ভারতীয় অভিনেতা ও রাজনীতিবিদ উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
দীপক অধিকারী যার মঞ্চনাম দেব (জন্ম: ২৫ ডিসেম্বর, ১৯৮২) একজন ভারতীয় বাংলা চলচ্চিত্র জগতের অভিনেতা।[১][২] সেই সঙ্গে তিনি একজন প্রযোজক, সিনেমার কাহিনী লেখক এবং গায়কও বটে। সম্প্রতি তিনি রাজনীতিতেও আত্মপ্রকাশ করেছেন।[৩][৪] তার নিজস্ব প্রোডাকশন হাউজ রয়েছে যার নাম দেব এন্টারটেনমেন্ট ভেঞ্চারস প্রাইভেট লিমিটেড। তিনি টলিউডের বেশি পারিশ্রমিক নেয়া অভিনেতাদের একজন এবং কলকাতা সিনেমার একজন অন্যতম প্রধান অভিনেতা।
দেব | |
---|---|
সংসদ সদস্য | |
দায়িত্বাধীন | |
অধিকৃত কার্যালয় ২৪ মে ২০১৪ | |
পূর্বসূরী | গুরুদাস দাশগুপ্ত |
নির্বাচনী এলাকা | ঘাটাল, পশ্চিমবঙ্গ |
জন্ম | দীপক অধিকারী ২৫ ডিসেম্বর ১৯৮২ |
জাতীয়তা | ভারত |
অন্যান্য নাম | রাজু |
পেশা |
|
কর্মজীবন | ২০০৬ – বর্তমান |
রাজনৈতিক দল | তৃণমূল কংগ্রেস |
ওয়েবসাইট | দেব |
তিনি অগ্নিশপথ চলচ্চিত্রের মধ্য দিয়ে বাংলা চলচ্চিত্রে পদার্পণ করেন। তবে চলচ্চিত্রটি ব্যবসায়িকভাবে সফল হতে পারেনি। আই লাভ ইউ চলচ্চিত্রে পায়েল সরকারের বিপরীতে অভিনীত চলচ্চিত্রটি ব্যবসায় সফল হয় এবং তাকে টলিউডে স্থায়ী জায়গা করে নিতে সহায়তা করে। তবে কোয়েল মল্লিকের সাথে প্রেমের কাহিনী চলচ্চিত্রটি তাকে রূপালী পর্দায় আরো বেশি পাকাপোক্ত করে। কিন্তু সমালোচকদের কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া মেলে চ্যালেঞ্জ চলচ্চিত্রটি দিয়ে সেই একই সিনেমায় ভাল অভিনয়ের কারণে তিনি আনন্দলোক পুরস্কারের দুটি পুরস্কার - সেরা অভিনেতা এবং সেরা একশন হিরো পুরস্কার লাভ করেন।
অভিনয় ছাড়াও তিনি ভিভেল আইটিসি লিমিটেড,[৫] রয়্যাল স্ট্যাগ,[৬] শ্রীকন টিএমটি বারস্,[৭][৮][৯][১০] ব্রেকফ্রেশ বিস্কুট[১১] সহ বেশকিছু ব্র্যান্ডের বিজ্ঞাপন করেছেন। তিনি জলসা মুভিজের[১২] ও গ্ল্যামার ওয়ার্ল্ডের[১৩] ব্রান্ড এমবাসেডর।
তিনি ডান্স বাংলা ডান্সঃ সীজন ৮-এর ক্যাপ্টেন ছিলেন; যাতে পূর্বে মিঠুন চক্রবর্তী মহাগুরু হিসেবে ছিলেন।[১৪] তিনি কলকাতার "টাইমস ২০১৩ সালের ২৫ জন আকাঙ্খিত ব্যক্তিত্ব"-এ প্রথম স্থান লাভ করেন।[১৫] ২০১৪ সালে তিনি "মহানায়ক অ্যাওয়ার্ড" লাভ করেন।[১৬]
