Loading AI tools
বাংলাদেশের একটি ইসলামপন্থী রাজনৈতিক দল উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ বাংলাদেশের একটি ইসলামপন্থী রাজনৈতিক দল। ব্রিটিশ ভারতে ১৯১৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় জমিয়ত উলামায়ে হিন্দ, যা অবিভক্ত ভারতের পক্ষে স্বাধীনতা সংগ্রাম চালিয়ে যায়। পাকিস্তান আন্দোলনকে সমর্থন দিয়ে তার থেকে ১৯৪৫ সালে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় জমিয়ত উলামায়ে ইসলাম। স্বাধীনতা উত্তর পাকিস্তানের প্রথম নির্বাচনে পূর্ব পাকিস্তানের জমিয়ত, নেজামে ইসলাম পার্টি নামে নিজেদের নির্বাচনি সেল গঠন করে ৩৬টি আসনে জয়লাভ করে। ১৯৫৮ সালে সামরিক শাসন জারি হলে পাকিস্তানে সমস্ত রাজনৈতিক কার্যকলাপ নিষিদ্ধ হয়। সামরিক শাসন পরবর্তী জমিয়ত নেতাদের রাজনৈতিক কার্যক্রম শুরু হলে পূর্বে গঠিত জমিয়তের নির্বাচনি সেল নেজামে ইসলাম পার্টি একটি স্বতন্ত্র দলের রূপ ধারণ করতে থাকে। অন্যদিকে ১৯৬৪ সালে আশরাফ আলী বিশ্বনাথীর আহ্বানে সিলেট বিভাগীয় কমিটি গঠনের মাধ্যমে জমিয়তের আরেক অংশ সংগঠিত হয়, যারা মূলত পূর্বের জমিয়ত উলামায়ে হিন্দের পূর্ব পাকিস্তান অংশের কর্মী ছিলেন। ১৯৬৭ সালে জমিয়ত স্পষ্টতঃ দুইভাগে ভাগ হয়ে যায়। অন্যভাগ নেজামে ইসলাম পার্টি নামে কার্যক্রম চালিয়ে যায়। জমিয়ত ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে ইসলামি দলগুলোর মধ্যে কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক পরিষদে সর্বাধিক আসন লাভ করে। ১৯৭১ সালের ২২ মার্চ এটি আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে অবস্থান নিয়ে পশ্চিম পাকিস্তান জমিয়তের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে এবং দলের বর্তমান নামটি গ্রহণ করে। ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী ধর্মভিত্তিক দল নিষিদ্ধ হলেও এটি নিষিদ্ধ হয় নি। স্বাধীন বাংলাদেশে এটি ইসলামি শাসনতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম অব্যাহত রেখেছে। নব্বইয়ের দশকে এটি মুহাম্মদুল্লাহ হাফেজ্জীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে তাওবার রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করে এবং সম্মিলিত সংগ্রাম পরিষদে যোগ দেয়। ১৯৯০ সালে এটি ইসলামী ঐক্যজোটে অংশগ্রহণ করে। ইসলামী ঐক্যজোটের অংশ হিসেবে ১৯৯৯ সালে এটি বিএনপির নেতৃত্বাধীন চার দলীয় জোটে যোগদান করে এবং ২০০১ সালে সরকার গঠনে অংশীদার হয়। চার দলীয় জোট পরবর্তীতে বিশ দলীয় জোটে পরিণত হয়। ২০২১ সালে এটি বিশ দলীয় জোট থেকে বের হয়ে যায়। ২০১০ সালে প্রতিষ্ঠিত ছাতা সংগঠন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশে এটি সবচেয়ে প্রভাবশালী ছিল। ২০২০ সালে গঠিত হেফাজতের ১৫১ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটিতে জমিয়তের নেতা ছিল ৩৪ জন।
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ | |
---|---|
সংক্ষেপে | জমিয়ত |
চেয়ারপার্সন | জিয়া উদ্দিন |
মহাসচিব | মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী |
প্রতিষ্ঠা | ২২ মার্চ ১৯৭১ |
নিবন্ধিত | ১৩ নভেম্বর ২০০৮ |
বিভক্তি | বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামা |
পূর্ববর্তী | জমিয়ত উলামায়ে ইসলাম |
সদর দপ্তর | পুরানা পল্টন, ঢাকা |
ছাত্র শাখা | ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশ |
যুব শাখা | যুব জমিয়ত বাংলাদেশ |
ভাবাদর্শ | |
রাজনৈতিক অবস্থান | ডানপন্থী |
আনুষ্ঠানিক রঙ | |
স্লোগান | জমিয়তের দাওয়াত, জমিয়তের পয়গাম; আল্লাহর জমিনে, আল্লাহর নেজাম |
জাতীয় সংসদের আসন | ০ / ৩৫০
|
নির্বাচনী প্রতীক | |
দলীয় পতাকা | |
ওয়েবসাইট | |
jueibd | |
২০১৮ সালের জানুয়ারিতে মুহাম্মদ ওয়াক্কাসের নেতৃত্বে একই নামে ১২১ সদস্য বিশিষ্ট আরেকটি কমিটি গঠিত হয়। |
স্বাধীন বাংলাদেশে জমিয়তের প্রথম সভাপতি ছিলেন তাজাম্মুল আলী ও প্রথম মহাসচিব ছিলেন শাহ আহরারুজ্জামান। দলটির বর্তমান সভাপতি জিয়া উদ্দিন ও মহাসচিব মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী। ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে দলটিতে পাল্টাপাল্টি বহিষ্কারের ঘটনা ঘটে। এসময় বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনে দলটির নিবন্ধিত নামে সভাপতি ছিলেন আব্দুল মোমিন ইমামবাড়ি ও মহাসচিব নূর হুসাইন কাসেমী। তারা মুহাম্মদ ওয়াক্কাসকে দল থেকে বহিষ্কার করেন। পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে তিনি ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে একই নামে ১২১ সদস্য বিশিষ্ট জমিয়তের আরেকটি কমিটি গঠন করেন। আব্দুল মোমিন ইমামবাড়ির মৃত্যুর পর সভাপতির দায়িত্বে আসেন জিয়া উদ্দিন এবং নূর হুসাইন কাসেমীর মৃত্যুর পর মহাসচিব পদে আসেন মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী। ইতিপূর্বে রাজনৈতিক মতপার্থক্যের কারণে জমিয়ত থেকে বের হয়ে ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামা এবং আলিমুদ্দিন দুর্লভপুরী জমিয়তে উলামা বাংলাদেশ গঠন করেন।
