Loading AI tools
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
আর্সেনাল ফুটবল ক্লাব (ইংরেজি: Arsenal Football Club; এছাড়াও আর্সেনাল এফসি অথবা শুধুমাত্র আর্সেনাল নামে পরিচিত) হচ্ছে ইংল্যান্ডের লন্ডনের ইজলিংটন ভিত্তিক একটি ইংরেজ পেশাদার ফুটবল ক্লাব। এই ক্লাবটি বর্তমানে ইংল্যান্ডের শীর্ষ স্তরের ফুটবল লিগ প্রিমিয়ার লিগে খেলে। এই ক্লাবটি ১৮৮৬ সালের অক্টোবর মাসে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ক্লাবটির মহিলা দল আর্সেনাল এলএফসি ইংরেজ মহিলা ফুটবল ইতিহাসে সবচেয়ে সফল ক্লাব। আর্সেনাল ইউরোপীয় ফুটবলের সেরা ক্লাবদের সংস্থা জি-১৪-এর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। আর্সেনাল তাদের সকল হোম ম্যাচ লন্ডনের এমিরেটস্ স্টেডিয়ামে খেলে থাকে; যার ধারণক্ষমতা হচ্ছে ৬০,৭০৪। বর্তমানে এই ক্লাবের ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করছেন মিকেল আতের্তা এবং সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন স্ট্যান এবং জোশ ক্রোয়েঙ্কে। বর্তমানে নরওয়েজীয় মধ্যমাঠের খেলোয়াড় মার্তিন ওদেগর এই ক্লাবের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করছেন।[6][7]
পূর্ণ নাম | আর্সেনাল ফুটবল ক্লাব[1][2] | |||
---|---|---|---|---|
ডাকনাম | দ্য গানার্স[3] | |||
প্রতিষ্ঠিত | অক্টোবর ১৮৮৬ (ডায়াল স্কোয়ার নামে)[4] | |||
মাঠ | এমিরেটস্ স্টেডিয়াম, হলোওয়ে লন্ডন, ইংল্যান্ড | |||
ধারণক্ষমতা | ৬০,৭০৪[5] | |||
মালিক | ক্রোয়েঙ্কে স্পোর্টস অ্যান্ড এন্টারটেইনমেন্ট | |||
সভাপতি | স্ট্যান ক্রোয়েঙ্কে জোশ ক্রোয়েঙ্কে | |||
ম্যানেজার | মিকেল আতের্তা | |||
লিগ | প্রিমিয়ার লিগ | |||
২০২২–২৩ | ২য় | |||
ওয়েবসাইট | ক্লাব ওয়েবসাইট | |||
| ||||
আর্সেনাল ১৮৯৩ সালে দ্য ফুটবল লিগে দক্ষিণ ইংল্যান্ডের প্রথম ক্লাব হিসেবে যোগদান করেছে এবং ১১ বছর পর, ১৯০৪ সালে, তারা শীর্ষ স্তরের লিগে খেলার জন্য উত্তীর্ণ হয়েছে। ১৯৩১ সালে ক্লাবের ইতিহাসে কেবল একবারই অবনমিত হয়েছিল পেয়েছিল, অতঃপর তারা শীর্ষ স্তরের লিগে অবস্থানের দীর্ঘতম ধারা অব্যাহত রেখেছে[8] এবং শীর্ষ স্তরের ইংরেজ ফুটবল ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংখ্যক ম্যাচ জয়লাভ করেছে।[9] ১৯৩০-এর দশকে, আর্সেনাল পাঁচটি লিগ চ্যাম্পিয়নশিপ এবং দুটি এফএ কাপ এবং যুদ্ধের পরে যুদ্ধের পর আরও একটি এফএ কাপ এবং দুটি চ্যাম্পিয়নশিপ জয়লাভ করেছিল। ১৯৭০–৭১ মৌসুমে, লিগ এবং এফএ কাপ শিরোপা জয়ের মাধ্যমে তারা প্রথমবারের মতো ডাবল জয়লাভ করেছিল। ১৯৮৯ সাল হতে ২০০৫ সালের মধ্যে, তারা আরও দুটি ডাবলসহ সর্বমোট পাঁচটি লিগ এবং পাঁচটি এফএ কাপ শিরোপা জয়লাভ করেছে। ক্লাবটি প্রিমিয়ার লিগের সর্বকালের পয়েন্ট তালিকায় সর্বোচ্চ গড় লিগ অবস্থান নিয়ে বিশ শতক সম্পন্ন করেছে।[10]
হার্বার্ট চ্যাপম্যান আর্সেনালের প্রথম জাতীয় শিরোপা জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, তবে ১৯৩৪ সালে নিউমোনিয়ায় অকাল মৃত্যুবরণ করেছিলেন। তিনি ডাব্লিউএম গঠন, ফ্লাডলাইট এবং স্কোয়াড নম্বর প্রবর্তন করতে ভূমিকা পালন করেছিলেন[11] এবং ক্লাবের পোশাকে সাদা হাতা এবং উজ্জ্বল লাল রঙ যুক্ত করেছিলেন। আর্সেন ওয়েঙ্গার সরচেয়ে বেশি সময় যাবত (১৯৯৬ সালের ১লা অক্টোবর হতে ২০১৮ সালের ১৩ই মে তারিখ পর্যন্ত প্রায় ৭,৮৯৪ দিন) এই ক্লাবের হয়ে ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করেছেন এবং সবচেয়ে বেশি শিরোপা জয়লাভ করেছেন। এই সময়ে আর্সেনাল ১,২৩৫ ম্যাচ খেলেছে, যার মধ্যে ৭০৭ ম্যাচ জয়লাভ করেছে। একই সাথে এই সময়ে আর্সেনাল রেকর্ড সাতটি এফএ কাপ জয়লাভ করেছিল এবং তার শিরোপা বিজয়ী দলটি ২০০৩ সাল হতে ২০০৪ সাল পর্যন্ত টানা ৪৯ ম্যাচে অপরাজিত থেকে ইংরেজ রেকর্ড গড়েছিল[12] এবং ২০০৩–০৪ মৌসুমে পুরো মৌসুম জুড়ে অপরাজিত থেকে আধুনিক ফুটবল ইতিহাসে প্রথম ক্লাব হিসেবে ইনভিন্সিবল খেতাব অর্জন করেছে।
১৮৮৬ সালে, রয়্যাল আর্সেনালউলউইচ যুদ্ধোপকরণ কর্মীরা ক্লাবটিকে ডায়াল স্কোয়ার হিসাবে প্রতিষ্ঠা করেছিল। ১৯১৩ সালে, ক্লাবটি টটেনহ্যাম হটস্পারের নিকটতম প্রতিবেশী হয়ে উঠে এবং হাইবারির আর্সেনাল স্টেডিয়ামে নর্থ লন্ডন ডার্বির আয়োজন করেছিল। ২০০৬ সালে, তারা পূর্ববর্তী স্টেডিয়ামের কাছাকাছি এমিরেট্স স্টেডিয়ামে স্থানান্তরিত হয়েছিল। আয়ের দিক থেকে আর্সেনাল বিশ্বের নবম সর্বাধিক উপার্জনকারী ফুটবল ক্লাব, ২০১৬–১৭ মৌসুমে ক্লাবটি ৪৮৭.৬ মিলিয়ন ডলার আয় করেছিল।[13] ২০১৪ সাল হতে ২০১৫ সাল পর্যন্ত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কার্যক্রমের ভিত্তিতে, আর্সেনালের অনুসারী গণনার দিক থেকে বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম ক্লাবে পরিণত হয়েছিল।[13] ২০১৮ সালে, ফোর্বস অনুমান করেছে যে ক্লাবটি ইংল্যান্ডের তৃতীয় মূল্যবান ক্লাব, যার সর্বমোট মূল্য হচ্ছে ২.২৪ মিলিয়ন ডলার।[14]
