Loading AI tools
ভারত সরকারের মালিকানাধীন ও পরিচালিত রাষ্ট্রীয় সংস্থা উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
ভারতীয় রেল ভারতের সরকারি রেলওয়ে কোম্পানি এবং ভারত সরকারের রেল মন্ত্রকের একটি বিভাগীয় সংস্থা। দেশের রেল পরিবহনের সিংহভাগ এই সংস্থার মালিকানাধীন।
ধরন | ভারত সরকারের রেল মন্ত্রকের বিভাগীয় সংস্থা |
---|---|
শিল্প | রেলপথ ও লোকোমোটিভ |
প্রতিষ্ঠাকাল | ১৬ এপ্রিল, ১৮৫৩ |
সদরদপ্তর | , |
বাণিজ্য অঞ্চল | ভারত |
প্রধান ব্যক্তি | কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী: অশ্বিনী বৈষ্ণব রেল রাষ্ট্রমন্ত্রী : মনোজ সিনহা ও রাজেন গোহেন চেয়ারম্যান, রেলওয়ে বোর্ড: অশ্বানী লোহানি [1] |
পরিষেবাসমূহ | রেল পরিবহন |
আয় | ১০ হাজার ৭৬৬ কোটি টাকা (১৯.১৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার)[2] |
কর্মীসংখ্যা | ১২,৪৭,০০০ (২০১৯)[3] |
মাতৃ-প্রতিষ্ঠান | রেল মন্ত্রক, ভারত সরকার |
বিভাগসমূহ | ১৮টি রেলওয়ে অঞ্চল |
ওয়েবসাইট | ভারতীয় রেলের সরকারি ওয়েবসাইট |
ভারতীয় রেল বিশ্বের বৃহত্তম ও ব্যস্ততম রেল পরিবহন ব্যবস্থাগুলির অন্যতম। প্রতিদিন ১ কোটি ৮০ লক্ষেরও বেশি যাত্রী এবং ২০ লক্ষ টনেরও বেশি পণ্য ভারতীয় রেলপথে চলাচল করে।[4][5] এই সংস্থা বিশ্বের বৃহত্তম বাণিজ্যিক তথা সরকারি পরিষেবাকর্মী নিয়োগকর্তা। সংস্থার কর্মচারী সংখ্যা ১২.২৭ লক্ষ (৩১ মার্চ, ২০১৯)। [4][6][7] দেশের সামগ্রিক দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ বরাবর রেলওয়ে ব্যবস্থা প্রসারিত। ৭,৩২১টি স্টেশন বিশিষ্ট ভারতের রেলপথের মোট দৈর্ঘ্য ৬৭,৪১৫ কিলোমিটারেরও বেশি। রোলিং স্টকের হিসেবে, ভারতীয় রেল ২৫০,০০০টিরও বেশি (পণ্য) ওয়াগন, ৫৫,০০০টিরও বেশি কোচ ও ১২,০০০টিরও বেশি লোকোমোটিভের মালিক।[6]
ভারতে রেল ব্যবস্থা চালু হয় ১৮৫৩ সালে। ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতার সময়, দেশে বিয়াল্লিশটি রেল ব্যবস্থা বিদ্যমান ছিল। ১৯৫১ সালে এই সংস্থাগুলির রাষ্ট্রায়ত্ত্বকরণের পর একটি মাত্র সংস্থা স্থাপিত হয় এবং উক্ত সংস্থাটি বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ রেল ব্যবস্থায় পরিণত হয়। ভারতীয় রেল দূরপাল্লা ও শহরতলি স্তরে মাল্টি-গেজ ব্যবস্থায় ব্রড, মিটার ও ন্যারো গেজে রেল পরিবহন পরিচালনা করে। এই সংস্থা একাধিক লোকোমোটিভ ও কোচ উৎপাদন কারখানারও মালিক।
ভারতের প্রথম রেলওয়ের প্রস্তাব ১৮৩২ সালে মাদ্রাজে করা হয়েছিল। দেশের প্রথম ট্রেন, 'রেড হিল রেলওয়ে', রাস্তা তৈরির জন্য গ্রানাইট পরিবহনের জন্য আর্থার তুলা নির্মিত করেছিল ১৮৩৭ সালে মাদ্রাজে চিন্তিত্রিপেট সেতুতে । ১৮৪৫ সালে, "গোদাবোরী বাঁধ নির্মাণ রেলওয়ে" রাজমুমারী দৌলেশ্বরম , গোদাবরী নদী উপর একটি বাঁধ নির্মাণের জন্য পাথর সরবরাহ। ১৮৫১ সালে, "সোলানি অ্যাকুইডাক্ট রেলওয়ে" রুবি কটিলি [সৌদি নদী] থেকে অ্যাকুয়াডাক্ট নির্মাণ সামগ্রী নির্মাণের জন্য রুর্কি দ্বারা নির্মিত হয়েছিল।[8]
১৮৪৪ সালে ভারতের গভর্নর-জেনারেল লর্ড হেনরি হার্ডিঞ্জ বেসরকারি সংস্থাগুলিকে ভারতে রেলপথ স্থাপন করার অনুমতি দান করেন। ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি (এবং পরবর্তীকালে ব্রিটিশ সরকার) নতুন নতুন রেলওয়ে কোম্পানিকে ভারতে রেলপথ স্থাপনের ব্যাপারে উৎসাহ দিতে থাকেন। একটি স্কিমের আওতায় জমি ও শুরুর বছরগুলিতে ৫ শতাংশ পর্যন্ত বার্ষিক দাখিলা নিশ্চিত করা হয়। কোম্পানিগুলি ৯৯ বছরের লিজে রেলপথ নির্মাণ ও পরিচালনা করতে থাকে। অবশ্য সরকারেরও সুযোগ রাখা হয় নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বেই সেগুলি কিনে নেবার।[9]
১৮৫৩-৫৪ সালে বোম্বাই (অধুনা মুম্বাই) ও কলকাতার নিকটে 'পরীক্ষামূলক' দুটি লাইন স্থাপন ও পরিচালনার উদ্দেশ্যে গ্রেট ইন্ডিয়ান পেনিনসুলার রেলওয়ে (জিআইপিআর) ও ইস্ট ইন্ডিয়ান রেলওয়ে (ইআইআর) নামে দুটি কোম্পানি স্থাপন করা হয়।[9] ১৮৫১ সালের ২২ ডিসেম্বর ভারতে প্রথম রেল চালু হয়। রুরকিতে স্থানীয় একটি খাল নির্মাণকার্যে মালপত্র আনানেওয়া করার জন্য এই ট্রেনটি চালু করা হয়েছিল।[10] দেড় বছর বাদে, ১৮৫৩ সালের ১৬ এপ্রিল বোম্বাইয়ের বোরি বান্দর থেকে থানের মধ্যে প্রথম যাত্রীবাহী ট্রেন পরিষেবার সূচনা ঘটে। সাহিব, সিন্ধ ও সুলতান নামের তিনটি লোকোমোটিভ কর্তৃক চালিত এই রেল পরিষেবা ৩৪ কিলোমিটার পথে চালু হয়েছিল।[11]
১৮৫৪ সালে ভারতের তৎকালীন গভর্নর-জেনারেল লর্ড ডালহৌসি ভারতের প্রধান প্রধান অঞ্চলগুলিকে জুড়ে একটি ভারবাহী রেলপথ নির্মাণের পরিকল্পনা করেন। সরকারি সুরক্ষা ব্যবস্থায় উৎসাহিত হয়ে প্রচুর অর্থ বিনিয়োগ চলে এবং একাধিক নতুন রেল কোম্পানি স্থাপিত হয়। ফলত ভারতে রেল ব্যবস্থার দ্রুত বিস্তার ঘটতে শুরু করে।[12] অনতিবিলম্বে দেশীয় রাজ্যগুলিও তাদের নিজস্ব রেল ব্যবস্থার প্রবর্তন ঘটায়। এইভাবে অধুনা অন্ধ্রপ্রদেশ, অসম ও রাজস্থান নামে পরিচিত রাজ্যগুলিতে রেলপথের বিস্তার ঘটে। ১৮৬০ সালে ভারতে রেলপথের মোট দৈর্ঘ্য ছিল ১৩৪৯ কিলোমিটার। ১৮৮০ সালে এই দৈর্ঘ্য হয় ২৫,৪৯৫ কিলোমিটার। এই বৃদ্ধি মুখ্যত দেশের তিন প্রধান বন্দর বোম্বাই, কলকাতা ও মাদ্রাজকে কেন্দ্র করে ঘটেছিল।[13] অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রেলপথ স্থাপন করেছিল ভারতীয় কোম্পানিগুলিই। যমুনা ব্রিজ নির্মাণ সহ দিল্লি-লাহোর রেলপথটি নির্মাণ করেছিল বাবা শিবদয়াল বেদি অ্যান্ড সনস নামে এক সংস্থা। ১৮৯৫ সালের মধ্যে ভারতে দেশীয় লোকোমোটিভ উৎপাদন শুরু হয়ে যায়। ১৮৯৬ সালে উগান্ডা রেলওয়ের নির্মাণকাজে ভারত থেকে ইঞ্জিনিয়ার ও লোকোমোটিভ পাঠানো হয়েছিল।