দেব মহেশখালি নামক কেশপুরের একটি ছোট গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।[১৭] তার পিতার নাম গুরুদাস অধিকারী ও মাতার নাম মৌসুমী অধিকারী। দেবের পিতা খাদ্যাদি পরিবেশন সেবা ব্যবসায়ের সাথে জড়িত এবং তার মা একজন গৃহিনী। দীপালী নামে তার এক বোন রয়েছে। দেবের ডাকনাম রাজু। দেব তার শৈশবের বেশিরভাগ সময় তার মামার সাথে চন্দ্রকোনায় কাটায়। তিনি বন্দ্রার পুরুষোত্তম হাই স্কুল ও পরে পুনের বিদ্যাপীঠ বিশ্ববিদ্যালয় হতে কম্পিউটার প্রকৌশলে ডিপ্লোমা ডিগ্রী নেন।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] তিনি যাদবপুর-এর সাউথ সিটি-তে থাকেন।
তিনি কিশোর নমিত কাপুর অভিনয় একাডেমি থেকে অভিনয়ের কোর্স সম্পন্ন করেন।[১৮] টাইমস অব ইন্ডিয়ার একটি সাক্ষাৎকারে দেব বলেন বাবার কর্মক্ষেত্রগুলোর মধ্যে শুট্যিংস্থলও ছিল। একবার যখন স্কুলে গ্রীষ্মকালীন অবকাস চলছিল তখন তার বাবার সাথে তিনি নানা পাটেকর অভিনীত চলচ্চিত্র প্রহার: দ্য ফাইনাল এট্যাক এর আউটডোর শুট্যিং দেখতে যান। তার কাছে সেটা বাবার কর্মস্থলের পরিবর্তে পারিবারিক ভ্রমণ বলেই মনে হয়েছে বলে জানান দেব। পরে তার বাবার কর্মস্থল হয় মুব্বাইয়ে সেখানে বিভিন্ন সিনেমার সেটে, শুট্যিংস্পটে খাদ্য সরবরাহ সেবা ছিল অন্যতম। অনেক পরিচালকে শুট্যিংস্পটের মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য ছিল আব্বাস-মাস্তান এবং প্রকাশ ঝাঁ'র মত পরিচালকের সিনেমা সেট। অনেক সময় তার বাবা বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকত, দেবকেই তখন সব কিছু দেখাশোনা করতে হত তার বাবার পরিবর্তে। দেব বলেন এমনও দিন গিয়েছে যখন আমাকেই প্লেট পরিষ্কার করতে হয়েছে আবার আমাকেই খাবার সরবরাহ করতে হয়েছে। কম্পিউটার প্রকৌশল বিষয়ক ডিপ্লোমা লাভের পর তিনি অভিনয় বিষয়ে জানতে মুম্বাইয়ে ফিরে যান এবং আব্বাস-মাস্তান পরিচালিত টারজান: দ্য ওন্ডার কার ছবির শ্যুটিং দেখেন।[১৯]
দেব ও বিখ্যাত অভিনেত্রী শুভশ্রী গাঙ্গুলী দর্শকদের একের পর এক সুপারহিট চলচ্চিত্র উপহার দিয়ে গেছেন। পরাণ যায় জ্বলিয়া রে, চ্যালেঞ্জ, খোকাবাবু, খোকা ৪২০ চলচ্চিত্রগুলোতে তারা একত্রে অভিনয় করেছেন। তাদের সম্পর্ক বাস্তব জীবনেও অত্যন্ত কাছের হয়ে পড়ে। তারা একে অপরকে ভালবেসে ফেলে। দীর্ঘ পাঁচ বছর প্রেমের পর বিভিন্ন কারণে বর্তমানে তাদের সম্পর্ক আগের মত নেই। দেব চাঁদের পাহাড় সম্পর্কে এক সাক্ষাৎকারে তিনি শুভশ্রী গাঙ্গুলীকে ইঙ্গিত করে তাকে প্রাক্তন প্রেমিকা অভিহিত করে বলেন, "চেয়েছিলাম, আমার প্রাক্তন প্রেমিকা থেকে শত্রু সবাই ছবিটা দেখুক"।