Loading AI tools
উদ্ভিদের প্রজাতি উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
লিচু বা লেচু (বৈজ্ঞানিক নাম: Litchi chinensis) হল সোপবেরি পরিবার, সেপিন্ডাসিয়ার লিচি গণের একমাত্র সদস্য।
লিচু Litchi chinensis | |
---|---|
লিচু | |
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
জগৎ: | Plantae |
শ্রেণীবিহীন: | Tracheophytes |
শ্রেণীবিহীন: | Eudicots |
শ্রেণীবিহীন: | Rosids |
বর্গ: | Sepindales |
পরিবার: | Sepindaceae |
উপপরিবার: | Sepindaceae |
গণ: | Litchi Sonn. |
প্রজাতি: | L. chinensis |
দ্বিপদী নাম | |
Litchi chinensis Sonn.[1] | |
এটি দক্ষিণ-পূর্ব চীনের কুয়াংতুং এবং ফুচিয়েন প্রদেশের গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলের স্থানীয় উদ্ভিদ। সেখানে ১১শ শতক থেকে এর চাষাবাদ হওয়ার কথা লিপিবদ্ধ আছে। [2] চীন হল প্রধান লিচু উৎপাদনকারী দেশ, এরপরেই আছে ভারত, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যান্য দেশ, ভারতীয় উপমহাদেশ, মাদাগাস্কার এবং দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দেশগুলো। লিচু গাছ একটি লম্বা চিরহরিৎ গাছ। এই গাছ থেকে রসাল শাঁসযুক্ত ছোট ছোট ফল পাওয়া যায়। ফলটির বহিরাবরণ অমসৃণ ও লালচে গোলাপি বর্ণের; যা খাওয়া যায় না। আবরণটির ভেতরে থাকে সুমিষ্ট রসাল শাঁস। বিভিন্ন মিষ্টিজাতীয় খাবারের সাথে এটি পরিবেশন করা হয়।
লিচুর বীজের মধ্যে মিথিলিন সাইক্লোপ্রোপাইল গ্লাইসিন থাকে যা হাইপোগ্লাইসেমিয়া সৃষ্টি করতে পারে। এর কারণে অপুষ্টিতে ভোগা ভারতীয় বা ভিয়েতনামি শিশুদের যারা লিচু খায় তাদের মধ্যে এনসেফেলোপ্যাথির প্রাদুর্ভাবজনিত হাইপোগ্লাইসেমিয়া দেখা দেয়, যা মস্তিষ্ককে আক্রান্ত করে এর কার্যক্ষমতা নষ্ট করে ফেলে। এর কারনে তাদের মৃত্যু ঘটারও নজির রয়েছে। [3][4]
লিচি চাইনেন্সিস (Litchi chinensis) হল সোপবেরি পরিবারের সেপিন্ডাসিয়া গণের একমাত্র সদস্য। [2] ফরাসি প্রকৃতিবিদ পিয়েরে সোনারাত তার বর্ণনামূলক লেখা "ভয়েজ অক্স ইনদে ওরিয়েনটেল্স এহ্ অ্যা লা চাইন, ফেইট দেপি ১৭৭৪ জাস'কা ১৭৮১" (Voyage aux Indes orientales et à la Chine, fait depuis 1774 jusqu'à 1781)-তে এটির বর্ণনা দেন ও নামকরণ করেন। ১৭৮২ সালে লেখাটি প্রকাশিত হয়। ফুলের বিন্যাস, গাছের ডালের পুরুত্ব ও পুংকেশরের সংখ্যার ভিত্তিতে লিচুর তিনটি উপপ্রজাতি নির্ধারণ করা হয়েছে।