ব্রিটিশদের শাসন থেকে ভারতকে স্বাধীন করার জন্য ভারতীয় মুসলমানরা ১৮৫৭ সালে সিপাহি বিদ্রোহ সংগঠিত করে। সিপাহি বিদ্রোহের ধারাবাহিকতায় শামলীর যুদ্ধ সহ এই বিদ্রোহে পরাজয়ের পর তার ক্ষতি মিটানোর জন্য কাসেম নানুতুবির নেতৃত্বে কয়েকজন আলেম ১৮৬৬ সালের ৩০ মে দেওবন্দের সাত্তা মসজিদের ডালিম গাছের নিচে দারুল উলুম দেওবন্দ প্রতিষ্ঠা করে।[1] এই মাদ্রাসার প্রথম শিক্ষক মাহমুদ দেওবন্দি ও প্রথম ছাত্র ছিলেন মাহমুদ হাসান দেওবন্দি৷ পরবর্তীতে মাহমুদ হাসান দেওবন্দি দারুল উলুম দেওবন্দের প্রধান শিক্ষকের পদে অধিষ্ঠিত হন এবং তার ছাত্রদের মাধ্যমে তিনি সশস্ত্র বিপ্লব গড়ে তুলতে স্বচেষ্ট হন। তিনি পর্যায়ক্রমে সামরাতুত তারবিয়াত, জমিয়তুল আনসার, নাযারাতুল মাআরিফ আল কুরআনিয়া গঠন করেন।[2] তার রেশমি রুমাল আন্দোলন ফাঁস হয়ে গেলে তিনি মাল্টায় নির্বাসিত হন। এরই মধ্যে তার ছাত্ররা ভারতে জমিয়ত উলামায়ে হিন্দ গঠন করেন। কারামুক্ত হয়ে ভারতে প্রত্যাবর্তন করে তিনি জমিয়তের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। দায়িত্ব গ্রহণের একমাসের মাথায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন৷ জমিয়ত খিলাফত আন্দোলন ও ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সাথে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে। পরবর্তীতে জমিয়তের নেতৃত্বে আসেন দারুল উলুম দেওবন্দের অধ্যক্ষ হুসাইন আহমদ মাদানি। তিনি অখণ্ড ভারতের দাবিতে কংগ্রেসের সাথে মিলে স্বাধীনতা সংগ্রাম চালিয়ে যান।[3] ১৯৪৫ সালের ১১ জুলাই দারুল উলুম দেওবন্দের সদরে মুহতামিম শাব্বির আহমদ উসমানির নেতৃত্বে আরেকটি দল জমিয়ত থেকে বের হয়ে জমিয়ত উলামায়ে ইসলাম গঠন করে পাকিস্তান আন্দোলনকে সমর্থন করেন, যাদের তাত্ত্বিক গুরু ছিলেন দারুল উলুম দেওবন্দের আরেক ছাত্র আশরাফ আলী থানভী।[4][5]
১৯৪৫ সালের ১১ জুলাই পাকিস্তান আন্দোলনের সমর্থক আলেমদের আহ্বানে শাব্বির আহমদ উসমানির অনুপস্থিতিতে তাকে সভাপতি করে কলকাতার মোহাম্মদ আলী পার্কে জমিয়ত উলামায়ে ইসলাম প্রতিষ্ঠা লাভ করে।[6] ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট পাকিস্তান স্বাধীনতা লাভ করলে পশ্চিম পাকিস্তানে স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলন করেন জমিয়ত সভাপতি শাব্বির আহমদ উসমানি ও পূর্ব পাকিস্তানে স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলন করেন জমিয়ত নেতা জাফর আহমদ উসমানি।[6] জমিয়ত পাকিস্তানে ইসলামি শাসনতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম অব্যাহত রাখে। ১৯৪৯ সালে শাব্বির আহমদ উসমানির প্রচেষ্টায় সংসদে কারারদাদে মাকাসেদ বা শাসনতন্ত্রের আদর্শ প্রস্তাব পাস হয়।[7] ১৯৫১ সালে সুলাইমান নদভীর সভাপতিত্বে সিলেটে অনুষ্ঠিত জমিয়তের সম্মেলনে সর্বসম্মতিক্রমে ইসলামি শাসনতন্ত্রের জন্য ২২ দফা মূলনীতি প্রণীত ও অনুমোদিত হয়।[3] ১৯৫২ সালে লিয়াকত আলি খানের হাতে এই মূলনীতি তুলে দেওয়া হয় এবং ইসলামি শাসন ব্যবস্থার দাবিতে সারা দেশে আন্দোলন গড়ে তুলা হয়।[6] ১৯৫৩ সালে জমিয়ত কাদিয়ানীদের অমুসলিম ঘোষণার দাবিতে খতমে নবুয়ত আন্দোলন গড়ে তুলে।[8] জমিয়ত নেতা আতাউল্লাহ শাহ বুখারী, গোলাম গাউস হাজারভির ফাঁসির আদেশ হয়৷ হোসেন শহীদ সোহ্রাওয়ার্দীর হস্তক্ষেপে সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড করা হয়।[9] পাকিস্তানের স্বাধীনতার পর দীর্ঘসময় দেশের সংবিধান প্রণীত না হওয়ায় সাধারণ নির্বাচনের দাবি উঠলে ১৯৫৪ সালে সরকার প্রথম সাধারণ নির্বাচনের ঘোষণা দেয়।[10] পূর্ব পাকিস্তান জমিয়ত নির্বাচন পরিচালনার জন্য নেজামে ইসলাম পার্টি নামে সেই সাধারণ নির্বাচনের পার্লামেন্টারী বোর্ড গঠন করে। আতহার আলী এর সভাপতি ছিলেন। নেজামে ইসলাম পার্টি যুক্তফ্রন্টে যোগ দেয়। পূর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট ক্ষমতায় চলে আসে, নেজামে ইসলাম ৩৬টি আসনে জয়লাভ করে।[11] ফলশ্রুতিতে খতমে নবুয়ত আন্দোলনে আটককৃত জমিয়ত নেতারা মুক্তিলাভ করে।[9] ১৯৫৬ সালে পাকিস্তানের সংবিধান গৃহীত হয়। ১৯৫৮ সালে জারি হয় সামরিক শাসন। নিষিদ্ধ হয় সমস্ত রকমের রাজনৈতিক কার্যকলাপ। ১৯৬২ সালে সামরিক শাসন উঠে গেলে জমিয়ত পুনরায় রাজনৈতিক তৎপরতা শুরু করে। আবদুল্লাহ দরখাস্তিকে সভাপতি এবং গোলাম গাউস হাজারভিকে সাধারণ সম্পাদক করে জমিয়তের নতুন কমিটি গঠন করা হয়।[12]
