১৯৭৩ আরব-ইসরায়েলি যুদ্ধ
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
১৯৭৩ আরব-ইসরায়েলি যুদ্ধ (অক্টোবর যুদ্ধ, রমজান যুদ্ধ ও ইয়ম কিপুর যুদ্ধ বলেও পরিচিত) মিশর ও সিরিয়ার নেতৃত্বাধীন জোট এবং ইসরায়েলের মধ্যে ১৯৭৩ সালের ৬ থেকে ২৫ অক্টোবরের মধ্যে সংঘটিত হয়।
অক্টোবর যুদ্ধ/রমজান যুদ্ধইয়ম/কিপুর যুদ্ধ | |||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|
স্নায়ুযুদ্ধও আরব-ইসরায়েলি সংঘাতের অংশ | |||||||
![]() ৭ অক্টোবর মিশরীয় সৈনিকদের সুয়েজ খাল অতিক্রম | |||||||
| |||||||
বিবাদমান পক্ষ | |||||||
ইসরায়েল | See foreign involvement | ||||||
সেনাধিপতি ও নেতৃত্ব প্রদানকারী | |||||||
গোল্ডা মেয়ার মোশে দায়ান ডেভিড এলাজার ইসরায়েল তাল শেমুয়েল গোনেন ইতজাক হফি বেনিয়ামিন পেলেড হাইম বার লেভ আলবার্ট মান্ডলার † এরিয়েল শ্যারন |
আনোয়ার সাদাত হাফিজ আল আসাদ আহমেদ ইসমাইল আলি মোস্তফা তালাস সাদ এল শাজলি ইউসুফ শাকুর আবদেল গনি এল গামাসি আলি আসলান ওমর আবরাশ † | ||||||
শক্তি | |||||||
৩,৭৫,০০০[১৪]–৪,১৫,০০০ সৈনিক, |
মিশর: কুয়েত: মরক্কো: North Korea: সৌদি আরব তিউনিসিয়া: | ||||||
হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতি | |||||||
২,৫২১[২৯]—২,৮০০[৩০][৩১] মৃত ৭,২৫০[৩২]–৮,৮০০[৩০] আহত ২৯৩ বন্দী ১,০৬৩ ট্যাংক ধ্বংস, নষ্ট বা বন্দী[৩৩] ৪০৭ সাজোয়া যান ধ্বংস বা বন্দী ১০২-৩৮৭ যুদ্ধবিমান ধ্বংস[৩৪][৩৫] |
মিশর: ৫,০০০[৩০]—১৫,০০০[৩৬] মৃত সিরিয়া: ৩,০০০[৩০]—৩,৫০০[৩৬] মৃত ইরাক: ২৭৮ মৃত জর্ডান: ২৩ মৃত মোট ক্ষয়ক্ষতি: ৮,০০০[৩০]–১৮,০০০[৩৬] মৃত ১৮,০০০[৩০]–৩৫,০০০[৩৯] আহত ৮,৭৮৩ বন্দী ২,২৫০[৪০]–২,৩০০[৪১] ট্যাংক ধ্বংস ৩৪১[৩০]–৫১৪[৪২] যুদ্ধবিমান ধ্বংস ১৯ নৌযান ডুবে যায়[৪৩] | ||||||
|

ইহুদিদের পবিত্র দিন ইয়ম কিপুরের সময় ইসরায়েল-অধিকৃত অঞ্চলে আরব জোটের অতর্কিত হামলার মাধ্যমে এই যুদ্ধ শুরু হয়। এসময় মুসলিম পবিত্র মাস রমজান ছিল। মিশরীয় ও সিরিয়ান সেনারা যুদ্ধবিরতি রেখা ভেদ করে যথাক্রমে সিনাই উপদ্বীপ ও গোলান মালভূমিতে ঢুকে পড়ে। এই অঞ্চলগুলো ১৯৬৭ সালের ছয় দিনের যুদ্ধের সময় ইসরায়েল অধিকার করে নেয়। যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত ইউনিয়ন উভয়ে তাদের নিজ নিজ মিত্রদের এসময়ে সহায়তা করে। ফলে দুইটি পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে বিবাদ সৃষ্টি হয়।[৪৪]