Litchi chinensis (লিচি চাইনেন্সিস) একটি চিরহরিৎ গাছ। এটি সাধারনত ১৫ মিটারের (৪৯ ফুট) বেশি লম্বা হয় না। তবে কখনও কখনও ২৮ মিটার (৯২ ফুট) পর্যন্তও লম্বা হয় হয়ে থাকে। [7]
বাকল কালচে ধূসর এবং শাখাগুলো লালচে বাদামী রঙের। এর চিরসবুজ পাতাগুলো ১২.৫ থেকে ২০ সেমি. (৫ থেকে ৭.৯ ইঞ্চি) লম্বা এবং কচি পাতাগুলো দুই থেকে চার জোড়ায় থাকে। [2] সম্ভবত অভিসারী বিবর্তনের কারণে লিচু গাছের পাতা ল্যাউরেসিয়া পরিবারের গাছেগুলোর পাতার মত একই রকম দেখতে হয় এবং এগুলি পাতার বিকাশের মাধ্যমে পানিকে দূরে রাখার মতো উপযোগী হয়ে ওঠে; এগুলিকে লরোফিল বা লরয়েড পাতা বলা হয়। মৌসুমি বৃদ্ধির সময়, লিচু গাছের ফুলগুলো অনিয়ত পুষ্পমঞ্জরির প্রান্তে অনেকগুলো গুচ্ছে জন্মায়। [6]
লিচু পরিপক্ব হয়ে ফলের শাঁস আসতে জলবায়ু, অবস্থান, এবং জাতের উপর নির্ভর করে ৮০-১১২ দিন সময় লাগে । ফলের আকৃতি গোল বা ডিম্বাকৃতি বা হৃদয়-আকৃতি ইত্যাদি বিভিন্ন রকমের হয়। ফলগুলো দৈর্ঘ্যে ৫ সে.মি. পর্যন্ত ও প্রস্থে ৪ সে.মি. পর্যন্ত হয় এবং ভর হয় প্রায় ২০ গ্রাম। [7][8] পাতলা ও শক্ত আবরণটি অপরিপক্ব অবস্থায় সবুজ থাকে;পরিপক্বতা আসলে সেটি লাল বা গোলাপি-লাল বর্ণ ধারণ করে এবং মসৃণ বা স্ফীত সূচালো আবরণ তৈরি হয়। বহিরাবণটি খাওয়া যায় না কিন্তু সহজেই সেটি সরিয়ে ফুলের ঘ্রাণ ও মিষ্টি স্বাদের একটি শাঁসযুক্ত স্বচ্ছ সাদা আবরণ পাওয়া যায়। [7] ফসল কাটার পর আবরণটি শুকিয়ে বাদামী রঙ ধারণ করে। ফলের শাঁসটির ভিতরে থাকে একটি গাঢ় বাদামি রঙের বীজ থাকে যেটি খাওয়া যায় না;বীজটি লম্বায় ১-৩ থেকে ৩ সে.মি (০.৩৯-১.৩০ ইঞ্চি) ও .০.৬ থেকে ১.২ সে.মি.(০.২৪-০.৪৭ ইঞ্চি) পুরু হয়ে থাকে। কিছু কিছু জাতের লিচু অনেক বেশি পরিমাণ শাঁস উৎপন্ন করে যেখানে বীজগুলো কুঞ্চিত অবস্থায় থাকে যাদেরকে "চিকেন টাংস" বলে। সাধারণত এই ধরনের ফলগুলোতে শাঁস বেশি থাকায় দাম তুলনামুলকভাবে বেশি হয়। [6] যেহেতু বোতলজাত করলে ফলটির পুষ্পশোভিত স্বাদ হারিয়ে যায় তাই সাধারণত এটিকে তাজা অবস্থায় খাওয়া হয়। [7]
১০৫৯ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে ফিরে তাকালে দেখা যায়, লিচুর চাষাবাদ শুরু হয়েছিল চীনের দক্ষিণাঞ্চল, মালয়েশিয়া ও ভিয়েতনামের উত্তরাঞ্চলে। [2] চীনের অনানুষ্ঠানিক রেকর্ডপত্রগুলো লিচুকে অন্তত ২০০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ পুরনো বলে উল্লেখ করেছে। [9] হাইনান দ্বীপ ও চীনের দক্ষিণাঞ্চলের কিছু অংশে এখনো লিচুর বুনো গাছ জন্মায়। চীনের ইম্পেরিয়াল কোর্টে এটি রুচিকর খাবার হিসেবে পরিবেশিত হত। [10]