বিংশ শতাব্দীর প্রারম্ভে ভারতে ব্রড, ন্যারো ও মিটার গেজ নেটওয়ার্কে একাধিক মালিকানা ও ব্যবস্থাপনায় বিভিন্ন রেল পরিষেবা চালু হয়ে যায়।[14] ১৯০০ সালে সরকার জিআইপিআর নেটওয়ার্কটি অধিগ্রহণ করে নেয়। তবে ব্যবস্থাপনা কোম্পানির পরিচালনাতেই চলতে থাকে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ ঘোষিত হলে যুক্তরাজ্য, মেসোপটেমিয়া, পূর্ব আফ্রিকা প্রভৃতি অঞ্চলে প্রেরণের জন্য রেলপথে সেনা ও খাদ্যশস্য প্রেরিত হয় বোম্বাই ও করাচি বন্দর নগরের উদ্দেশ্যে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের শেষে ভারতে রেল ব্যবস্থা বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।[15] ১৯২৩ সালে জিআইপিআর ও ইআইআর কোম্পানিদুটির রাষ্ট্রায়ত্ত্বকরণ করা হয়। সরকার এই দুই কোম্পানির পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রণের ভার সম্পূর্ণ নিজের হাতে গ্রহণ করে।[14]
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ভারতের রেলব্যবস্থাকে আরও ক্ষতিগ্রস্ত করে। রেলের রোলিং স্টক সম্পূর্ণটাই চলে যায় মধ্যপ্রাচ্যে। রেলওয়ে ওয়ার্কশপগুলি অস্ত্রাগারে পরিণত হয়।[16] ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতার পর ভারতের রেলপথের ৪০ শতাংশ চলে যায় নবগঠিত পাকিস্তান রাষ্ট্রে। বত্রিশটি পূর্বতন দেশীয় রাজ্যগুলির মালিকানাধীন লাইন সহ মোট বিয়াল্লিশটি পৃথক রেল ব্যবস্থা একীভূত করে চালু হয় ভারতীয় রেল। ১৯৫১ সালে বিদ্যমান রেল ব্যবস্থাটি পরিত্যক্ত হয় এবং জোন বা অঞ্চল ব্যবস্থা চালু হয়। ১৯৫২ সালে ভারতে ছয়টি রেল অঞ্চল স্থাপিত হয়।[14]
ভারতের অর্থনীতি সমৃদ্ধির মুখ দেখার সঙ্গে সঙ্গে ভারতের রেলওয়ে উৎপাদনের পুরোটাই দেশে উৎপাদিত হতে থাকে। ১৯৮৫ সালে স্টিম ইঞ্জিনের বদলে ডিজেল ও ইলেকট্রিক লোকোমোটিভ চালু করা হয়। ১৯৮৭ থেকে ১৯৯৫ সালের মধ্যে রেলওয়ের সংরক্ষণ ব্যবস্থার পুরোটাই সুনিয়ত ও কম্পিউটারায়িত করা হয়।
২০০৩ সালে ভারতীয় রেল, দেশে রেল ব্যবস্থা প্রবর্তনার সার্ধশতবর্ষ উদ্যাপন করে। রেল অঞ্চলে চালু হওয়া প্রথম ট্রেনের স্মৃতিতে বিভিন্ন রেলওয়ে জোন একই পথে হেরিটেজ ট্রেন চালায়। পরিষেবার ১৫০ বছরকে স্মরণীয় করে রাখতে ভারতীয় রেল একটি স্মারক লোগোও চালু করে।[17][18] সেই সঙ্গে সার্ধশতবর্ষ উদ্যাপনের নতুন ম্যাসকট "ভোলু দি এলিফ্যান্ট গার্ড"কেও সর্বসমক্ষে আনা হয়।[19]
ভারতীয় রেল কোনো প্রাইভেট কোম্পানি নয়। এটি ভারত সরকারের রেল মন্ত্রক কর্তৃক অধিগৃহীত ও পরিচালিত একটি বিভাগীয় সংস্থা। এক জন রেল মন্ত্রকের কেন্দ্রীয় পূর্ণমন্ত্রীরূপে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। দুই জন রাষ্ট্রমন্ত্রী রেলমন্ত্রীকে সহায়তা করে থাকেন। ভারতীয় রেলের প্রশাসনের দায়িত্বে রয়েছে এক অর্থ কমিশনার, পাঁচ সদস্য ও এক চেয়ারম্যান বিশিষ্ট রেলওয়ে বোর্ড। এর যাবতীয় খরচ ভারতীয় পার্লামেন্ট দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। ১৯২৪ থেকে ২০১৬ অবধি সাধারণ বাজেটের দুই দিন আগে রেল বাজেট পেশ হত।
মূল নিবন্ধ ভারতীয় রেলের অঞ্চল ও বিভাগ
ভারতীয় রেল একাধিক অঞ্চল বা জোনে বিভক্ত। এই অঞ্চলগুলি আবার বিভাগ বা ডিভিশনে বিভক্ত। ভারতীয় রেলে অঞ্চলের সংখ্যা ১৯৫১ সালে ছিল ছয় থেকে আটটি, ১৯৫২ সালে নয়টি এবং সর্বশেষ হিসেব অনুযায়ী আঠারোটি। প্রত্যেকটি আঞ্চলিক রেলওয়ে একাধিক বিভাগে বিভক্ত। প্রতিটি বিভাগের নিজস্ব সদর দফতর রয়েছে। ভারতে সর্বমোট সত্তরটি রেলওয়ে ডিভিশন আছে।[14][20]
কলকাতা মেট্রো ভারতীয় রেলের মালিকানাধীন সংস্থা হলেও, এটি কোনো রেলওয়ে অঞ্চলের অংশ নয়। ২০১০ সাল থেকে এটি একটি স্বতন্ত্র রেলওয়ে অঞ্চলের মর্যাদা লাভ করে।[20]
কোঙ্কণ রেল কোঙ্কন রেলওয়ে কর্পোরেশন দ্বারা পরিচালিত হয়, যার সদর দপ্তর ভারতের মহারাষ্ট্রের নাভি মুম্বাইয়ের সিবিডি বেলাপুরে অবস্থিত। এটি রেলওয়ে অঞ্চলের অংশ নয়, কিন্তু রেলওয়ে অঞ্চলের সমান ধরা হয়।
কলকাতা মেট্রো সহ আঠরোটি রেলওয়ে অঞ্চলের শীর্ষে থাকেন একজন জেনারেল ম্যানেজার (জিএম), যিনি সরাসরি রেলওয়ে বোর্ডকে রিপোর্ট করেন। বিভাগগুলির দায়িত্বে থাকেন ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার (ডিআরএম)। ইঞ্জিনিয়ারিং, যন্ত্র প্রযুক্তি, বৈদ্যুতিন, সিগনাল ও দূরসংযোগ, হিসাব, কর্মচারী, অপারেটিং, বাণিজ্যিক ও সুরক্ষা শাখার বিভাগীয় আধিকারিকবৃন্দ সংশ্লিষ্ট ডিভিশনাল ম্যানেজারের কাছে রিপোর্ট করেন। তারা রেলওয়ে সম্পত্তির পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে নিযুক্ত থাকেন। এই পদমর্যাদাক্রমের নিচে থাকেন স্টেশন ম্যানেজার। তাঁরা নির্দিষ্ট স্টেশনের নিয়ন্ত্রণ দায়িত্বে থাকেন এবং তাঁদের স্টেশন প্রশাসনের অধীনস্থ ট্র্যাকে ট্রেনের গতিবিধি পরিচালনা করেন।
ভারতীয় রেলওয়ে এর রোলিং স্টক ও ভারী ইঞ্জিনিয়ারিং উপাদানের অনেকগুলিই উৎপাদন করে। প্রোডাকশন ইউনিট নামক ছয়টি উৎপাদন কারখানা রেল মন্ত্রক দ্বারা পরিচালিত হয়। এই ছয়টি প্রোডাকশন ইউনিট বা পিইউএস-এর (PUs) প্রত্যেকটির শীর্ষে থাকেন একজন জেনারেল ম্যানেজার বা জিএম। তিনি সরাসরি রেলওয়ে বোর্ডকে রিপোর্ট করেন। এই ছয়টি ইউনিট হল:
ভারতীয় রেলের অন্যান্য স্বাধীন ইউনিটগুলি হল:
রিসার্চ ডিজাইন অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ডস অর্গ্যানাইজেশন (আরডিএসও), লখনউ ভারতীয় রেলের আর অ্যান্ড ডি বিভাগ। এটি রেলওয়ে বোর্ড, আঞ্চলিক রেলওয়ে ও প্রোডাকশন ইউনিটগুলির কারিগরি উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করে।
ভারত আর্থ মুভারস লিমিটেড, বেঙ্গালুরু ভারতীয় রেলের সংস্থা না হলেও এটি ভারতীয় রেল ও দিল্লি মেট্রো রেলের জন্য কোচ নির্মাণ করে।
সেন্ট্রাল অর্গ্যানাইজেশন ফর রেলওয়ে ইলেকট্রিফিকেশন (সিওআরই), মেট্রো রেলওয়ে, কলকাতা ও এনএফআর-এর নির্মাণ সংস্থাগুলিও জেনারেল ম্যানেজার কর্তৃক পরিচালিত হয়।