[২০] বুনো হাঁস চলচ্চিত্রের শ্যুটিংয়ে বাংলাদেশে এসে এক সাক্ষাৎকারে তিনি সম্পর্কের বিষয়টি স্বীকার করেন এবং বলেন যে শুভশ্রীর সাথে এখন তার বন্ধুত্ব ছাড়া কোন সম্পর্ক নেই।[২১] শুভশ্রী গাঙ্গুলী এক সাক্ষাৎকারে বলেন, "হি ওয়াজ মাই ফার্স্ট লাভ।"[২২] তিনি আরো বলেন, আই লাভড্ হিম, আই স্টিল লাভ হিম।"[২২] এরপরে দীর্ঘসময় জুড়ে এই জুটি একত্রে কোন কাজ করেনি। অবশেষে ধূমকেতু চলচ্চিত্রের মধ্য দিয়ে এই জুটি আবারও পর্দায় ফিরে আসছে।
দেব ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে ঘাটাল থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে[২৩][২৪][২৫] জয়লাভ করেন।[২৬] তিনি কেশপুর কেন্দ্র থেকেই ১ লক্ষ ১৬ হাজার ৮৬০ টি ভোট লাভ করেন।[২৭]
ডিপ্লোমা ডিগ্রী নেবার পর দেব তাঁর সিনেমার জীবন শুরু করে হিসেবে, আব্বাস-মুস্তানের "টারজানঃ দ্য ওয়ান্ডার কার"-এর সেটে। সে "কিশোর নমিত কাপুর অ্যাক্টিং একাডেমী" হতে অভিনয়ের কোর্স করেন। তাঁর প্রথম মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় ২০০৬ সালে প্রবীর নন্দী কর্তৃক নির্মিত অগ্নিশপথ সিনেমায়।[২৯] এ সিনেমায় সে রচনা ব্যানার্জীর বিপরীতে অভিনয় করে। ছবিটি বক্স অফিসে তেমন কিছু করতে না পারায় ফ্লপ হয়। এই সময় সে রবি কিনাগী কর্তৃক নির্মিত ও শ্রী ভেঙ্কটেশ ফিল্মস কর্তৃক প্রযোজিত আই লাভ ইউ ছবিতে অভিনয় করে। [৩০]
এই ছবির সাফল্যের পরও দেব ১৪ মাস অভিনয় থেকে দূরে থাকে। সে মুম্বাই যায় এবং সেখানে নাচ ও ফাইটিং শেখে বিখ্যাত কোরিওগ্রাফার এজাজ গুলাবের কাছে।
এরপর দেব পুনরায় অভিনয়ে ফিরে আসে এবং রাজ চক্রবর্তীর চ্যালেঞ্জ ছবিতে শুভশ্রী গাঙ্গুলীর বিপরীতে অভিনয় করে। এই ছবি দেবকে খ্যাতির চূড়ায় নিয়ে যায়। এই ছবিটি পশ্চিম বাংলায় বেশ হিট হয়। [৩১]
দেব চিরদিনই তুমি যে আমার ছবিতে বিশেষ ভাবে আবির্ভূত হন। বিভিন্ন আইটেম গানে সে অভিনয় করে। [৩২][৩৩]
২০১০ সালে তিনি স্টার আনন্দ সেরা নতুন প্রতিভা অ্যাওয়ার্ড পান। সেই বছরেই সে সেদিন দেখা হয়েছিল ও দুই পৃথিবী ছবিতে অভিনয় করে। দুই পৃথিবী ছবিটি খুবই বিখ্যাত হয়। [৩৪][৩৫][৩৬]
২০১১ সালে দেব রাজিব বিশ্বাস পরিচালিত ও সুরিন্দার ফিল্মস প্রযোজিত পাগলু ছবিতে কোয়েল মল্লিকের বিপরীতে অভিনয় করে। এই ছবিটি চ্যালেঞ্জ ২ (অক্টোবর, ২০১২) এর আগ পর্যন্ত মুক্তির প্রথম দিনে সর্বাধিক দর্শক দেখার রেকর্ড করে। স্টার জলসায় যেদিন এই ছবিটি দেখানো হয়, সেদিন এই ছবিটি এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ টি.