Remove ads
বাংলাদেশের খুলনা বিভাগের একটি অন্যতম জেলা উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
সাতক্ষীরা জেলা বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের খুলনা বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল।
সাতক্ষীরা | |
---|---|
জেলা | |
সাতক্ষীরা | |
নীতিবাক্য: সাতক্ষীরার আকর্ষণ সড়কপথে সুন্দরবন | |
বাংলাদেশে সাতক্ষীরা জেলার অবস্থান | |
স্থানাঙ্ক: ২২°২১′০″ উত্তর ৮৯°৪′৪৮″ পূর্ব | |
দেশ | বাংলাদেশ |
বিভাগ | খুলনা বিভাগ |
সরকার | |
• জেলা প্রশাসক | মোস্তাক আহমেদ |
আয়তন | |
• মোট | ৩,৮৫৮.৩৩ বর্গকিমি (১,৪৮৯.৭১ বর্গমাইল) |
উচ্চতা | ১৬ মিটার (৫২ ফুট) |
জনসংখ্যা (২০১৩ আনুঃ)[১] | |
• মোট | ২০,৭৯,৮৮৪ |
• জনঘনত্ব | ৫৪০/বর্গকিমি (১,৪০০/বর্গমাইল) |
সাক্ষরতার হার[২] | |
• মোট | ৫৩.৩২% |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
পোস্ট কোড | ৯৪০০ |
প্রশাসনিক বিভাগের কোড | ৪০ ৮৭ |
ওয়েবসাইট | দাপ্তরিক ওয়েবসাইট |
সাতক্ষীরা জেলার উত্তরে যশোর জেলা, দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর, পূর্বে খুলনা জেলা, পশ্চিমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ। অবস্থানগত দিক দিয়ে সাতক্ষীরা জেলার অবস্থান বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম সীমান্তে। উচ্চতার দিক বিবেচনা করলে এ অঞ্চল সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে আনুমানিক ১৬ ফুট উচুঁতে। জেলার সীমানা যেভাবে নির্ধারিত হয়েছে তাতে উত্তর-দক্ষিণে দীর্ঘ। তবে এ বিস্তীর্ণ অঞ্চলের সব অংশে জনবসতি নেই। এর মধ্যে প্রায় এক তৃতীয়াংশ বনাঞ্চল। সুন্দরবনের মধ্যে যে পরিমাণ ভূমি তার পরিমাণ ১৪৪৫.১৮ বর্গ কিলোমিটার।
প্রাচীনকালে এই জেলাকে বাগড়ী, ব্যাঘ্রতট, সমতট, যশোর, বুড়ন প্রভৃতি নামে অভিহিত করা হতো। অবশ্য এ জেলার নামকরণের পেছনে অনেক মত প্রচলিত আছে। প্রথম ও প্রধান মতটি হলো চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের সময় নদীয়ার রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের এক কর্মচারী বিষুরাম চক্রবর্তী নিলামে বুড়ন পরগনা ক্রয় করে তার অর্ন্তগত সাতঘরিয়া নামক গ্রামে বাড়ি তৈরী করেন। তার পূত্র প্রাণনাথ সাতঘরিয়া অঞ্চলে ব্যাপক উন্নয়ন করেন। ১৮৬১ সালে মহকুমা স্থাপনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হওয়ার পর ইংরেজ শাসকরা তাদের পরিচিত সাতঘরিয়াতেই প্রধান কার্যালয় স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেন। ইতোমধ্যেই সাতঘরিয়া ইংরেজ রাজকর্মচারীদের মুখে ‘সাতক্ষীরা’ হয়ে যায়। দ্বিতীয় মতটি হলো একদা সাত মনীষী সাগর ভ্রমণে এসে একান্ত শখের বসে (মতানৈক্যে রান্নার উপকরণাদি না পেয়ে) ক্ষীর রান্না করে খেয়েছিলেন। পরবর্তীতে ‘ক্ষীর’ এর সাথে ‘আ’ প্রত্যেয় যুক্ত হয়ে ‘ক্ষীরা’ হয় এবং লোকমুখে প্রচলিত হয়ে যায় সাতক্ষীরা।
বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণ-পশ্চিমে পৃথিবীর সর্ব বৃহৎ ম্যানগ্রোভ বনভূমি সুন্দরবন। বঙ্গোপসাগরের উপকূল এবং ভারতীয় সীমান্তে অবস্থিত সাতক্ষীরা নামক অঞ্চলটি মানব বসতি গড়ে ওঠার আগে ছিল একটি বিস্তীর্ণ জলাভূমি। পরবর্তীতে মানব বসতি গড়ে ওঠে। ১৮৬১ সালে যশোর জেলার অধীনে ৭টি থানা নিয়ে সাতক্ষীরা মহকুমা প্রতিষ্ঠিত হয়। পরে ১৮৬৩ সালে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগনা জেলার অধীনে এই মহকুমার কার্যক্রম শুরু হয়। পরবর্তীতে ১৮৮২ সালে খুলনা জেলা প্রতিষ্ঠিত হলে সাতক্ষীরা খুলনা জেলার অর্ন্তভূক্ত একটি মহকুমা হিসাবে স্থান লাভ করে। প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের ফলে ১৯৮৪ সালে সাতক্ষীরা মহকুমা জেলায় উন্নীত হয়।[৩][৪][৫]
সাতক্ষীরা জেলার আদি নাম সাতঘরিয়া। চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের সময় বিষ্ণুরাম চক্রবর্তী, নদীয়ার রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের কর্মচারী হিসেবে ১৭৭২ সালে নিলামে পরগনা কিনে গ্রাম স্থাপন করেন। তাঁর পুত্র প্রাণনাথ চক্রবর্তী সাতঘর কুলীন ব্রাহ্মণ এনে এই পরগণায় প্রতিষ্ঠিত করেন এবং নাম হয় সাতঘরিয়া। ১৭৮১ সালে বর্তমান যশোর, ফরিদপুর, সাতক্ষীরা, খুলনার বৃহত্তর অংশ একই জেলা হিসেবে আসে । এক অনির্বচনীয় নান্দনিক অনুভবের প্রাচীন জনপদ সাতক্ষীরা একদা রাজা প্রতাপাদিত্যের যশোহর রাজ্যের অন্তর্গত ছিল। বারোভূঁইয়াদের অন্যতম রাজা প্রতাপাদিত্যের রাজধানী এ জেলার কালিগঞ্জ ও শ্যামনগর এলাকায়। বাংলাদেশের মানচিত্রে দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে সাতক্ষীরা জেলার অবস্থান।
সুন্দরবন, সাতক্ষীরা অঞ্চলে প্রতাপাদিত্যের পর ব্যাপক প্রশাসনিক উন্নতি হয় হেংকেলের আন্তরিকতায়। ১৭৮১ খ্রিস্টাব্দে টিলম্যান হেংকেল প্রথম ম্যাজিস্ট্রেট ও জজ নিযুক্ত হন যশোর অঞ্চলে। ঐ বছরেই যশোরে প্রথম আদালত স্থাপিত হয়। ১৭৮৬ খ্রিস্টাব্দে তিনি খুঁটি দিয়ে সীমানা চিহ্নিত করেন।১৭৮৬ খ্রিস্টাব্দে যশোর পৃথক জেলার মর্যাদা পায়। এরপর থেকে যশোর অঞ্চল প্রশাসনিকভাবে বিকেন্দ্রীকরণ হতে থাকে। সাতক্ষীরা অঞ্চল মহকুমার মর্যাদা পায় ১৮৫২ খ্রিস্টাব্দে। মহকুমার মর্যাদা পাওয়ার পর প্রথমে সাতক্ষীরাকে যুক্ত করা হয় নদীয়া জেলার সাথে। ১৮৬১ খ্রিস্টাব্দে নদীয়া থেকে সাতক্ষীরাকে বিভক্ত করা হয় চব্বিশ পরগণার সাথে। খুলনা জেলার মর্যাদা পায় ১৮৮২ খ্রিস্টাব্দে। জেলার মর্যাদা পাওয়ার পর লর্ড রিপনের (১৮৮০-৮৪) আন্তরিক প্রচেষ্টায় সাতক্ষীরা মহকুমাকে খুলনা জেলার একটা মহকুমায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
