Loading AI tools
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
কমান্ডার-ইন-চিফ বা সর্বাধিনায়ক হলেন সেই ব্যক্তি যিনি সশস্ত্র বাহিনী বা সামরিক শাখার উপর সর্বোচ্চ কমান্ড এবং নিয়ন্ত্রণ অনুশীলন করেন। সর্বাধিনায়ক বলতে সামরিক ক্ষমতাকে বোঝায় যা একটি দেশের নির্বাহী নেতৃত্ব, রাষ্ট্রপ্রধান বা সরকার প্রধানের মধ্যে থাকে।
সর্বাধিনায়কের ভুমিকা লাতিন ইম্পারাটর হতে উদ্ভূত। রোমান সাম্রাজ্যের ইম্পারাটর -রা একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করত। আধুনিক যুগে ১৬৩৯ সালে ইংল্যান্ডের রাজা চার্লস ১ এর জন্য সর্বপ্রথম এই পদ ব্যবহার করা হয়। এবং ইংরেজদের গৃহযুদ্ধ পর্যন্ত এর ব্যবহার চলতে থাকে।[1] কোনো জাতির রাষ্ট্রপ্রধান(একনায়কতন্ত্র বা প্রজাতন্ত্র) সাধারণত সর্বাধিনায়ক পদের দায়িত্ব কাগজে-কলমে পেয়ে থাকেন, যদিও নির্বাহী ক্ষমতা অন্য কোনো সরকার প্রধানের হতে পারে। সংসদীয় গণতন্ত্র ব্যবস্থায়, সরকারের নির্বাহী বিভাগ আইন বিভাগের উপর সম্পূর্ণ নির্ভরশীল। যদিও আইন বিভাগ সশস্ত্র বাহিনীর উপর সরাসরি আদেশ জারি করে না। অতএব আইন বিভাগ সামরিক বাহিনীকে নিয়ন্ত্রণ করেনা। সামরিক বাহিনীর গভর্নর-জেনারেল এবং ঔপনিবেশিক গভর্নর সাধারণত সর্বাধিনায়ক নিযুক্ত হন। [তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
সর্বাধিনায়ককে সুপ্রিম কমান্ডার ও বলা হয়। এই পদ সামরিক কর্মকর্তাদের জন্যেও ব্যবহৃত হয়, যাদের সামরিক বাহিনীর উপর ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব আছে।[2]
আলবেনিয়ার সংবিধান অনুযায়ী, আলবানিয়ান প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপতি হল আলবেনিয়ান সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক। বর্তমানে সর্বাধিনায়ক হলেন রাষ্ট্রপতি বুজার নিশানি।
আর্জেন্টিনার সংবিধানের দ্বিতীয় অংশের তৃতীয় পরিচ্ছেদ, অনুচ্ছেদ ৯৯ এর ধারা ১২, ১৩, ১৪ ও ১৫ নং এ বলা আছে, আর্জেন্টাইন রাষ্ট্রপতি হল "রাষ্ট্রের সকল সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক"। এখানে আরো বলা আছে রাষ্ট্রপতি সশস্ত্র বাহিনীর কোনো উচ্চ পদে আসীন কর্মকর্তাকে সামরিক পদ প্রদান করার, জাতির প্রয়োজনে এই সশস্ত্র বাহিনীকে নির্বাহ ও নিয়ন্ত্রণ করার এবং জাতীয় সংসদের সম্মতি ও অনুমোদন সাপেক্ষে যুদ্ধ ঘোষণা করার অধিকার সংরক্ষণ করে।[3]
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় হল সরকারের একটা বিভাগ যা রাষ্ট্রপতিকে সশস্ত্র বাহিনী (সেনা বাহিনী, নৌ বাহিনী ও বিমান বাহিনী) তত্ত্বাবধানে সহায়তা করে। [4]
অস্ট্রেলিয়ান সংবিধানের দ্বিতীয় অধ্যায়ের ৬৮ নং ধারায় বর্ণিত, রাষ্ট্রের গভর্নর জেনারেল রানীর প্রতিনিধি হিসেবে নৌ বাহিনী ও সেনা বাহিনীর সর্বাধিনায়ক হবে।
বাস্তবে, গভর্নর জেনারেল অস্ট্রেলিয়ান সশস্ত্র বাহিনীর নেতৃত্বে সক্রিয় ভুমিকা পালন করে না। অস্ট্রেলিয়ান মন্ত্রিসভা ডি ফেক্টো (প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে) সাধারণত অস্ট্রেলিয়ান সশস্ত্র বাহিনীকে নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।