মিশরের সফলভাবে সুয়েজ খাল অতিক্রম করার মাধ্যমে যুদ্ধের সূচনা হয়। যুদ্ধবিরতি রেখা অতিক্রম করার পর মিশরীয় সেনারা সিনাই উপদ্বীপের দিকে যাত্রা করে। তিন দিন পর ইসরায়েল এর অধিকাংশ সেনা নিয়োগ করে মিশরীয় অগ্রযাত্রা থামাতে সক্ষম হয়। সিরিয়ানরা গোলান মালভূমির উপর হামলা চালায়। প্রথমদিকে তারা ইসরায়েলি অধিকৃত অঞ্চলে সাফল্য লাভ করে। তিন দিনের মধ্যে ইসরায়েলিরা সিরিয়ানদের যুদ্ধপূর্ব যুদ্ধবিরতি রেখার বাইরে পাঠাতে সক্ষম হয়। এরপর তারা সিরিয়ার অভ্যন্তরে চারদিনব্যপী পাল্টা আক্রমণ চালায়। এক সপ্তাহের মধ্যে ইসরায়েলি গোলন্দাজরা দামেস্কের উপকন্ঠে গোলাবর্ষণ শুরু করে। নিজ মিত্রের ক্ষতির কথা চিন্তা করে মিশরের রাষ্ট্রপতি আনোয়ার সাদাত ধারণা করতেন যে সিনাইয়ের ভেতরে দুইটি কৌশলগত পথ অধিকার আলোচনার সময় তার অবস্থান শক্ত করবে। তাই তিনি মিশরীয়দের পুনরায় আক্রমণের নির্দেশ দেন। কিন্তু এই আক্রমণ প্রতিহত করা হয়। এরপর ইসরায়েলিরা পাল্টা আক্রমণ করে এবং দক্ষিণ ও পশ্চিমদিকে কায়রোর দিকে ধীরে অগ্রসর হওয়া শুরু করে। এসময় উভয় পক্ষে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।
২৪ অক্টোবর নাগাদ ইসরায়েল নিজেদের অবস্থান শক্ত করে নেয় এবং মিশরের থার্ড আর্মি ও সুয়েজের শহর ঘিরে ফেলতে সক্ষম হয়। এসময় যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়। ২৫ অক্টোবর যুদ্ধবিরতি হয় এবং যুদ্ধের সমাপ্তি হয়।
এই যুদ্ধের দীর্ঘমেয়াদি ফলাফল ছিল। ১৯৬৭ সালের ছয় দিনের যুদ্ধে ভারসাম্যহীন অবস্থায় পরা মিশরীয়-সিরিয়ান-জর্ডানি মিত্রতা প্রাথমিক সাফল্যের ফলে খন্ডিত হয়। ইসরায়েল যুদ্ধক্ষেত্রে সফল হলেও এটি একচ্ছত্রভাবে আরব রাষ্ট্রগুলো সামরিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না তা প্রতীয়মান হয়। এসকল পরিবর্তন শান্তি প্রক্রিয়ার দিকে এগিয়ে যায়। ১৯৭৮ সালে ক্যাম্প ডেভিড চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এর ফলে মিশরকে সিনাই উপদ্বীপ ফিরিয়ে দেয়া হয় এবং প্রথমবারের মত কোনো আরব রাষ্ট্র কর্তৃক ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেয়া হয়। মিশর সোভিয়েত ইউনিয়ন বলয়ের প্রভাব ত্যাগ করে বেরিয়ে আসে।
আরও দেখুন
- মধ্য প্রাচ্যে আধুনিক সংঘাতের তালিকা
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
Wikiwand - on
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.