১৮৮৬ সালের অক্টোবর মাসে স্কটিশ ব্যক্তি ডেভিড ডানস্কিন এবং তার সহকর্মী ১৫ জন যুদ্ধের উপকরণ প্রস্তুতকারী শ্রমিক দক্ষিণ পূর্ব লন্ডনের উলউইচে এই ক্লাবটি প্রতিষ্ঠা করে। ক্লাবটি প্রতিষ্ঠায় সকল সদস্য ছয় পেন্স এবং ডানস্কিন আরও তিন শিলিং প্রদান করেছিলেন। শুরুতে ক্লাবটির নাম ছিল ডায়াল স্কয়ার, যা মূলত রয়্যাল আর্সেনাল কমপ্লেক্সের প্রধান স্থানের নামানুসারে রাখা হয়েছিল। একমাস পরে এই নামটি পরিবর্তন করে রাখা হয়, পুরো কমপ্লেক্সের নামানুসারে ক্লাবটির নামকরণ করা হয় রয়্যাল আর্সেনাল।[15][16] রয়্যাল আর্সেনাল ফুটবল ক্লাবের প্রথম খেলার মাঠ ছিল প্লামস্টিড কমন, যদিও তারা তাদের অধিকাংশ সময় কাটাতেন প্লামস্টিডের অপর পার্শ্বে দক্ষিণ পূর্ব লন্ডনের ম্যানর গ্রাউন্ডে। রয়্যাল আর্সেনালের প্রথম ট্রফি বিজয় ছিল ১৯৮৯-৯০ মৌসুমে কেন্ট সিনিয়র কাপ এবং লন্ডন চ্যারিটি কাপ। এরপর তারা ১৮৯০-৯১ মৌসুমে লন্ডন সিনিয়র কাপ জয়ী হয়। আর্সেনাল দক্ষিণ পূর্ব লন্ডনে অবস্থানকালে এই পুরস্কারগুলো অর্জন করে।[17][18] ১৮৯১ সালে রয়্যাল আর্সেনাল প্রথম লন্ডন ভিত্তিক ক্লাব হিসেবে পেশাদার দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।[19]
১৮৯১ সালে দ্বিতীয় বারের মত ক্লাবটির নাম পরিবর্তন করা হয় এবং এর নাম রাখা হয় ওউলিচ আর্সেনাল। ১৮৮৩ সালে প্রথমবারের মত ফুটবল লিগে যোগ দেয় এবং প্রায় ২১ বছর পর ১৯০৪ সালে প্রথম বিভাগ দলের মর্যাদা লাভ করে। ভৌগোলিক কারণে শুরু থেকেই তাদের দর্শক সংখ্যা ছিল অনেক কম। যার কারণে ১৯১০ সালের মধ্যেই তারা অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু হয়ে পড়ে।[20] ১৯১৩ সালে রেলিগেশনের কারণে আর্সেনাল দ্বিতীয় বিভাগে নেমে যায় এবং ঠিক এই সময়ে তারা হাইবারিতে আর্সেনাল স্টেডিয়াম প্রতিষ্ঠা করে সেখানে চলে আসে।[21] একই বছরে দলটি তাদের নাম থেকে রয়েল শব্দটি বাদ দিয়ে দেয়।
১৯১৯ সালে পঞ্চম স্থানে থেকে বছর শেষ করার পর তারা টটেনহ্যাম হটস্পারের পরিবর্তে প্রথম বিভাগে ফিরে আসে।
১৯২৫ সালে আর্সেনালের ম্যানেজার হিসাবে যোগ দেন হার্বার্ট চ্যাপম্যান। তার হাত ধরেই আর্সেনাল প্রথমবারের মতো ১৯২৩-২৪ এবং ১৯২৪-২৫ সালে লিগ শিরোপা জিতে। তিনি দলে টেনে আনেন অ্যালেক্স জেম্স এবং ক্লিফ ব্যাস্টিন সহ আরো নামী দামী খেলোয়াড়। ১৯৩০-১৯৩৮ পর্যন্ত আর্সেনাল পাঁচবার প্রথম বিভাগে শিরোপা, দুইবার এফএ কাপ শিরোপা জিতে নেয়। যদিও চ্যপম্যান দলের এই স্বর্ণযুগ পুরোটা উপভোগ করে যেতে পারেননি। ১৯৩৪ সালে এই কিংবদন্তি ম্যানেজার নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। চ্যপম্যান ১৯৩২ সালে লন্ডনের একটি স্থানীয় পাতাল স্টেশনের নাম "গিলেস্পি রোড" পরিবর্তন করে "আর্সেনাল" রাখার জন্য অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। কোন ফুটবল ক্লাবের নামে রাস্তার নাম রাখার ইতিহাস সেখান থেকেই শুরু।[22]
পরবর্তীকালে নতুন ম্যানেজার টম হুইটেকারের সময়ে আর্সেনাল ১৯৪৭-৪৮ ও ১৯৫২-৫৩ সালে লিগ শিরোপা এবং ১৯৪৯-৫০ সালে এফএ কাপ শিরোপা জিতে। এই সময় ক্লাবটি তারকাশূন্য হতে শুরু করে। সাথে সাথে তারা নতুন প্রতিভাবান খেলোয়াড় দলে টেনে আনতে ব্যর্থ হয়। যার ফলে ১৯৫০-১৯৬০ সাল পর্যন্ত ক্লাবটি গুরুত্বপূর্ণ শিরোপা ঘরে তুলতে পানেনি। স্বয়ং ইংল্যান্ড জাতীয় দলের অধিনায়ক বিলি রাইট আর্সেনালের ম্যানেজারের (১৯৬২-১৯৬৬) দায়িত্ব পালনের সময়ও আর্সেনাল গুরুত্বপূর্ণ কোন সাফল্য পায়নি।
আর্সেনালের দ্বিতীয় সাফল্যের অধ্যায় শুরু হয় যখন ক্লাব কর্তৃপক্ষ ১৯৬৬ সালে বারটাই মিকে ম্যানেজারের দায়িত্ব দেয়। ১৯৭০ সালে তারা প্রথমবারের মত ইউরোপীয় শিরোপা জয় করে। ১৯৭০-৭১ সালে তারা একই সাথে জিতে নেয় লিগ এবং এফএ কাপ শিরোপা। কিন্তু এই সময় অনেক খেলোয়াড় দল ত্যাগ করে। যার কারণে আর্সেনাল ১৯৭২-৭৩ সালে লিগে রানার আপ হয়। (১৯৭২-৭৩), (১৯৭৭-৭৮), (১৯৭৯-৮০) সালে এফএ কাপ ফাইনালে হেরে যায়। এই সময়টাতে ক্লাবটির একমাত্র সাফল্য ছিল ১৯৭৭-৭৮ সালে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে ৩-২ গোল ব্যবধানে পরাজিত করে এফএ কাপ জেতা।
ক্লাবটির তৃতীয় সাফল্যের অধ্যায় শুরু হয় যখন ১৯৮৬ সালে ক্লাবটি সাবেক খেলোয়াড় জর্জ গ্রাহাম ক্লাবের দায়িত্ব নেন। তার ক্যারিয়ারের প্রথম বছরেই আর্সেনাল লিগ কাপ শিরোপা জিতে নেয়। সাথে সাথে ১৯৮৮-৮৯ সালে শেষ মিনিটের গোলে লিভারপুলকে পরাজিত করে লিগ শিরোপা, ১৯৯০-৯১ সালে লিগ শিরোপা, ১৯৯২-৯৩ সালে একত্রে লিগ ও এফএ কাপ শিরোপা ও দ্বিতীয় ইউরোপীয় শিরোপা জিতে নেয়।[23] ১৯৯৩-৯৪ সালে একজন খেলোয়াড়কে দলে নেয়ার জন্য তিনি একজন দালালের কাছ থেকে টাকা আদায় করেন যা পরবর্তীকালে ক্লাব কর্তৃপক্ষের কাছে প্রকাশ হয়ে পড়ে। ১৯৯৫ সালে তিনি চাকুরিচ্যুত হন। তার বদলী হিসাবে আসেন ব্রুস রায়চ।[24] ক্লাব কর্তৃপক্ষের সাথে মন কষাকষির কারণে এক মৌসুম পরেই তিনি আর্সেনাল ত্যাগ করেন।