এই সকল জোন ও প্রোডাকশন ইউনিটগুলি ছাড়াও একাধিক সরকার অধিগৃহীত সংস্থা রেল মন্ত্রকের প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। এগুলি হল:
নাম | প্রস্তুতকারক | সাল | শক্তি ক্ষমতা | গতিবেগ | বর্তমান অবস্থা |
---|---|---|---|---|---|
WAP - ১ | চিত্তরঞ্জন রেলইঞ্জিন কারখানা | ১৯৮০-১৯৯৬ | ২,৯০০ কিলোওয়াট | ১৩০ কিমি/ঘণ্টা | সক্রিয় |
WAP - ২ | মিতসুবিশি | ১৯৮০ সালে | ২,১৭০ কিলোওয়াট | অবসরপ্রাপ্ত | |
WAP - ৩ | চিত্তরঞ্জন রেলইঞ্জিন কারখানা | ১৯৮৭ | ২,৯০০ কিলোওয়াট | ১৪০ কিমি/ঘণ্টা | অবসরপ্রাপ্ত |
WAP - ৪ | চিত্তরঞ্জন রেলইঞ্জিন কারখানা | ১৯৯৪ | ৩,৭৭০ কিলোওয়াট | ১৪০ কিমি/ঘণ্টা | সুপারফাস্ট বা নন সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস-এ সক্রিয় |
WAP - ৫ | চিত্তরঞ্জন রেলইঞ্জিন কারখানা - এবিবি | ২০০০-২০২২ | ৪,৫০০ কিলোওয়াট | ১৬০ কিমি/ঘণ্টা | সক্রিয় |
WAP - ৬ | চিত্তরঞ্জন রেলইঞ্জিন কারখানা | ১৯৯৫-১৯৯৮ | ৪,০০০ কিলোওয়াট | অবসরপ্রাপ্ত | |
WAP - ৭ | চিত্তরঞ্জন রেলইঞ্জিন কারখানা -
বেনারস লোকোমোটিভ ওয়ার্কস - পাটিয়ালা লোকোমোটিভ ওয়ার্কস |
২০২০-বর্তমান | ৪,৭৩৫ কিলোওয়াট | ১৪০ কিমি/ঘণ্টা | সক্রিয় |
নাম | প্রস্তুতকারক | সাল | শক্তি ক্ষমতা | গতিবেগ |
---|---|---|---|---|
WAG - ৭ | চিত্তরঞ্জন রেলইঞ্জিন কারখানা ভারত হেভি ইলেক্ট্রিক্যালস | - | ৪,১০০ কিলোওয়াট | ১১০ কিমি/ঘণ্টা |
পঁচিশটি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল পুদুচেরিতে (পূর্বনাম পন্ডিচেরি) প্রায় ৯০০০টি যাত্রীবাহী ট্রেন এক কোটি আশি লক্ষ যাত্রী নিয়ে চলাচল করে।
কেবলমাত্র সিকিম রাজ্যে কোনো রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা নেই।
ডিসেম্বর ২০১৭ থেকে, উপার্জন, যাত্রীদের পদচারণা এবং কৌশলগত গুরুত্বের ভিত্তিতে স্টেশনগুলিকে অ-শহরতলী গ্রুপ NSG1 থেকে NSG6, শহরতলী গ্রুপ SG1 থেকে SG3, এবং বিরাম গ্রুপ HG1 থেকে HG3 এ শ্রেণীবদ্ধ করা হয়েছে।
ভারতীয় রেলে ২ রকম যাত্রী কোচ ব্যবহৃত হয় : একটি হচ্ছে ICF কোচ ও অপরটি লিংক হফম্যান বুশ কোচ। লিংক-হফম্যান-বুশ কোচ উৎপত্তিস্থল জার্মানি হলেও বর্তমানে ভারতে প্রস্তূত করা হয়। দেশে একমাত্র স্টিল অথরিটি অফ ইন্ডিয়া এই চাকা তৈরি করে থাকে। দেশের অধিকাংশ অঞ্চলে যাত্রীবাহী বিভাগটি দূরপাল্লার যাতায়াতের জন্য সর্বাধিক জনপ্রিয়।
ভারতে স্টেনলেস স্টিলের এলএইচবি (লিঙ্ক হফম্যান বুশ) কোচই ছিল আধুনিকতম। পুরনো লোহার কোচের তুলনায় এলএইচবি কোচ অনেক হাল্কা। আরও হাল্কা হবে অ্যালুমিনিয়ামের কোচ। তাপ ও মরচে নিরোধক বলে সেই সব কোচের রক্ষণাবেক্ষণের খরচ হবে তুলনায় অনেকটাই কম। সেই সঙ্গে ওজনে হাল্কা হওয়ায় সহজে গতি বাড়ানো যাবে অ্যালুমিনিয়াম ট্রেনের। সর্বোপরি সাশ্রয় হবে জ্বালানিতেও। এ বার এক ধাপ এগিয়ে পুরোদস্তুর অ্যালুমিনিয়ামের কোচ তৈরি হবে এ দেশেই। রায়বরেলীর মডার্ন কোচ ফ্যাক্টরি (এমসিএফ)-কে খুব তাড়াতাড়ি ওই কোচ তৈরির অনুমতি দিতে পারে রেল বোর্ড।[21]
একটি সাধারণ যাত্রীবাহী ট্রেনে আঠারোটি কোচ থাকে। তবে কোনো কোনো জনপ্রিয় ট্রেনে ২৪টি পর্যন্ত কোচও দেওয়া হয়। একটি কোচ এমনভাবে প্রস্তুত করা হয় যাতে সেই কোচে ১৮ থেকে ৮১ জন যাত্রী অবস্থান করতে পারেন। তবে ছুটির মরসুমে বা অন্য ব্যস্ত সময়ে আরও অনেক যাত্রী একটি কোচে ভ্রমণ করতে পারেন। অধিকাংশ নিয়মিত ট্রেনেই ভেস্টিবিউল দিয়ে কোচ সংযুক্ত করা হয়। তবে ‘অসংরক্ষিত কোচ’গুলি কোনো ভেস্টিবিউল দিয়ে মূল গাড়ির সঙ্গে যুক্ত থাকে না। যাত্রী সুবিধার্থে প্রতিটি কোচ-এ ১.৮ ঘন মিটার (বা ১৮০০ লিটার) জল ধারকও থাকে।
বাতিলের বদলে সংরক্ষণ (Reservation against cancellation) ব্যবস্থায়ে ভ্রমণ টিকিট না পাওয়া গেলেও শেয়ারড বাথ পাওয়া যায়। এই ব্যবস্থায় অপেক্ষারত যাত্রীদের টিকিট বাতিল করার বদলে ট্রেনে জায়গা পাইয়ে দেওয়া হয়।[22]
শ্রেণী[23] | শ্রেণী উপসর্গ | বিবরণ[24][25] |
---|---|---|
সেলুন | ট্রেনগুলিতে হোটেলের পরিবেশ দিতে এই কোচ পরিচালনা শুরু করা হয়। এই কোচ চার্টার ভিত্তিতে কাজ করে অর্থাৎ বুকিং প্রয়োজন। এর মধ্যে একটি মাস্টার বেডরুম, একটি সাধারণ শয়নকক্ষ, একটি রান্নাঘর এবং জানালার পিছনে রয়েছে। আরও লোকের থাকার জন্য চার থেকে ছয়টি অতিরিক্ত বেড দেওয়া হয়।[26] এই কোচগুলির মধ্যে প্রথমে ২৯ মার্চ ২০১৮ জম্মু মেলের সাথে সংযুক্ত করা হয়েছিল।[27] | |
ভিস্টাডোম | EV | কিছু পর্যটন রুটে ভিস্তাডোম কাচের ছাদযুক্ত কোচ পরিচালনা করা হয়। These include Araku Valley, Konkan railway, Kalka–Shimla Railway, Kashmir Valley, Kangra Valley and Neral–Matheran route. These coaches fare are equivalent to AC Executive Chair Car. IR also has plans to start Vistadome on Nilgiri mountain railway.[28] |
1A | এসি ফার্স্ট ক্লাস: ভারতীয় রেলওয়ের সবচেয়ে বিলাসবহুল এবং ব্যয়বহুল ক্লাস, যার ভাড়া প্রায় বিমান ভাড়ার সমান। পূর্ণ এসি প্রথম শ্রেণীর কোচে আটটি কেবিন (দুটি কুপ সহ) এবং অর্ধেক এসি প্রথম শ্রেণীর কোচে তিনটি কেবিন (একটি কুপ সহ) রয়েছে। কোচের একজন পরিচারক আছে, এবং বেডিং ভাড়ার অন্তর্ভুক্ত। এই শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কোচ, শুধুমাত্র জনপ্রিয় রুটে উপস্থিত, ১৮ (পূর্ণ কোচ) বা ১০ জন যাত্রী (অর্ধেক কোচ) বহন করতে পারে। প্রতিটি বগিতে একটি দরজা রয়েছে যা যাত্রীরা ভিতর থেকে লক করতে পারে এবং 1A কোচে কোনও পাশের উপরের বা পাশের নিম্ন বার্থ নেই।[29] ২টি বার্থ (১টি নিম্ন + ১টি উপরের) বিশিষ্ট কম্পার্টমেন্টকে কুপ বলা হয় এবং ৪টি বার্থ (২টি নিম্ন + ২টি উপরের) সহ কম্পার্টমেন্টকে কেবিন বলা হয়।[29] | |