অস্ট্রিয়ান সংবিধানের ৮০ নং অনুচ্ছেদে বর্ণিত, যৌথ সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান হল রাষ্ট্রপতি। আরো বলা আছে, রাষ্ট্রপতি যৌথ সশস্ত্র বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ করবে প্রতিরক্ষা আইন অনুযায়ী। তবে ৬৯ নং ধারা অনুযায়ী, সশস্ত্র বাহিনীর উপর সর্বোচ্চ ক্ষমতা কেবল মাত্র প্রধানমন্ত্রীর। অর্থাৎ ফেডারেল চ্যান্সেলরের নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভা এই অধিকার সংরক্ষণ করে।[5]
বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক হল রাষ্ট্রপতি, যদিও প্রতিরক্ষা বাহিনীর সকল নির্বাহী ক্ষমতা ও দায়িত্ব প্রধানমন্ত্রীর হাতে ন্যস্ত ৷
বাংলাদেশের প্রথম সর্বাধিনায়ক ছিলেন জেনারেল এম. এ. জি. ওসমানী, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান সেনাপতি ছিলেন। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ সরকারের নির্দেশে তাকে তার দায়িত্বে পুনর্বহাল করা হয় যা ১৯৭২ সালে গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়। তিনি ৭ই এপ্রিল, ১৯৭২ সালে অবসর গ্রহণ করেন এবং রাষ্ট্রপতির নিকট সকল ক্ষমতা ও দায়িত্ব হস্তান্তর করে পদত্যাগ করেন।[6]
১৯৮৮ সালের ব্রাজিলীয় সংবিধানের ১৪২ নং অনুচ্ছেদে বলা আছে, রাষ্ট্রপতি হল ব্রাজিলীয় সশস্ত্র বাহিনীর সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী।[7]
ব্রুনেই -এর সুলতান হল ব্রুনেই রাজ্যের সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক।
কানাডার সশস্ত্র বাহিনীর উপর সর্বাধিনায়কের যে ক্ষমতা তা কানাডীয় রাজতন্ত্রের উপর ন্যস্ত, [8] এবং কানাডার গভর্নর জেনারেল সর্বাধিনায়ক উপাধির দাবিদার।[9] গভর্নর জেনারেলের পোশাকে পদচিহ্নের প্রতীক হিসেবে আস্তিনে বিশেষ নকশা থাকে।
গণচীন সংবিধানের ৯৩ ন্ং অনুচ্ছেদে বলা আছে, চীনের সশস্ত্র বাহিনীর কর্তৃত্ব কেন্দ্রীয় সেনাবাহিনী কমিশনের উপর ন্যস্ত, যা একজন চেয়ারম্যান ও কিছু ভাইস-চেয়ারম্যান এবং সদস্যের সমন্বয়ে গঠিত। একই অনুচ্ছেদে বলা আছে, কেন্দ্রীয় সেনাবাহিনী কমিশনের চেয়ারম্যান সকল দায়িত্ব পালন করবে এবং জাতীয় সংসদ এবং স্থায়ী কমিটির নিকট দায়বদ্ধ থাকবে।[10]
হংকং যখন ব্রিটিশ নেতৃত্বের অধীনে ছিল তখন হংকং -এ ব্রিটিশ সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক ছিলেন সিভিলিয়ান গভর্নর। ১৯৯৭ সালে গণ চীন প্রজাতন্ত্রের হাতে এই অঞ্চল হস্তান্তরের সময় হংকং -এর সামরিক বাহিনীর প্রধান করা হয় চীনের পিএলএ পারসোনেল -কে।
ক্রোয়েশিয়ান সংবিধান অনুযায়ী, ক্রোয়েশিয়ার রাষ্ট্রপতি হল ক্রোয়েশিয়ান প্রজাতন্ত্রের সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক। সর্বাধিনায়ক প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে তার কর্মসূচী বাস্তবায়ন করে থাকে। যুদ্ধ বা অন্য যেকোনো বিশেষ ক্ষেত্রে, যেখানে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় তার নির্দেশ সমূহ পালনে ব্যর্থ হয়, তখন সর্বাধিনায়ক সরাসরি নির্দেশ দিয়ে থাকেন।
১৯৯২ সালের সংবিধান অনুযায়ী, অনুচ্ছেদ নং ৬৩(১)(গ) -তে বলা আছে, চেক প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপতি হল সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক, এবং অনুচ্ছেদ নং ৬৩(১)(চ) -তে বর্ণিত, সর্বাধিনায়ক জেনারেলদের নিয়োগ ও পদোন্নতি দেন। অনুচ্ছেদ নং ৬৩(৩-৪) -এ বর্ণিত, তবে উপরোল্লিখিত বিধানের জন্য রাষ্ট্রপতির যেকোনো সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিস্বাক্ষর প্রয়োজন হবে, অন্যথায় তা বাতিল বলে বিবেচিত হবে। প্রধানমন্ত্রী অন্য কোনো মন্ত্রীকে রাষ্ট্রপতির সিদ্ধান্তে প্রতিস্বাক্ষরের এই দায়িত্ব অর্পণ করতে পারে। সশস্ত্র বাহিনীর রাজনৈতিক দায়িত্ব সরকারের দ্বারা উদ্ভূত, যা অনুচ্ছেদ নং ৬৭ -তে বলা হয়েছে, নির্বাহী ক্ষমতার সর্বোচ্চ ধারক।