১৯৮৪ খ্রিস্টাব্দে বাংলাদেশের প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের আওতায় সাতক্ষীরা মহকুমা বাংলাদেশের ৬৪ জেলার একটি জেলা হিসেবে মর্যাদা লাভ করে। বর্তমানে এ জেলায় ৭টি উপজেলা, ৮টি থানা, ৭৮টি ইউনিয়ন, ৯৬০টি মৌজা, ১৪২১টি গ্রাম ও ৩টি পৌরসভা রয়েছে।
সাতক্ষীরা জেলায় ৩টি পৌরসভা , ৭টি উপজেলা, ৮টি থানা , ৭৮ টি ইউনিয়ন পরিষদ ও ১৪২৩টি গ্রাম রয়েছে এবং জাতীয় সংসদের ৪টি সংসীয় আসন রয়েছে।
জেলা প্রশাসক : জনাব মোস্তাক আহমেদ।[৬]
শুষ্ক গ্রীষ্ম প্রধান জলবায়ু বিরাজমান, স্বাভাবিকভাবে গড় তাপমাত্রা ২৫°সেলসিয়াস (৭৭° ফারেনহাইট)।
উষ্নতম মাস = মে গড় তাপমাত্রা থাকে ৩০°সে (৮৬°ফা)
শীতলতম মাস = জানুয়ারী গড় তাপমাত্রা ১৮.৯°সে (৬৬°ফা)
সারাবছরের বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৬৬.৫’’ (১৬৮৯.১ মিমি) যা জুলাই মাসে সর্বোচ্চ ১৩.৯’’ (৩৫৩.১ মিমি) এবং সর্বনিন্ম জানুয়ারী মাসে ০.৩’’ (৭.৬ মিমি)।
বৃষ্টিপাতের নিরীক্ষা অনুসারে বছরের ৯৮.০ দিন যা সর্বোচ্চ জুলাই মাসে ১৯.০ দিন ও সর্বনিম্ন ডিসেম্বর মাসে ১.০ দিন।
[৭]
সাতক্ষীরা-এর আবহাওয়া সংক্রান্ত তথ্য | |||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
মাস | জানু | ফেব্রু | মার্চ | এপ্রিল | মে | জুন | জুলাই | আগস্ট | সেপ্টে | অক্টো | নভে | ডিসে | বছর |
সর্বোচ্চ গড় °সে (°ফা) | ২৫ (৭৭) |
২৮ (৮২) |
৩৩ (৯১) |
৩৪ (৯৩) |
৩৪ (৯৩) |
৩৩ (৯১) |
৩১ (৮৭) |
৩১ (৮৭) |
৩২ (৮৯) |
৩১ (৮৭) |
২৯ (৮৪) |
২৬ (৭৮) |
৩০ (৮৬) |
সর্বনিম্ন গড় °সে (°ফা) | ১২ (৫৩) |
১৫ (৫৯) |
২০ (৬৮) |
২৪ (৭৫) |
২৫ (৭৭) |
২৬ (৭৮) |
২৬ (৭৮) |
২৫ (৭৭) |
২৫ (৭৭) |
২৩ (৭৩) |
১৮ (৬৪) |
১৩ (৫৫) |
২১ (৬৯) |
অধঃক্ষেপণের গড় মিমি (ইঞ্চি) | ৭.৬ (০.৩) |
২৩ (০.৯) |
৩০ (১.২) |
৭১ (২.৮) |
১৪০ (৫.৭) |
২৯০ (১১.৬) |
৩৫০ (১৩.৯) |
৩৩০ (১২.৮) |
২৭০ (১০.৫) |
১৪০ (৫.৬) |
২৫ (১) |
৭.৬ (০.৩) |
১,৬৯০ (৬৬.৫) |
উৎস: ওয়েদারবেজ[৮] |