2A | AC two tier: These air-conditioned coaches have sleeping berths across eight bays. Berths are usually arranged in two tiers in bays of six: four across the width of the coach and two lengthwise across the corridor, with curtains along the corridor. Bedding is included in the fare. A coach can carry 48 (full coach) or 20 passengers (half coach). | |
3A | AC three tier: Air-conditioned coaches with 64 sleeping berths. Berths are similar to 2A, but with three tiers across the width and two lengthwise for eight bays of eight. They are slightly less well-appointed, usually with no reading lights or curtains. Bedding is included in the fare. | |
3E | G | এসি তিন-স্তরীয় (সাশ্রয়ী): মূলত গরীব রথ এক্সপ্রেস ট্রেনগুলোতে এই কোচের ব্যবহার হয়। ৩A কোচের মতোই তবে পার্শ্ব বার্থ গুলোতে একটা অতিরিক্ত বার্থ থাকে যা পার্শ্ব মধ্য বার্থ । বিছানা সরবরাহ করা হয় না। |
EA | Anubhuti: Air-conditioned top-end class of Shatabdi Express, each seat with own in-fligt type tv entertainment set. These coaches were introduced in 12 January 2018. First train to get these coaches is Chennai Central-Mysuru Chennai Central Shatabdi Express. | |
EC | Executive chair car: An air-conditioned coach with spacious seats and legroom. With four seats in a row, it is used for intercity day travel and is available on the Tejas, Shatabdi Express and Double Decker Express. | |
CC | AC chair car: An air-conditioned coach with five seats in a row, used for intercity day travel. Old model coach is in 3+3 type configuration new model coaches are in 3+2 type configuration.
Air-conditioned double-deck coaches are used on the Double Decker Express, these coaches have 2 decks(upper deck and lower deck(with 3+2 seating configuration)) while Normal CC coach contains only one deck. | |
SL | স্লিপার ক্লাস: স্লিপার ক্লাস হল IR-এর সবচেয়ে সাধারণ কোচ, যেখানে একটি ট্রেনের রেকের সাথে দশ বা তার বেশি SL কোচ যুক্ত থাকে, প্রতিটি কোচে ৯টি উপসাগর। তারা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ছাড়াই প্রতিটি উপসাগরে দৈর্ঘ্যের দিকে ৬টি (৩+৩) বার্থ এবং ২টি (১+১) বার্থ সহ স্লিপিং কোচ। তারা প্রতি কোচে ৭২ জন যাত্রী বহন করে (১২৭২৪ তেলেঙ্গানা এক্সপ্রেস-এর মতো কিছু ট্রেনে ৮০-তে উন্নীত হয়েছে)। প্রতি কোচে ৪টি শেয়ার্ড টয়লেট রয়েছে, প্রতিটি প্রান্তে ২টি (১+১)। | |
2S | Second seater: similar to CC, without air-conditioning. Double-deck second seaters are used on the Flying Ranee. | |
UR/GEN | অসংরক্ষিত/সাধারণ: সর্বনিম্ন-ব্যয়বহুল টিকেট, একটি আসনের নিশ্চয়তা নেই। টিকিট কেনার ২৪ ঘন্টার মধ্যে ব্যবহার করা হলে রুটের যেকোনো ট্রেনে বৈধ। |
এই বগির বাইরে থাকা বগি নম্বর থেকে জানা যায় বগিটি কবে তৈরি করা হয়েছিল ও সেটি কোন ধরনের বগি। প্রথম দুটি অঙ্ক থেকে জানা যায়, এই বগিটি কবে তৈরি হয়েছিল ও শেষ ৩ থেকে জানা যায়, এই বগিটি কী ধরনের বগি। উদাহরণ দিয়ে এই ব্যাপারটি বুঝে নেওয়া যাক। ধরে নেওয়া যাক কোনও ট্রেনের একটি বগিতে লেখা ১৩৩২৮। প্রথমে এটিকে দু'ভাগে ভাগ করে নিতে হবে। এক্ষেত্রে প্রথম ভাগ হল ১৩। এর থেকে বুঝে নিতে হবে এই বগিটি তৈরি করা হয়েছিল ২০১৩ সালে। যদি বগির উপরে ৯৮৩৯৭ নম্বর লেখা থাকত, সেক্ষেত্রে 98 নম্বর থেকে বুঝতে হত ওই বগিটি ১৯৯৮ সালে তৈরি। শেষ ৩টি সংখ্যায় বুঝে নিতে হবে কোনটা কোন ধরনের বগি। কী ভাবে তা বুঝে নিতে হবে, নীচে তালিকার আকারে উল্লেখ আকারে হল-
ট্রেন নম্বর | বগির ধরন |
---|---|
001-025 | AC First class |
026-050 | Composite 1AC + AC-2T |
051-100 | AC-2T |
101-150 | AC-3T |
151-200 | CC (AC Chair Car) |
201-400 | SL (2nd Class Sleeper ) |
401-600 | GS (General 2nd Class) |
601-700 | 2S (2nd Class Sitting/Jan Shatabdi Chair Class) |
701-800 | Sitting Cum luggage Rake |
801 + | Pantry Car, Generator or Mail |
কোনো কোনো শহরে নিত্যযাত্রীদের সুবিধার্থে শহরের নিজস্ব শহরতলি রেলওয়ে পরিষেবা গড়ে তোলা হয়েছে। বর্তমানে মুম্বাই, চেন্নাই, কলকাতা, দিল্লি, হায়দ্রাবাদ, পুনে ও লখনউ শহরে এই পরিষেবা পাওয়া যায়। হায়দ্রাবাদ, পুনে ও লখনউ শহরে নিজস্ব শহরতলি ট্র্যাক নেই; এখানে অন্যান্য দূরপাল্লার ট্র্যাকেই ট্রেন চলে। নয়াদিল্লি, কলকাতা ও চেন্নাই শহরে মেট্রো ও দ্রুত পরিবহন পরিষেবা চালু। এগুলি হল: নয়াদিল্লি মেট্রো, কলকাতা মেট্রো ও চেন্নাই এমআরটিএস। এগুলি নিজস্ব ট্র্যাকে চলে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ট্র্যাকগুলি উত্তোলিত উড়ালপথে স্থাপিত।
নিত্যযাত্রী পরিবহনে নিযুক্ত শহরতলি ট্রেনগুলি মূলত ইলেকট্রিক মাল্টিপল ইউনিট বা ইএমইউ। এগুলিতে নয়টি অথবা ব্যস্ত সময়ের চাহিদা অনুসারে বারোটি কোচ থাকে। একটি ইএমইউ ট্রেনের একটি ইউনিটে একটি পাওয়ার কার ও দুটি জেনারেল কোচ থাকে। এইভাবে একটি নয়-কোচ যুক্ত ইএমইউ তিনটি ইউনিট নিয়ে গঠিত। এই ইউনিটগুলির প্রত্যেকটিতে একটি করে ও মধ্যে একটি পাওয়ার কার থাকে। মুম্বাইতে রেকগুলি ডিসি বিদ্যুতে চলে; অন্যত্র চলে এসি বিদ্যুতে।[31] একটি সাধারণ কোচ ৯৬ জন যাত্রী পরিবহনের উপযোগী করে নির্মিত হয়। তবে ব্যস্ত সময়ে এই সংখ্যা দ্বিগুণ অথবা তিন গুণও হয়ে যায়।
ট্রেনের ধরন | সংখ্যা | গড় কার্যকরী গতি (কিমি/ঘন্টা) | পাল্লা (কিমি) | বর্ণনা |
---|---|---|---|---|
উচ্চ গতি | ||||