আশরাফ আলী বিশ্বনাথীর আহ্বানে ১৯৬৪ সালের ১ নভেম্বর সিলেট হাওয়াপাড়া মসজিদে সামরিক শাসন পরবর্তী পূর্ব পাকিস্তান জমিয়তের প্রথম কমিটি জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম সিলেট গঠন করা হয়, সভাপতি ছিলেন রিয়াছত আলী চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক হন আশরাফ আলী বিশ্বনাথী।[6] ১৯৬৬ সালের ১৬ মার্চ আব্দুল করিম কৌড়িয়াকে পূর্ব পাকিস্তান জমিয়তের সভাপতি ও শামসুদ্দীন কাসেমীকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়, এতে দলের নেতৃত্ব চলে আসে জমিয়ত উলামায়ে হিন্দের সমর্থকদের হাতে।[13] ১৯৬৭ সালে জমিয়ত স্পষ্টতঃ দুইভাগ হয়ে যায়।[14] ১৯৬৯ সালের ৪ জানুয়ারি আহমদ দুদু মিয়াকে সভাপতি ও শামসুদ্দীন কাসেমীকে সাধারণ সম্পাদক পদে পুনঃনির্বাচিত করা হয়।[6] জমিয়ত খেজুর গাছ মার্কা নিয়ে ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে। এ নির্বাচনে ইসলামি দলগুলোর মধ্যে জমিয়ত উলামায়ে ইসলাম কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক পরিষদে অধিক সংখ্যক আসন লাভ করে। জমিয়তের সাধারণ সম্পাদক মুফতি মাহমুদ খাইবার পাখতুনখোয়ার মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হন। এই নির্বাচনে জমিয়তের মনোনয়নে পশ্চিম পাকিস্তান থেকে জাতীয় পরিষদে ৭ জন ও প্রাদেশিক পরিষদে ১১ জন বিজয় লাভ করে। পূর্ব পাকিস্তানে জমিয়তের কেউ বিজয়ী না হলেও অনেক স্থানে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে।[15]
১৯৭০ সালের নির্বাচনে বিজয়ী দলকে ক্ষমতা হস্তান্তর না করার ফলস্বরূপ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হয়। জমিয়ত স্বাধীনতার পক্ষে কাজ করে।[16] ১৯৭১ সালে জমিয়ত সভাপতি আহমদ দুদু মিয়া স্বাধীনতার বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দিলে জমিয়তের পৃষ্ঠপোষক আব্দুল করিম শায়খে কৌড়িয়াকে সভাপতির দায়িত্ব প্রদান করা হয়।[16] ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করে। স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি ও ধর্মভিত্তিক দল নিষিদ্ধ হলেও বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে ভূমিকা রাখার কারণে একমাত্র ইসলামি দল হিসেবে জমিয়তকে নিষিদ্ধ করা হয় নি।[17][3] তবে ১৯৭২ সালের সংবিধান অনুযায়ী জমিয়ত তার রাজনৈতিক কর্মকান্ড বন্ধ করে দেয়। স্বাধীনতার পর বন্ধ ঘোষিত মাদ্রাসা সমূহ খুলে দেওয়ার ব্যাপারে জমিয়ত নেতৃবৃন্দ ভূমিকা রাখেন।[3]
১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে নিখিল পাকিস্তান জমিয়ত উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব মুফতি মাহমুদ জুলফিকার আলী ভুট্টোর বিরুদ্ধে বিপুল ভোটে জয়লাভ করেন।[18] পাকিস্তানের অন্যতম জাতীয় নেতা হিসেবে সর্বপ্রথম তিনিই ১৯৭১ সালের ১৩ মার্চ ইয়াহিয়া-ভূট্টোর নীতিকে ভুল আখ্যা দিয়ে শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের আহ্বান জানান।[18] বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে তিনি অসহযোগ আন্দোলন দমনে পশ্চিমা শাসকগোষ্ঠীর সামরিক আইন প্রত্যাহার, ২৫ মার্চের আগেই ক্ষমতা হস্তান্তর এবং সেনাবাহিনীকে ব্যারাকে ফিরিয়ে নেয়ার আহ্বান জানান। ১৯৭১ সালের ১৬ থেকে ২৪ মার্চে ইয়াহইয়া-মুজিবের দফায় দফায় বৈঠকের মধ্যে তিনি পূর্ব পাকিস্তানে এসে শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে একাধিক বৈঠক করেন এবং পূর্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্তশাসনের পক্ষে কথা বলেন। ইয়াহইয়া-মুজিব বৈঠক ব্যর্থ হলে তিনি পাকিস্তান চলে যান এবং পূর্ব পাকিস্তান জমিয়তকে ৩টি নির্দেশ দিয়ে যান। যথা:[18]
মুফতি মাহমুদের নির্দেশমত ২২ মার্চ পূর্ব পাকিস্তান জমিয়ত বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে অবস্থান নিয়ে একটি প্রস্তাব পাস করে।[20] প্রস্তাবের ভাষ্য:
“ | আজ থেকে ‘পূর্ব পাকিস্তান জমিয়ত' পশ্চিম পাকিস্তান জমিয়তের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করল। এখন থেকে পূর্ব পাকিস্তান জমিয়তের নাম হবে ‘জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ' | ” |