এরপর ১৯৯৬ সালে আর্সেনালের দায়িত্ব নেন ফরাসি আর্সেন ওয়েঙ্গার। ওয়েঙ্গার এসেই দলের কৌশল এবং প্রশিক্ষণে ব্যাপক পরিবর্তন আনেন। সাথে সাথে তিনি দলে আনেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের খেলোয়াড় যারা দলের আন্যান্য ইংরেজ খেলোয়াড়দের সাথে পাল্লা দিতে সমর্থ হয়। আর্সেনাল ১৯৯৭-৯৮ ও ২০০১-০২ সালে আবারো যুগল শিরোপা ঘরে তুলে আনে। ১৯৯৯-০০ সালে তারা উয়েফা কাপের ফাইনালে পরাজিত হয়। এবং সেই প্রতিক্ষীত শিরোপা তারা অর্জন করে ২০০২-০৩ সালে। ২০০৩-০৪ সালে তারা অপরাজিত থেকে লিগ শিরোপা অর্জন করে। এই কারণে ক্লাবটির নতুন ডাক নাম হয় দ্য ইনভিন্সিব্ল।[25] টানা ৪৯ ম্যাচে অপরাজিত থেকে ক্লাবটি জাতীয় রেকর্ড স্থাপন করে।
ওয়েঙ্গারের দশ বছরে আর্সেনাল আটটি লিগ শেষ করে প্রথম অথবা দ্বিতীয় হয়ে। ১৯৯৩ সালে প্রিমিয়ার লিগ শুরু হবার পর শিরোপা জয়ী ৪টি দলের মধ্যে আর্সেনাল একটি। বাকি দলগুলো হল (চেলসি, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, ব্ল্যাকবার্ন রোভার্স)[26]। ২০০৫-০৬ সালে আর্সেনাল লন্ডনের প্রথম ক্লাব হিসাবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালের উঠে। যদিও বার্সেলোনার কাছে ৩-২ এ পরাজিত হয়।[27]
ক্লাবটি ২০০৫ সালের এফএ কাপের পর থেকে ২০১৪ সালের ১৭ই মে পর্যন্ত কোন বড় শিরোপা অর্জন করতে পারেনি। ২০১৪ সালে এফএ কাপ ফাইনালে মেসুত ওজিলের নৈপুণ্যে ২-০ গোলে পিছিয়ে থেকেও আর্সেনাল হাল সিটিকে ৩-২ গোলে হারিয়ে শিরোপা লাভ করে।[28] এক বছর পর আর্সেনাল টানা দ্বিতীয় বারের মত এফএ কাপের ফাইনালে পৌঁছে এবং ফাইনালে অ্যাস্টন ভিলাকে ৪-০ গোলে পরাজিত করে। এই জয়ের ফলে তারা ১২টি জয় নিয়ে এই আসরের ইতিহাসে সবচেয়ে সফল ক্লাব হয়ে ওঠে। পরের মৌসুমে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড এই রেকর্ডে তাদের সাথে শামিল হয়।[29] আর্সেনাল ২০১৭ সালে চেলসিকে ২-১ গোলে হারিয়ে সর্বাধিক ১৩ বার এফএ কাপ জয়ের রেকর্ড করে এবং আরেকবার এই আসরের সর্বাধিক জয়ের রেকর্ড করে। এই জয়ের ফলে ইংরেজ ফুটবল ইতিহাসে ওয়েঙ্গার প্রথম ম্যানেজার হিসেবে সাতবার এফএ কাপ জয় করেন। একই মৌসুমে আর্সেনাল প্রিমিয়ার লিগের পঞ্চম স্থান অধিকার করে। ১৯৯৬ সালে ওয়েঙ্গারের আগমনের পর এই প্রথম ক্লাবটি চতুর্থ স্থানের নিচে অবস্থান করে তাদের মৌসুম শেষ করে।[30] পরের বছর আরেকটি ব্যর্থ লিগ মৌসুমের পর ওয়েঙ্গার ২০১৮ সালের ২০শে এপ্রিল ২২ বছর ম্যানেজার হিসেবে কাজ করার পর তার বিদায়ের ঘোষণা দেন।[31] ইংরেজ ও বিশ্ব ফুটবলের অনেক পণ্ডিত ও সাবেক খেলোয়াড়দের কাছ থেকে তার এই সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেন।[32] নিজেদের মাঠে তার সর্বশেষ ম্যাচ ছিল বার্নলির বিপরীতে, এই খেলায় আর্সেনাল বার্নলিকে ৫-০ গোলে পরাজিত করে। এই খেলায় মাঠে প্রবেশকালে সমর্থকগণ ওয়েঙ্গারকে দাঁড়িয়ে অভিবাদন জানান।[33] ওয়েঙ্গারের অধীনে আর্সেনালের সর্বশেষ ম্যাচে আর্সেনাল হাডার্সফিল্ডকে ১-০ গোলে পরাজিত করে।[34]
ওয়েঙ্গারের বিদায়ের পর ২০১৮ সালের ২৩শে মে বাস্ক-স্পানিয়ার্ড উনাই এমারিকে ক্লাবটির নতুন প্রধান কোচ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। তিনি ক্লাবটির যুক্তরাজ্যের বাইরের প্রথম প্রধান কোচ এবং দ্বিতীয় ম্যানেজার।[35][36] এমারির প্রথম মৌসুমে আর্সেনাল প্রিমিয়ার লিগে পঞ্চম স্থান লাভ করে এবং ইউরোপা লিগে রানার-আপ হয়।[37][38]
২০১৯ সালের ২৯শে নভেম্বর ইউরোপা লিগের গ্রুপ পর্বে এইন্ট্রাখট ফ্রাংকফুর্টের বিপক্ষে ২-১ ব্যবধানে হারার পর এমারিকে বরখাস্ত করা হয়। ক্লাবটি সকল প্রতিযোগিতামূলক খেলায় ৭টি ম্যান জয় শূন্য ছিল এবং ১৩টি ম্যাচের পরও প্রিমিয়ার লিগের চতুর্থ স্থান থেকে আট পয়েন্ট দূরে ছিল। সাবেক খেলোয়াড় ও সহকারী প্রধান কোচ ফ্রেডি লিউংবার্গকে সাময়িক প্রধান কোচ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।[39][40][41] ২০১৯ সালের ২০শে ডিসেম্বর আর্সেনাল তাদের সাবেক মধ্যমাঠের খেলোয়াড় ও ক্লাবটির অধিনায়ক মিকেল আর্তেতাকে সাড়ে তিন বছরের চুক্তিতে তাদের নতুন প্রধান কোচ হিসেবে নিয়োগ দেয়। তিনি ম্যানচেস্টার সিটির সহকারী ম্যানেজারের চাকরি ত্যাগ করে এই ক্লাবটিতে যোগ দেন।[42][43]