ডেনিশ প্রতিরক্ষা আইনের ৯ নং অনুচ্ছেদে প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে প্রতিরক্ষার সর্বোচ্চ কর্তৃত্ব দেয়া হয়েছে। মন্ত্রীর নিচেই আছে প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রধান, যিনি সেনাবাহিনীর সর্বোচ্চ-পদস্থ কর্মকর্তা। এবং তিনি সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর অধিনায়ক।[11][12]
সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১২৮, ধারা ২, ৪ নং শিরোনামে বর্ণিত, পররাষ্ট্র নীতি, প্রশাসন এবং সশস্ত্র বাহিনী, আইন রক্ষাকারী বাহিনী এবং রাষ্ট্রের অন্যান্য নিরাপত্তা সংস্থার সর্বাধিনায়ক হচ্ছে রাষ্ট্রপতি।[13]
মিশরে রাষ্ট্রপতি হল সশস্ত্র বাহিনীর সর্বোচ্চ অধিনায়ক। সরকারের একজন সদস্য, সাধারণত প্রতিরক্ষামন্ত্রী হলেন মিশরীয় সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক। এই দায়িত্ব এখন সেদকি সোভির উপর অর্পিত। তিনিই একমাত্র রাষ্ট্রপতি যিনি যুদ্ধ ঘোষণার অধিকার রাখত। জুন ২০১২ সালে, মুহাম্মাদ মুরসির নির্বাচনের আগ পর্যন্ত সকল সামরিক বাহিনীর দায়িত্বে ছিলেন পূর্ববর্তী রাষ্ট্রপতি। এবং ১৯৭৩ সালের আরব-ইসরায়েলি যুদ্ধের সকল পরিকল্পনা এবং যুদ্ধ চলাকালীন সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর কমান্ডারদের সরাসরি নির্দেশনা প্রদানে সর্বাধিনায়ক হিসেবে ভূমিকা পালন করেন। আনোয়ার সাদাত প্রায়ই তার সামরিক পোশাক পরিধান করতেন, তবে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি হোসনি মুবারক এই প্রথা পরিত্যাগ করেন।
ফিনিশ সংবিধান অনুযায়ী, ফিনল্যান্ডের রাষ্ট্রপতি হলেন ফিনিশ সামরিক বাহিনীর সর্বাধিনায়ক। তবে বাস্তবে নিত্য নির্দেশনা ও নিয়ন্ত্রণ সামরিক বাহিনীর প্রধান এবং ফিনিশ সীমান্ত রক্ষাকারী বাহিনীর কমান্ডারের উপর ন্যস্ত। সামরিক বাহিনীর অর্থনৈতিক ও প্রশাসনিক দায়িত্ব প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের হাতে ন্যস্ত। রাষ্ট্রপতি যেসব বিষয়ের উপর সিদ্ধান্ত নেন তা হল-[14]:§৩১
২০০০ সালের সংবিধান সংশোধনে বলা হয়, প্রতিরক্ষামন্ত্রীর উপস্থিতিতে রাষ্ট্রপতি যেকোনো ধরনের নির্দেশনা প্রদান করতে পারবে, যদি সেটা তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্তের কোনো ব্যাপার না হয়।
ফ্রান্সের সংবিধানের ১৫ নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, সামরিক বাহিনীর প্রধান হল রাষ্ট্রপতি এবং সামরিক ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী ও তিনি। অনুচ্ছেদ নং ১৬ তে বলা আছে, রাষ্ট্রপতি হল ব্যাপক পরিসরে জরুরি ক্ষমতার অধিকারী।[15]
১৯৯২ সালের পূর্বে ঘানা সশস্ত্র বাহিনীর (জিএএফ) সর্বাধিনায়ক ছিলেন জিএএফ -এর সামরিক পদে নিযুক্ত কোনো ব্যক্তি। তবে ১৯৯২ সালে ঘানা বিমান বাহিনীর ফ্লাইট লিউট্যানেন্ট জেরি রাউলিংস -এর অনুমোদনে ঘানা সংবিধান অনুসারে, ঘানার রাষ্ট্রপ্রধান ও রাষ্ট্রপতি হল ঘানা সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক। জিএএফ -এর সর্বাধিনায়ক হলেন ঘানার রাষ্ট্রপ্রধান ও রাষ্ট্রপতি জন দ্রামানি মাহামা।[16][17]
ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী হল ভারতের রাষ্ট্রপতি, যদিও নির্বাহী ক্ষমতার উৎস প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে গঠিত মন্ত্রিসভা।
১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট, প্রতিটা বাহিনীর নিজস্ব সর্বাধিনায়ক ছিল। ১৯৫৫ সালে, তিন বাহিনীর প্রধানকে পুনরায় নতুন পদ দেয়া হয়। সেনাবাহিনী প্রধানকে জেনারেল পদ, নৌবাহিনীর প্রধানকে ভাইস-এডমিরাল পদ ও বিমানবাহিনীর প্রধানকে এয়ার মার্শাল পদ ঠিক করা হয় যেখানে সর্বাধিনায়ক হবেন রাষ্ট্রপতি। ১৯৬৫ সালে বিমানবাহিনী প্রধানকে এয়ার চীফ মার্শাল পদে এবং ১৯৬৮ সালে নৌবাহিনী প্রধানকে এডমিরাল পদে উন্নীত করা হয়।
ইন্দোনেশিয়ার সংবিধানের ১০ নং অনুচ্ছেদে বর্ণিত, ইন্দোনেশিয়ার সশস্ত্র বাহিনীর সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী হচ্ছে ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রপতি। সশস্ত্র বাহিনীর সাধারণ কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি ইন্দোনেশীয় সশস্ত্র বাহিনীর কমান্ডার (চতুর্থ র্যাঙ্কের কর্মকর্তা, সেনাবাহিনীর ক্ষেত্রে যিনি জেনারেল, নৌবাহিনীর ক্ষেত্রে এডমিরাল ও বিমানবাহিনীর ক্ষেত্রে মার্শাল)।
১৯৭৯ সালের পূর্বে, ইরানের সর্বাধিনায়ক ছিলেন শাহ মোহাম্মদ রেজা পাহলভি। ইসলামি প্রজাতন্ত্রের সূচনালগ্নে ইরানের রাষ্ট্রপতি আবুল হাসান বানি সাদার সর্বাধিনায়কের দায়িত্বে ছিলেন।
১৯৮১ সালের ২২শে জুন তিনি অভিযুক্ত হন যার ফলে সর্বাধিনায়কের দায়িত্ব ইরানের সর্বোচ্চ নেতাকে দেওয়া হয়।
আয়ারল্যান্ডের রাষ্ট্রপতি হলেন সশস্ত্র বাহিনীর সর্বোচ্চ সেনাপতি,[18] তবে বাস্তবে রাষ্ট্রপতির হয়ে প্রতিরক্ষামন্ত্রী ই কার্যনির্বাহকের দায়িত্ব পালন করেন এবং সরকারকে রিপোর্ট করেন।[19]
ইতালির সংবিধানের অনুচ্ছেদ নং ৮৭ -তে বর্ণিত, রাষ্ট্রপতি হলেন সশস্ত্র বাহিনীর অধিনায়ক এবং সর্বোচ্চ প্রতিরক্ষা পরিষদের সভাপতি। সংসদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তিনি যুদ্ধ ঘোষণা করে থাকেন।[20]
কেনিয়ার সংবিধানের ১৩১ নং অধ্যায়ে রাষ্ট্রপতিকে কেনিয়ার প্রতিরক্ষা বাহিনীর সর্বাধিনায়ক হিসেবে এবং জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের প্রধান হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।[21] রাষ্ট্রপতি সেনাবাহিনী পরিচালনার কাজে সহায়তা করার একজন কর্মকর্তা নিয়োগ দেন যিনি কেনিয়া প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রধান হিসেবে বিবেচিত এবং তিনি রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের প্রধান সামরিক উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
এই সশস্ত্র বাহিনী প্রধানকে কেনিয়া সেনাবাহিনী অথবা কেনিয়া নৌবাহিনী অথবা কেনিয়া বিমানবাহিনী থেকে বাছাই করা হয়।
মালয়েশিয়া -র সংবিধানের অনুচ্ছেদ নং ৪১ অনুযায়ী, মালয়েশিয়ান সশস্ত্র বাহিনীর সর্বোচ্চ নেতা হলেন ইয়ান দি-পারতুয়ান আগোং (মালয়েশিয়ান শব্দ যার অর্থঃ মালয়েশিয়ার রাজা)। তিনি সামরিক প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ পদ প্রাপ্ত কর্মকর্তা। তিনি তিনটি সামরিক বাহিনীর প্রধানকে নিয়োগ দেন।
মরিশাস প্রজাতন্ত্রের সংবিধানের ২৮ নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, মরিশাস প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপতি হলেন সর্বাধিনায়ক।[22]