বন্দেভারত এক্সপ্রেস (VB) | ৬২ | ৯৫ | ৭২৪ | ওয়াই-ফাই , স্ন্যাক টেবিল, সিসিটিভি ক্যামেরা, হাইড্রোলিক-প্রেশার দরজা এবং আগুন এবং ধোঁয়া সনাক্তকরণ এবং নির্বাপণ ব্যবস্থার মতো সুবিধা সহ একটি আধা-উচ্চ গতির, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত দিনের সময় যাত্রা ট্রেন । এটি 200 km/h (120 mph) বেগে চলতে পারে। এটি ভারতে তৈরি প্রথম সেমি-হাই স্পিড ( ইএমইউ ) (লোকোমোটিভ-লেস) ট্রেন। এটি 15 ফেব্রুয়ারি 2019 এ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দ্বারা পতাকা উন্মোচন করা হয়েছিল । |
গতিমান এক্সপ্রেস | ১ | ৯১ | ৪০৩ | প্রথম সেমি-হাই-স্পিড , শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ট্রেনটি দিল্লি এবং ঝাঁসির মধ্যে ১৬০ কিমি/ঘন্টা (৯৯ মাইল প্রতি ঘণ্টা) সর্বোচ্চ গতিতে চলছে |
তেজস-রাজধানী এক্সপ্রেস | ৭ | ৮৯ | ১৩৭৮ | ভারতে চালিত একটি আধা-উচ্চ-গতির ট্রেন । ভারতীয় রেল রাজধানী কোচকে তেজস কোচে আপগ্রেড করতে শুরু করেছে । এটি এর ঐতিহ্যবাহী এলএইচবি রাজধানী কোচগুলিকে প্রতিস্থাপন করেছে। |
শতাব্দী এক্সপ্রেস | ২২ | ৮৮ | ৭০৯ | দিনের বেলা ভ্রমণের জন্য শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত, আন্তঃনগর ট্রেন। রাজধানী বা দুরন্ত এক্সপ্রেসের বিপরীতে, শতাব্দী এক্সপ্রেস একই দিনে একটি রাউন্ড ট্রিপ করে। ভোপাল শতাব্দী এক্সপ্রেস (ট্রেন নম্বর 12001/12002) হল নয়াদিল্লি এবং আগ্রার মধ্যে ভারতের দ্বিতীয় দ্রুততম ট্রেন, যার গড় গতি ৯০ কিমি/ঘন্টা (৫৬ মাইল/ঘন্টা) এবং সর্বোচ্চ গতি ১৫০ কিমি/ঘন্টা (৯৩ মাইল/ঘন্টা)। সীমিত স্টপেজের ট্রেনগুলোতে ওয়াই-ফাই আছে। |
রাজধানী এক্সপ্রেস | ১৮ | ৮৬ | ২১৭৫ | Limited-stop, air-conditioned trains linking state capitals to the national capital, New Delhi, with a top speed of ১৩০–১৪০ কিমি/ঘ (৮১–৮৭ মা/ঘ). The 2014 railway budget proposed increasing the numbers of Rajdhani and Shatabdi Expresses to ১৮০ কিমি/ঘ (১১০ মা/ঘ). |
দুরন্ত এক্সপ্রেস | ২৪ | ৮৩ | ২১৭৫ | Non-stop (except for technical halts) service introduced in 2009. In January 2016, it became possible to book tickets from those technical stops. They connect India's metros and major state capitals, and were introduced to equal (or exceed) the speed of the Rajdhani Express. With air-conditioned one-, two-, or three-tier seating, some have non-air-conditioned sleeper-class accommodations. |
প্রিমিয়াম | ||||
হামসফর এক্সপ্রেস | ৪৯ | ৮২ | সম্পূর্ণ অধিহার (প্রিমিয়াম) পরিষেবা যেখানে এসি-৩ টায়ার এবং স্লিপার ক্লাসের ব্যবস্থা | |
এসি সুপার ফাস্ট | ৩৪ | ৮২ | ১৩৬৭ | |
সম্পর্ক ক্রান্তি এক্সপ্রেস | ২৫ | ৮২ | ১৩৬৭ | Express service to New Delhi. |
গরিব রথ এক্সপ্রেস | ২৪ | ৮২ | ১৩৬৭ | Air-conditioned, economy, three-tier trains with a top speed of ১৩০ কিমি/ঘ (৮১ মা/ঘ). |
তেজস এক্সপ্রেস | ৪ | ৮২ | ৫৮১ | একটি সেমি-হাই-স্পিড, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ট্রেন যা 24 মে 2017-এ উদ্বোধন করা হয়েছিল, 8 ঘন্টা 30 মিনিটে 551.7 কিমি (342.8 মাইল) কভার করেছিল। কোচে বায়ো-ভ্যাকুয়াম টয়লেট, জল-স্তরের সূচক, ট্যাপ সেন্সর, হ্যান্ড ড্রায়ার, ইন্টিগ্রেটেড ব্রেইল ডিসপ্লে, ফোন জ্যাক সহ প্রতিটি যাত্রীর জন্য একটি এলইডি টিভি, স্থানীয় খাবার, ওয়াই-ফাই , চা এবং কফি ভেন্ডিং মেশিন , ম্যাগাজিন, স্ন্যাক টেবিল রয়েছে। , সিসিটিভি ক্যামেরা, এবং একটি আগুন এবং ধোঁয়া সনাক্তকরণ এবং নির্বাপণ ব্যবস্থা। এটি 200 km/h (120 mph) গতিতে চলতে পারে কিন্তু কিছু প্রযুক্তিগত কারণে এটি 130 km/h (81 mph) এ সীমাবদ্ধ। |
যুব এক্সপ্রেস | ১ | ৮২ | Introduced with the Duronto Express to provide air-conditioned travel to young Indians, 60 percent of its seats were reserved for passengers between 18 and 45 years of age. The trains were unsuccessful, and operate only on the Delhi-Howrah and Delhi-Mumbai routes. | |
গতিময় | ||||
দ্রুততর এক্সপ্রেস (SF) | ৬৭১ | ৮০ | Trains with a max speed greater than ১০০–১১০ কিমি/ঘ (৬২–৬৮ মা/ঘ) and an average speed greater than ৫৫ কিমি/ঘ (৩৪ মা/ঘ). With stops at very few stations, the tickets for these trains have a superfast surcharge.
শান্তিনিকেতন এক্সপ্রেস সবথেকে স্বল্প সময়ের ট্রেন (২ ঘন্টা ১০ মিনিট)। অরনই এক্সপ্রেস সবথেকে দীর্ঘ সময়ের ট্রেন (৭২ ঘন্টা ৫৫ মিনিট)। শ্রমশক্তি এক্সপ্রেস সবথেকে কম বিরামের ট্রেন (১টি)। হাওড়া-আহমেদাবাদ সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস সবথেকে বেশি বিরামের ট্রেন (৫৮টি)। | |
জন শতাব্দী এক্সপ্রেস | ২৬ | ৭৭ | ৪৫৮ | A more-economical version of the Shatabdi Express, with air-conditioned and non-air-conditioned classes and a top speed of ১১০ কিমি/ঘ (৬৮ মা/ঘ) |
সাধারণ | ||||
দ্বিতল এক্সপ্রেস | ৫ | ৭১ | Air-conditioned, limited-stop, two-tier express trains for daytime travel | |
সুবিধা এক্সপ্রেস | ২ | ৬৬ | High priority trains with dynamic pricing on high demand routes. | |
Suburban | ৯৭৬ | ৬৫ | These trains operate in Mumbai, Delhi, Kolkata, Chennai, Hyderabad, Ahmedabad, Vadodara, Surat, Bengaluru, Pune and between Kanpur and Lucknow, usually stop at every station, and have unreserved seating. | |
Mahamana Express | ৬৪ | Superfast train with Indian Railways' model rake coaches. | ||
অন্তোদয় এক্সপ্রেস | ১৩ | ৬৩ | অসংরক্ষিত | |
Express | ১৩৭৭ | ৬২ | Trains with a max speed greater than ১০০ কিমি/ঘ (৬২ মা/ঘ) and an average speed greater than ৩৬ কিমি/ঘ (২২ মা/ঘ), with stops at few stations.