আর্সেনালের পোশাক ইতিহাসের বেশির ভাগ সময় ধরেই সাদা হাতা যুক্ত লাল শার্ট এবং সাদা হাফপ্যান্ট ছিল। যদিও শুরুটা ছিলো অন্যরকম। আর্সেনালের সাথে লাল রং যুক্ত হয়েছে নটিংহ্যাম ফরেস্ট ফুটবল ক্লাবের অণুদানের কারণে। আর্সেনালের প্রতিষ্ঠার কিছুদিন পর অর্থাৎ ১৮৮৬ সালে নটিংহ্যাম ফরেস্ট ফুটবল ক্লাবের দুই খেলোয়াড় (ফ্রেড ব্রেডসলি এবং মরিস ব্যাতেস) কর্মক্ষেত্র পরিবর্তনের কারণে ওউলিচে আসেন। ফুটবলকে ভালোবাসার কারণে এখানে এসে তারা যোগ দেন সদ্য প্রতিষ্ঠিত আর্সেনাল ফুটবল ক্লাবে। সেই সময় আর্সেনালের নিজস্ব কোন পোশাক না থাকায় তারা আগের জায়গায় এক সেট পোশাকের জন্য চিঠি লিখে পাঠান। আর্সেনালের জন্য তখন চলে আসে এক সেট পোশাক এবং একটি বল। পোশাকের রং ছিল ঐ ক্লাবের মতো লাল রঙের।[44]
১৯৩৩ সালে হারবার্ট চ্যপম্যান ভাবলেন ক্লাবের পোশাকটিতে পরিবর্তন আনা দরকার। সেই উদ্দেশ্যে তিনি লাল রংটা আরো গাঢ় করে পোশাকের সাথে সাদা হাতা যুক্ত করে দিলেন। এই সাদা হাতা যুক্ত করার পিছনে মোটামুটি দুটি কাহিনী প্রচলিত আছে। প্রথমটি হল একবার হার্বার্ট চ্যাপম্যান আর্সেনালের একজন সমর্থককে দেখেছিলেন সাদা ফুলহাতা শার্টের সাথে লাল রঙের সোয়েটার পরা অবস্থায়। তখনই তার মাথায় এসেছিলো মূল পোশাকের সাথে সাদা হাতা যুক্ত করে দেবার বিষয়টি। আবার কেউ বলে থাকেন, না, তিনি এই পোশাক পরা অবস্থায় একজনকে দেখেছিলেন তবে সে কোন সমর্থক নয় বরঞ্চ তার বিখ্যাত বন্ধু কার্টুনিস্ট টম ওয়েবস্টার।[45]
কাহিনী যাই হোক না কেন এই লাল সাদা পোশাক আর্সেনালের সমর্থক এখন। মাঝখানে দুইবার তারা সাদা হাতা বাদ দিয়েছিল। প্রথমবার ১৯৬৬-৬৭ মৌসুমে।[44] যদিও জনপ্রিয়তার অভাবে পরের বছরেই আগের পোশাকে ফিরে আসে তারা। দ্বিতীয়বার ২০০৫-০৬ যখন তারা ১৯১৩ সাল থেকে তাদের জায়গা হাইবারিতে তাদের সর্বশেষ মৌসুমটি খেলে। পুরনো পোশাকের মত পোশাক পরে তারা শেষ করে তাদের হাইবারি ইতিহাস। পরের বছর থেকেই তারা আগের পোশাকে ফিরে আসে। আর্সেনালের অ্যাওয়ে পোশাকের রং বেশির ভাগ সময় হলুদ। মাঝে মাঝে নীল।
আর্সেনাল তাদের পোশাকের জন্য প্রথম স্পন্সরশিপ পায় ১৯৮২ সালে। জেভিসির সাথে তাদের চুক্তি বহাল থাকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত। তারপর ১৯৯৯-০২ সাল পর্যন্ত সেগা ড্রিমক্যাস্ট এবং ২০০২-০৬ পর্যন্ত স্পন্সর ছিল এমিরেট্স এয়ারলাইন। এমিরেট্স এর সাথে আর্সেনালের চুক্তি ২০১৪ সাল পর্যন্ত ছিল। ১৯৯৪ সাল থেকে আর্সেনালের পোশাক প্রস্তুত করে আসছে নাইকি। তার আগে ১৮৮৬-৯৪ পর্যন্ত আডিডাস এবং ১৯৮৬ সালের আগ পর্যন্ত আমব্রো।
মেয়াদ | পোশাক প্রস্তুতকারী | শার্ট স্পন্সর (বুক) | শার্ট স্পন্সর (হাতা) |
---|---|---|---|
১৮৮৬–১৯৩০ | নেই | নেই | নেই |
১৯৩০–১৯৭০ | বুক্টা | ||
১৯৭১–১৯৮১ | আমব্রো | ||
১৯৮১–১৯৮৬ | জেভিসি | ||
১৯৮৬–১৯৯৪ | আডিডাস | ||
১৯৯৪–১৯৯৯ | নাইকি | ||
১৯৯৯–২০০২ | ড্রিমকাস্ট সেগা | ||
২০০২–২০০৬ | ও২ | ||
২০০৬–২০১৪ | ফ্লাই এমিরেট্স[46] | ||
২০১৪–২০১৮ | পুমা | ||
২০১৮–২০১৯ | ভিজিট রোয়ান্ডা[47] | ||
২০১৯–বর্তমান | আডিডাস[48] |
১৮৮৮ সালে রয়েল আর্সেনাল প্রথমবারের মতো তাদের কুলচিহ্ন উন্মোচন করে। কুলচিহ্নটি উপর থেকে দেখলে তিনটি উত্তরমুখী কামান চোখে পড়ে। কামানগুলোকে কখনো কখনো চিমনি বলে ভুল হতে পারে। কিন্তু সিংহের ভাস্কর্য কামানের নিশ্চয়তা প্রদান করে।[49] ১৯১৩ সালে হাইবারিতে চলে আসার পর ক্লাবটি এই কুলচিহ্ন বাদ দিয়ে দেয়। ১৯২২ সালে তারা প্রথমবারের মতো একটি কামান সমৃদ্ধ কুলচিহ্ন গ্রহণ করে। পূর্বমুখী এই কামানের নিচে লেখা ছিল ক্লাবটির ডাক নাম দ্য গানার্স। ১৯২৫ সালেই এটিকে পরিবর্তন করা হয়। তখন কামানের দিক পশ্চিমমুখী করে কামানের নলটিকে নিচের দিকে তাক করা হয়।[49] ১৯৪৯ সালে কামানের আগের ভঙ্গিমা অপরিবর্তিত রেখে কুলচিহ্নটির আধুনিকায়ন করা হয়। সাথে যুক্ত হয় উপরের দিকে কালো হরফে লেখা ক্লাবের নাম এবং কয়েকদিন আগে গৃহীত লাতিন মূলমন্ত্র Victoria Concordia Crescit (অর্থ: অনূভুতি থেকেই জয় আসে)[49] এবং এবারেই প্রথমবারের মতো কুলচিহ্নে বিভিন্ন রঙ ব্যবহার করা হয়।
কুলচিহ্নের অসংখ্য পরিবর্তনের কারণে ফুটবল ক্লাবটি তাদের কুলচিহ্নের স্বত্ব ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়। যদিও তারা পাশ্ববর্তী একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সাথে দীর্ঘ আইনী লড়াইয়ে পর কুলচিহ্নটিকে ট্রেডমার্ক হিসাবে ব্যবহারের অণুমতি পায়।[50] ২০০২ সালে ক্লাবটি সরল ভঙ্গিমায় আরও আধুনিক করে নতুন একটি কুলচিহ্ন গ্রহণ করে যার স্বত্ব ধরে রাখতে তারা সমর্থ হয়।[51] আগের মতো এবারেও কামান পূর্বদিকে তাক করা এবং ক্লাবের নাম কামানের উপর লেখা। নতুন কুলচিহ্নটি সমর্থকদের কাছে সমালোচিত হয়। তারা দাবি জানায় অতি আধুনিক এই কুলচিহ্নটিতে ক্লাবটির ইতিহাস সঠিকভাবে ফুটে উঠেনি।
