শাহজাহান সিরাজ (১ মার্চ ১৯৪৩ - ১৪ জুলাই ২০২০[4]) একজন বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ছিলেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধকালীন অন্যতম ছাত্রনেতা। তিনি ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি ৩ বার জাসদের মনোনয়নে এবং ১ বার বিএনপি'র মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। শাহজাহান সিরাজ ২০০১ সালের নির্বাচনের পর খালেদা জিয়ার সরকারে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।[5]

দ্রুত তথ্য শাহজাহান সিরাজ, টাঙ্গাইল-৪ আসনের সংসদ সদস্য ...
শাহজাহান সিরাজ
Thumb
টাঙ্গাইল-৪ আসনের
সংসদ সদস্য
কাজের মেয়াদ
৩ মার্চ ১৯৮৬  ২০ মার্চ ১৯৯১
পূর্বসূরীআবদুর রহিম[1]
উত্তরসূরীস্ব
পরিবেশ ও বনমন্ত্রী
কাজের মেয়াদ
১০ অক্টোবর ২০০১  ৬ মে ২০০৪
প্রধানমন্ত্রীখালেদা জিয়া
কাজের মেয়াদ
২০ মার্চ ১৯৯১  ৩০ মার্চ ১৯৯৬
প্রধানমন্ত্রীখালেদা জিয়া
পূর্বসূরীস্ব
উত্তরসূরীঅ্যাডভোকেট গৌতম চক্রবর্তী[2]
কাজের মেয়াদ
১ অক্টোবর ২০০১  ২৮ অক্টোবর ২০০৬
প্রধানমন্ত্রীখালেদা জিয়া
পূর্বসূরীঅ্যাডভোকেট গৌতম চক্রবর্তী
উত্তরসূরীআবদুল লতিফ সিদ্দিকী[3]
বস্ত্রমন্ত্রী
কাজের মেয়াদ
৬ মে ২০০৪  ২৯ অক্টোবর ২০০৬
প্রধানমন্ত্রীখালেদা জিয়া
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্ম১ মার্চ ১৯৪৩
টাঙ্গাইল, বাংলাদেশ
মৃত্যু১৪ জুলাই ২০২০(2020-07-14) (বয়স ৭৭)
ঢাকা
জাতীয়তাবাংলাদেশী
রাজনৈতিক দলবাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল
অন্যান্য
রাজনৈতিক দল
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (সিরাজ)
দাম্পত্য সঙ্গীরাবেয়া সিরাজ
পেশারাজনীতিবিদ
বন্ধ

জন্ম ও পরিবার

১৯৪৩ সালের ১ মার্চ টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে জন্মগ্রহণ করেন শাহজাহান সিরাজ।[6] তার পিতার নাম আব্দুল গণি মিয়া ও মাতা রহিমা বেগম। [7]

রাজনৈতিক জীবন

১৯৬২ সালে হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশন বিরোধী আন্দোলনে সম্পৃক্ত হওয়ার মধ্যদিয়ে শাহজাহান সিরাজ ছাত্র-রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। সেই সময় তিনি টাঙ্গাইলের করটিয়া সা’দত কলেজের ছাত্র ছিলেন। এরপর তিনি ছাত্রলীগের মাধ্যমে ছাত্র-রাজনীতিতে উঠে আসেন। ১৯৬৪-৬৫ এবং ১৯৬৬-৬৭ দুই মেয়াদে তিনি দুইবার করটিয়া সা’দাত কলেজের ছাত্র সংসদের ভিপি নির্বাচিত হয়েছিলেন।[7] একজন সক্রিয় ছাত্রনেতা হিসেবে তিনি ১১ দফা আন্দোলন এবং ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যত্থানে অংশগ্রহন করেন। এরপর তিনি ১৯৭০-৭২ মেয়াদে অবিভক্ত ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ছিলেন ‘স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদ’ (যার অন্য নাম নিউক্লিয়াস) এর সক্রিয় কর্মী, ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের নেতা।

মুক্তিযুদ্ধের পর সর্বদলীয় সমাজতান্ত্রিক সরকার গঠনের পক্ষে অবস্থান নিয়ে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) গঠনে ভূমিকা পালন করেন, যা ছিলো স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম বিরোধী দল। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের প্রতিষ্ঠাতা সহকারী সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন শাহজাহান সিরাজ। পরবর্তীতে জাসদে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন। জাসদের মনোনয়নে ৩ বার তিনি জাতীয় সংসদের টাঙ্গাইল-৪ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।[8] শাহজাহান সিরাজ ১৯৯৫ সালে বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বিএনপিতে যোগ দেন। তিনি বিএনপির মনোনয়নেও একবার একই আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। বেগম খালেদা জিয়া সরকারের শেষ পর্যায়ের দিকে নৌপরিবহন মন্ত্রি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।

মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা

শাহজাহান সিরাজ বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক। মুক্তিযুদ্ধের সময় যাদের ‘চার খলিফা’ বলা হতো শাহজাহান সিরাজ ছিলেন তাদেরই একজন। ১৯৭১ সালের ১ মার্চ তিনি সিরাজুল আলম খান, শেখ ফজলুল হক, আব্দুর রাজ্জাক, কাজী আরেফ আহমেদ, তোফায়েল আহমেদ, আবদুল কুদ্দুস মাখন, নূরে আলম সিদ্দিকী, আ স ম আবদুর রব প্রভৃতি ছাত্রনেতাদের পাশাপাশি স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ গঠনে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছিলেন। ১৯৭১ সালের ২রা মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন আ স ম আবদুর রব। সেখান থেকেই পরবর্তী দিনে স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠের পরিকল্পনা করা হয়। [9] সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৩ মার্চ ১৯৭১ পল্টন ময়দানে বিশাল এক ছাত্র জনসভায় বঙ্গবন্ধুর সামনে স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ করেছিলেন শাজাহান সিরাজ। এরপর যুদ্ধ শুরু হলে তিনি সশস্ত্র যুদ্ধ চলাকালে ‘বাংলাদেশ লিবারেশন ফোর্স’ (বিএলএফ) বা মুজিব বাহিনীর কমান্ডার হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।[9]

ব্যক্তিগত জীবন

এক সময়ের রাজনৈতিক সহকর্মী, সাবেক ছাত্রনেত্রী রাবেয়া সিরাজের সঙ্গে ১৯৭২ সালে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন শাহজাহান সিরাজ। তাদের একটি ছেলে ও একটি মেয়ে আছে। তার স্ত্রী রাবেয়া সিরাজ একজন শিক্ষিকা এবং রাজনীতিবিদ। [7]

মৃত্যু

শাহজাহান সিরাজ ১৪ জুলাই ২০২০ ঢাকার একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি দীর্ঘদিন থেকে ক্যানসারে ভুগছিলেন।[10]

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

Wikiwand in your browser!

Seamless Wikipedia browsing. On steroids.

Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.

Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.