Loading AI tools
সরকারিভাবে ইউনিয়ন গভর্নমেন্ট, সাধারণভাবে কেন্দ্রীয় সরকার নামে ভারতে প্রচলিত উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
ভারত সরকার (ইংরেজি: Government of India; হিন্দি: भारत सरकार), যা কেন্দ্রীয় সরকার বা সংঘ সরকার নামেও পরিচিত, ভারতের সংবিধান দ্বারা প্রতিষ্ঠিত ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের জাতীয় কর্তৃপক্ষ।
গঠন | ২৮ আগস্ট ১৮৩৩ |
---|---|
বর্তমান সংবিধান | ভারতের সংবিধান |
দেশ | ভারতীয় প্রজাতন্ত্র |
ওয়েবসাইট | india |
আইন বিভাগ | |
আইনসভা | ভারতীয় সংসদ |
সভাস্থল | নতুন সংসদ ভবন |
নির্বাহী বিভাগ | |
নেতা | ভারতের রাষ্ট্রপতি এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিপরিষদ |
সদর দপ্তর | কেন্দ্রীয় সচিবালয় |
বিভাগ | কেন্দ্রীয় মন্ত্রিপরিষদ |
বিচার বিভাগ | |
আদালত | ভারতের সর্বোচ্চ আদালত |
প্রধান বিচারপতি | ভারতের প্রধান বিচারপতি |
নয়াদিল্লিতে অবস্থিত ভারত সরকার তিনটি প্রাথমিক বিভাগ নিয়ে গঠিত: আইন বিভাগ, নির্বাহী বিভাগ ও বিচার বিভাগ, এবং এদের ক্ষমতা যথাক্রমে দ্বিকক্ষীয় সংসদ, প্রধানমন্ত্রী ও সর্বোচ্চ আদালতের হাতে কেন্দ্রীভূত। ভারতের রাষ্ট্রপতি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান। আইন বিভাগের বিবর্তনের ফলে সংসদ তার সার্বভৌমত্ব হারিয়েছে এবং সংবিধানের সংশোধনীসমূহ বিচার বিভাগের হস্তক্ষেপে চলে আসে।
ওয়েস্টমিনস্টার ব্যবস্থার ভিত্তিতে ভারত সরকার গঠিত।[১] কেন্দ্রীয় সরকার মূলত আইনসভা, নির্বাহী ও বিচার বিভাগ নিয়ে গঠিত এবং সংবিধান এদের ক্ষমতা যথাক্রমে দ্বিকক্ষীয় সংসদ, প্রধানমন্ত্রী ও সর্বোচ্চ আদালতের হাতে কেন্দ্রীভূত করেছে। ভারতের রাষ্ট্রপতি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান এবং ভারতের সামরিক বাহিনীর সর্বাধিনায়ক। অন্যদিকে, নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী নির্বাহী বিভাগের প্রধান এবং তিনি কেন্দ্রীয় সরকার পরিচালনায় দায়বদ্ধ।[২] ভারতীয় সংসদ দ্বিকক্ষীয়, যেখানে লোকসভা সংসদের নিম্নকক্ষ এবং রাজ্যসভা তার উচ্চকক্ষ। বিচার বিভাগ একটি সর্বোচ্চ আদালত, ২৫টি উচ্চ আদালত এবং একাধিক জেলা আদালত নিয়ে গঠিত।[৩]
ভারতীয় সংসদ (ইংরেজি: Parliament of India) ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের সর্বোচ্চ যুক্তরাষ্ট্রীয় ন্যায়বিভাগ। ভারতের রাষ্ট্রপতি, লোকসভা নামক নিম্নকক্ষ ও রাজ্যসভা নামক উচ্চকক্ষ নিয়ে ভারতের সংসদ গঠিত। নয়াদিল্লির সংসদ মার্গের সংসদ ভবনে এটি অবস্থিত। কোনও প্রস্তাব আইনে পরিণত করতে সংসদের উভয় কক্ষে তা উত্তীর্ণ হয়ে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক অনুমোদিত হতে হয়। ভবনের কেন্দ্রীয় কক্ষটি সংসদের যৌথ অধিবেশনের জন্য ব্যবহৃত হয়।
সংসদের কক্ষদুটির মধ্যে যেকোনো একটি কক্ষে নির্বাচিত বা রাষ্ট্রপতি দ্বারা মনোনীত সদস্যদের সংসদ সদস্য (এমপি) বা সাংসদ বলে। লোকসভার সাংসদগণ ভারতীয় জনগণের দ্বারা সংশ্লিষ্ট নির্বাচন কেন্দ্রে ভোটদানের মাধ্যমে নির্বাচিত হন। অন্যদিকে, রাজ্যসভার সাংসদগণ রাজ্য বিধায়কদের দ্বারা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের মাধ্যমে নির্বাচিত হন। সংসদের আসনের মধ্যে ৫৪৩টি লোকসভা আসন এবং ২৪৫টি রাজ্যসভা আসন, যার মধ্যে ১২টি আসন সাহিত্য, কলা, বিজ্ঞান, ও সামাজিক পরিষেবার বিশেষজ্ঞদের জন্য সংরক্ষিত।[৪] সংসদের বর্তমান সভাস্থল ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে অবস্থিত নতুন সংসদ ভবন।সরকারের নির্বাহী বিভাগ রাষ্ট্রীয় আমলাতন্ত্রের দৈনিক পরিচালনার জন্য দায়বদ্ধ। সরকারের ক্ষমতাকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা প্রজাতান্ত্রিক ক্ষমতার বণ্টন ধারণার মূল অংশ।[৫]
