Loading AI tools
২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসী হামলা উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
১১ সেপ্টেম্বরের হামলা (যা নাইন/ইলেভেন[lower-alpha 1] নামেও পরিচিত) ২০০১ সালের ১১ই সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার সকালে যুক্তরাষ্ট্রের উপর আল কায়েদার একইসাথে চারটি সমন্বিত আত্মঘাতী হামলা। এই হামলায় ২,৯৯৭ জন নিহত, ৬,০০০ এর অধিক মানুষ আহত হয় এবং ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের অধিক অবকাঠামো ও সম্পদ ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়।[1][2]
১১ ই সেপ্টেম্বরের হামলা | |
---|---|
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-এ আত্মঘাতী হামলা-এর অংশ | |
স্থান |
|
তারিখ | ১১ সেপ্টেম্বর ২০০১ পূর্বাহ্ণ ৮:৪৬ – পূর্বাহ্ণ ১০:২৮ (ইডিটি) |
লক্ষ্য |
|
হামলার ধরন |
|
নিহত | ২,৯৯৬ (২,৯৭৭ ঘটনার শিকার + ১৯ অপহরণকারী) |
আহত | ৬০০০+ |
হামলাকারী দল | জর্জ ডাব্লিউ বুশের নেতৃত্বে |
আল-কায়েদার উৎপত্তি হয় ১৯৭৯ সালে যখন সোভিয়েত ইউনিয়ন আফগানিস্তানে আক্রমণ করে। ওসামা বিন লাদেন আফগানিস্তানের বিভিন্ন প্রান্তে ভ্রমণ করেন এবং আরব মোজাহিদীনদের সংগঠিত করে সোভিয়েতদের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে সাহায্য করেন।[3] আয়মান আল-জাওয়াহিরির নির্দেশনায় বিন লাদেন আরও তৎপর হয়ে ওঠেন।[4] ১৯৯৬ সালে বিন লাদেন তার প্রথম ফতোয়া জারি করেন এবং মার্কিন সেনাদের সৌদি আরব সহ অন্যান্য মুসলিম দেশে বানানো যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত সেনাঘাঁটিগুলো সরিয়ে নিতে বলেন।[5]
ওসামা বিন লাদেন এই হামলার নেপথ্যে ছিলেন বলে ধারণা করা হয় এবং শুরুতে তিনি তার জড়িত থাকার ব্যাপারে অস্বীকৃতি জানালেও পরে তিনি তার মিথ্যা বক্তব্যকে অমূলক বলে উল্লেখ করেন।[6][7] আল জাজিরা ২০০১ সালের ১৬ই সেপ্টেম্বর এক প্রতিবেদনে ওসামা বিন লাদেনর এক বক্তব্য প্রচার করে, যেখানে তিনি বলেন, "আমি জোর দিয়ে বলছি যে আমি এই কাজ করিনি, মনে হয় কেউ তার ব্যক্তিগত উদ্দেশ্য হাসিল করার লক্ষ্যে এই হামলা চালিয়েছেন।"[8] ২০০১ সালের নভেম্বর মাসে মার্কিন সেনাবাহিনী আফগানিস্তান এর জালালাবাদ থেকে একটি ভিডিওটেপ উদ্ধার করেন। ভিডিওতে দেখা যায় বিন লাদেন খালেদ আল-হারবির সাথে কথা বলছেন এবং এই হামলার সম্পর্কে তার জানার বিষয়টি স্বীকার করছেন।[9] ২০০১ সালের ২৭শে ডিসেম্বর বিন লাদেনের আরেকটি ভিডিও প্রকাশিত হয়। এই ভিডিওতে তিনি বলেন:
এটি স্পষ্ট যে ইসলাম এর বিরুদ্ধে পশ্চিমা বিশ্ব এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রএর ঘৃণা রয়েছে... এটি ক্রুসেডারদের ঘৃণা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড প্রশংসিত হওয়ার যোগ্য কারণ এটি অন্যায়ের বিরুদ্ধে এক ধরনের প্রতিক্রিয়া, যার উদ্দেশ্য হল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন বন্ধ করা, যারা আমাদের লোকজনদের হত্যা করছে... আমরা বলি যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমাপ্তি আসন্ন, বিন লাদেন বা তার অনুসারীরা জীবিত থাকুক বা মৃত, মুসলিম উম্মাহ জেগে ওঠেছে।
