২০১৫-এর নেপাল ভূমিকম্প
২৫ এপ্রিল ২০১৫ সালে সংঘটিত এক বিধ্বংসী ভূমিকম্প উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
২৫ এপ্রিল ২০১৫ সালে সংঘটিত এক বিধ্বংসী ভূমিকম্প উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
২০১৫-এর নেপাল ভূমিকম্প (এছাড়াও হিমালয়ান ভূমিকম্প হিসাবে উল্লেখিত)[8][9] ৭.৮ বা ৮.১ মাত্রার একটি ভূমিকম্প যা শনিবার ২৫শে এপ্রিল, ২০১৫ সালে ১১:৫৬ এনএসটি (৬:১২:২৬ ইউটিসি) সময়ে নেপালের লামজংয়ের পূর্ব-দক্ষিণ-পূর্ব কেন্দ্রস্থল থেকে আনুমানিক ২৯ কিমি (১৮ মা) ব্যাপী এলাকায় ভূপৃষ্ঠের প্রায় ১৫ কিমি (৯.৩ মা) গভীরে সংগঠিত হয়।[1]
ইউটিসি সময় | ?? |
---|---|
তারিখ * | ২৫ এপ্রিল ২০১৫
[[Category:EQ articles using 'date' or 'time'(deprecated)]] |
মূল সময় * | ১১:৫৬:২৬ এনএসটি[1]
[[Category:EQ articles using 'origintime'(deprecated)]] |
মাত্রা | ৭.৮ Mw,[1] |
গভীরতা | ১৫.০ কিলোমিটার (৯ মা)[1] |
ভূকম্পন বিন্দু | ২৮.১৪৭° উত্তর ৮৪.৬৪৯° পূর্ব[1] |
ধরন | ধাক্কা[1] |
ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা | |
মোট ক্ষয়ক্ষতি | $৩–৩.৫ বিলিয়ন সরাসরি লোকসান[2] |
সর্বোচ্চ তীব্রতা | IX MM (সহিংস)[1] |
আঘাতপরবর্তী | ৬.৭ Mw, এপ্রিল ২৫, ০৬:৪৫ (ইউটিসি)[3] ৬.৭ Mw, এপ্রিল ২৬, ০৭:০৯ (ইউটিসি)[4] |
হতাহত | ৭,৭৪৯ জন মৃত (সরকারী ভাবে)[5] ১৭,২০০ জন আহত (সরকারী ভাবে)[6] |
* Deprecated | See documentation. |
১৯৩৪-এর নেপাল–বিহার ভূমিকম্পের পর এটি নেপালে আঘাত হানা সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প।[10][11][12] ভূমিকম্পে এখনও পর্যন্ত নেপাল সহ ভারত, চীন ও বাংলাদেশে সর্বমোট ৬৫০০[13] জনের অধিক মানুষ নিহত হয়েছে জানা যায়।[14][15][16] এই ভূমিকম্পে ফলে মাউন্ট এভারেস্টে মৃত্যুসংখ্যা ২০১৪ সালের তুষারধ্বসে মৃত্যুসংখ্যাকে ছাড়িয়ে গেছে। কাঠমাণ্ডু শহরে অবস্থিত শতাব্দীপ্রাচীন ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানসমূহ ভূমিকম্পের ফলে ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
নেপাল জুড়ে ক্রমাগত ছোট্ট কম্পন ঘটে এবং স্থানীয় ০৭:০৯:০৮ (ইউটিসি) সময়ে আরেকটি ৬.৭ মাত্রার ভূমিকম্প ২৬শে এপ্রিল আঘাত হানে।[4]