হান সাম্রাজ্যের সময়, ১ম শতকে, তাজা লিচু শ্রদ্ধাঞ্জলির জনপ্রিয় উপাদান ছিল, আর ইম্পেরিয়াল কোর্টে এইরকম প্রয়োজনের ক্ষেত্রে বিশেষ কুরিয়ার সেবা চালু ছিল যা দ্রুতগামী ঘোড়ায় করে কুয়াংতুং থেকে তাজা লিচু নিয়ে আসত। [11] চাই জিয়াং এর লি চি পু নামক বই অনুসারে, সং সাম্রাজ্যের সময় (৯৬০-১২৭৯) লিচুর চাহিদা অনেক বেশি ছিল। এটি সম্রাট লি লংজি (জুয়ানজং) এর পছন্দের উপপত্নী ইয়াং ইউহান (ইয়াং গুফেই) এর প্রিয় ফল ছিল। সম্রাট অনেক ব্যয় করে লিচু রাজধানীতে সরবরাহ করার ব্যবস্থা করতেন। [7]
লিচু ইউরোপীয় ভ্রমণকারীদের আকৃষ্ট করেছিলো, যেমন ১৫৭০ সালের দিকে চীনে ভ্রমণকারী স্পেনীয় খ্রীষ্টান ভিক্ষুদের বর্ণনার উপর ভিত্তি করে লেখা জুয়ান গনজালেজ ডি মেন্ডজার চীনের শক্তিশালী ও বিশাল সাম্রাজ্য (১৫৮৫) বইয়ে লিচুর সুউচ্চ প্রশংসার কথা পাওয়া যায়:[12]
সেখানে একধরনের বরই রয়েছে যেটিকে তারা লিচিয়া বলে।সেগুলো অনেক বেশি সুস্বাদু, আর সেগুলো দেহের কোন ক্ষতি করে না; যদিও তারা তা অনেক বেশি পরিমাণে খায়।
পরবর্তীতে পোলিশ মিশনারি (তখনকার পোলিশ-লিথুনিয় কমনওয়েলথ) মাইকেল বয়ম ১৬৫৬ সালে এটিকে পশ্চিমা বিশ্বে পরিচয় করিয়ে দেন ও বর্ণনা করেন। [13]
চীনের দক্ষিণাঞ্চল, তাইওয়ান, ভিয়েতনাম এবং দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার অন্যান্য ক্রান্তীয় অঞ্চল, ভারতীয় উপমহাদেশ[14] ও আরও অনেক দেশের ক্রান্তীয় অঞ্চলে লিচু বেশি পরিমাণে উৎপাদিত হয়। [2][14][15] লিচু উৎপাদনের জন্য হিম-মুক্ত ক্রান্তীয় জলবায়ু এবং তাপমাত্রা −৪ °সে. (২৫ °ফা.) এর নিচে থাকে না এমন পরিবেশ প্রয়োজন। [2][14] লিচু গাছ উৎপাদনে গ্রীষ্মের উচ্চ তাপ, বৃষ্টিপাত, আর্দ্রতা সমৃদ্ধ জলবায়ু প্রয়োজন। লিচু ভালভাবে আর্দ্র, জৈব পদার্থে সমৃদ্ধ ও সামান্য অম্লীয় মাটিতে ভাল ভাবে বেড়ে ওঠে। [2][14]
লিচুর প্রায় ২০০ জাত রয়েছে, যাদের মধ্যে ঠাণ্ডা ও গরম জলবায়ুতে যথাক্রমে ধীরে দ্রুত ও পরিপক্ব হয় এমন জাতও আছে;[2] যদিও চীনে বাণিজ্যিকভাবে শুধুমাত্র ৮ টি জাতেরই চাষ করা হয়ে থাকে। [14] সৌন্দর্যবর্ধক এবং ফলদায়ক গাছ হিসেবেও লিচু গাছ লাগানো হয়। [2] এয়ার লেয়ারিং বা মার্কোটিং বা কলম তৈরি হল লিচু গাছ উৎপাদনের সবচেয়ে সাধারণ পদ্ধতি। গাছের পরিণত ডালের বাকল কেটে কাঁটা স্থানে আবাদ মাধ্যম (যেমন:ঘাসের চাপড়া বা স্ফ্যাগনাম মস) দিয়ে ঢেকে দিয়ে মূল বের হওয়ার জায়গা রেখে পলিথিন দিয়ে মুড়িয়ে রাখার মাধ্যমে কলম তৈরি করা হয়। উল্লেখযোগ্য পরিমাণ মূল বেরিয়ে আসলে কলমটি ডালটি থেকে কেটে পাত্রে স্থানান্তর হয়। [16]