ব্রিটিশ যুগ থেকেই উপঢৌকন হিসেবে চব্বিশ পরগণা (বর্তমানের সাতক্ষীরা) লাভের পর ব্রিটিশ বেনেরা নিজ স্বার্থেই সুন্দরবনের উন্নয়ন ও এতদাঞ্চলের অর্থনীতিতে প্রভাব বিস্তার করতে শুরু করে। দেখা যায়, অচিরেই নানাবিধ কৃষিপণ্য, গৃহপালিতপশু, লবণাক্ত ও মিষ্টি পানির মাছ এবং সুন্দরবনের কাঠ, মধু ও পশুর চামড়া সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকার তথা সাতক্ষীরার অর্থনীতির ভিত্তি হয়ে ওঠে। ব্রিটিশ শাসনের অব্যবহিত পূর্ব যুগে অবশ্য অবিভক্ত বাংলার উপকূলীয় জেলাগুলোতে কিছু লবণ শিল্প গড়ে ওঠার সংবাদ পাওয়া যায়।[৯]
জেলার প্রধান বাণিজ্য কেন্দ্রগুলো হলো- বড়দল, পাটকেলঘাটা, পারুলিয়া, আখড়াখোলা, আবাদের হাট, নওয়াবেকি, ঝাউডাঙ্গা, বুধহাটা, কলারোয়া, বসন্তপুর, কালিগঞ্জ, নকিপুর, নাজিমগঞ্জ, ভেটখালি, হবিনগর, হোগলা, বুড়িগোয়ালিনী, বাঁশতলা ইত্যাদি। এছাড়া কয়েকটি ফিস প্রসেসিং প্লান্ট, কোল্ড স্টোরেজ, আইস প্লান্ট, রাইস মিল, অটো রাইস মিল, ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস, বেকারী, ইট ভাটা, বাঁশ ও বেতের দ্রব্যাদি, আসবাবপত্র, তাঁত, লবণ, গুড়, পাটজাত দ্রব্য ও মাছ প্রভৃতি বর্তমানে সাতক্ষীরা শিল্প বাণিজ্যে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে চলেছে।
খামারের মধ্যে ৮৬ টি গবাদিপশু, ৩২২ টি পোল্ট্রি খামার, ৩০৪৬ টি মৎস্য খামার (মিঠা পানির), ৩৬৫০ টি চিংড়ি খামার, ৬৬ টি হ্যাচারি এবং ১ টি গরু প্রজনন কেন্দ্র আছে। চামড়া শিল্পেও সাতক্ষীরার অবদান রয়েছে।
সাতক্ষীরার দক্ষিণাঞ্চলের অধিকাংশ মানুষ মৎস্যচাষের (ইংরেজি Fish farming) উপর নির্ভরশীল। সরকারী হিসাবে, সাতক্ষীরা জেলায় প্রায় ৬৭ হাজার হেক্টর জমিতে ৫৫ হাজার চিংড়ি ঘের (মৎস খামার) রয়েছে বেশির ভাগই বাগদা চিংড়ির চাষ হয় এবং বছরে ২২ হাজার মেট্রিক টন চিংড়ি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে[১০] এবং উৎপাদন মান ও পরিমান বৃদ্ধিতে আধুনিকরনে বিভিন্ন মৎস চাষী ও মালিকপক্ষ তৎপর রয়েছে[১১]। ইউরোপসহ বহি:বিশ্বে রপ্তানীকৃত শতকরা ৭০ভাগ চিংড়ি সাতক্ষীরা থেকে উৎপাদিত হয়। সাতক্ষীরার বাগদা ও গলদা বহিঃবিশ্বে অনেক জায়গায় হোয়াইট গোল্ড নামে পরিচিত। চিংড়ি শুধু বিদেশে নয় দেশেও যথেষ্ট কদর রয়েছে[৯]। চিংড়ি চাষের জন্যে প্রয়োজনীয় মাছের পোনা বর্তমানে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত ও সংগ্রহীত হচ্ছে (সুন্দরবন উপকূলীয় এলাকায় এবং শ্যামনগর উপজেলার মুন্সীগঞ্জ ও নওয়াবেকির হ্যাচারি থেকে) যা পূর্বে মৎস্য চাষীদের শতভাগ নির্ভর করতে হতো কক্সবাজারের হ্যাচারীর উপর [১০]।
পাশ্ববর্তী সুন্দরবন এর কারণে সাতক্ষীরা বনজ সম্পদে যথেষ্ট সমৃদ্ধ। ব্রিটিশ শাসন আমল থেকেই সুন্দরবনের কাঠ, মধু ও পশুর চামড়া এবং নদীর মাছ সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকার তথা সাতক্ষীরার অর্থনীতির অন্যতম ভিত্তি হয়ে ওঠে।