নাগেরকয়েল - কন্যাকুমারী অসংরক্ষিত স্পেশাল এক্সপ্রেস সবথেকে স্বল্প সময়ের ট্রেন (২০ মিনিট)। হিমসাগর এক্সপ্রেস সবথেকে দীর্ঘ সময়ের ট্রেন (৭২ ঘন্টা ৪০ মিনিট)। হাওড়া-জয়নগর এক্সপ্রেস সবথেকে বেশি বিরামের ট্রেন (১১২টি)। | |
এসি এক্সপ্রেস | ১৫ | ৬২ | Air-conditioned, limited-stop trains linking major cities, with a speed of about ১৩০ কিমি/ঘ (৮১ মা/ঘ). | |
উদয় এক্সপ্রেস | ২ | ৬২ | Air-conditioned double decker train for overnight travel. | |
Kavi Guru Express | ৫৯ | Introduced in honor of Rabindranath Tagore, four pairs of the trains operate on the network. | ||
Vivek Express | ৫৭ | Introduced to commemorate the 150th birth Anniversary of Swami Vivekananda in 2013, four pairs of Vivek Expresses run in the country. | ||
আন্তঃনগর এক্সপ্রেস | ৫৭ | Introduced to connect major cities on short routes with high and semi-high speeds. They start their journey from its origin point and reach its destination and once again return to its origin point in a single day. Some of the trains include the Deccan Queen, Flying Ranee, Vaigai Superfast Express, Coimbatore Intercity Express and Bilaspur Nagpur Intercity Express. | ||
Jan Sadharan Express | ৫৭ | Non-reserved express trains on peak routes to ease congestion. | ||
অমৃত ভারত এক্সপ্রেস | ২ | ৫৫ | নন-এসি স্লিপার কামরা ও অসংরক্ষিত কামরা বর্তমান | |
বিবেক দ্রুততর এক্সপ্রেস | ১ | ৫৫ | ৪১৫৪ | ভারতীয় রেলের দীর্ঘতম পথ |
Rajya Rani Express | ৫৫ | Introduced to connect state capitals to major cities in that state. | ||
Passenger | ৩১৪ | ৫৩ | Slow, economical trains which stop at every (or almost every) station on a route. With generally-unreserved seating, these trains travel at about ৪০–৮০ কিমি/ঘ (২৫–৫০ মা/ঘ). | |
Mountain Railways | ৩৩ | ২১ | Three of the lines were declared a World Heritage Site as "Mountain Railways of India" by UNESCO.[32] | |
Link/Slip Express/Passenger |
This is a train that gets attached to another train at a particular station and runs together as a single train till destination point or runs together from originating point and gets detached at a particular station. When running together, it is called Link Express/Passenger and when running separately, it is called Slip Express/Passenger.[33] | |||
Metro | Designed for urban transport, the first metro was the Kolkata Metro in 1984.[34] |
ভারতীয় রেলের দুটি ইউনেসকো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান রয়েছে। এগুলি হল: ছত্রপতি শিবাজী টার্মিনাস [35] ও ভারতের পার্বত্য রেলওয়ে। দ্বিতীয়টি একক রেল ব্যবস্থা নয়; ভারতের তিন প্রান্তে অবস্থিত তিনটি পৃথক পৃথক রেলপথ নিয়ে গঠিত:[36]
রাজস্থানের পর্যটন ব্যবস্থার উন্নতিকল্পে প্যালেস অন হুইলস নামে একটি বিশেষভাবে সজ্জিত ট্রেন চালানো হয়। এই ট্রেনটি সাধারণত বাষ্পীয় ইঞ্জিন চালিত। মহারাষ্ট্র সরকারও মহারাষ্ট্র ও গোয়ার পর্যটনশিল্পের উন্নতিকল্পে ডেকান ওডিসি চালু করে। আবার কর্ণাটক সরকার কর্ণাটক ও গোয়ার জনপ্রিয় পর্যটনস্থলগুলির সঙ্গে পর্যটকদের পরিচিত করে তোলার জন্য চালু করে গোল্ডেন চ্যারিয়ট ট্রেন। অবশ্য এগুলির মধ্যে কোনোটিই প্যালেস অন হুইলস-এর মতো জনপ্রিয়তা পায়নি।
ভারত ও পাকিস্তান রাষ্ট্রের মধ্যে চালু ট্রেনটির নাম সমঝোতা এক্সপ্রেস। ২০০১ সালে দুই রাষ্ট্রের সম্পর্কে জটিলতা দেখা দিলে এই ট্রেন বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু ২০০৪ সালে আবার তা চালু হয়। পাকিস্তানের খোখরাপার থেকে ভারতের মুনাবাও-এর মধ্যে চালু আরেকটি ট্রেন থর এক্সপ্রেস। ১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের পর বন্ধ হয়ে যাওয়া এই ট্রেনটি ফের চালু হয় ২০০৬ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি। কালকা-শিমলা রেলওয়ে অদ্যাবধি গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ড অনুসারে ৯৬ কিলোমিটার স্থানে সর্বাপেক্ষা খাড়া উত্থানের জন্য প্রসিদ্ধ।[37][38]
লাইফলাইন এক্সপ্রেস একটি বিশেষ ট্রেন। এটি "হসপিটাল-অন-হুইলস" নামে জনপ্রিয়। এই ট্রেনটি চালু হয় প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে চিকিৎসা পরিষেবা দানের উদ্দেশ্যে। এই ট্রেনে একটি কামরায় অপারেটিং কক্ষ, একটিতে স্টোররুম ও দুটিতে একটি পেশেন্ট ওয়ার্ড রয়েছে। এই ট্রেনটি সারা দেশ পরিভ্রমণ করে ও কোনো স্থানে দুই মাসের জন্য অবস্থান করে।
বিখ্যাত রেলইঞ্জিনগুলির মধ্যে ফেয়ারি কুইন মেনলাইনে চালু বিশ্বের সর্বাপেক্ষা প্রাচীন রেলইঞ্জিন। যদিও এখন বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রেই এটি চালানো হয়। বিশ্বের সবচেয়ে পুরনো পুরোমাত্রায় চালু রেলইঞ্জিনের কৃতিত্বটি জন বুলের প্রাপ্য। গোরক্ষপুর রেলওয়ে প্লাটফর্মটি বিশ্বের দীর্ঘতম রেলওয়ে প্লাটফর্ম। এর দৈর্ঘ্য ১৩৬৬.৩৩ মিটার। দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ে রুটের ঘুম স্টেশনটি বিশ্বের দ্বিতীয় উচ্চতম রেলস্টেশন যেখানে বাষ্পীয় ইঞ্জিন পৌঁছতে পারে।[39] মুম্বাই-পুনে ডেকান কুইন ট্রেনে ভারতীয় রেলের সবচেয়ে পুরনো চলমান ডাইনিং কারটি রয়েছে।
কন্যাকুমারী ও জম্মু তাওয়াই-এর মধ্যে চালু হিমসাগর এক্সপ্রেস ভারতীয় রেলের দীর্ঘতম দূরত্ব ও দীর্ঘতম সময়ের রেলওয়ে নেটওয়ার্ক। ট্রেনটি ৭৪ ঘণ্টা ৫৫ মিনিটে ৩,৭৪৫ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে। ভোপাল শতাব্দী এক্সপ্রেস দেশের দ্রুততম ট্রেন। এটি ১৫০ কিলোমিটার/ঘণ্টা বেগে ফরিদাবাদ-আগ্রা বিভাগে চলাচল করে। ২০০০ সালের টেস্ট রানে ১৮৪ কিলোমিটার/ঘণ্টা হল দেশের কোনো ট্রেনের সর্বোচ্চ গতিবেগের রেকর্ড।
রাজধানী এক্সপ্রেস ও শতাব্দী এক্সপ্রেস দেশের দুটি সুপারফাস্ট ও পুরোমাত্রায় বাতানুকূল ট্রেন। এই দুটি ট্রেন ভারতীয় রেলের শ্রেষ্ঠ রেল পরিষেবা।