লোককাহিনী অনুসারে, যেসব গাছ থেকে লিচুর ভাল ফলন পাওয়া যায় না, সেগুলোর কিছু ডাল কেটে দিলে সেগুলো বেশি ফল উৎপাদন করবে। পরিচর্যা ও ছাটাইয়ের মাধ্যমে হিসেবে গাছের মূল অংশের কাজ হয়ে গেলে অর্কিডে স্টেরিও ফ্রুটিং করে অনেক ফলন পাওয়া যায় [17]
এশিয়ার বাজারগুলোতে সাধারণত তাজা অবস্থায় লিচু বিক্রি করা হয়।[2][14] ফ্রিজে রাখলে লাল আবরণটি বাদামি হয়ে যায় কিন্তু তাতে স্বাদের কোন পরিবর্তন হয় না। এটি বোতলজাত করেও সারা বছর বিক্রি করা হয়। এটি খোসাসহ শুকানো হলে, ফলের ভেতরের শাঁস সঙ্কুচিত ও ঘন হয়ে যায়। [7]
লিচুর অনেক জাত রয়েছে; তাই সেগুলোর নামকরণ ও শনাক্তকরণে যথেষ্ট বিভ্রান্তি তৈরি হতে পারে। একই জাতের ফল ভিন্ন পরিবেশে বেড়ে উঠলে তাদের মধ্যে অনেক পার্থক্য হতে পারে। পৃথিবীর বিভিন্ন এলাকায় জাতগুলোর নামও আলাদা হতে পারে। অস্ট্রেলিয়া সহ এশিয়ার দক্ষিণপূর্ব দেশগুলোতে প্রধান জাতগুলোর ক্ষেত্রে চীনা নামটিই ব্যবহার করা হয়। ভারতে একডজনেরও বেশি জাতের লিচু চাষ করা হয়। দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রধানত "মরিশাস" জাতটির চাষ করা হয়। "গ্রোফ" জাতটি ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে চাষ হওয়া অন্য জাতগুলো চীন থেকে আমদানি করা হয়;যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই রাজ্যে "গ্রোফ" জাতটিকে উন্নয়ন করা হয়েছে। [8] উৎপাদনের অঞ্চল ও দেশের উপর ভিত্তি করে লিচুর অনেক জাতই বিখ্যাত। চীনের বিখ্যাত জাতগুলো হল: সানিয়েহং, বৈতানজিঙ, বায়লা, শুইডং, ফিজিক্সিয়াও, ডাজৌ, হিয়ে, নিউমিকি, গুইই, হুয়াঝি, লানজু এবং চেনজি। ভিয়েতনামে সবচেয়ে বিখ্যাত জাত হল ভাই থিয়েউ হাই ডুওং। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মরিশাস, ব্রুউস্টার এবং হাক আইপিসহ বেশ কয়েকটি চাষের উপর ভিত্তি করে উৎপাদন করা হচ্ছে। [6][18] ভারতে একডজনেরও বেশি জাতের চাষ করা হয়, যেগুলোর মধ্যে আছে শাহী (% হিসাবে সবচেয়ে বেশি পরিমাণ শাঁস), দেহরা দুন, আর্লি লার্জ রেড, কালকাটিয়া, গোলাপ-সুগন্ধি। [8][19]
প্রতি ১০০ গ্রাম (৩.৫ আউন্স)-এ পুষ্টিমান | |
---|---|
শক্তি | ২৭৬ কিজু (৬৬ kcal) |
১৬.৫৩ g | |
চিনি | ১৫.২৩ g |
খাদ্য আঁশ | ১.৩ g |
০.৪৪ g | |
০.৮৩ g | |
ভিটামিন | পরিমাণ দৈপ%† |
থায়ামিন (বি১) | ১% ০.০১১ মিগ্রা |
রিবোফ্লাভিন (বি২) | ৫% ০.০৬৫ মিগ্রা |
নায়াসিন (বি৩) | ৪% ০.৬০৩ মিগ্রা |