— [21] |
এর পাঁচদিন পর শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দেন।
জমিয়ত নেতা শামসুদ্দীন কাসেমী, জহিরুল হক ভূঁইয়া, মুস্তফা আযাদ, আবুল হাসান যশোরী প্রমূখ সরাসরি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। মুহিউদ্দীন খান, আমিন উদ্দীন কাতিয়া প্রমূখ মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করেন।[22] ভারতের জমিয়ত উলামায়ে হিন্দ আসাম, পশ্চিমবঙ্গ, দিল্লি, হায়দ্রাবাদ প্রদেশে বিভিন্ন সভা-সেমিনার, কনভেনশন আয়োজন করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের পক্ষে জনমত গঠনে ব্যাপক ভূমিকা রাখেন।[18] জমিয়ত উলামায়ে হিন্দের সভাপতি আসআদ মাদানি দিল্লিতে বিশাল মহাসমাবেশসহ ভারতজুড়ে প্রায় ৩০০ সমাবেশ করেন।[23] ১৯৭১ সালের ২৬ এপ্রিল ও ১৮ আগস্ট কলকাতার মুসলিম ইন্সটিটিউট হলে আয়োজিত জমিয়তের কনভেনশন থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পক্ষে দু'দফায় দুটি প্রস্তাব পাস করেন তিনি।[23] সীমান্ত অঞ্চলে তার নেতৃত্বে বহু ক্যাম্প স্থাপন করে শরণার্থীদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়। ১৯৭৩ সালে ইন্দিরা গান্ধীর বিশেষ দূত হিসেবে তিনি বাংলাদেশে এসে শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে বৈঠক করে তাকে একথা বুঝাতে সক্ষম হন যে, অধিকাংশ আলেম-ওলামা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধী ছিল না, বরং বহু আলেম মুক্তিযুদ্ধে প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহণ করেছেন এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলের মুক্তিযোদ্ধারা তাদের ব্যাপক সাহায্য-সহযোগিতা পেয়েছে।[23] মুক্তিযুদ্ধের বিদেশি বন্ধু হিসেবে স্বীকৃতি স্বরূপ ২০১৩ সালের ১ অক্টোবর বাংলাদেশ সরকার তাকে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা (মরণোত্তর) পদক প্রদান করে।[23] বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অবদান রাখায় স্বাধীনতা পরবর্তী সব ইসলামি দল নিষিদ্ধ হলেও জমিয়তকে নিষিদ্ধ করা হয় নি।[17] জমিয়তের স্বাধীনতা সংগ্রামে অবদান নিয়ে মূসা আল হাফিজ মুক্তিযুদ্ধ ও জমিয়ত: জ্যোতির্ময় অধ্যায় রচনা করেছেন।[24]
১৯৭৪ সালের জানুয়ারিতে স্বাধীন বাংলাদেশে সর্বপ্রথম ঢাকার যাত্রাবাড়ীস্থ জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম মাদানিয়ায় অনুষ্ঠিত এক উলামা সম্মেলনে তাজাম্মুল আলী জালালাবাদীকে সভাপতি ও শাহ আহরারুজ্জামান হবিগঞ্জীকে সাধারণ সম্পাদক করে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ গঠন করা হয়।[25] ১৯ অক্টোবর একই জায়গায় অনুষ্ঠিত আরেক উলামা সম্মেলনে আব্দুল করিম কৌড়িয়াকে সভাপতি ও শামসুদ্দীন কাসেমীকে সাধারণ সম্পাদক করে ১৫ সদস্যবিশিষ্ট জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মজলিসে আমেলা গঠন করা হয়। ১৯৭৬ সালের ২৫ ও ২৬ ডিসেম্বর পাটুয়াটুলী জামে মসজিদে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে আজিজুল হককে সভাপতি ও মুহিউদ্দীন খানকে সাধারণ সম্পাদক করে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ পুনর্গঠন করা হয়। এই সম্মেলনে কওমি মাদ্রাসা সমূহকে একটি বোর্ডের আওতায় নিয়ে আসার জন্য রেজাউল করীম ইসলামাবাদীকে আহ্বায়ক করে একটি সাব কমিটি গঠন করা হয়। ইসলামাবাদী ১৯৭৮ সালে লালবাগের শায়েস্তা খাঁ হলে কওমি মাদ্রাসা সমূহের এক সম্মেলন আহ্বান করেন, সেখানে বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ নামে একটি কওমি শিক্ষা বোর্ড গঠিত হয়।[25] ১৯৭৮ সালে মুহিউদ্দীন খান সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর পাটুয়াটুলী জামে মসজিদে অনুষ্ঠিত জমিয়তের কাউন্সিলে আজিজুল হককে সভাপতি ও শামসুদ্দীন কাসেমীকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়। উক্ত কাউন্সিলে জমিয়তের গঠনতন্ত্র সংশোধন করা হয় এবং ১৯৮০ সালের ৩০ ডিসেম্বর মজলিসে শূরার অধিবেশনে তা অনুমোদিত হয়। জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর জমিয়ত নেতৃবৃন্দের সক্রিয় তৎপরতায় মুহাম্মদুল্লাহ হাফেজ্জী ১৯৮১ সালের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে তৃতীয় স্থান লাভ করেন। সেসময় জমিয়ত নিজেদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড স্থগিত রেখে হাফেজ্জীর খেলাফত আন্দোলনের সাথে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।