২৫শে এপ্রিল, ২০১৫ সালে ১১:৫৭ এনএসটি (৬:১২:২৬ ইউটিসি) সময়ে নেপালের লামজংয়ের পূর্ব-দক্ষিণ-পূর্ব কেন্দ্রস্থল থেকে আনুমানিক ২৯ কিমি (১৮ মা) ব্যাপী এলাকায় ভূপৃষ্ঠের প্রায় ১৫ কিমি (৯.৩ মা) গভীরে সংগঠিত হয় এবং প্রায় ২০ সেকেন্ড ধরে চলে।[17] ইউনাইটেড স্টেটস জিওলজিক্যাল সার্ভে প্রথমে ভূমিকম্পের তীব্রতা ৭.৫ মাত্রার মাপলেও শীঘ্রই তা পরিবর্তন করে ৭.৯ মাত্রা ও পরে ৭.৮ মাত্রার ভূমিকম্প বলে উল্লেখ করে, যদিও চায়না আর্থকোয়েক নেটওয়ার্কস সেন্টার ভূমিকম্পের তীব্রতা ৮.১ মাত্রা পরিমাপ করে। ভারতীয় ভূতত্ত্ব বিভাগের মতে, ৬:১১ ইউটিসি সময়ে কাঠমাণ্ডু থেকে ৮০ কিমি (৫০ মা) উত্তর-পশ্চিমে ৭.৯ মাত্রার একটি তীব্র ভূমিকম্প ও পরে ৬:৪৫ ইউটিসি সময়ে ভরতপুর থেকে ৫৩ কিমি (৩৩ মা) দূরে ও কাঠমাণ্ডু থেকে ৮১ কিমি (৫০ মা) উত্তর-পশ্চিমে ভূপৃষ্ঠ থেকে ১০ কিমি (৬.২ মা) নিচে ৬.৬ মাত্রার অপর একটি ভূমিকম্প ঘটে। প্রথম ভূমিকম্পের পরে ৪.৫ মাত্রা ও তার অধিক মাত্রার ১০০ এর বেশি কম্পন ঘটে, যার মধ্যে ৬.৬ মাত্রার একটি কম্পন প্রথম ভূমিকম্পের কয়েক মিনিট পরে ঘটে।[18]
দেশ | মৃত্যু | তথ্যসূত্র |
---|---|---|
ভারত | ৪০ | [24] |
ফ্রান্স | ১৩ | [25] |
চীন | ৪ | [26] |
জার্মানি | ৪ | [27][28] |
ইতালি | ৪ | [29] |
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র | ৪ | [30] |
কানাডা | ২ | [31] |
অস্ট্রেলিয়া ভারত |
১ | [32][33] |
ইস্তোনিয়া | ১ | [34] |
হংকং যুক্তরাজ্য |
১ | [35][36] |
ইসরায়েল | ১ | [37] |
জাপান | ১ | [38] |
মালয়েশিয়া | ১ | [39] |
নিউজিল্যান্ড | ১ | [40] |
স্পেন | ১ | [41] |
সর্বমোট | ৭৯ |
২৬শে এপ্রিল সন্ধ্যা ৬টার সময় পর্য্যন্ত কাঠমাণ্ডু শহরে ৭৭৭ জন, ভক্তপুর শহরে ২২৪ জন এবং ললিতপুর শহরে ১৫১ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়। নেপালের মধ্যাঞ্চল বিকাস ক্ষেত্রে ১০১৯ জন, পশ্চিমাঞ্চল বিকাস ক্ষেত্রে ২০৯ জন, পূর্বাঞ্চল বিকাস ক্ষেত্রে ৫০ জন এবং মধ্য-পশ্চিমাঞ্চল বিকাস ক্ষেত্রে ২ জন ব্যক্তির মৃত্যুর খবর জানা যায়।[42]
২৭শে এপ্রিল বিকেল ৪:১৪ মিনিটে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং জানান যে, ভূমিকম্পের ফলে ভারতের বিহারে ৫৬ জন, উত্তরপ্রদেশে ১২ জন, পশ্চিমবঙ্গে ৩ জন এবং রাজস্থানে ১ জনের মৃত্যু ঘটেছে।
ভূমিকম্পের ফলে মাউন্ট এভারেস্টে যে তুষারধ্বস ঘটে, তাতে এভারেস্ট বেস ক্যাম্পে বেশ কয়েকজন পর্বতারোহীর মৃত্যু ঘটে।[43][44][45][46] ভারতীয় সেনাবাহিনীর একটি পর্বতারোহী দল ১৮টি মৃতদেহ এবং ৬১ জন আটকে পড়া পর্বতারোহী উদ্ধার করেছেন।[47][48][49] গুগলের প্রকৌশলী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ড্যানিয়েল পল ফ্রেডিনবার্গ/ড্যান ফ্রেডিনবার্গ ও তার তিনজন সহকর্মী গুগল আর্থ প্রকল্পের জন্য সমীক্ষা করার সময় তুষারধ্বসে এখানে মৃত্যুবরণ করেন।