১৯৬৮ সালে স্বাধীনতার পর থেকে মরিশাসের গভর্নর-জেনারেলের প্রতিনিধিত্বে মরিশাসের রানী -কে সর্বাধিনায়ক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। ১৯৯২ সালে কমনওয়েলথ ঘোষণার পর নতুন সংবিধানে বলা হয় রাষ্ট্রপ্রধান ও সর্বাধিনায়ক পদের দায়িত্ব রাষ্ট্রপতির উপর।
নাইজেরিয়ান সংবিধান অনুযায়ী, নাইজেরিয়ার রাষ্ট্রপতি হলেন নাইজেরিয়ান সামরিক বাহিনীর সর্বাধিনায়ক।
১৯৭৩ সালের সংবিধানের পূর্বে, পাকিস্তানি ইসলামিক প্রজাতন্ত্রে সামরিক বাহিনীর প্রধানকে সর্বাধিনায়ক হিসেবে চিহ্নিত করা হত।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] হামুদুর রেহমান কমিশনের রিপোর্ট অনুযায়ী এই পদ সেনা বাহিনীর প্রধান দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] ১৯৭৩ সালে এই পদ পরিবর্তিত হয়ে যায়। রাষ্ট্রপতির হাতেই সকল ক্ষমতা নিহিত। কিন্ত বর্তমানে গণতন্ত্র শক্তিশালী হওয়ার পর প্রধান ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রীর হাতে ন্যস্ত।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন][তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
ফিলিপাইনের রাষ্ট্রপতি হল রাষ্ট্রপ্রধান এবং সরকার প্রধান। ১৯৮৭ সালের ৭ নং অনুচ্ছেদের ১৮ নং ধারায় সংশোধনের পর সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক হিসেবে রাষ্ট্রপতিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।[23]
ফিলিপাইন সশস্ত্র বাহিনীর বর্তমান সর্বাধিনায়ক হলেন রাষ্ট্রপতি রড্রিগো ডুটার্টে যিনি ফিলিপিনো সামরিক বাহিনীর সর্বোচ্চ কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
পোল্যান্ডে, পোলিশ সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক হলেন রাষ্ট্রপতি। পোল্যান্ডে যুদ্ধকালীন সময়ে পোলিশ সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান সর্বাধিনায়ক হিসেবে নিযুক্ত হন।
পর্তুগীজ প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপতি হল সশস্ত্র বাহিনীর সাংবিধানিক সর্বোচ্চ অধিনায়ক। তবে পরিচালনাগত নির্দেশনা সশস্ত্র বাহিনীর প্রধানের উপর ন্যস্ত।
রাশিয়ান ফেডারেশন সংবিধানের অধ্যায় ৪, অনুচ্ছেদ ৮৭, ধারা ১ অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি হল সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক।[25] রাষ্ট্রপতি সাধারণত সামরিক সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেন এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও অন্যান্য কর্মকর্তাদের নিয়োগ দিয়ে থাকেন।[26]
রুশ সশস্ত্র বাহিনী ৩টা সেবার উপর ভিত্তি করে বিভক্তঃ রুশ স্থল বাহিনী, রুশ নৌবাহিনী এবং রুশ বিমান বাহিনী। পাশাপাশি আরো ৩টা স্বাধীন সশস্ত্র সেবা আছেঃ স্ট্র্যাটেজিক মিসাইল ট্রুপস, রুশ মহাকাশ প্রতিরক্ষা বাহিনী এবং রুশ এয়ারবোম ট্রুপস।প্রাক্তন সোভিয়েত বিমান বাহিনী ১৯৯৮ সালে রুশ বিমান বাহিনীর নেতৃত্বে আসে।
আইন অনুযায়ী, সার্বিয়ার রাষ্ট্রপতি হল সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক এবং সামরিক বাহিনীর নির্দেশক। সার্বিয়ার সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের তিনি নিয়োগ, পদোন্নতি ও প্রত্যাহার করে থাকেন।[27]