[25] খেলাফত আন্দোলনের নেতৃবৃন্দের ইরান সফর ও ইরানের সাথে সম্পর্ক নিয়ে মতানৈক্যের কারণে ১৯৮৪ সালের এক সম্মেলনে জমিয়ত খেলাফত আন্দোলন থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে নেয় এবং আব্দুল করিম কৌড়িয়াকে সভাপতি ও শামসুদ্দীন কাসেমীকে সাধারণ সম্পাদক করে জমিয়ত পুনরায় নিজস্ব রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরু করে।[26] ১৯৮৮ সালের ২০ মার্চ জামেয়া হুসাইনিয়া ইসলামিয়া আরজাবাদ মাদ্রাসায় অনুষ্ঠিত জমিয়তের কাউন্সিলে আব্দুল করিম কৌড়িয়া সভাপতি ও শামসুদ্দীন কাসেমী সাধারণ সম্পাদক হিসেবে পুনরায় নির্বাচিত হন। ১৯৯১ সালের ১১, ১২ ও ১৩ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত জমিয়তের কাউন্সিলে আব্দুল করিম কৌড়িয়াকে সভাপতি, শামসুদ্দীন কাসেমীকে নির্বাহী সভাপতি ও মুহাম্মদ ওয়াক্কাসকে মহাসচিব করে ৫১ সদস্য বিশিষ্ট কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি গঠন করা হয়।[25] ১৯৯৬ সালের ১৯ অক্টোবর শামসুদ্দীন কাসেমী মৃত্যুবরণ করেন। ১৯৯৬ সালের ৩০ নভেম্বর ও ১ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত জমিয়তের কেন্দ্রীয় কাউন্সিলে আব্দুল করিম কৌড়িয়াকে সভাপতি ও মুহিউদ্দীন খানকে নির্বাহী সভাপতি ও মুহাম্মদ ওয়াক্কাসকে মহাসচিব করে ৫১ সদস্য বিশিষ্ট কার্যনির্বাহী পরিষদ গঠন করা হয়। ২০০০ সালের ২৩ ও ২৪ জুন জমিয়তের কেন্দ্রীয় কাউন্সিলে আব্দুল করিম কৌড়িয়াকে সভাপতি, আশরাফ আলী বিশ্বনাথীকে নির্বাহী সভাপতি ও মুহাম্মদ ওয়াক্কাসকে মহাসচিব করে ৬১ সদস্য বিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদ গঠন করা হয়। ২০০১ সালের ১২ নভেম্বর জমিয়তের সভাপতি আব্দুল করিম কৌড়িয়া মৃত্যুবরণ করেন। তখন নির্বাহী সভাপতি আশরাফ আলী বিশ্বনাথীকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব অর্পণ করা হয়। ২০০২ সালের ২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত জমিয়তের বার্ষিক কাউন্সিলে আশরাফ আলী বিশ্বনাথীকে সভাপতির দায়িত্ব অর্পণ করা হয়। ২০০৩ সালের ১ জুন জমিয়তের কেন্দ্রীয় কাউন্সিলে আশরাফ আলী বিশ্বনাথীকে সভাপতি ও মুহাম্মদ ওয়াক্কাসকে মহাসচিব পুনঃনির্বাচিত করে ৭৭ সদস্য বিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি গঠন করা হয়। ২০০৫ সালের ২০ মে আশরাফ আলী বিশ্বনাথী মৃত্যুবরণ করলে মুহিউদ্দীন খানকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়। ২০০৫ সালের ৪ সেপ্টেম্বর মজলিসে আমেলা ও শূরার যৌথ সভায় আব্দুল মোমিন ইমামবাড়িকে সভাপতির দায়িত্ব অর্পণ করা হয়।[25] ২০০৮ সালের ২৬ জুন দক্ষিণ শাহজাহানপুর মাহবুব আলী ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত কাউন্সিল অধিবেশনে পুনরায় আব্দুল মোমিনকে সভাপতি, মুহিউদ্দীন খানকে নির্বাহী সভাপতি ও মুহাম্মদ ওয়াক্কাসকে মহাসচিব করে ১০১ সদস্য বিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদ গঠন করা হয়। ২০১২ সালের ১৮ জুন ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত জমিয়তের কাউন্সিলে পুনরায় আব্দুল মোমিনকে সভাপতি, মোস্তফা আজাদকে নির্বাহী সভাপতি ও মুহাম্মদ ওয়াক্কাসকে মহাসচিব করে ১০১ সদস্য বিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদ (মজলিসে আমেলা) গঠন করা হয়। ২০১৫ সালের ৭ নভেম্বর আজিমপুরস্থ কনভেনশন সেন্টারে জমিয়ত সভাপতি আব্দুল মোমিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কাউন্সিলে আব্দুল মোমিনকে সভাপতি ও নূর হুসাইন কাসেমীকে মহাসচিব নির্বাচিত করে ১০১ সদস্য বিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদ (মজলিসে আমেলা) গঠন করা হয়। ২০১৮ সালের ১৪ জুলাই পল্টনস্থ জমিয়তের কেন্দ্রীয় দফতরে অনুষ্ঠিত জমিয়তের কাউন্সিলে আব্দুল মোমিনকে সভাপতি ও নূর হুসাইন কাসেমীকে মহাসচিব করে ১৬১ সদস্য বিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদ (মজলিসে আমেলা) গঠন করা হয়।[25] ২০২০ সালে ৭ এপ্রিল সভাপতি আব্দুল মোমিন মৃত্যুবরণ করেন। ৮ এপ্রিল ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পান জিয়া উদ্দিন। ১৩ ডিসেম্বর মৃত্যুবরণ করেন মহাসচিব নূর হোসাইন কাসেমী। তার স্থলে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের দায়িত্ব গ্রহণ করেন মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী। ২০২১ সালের ২৩ ডিসেম্বর জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে জমিয়তের জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। এতে জিয়া উদ্দিনকে সভাপতি, মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দীকে মহাসচিব ও উবায়দুল্লাহ ফারুককে সহসভাপতি করে ১৮৯ সদস্য বিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা হয়।[27]