দক্ষিণ-পূর্ব লন্ডনে ৩ বছর বাদে আর্সেনালের বাকি সময় কেটেছে ম্যানর গ্রাউন্ডে। ৩ বছর তারা ছিল ইনভিক্টা গ্রাউন্ডে। ম্যানর গ্রাউন্ড শুরুতে ছিল একটি সাধারণ খেলার মাঠ। পরবর্তীকালে ১৮৯৩-এর সেপ্টেম্বরে নিজের প্রথম লিগ ম্যাচ খেলার আগে কর্তৃপক্ষ মাঠে দর্শক-গ্যালারি স্থাপন করে। এই মাঠেই কাটে তাদের পরবর্তী ২০ বছর। তারপর ১৯১৩ সালে তারা দক্ষিণ লন্ডনে নতুন আস্তানা গড়ে।
এরপর ১৯১৩ সাল থেকে মে, ২০০৬ সাল পর্যন্ত ক্লাবটি ছিলআর্সেনাল স্টেডিয়ামে যা সাধারণত হাইবারি নামে পরিচিত। স্টেডিয়ামটির নকশা করেছেন তৎকালীন বিখ্যাত ফুটবল স্থপতি আর্কিবাল্ড লেইচ। নকশা ছিল সেই সময়কার ইংল্যান্ডের অন্য সকল মাঠের অণুরূপ। তিনদিকে খোলা গ্যালারি এবং একদিকে আশ্রয় শিবির। ১৯৩০ সালে মাঠে বিশাল আকারের পরিবর্তন আনা হয়। পূর্ব এবং পশ্চিম দিকে নতুন আর্ট ডেকো, নর্থ ব্যাংক এবং ক্লক এন্ড গ্যালারির ছাদ তৈরি করা হয়। তখন মাঠটি ৬০,০০০ দর্শক ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন ছিল। ১৯৯০ সাল পর্যন্ত মাঠটিতে সর্বোচ্চ ৫৭,০০০ দর্শক খেলা দেখতে পারত। পরে টেইলর রিপোর্ট এবং প্রিমিয়ার লিগের নিয়ম অনুসারে কর্তৃপক্ষ সম্পূর্ণ গ্যালারিতে আসন স্থাপন করতে বাধ্য হয়। ধারণ ক্ষমতা তখন নেমে আসে ৩৮,৪১৯ জনে।[52] ধারণ ক্ষমতা আরও কমে যায় যখন চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ম্যাচ আয়োজন করার জন্য অতিরিক্ত বিজ্ঞাপন মঞ্চ তৈরি করা হয়। ১৯৯৮-১৯৯৯, ১৯৯৯-২০০০ এই দুই মরশুমে আর্সেনাল চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ম্যাচগুলোর জন্য ৭০,০০০ ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন ওয়েম্বলি স্টেডিয়াম ব্যবহার করেছিল। হাইবারি স্টেডিয়ামের সম্প্রসারণ এর আশেপাশের জায়গার মালিকদের বিরোধিতার ফলে সম্ভব ছিলনা যা ছিল ক্লাবটির সর্বোচ্চ রাজস্ব আদায়ের পথে একটি বিরাট বাধা। এতসব সীমাবদ্ধতার কথা চিন্তা করে আর্সেনাল ১৯৯৯ সালে ৬০,০০০ আসন সংখ্যাবিশিষ্ট অ্যাশবুর্টন (পরবর্তীকালে এমিরেট্স স্টেডিয়াম) তৈরি করার পরিকল্পনা হাতে নেয়। আর্থিক কারণে শুরুতে নির্মাণ কাজ ধীর গতিতে এগোলেও ২০০৬ সালে স্টেডিয়ামটির নির্মাণ কাজ শেষ হয়। স্টেডিয়ামটির নামকরণ করা হয় তাদের স্পন্সর এমিরেট্সের নামে যাদের সাথে ক্লাবটি ইংরেজ ক্লাব ফুটবল ইতিহাসের রেকর্ড ১০০ মিলিয়ন পাউন্ডের চুক্তি করে।[53] এই চুক্তির ফলে ২০১২ সাল পর্যন্ত অফিসিয়ালি স্টেডিয়ামটির নাম থাকবে এমিরেট্স স্টেডিয়াম এবং ২০১৩-১৪ ফুটবল মৌসুম পর্যন্ত ক্লাবটির শার্টে লেখা থাকবে ফ্লাই এমিরেট্স।[53]
২০০০ সাল থেকে আর্সেনালের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হার্টফোর্ডশায়ারের সেনলিতে। এর আগে ব্যবহৃত হত ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের ছাত্র ইউনিয়নের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। তারও আগে ১৯৬১ সাল পর্যন্ত হাইবারি।[54] আন্ডারহিল নামের সেই স্টেডিয়ামটি এখনও আর্সেনাল ফুটবল ক্লাবের অতিরিক্ত খেলোয়াড়দের ম্যাচ খেলার জন্য ব্যবহার করা হয়। বর্তমানে স্টেডিয়ামটি বার্নেট ফুটবল ক্লাবের মালিকানাধীন।
আর্সেনালের রয়েছে অসংখ্য অণুরাগী ভক্ত। ২০০৬-০৭ সালে নিজেদের মাঠে গড় উপস্থিত দর্শক সংখ্যা প্রতি খেলায় প্রায় ৬০,০৪৫ জন, স্টেডিয়ামের ধারণক্ষমতার ৯৯.৮%। ওই সময়ে অন্যান্য সকল ইংরেজ ক্লাবের মধ্যে যা দ্বিতীয়[55] এবং সবসময়ের জন্য চতুর্থ সর্বোচ্চ।[56] আর্সেনালের সমর্থকরা নিজেদের গুনার্স নামে ডাকে যা এসেছে ক্লাবটির ডাকণাম দ্য গানার্স থেকে। আর্সেনালের বড় বিশেষত্ব হচ্ছে ক্লাবটির এলাকা। যার কাছাঁকাছি রয়েছে ধনী এলাকা ক্যানোনবারি, বার্ন্সবারি, মিশ্র এলাকা হলোওয়ে, হাইবারি, ইলিংটন, সাধারণ কর্মজীবি লোকের এলাকা ফিন্সবারি পার্ক। এর ফলে সকল শ্রেণীর মানুষের ভালোবাসা পেয়েছে দলটি। এছাড়াও ২০০২ সালের এক প্রতিবেদনের তথ্য অনুসারে, ক্লাবটির রয়েছে সর্বোচ্চ অ-শ্বেতাঙ্গ সমর্থক যা শতকরা প্রায় ৭.৭ ভাগ।[57]
অন্যান্য সকল ইংরেজ ফুটবল ক্লাবের মতো আর্সেনালের রয়েছে বিভিন্ন ঘরোয়া সমর্থক ক্লাব। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে "অফিসিয়াল আর্সেনাল সাপোর্টাস ক্লাব"। এছাড়াও রয়েছে "আর্সেনাল ইন্ডিপেন্ডেন্ট সাপোর্টার্স এসোসিয়েশন" যা স্বাধীনভাবে নিজেদের কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। এছাড়াও সমর্থকরা নিয়মিত দ্য গুনার্স, হাইবারি হাই, গানফ্ল্যাশ নামক ফ্যানজাইন প্রকাশ করে থাকে। ইংরেজ ফুটবল প্রথা অনুযায়ী আর্সেনাল সমর্থকরা ওয়ান-নিল টু আর্সেনাল গানটি বিখ্যাত গো ওয়েস্ট গানের সুরে এবং বোরিং, বোরিং আর্সেনাল" গেয়ে থাকে। বোরিং, বোরিং আর্সেনাল গানটি আসলে বিপক্ষ শিবিরের গান। কিন্তু যখন আর্সেনাল ভালো খেলতে থাকে তখন সমর্থকরা যান্ত্রিক সুরে এই গানটি গায়।[58]