পরবর্তীকালে আল-কায়েদার বিভিন্ন নেতা এই হামলার দায় স্বীকার করেন এবং অফিসিয়ালভাবে বিভিন্ন প্রুফ প্রকাশ করা হয়।
আল জাজিরার সাংবাদিক ইয়োসরি ফুদা প্রতিবেদন প্রকাশ করেন যে ২০০২ সালের এপ্রিল মাসে খালিদ শেখ মোহাম্মদ এই হামলায় তার দায় স্বীকার করেন এবং জানান তার সাথে ছিলেন রামজি বিন আল-শিভ।[10][11] নয়/এগারো কমিশন রিপোর্টের প্রতিবেদনে বলা হয় যে ১১ সেপ্টেম্বরের হামলার প্রধান মোহাম্মদের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি বৈরিতার কারণ হল ইসরায়েলের প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক নীতির বিরুদ্ধে তার সহিংস অসম্মতি।[12] মোহাম্মদ ১৯৯৩ সালের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে বোমা হামলার উপদেশদাতা ও বিনিয়োগকারী ছিলেন এবং তিনি এই হামলার প্রধান বোমা হামলাকারী রামজি ইউসুফের মামা।[13][14]
"খালিদ শেখ মোহাম্মদের সাবস্টিটিউশন ফর টেস্টিমনি"তে বলা হয়ে পাঁচজন ব্যক্তি এই হামলার বিস্তারিত সম্পর্কে জানতেন। তারা ছিলেন বিন লাদেন, খালিদ শেখ মোহাম্মদ, রামজি বিন আল-শিভ, আবু তুরাব আল-উরদুনি, ও মোহাম্মদ আতেফ।[15]
ওসামা বিন লাদেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে একটি পবিত্র যুদ্ধের ঘোষণা দেন এবং প্রতিশোধমূলকভাবে মার্কিনীদের হত্যার জন্য বিন লাদেন ও অন্যান্যদের ১৯৯৮ সালে প্রকাশিত একটি ফতোয়ার স্বাক্ষরকে তদন্ত কর্মকর্তারা তার উদ্দেশ্য হিসেবে উল্লেখ করে থাকে।[16] ২০০২ সালের নভেম্বরে বিন লাদেনের "লেটার টু আমেরিকা"-তে তিনি তাদের হামলা সম্পর্কিত আল-কায়েদাদের উদ্দেশ্য ব্যাখা করেন, তন্মধ্যে রয়েছে:
২০০১ সালের ১১ই সেপ্টেম্বর সকালে ১৯ জন ছিনতাইকারী চারটি বাণিজ্যিক বিমানের (দুটি বোয়িং ৭৫৭ ও দুটি বোয়িং ৭৬৭) নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। বিমান চারটি ম্যাসাচুসেট্স অঙ্গরাজ্যের বস্টনের লোগান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর; নিউ জার্সি অঙ্গরাজ্যের নিউয়ার্কের নিউয়ার্ক লিবার্টি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর; ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যের লাউডেন কাউন্টি ও ফেয়ারফ্যাক্স কাউন্টির ওয়াশিংটন ডালস আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের লস অ্যাঞ্জেলেসের ল্যাক্স আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও সান ফ্রান্সিস্কোর এসএফও আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়েছিল। ছিনতাইয়ের জন্য দীর্ঘ পথ অতিক্রমকারী বৃহৎ বিমানগুলো বাছাই করা হয়েছিল, কারণ সেগুলো জ্বালানিতে পূর্ণ থাকে।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.