এক নজরে জমিয়তের সভাপতি ও মহাসচিব | |||
---|---|---|---|
জমিয়ত উলামায়ে হিন্দ (১৯১৯–১৯৪৫) | |||
সভাপতি | মহাসচিব | ||
নাম | সময়কাল | নাম | সময়কাল |
কেফায়াতুল্লাহ দেহলভি (ভারপ্রাপ্ত) | ১৯১৯ – ১৯১৯ | আহমদ সাইদ দেহলভি | ১৯১৯–১৯৪০ |
মাহমুদ হাসান দেওবন্দি | ১৯২০–১৯২০ | ||
হুসাইন আহমদ মাদানি | ১৯৪১–১৯৫৭ | হিফজুর রহমান সিওহারভি | ১৯৪১–১৯৪৭ |
জমিয়ত উলামায়ে ইসলাম (১৯৪৫–১৯৭১) | |||
সভাপতি | মহাসচিব | ||
নাম | সময়কাল | নাম | সময়কাল |
শাব্বির আহমদ উসমানি | ১৯৪৭–১৯৪৯ | ইহতিশামুল হক থানভি | ১৯৪৭–১৯৫২ |
আহমদ আলি লাহোরি | ১৯৫২–১৯৫৪ | ||
মুহাম্মদ হাসান | ১৯৫৪–১৯৫৬ | ||
আহমদ আলি লাহোরি | ১৯৫৬–১৯৬২ | গোলাম গাউস হাজারভি | ১৯৫৬–১৯৬৮ |
১৯৫৮ থেকে ১৯৬২ পর্যন্ত পাকিস্তানে সামরিক শাসন জারি ছিল। এসময় রাজনৈতিক কার্যকলাপ নিষিদ্ধ ছিল। এসময় নেজামুল উলামা নামে জমিয়েতের কর্মসূচি পরিচালিত হতো। | |||
আবদুল্লাহ দরখাস্তি | ১৯৬২–১৯৭১ | মুফতি মাহমুদ | ১৯৬৮–১৯৭০ |
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ (১৯৭১–বর্তমান) | |||
সভাপতি | মহাসচিব | ||
নাম | সময়কাল | নাম | সময়কাল |
তাজাম্মুল আলী | জানুয়ারি ১৯৭৪ – অক্টোবর ১৯৭৪ | শাহ আহরারুজ্জামান | জানুয়ারি ১৯৭৪ – অক্টোবর ১৯৭৪ |
আব্দুল করিম কৌড়িয়া | ১৯৭৪–১৯৭৬ | শামসুদ্দীন কাসেমী | অক্টোবর ১৯৭৪ – ১৯৭৬ |
আজিজুল হক (শায়খুল হাদিস) | ১৯৭৬–১৯৮৪ | মুহিউদ্দীন খান | ১৯৭৬ – ১৯৭৮ |
আব্দুল করিম কৌড়িয়া | ১৯৮৪–২০০১ | শামসুদ্দীন কাসেমী | ১৯৭৮ – ১৯৯১ |
আশরাফ আলী বিশ্বনাথী | ২০০১ – ২০০৫ | মুহাম্মদ ওয়াক্কাস | ১৯৯১ – ২০১৫ |
আব্দুল মোমিন ইমামবাড়ি | ২০০৫ – ২০২০ | নূর হুসাইন কাসেমী | ২০১৫ – ২০২১ |
জিয়া উদ্দিন | ২০২০–বর্তমান | মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী | ২০২১–বর্তমান |
১৯৯১ সালের পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ১৯৯০ সালে এরশাদ সরকারের পতনের পর জমিয়ত সহ ৭টি দলের সমন্বয়ে ইসলামী ঐক্যজোট গঠিত হয়। পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এটি ১টি আসনে বিজয়ী হয়।[28] জমিয়ত ইসলামী ঐক্যজোটভুক্ত দলের আহ্বানে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের প্রতিবাদে আয়োজিত লংমার্চে অংশগ্রহণ করে। বিতর্কিত নারীবাদী লেখিকা তসলিমা নাসরিনের ফাঁসি প্রদান, ব্লাসফেমি আইন প্রণয়ন, এনজিওদের ইসলাম বিরোধী তৎপরতা বন্ধ, কাদিয়ানীদের অমুসলিম ঘোষণা এবং দৈনিক জনকণ্ঠ, আজকের কাগজসহ ইসলাম বিদ্বেষী পত্রিকাসমূহ নিষিদ্ধ করার দাবিতে ইসলামী ঐক্যজোটভূক্ত দলসমূহ এবং অন্যান্য বিরোধী দলের সমর্থনে ১৯৯৪ সালের ৩০ জুন হরতাল পালিত হয়।[29] ১৯৯৬ সালে অনুষ্ঠিত সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এটি ১টি আসন লাভ করে৷[28] ১৯৯৭ সালের ২২ আগস্ট কুদরাত-এ-খুদা শিক্ষা কমিশনের বিরুদ্ধে মানিক মিয়া এভিনিউতে মহাসমাবেশের আয়োজন করে ইসলামী ঐক্যজোট।[30] এটি ১৯৯৭ সালের ৪ ডিসেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির বিরোধীতা করে লংমার্চ কর্মসূচি পালন করে।[31] শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে ১৯৯৯ সালের ৩০ নভেম্বর চার দলীয় জোটে যোগ দেয় ইসলামী ঐক্যজোট।[32] এটি ২০০১ সালের ১ জানুয়ারি হাইকোর্টের ফতোয়া বিরোধী রায়ের প্রতিবাদে আন্দোলন গড়ে তুলে।[33] ২০০১ সালে অনুষ্ঠিত অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইসলামী ঐক্যজোট ৩টি আসন লাভ করে।[28]
২০০১ সালে বিএনপির নেতৃত্বে চার দলীয় ঐক্যজোটে যোগদান ও নারী নেতৃত্ব নিয়ে দলের অভ্যন্তরে মতানৈক্যের সৃষ্টি হয়। ফলশ্রুতিতে আলিমুদ্দিন দুর্লভপুরীকে সভাপতি করে জমিয়তে উলামা বাংলাদেশ নামে নতুন সংগঠনের আত্মপ্রকাশ ঘটে। ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামা গঠন করেন।[34][35][36] ২০১৬ সালে দলের গঠনতন্ত্র সংশোধনকে কেন্দ্র করে পুনরায় মতানৈক্যের সৃষ্টি হয়।[37] ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে পাল্টাপাল্টি বহিষ্কারের মাধ্যমে এই মতানৈক্য চূড়ান্ত রূপ ধারণ করে। বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনে এই সময় দলের নিবন্ধিত নামে সভাপতি ছিলেন আব্দুল মোমিন ইমামবাড়ি ও মহাসচিব ছিলেন নূর হুসাইন কাসেমী।[38] তারা কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে মুহাম্মদ ওয়াক্কাসকে দল থেকে বহিষ্কার করেন। মুহাম্মদ ওয়াক্কাস এই বহিষ্কারকে অবৈধ উল্লেখ করে আরেকটি কমিটি গঠনের কথা উল্লেখ করেন।[39] ২০১৮ সালের ১১ জানুয়ারি তিনি সভাপতি ও শেখ মুজিবুর রহমানকে মহাসচিব করে একই নামে জমিয়তের ১২১ সদস্যের আরেকটি কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদ গঠন করেন।[40] তার এই কমিটিকে অবৈধ ও অসাংবিধানিক উল্লেখ করেন আব্দুল মোমিন ইমামবাড়ি।[41]