স্লোভেনিয়াতে রাষ্ট্রপতি হল সর্বাধিনায়ক। যদিও সে যুদ্ধবিগ্রহহীন সময়ে এই ক্ষমতা ব্যবহার করেন না। তার পরিবর্তে প্রতিরক্ষামন্ত্রী এই দায়িত্ব পালন করে থাকেন।
১৯৭৮ সালের স্পেনের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৬২-তে বলা আছে, স্পেনের রাজা হলেন সশস্ত্র বশিনীর সর্বোচ্চ নির্দেশদাতা।
তবে অনুচ্ছেদ ৬৪ -তে বলা আছে, রাজার সকল সিদ্ধান্ত বৈধ করার জন্য রাষ্ট্রপতি বা অন্য কোনো উপযুক্ত মন্ত্রীর প্রতিস্বাক্ষরের প্রয়োজন। অনুচ্ছেদ ৯৭ -এ বলা আছে, স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র বিষয়ক নীতি, সামরিক ও বেসামরিক প্রশাসনিক কর্ম এবং রাষ্ট্রের নিরাপত্তার দায়িত্ব সরকারের উপর।
রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে, শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতি হলেন সশস্ত্র বাহিনীর নামমাত্র সর্বাধিনায়ক।
সশস্ত্র বাহিনীর নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের হাতে। তবে পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের দায়িত্ব জয়েন্ট অপারেশনস কমান্ডের হাতে।তিন শাখায় তাদের নিজস্ব প্রধান আছেঃ সেনাবাহিনীর কমান্ডার, নৌবাহিনীর কমান্ডার এবং বিমানবাহিনীর কমান্ডার যাদের স্ব স্ব শাখায় পূর্ণ অধিকার আছে।
থাই রাজা হল সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান। সর্বশেষ অক্টোবর ২০১৬ সালে রাজা ভূমিবল অতুল্যতেজের মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে থাই রাজকীয় সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক ছিলেন।[28]
তুরস্কের রাষ্ট্রপতির সাংবিধানিক দায়িত্ব হলঃ তুরস্কের জাতীয় সংসদের পক্ষে সশস্ত্র বাহিনীর সর্বোচ্চ সামরিক অধিনায়কের দায়িত্ব পালন এবং তুরস্কের সশস্ত্র বাহিনীর সমাবেশ বিষয়ক সিদ্ধান্ত নেওয়া, সামরিক বাহিনীর প্রধানকে নিয়োগ দেওয়া, জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মিটিং আহবান, জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতিত্ব করা, সামরিক আইন জারি করা বা জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা, আইনের অনুশাসন জারি করা, তার সভাপতিত্বে মন্ত্রী পরিষদের মিটিং আহবান করা। সংবিধানের উপরোল্লিখিত দায়িত্ব ছাড়াও তুরস্কের রাষ্ট্রপতি নির্বাহী ক্ষমতার বলে জাতির সর্বাধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে।
ব্রিটিশ রাজা হল সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান[29] এবং তাদের সর্বাধিনায়ক।[30] সশস্ত্র বাহিনী সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী (মন্ত্রিসভার সহযোগিতায়) মূল সিদ্ধান্তসমূহ নিয়ে থাকেন।[31][32] ২০০৩ সালের ইরাক যুদ্ধের পর সংবিধানে একটা নতুন সংশোধন পাশ হয় যেখানে বলা হয়, হাউজ অফ কমনস -এর অনুমতি সাপেক্ষে যেকোনো ধরনের সামরিক কার্যকলাপের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
১৬৬০ থেকে ১৯০৪ সাল পর্যন্ত সামরিক বাহিনীর প্রধান ছিলেন সর্বাধিনায়ক এবং তার হাতে এই ক্ষমতা ন্যস্ত ছিল।
২০১২ সালের আগ পর্যন্ত তিনটি বাহিনীর প্রত্যেকটিতে এক বা একাধিক নেতৃত্বের জন্য একজন সর্বাধিনায়ক নিযুক্ত ছিলেন।
২০১২ সাল থেকে প্রতেকটি বাহিনীর পূর্ণ নেতৃত্ব শুধুমাত্র একজন প্রধানের হাতে ন্যস্ত। এবং একজন স্বতন্ত্র সর্বাধিনায়ক নিযুক্ত দেওয়ার প্রথা রহিত হয়।
