সুবাহ বাংলা
মুঘল সাম্রাজ্যের মহকুমা / From Wikipedia, the free encyclopedia
সুবাহ বাংলা (ফার্সি: صوبه بنگاله, প্রতিবর্ণীকৃত: সূবাহ্ বাঙ্গালাহ্;) বা মুঘল বাংলা ছিল মুঘল সাম্রাজ্যের একটি সুবাহ, যা ১৬শ থেকে ১৭শ শতাব্দীর মধ্যবর্তী সময়ে বর্তমানের বাংলাদেশ এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, বিহার ও ওড়িশা পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। বাংলা সালতানাত ভেঙে গেলে এই সুবাহের উদ্ভব হয়, এবং সেই সময়ের বিশ্বের অন্যতম বড় এ সাম্রাজ্যটি বিলীন হয়ে যায়। মুঘলেরা বাংলার সমাজ ও সংস্কৃতির উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। ১৮ শতকের দিকে এসে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে তাদের উত্থান ঘটে।[4]
সুবাহ বাংলা | |||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
১৫৭৬–১৭৬৫ | |||||||||||||||||||||
বাম পাশের পতাকা: মুঘল সাম্রাজ্যের সময় ডান পাশের পতাকা: বাংলার নবাব শাসনের অধীনে | |||||||||||||||||||||
বাংলা সুবাহ এর মানচিত্র | |||||||||||||||||||||
অবস্থা | মুঘল সুবাহ (১৫৭৬–১৭১৭) স্বাধীন রাষ্ট্র (১৭১৭–১৭৫৭) | ||||||||||||||||||||
রাজধানী | |||||||||||||||||||||
প্রচলিত ভাষা | ফার্সি (দাপ্তরিক) বাংলা (জনসাধারণ) | ||||||||||||||||||||
ধর্ম | ইসলাম (সংখ্যাগরিষ্ঠ) হিন্দু ধর্ম এবং অন্যান্য দক্ষিণ এশীয় ধর্ম | ||||||||||||||||||||
সরকার | মুঘল সুবাহ (১৫৭৬–১৭১৭) স্বাধীন রাষ্ট্র (১৭১৭–১৭৫৭) | ||||||||||||||||||||
বাংলার নবাব | |||||||||||||||||||||
• প্রথম নবাব | মুর্শিদ কুলি খান | ||||||||||||||||||||
• শেষ নবাব | মির্জা মুহম্মদ সিরাজ-উদ-দৌলা | ||||||||||||||||||||
ঐতিহাসিক যুগ | আধুনিক যুগের শুরুতে | ||||||||||||||||||||
১৫৭৬ | |||||||||||||||||||||
• পূর্ব বাংলার বারো-ভূঁইয়া ভূখণ্ডের সংযোজন | ১৬১১ | ||||||||||||||||||||
• বাংলার নবাব এবং মুঘলদের কাছ থেকে স্বাধীনতা | ১৭১৭ | ||||||||||||||||||||
১৭৪১–১৭৫১ | |||||||||||||||||||||
১৭৫৭ | |||||||||||||||||||||
• বিলুপ্ত | ১৭৬৫ | ||||||||||||||||||||
মুদ্রা | টাকা, মোহর | ||||||||||||||||||||
| |||||||||||||||||||||
বর্তমানে যার অংশ | বাংলাদেশ ভারত (পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, এবং ওড়িশা) |
ইউরোপবাসীরা বাংলাকে পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী বাণিজ্য দেশ হিসেবে ধরতো [5] মুঘল বাংলাকে "প্যারাডাইস অফ নেশনস"[6] এবং "বাংলার স্বর্ণযুগ"[7][8] হিসাবে বর্ণনা করে। মুঘল আমলে বিশ্বের মোট উৎপাদনের (জিডিপির) ১২ শতাংশ উৎপন্ন হত সুবাহ বাংলায়,[9][10][11] যা সে সময় সমগ্র ইউরোপের জিডিপির চেয়ে বেশি ছিল।[12] বাংলার পূর্ব অংশ টেক্সটাইল উৎপাদন এবং জাহাজ নির্মাণের মতো শিল্পে বিশ্বব্যাপী বিশিষ্ট ছিল[13] এবং এটি বিশ্বের রেশম এবং সুতির বস্ত্র, ইস্পাত, সল্টপিটার এবং কৃষি ও শিল্পজাতীয় পণ্যগুলির প্রধান রফতানিকারক ছিল।[10] রাজধানী জাহাঙ্গীরনগর, আজকের আধুনিক ঢাকা, এর জনসংখ্যা ১ লাখের বেশি ছিল। অষ্টাদশ শতাব্দীর মধ্যে, মুঘল বাংলা একটি নওয়াব-স্বাধীন রাষ্ট্র হিসাবে আবির্ভূত হয়েছিল, বাংলার নবাবদের অধীনে এবং ইতোমধ্যে প্রোটো-শিল্পায়ন পর্যবেক্ষণ করে, এটি প্রথম শিল্প বিপ্লবে প্রত্যক্ষভাবে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিল।[14][15][16][17]
১৭৪১ খ্রিস্টাব্দের পর থেকে একাধিক মারাঠা আক্রমণে মুঘল বাংলা বিধ্বস্ত হয়েছিল, যেখানে মারাঠারা প্রায় ৪০০,০০০ বেসামরিক মানুষকে হত্যা করেছিল বলে ধারণা করা হয়।[18][19][20][21] আক্রমণগুলির সমসাময়িক বিবরণীতে মারাঠাদের দ্বারা নারী ও শিশুদের বিরুদ্ধে গণধর্ষণ করা,[22][23][24][25][26] এবং আক্রান্তদের অঙ্গহানি করার উল্লেখও রয়েছে,[27][28] যা বাংলার অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দেয়।[29][30] ১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি কর্তৃক বিজয় লাভ করার পরে সুবাহ বাংলা বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়।