২০১০ সালে ছাতা সংগঠন হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের। ২০১৩ সালে শাপলা চত্বর আন্দোলনের মাধ্যমে যা ব্যাপকভাবে আলোচনায় আসে এবং সংগঠনটির উপর দেশি-বিদেশি শক্তির নজর পড়ে।[42] এই হেফাজত আন্দোলনে জমিয়ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সংগঠন হিসেবে হেফাজতের ভিতরে জমিয়তের প্রভাব ছিল সবচেয়ে বেশি।[43] ২০২০ সালে গঠিত হেফাজতের কেন্দ্রীয় কমিটিতে জমিয়তের নেতা ছিল ৩৪ জন। হেফাজতের মহাসচিব নূর হুসাইন কাসেমী জমিয়তেরও মহাসচিব ছিলেন।[43] হেফাজতের উপদেষ্টা পরিষদে ছিলেন জমিয়তের দুই নেতা, তারমধ্যে জিয়া উদ্দিন পরবর্তীতে জমিয়তের সভাপতি হন। হেফাজতের নায়েবে আমির পদে ছিলেন জমিয়তের ছয় নেতা। জমিয়ত নেতা শাহীনুর পাশা চৌধুরী হেফাজতের আইন বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। জমিয়ত নেতা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী হেফাজতের সহকারী মহাসচিব ছিলেন, যিনি পরবর্তীতে জমিয়তের মহাসচিব নির্বাচিত হন।[44] ২০২১ সালের মার্চে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফরের বিরোধিতা করে মাঠে নামে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। সরকারের সাথে সংঘর্ষে ১৭ জন নিহত হন। দেশজুড়ে হেফাজতের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে প্রায় ৭৯টি মামলায় ৬৯ হাজারের বেশি আসামি করা হয়। ফলস্বরূপ এপ্রিলে হেফাজতের কমিটি বিলুপ্ত করে নতুন কমিটি গঠনের ঘোষণা দেন হেফাজত আমির জুনায়েদ বাবুনগরী।[45] এর মধ্যে জমিয়তের ৩১ জন নেতাকে গ্রেফতার করা হয়।[46]
২০১৭ সালের ৭, ৮ ও ৯ এপ্রিল জমিয়ত উলামায়ে ইসলাম (ফ)-এর উদ্যোগে পাকিস্তানের পেশাওয়ারের আজাখেল বালায় জমিয়তের শতবর্ষ উদযাপিত হয়।[47] এতে সৌদি আরবের সাবেক মন্ত্রী সালেহ বিন আবদুল আজিজ আশ শেখ উপস্থিত ছিলেন।[48] বাংলাদেশের জমিয়তের পক্ষ থেকে ৩ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল এই সম্মেলনে যোগদান করে। প্রতিনিধি দলের মধ্যে ছিলেন: জমিয়তের সহসভাপতি আব্দুর রব ইউসুফী, সহকারী মহাসচিব মাসউদুল করিম ও সাংগঠনিক সম্পাদক উবায়দুল্লাহ ফারুক।[49]
১৯৯৯ সালের ৩০ নভেম্বর বিএনপির নেতৃত্বাধীন চার দলীয় জোটে অংশগ্রহণ করে জমিয়ত, যা পরবর্তীতে বিশ দলীয় জোটে পরিণত হয়।[50] ২০২১ সালের ১৪ জুলাই এটি জোট ছাড়ার ঘোষণা দেয়। অভিযোগ হিসেবে তারা বলেন: ইসলামি মূল্যবোধের প্রতি বিএনপির অনাস্থা ও জোটের শরিক দল হিসেবে যথাযথ মূল্যায়ন না করা, শরিক দলগুলোর সঙ্গে পরামর্শ করে মতামত না নিয়ে তিনটি আসনের উপনির্বাচন এককভাবে বর্জনের ঘোষণা করা, জোটের কোন কার্যক্রম না থাকা, বিএনপি মহাসচিবের শরিয়া আইনে বিশ্বাসী না হওয়ার বক্তব্য দেয়া, দেশব্যাপী আলেম উলামাদের জেলজুলুমের প্রতিবাদে কার্যকর কোন ভূমিকা না রাখা এবং জোটের শীর্ষ নেতা জমিয়ত মহাসচিব নূর হুসাইন কাসেমীর মৃত্যুর পর বিএনপির পক্ষ থেকে সমবেদনা জ্ঞাপন না করা ও জানাজায় অংশগ্রহণ না করা।[51] বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগগুলো খণ্ডন করে নূর হুসাইন কাসেমীর অনুপস্থিতিকেই সমস্যাগুলো সৃষ্টির কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন।[52]
স্বাধীন বাংলাদেশে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ হওয়ায় জমিয়ত প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারে নি। পরবর্তীতে জিয়াউর রহমানের আমলে এই বাঁধা উঠে গেলে এটি ১৯৭৯ সালে দ্বিতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে। ১৯৮১ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে এটি মুহাম্মদুল্লাহ হাফেজ্জীকে সমর্থন দিয়ে তার পক্ষে কাজ করে, হাফেজ্জী নির্বাচনে তৃতীয় স্থান অধিকার করে। এটি ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালে ইসলামী ঐক্যজোটের সাথে এবং ২০০১ ও ২০০৮ সালে চার দলীয় জোটের সাথে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়।