আর.পি (প্রায় ১২.২৫) আয় করে। এই ছবি টি.আর.পি যুদ্ধে থ্রি ইডিয়টসকেও পিছনে ফেলে দেয়। [৩৭] মুক্তির প্রথম সপ্তাহে এই ছবিটি ১৬৬টি সিনেমা হলে এবং ২য় সপ্তাহে ১৬৯টি থিয়েটারে মুক্তি পায়।[৩৮] ১৩ই জুন, ২০১১ পর্যন্ত এর ম্যাটিনি শো ৫ কোটি টাকা আয় করে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] এই ছবিটি ছিল বিনোদনমূলক। এর গান, অভিনয় সবকিছুই ছিল অসাধারণ। এই ছবি বাংলায় এতই বিখ্যাত হয় যে সালমান খানের রেডি ছবিকেও এটি পেছনে ফেলে দেয়। [৩৯]
নভেম্বর,২০১১ সালে সুজিত মন্ডল পরিচালিত তাঁর রোমিও ছবি মুক্তি পায়। এই ছবিতে শুভশ্রী গাঙ্গুলীর বিপরীতে অভিনয় করেন তিনি।[৪০] এই ছবিটি সর্বস্তরের লোকের কাছ থেকে, এমনকি সমালোচকদের কাছ থেকেও প্রশংসা পায়।[৪১][৪২][৪৩][৪৪]
জানুয়ারি, ২০১২ সালে আবারো শুভশ্রী গাঙ্গুলীর বিপরীতে তাঁর খোকাবাবু ছবি মুক্তি পায়। এস্কে মুভি প্রযোজিত এই ছবিটি টানা ৩০০ দিন থিয়েটারে চলে আগের সকল রেকর্ড করে।[৪৫] এই ছবির ডান্স মারে খোকাবাবু নামক গানটি টলিউডের সবচেয়ে ব্যায়বহুল গান। [৪৬][৪৭] তবে অক্টোবর, ২০১২-তে চ্যালেঞ্জ ২-এর চ্যালেঞ্জ নিবি না শালা গানটি এই রেকর্ড ভেঙে দেয়।
আগস্ট, ২০১২ সালে তাঁর অভিনীত পাগলু ২ মুক্তি পায়। একই প্রযোজক ও একই অভিনেত্রীর বিপরীতে অভিনীত এ ছবিটি হিট হলেও পাগলু (২০১১) এর মত বিখ্যাত হয়নি।
অক্টোবর, ২০১২ তে রাজা চন্দ পরিচালিত ও শ্রী ভেঙ্কটেশ ফিল্মস প্রযোজিত চ্যালেঞ্জ ২ মুক্তি পায়। পূজা বোসের বিপরীত অভিনীত এ ছবিটি [৪৮] একই সাথে ২৭০টি থিয়েটারে সারা ভারত জুড়ে (পশ্চিম বাংলা, বিহার, দিল্লি, ছত্রিশগড়, মধ্য প্রদেশ) একসাথে মুক্তি পায়। [৪৯][৫০][৫১][৫২][৫৩] এই ছবিটি ইতিহাসের মধ্যে সবচেয়ে ব্লকবাস্টার হিট হয়। [৫৪][৫৫]পাগলু প্রথম সপ্তাহে বক্স অফিসে ৪.১৫ কোটি টাকা আয় করে। কিন্তু চ্যালেঞ্জ ২ প্রথম সপ্তাহেই ১১.৩৫ কোটি টাকা আয় করে। [৫৬] চ্যালেঞ্জ ২ ইতিহাসের মধ্যে সবচেয়ে ব্যয়বহুল ছবিও বটে। এই ছবির বাজেট ছিল প্রায় ১৪ কোটি টাকা। এর প্রথম সপ্তাহে ১২০০০+ দর্শক দেখে এবং এভাবে এটি খোকাবাবুকেও পেছনে ফেলে দেয়। তাই এই ছবি সর্বকালের ব্লকবাস্টার (All-Time Blockbuster)আখ্যা পায়।[৫৭][৫৮][৫৯]
