মুর্শিদকুলি খাঁ
বাংলার নবাব / From Wikipedia, the free encyclopedia
মুর্শিদকুলি খাঁ বা মুর্শিদ কুলি খান (ফার্সি: مرشد قلی خان); (আনু. ১৬৬০ – ৩০ জুন ১৭২৭) , যিনি জমিন আলী কুলি নামেও পরিচিত এবং সূর্য নারায়ণ মিশ্র নামে জন্মগ্রহণ করেন, তিনি ছিলেন প্রথম বাংলার নবাব, যিনি ১৭১৭ থেকে ১৭২৭ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। তার উপর মুঘল সাম্রাজ্যের নামমাত্র আধিপত্য ছিল, সকল ব্যবহারিক উদ্দেশ্যেই তিনি বাংলার নবাব ছিলেন।
মুর্শিদ কুলি খান | |||||
---|---|---|---|---|---|
'মুতাম উল মুলক (দেশের রক্ষক) আলা-উ-দৌল্লা (রাষ্ট্রের প্রবর্তক) জাফর খান বাহাদুর নাসিরি (যুদ্ধে সাহায্যকারী) নাসির জং (রক্ষক) | |||||
রাজত্ব | ১৭১৭–১৭২৭ | ||||
রাজ্যাভিষেক | ১৭১৭ | ||||
পূর্বসূরি | মুঘল সাম্রাজ্য | ||||
উত্তরসূরি | সুজা-উদ্দীন মুহাম্মদ খান (জামাতা) | ||||
জন্ম | সূর্য নারায়ণ মিশ্র আনু. ১৬৬৫ সম্ভবত ওড়িশা বা দাক্ষিণাত্য মালভূমি | ||||
মৃত্যু | জুন ৩০, ১৭২৭ মুর্শিদাবাদ | ||||
সমাধি | |||||
দাম্পত্য সঙ্গী | নাসিরি বানু বেগম সাহিবা (চ্যাহেল সেতুন কুলহুরিয়া প্রাসাদে মৃত্যুবরণ করেন, ১৩ জুন ১৭৩৩-এর পূর্বে; জুতাপট্টিতে সমাহিত) | ||||
বংশধর | নবাবজাদা ইয়াহিয়া খান (পুত্র) আজমত উন-নিসা বেগম সাহিবা (ওরফে: জিনাত উন-নিসা) (কন্যা) | ||||
| |||||
রাজবংশ | নাসিরি | ||||
পিতা | হাজী শফি ইসফাহানি (পালক পিতা) | ||||
ধর্ম | শিয়া ইসলাম[1][2][3] |
তার পরিবার সম্পর্কে কয়েক প্রকার মতভেদ রয়েছে। প্রথম সংস্করণমতে মুর্শিদকুলি খান দাক্ষিণাত্য মালভূমিতে আনু. ১৬৭০ সালে একটি দরিদ্র ওড়িয়া ব্রাহ্মণ পরিবারে হিন্দু হিসেবে জন্মগ্রহণ করেন। মুর্শিদ কুলি খানকে, হাজি শফি ইসফাহানি নামে ইরানের একজন উচ্চপদস্থ মুঘল কর্মকর্তা ক্রীতদাস হিসেবে ক্রয় করেন। ক্রীতদাস হিসেবে বিক্রি হওয়ার পূর্বেই পারস্যের বণিক ইসফাহান তাকে ক্রয় করে ইসলাম ধর্মে স্থানান্তরিত করেন এবং নাম পরিবর্তন করে মুহাম্মদ হাদী বা মির্জা হাদী রাখেন। ইসফাহানিই তাকে শিক্ষিত করে তুলেন। তিনি বিদর্ভ বা বেরার প্রদেশের দেওয়ান হাজী আব্দুল্লাহ কুরাইশির অধীনে চাকরি নেন। পরবর্তীতে বেরার প্রদেশের দেওয়ান সম্রাট আওরঙ্গজেবের অধীনে চলে আসে। শফির মৃত্যুর পর, তিনি বেরারের দেওয়ান এর অধীনে কাজ করেন, এই সময়ে তিনি তৎকালীন সম্রাট আওরঙ্গজেব-এর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। ১৭০০ সালে সম্রাট আওরঙ্গজেব তাকে কার্তালাব খান নামে ইসলাম ধর্মে স্থানান্তরিত করেন ও বাংলার গভর্নর নিযুক্ত করেন। অপর সংস্করণমতে তিনি ছিলেন, মারাঠা জেনারেল মুহাম্মদ কুলি খানের নাতি, তবে প্রথম সংস্করণটিই বেশি জনপ্রিয়। যাই হোক, তিনি প্রদেশের সুবাহদার, আজিম-উস-শান এর সাথে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। ১৭০৭ সালে আওরঙ্গজেবের মৃত্যুর পর, আজিম-উস-শানের পিতা মুঘল সম্রাট বাহাদুর শাহ প্রথম তাকে দাক্ষিণাত্যের মালভূমিতে স্থানান্তরিত করেন। এরপর, ১৭১০ সালে তাকে ডেপুটি সুবাহদার হিসাবে ফিরিয়ে আনা হয়। ১৭১৭ সালে, ফররুখসিয়ার দ্বারা তিনি মুর্শিদাবাদের নবাব নাজিম নিযুক্ত হন। তার শাসনামলে, তিনি জায়গিরদারী ব্যবস্থা (ভূমি ব্যবস্থাপনা) পরিবর্তন করে মাল জাসমানী করেন, যা পরে জমিদারি ব্যবস্থায় রূপান্তরিত হয়। এছাড়াও তিনি রাজ্য থেকে মুঘল সাম্রাজ্যের সম্রাটকে রাজস্ব পাঠাতে থাকেন। তিনি মুর্শিদাবাদ এ কাটরা মসজিদ মসজিদ নির্মাণ করেন যেখানে ৩০ জুন ১৭২৭ সালে তার মৃত্যুর পর তাকে সিঁড়ির নিচে সমাহিত করা হয়। তার জামাতা সুজাউদ্দীন মুহম্মদ খান তার স্থলাভিষিক্ত হন।