বর্তমানকালে ফুটবল ক্লাবগুলোর জনপ্রিয়তা আর ভৌগোলিক সীমার মধ্যে আটকে নেই। স্যাটেলাইট চ্যানেলগুলোতে খেলা সরাসরি সম্প্রচারিত হবার সুবাদে পৃথিবী জুড়ে বেড়েছে ভক্তের সংখ্যা। ২০০৫ সালে গ্রানাডা ভেনচারে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় আর্সেনালের সারা বিশ্বে ভক্তের সংখ্যা প্রায় ২৭ মিলিয়ন যা তৃতীয় সর্বোচ্চ।[59] অবশ্য সে সময় গ্রানাডা ভেনচার ক্লাবের ৯.৯% শেয়ারের অংশীদার ছিল।
আর্সেনালের দীর্ঘ এবং গভীরতম প্রতিপক্ষ প্রতিবেশি দল টটেনহাম হটস্পার। ক্লাব দুটির মধ্যকার খেলা তাই অভিহিত হয় দক্ষিণ লন্ডন ডার্বি নামে। এছাড়াও চেলসি এবং ওয়েস্ট হ্যাম ইউনাইটেডের মধ্যকার খেলাও ডার্বি ম্যাচ। কিন্তু আর্সেনালের ডার্বি ম্যাচের প্রচণ্ড উত্তেজনার সাথে আর কিছুরই তুলনা হয় না। ১৯৮০ সাল থেকে আর্সেনালের আরেক প্রতিপক্ষ হিসেবে উঠে আসে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। দুই দলের লিগ শিরোপা পাবার কঠিন প্রতিযোগিতাই এর কারণ।[60]
মালিকানার দিক থেকে অন্যান্য ক্লাব থেকে আর্সেনাল অনেকটা আলাদা। কোন ব্যক্তি মালিকানায় না থেকে এটি আর্সেনাল হোল্ডিংস পাবলিক লিমিটেড নামে এর কার্যক্রম পরিচালিত করে। এ পর্যন্ত তাদের ৬২,২১৭ টি শেয়ার বাজারে বিতরণ করা হয়েছে। সরাসরি এফটিওএসই অথবা অল্টারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট মার্কেটের মতো পাবলিক শেয়ার বাজারের পরিবর্তে আর্সেনাল তাদের শেয়ার ছাড়ার জন্য ব্যবহার করে প্লাস (PLUS) নামক বিশেষ শেয়ার বাজার। সর্বশেষ ডিসেম্বর ৬, ২০০৭ তারিখের হিসাব আনুসারে আর্সেনালের বর্তমান বাজার মুনাফা ৫৩২ মিলিয়ন পাউন্ড[61] এবং ২০০৭ অর্থ বছরে ক্লাবটি (খেলোয়াড় বদলি ছাড়া) ৫১.২ মিলিয়ন পাউন্ড মুনাফা লাভ করে। ২০০৭ এর মার্চে ব্যবসা বিষয়ক পত্রিকা ফোর্বস আর্সেনালকে পৃথিবীর তৃতীয় মূল্যবান ক্লাব হিসাবে ঘোষণা করে। প্রথম এবং দ্বিতীয় স্থান দখল করে যথাক্রমে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ফুটবল ক্লাব এবং রিয়াল মাদ্রিদ ফুটবল ক্লাব।[62] একই বছর বিখ্যাত বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ডেলোইট রাজস্বের উপর ভিত্তি করে ফুটবল ক্লাবগুলোর নতুন আরেকটি ক্রমস্থান প্রকাশ করে। ২০০৫ মৌসুমে ১৩৩মিলিয়ন পাউন্ড রাজস্বের জন্য আর্সেনাল এই ক্রমস্থানে নবম স্থান অধিকার করে।[63]
আর্সেনালের মোট শেয়ারের ৪৫% পরিচালনা পরিষদের হাতে। ক্লাবটির সবচেয়ে বড় শেয়ার হোল্ডার লন্ডনের হীরা ব্যবসায়ী ড্যানি ফিজম্যান এবং প্রাক্তন সভাপতি স্যার ব্রেসওয়েল স্মিথের দৌহিত্রের স্ত্রী নিনা ব্রেসওয়েল স্মিথ যথাক্রমে ২৪.১% এবং ১৫.৯%।[64] এছাড়াও ফেলো পরিচালক রিচার্ড কার ৪.৪% এবং ক্লাবটির বর্তমান সভাপতি ০.৮% শেয়ারের মালিক।[64]
চলতি বছরগুলোতে চেলসি ফুটবল ক্লাব, লিভারপুল ফুটবল ক্লাব, এবং ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ফুটবল ক্লাবগুলোর মত আর্সেনালও বিদেশী বিনিয়োগকারীদের নজরে আসে। বর্তমানে আমেরিকার ক্রীড়া শিল্পপতি স্টান ক্রোয়েনকে ক্লাবটির ১২.২% শেয়ারের মালিক। পরিচালনা পরিষদের সদস্য ব্যতীত আর্সেনালের সবচেয়ে বড় শেয়ার হোল্ডার রেড অ্যান্ড হোয়াইট সিকিউরিটি যার মালিক রুশ বিলিয়নিয়ার আলিসার উসমানভ এবং লন্ডনের ফরহাদ মসিরি। প্রতিষ্ঠানটি ২০০৭ সালে প্রাক্তন আর্সেনাল সভাপতি ডেভিড ডেইনের কাছ থেকে ১৪.৬% শেয়ার কিনে নেয়। ডেভিড ডেইন বর্তমানে রেড হোয়াইট সিকিউরিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।[65] বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি আর্সেনালের প্রায় ২৩% শেয়ারের মালিক।[66]
দেশের অন্যতম সফল ফুটবল ক্লাব হওয়ার কারণে ব্রিটিশ সংস্কৃতিতে যখনই ফুটবল প্রসঙ্গ উত্থাপিত হয়েছে তখনই আর্সেনালের নাম এসেছে। প্রথম সারির বেশ কিছু মিডিয়াভিত্তিক অণুষ্ঠানে আর্সেনালের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। ১৯২৭ সালের ২২ জানুয়ারি শেফিল্ড ইউনাইটেড ফুটবল ক্লাবের বিপক্ষে তাদের ম্যাচটি বেতারে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। এটিই ছিল আর্সেনালের কোন খেলার প্রথম সরাসরি সম্প্রচার।[67] এর এক দশক পরে ১৯৩৭ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর আর্সেনালের মূল দল এবং অতিরিক্ত খেলোয়াড়দের নিয়ে গঠিত দলের মধ্যে একটি প্রদর্শনী ম্যাচ হয়। এটিই ছিল ব্রিটেনের ইতিহাসে প্রথম ফুটবল ম্যাচ যা টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।[68] এছাড়া বিবিসি'র "ম্যাচ অফ দ্য ডে" নামক অণুষ্ঠানে আর্সেনালকে বিশেষভাবে দেখানো হয়েছে। এতে ১৯৬৪ সালের ২২ আগস্ট অ্যানফিল্ডে লিভারপুলের বিপক্ষে আর্সেনালের খেলাটির হাইলাইট্স দেখানো হয়েছে।[69]