[15] ২০১২ সালের ২৮ নভেম্বর এটি নির্বাচন কমিশনের সাথে জাতীয় সংসদের আসনগুলোর সীমানা পুনর্নির্ধারণ নিয়ে সংলাপে বসে।[53] অন্যান্য দলের ন্যায় জমিয়ত ২০১৪ সালের নির্বাচন বয়কট করে।[15] বিশ দলীয় জোটের সাথে ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে জমিয়ত। নির্বাচন পরবর্তী ভোট ডাকাতির অভিযোগ তুলে নির্বাচনের ফল প্রত্যাখ্যান করে এটি নিরপেক্ষ নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে পুনর্নির্বাচনের দাবি জানায়।[54] দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ২০২২ সালের ৫ জানুয়ারি দলের মহাসচিব মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দীর নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল গণভবনে রাষ্ট্রপতির সাথে সংলাপে অংশ নেয় এবং ৬টি প্রস্তাব তুলে ধরে।[55][56] ২০২২ সালের ২৬ জুলাই বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের সাথে আরেকটি সংলাপে অংশ নিয়ে দলটি ধর্মীয় মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাহীন ও জনসমর্থনহীন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাতিল করা সহ ১১ দফা দাবি তুলে ধরে।[57] বিএনপি সহ অন্যান্য দলের ন্যায় জমিয়ত ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করে।[58] জমিয়ত এই নির্বাচনকে একই দলের প্রার্থী, স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ডামি প্রার্থীদের মধ্যে নামকাওয়াস্তে প্রতিদ্বন্দ্বিতা দেখানোর নাটক আখ্যা দেয়।[59] দলীয় স্বীদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করায় সাবেক এমপি শাহীনুর পাশা চৌধুরীকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।[60]
জমিয়ত "ধর্ম যার যার, উৎসব সবার" এ স্লোগানকে ইসলামবিরোধী আখ্যা দিয়েছে। জমিয়ত মহাসচিব নূর হুসাইন কাসেমী বলেন, "এটা সবারই স্মরণ রাখা দরকার, ঈদ বা পূজা জাতীয় ও সামাজিক কোনও রীতি অনুষ্ঠান নয়, এটা একেবারেই ধর্মীয় উৎসব। ধর্মীয় যেকোনও আয়োজন-উৎসবে প্রত্যেক ধর্মাবলম্বীরই স্বাতন্ত্র্যবোধ থাকা বাঞ্ছনীয়।"[61] এটি ২০১৮ সালে গড়ে উঠা কোটা সংস্কার আন্দোলনকে যৌক্তিক আখ্যায়িত করে সমর্থন দেয়।[62] ডারউইনের ‘বিবর্তনবাদ’-এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মননে নাস্তিক্যবাদের বীজ এবং চিন্তা-চেতনার বুনন চলছে অভিযোগ করে ২০১৯ সালে তা পাঠ্যবই থেকে বাতিলের দাবি জানায় জমিয়ত।[63] এটি ২০২১ সালের আগস্টে তালেবান পুনরায় আফগানিস্তানের ক্ষমতায় আসাকে ঐতিহাসিক মক্কা বিজয়ের সাথে তুলনা করে তাদের অভিনন্দন জানিয়েছে।[64] ২০২৩ সালে বাংলাদেশে পাঠ্যবই বিতর্কে ইসলামবিরোধী বিষয়বস্তু বাদ ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডে বিশেষজ্ঞ আলেমদের যুক্ত করার দাবীতে দলটি প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে।[65]
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের ছাত্র সংগঠন ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশ নামে পরিচিত। ১৯৯২ সালের ২৪ জানুয়ারি এটি প্রতিষ্ঠা লাভ করে।[66] ২০২২ সালের ৩০ ডিসেম্বর গঠিত ছাত্র জমিয়তের ৩১ সদস্য বিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রিদওয়ান মাজহারী, সাধারণ সম্পাদক কাউসার আহমদ ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নূর হোসাইন ।[67]
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের যুব সংগঠন যুব জমিয়ত বাংলাদেশ নামে পরিচিত। ২০২২ সালের অক্টোবরে যুব জমিয়তের কাউন্সিলে তাফহীমুল হককে সভাপতি, ইসহাক কামালকে সাধারণ সম্পাদক করে ৬১ সদস্য বিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কমিটি গঠিত হয়।[68]
শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর কওমি মাদ্রাসাকে সরকারি স্বীকৃতি প্রদানের উদ্যোগ নেয়। ২০১২ সালে শাহ আহমদ শফীকে সভাপতি করে বাংলাদেশ কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা কমিশন গঠিত হয়। কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী ২০১৮ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর কওমি মাদ্রাসাসমূহের দাওরায়ে হাদিসের সনদকে মাস্টার্স ডিগ্রির সমমান প্রদান আইন, ২০১৮ পাস হয়। সমালোচনা করা হয় যে, আওয়ামী লীগের কাছ থেকে স্বীকৃতি নিলে মাদ্রাসাগুলোর স্বকীয়তা বজায় থাকবে না কারণ দেখিয়ে এই স্বীকৃতি গ্রহণ না করার জন্য তৎপরতা চালিয়েছে জমিয়ত।[69]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.