কাসেম নানুতুবি
দারুল উলুম দেওবন্দের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
মুহাম্মদ কাসেম নানুতুবি (১৮৩২-১৮৮০) ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের একজন ইসলামি পণ্ডিত, দার্শনিক, বিতার্কিক, সৈনিক ও লেখক। তার হাতে দেওবন্দ আন্দোলনের ভিত্তি স্থাপিত হয়।[১]
মুহাম্মদ কাসেম নানুতুবি | |
---|---|
ব্যক্তিগত তথ্য | |
জন্ম | ১৮৩২ |
মৃত্যু | ১৮৮০ |
যুগ | আধুনিক যুগ |
অঞ্চল | ইসলামি পণ্ডিত |
প্রধান আগ্রহ | আকিদা, তাফসির, তাসাউফ, হাদিস, ফিকহ, কিফায়া, উসুল, মাআনি, মানতিক, ফালসাফা, হাইস, রিয়ালি, মালুকাত |
উল্লেখযোগ্য ধারণা | দারুল উলুম দেওবন্দ, মাদরাসা থানাভবন, মাদরাসা মেরুট, মাদরাসা গালুতি, মাদ্রাসা দানপুর, মাদরাসা মুরাদাবাদ |
ঊর্ধ্বতন পদ | |
যাদের প্রভাবিত করেন |
জীবনী
সারাংশ
প্রসঙ্গ
তিনি বর্তমান ভারতের উত্তর প্রদেশের সাহারানপুরের নিকট নানুতা নামক একটি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। নিজ শহরে তিনি প্রাথমিক শিক্ষালাভ করেন। এরপর তিনি দেওবন্দ যান এবং মৌলভি মাহতাব আলির মাদরাসায় শিক্ষালাভ করেন। এরপর তিনি শাহারানপুর যান। সেখানে তার নানার সাথে অবস্থান করেন। শাহারানপুরে মৌলভি নওয়াজের তত্ত্বাবধানে তিনি আরবি ব্যাকরণ বিষয়ে প্রাথমিক গ্রন্থাদি পাঠ করেন। ১৮৪৩ সালের শেষের দিকে মামলুকুল আলি তাকে দিল্লি নিয়ে যান। সেখানে তিনি কাফিয়া ও বিভিন্ন গ্রন্থ অধ্যয়ন করেন। এরপর তিনি মাদরাসা গাজিউদ্দিন খানে ভর্তি হন।[২][৩]
তার ঘনিষ্ঠ আত্মীয় মুহাম্মদ ইয়াকুব নানুতুবি লিখেছেন:
“আমার মরহুম পিতা তাকে আরবি মাদরাসায় ভর্তি করান এবং বলেন, “ইউক্লিড নিজে অধ্যয়ন কর এবং পাটিগণিতের অনুশীলন সম্পন্ন কর”। কয়েকদিন পর তিনি সাধারণ বক্তৃতাসমূহে অংশ নেন এবং পাটীগণিতের অনুশীলন সম্পন্ন করেন। মুনশি জাকাতউল্লাহ তাকে কয়েকটি কঠিন প্রশ্ন করেন। তিনি সেগুলো সমাধান করতে জানতেন বিধায় তিনি পরিচিত হয়ে উঠেন। বার্ষিক পরীক্ষা কাছে আসার পর তিনি এতে অংশ না নিয়ে মাদরাসা ত্যাগ করেন। মাদরাসার সকল ব্যক্তি বিশেষ করে প্রধান শিক্ষক এজন্য খুবই কষ্ট পান”।
মাদরাসা গাজিউদিন খানে ভর্তি হওয়ার পূর্বে মামলুক আলির তত্ত্বাবধানে তিনি যুক্তি, দর্শন ও পাণ্ডিত্যপূর্ণ ধর্মতত্ত্বের উপর বিভিন্ন গ্রন্থাদি পাঠ করেন। তিনি একটি পাঠচক্রে যোগ দেন। কুরআন ও হাদিসের অধ্যয়নে এটি ভারতে কেন্দ্রীয় অবস্থানে ছিল। তিনি আবদুল গণি মুজাদ্দিদির তত্ত্বাবধানে হাদিস অধ্যয়ন করেন।
শিক্ষা সমাপ্তির পর তিনি মাতবাহে আহমদি এর সম্পাদক হন। এসময় আহমেদ আলির অনুরোধে তিনি সহিহ বুখারীর শেষ কয়েক অংশের উপর টীকা লেখেন। দারুল উলুম দেওবন্দ স্থাপনের পূর্বে তিনি ছাট্টা মসজিদে ইউক্লিড শিক্ষা প্রদানে নিয়োজিত ছিলেন। তার বক্তৃতাগুলো ছাপাখানায় দেয়া হত। তার শিক্ষার মাধ্যমে একদল নতুন উলামার আবির্ভাব হয়। তিনি দারুল উলুম দেওবন্দ প্রতিষ্ঠা করেন।
১৮৬০ সালে তিনি হজ্জ করেন। ফেরার পর মেরুটের মাতবাহে মুজতবাতে বই বিন্যাসের দায়িত্ব পান। ১৮৬৮ সাল পর্যন্ত তিনি এতে যুক্ত ছিলেন। এরপর তিনি দ্বিতীয়বার হজ্জ করেন। এরপর মেরুটের মাতবাহে হাশিমি চাকরি করেন।
তার প্রচেষ্টায় দেওবন্দে মাদরাসা গড়ে উঠে। এছাড়াও তার প্রচেষ্টায় অন্যান্য স্থানেও মাদরাসা গড়ে উঠে।
এক মাসে কোরআন মুখস্থ
কাসেম নানুতুবি রশিদ আহমাদ গাংগুহির সাথে হজ্জের সফরে গেলেন। সেই কাফেলায় কোন হাফেজে কোরআন ছিলো না। রমজান মাস চলে এলো। এ সময় তিনি প্রতিদিন এক পারা করে মুখস্থ করে রাতে তারাবীহতে পড়তেন। এভাবে মাত্র এক রমজানে তিনি পবিত্র কোরআনের হাফেজ হয়ে গেলেন।[৪]
দারুল উলুম দেওবন্দ প্রতিষ্ঠা
১৮৬৬ সালে কাসেম নানুতুবী ভারতের উত্তর প্রদেশস্থ সাহারানপুর জেলায় দেওবন্দ নামক গ্রামের মহল্লায়ে দেওয়ানে বাড়ির পাশে ইসলামি শিক্ষা-সংস্কৃতির প্রচার-প্রসারের উদ্দেশ্যে একটি মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করার সিদ্ধান্ত নেন সাথে ছিলেন হাজী আবিদ হোসাইন। পরে মিরাট থেকে মোল্লা মাহমুদকে ডেকে এনে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ করেন এবং ৩০ মে ১৮৬৬ সালে সাত্তা মসজিদের বারান্দায় ডালিম গাছের নিচে দারুল উলুম দেওবন্দের উদ্বোধন হয়।[৫][৬][৭]
আরও দেখুন
তথ্যসূত্র
গ্রন্থপঞ্জি
বহিঃসংযোগ
Wikiwand - on
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.