উপরন্তু ইতিহাসের অন্যতম প্রাচীন ফুটবল বিষয়ক চলচ্চিত্র দ্য আর্সেনাল স্টেডিয়াম মিস্টারি (১৯৩৯) নির্মিত হয়েছিল আর্সেনালকে কেন্দ্র করেই।[70] চলচ্চিত্রটিতে আর্সেনালের সাথে একটি শৌখিন ফুটবল দলের ম্যাচ দেখানো হয়েছে। খেলার সময় শৌখিন দলের একটি খেলোয়াড় বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হয়। এতে আর্সেনালের অনেক খেলোয়াড়ই সরাসরি উপস্থিত ছিল, কিন্তু একটি বক্তৃতা দেয়ার মাধ্যমে চলচ্চিত্রের কথোপকথনে অংশ নিয়েছিলেন একমাত্র ম্যানেজার "জর্জ অ্যালিসন"।
সাম্প্রতিককালে আর্সেনালের প্রাক্তন খেলোয়াড় নিক হর্নবাই "ফিভার পিচ" নামক একটি বইটি লিখেছেন। এতে তার আত্মজীবনী এবং আর্সেনালের সাথে তার সম্পর্কের বিষয়গুলো উঠে এসেছে। ১৯৯২ সালে প্রকাশিত এই বইটি ব্রিটিশ সমাজে ফুটবলের পুনর্জাগরণ এবং পুনর্বাসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। ১৯৯০-এর দশক জুড়ে এই পুনর্জাগরণ পরিলক্ষিত হয়। এই বইয়ের উপর ভিত্তি করে পরবর্তীকালে চলচ্চিত্র নির্মিত হয় যার প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন কলিন ফার্থ। ক্লাবটির ১৯৮৮-১৯৮৯ মৌসুমের বিজয়ের কাহিনী নিয়েই এই চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছিল। এই বইটি দ্বারা উৎসাহিত হয়েই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে "ফিভার পিচ" নামে একটি চলচ্চিত্র নির্মিত হয়। এর বিষয় অবশ্য ছিল বোস্টন রেড সক্স-এর "মেজর লিগ বেসবলের" এক ফ্যানকে নিয়ে।
১৯৭০ এবং ১৯৮০-এর দশকে বেশ কিছু কমেডিধর্মী চলচ্চিত্র ও অণুষ্ঠানে আর্সেনালকে প্রতিরক্ষামূলক এবং বিরক্তিকর প্রতিপক্ষ হিসেবে দেখানো হয়েছে। দলের এই বিষয়গুলো নিয়ে বেশ কিছু কমেডি অভিনেতা ব্যাঙ্গ করেছেন যাদের মধ্যে আছেন এরিক মোরক্যাম্ব। এই একই বিষয় ১৯৯৭ সালের চলচ্চিত্র "দ্য ফুল মন্টি"-তে উঠে এসেছে। চলচ্চিত্রটির একটি দৃশ্যে প্রধান অভিনেতারা সারিবদ্ধ হয়ে যেতে থাকে এবং তাদের হাত তুলে দেখায়। আর্সেনালের প্রতিরক্ষা কৌশলের অফসাইড ফাঁদকে ব্যাঙ্গাত্মকভাবে এখানে নকল করা হয়েছে। চলচ্চিত্রে অবশ্য অন্য একটি ফুটবল নয়, অন্য একটি দৃশ্যের জন্য এমনটি করা হয়েছে।[71] ক্লাবের প্রতিরক্ষাকে ভিত্তি করে নির্মিত আরেকটি চলচ্চিত্রের নাম "প্লাংকেট অ্যান্ড ম্যাকলিন"। এতে ডিক্সন এবং উইন্টারবার্ন নামে দুটি চরিত্র রয়েছে যাদের নাম রাখা হয়েছে বহুকাল আর্সেনালের প্রতিরক্ষা ব্যুহ নির্মাণকারী খেলোয়াড় লি ডিক্সন এবং নাইজেল উইন্টারবার্নের নাম অনুসারে। ডিক্সন থাকতো প্রতিরক্ষা ব্যুহের ডানদিকে আর উইন্টারবার্ন বামদিকে।[71]
"মন্টি পাইথন্স ফ্লাইং সার্কাস" নামে প্রকাশিত স্কেচ চিত্র এবং ডগলাস অ্যাডাম্স রচিত "দ্য হিচহাইকার্স গাইড টু দ্য গ্যালাক্সি"-তে আর্সেনালের নাম বারবার ব্যবহৃত হয়েছে। ডগলাস অ্যাডাম্সের কাহিনীতে একজন বারম্যান উল্লেখ করে যে, পৃথিবীর আসন্ন সমাপ্তিতেই আর্সেনালের "সৌভাগ্যমূলক পলায়ন" নিশ্চিত হবে। এছাড়া ২০০৪ সালে নির্মিত ওসিয়ান্স ইলেভেনের প্রধান চরিত্রগুলো এক পর্যায়ে ইউরোপে বড় ধরনের একটি চুরি শেষে পালানোর সুবিধার জন্য ছদ্মবেশ হিসেবে আর্সেনালের ট্র্যাকসুট পরিধান করে।
জনপ্রিয় সঙ্গীতেও আর্সেনালের উল্লেখ রয়েছে। জো স্ট্রামার "টনি অ্যাডাম্স" নামে একটি গান লিখেন যা আর্সেনালের তৎকালীন অধিনায়ককে উৎসর্গ করেই রচিত হয়েছিল। এই গানটি ১৯৯৯ সালে প্রকাশিত তার "রক আর্ট অ্যান্ড দ্য এক্স-রে স্টাইল" নামক অ্যলবামে স্থান পায়। নিজে চেলসির ফ্যান হওয়া সত্ত্বেও স্ট্রামারকে গিগের সময় আর্সেনালের স্কার্ফ পরতে দেখা গেছে। দ্য পোগ্স ব্যান্ড দলের দ্বিতীয় অ্যালবাম "রাম, সোডোমি অ্যান্ড দ্য ল্যাশ"-এ "বিলি বোন্স" নামে একটি গান রয়েছে যাতে আর্সেনাল এবং তাদের চিরশত্রু টটনাম হটস্পারের নাম রয়েছে।
আর্সেনাল এলএফসি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৮৭ সালে। ২০০২ সালে ক্লাবটি সেমি-পেশাদার দলে পরিণত হয়। ক্লাবের ম্যানেজার ভিক আকার্স যিনি একই সাথে মূল ক্লাবের পোশাক ম্যানেজার। ইংল্যান্ড মহিলা ফুটবল ইতিহাসের সবচেয়ে সফল ক্লাব আর্সেনাল এলএফসি। ক্লাবটি বর্তমানে এফএ ওমেন্স প্রিমিয়ার লিগ, উয়েফা ওমেন্স কাপ শিরোপাধারী। অফিসিয়ালি মূল ক্লাবের থেকে মহিলা ক্লাব আলাদা হলেও মূল ক্লাবের বর্তমান পরিচালক একই সাথে মহিলা ক্লাবটিও পরিচালনার দায়িত্ব পালন করছেন। আর্সেনাল এলএফসি বছরে একদিন এমিরেট্স স্টেডিয়ামে খেলার সুযোগ পায়। বছরের বাকি সময়ে তারা নিজেদের খেলার জন্য বোরহ্যাম উড ফুটবল ক্লাবের মাঠ ব্যবহার করে থাকে।
টীকা: পতাকা জাতীয় দল নির্দেশ করে যা ফিফার যোগ্যতার নিয়মের অধীনে নির্ধারিত হয়েছে। খেলোয়াড়দের একাধিক জাতীয়তা থাকতে পারে যা ফিফা ভুক্ত নয়।