জুন, ২০১৩ তে মুক্তি পেয়েছিল শুভশ্রী গাঙ্গুলী ও নুসরাত জাহানের বিপরীতে, রাজিব বিশ্বাস পরিচালিত ও এসকে মুভিজের ব্যানারের চলচ্চিত্র খোকাবাবুর সিক্যুয়েল খোকা ৪২০। ত্রিমুখী প্রেমের এই ছবিতে অভিনয় করেছেন রজতাভ দত্ত, হারাধন বন্দ্যোপাধ্যায়, তাপস পালসহ আরো অনেকে। তবে খোকাবাবুর সাথে এর গল্পের চরিত্রগত ছাড়া অন্য কোন মিল নেই। ছবিটি প্রচন্ড হিট হয় এবং প্রথম দিনের আয়ে চ্যালেঞ্জ ২কেও পিছনে ফেলে দেয়। তেলুগু ছবি বৃন্দাবনম্-এর গল্প অবলম্বনে তৈরি এই ছবি।
২০১৩ সালের ১১ই অক্টোবর দুর্গা পূজার সময় মুক্তি পেয়েছিল রংবাজ চলচ্চিত্র। সুরিন্দার ফিল্মসের ব্যানারে, রাজা চন্দর পরিচালনায় এবং কোয়েল মল্লিকের বিপরীতে এই ছবিতে আরো থাকবেন রজতাভ দত্ত, রাহুল দেব প্রমুখ। এই চলচ্চিত্র আগের সব রেকর্ড ভেঙে দিলেও মাত্র দুই মাসের মাথায় দেবেরই অভিনীত চাঁদের পাহাড় সেই রেকর্ড ভেঙে দেয়।
ডিসেম্বর, ২০১৩ সালে মুক্তি পায় প্রখ্যাত সাহিত্যিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের চাঁদের পাহাড় উপন্যাসের উপর ভিত্তি করে কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায় পরিচালিত ও শ্রী ভেঙ্কটেশ ফিল্মসের ব্যানারে চাঁদের পাহাড় চলচ্চিত্র তৈরী হয়। এই ছবিটির শ্যুটিং হয়েছে আফ্রিকার জঙ্গলে। সিংহের মোকাবেলা ও ব্ল্যাক মাম্বার মত ভয়ানক সাপের সাথে যুদ্ধ, সবটাই আছে এ ছবিতে।[৬০] পরিচালক দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়ায় দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, যে প্রথম থেকেই তাদের দেবকে নেবার ইচ্ছে ছিল, কারণ ছবির স্বার্থে এরকম স্পোর্টি দেহই তাদের দরকার।[৬১] এর আগেও অনেকেই এই ছবিটি নির্মাণ করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু বাজেটের অভাবে তা সম্ভব হয়নি। এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ বেশি বাজেটের ছবিটি আগের সব রেকর্ড ভেঙে ইতোমধ্যেই রেকর্ড করেছে। সর্বস্তরের মানুষ এই চলচ্চিত্রটির ভূয়সী প্রশংসা করেছে।[৬২]
এরপর তিনি সমরেশ মজুমদারের বুনো হাঁস উপন্যাসের উপর ভিত্তি করে নির্মিত বুনো হাঁসে অমল চরিত্রে অভিনয় করছেন। লেখক নিজেই দেবের নামটি বলেছিলেন।[৬৩]
এছাড়া তিনি শ্রী ভেঙ্কটেশ ফিল্মসের ব্যানারে মিমি চক্রবর্তীর বিপরীতে রাজ চক্রবর্তীর পরিচালনায় তার পরবর্তী চলচ্চিত্র যোদ্ধা-দ্য ওয়ারিয়র-এর শ্যুটিং করছে। এরই সাথে চলছে শ্রী ভেঙ্কটেশ ফিল্মসের ব্যানারে সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় ও শ্রাবন্তীর বিপরীতে বিন্দাস-এর দৃশ্যায়ণ। এই চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করছেন রাজিব বিশ্বাস।[৬৪]