সংবিধানের অনুচ্ছেদ নং ২, ধারা ২ এর দফা ১ -এ বলা আছে, যুক্তরাষ্ট্রের সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক হল যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি।[33][34] [তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
যুদ্ধের সময় সামরিক নেতৃত্বের কি পরিমাণ রাষ্ট্রপতি নিজে নিয়ন্ত্রণ করবেন তা বিভিন্ন সময় পরিবর্তিত হয়েছে।[35] প্রথম মার্কিন রাষ্ট্রপতি জর্জ ওয়াশিংটন, বেসামরিক কর্তৃপক্ষের হাতে সামরিক বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ জোরালোভাবে প্রতিষ্ঠিত করেন। ১৭৯৪ সালে ওয়াশিংটন তার সাংবিধানিক ক্ষমতা ব্যবহার করে ১২০০০ সেনাবহর একত্রিত করেন হুইস্কি বিদ্রোহ দমণ করার জন্য। এই বিদ্রোহ ছিল পশ্চিম পেনিসিলভেনিয়ায় সশস্ত্র কৃষক সমাজ ও মদপ্রস্তুতকারী সমাজের, যারা আবগারী শুল্ক দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল।
১৮৬১-১৮৬৫ সালে আমেরিকান গৃহযুদ্ধ চলাকালীন সামগ্রিক কৌশল নির্ধারণে আব্রাহাম লিংকন গভীরভাবে যুক্ত ছিলেন। ইতিহাসবিদগণ তার এই কৌশলগত জ্ঞান ও উলিসেস এস. গ্রান্টের মত দক্ষ কমান্ডার নির্বাচনের প্রশংসা করেছেন।[36] দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ফ্রাংকলিন ডি. রুজভেল্ট রাষ্ট্রপতি হিসেবে তার জেনারেল, এডমিরাল -দের সাথে এক হয়ে কাজ করেছেন এবং এডমিরাল উইলিয়াম ডি. লেহি -কে সর্বাধিনায়ক নিযুক্ত করেন।[37]
জর্জ ডব্লিউ. বুশ -এর নেতৃত্ব আফগানিস্তান যুদ্ধ ও ইরাক যুদ্ধের সময় মিশ্র প্রতিক্রিয়া লাভ করে। আল-কায়েদার ১১ সেপ্টেম্বরের হামলার পর ২০০৩ সালে তিনি ইরাক আক্রমণ করেন। সন্ত্রাসবাদের সাথে ইরাকের সম্পর্ক ও অবৈধ গণবিধ্বংসী অস্ত্র রাখার দায়ে তিনি এই আক্রমণ চালান।
২০০২ সালের ২৪শে অক্টোবর প্রতিরক্ষামন্ত্রী ডোনাল্ড এইচ. রামসফিল্ড ঘোষণা দেন, সর্বাধিনায়ক শব্দের ব্যবহার শুধুমাত্র রাষ্ট্রপতির জন্যই ব্রাদ্দ থাকবে।[38]
সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক হল ভিয়েতনামের রাষ্ট্রপতি। যিনি একই সাথে জাতীয় প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতি। যদিও এই পদ শুধু লিখিত এবং সত্যিকার অর্থে ভিয়েতনামের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় সেনা কমিশনের নিকট এই ক্ষমতা অর্পিত।
১৯৯৫ সালের সংবিধানের অনুচ্ছেদ নং ৭৪(১)-এ ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রীকে জাতীয় সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক ঘোষণা করা হয়।[39]
১৯৫৬ সালে পশ্চিম জার্মানি ন্যাটো -তে যোগদানের পর সংবিধানের কিছু ধারা সংশোধন করা হয়। এই সংবিধানের অনুচ্ছেদ নং ৬৫(ক) অনুযায়ী,
প্রুশিয়ান রাজ্য, জার্মান রাজত্ব, ওয়েইমার প্রজাতন্ত্র এবং নাৎজি যুগে যেই রাষ্ট্রপ্রধান হোক না কেন - ১৯১৮ সাল পর্যন্ত প্রুশিয়ান রাজ্য /জার্মান রাজ্যের রাজা (প্রুশিয়ান রাজ্যের সংবিধান /জার্মান রাজ্যের সংবিধান অনুযায়ী), ১৯৩৪ সাল পর্যন্ত ওয়েইমার রাজ্যের রাষ্ট্রপতি (ওয়েইমার সংবিধান অনুযায়ী) এবং ১৯৩৪-১৯৪৫ সাল পর্যন্ত ফুহ্রার (প্রধান নেতা) - সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান হিসেবে নিয়োযিত ছিলেন।
ইসরায়েলের আইনে বর্ণিত, ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনীর সর্বোচ্চ কর্তৃত্ব প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে গঠিত সরকারের উপর অর্পিত। প্রতিরক্ষামন্ত্রী সরকারের হয়ে কর্তৃত্ব চর্চা করে থাকেন এবং তার অধীনস্থ জেনারেল স্টাফ প্রধান সামরিক বাহিনীর উপর সর্বোচ্চ কর্তৃত্ব করে থাকেন।[40]