ধান প্রধান কৃষিজ পণ্যের মধ্যে থাকলেও পাট, গম, পান পাতা স্থান নিয়ে আছে এবং প্রধান ফল আম, জাম, কাঁঠাল, কলা, পেঁপে, নারিকেল, লিচু, সফেদা, জামরুল, কদবেল, বরই এবং পেয়ারা উৎপাদনে সাতক্ষীরার যথেষ্ট সুনাম রয়েছে। তাছাড়া সাতক্ষীরার আমের দেশে-বিদেশে অনেক সুনাম আছে। বাংলাদেশ থেকে সাতক্ষীরার আম সর্বপ্রথম বিদেশে রপ্তানি করা হয়। হিমসাগর, ল্যাংড়া ও আম্রপালি আম এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য। [১২][১৩]
দুগ্ধজাত হস্তচালিত তাঁত, নৌকা তৈরি, খেলনা, কাঠের আসবাবপত্র, বেত ও বাঁশজাত দ্রব্যাদি ও আসবাবপত্র। [১৪]
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তৎকালীন বস্ত্রমন্ত্রী প্রয়াত এম, মনসুর আলীর ১৯৮০ সালের ১লা জুনে সুন্দরবন টেক্সটাইল মিলস্ লি: ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন এবং এটাই সাতক্ষীরার একমাত্র ভারী শিল্প প্রতিষ্ঠান, ৩৩ একর জমির উপর গড়ে উঠা এই মিলটি দেশের অন্যতম লাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসাবে প্রতিষ্ঠিত ছিল। স্থানীয় ভাষ্যমতে ১৯৯২ সালে বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ এর পরামর্শে দেশের লাভজনক ও অলাভজনক প্রতিষ্ঠানগুলো যখন বিরাষ্ট্রীয়করণ শুরু হয় তখন তার মধ্যে পড়ে লাভজনক প্রতিষ্ঠান সুন্দরবন টেক্সটাইল মিল এবং অর্থনীতির গ্রাফ ক্রম নামতে থাকে[১৫]। ১মবার ১৯৯২ সালে মিল বন্দ হবার পর বিভিন্ন পর্যায়ে খোলার চেষ্টা করা হয় এবং বর্তমানে বন্ধ আছে। মিলটি চালুর পদক্ষেপে স্থানীয় অর্থনীতি আবার চাঙ্গা হবার প্রত্যাশায় স্থানীয় জনগণ।[১৬]
২রা জুন ১৯৯০ শুল্ক স্টেশন হবার পর ১১ই মে ১৯৯৫ ভোমরা স্থল বন্দর নাম নিয়ে যাত্রা শুরু করে। প্রায় ৩০ একর জমির উপর শুল্ক স্টেশনটি অবস্থিত, ভোমরা স্থল বন্দর শুল্ক স্টেশন থেকে সরকার দৈনিক ৬০ থেকে ৭০ লাখ টাকার রাজস্ব পাচ্ছে। ভোমরা স্থল বন্দর শুল্ক স্টেশন কার্যালয় সূত্র অনুসারে, ১৯৯৬ সাল থেকে ২০১২ সালের জুন পর্যন্ত এবন্দর থেকে রাজস্ব আয় হয়েছে ৯১৭ কোটি ৭১ লাখ ৬৮ হাজার ৭৩২ টাকা[১৭]। এই বন্দর দিয়ে ভারত থেকে আনার, আপেল, আংগুর মাল্টা, আম, টমেটো, সয়াবিন বড়ি, মেথি মশলা সহ প্রায় ৮১ প্রকার পণ্য আমাদের দেশে আসে আবার আমাদের দেশ থেকে গার্মেন্টেসের জুট ও নারকেলের ছোবড়া সহ ১২/১৪ প্রকার ভারতে যায় এবং ভোমরা বন্দরে বর্তমানে ৭০০ থেকে ১০০০ শ্রমিকের কর্ম-সংস্থান। জাতীয় অর্থনীতির বিকাশে অপার সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও ভোমরা স্থল বন্দর আজও পূর্ণাঙ্গ স্থল বন্দরের মর্যাদা