দেব বহু চলচ্চিত্রে অতিথি চরিত্রে অভিনয় করেন। ২০০৯ সালে তিনি শ্রী ভেঙ্কটেশ ফিল্মস প্রযোজিত ও রাজ চক্রবর্তী পরিচালিত চিরদিনই তুমি যে আমার চলচ্চিত্রের "প্যান্টে তালি" নামক গানে বিশেষভাবে আবির্ভূত হন।[৬৫] গানটি ঐ সালের সেরা গানগুলোর তালিকায় প্রথমসারিতে ছিল।
একই বছরে তিনি কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় পরচালিত জ্যাকপট চলচ্চিত্রের "জীবনে কী পাবনা" গানের আইটেম গানে অংশ নেন। গানটি মূলত সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় অভিনীত একটি চলচ্চিত্রের গান ছিল।[৬৬][৬৭]
২০১০ সালে তিনি অভীক মুখোপাধ্যায় পরিচালিত একটি তারার খোঁজে চলচ্চিত্রে নিজের চরিত্রে আবির্ভূত হন।[৬৮][৬৯][৭০]
২০১২ সালে তিনি সুজিত মন্ডল পরিচালিত বাওয়ালি আনলিমিটেড চলচ্চিত্রেও অতিথি চরিত্রে আবির্ভূত হন।[৭১]
নম্বর | চলচ্চিত্র | প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান | বছর |
---|---|---|---|
০১ | চিরদিনই তুমি যে আমার | শ্রী ভেঙ্কটেশ ফিল্মস | ২০০৮ |
০২ | জ্যাকপট | ২০০৯ | |
০৩ | একটি তারার খোঁজে | ২০১০ | |
০৪ | বাওয়ালি আনলিমিটেড | ২০১২ | |
০৫ | অভিশপ্ত নাইটি | ২০১৪ |
২০১১ সালের নভেম্বরে রাজ চক্রবর্তী পরিচালিত ও সানন্দা টিভিতে সম্প্রচারিত ধারাবাহিক সবিনয় নিবেদন-এ তিনি অতিথি চরিত্রে আবির্ভূত হন। দেব তার রোমিও চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ ঘটান "আমি রোমিও", "খোকাবাবু যায়", "গাল মিঠ্ঠি মিঠ্ঠি বোল্" ও "পাগলু থোড়া সা করলে রোমান্স" গানের সাথে নাচেন। পরবর্তীতে দেব টেলিগ্রাফ'কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, "আমি নয়না ও জয়দীপ এর সুখী বিবাহিত জীবনের প্রার্থনা করি।"[৭২] পরবর্তীতে আবারও ২০১২ সালের মার্চ মাসে সানন্দা টিভিতে সম্প্রচারিত হোলির এক বিশেষ অনুষ্ঠান রঙের আনন্দে তেও তিনি আবির্ভূত হন।[৭৩][৭৪]
২০১০ সালের এপ্রিলে এবং আবারও ২০১১ সালের ডিসেম্বরে তিনি মীরাক্কেল আক্কেল চ্যালেঞ্জার নামক জি বাংলায় প্রচারিত, শুভঙ্কর চট্টোপাধ্যায় পরিচালিত ও মীর আফসার আলী কর্তৃক উপস্থাপনা কৃত এক হাসির অনুষ্ঠানে অতিথি বিচারক হিসেবে আসেন।[৭৫][৭৬][৭৭] এছাড়াও তিনি দাদাগিরি সীজন ২, সীজন ৪, সীজন ৭ এ আসেন। তিনি ডান্স বাংলা ডান্সের প্রধান বিচারক ও কোচ হন, যে স্থানে পূর্বে মিঠুন চক্রবর্তী ছিলেন।