|
|
টীকা: পতাকা জাতীয় দল নির্দেশ করে যা ফিফার যোগ্যতার নিয়মের অধীনে নির্ধারিত হয়েছে। খেলোয়াড়দের একাধিক জাতীয়তা থাকতে পারে যা ফিফা ভুক্ত নয়।
|
|
টীকা: পতাকা জাতীয় দল নির্দেশ করে যা ফিফার যোগ্যতার নিয়মের অধীনে নির্ধারিত হয়েছে। খেলোয়াড়দের একাধিক জাতীয়তা থাকতে পারে যা ফিফা ভুক্ত নয়।
টীকা: পতাকা জাতীয় দল নির্দেশ করে যা ফিফার যোগ্যতার নিয়মের অধীনে নির্ধারিত হয়েছে। খেলোয়াড়দের একাধিক জাতীয়তা থাকতে পারে যা ফিফা ভুক্ত নয়।
|
টীকা
নাম | নিযুক্তির তারিখ | অপসারণের তারিখ | ম্যাচ | জয় | ড্র | হার | স্বগো | স্বগো | জয় % | অর্জন | টীকা |
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
টমাস মিচেল | ৩০ মার্চ ১৮৯৭ | ১০ মার্চ ১৮৯৮ | | ৪৫ | ২৩ | ৮ | ১৪ | ১০৬ | ৭৯ | ৫১.১১ | ||
অজানা | ১১ মার্চ ১৮৯৮ | এপ্রিল ১৮৯৮ | | ৯ | ৬ | ২ | ১ | ২১ | ৮ | ৬৬.৬৭ | ||
উইলিয়াম এলকোট | ১১ এপ্রিল ১৮৯৮ | ১৬ ফেব্রুয়ারি ১৮৯৯ | | ৪৪ | ২১ | ৬ | ১৭ | ৮৬ | ৬৭ | ৪৭.৭৩ | ||
আর্থার কেনেডি | ২১ ফেব্রুয়ারি ১৮৯৯ | ২৯ এপ্রিল ১৮৯৯ | | ১৫ | ৮ | ৩ | ৪ | ৩১ | ১৭ | ৫৩.৩৩ | ||
হ্যারি ব্র্যাডশ | ৩০ জুন ১৮৯৯ | ৩০ এপ্রিল ১৯০৪ | | ২৩৫ | ১১৮ | ৪৪ | ৭৩ | ৪০৩ | ২৩৭ | ৫০.২১ | ||
ফিল কেলসো | ১ মে ১৯০৪ | ৯ ফেব্রুয়ারি ১৯০৮ | | ১৫২ | ৬৩ | ৩১ | ৫৮ | ২২৫ | ২২৯ | ৪১.৪৫ | ||
জর্জ মোরেল | ১০ ফেব্রুয়ারি ১৯০৮ | ১৩ এপ্রিল ১৯১৫ | | ৩০৯ | ১১৩ | ৭৪ | ১২২ | ৩৯২ | ৪২৮ | ৩৬.৫৭ | ||
জেমস ম্যাকইওয়েন | ১৯ এপ্রিল ১৯১৫ | ২৪ মে ১৯১৯ | | ২ | ১ | ০ | ১ | ৭ | ৩ | ৫০.০০ | [lower-alpha 2] | |
লেসলি নাইটন | ২৫ মে ১৯১৯ | ১৬ মে ১৯২৫ | | ২৮৬ | ১০৫ | ৬৩ | ১১৮ | ৩৬৭ | ৪০১ | ৩৬.৭১ | ||
হার্বার্ট চ্যাপম্যান | ১১ জুন ১৯২৫ | ৬ জানুয়ারি ১৯৩৪ | | ৪১১ | ২০৪ | ৯৭ | ১১০ | ৮৭৯ | ৬১৬ | ৪৯.৬৪ | ২টি প্রথম বিভাগ ১টি এফএ কাপ ৩টি কমিউনিটি শিল্ড | |
জো শ | ৬ জানুয়ারি ১৯৩৪ | ২৮ মে ১৯৩৪ | | ২৩ | ১৪ | ৩ | ৬ | ৪৪ | ২৯ | ৬০.৮৭ | ১টি প্রথম বিভাগ | [lower-alpha 3] |
জর্জ অ্যালিসন | ২৮ মে ১৯৩৪ | ৩১ মে ১৯৪৭ | | ২৭৯ | ১২৯ | ৭৪ | ৭৬ | ৫৩৪ | ৩২৭ | ৪৬.২৪ | ২টি প্রথম বিভাগ ১টি এফএ কাপ ২টি কমিউনিটি শিল্ড | |
টম হুইটেকার | ২ জুন ১৯৪৭ | ২৪ অক্টোবর ১৯৫৬ | | ৪৩০ | ২০৩ | ১০৬ | ১২১ | ৮০২ | ৫৬৮ | ৪৭.২১ | ২টি প্রথম বিভাগ ১টি এফএ কাপ ২টি কমিউনিটি শিল্ড | [lower-alpha 4] |
জ্যাক ক্রেস্টন | ২৪ অক্টোবর ১৯৫৬ | ১৯ মে ১৯৫৮ | | ৮১ | ৩৪ | ১৭ | ৩০ | ১৪৮ | ১৫১ | ৪১.৯৮ | ||
জর্জ সুইন্ডিন | ২১ জুন ১৯৫৮ | ১ মে ১৯৬২ | | ১৮৬ | ৭৬ | ৪৩ | ৬৭ | ৩৩৬ | ৩৩০ | ৪০.৮৬ | ||
বিলি রাইট | ১ মে ১৯৬২ | ১৩ জুন ১৯৬৬ | | ১৮২ | ৭০ | ৪৩ | ৬৯ | ৩৩৬ | ৩৩০ | ৩৮.৪৬ | ||
বার্টি মি | ২০ জুন ১৯৬৬ | ৪ মে ১৯৭৬ | | ৫৩৯ | ২৪১ | ১৪৮ | ১৫০ | ৭৩৯ | ৫৪২ | ৪৪.৭১ | ১টি প্রথম বিভাগ ১টি এফএ কাপ ১টি আন্তঃ-শহর মেলা কাপ | |
টেরি নিল | ৯ জুলাই ১৯৭৬ | ১৬ ডিসেম্বর ১৯৮৩ | | ৪১৬ | ১৮৭ | ১১৭ | ১১২ | ৬০১ | ৪৪৬ | ৪৪.৯৫ | ১টি এফএ কাপ | |
ডন হো | ১৬ ডিসেম্বর ১৯৮৩ | ২২ মার্চ ১৯৮৬ | | ১১৭ | ৫৪ | ৩২ | ৩১ | ১৮৭ | ১৪২ | ৪৬.১৫ | ||
স্টিভ বার্টেনশ | ২৩ মার্চ ১৯৮৬ | ১৪ মে ১৯৮৬ | | ১১ | ৩ | ২ | ৬ | ৭ | ১৫ | ২৭.২৭ | ||
জর্জ গ্রাহাম | ১৪ মে ১৯৮৬ | ২১ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৫ | | ৪৬০ | ২২৫ | ১৩৩ | ১০২ | ৭১১ | ৪০৩ | ৪৮.৯১ | ২টি প্রথম বিভাগ ১টি এফএ কাপ ২টি ফুটবল লিগ কাপ ১টি কমিউনিটি শিল্ড ১টি উয়েফা কাপ উইনার্স কাপ | |
স্টুয়ার্ট হিউস্টন | ২১ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৫ | ১৫ জুন ১৯৯৫ | | ১৯ | ৭ | ৩ | ৯ | ২৯ | ২৫ | ৩৬.৮৪ | ||
ব্রুস রিওচ | ১৫ জুন ১৯৯৫ | ১২ আগস্ট ১৯৯৬ | | ৪৭ | ২২ | ১৫ | ১০ | ৬৭ | ৩৭ | ৪৬.৮১ | ||
স্টুয়ার্ট হিউস্টন | ১২ আগস্ট ১৯৯৬ | ১৩ সেপ্টেম্বর ১৯৯৬ | | ৬ | ২ | ২ | ২ | ১১ | ১০ | ৩৩.৩৩ | ||
প্যাট রাইস | ১৩ সেপ্টেম্বর ১৯৯৬ | ৩০ সেপ্টেম্বর ১৯৯৬ | | ৪ | ৩ | ০ | ১ | ১০ | ৪ | ৭৫.০০ | ||
আর্সেন ওয়েঙ্গার | ১ অক্টোবর ১৯৯৬ | ১৩ মে ২০১৮ | | ১,২৩৫ | ৭০৭ | ২৮০ | ২৪৮ | ২,১৫৬ | ১,১৪৭ | ৫৭.২৫ | ৩টি প্রিমিয়ার লিগ ৭টি এফএ কাপ ২টি ফুটবল লিগ কাপ ৭টি চ্যারিটি / কমিউনিটি শিল্ড | [lower-alpha 5][lower-alpha 6] |
উনাই এমেরি | ২৩ মে ২০১৮ | ২৯ নভেম্বর ২০১৯ | | ৭৮ | ৪৩ | ১৬ | ১৯ | ১৫২ | ১০০ | ৫৫.১৩ | ||
ফ্রেড্রিক লুক্সুমবার্গ | ২৯ নভেম্বর ২০১৯ | ২১ ডিসেম্বর ২০১৯ | | ৬ | ১ | ৩ | ২ | ৮ | ১০ | ১৬.৬৭ | ||
মিকেল আর্তেতা | ২২ ডিসেম্বর ২০১৯ | বর্তমান | | ১৫ | ৮ | ৫ | ২ | ২৩ | ১২ | ৫৩.৩৩ |
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.