ভারতের রাষ্ট্রপতি হলেন ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপ্রধান।[৬] রাষ্ট্রপতি ভারতের আইনবিভাগ, শাসনবিভাগ ও বিচারবিভাগের সকল শাখার আনুষ্ঠানিক প্রধান এবং ভারতের সামরিক বাহিনীর সর্বাধিনায়ক। ভারতের রাষ্ট্রপতির দণ্ডিত ব্যক্তির দণ্ডাদেশ স্থগিত, হ্রাস বা দণ্ডিতকে ক্ষমা করার অধিকার রয়েছে।[৭]
রাষ্ট্রপতি এক নির্বাচকমণ্ডলীর দ্বারা পরোক্ষভাবে নির্বাচিত হন। এই নির্বাচকমণ্ডলী গঠিত হয় ভারতীয় সংসদ (লোকসভা ও রাজ্যসভা) এবং বিভিন্ন রাজ্যের বিধানসভার সদস্যদের নিয়ে। রাষ্ট্রপতির কার্যকালের মেয়াদ পাঁচ বছর।[৮] অতীতে দেখা গিয়েছে যে, শাসক দলের (লোকসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠ দল) মনোনীত প্রার্থীই রাষ্ট্রপতি হয়েছেন। অনেকেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। ক্ষমতাসীন রাষ্ট্রপতি পুনরায় নির্বাচনে লড়তে পারেন। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে একটি নির্দিষ্ট পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়, যাতে নির্বাচকমণ্ডলীতে প্রতি রাজ্যের জনসংখ্যা ও সংশ্লিষ্ট রাজ্যের বিধায়কদের প্রদত্ত ভোটের সংখ্যা এবং রাজ্য বিধানসভার সদস্যসংখ্যার সঙ্গে জাতীয় সংসদের সদস্যসংখ্যার সামঞ্জস্যবিধান করা যায়। কোনো প্রার্থী এককভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠের ভোট পেতে ব্যর্থ হলে, একটি নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে পরাজয়শীল প্রার্থীদের ভোট অন্য প্রার্থীতে হস্তান্তরিত হতে থাকে (এবং সেই সঙ্গে সেই প্রার্থী নির্বাচন থেকে বাদ পড়তে থাকেন), যতক্ষণ না একজন সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারেন। ভারতের উপরাষ্ট্রপতি অবশ্য লোকসভা ও রাজ্যসভার সকল সদস্যের (নির্বাচিত ও মনোনীত) প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হন।[৯]
যদিও ভারতীয় সংবিধানের ৫৩ অনুচ্ছেদে[১০] বলা হয়েছে যে, রাষ্ট্রপতি তাঁর ক্ষমতা সরাসরি প্রয়োগ করতে পারেন,[১১] তবুও, কয়েকটি ব্যতিক্রমী ক্ষেত্র ছাড়া রাষ্ট্রপতির সব ক্ষমতাই প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিপরিষদের কর্তৃত্বাধীন। ভারতের রাষ্ট্রপতি নতুন দিল্লিতে একটি এস্টেটে বাস করেন। এই এস্টেটটি রাষ্ট্রপতি ভবন নামে পরিচিত।[১২] রাষ্ট্রপতির অবসরযাপনের জন্য ছারাব্রা, শিমলা ও হায়দ্রাবাদে তিনটি রিট্রিট বিল্ডিং রয়েছে। হায়দ্রাবাদের রিট্রিট ভবনটির নাম রাষ্ট্রপতি নিলয়ম।
২৫ জুলাই, ২০০৭ প্রতিভা দেবীসিংহ পাতিল ভারতের দ্বাদশ রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেন। তিনিই দেশের প্রথম মহিলা রাষ্ট্রপতি।[১৩]
১৯ জুলাই, ২০১২ ভারতের ত্রয়োদশ রাষ্ট্রপতি নির্বাচন হয়েছে। নির্বাচনের ফল ২২ জুলাই ঘোষিত হয়েছে। প্রণব মুখোপাধ্যায় বিপুল ভোটে জয়লাভ করেছেন। ২৫ জুলাই বর্তমান রাষ্ট্রপতি প্রতিভা পাতিল তার কার্যভার ত্যাগ করেছেন। একই সাথে প্রণব মুখোপাধ্যায় ভারতের প্রথম বাঙালি রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছেন।[১৪]ভারতের উপরাষ্ট্রপতি, ভারতের সংবিধান অনুসারে ভারতের ক্ষমতার দ্বিতীয় প্রধান ব্যক্তি। তিনি পদাধিকার বলে ভারতের রাজ্যসভার চেয়ারম্যান।