দেব নানা অনুষ্ঠান করেছেন এবং বহু কনসার্টে অংশও নিয়েছেন। ২০০৭ সালে তিনি বেঙ্গল ফিল্ম জার্নালিস্টস অ্যাসোসিয়েশন (বিএফজেএ) আয়োজিত অনুষ্ঠানে পারফরম্যান্স করেন।[৭৮] ২০০৯ সালে তিনি ইটিভি বাংলায় প্রচারিত ইটিভি বাংলা প্রথমায় অনুষ্ঠান করেন। অসাধারণ নাচ করা ছাড়াও তার মঞ্চে তিনি স্বতঃস্ফূর্ত। তিনি স্টার জলসা এন্টারটেইনমেন্ট অ্যাওয়ার্ড ২০০৯, স্টার জলসা এন্টারটেইনমেন্ট অ্যাওয়ার্ড ২০১০, জি বাংলার গৌরব সম্মান ২০১১, স্টার জলসা এন্টারটেইনমেন্ট অ্যাওয়ার্ড ২০১১, জয় হে, জি বাংলার গৌরব সম্মান ২০১১ প্রভৃতি অনুষ্ঠানেও পারফর্ম করেন।[৭৯]
বছর | পুরস্কার | বিভাগ | চলচ্চিত্র | ফলাফল |
---|---|---|---|---|
২০০৯ | আনন্দলোক অ্যাওয়ার্ড | সেরা অভিনেতা | চ্যালেঞ্জ[৮০] | বিজয়ী |
আনন্দলোক অ্যাওয়ার্ড | সেরা অ্যাকশন হিরো | চ্যালেঞ্জ[৮১] | বিজয়ী | |
২০১০ | স্টার জল্সা এন্টারটেইনমেন্ট অ্যাওয়ার্ড ২০১০ | সেরা অভিনেতা | পরাণ যায় জ্বলিয়া রে | বিজয়ী |
স্টার জল্সা এন্টারটেইনমেন্ট অ্যাওয়ার্ড ২০১০ | সেরা অভিনেতা | দুজনে | মনোনীত | |
টেলি সিনে অ্যাওয়ার্ড ২০১০ | সেরা অভিনেতা | চ্যালেঞ্জ | বিজয়ী | |
কলাকার অ্যাওয়ার্ড ২০১০ | সেরা অভিনেতা | চ্যালেঞ্জ | বিজয়ী | |
স্টার আনন্দ সেরা বাঙালি অ্যাওয়ার্ড ২০১০ | সেরা নতুন প্রতিভা | বিজয়ী | ||
আনন্দলোক অ্যাওয়ার্ড ২০১০ | সেরা অভিনেতা | লে ছক্কা[৮২][৮৩][৮৪] | বিজয়ী | |
২০১১ | বিগ বাংলা মুভি অ্যাওয়ার্ড ২০১১ | যুগের সেরা অভিনেতা | বিজয়ী | |
স্টার জল্সা এন্টারটেইনমেন্ট অ্যাওয়ার্ড ২০১১ | সেরা নর্তক | পাগলু[৮৫] | বিজয়ী | |
জি বাংলা অ্যাওয়ার্ড ২০১১ | সেরা অভিনেতা | লে ছক্কা | মনোনীত | |
২০১২ | স্টার গাইড বাংলা ছবি অ্যাওয়ার্ড ২০১২ | সেরা অভিনেতা | পাগলু | বিজয়ী |
আনন্দলোক অ্যাওয়ার্ড ২০১২ | সেরা অভিনেতা | পাগলু ২[৮৬] | মনোনীত | |
জি বাংলা অ্যাওয়ার্ড ২০১২ | সেরা অভিনেতা | খোকাবাবু | বিজয়ী | |
কলাকার অ্যাওয়ার্ড ২০১২ | সেরা অভিনেতা | পাগলু[৮৭] | বিজয়ী | |
১২তম টেলি সিনে অ্যাওয়ার্ড | সেরা অভিনেতা | পাগলু[৮৮] | বিজয়ী | |
২০১৩ | ১৩তম টেলি সিনে অ্যাওয়ার্ড | সেরা অভিনেতা | চ্যালেঞ্জ ২[৮৯] | মনোনীত |
স্টার জলসা এন্টারটেইনমেন্ট অ্যাওয়ার্ড | সেরা নর্তক | বিজয়ী | ||
স্টার জলসা এন্টারটেইনমেন্ট অ্যাওয়ার্ড | সেরা গানের শুরু (বেস্ট ডেব্যুট সিঙ্গিং) | খোকাবাবু | মনোনীত | |
২০১৪ | কলাকার অ্যাওয়ার্ড ২০১৪ | সেরা অভিনেতা | রংবাজ | বিজয়ী |