পায়নি। এখানে উল্লেখ্য, কলকাতা থেকে বেনাপোলের দূরত্ব ৮৪ কিলোমিটার কিন্তু কোলকাতা থেকে ভোমরার দূরত্ব ৫৫ কিলোমিটার। ভোমরা পূর্ণাঙ্গ বন্দরে রূপান্তরিত হলে ব্যবসায়ীদের যাতায়াতের দূরত্ব কমবে কমপক্ষে ৬০ কিলোমিটার। তবে আশার কথা, বর্তমান মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর ৪৫ বিঘা জমির উপর ৩৫ কোটি ব্যয় করে ওয়্যার হাউজ নির্মাণ করছে। এছাড়া রাস্তা সংস্কারে ৬ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে।
যশোর শিক্ষাবোর্ডের নিয়ন্ত্রণে সাতক্ষীরা এর শিক্ষা কার্যক্রম চলছে, সাতক্ষীরায় ১টি মেডিকেল কলেজ, ২টি কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ৪৪ টি কলেজ, ১৩৫টি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৩৩টি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৩৯০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ৮৫টি মাদ্রাসা রয়েছে।
প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনার বিচারে সাতক্ষীরার স্থান যথেষ্ট প্রসিদ্ধ। প্রধান স্থাপনা সমূহ :
০১ | সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল |
০২ | সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল |
০৩ | উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, সখিপুর, দেবহাটা |
০৪ | উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, শ্যামনগর |
০৫ | উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কলারোয়া |
০৬ | উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, তালা |
০৭ | উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, আশাশুনি |
০৮ | উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, কালিগঞ্জ |
০১ | আনোয়ারা মেমোরিয়াল ক্লিনিক |
০২ | বুশরা হাসপাতাল |
০৩ | কেয়ার ক্লিনিক |
০৪ | সিবি হাসপাতাল লিমিটেড। |
০৫ | সিটি ক্লিনিক |
০৬ | ডক্টরস্ ল্যাব অ্যান্ড হসপিটাল (প্রা।) লিমিটেড |
০৭ | ডাঃ মাহতাবউদ্দিন মেমোরিয়াল হাসপাতাল |
০৮ | ফারহান ক্লিনিক |
০৯ | গ্রামীণ চক্ষু হাসপাতাল, সাতক্ষীরা |
১০ | হার্ট ফাউন্ডেশন এবং ইনটেনসিভ কেয়ার হসপিটাল |
১১ | ইসলামী ব্যাংক কমিউনিটি হাসপাতাল সাতক্ষীরা লি। |
১২ | ঝাউডাঙ্গা পাইলস এবং সার্জিকাল ক্লিনিক |
১৩ | নাজমুন ক্লিনিক |
১৪ | সংগ্রাম মেডিকেল হাসপাতাল (প্রা।) |
১৫ | সানজানা নার্সিং হোম এবং ক্লিনিক |
১৬ | সততা ক্লিনিক |
১৭ | সাতক্ষীরা ন্যাশনাল হাসপাতাল |
১৮ | সাতক্ষীরা ট্রমা ও অর্থোপেডিক্স কেয়ার সেন্টার। |
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.