ভারতের উপরাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী হতে হলে প্রার্থীকে ভারতীয় নাগরিক, ৩৫ বছর বয়স্ক এবং রাজ্যসভার সদস্য নির্বাচিত হবার যোগ্যতাসম্পন্ন হতে হয়। উপরাষ্ট্রপতি সংসদের কোনো কক্ষের বা রাজ্য আইনসভার কোনো কক্ষের সদস্য থাকতে পারেন না। উপরাষ্ট্রপতি সংসদের উভয় কক্ষের সদস্যদের দ্বারা নির্বাচিত হন। সংসদের উভয় কক্ষের সদস্যদের নিয়ে একটি নির্বাচনী সংস্থা গঠিত হয়। ঐ নির্বাচনী সংস্থা দ্বারা সমানুপাতিক প্রতনিধিত্বের একক হস্তান্তরযোগ্য ভোটে এবং গোপন ভোটপত্রের মাধুমে তিনি নির্বাচিত হন।
ভারতের প্রথম উপরাষ্ট্রপতি হন বিশিষ্ট দার্শনিক সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণন। ভারতের বর্তমান উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়৷কেন্দ্রীয় মন্ত্রিপরিষদ[১৫] ভারত সরকারের প্রধান নির্বাহী কেন্দ্র, যা নির্বাহী বিভাগের গরিষ্ঠ সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী কেন্দ্র হিসাবে কাজ করে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী ও প্রত্যেক নির্বাহী মন্ত্রকের প্রধান নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ গঠিত হয়। বর্তমানে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিপরিষদের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং প্রধানমন্ত্রী সহ ২৯টি মন্ত্রী এর সদস্য। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিপরিষদ সমষ্টিগতভাবে ভারতীয় সংসদের লোকসভার নিকট দায়বদ্ধ।
কেন্দ্রীয় ক্যাবিনেট ভারতের শীর্ষ সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী কেন্দ্র এবং এটি কেন্দ্রীয় মন্ত্রিপরিষদের এক উপসেট। ক্যাবিনেট মন্ত্রী বা পূর্ণমন্ত্রিগণ কেন্দ্রীয় সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রকের কার্যভার গ্রহণ করেছেন।[১৬]ভারতের সর্বোচ্চ আদালত বা ভারতের সুপ্রিম কোর্ট ভারতের সর্বোচ্চ বিচারবিভাগীয় অধিকরণ ও ভারতের সংবিধানের অধীনে সর্বোচ্চ আপিল আদালত এবং সর্বোচ্চ সাংবিধানিক আদালত। ভারতের সর্বোচ্চ আদালত সাংবিধানিক পর্যালোচনার অধিকারপ্রাপ্ত।[১৭]
ভারতের প্রধান বিচারপতি ও অপর ৩০ জন বিচারপতিকে নিয়ে ভারতের সর্বোচ্চ আদালত গঠিত। এটির মৌলিক, আপিল ও উপদেষ্টা এক্তিয়ার রয়েছে।
দেশের সর্বোচ্চ আপিল আদালত হিসেবে ভারতের সর্বোচ্চ আদালত প্রাথমিকভাবে ভারতের বিভিন্ন রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির উচ্চ আদালত ও অন্যান্য আদালত ও ট্রাইবুন্যালের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল গ্রহণ করে।
ভারতের নাগরিকদের মৌলিক অধিকার রক্ষার জন্য প্রসারিত মৌলিক এক্তিয়ার সর্বোচ্চ আদালতের রয়েছে। ভারতের বিভিন্ন সরকারগুলির অভ্যন্তরীণ বিবাদ নিরসণের জন্যও এই আদালত কাজ করে। উপদেষ্টা আদালত হিসেবে সর্বোচ্চ আদালত ভারতের রাষ্ট্রপতি কর্তৃক বিশেষত সংবিধানের অধীনস্থ বিষয়গুলির শুনানি গ্রহণ করে। আবার কেউ এই আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ না করলেও, এটি নিজে থেকে বিভিন্ন বিষয়ে হস্তক্ষেপ (বা ‘সুয়ো মোটো’) করতে পারে। কলকাতায় বিচারবিভাগীয় প্রশাসন পরিচালনার জন্য প্রথম এই আদালত গঠিত হয়েছিল।
সর্বোচ্চ আদালত কর্তৃক ঘোষিত আইন ভারতের সকল আদালত মেনে চলতে বাধ্য।[১৮]Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.