প্রযুক্তি, পরিকাঠামো এবং সম্ভাব্য যাত্রীদের নিয়ে সাত বছর ধরে বিস্তর মাথা ঘামানোর পরে ১৯৬৯ সালের ৩ মার্চ দেশের প্রথম রাজধানী এক্সপ্রেসের সূচনা হয়েছিল হাওড়া-নয়াদিল্লি পথে। যাত্রী-স্বাচ্ছন্দ্য এবং গতির নিরিখে দেশের সেরা ট্রেন হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছিল রাজধানী। সবুজ পতাকা নেড়ে চালক জি এল টচার-কে ট্রেন ছাড়ার সঙ্কেত দিয়েছিলেন গার্ড এস ও লেভি। ১৭ ঘণ্টা ২০ মিনিটে ১৪৪৫ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়েছিল ট্রেনটি। তার আগে ভারতীয় রেলের ইতিহাসে অন্তত ১০০ বছর ট্রেনের সর্বোচ্চ গতি আটকে ছিল ঘণ্টায় ৬০ মাইলে বা ৯৬ কিলোমিটারে। রাজধানীর হাত ধরেই প্রথম ট্রেনের গতি ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার ছুঁয়েছিল। [40]
দ্রুততম ট্রেন হল বন্দে ভারত এক্সপ্রেস বারাণসীর মধ্যে চলাচল করে। সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৮০ কিলোমিটার। ত্রিবান্দ্রম-নিজামউদ্দিন রাজধানী এক্সপ্রেস ৫২৮ কিমি দূরত্বে (ভাদদারা - কোটা পথে ) নন স্টপ ট্রেন। বিবেক এক্সপ্রেসে ৮২ ঘণ্টা ৩০ মিনিটের মধ্য পৌঁছে যেতে পারেন ডিব্রুগড় থেকে কন্যাকুমারি। ৪২৮৬ কিমির এই পথ হল ভারতের সবচেয়ে দীর্ঘ রেলপথ।
ভারতীয় রেলের ভাড়া বিশ্বে সর্বাপেক্ষা সস্তা। বিগত কয়েক বছরে প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও রেলের কোনো শ্রেণীতেই যাত্রীভাড়া বাড়ানো হয়নি। বরং কোনো কোনো ক্ষেত্রে ভাড়া সামান্য কমানোও হয়েছে।
ভারতের সব প্রধান ও অপ্রধান স্টেশনে টিকিট পরিষেবা সুলভ। ২০০৩ সালে রেলওয়ে আইআরসিটিসি-র ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অনলাইন টিকিট পরিষেবা চালু করেছে।[41] ই-টিকিট ছাড়াও যাত্রীরা আই-টিকিটও বুক করতে পারেন। অনলাইন বুক করা বা ডাক সরবরাহকৃত টিকিট ছাড়া আই-টিকিট মূলত নিয়মিত ছাপা টিকিট।
আইআরসিটিসি ভারতীয় রেলের পর্যটন কর্মসূচির দায়িত্বপ্রাপ্ত। ভারতীয় রেল একাধিক বিলাসবহুল ট্রেন চালায়। যেমন – প্যালেস অন হুইলস, গোল্ডেন চ্যারিয়ট, রয়্যাল ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেস ও ডেকান ওডিসি। এগুলি মূলত বিদেশি পর্যটকদের জন্য চালানো হয়। স্থানীয় পর্যটকদেরও গুরুত্বপূর্ণ পর্যটনস্থল ও তীর্থস্থানে যাওয়ার ক্ষেত্রে বিভিন্ন রকম প্যাকেজ রেলওয়ের তরফ থেকে দেওয়া হয়।
ভারতীয় রেল আকরিক খনিজ পদার্থ, সার ও ফার্মাকিউটিক্যাল, কৃষিজ পণ্য, লৌহ ও ইস্পাত, মাল্টিমডেল ট্র্যাফিক ও অন্যান্য পণ্যদ্রব্য প্রচুর পরিমাণে বহন করে থাকে। বন্দর ও প্রধান প্রধান নগরাঞ্চলে নিজস্ব পণ্য লাইন ও ইয়ার্ড রয়েছে। অনেক গুরুত্বপূর্ণ পণ্য স্টেশনে নিজস্ব প্লাটফর্ম ও স্বাধীন লাইনও রয়েছে।
ভারতীয় রেলওয়ে তার ৭০% রাজস্ব ও বেশিরভাগ লভ্যাংশ আয় করে পণ্যক্ষেত্র থেকে। এই লভ্যাংশ অলাভজনক যাত্রীক্ষেত্রের ঘাটতিপূরণের জন্য ব্যবহৃত হয়। যদিও সাম্প্রতিক বছরগুলিতে অধিকতর সস্তা ট্রাক পরিবহন ব্যবস্থা রেলের পণ্য ট্র্যাফিককে প্রতিযোগিতার মুখে ফেলে দিয়েছে। ১৯৯০-এর দশক থেকে ভারতীয় রেল কাজের গতি বাড়ানোর জন্য ছোটো ভারবাহী গাড়ির বদলে বড়ো গাড়ি ব্যবহার শুরু করে। পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে প্রাপ্ত আয়ের অধিকাংশই আসে কয়লা, সিমেন্ট, খাদ্যশস্য ও আকরিক লোহার মতো ভারী দ্রব্যবাহী রেক থেকে।
ভারতীয় রেল দূরপাল্লায় যানবাহন পরিবহনের কাজও করে। নির্দিষ্ট গন্তব্যে দ্রব্য পরিবহনকারী ট্রাকগুলিকে অনেক সময় ট্রেনে চাপিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। এতে ট্রাকিং কোম্পানির অপ্রয়োজনীয় জ্বালানি খরচ হয় না। কোনো কোনো অঞ্চলে রেফ্রিজারেটেড ভ্যানও পাওয়া যায়। "সবুজ ভ্যান" এক ধরনের বিশেষ ভ্যান যাতে করে তাজা খাদ্য ও সবজি পরিবহন করা হয়। সাম্প্রতিককালে অতিপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহের জন্য ভারতীয় রেল একটি বিশেষ কনটেইনার রাজধানী বা কনরাজ (CONRAJ) চালু করেছে। ৪,৭০০ মেট্রিক টন পণ্যবাহী একটি ট্রেনের সর্বোচ্চ গতি ১০০ কিলোমিটার/ঘণ্টা।
সম্প্রতি পণ্য পরিবহন ক্ষেত্রের আয় বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন পরিবর্তন সাধন করা হচ্ছে। পণ্যবাহী ট্রেনের কার্যকরিতা বৃদ্ধির জন্য একটি বেসরকারিকরণের পরিকল্পনাও গৃহীত হয়েছে। বিভিন্ন কোম্পানিকে নিজস্ব কনটেইনার ট্রেন চালানোর অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। ভারতের বৃহত্তম শহরগুলির মধ্যে সংযোগরক্ষাকারী একটি ১১০০০ কিলোমিটার দীর্ঘ্য পণ্য করিডোরও অনুমোদিত হয়েছে সম্প্রতি। রেল ২২৫,০০০ পণ্য ওয়াগনের ভারবহণক্ষমতা ১১% বৃদ্ধি করেছে। পরিবহন ক্ষেত্রে উৎপাদন বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে জ্বালানি খরচ বৃদ্ধিরও দাবি জানানো হচ্ছে। এমতাবস্থায় রেলপথে পণ্য পরিবহন বেশ লাভজনক হয়ে উঠছে। ফিরতি পথে গতিবৃদ্ধির মতো নানা ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে পণ্য রাজস্ব ২৪ শতাংশের মতো বৃদ্ধি পেয়েছে।
রেল মন্ত্রক দুটি করিডোরে বিভক্ত ২৭৬২ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি নতুন ডেডিকেটেড ফ্রেট করিডোর নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। পূর্ব করিডোরটি লুধিয়ানা থেকে কলকাতা ও পশ্চিম করিডোরটি মুম্বাইয়ের জওহরলাল নেহেরু বন্দর থেকে তুঘলকাবাদ/দাদরি পর্যন্ত প্রসারিত। খুরজাতে দুটি করিডোর পরস্পরকে ছেদ করছে। পরিবহন প্রযুক্তির উন্নতিসাধন, উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি ও একক পরিবহন ব্যয় হ্রাস এই প্রকল্পের মুখ্য বিবেচনার বিষয়।
ডেডিকেটেড ফ্রেট করিডোরে পরিকল্পনা ও উন্নয়ন, অর্থসম্পদ ও নির্মাণ পরিচালনা, রক্ষণাবেক্ষণ ও কার্যসম্পাদনা নিয়ন্ত্রণের জন্য স্থাপিত হয় ডেডিকেটেড ফ্রেট করিডোর কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া লিমিটেড (ডিএফসিসি)। ২০০৬ সালের ৩০ ডিসেম্বর কোম্পানি আইন, ১৯৫৬ অনুসারে ডিএফসিসি নথিভুক্ত হয়।
