চেলসি নারী দলের সভাপতি।[২৫১]
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
Wikiwand - on
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.