[50][51][52] ৭০০ থেকে ১০০০ জনেরও বেশি পর্বতারোহী ভূমিকম্পের সময় মাউন্ট এভারেস্ট ও এভারেস্ট বেস ক্যাম্পে ছিলেন বলে জানা যায়, যাদের মধ্য কমপক্ষে ৬১ জন গুরুতর ভাবে আহত হয়েছেন। পর্বতগাত্রের উচ্চ ক্যাম্পে অবস্থিত পর্বতারোহীদের সংখ্যা এখনো অজানা।[45][46][53][54][55][56] ২৬শে এপ্রিল ভারতীয় সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টার উদ্ধারকারী দল মাউন্ট এভারেস্ট পৌঁছে[57] গুরুতর আহত বাইশজনকে ফেরিচে নিয়ে যায় কিন্তু খারাপ আবহাওয়ার জন্য উদ্ধারকার্য্য বন্ধ রাখা হয়।[58] সেই দিন অপর একটি হেলিকপ্টার এভারেস্ট ক্যাম্প-১ থেকে বেশ কয়েকজন আটকে থাকা পর্বতারোহীকে উদ্ধার করে।[59]
নেপালী ঐতিহাসিক পুরুষোত্তম লোচন শ্রেষ্ঠর মতে, কাঠমাণ্ডু উপত্যকা অঞ্চলে অবস্থিত ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে স্বীকৃত অধিকাংশ সৌধ ধ্বংসপাপ্ত হয়েছে এবং তা আর পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়।[60] ভূমিকম্পের ফলে কাঠমাণ্ডু দরবার ক্ষেত্রের অট্টালিকা ও সৌধগুলি ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়।[17] ১৮৩২ খ্রিষ্টাব্দে নির্মিত ধরহরা মিনার ধ্বংসপ্রাপ্ত হলে সেই স্থানেই প্রায় দুইশত জনের মৃত্যু ঘটে।[61][62][63][64] জানকী মন্দিরের উত্তরভাগ, পাটন দরবার ক্ষেত্র, মনকামনা মন্দির ইত্যাদি স্থাপত্যগুলি বহুলাংশে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।[65] ভূমিকম্পে কাষ্ঠমণ্ডপ, পঞ্চতলে মন্দির, দশাবতার মন্দির, কৃষ্ণ মন্দির, শিব পার্বতী মন্দিরের দুইটি দেওয়াল ইত্যাদি মন্দির স্থাপত্যগুলি ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। কুমারী মন্দির, তলেজু ভবানী, জয় বাগেশ্বরী মন্দির, পশুপতিনাথ মন্দির, স্বয়ম্ভূনাথ ও বৌধনাথ স্তূপ, রাণী পোখরির রত্ন মন্দির আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।[60] পাটন অঞ্চলে চার নারায়ণ মন্দির, যোগ নরেন্দ্র মল্লের মূর্তি, তলেজু মন্দির, হরিশঙ্কর ও উমা মহেশ্বর মন্দির, মছিন্দ্রনাথ মান্দির ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। ত্রিপুরেশ্বর অঞ্চলে কাল্মৈচন ঘাট মন্দির সম্পূর্ণ রূপে ধূলিসাৎ হয় এবং ত্রিপুরাসুন্দরী মন্দির বহুলাংশে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।[60] ভক্তপুর অঞ্চলে ফাঁসি দাওয়া মন্দির, চারধাম মন্দির ও সপ্তদশ শতাব্দীতে নির্মিত বৎসল দুর্গা মন্দির সম্পূর্ণ বা আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।[60] এছাড়া গোর্খা দরবার, পালনচক ভগবতী, চুরিয়ামি, রাণী মহল, ভীমসেনস্থান, নুওয়াকোট দরবার আংশিক বা অধিকাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।[60]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.