রেল বাজেটের অন্তর্গত বিষয়গুলি হল পরিকল্পিত পরিকাঠামো ব্যয়, আগামী আর্থিক বছরের জন্য রাজস্ব ও ব্যয় নির্বাহ, জনস্বার্থে চালু ট্রেন ও রুটগুলির নীতিনির্ধারণ ও উন্নয়ন, নতুন ও বিদ্যমান পরিকাঠামোয় পরিকল্পিত বিনিয়োগ এবং পণ্য ও যাত্রীচলাচলে করারোপ ইত্যাদি। বাজেটে প্রস্তাবিত নীতি ও বণ্টনব্যবস্থা সংসদে আলোচিত হয়। সাধারণ সংখ্যাধিক্যের ভোটে সংসদের নিম্নকক্ষ লোকসভায় রেল বাজেট পাস হয়। ঊর্ধ্বকক্ষ রাজ্যসভার মন্তব্যগুলির অবশ্যপালনীয় নয়। ভারতীয় রেল অন্যান্য সরকারি রাজস্ব ও ব্যয়ের সমান আয়-ব্যয় নিরীক্ষণের ক্ষমতাপ্রাপ্ত। প্রত্যাশিত ও প্রকল্পিত ট্র্যাফিকের ভিত্তিতে রেলওয়ের মূলধনের জন্য সম্পদ আহরণ ও রাজস্ব ব্যয় নির্ধারণ করা হয়। রাজস্ব ব্যয় রেলওয়ের দ্বারা পূরিত হলেও, মূলধন (পরিকল্পিত) ব্যয়ের ঘাটতি আংশিক পূরিত হয় ঋণের মাধ্যমে (ভারতীয় রেল অর্থ নিগম কৃত) এবং অবশিষ্টাংশ পূরিত হয় কেন্দ্রীয় সরকারের বাজেট সাহায্য থেকে। ভারতীয় রেল কেন্দ্রীয় সরকারের মূলধন বিনিয়োগের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে লভ্যাংশ প্রদান করে।
১৯২৪ সালের অকওয়ার্থ কমিটির সুপারিশকৃত সেপারেশন কনভেনশন অনুযায়ী কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী কেন্দ্রীয় বাজেট পেশ করার দুই দিন আগে সংসদে রেলবাজেট পেশ করেন। রেলবাজেট সংসদে পৃথকভাবে পেশ করা হলেও এই বাজেটের রাজস্ব-প্রাপ্তি ও ব্যয়ের তথ্যাদি সাধারণ বাজেটেও প্রদর্শিত হয়ে থাকে। কারণ এগুলি ভারত সরকারের সামগ্রিক রাজস্ব-প্রাপ্তি ও ব্যয়ের অপরিহার্য অংশ। এই নথিটি রেলওয়ের পূর্ববর্তী বছরের কাজকর্মের ও বর্তমান বছরের পরিকল্পনা তালিকার উদ্বর্ত-পত্রও বটে।
রেলওয়ের নীতিনির্ধারণ ও সামগ্রিক নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব অর্পিত হয়েছে রেলওয়ে বোর্ডের উপর। এই বোর্ড একজন চেয়ারম্যান, অর্থ কমিশনার এবং ট্র্যাফিক, ইঞ্জিনিয়ারিং, প্রযুক্তি, বিদ্যুত ও কর্মীবিভাগের অন্যান্য কার্যকরী সদস্যদের নিয়ে গঠিত।
পূর্বে কয়েকবছর লোকসানে চললেও সাম্প্রতিক বছরগুলিতে ইতিবাচক অর্থসংস্থান ও সরকারি লভ্যাংশ প্রদানে সমর্থ হয়েছে ভারতীয় রেল। রেলওয়ের প্রদত্ত তথ্য অনুযায়ী সংস্থার উদ্বৃত্ত অর্থের পরিমাণ ২০০৫ সালে ৯০০০ কোটি টাকা, ২০০৬ সালে ১৪,০০০ কোটি টাকা, ২০০৭ সালে ২০,০০০ কোটি টাকা, এবং ২০০৭-০৮ আর্থিক বছরে ২৫,০০০ কোটি টাকা। চালন অনুপাত বৃদ্ধি পায় ৭৬%। অন্যদিকে বিগত চার বছরে পরিকল্পনার আকার ১৩,০০০ কোটি টাকা থেকে বেড়ে ৩০,০০০ কোটি টাকা হয়। ২০০৮-০৯ সালের প্রস্তাবিত বিনিয়োগের পরিমাণ ৩৭,৫০০ কোটি টাকা, যা বিগত আর্থিক বছরের তুলনায় ২১% বেশি।[2] ২০০৮ সালের বাজেট-প্রাককলন অনুযায়ী পণ্য, যাত্রী, মিশ্র, অন্যান্য আয় ও অন্যান্য কোচিং আয় দর্শানো হয়েছে যথাক্রমে ৫২,৭০০ কোটি টাকা, ২১,৬৮১ কোটি টাকা, ৫০০০ কোটি টাকা ও ২,৪২০ কোটি টাকা। সার্বিক দ্বিগুণ বৃদ্ধি বজায় রাখতে ২০০৯-১০ সালে মোট ট্রাফিক আয় ৯৩,১৫৯ কোটি টাকা প্রকল্পিত করা হয়েছে।[2] ২০% যাত্রী রাজস্ব আয় হয় প্রথম শ্রেণীর (বাতানুকূল শ্রেণী) যাত্রীবিভাগ থেকে।[42][43]
২০০৯ সালের ৩ জুলাই রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০০৯-১০ সালের রেলবাজেট পেশ করেন। এই বাজেটে একাধিক সংস্কারের প্রস্তাব রাখা হয়।[44]
সাম্প্রতিক কালে লাইনবিচ্যুতি বা মুখোমুখি সংঘর্ষের মতো দুর্ঘটনা কম ঘটলেও ট্রেনে চাপা পড়ার ঘটনা ঘটতেই থাকছে। বিশেষত জনবহুল অঞ্চলেই এই ধরনের দুর্ঘটনা ঘটছে। ভারতীয় রেল স্বীকার করেছে যে দুর্ঘটনা নির্মূলীকরণের লক্ষ্য একটি অবাস্তব লক্ষ্য। বরং তারা দুর্ঘটনার হার কমানো ছাড়া কিছুই করতে পারে না। ভারতে ৮৩ % রেল দুর্ঘটনার কারণ মানবীয় ভুল।[45] অতীতে বর্ষাকালে ভূমিধ্বসের ফলে কোঙ্কণ রেলওয়ে বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হত। যার ফলে মারাত্মক দুর্ঘটনাও ঘটত। সেকেলে যোগাযোগ, সুরক্ষা ও সিগন্যালিং ব্যবস্থা রেলব্যবস্থার ব্যর্থতার অন্যতম কারণ প্রতিভাত হয়। তাই সাম্প্রতিকতম প্রযুক্তির দ্বারা এগুলিকে প্রতিস্থাপিত করা হয়। দুই স্টেশনের মধ্যে ম্যানুয়েল সিগন্যাল ব্যবস্থাও ট্রেন দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ। তাই রেল কর্তৃপক্ষ স্বয়ংচালিত সিগন্যালিং ব্যবস্থা প্রবর্তনের পক্ষ নিয়েছেন। আবার এও মনে করা হচ্ছে যে এই ব্যবস্থায় ট্রেনের গতিবেগ বৃদ্ধি পাবে, যার ফলে দুর্ঘটনা আরও মারাত্মক আকার নেবে। পরস্পর সংযুক্ত স্টেশনে সিগন্যালিং নিয়ন্ত্রণের সাম্প্রতিকতম উদাহরণ হল ব্যর্থতা-পরীক্ষণ সার্কিট। প্রতিটি ট্র্যাক সার্কিট ও সিগনাল সার্কিটকে এই সার্কিট সহায়তা করে থাকে। সমস্যার ক্ষেত্রে সিগন্যাল নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রকে অবহিতও করা হয়।[46] সংঘর্ষ-রোধকারী যন্ত্রগুলি ভারতীয় রেলের খুব অল্প অংশেই সুলভ। এগুলিকে সমগ্র ব্যবস্থায় প্রসারিত করা প্রয়োজন।.[47] ঔপনিবেশিক যুগের সেতু ও শতাব্দীপ্রাচীন ট্র্যাকগুলিরও নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজন হয়।
অনিরীক্ষিত চালনা লাভ বৃদ্ধি পাওয়ায় বর্তমানে ভারতীয় রেল আবার একটি লাভজনক সংস্থায় পরিণত হয়েছে।[48] তবে রাজধানী এক্সপ্রেস ও শতাব্দী এক্সপ্রেস ভারতের সর্বাপেক্ষা দ্রুতগামী ট্রেন; মাত্র ১৫০ কিলোমিটার/ঘণ্টা বেগে চালিত এই ট্রেনদুটি কম-খরচের বিমানব্যবস্থা চালু হওয়ার পর থেকে তীব্র প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হচ্ছে।[49]
অফিসারদের (গ্রুপ ‘এ’ কৃত্যক) ইন্ডিয়ান ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিস-এর মাধ্যমে নিয়োগ করা হয়। কেন্দ্রীয় জন কৃত্যক আয়োগ (ইউপিএসসি) এই পরীক্ষাটি নিয়ে থাকে। এছাড়াও ইউপিএসসি-এর স্পেশাল ক্লাস রেলওয়ে অ্যাপ্রেন্টিসেস (এসসিআরএ) পরীক্ষার মাধ্যমেও নিয়োগ করা হয়।
‘সি’ ও ‘ডি’ বিভাগের কর্মচারীদের রেলওয়ে রিক্রুইটমেন্ট বোর্ডের ১৯ রকম পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ করা হয়। এই পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ করে রেলওয়ে রিক্রুইটমেন্ট কন্ট্রোল বোর্ড বা আরআরসিবি।
রেল বিকাশ নিগম লিমিটেড ভারতীয় রেলেরএকটি সহকারী সংস্থা। এই সংস্থার কাজ ভারতীয় রেলের প্রয়োজনীয় ইঞ্জিনিয়ারিং কাজগুলি সম্পাদন। গেজ পরিবর্তন ও সেতু পুনর্গঠনের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজের দায়িত্ব এই সংস্থার উপর ন্যস্ত। বর্তমানে ভিল্লুপুরম-তাঞ্জাবুর শাখার ১২২ কিলোমিটার রেলপথের গেজ পরিবর্তন করছে রেল বিকাশ নিগম।[50]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.