কলাকার অ্যাওয়ার্ড ২০১৪ | সেরা অভিনেতা | চাঁদের পাহাড় | বিজয়ী | |
স্টার জলসা এন্টারটেইনমেন্ট অ্যাওয়ার্ড | সেরা অভিনেতা | চাঁদের পাহাড় | বিজয়ী | |
জি বাংলার গৌরব সম্মান ২০১৪ | সেরা অভিনেতা | চাঁদের পাহাড় | বিজয়ী | |
বিএফজেএ অ্যাওয়ার্ড ২০১৪ | সেরা অভিনেতা | চাঁদের পাহাড় | বিজয়ী | |
আনন্দলোক অ্যাওয়ার্ড ২০১৪ | সেরা অভিনেতা | চাঁদের পাহাড় | বিজয়ী | |
জি বাংলার গৌরব সম্মান ২০১৪ | সেরা নর্তক | মনোনীত | ||
১৪তম টেলি সিনে অ্যাওয়ার্ড | সেরা অভিনেতা | চাঁদের পাহাড় | প্রক্রিয়াধীন | |
১৪তম টেলি সিনে অ্যাওয়ার্ড | সেরা জুটি (দেব-কোয়েল) | রংবাজ | প্রক্রিয়াধীন | |
টলিউড ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড ২০১৪ | সেরা অভিনেতা | চাঁদের পাহাড় | বিজয়ী | |
টলিউড ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড ২০১৪ | সেরা রোমান্টিক নায়ক | খোকা ৪২০ | মনোনীত | |
টলিউড ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড ২০১৪ | সেরা অ্যাকশন নায়ক | রংবাজ | মনোনীত | |
ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ড ইস্ট ২০১৪ | গ্লোবাল ইস্ট পিপলস চয়েস | চাঁদের পাহাড় | বিজয়ী | |
মহানায়ক (প্রাদেশিক সম্মাননা)[৯০][৯১] | পুরুষ | সিনেমায় অসামান্য অবদান | বিজয়ী | |
নম্বর | বছর | চলচ্চিত্র | প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান | গানের নাম |
---|---|---|---|---|
০১ | ২০১১ | খোকাবাবু | এসকে মুভিজ | খোকা চালু চিজ |
০২ | ২০১৭ | চ্যাম্প | দেব এন্টারটেনমেন্ট ভেনচার | দেখো দেখো চ্যাম্প |
নম্বর | চলচ্চিত্র | প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান | বছর |
---|---|---|---|
০১ | ধুমকেতু | দেব এন্টারটেনমেন্ট ভেনচার দাগ ক্রিয়েটিভ মিডিয়া |
|
০২ | চ্যাম্প | দেব এন্টারটেনমেন্ট ভেনচার শ্রী ভেঙ্কটেশ ফিল্মস |
২০১৭ |
০৩ | ককপিট | দেব এন্টারটেনমেন্ট ভেনচার | |
০৪ | কবীর | ২০১৮ | |
০৫ | হইচই আনলিমিটেড | ||
০৬ | পাসওয়ার্ড | ২০১৯ | |
০৭ | হবুচন্দ্র রাজা গবুচন্দ্র মন্ত্রী | ২০২১ | |
০৮ | টনিক | ||
০৯ | কিশমিশ | ২০২২ | |
১০ | কাছের মানুষ | ||
১১ | প্রজাপতি |
বইয়ের নাম | ভাষা | প্রকাশক | বিষয় |
---|---|---|---|
আমি দেব | বাংলা | গ্রেমাইন্ড পাবলিকেশন্স | জীবনীমূলক গ্রন্থ |
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.