জাপানে মেইজি সভ্যতার পূর্বে সর্বাধিনায়কের দায়িত্ব ছিল শোগুনের উপর।জাপানে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পর জাপানি প্রতিরক্ষা বাহিনীর সর্বাধিনায়কের পদ প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া হয়।
নেদারল্যান্ডের সংবিধানের অনুচ্ছেদ নং ৯৭ -এ বর্ণিত, সশস্ত্র বাহিনীর উপর সর্বোচ্চ কর্তৃত্ব সরকারের। অনুচ্ছেদ নং ৪২ -এ বলা হয়, সরকারের সব কাজের জন্য মন্ত্রিসভা দায়ী থাকবে। অনুচ্ছেদ নং ৪৫ -এ বলা হয়, মন্ত্রীবর্গ নিয়ে সাংবিধানিক উপায়ে গঠিত মন্ত্রিসভার সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী, যিনি সকল সরকারি নীতি নির্ধারণের অধিকার রাখেন।[41]
সশস্ত্র বাহিনীর প্রাথমিক কার্যনির্বাহী দায়িত্ব প্রতিরক্ষামন্ত্রীর উপর ন্যস্ত, যা প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিয়মমাফিক কার্য।[42] প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রধান হল উচ্চ পদস্থ সামরিক কর্মকর্তা যিনি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও সশস্ত্র বাহিনীর মাঝে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে থাকেন এবং সশস্ত্র বাহিনীর সামরিক ও কৌশলগত পরিকল্পনা, সক্রিয়তা এবং বিস্তৃতির ব্যাপারে মন্ত্রীর নিকট দায়বদ্ধ থাকেন।[43]
উত্তর কোরিয়ার সংবিধানে রাষ্ট্রপ্রধান কে হবে এই বিষয়ে স্পষ্ট কোনো বর্ণণা দেওয়া নেই।
তবে উত্তর কোরিয়ার সংবিধানের ১০২ নং ধারা তে বর্ণিত, জাতীয় প্রতিরক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান হল সশস্ত্র বাহিনীর সর্বোচ্চ কমান্ডার এবং রাষ্ট্রের সকল সশস্ত্র বাহিনীকে তিনি নির্দেশনা প্রদান করেন।
বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে গঠিত সুইডিশ সরকার সর্বোচ্চ নির্বাহী ক্ষমতার অধিকারী; এবং সর্বাধিনায়কের সম পদমর্যাদার, যদিও লিখিতভাবে এই পদ দেওয়া হয়নি।[44]
তবে বর্তমান রাজা কার্ল ১৬ গুস্তাফ এখনও সুইডিশ সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর চার তারকা সংবলিত জেনারেল ও এডমিরাল এবং অলিখিত বিধানে সুইডিশ সশস্ত্র বাহিনীর সর্বোচ্চ প্রতিনিধি।[45]
যুদ্ধবিগ্রহকালীন সময়ে সশস্ত্র বাহিনীর প্রধানের নেতৃত্বে সামরিক বাহিনী পরিচালিত হয়, যিনি প্রতিরক্ষা বিভাগ এবং ফেডারেল কাউন্সিলে প্রতিবেদন পেশ করেন।
সংবিধানের ১৬৮ নং অনুচ্ছেদে বলা আছে, যুদ্ধ ঘোষণা বা জরুরি অবস্থার সময় ফেডারেল এসেম্বলি যুদ্ধকালীন দায়িত্ব নেওয়ার জন্য একজন জেনারেলকে সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক হিসেবে নিয়োগ দিবেন। এই জেনারেল সর্বোচ্চ ক্ষমতাবলে সামরিক বাহিনীর উপর সর্বোচ্চ কর্তৃত্ব করতে পারবে। কিন্তু সে ফেডারেল কাউন্সিলের অধীনস্থ থাকবে (অনুচ্ছেদ ৫৮,৬০,১৭৪,১৭৭,১৮০ ও ১৮৫ দ্রষ্টব্য)। [46]
সুইস ইতিহাসে চারজন জেনারেলকে নিয়োগ দেয়া হয়েছিল- সুইস গৃহযুদ্ধের সময় জেনারেল হেনরি ডাফোর, ফ্রাংকো-প্রুশিয়ান যুদ্ধের সময় জেনারেল হানস হারজুগ, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় জেনারেল উলরিক উইলি এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জেনারেল হেনরি গুসান।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.