ভিটামিন বি৬ | ৮% ০.১ মিগ্রা |
ফোলেট (বি৯) | ৪% ১৪ μg |
ভিটামিন সি | ৮৬% ৭১.৫ মিগ্রা |
খনিজ | পরিমাণ দৈপ%† |
ক্যালসিয়াম | ১% ৫ মিগ্রা |
লৌহ | ১% ০.১৩ মিগ্রা |
ম্যাগনেসিয়াম | ৩% ১০ মিগ্রা |
ম্যাঙ্গানিজ | ৩% ০.০৫৫ মিগ্রা |
ফসফরাস | ৪% ৩১ মিগ্রা |
পটাশিয়াম | ৪% ১৭১ মিগ্রা |
সোডিয়াম | ০% ১ মিগ্রা |
জিংক | ১% ০.০৭ মিগ্রা |
অন্যান্য উপাদান | পরিমাণ |
পানি | ৮১.৮ g |
Link to USDA Database entry Vitamin B6/Folate values were available | |
| |
†প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য মার্কিন সুপারিশ ব্যবহার করে শতাংশ অনুমান করা হয়েছে। উৎস: ইউএসডিএ ফুডডাটা সেন্ট্রাল |
কাঁচা লিচুর শাঁসে ৮২% পানি, ১৭% শর্করা, ১% আমিষ ও সামান্য স্নেহ থাকে। কাঁচা লিচুর শাঁসে প্রচুর ভিটামিন সি থাকে; প্রতি ১০০ গ্রামে ৭১ মি.গ্রাম যা প্রতিদিনের প্রয়োজনীয়তার ৮৬%। কিন্তু এছাড়া আর কোন পুষ্টি উপাদান উল্লেখযোগ্য পরিমাণে থাকে না।
লিচুতে পরিমিত পরিমাণ পলিফেনল [20] সহ ফ্ল্যাভান -৩-ওল এর মনোমার এবং ডাইমার থাকে যা পলিফেনলের পরিমাণের ৮৭%, এটি লিচু বাদামি হওয়া ও সংরক্ষণ এর সময় নিঃশেষিত হয়ে যায়। [21] লিচু প্রাকৃতিকভাবে বুটলেটেড হাইড্রোক্সিটলুইন (বিএইচটি) উৎপাদন করে। [22] লিচুতে থাকা অ্যান্থোসায়ানিনের ৯২% হল সায়ানিডিন -৩-গ্লুকোসাইড। [21]
১৯৬২ সালে প্রাণীর উপর করা একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছিল যে, লিচুর বীজে মিথিলিনসাইকোপ্রোপাইলগ্লাইসিন (যা হাইপোগ্লাইসিন-এ এর অনুরূপ) থাকে যা হাইপোগ্লাইসেমিয়া ঘটায়। [23]
নব্বইয়ের দশকের শেষের দিক থেকে এনসেফেলোপ্যাথির অব্যাখ্যাত প্রাদুর্ভাব ঘটেছে, যা ভারতে কেবল বাচ্চাদেরই প্রভাবিত করেছিল [24] (সেখানে এটিকে চামকি বুখার বলা হয়)[25] এবং উত্তর ভিয়েতনামে (সেখানে এটিকে ভিয়েতনামি ভাষায় দুঃস্বপ্ন শব্দের পরঅ্যাক মং এনসেফেলোফাইটিস ব্যবহার করে বলা হত) মে-জুন মাসে লিচু আহরণের মৌসুমের সময়। [26][27]
ভারতে যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (সিডিসি) নামক সংস্থার ২০১৩ সালের একটি অনুসন্ধানে দেখা যায়, ব্যথাহীন এনসেফেলোপ্যাথি —যা জামাইকান বমিজনিত অসুস্থতার লক্ষণের অনুরূপ ছিল[28]—হওয়ার সাথে লিচু খাওয়ার বিষয়টি সম্পর্কিত ছিল। [29] ভর্তিকৃত অপুষ্টিতে ভোগা শিশুদের রক্তে শর্করার পরিমাণ ৭০ মি.গ্রা./ ডেসি.লি. এর নিচে থাকা (হাইপোগ্লাইসেমিয়া) ও খারাপ ফলাফলের (৪৪% ঘটনা মারাত্মক ছিল) কারণে সিডিসি এটিকে হাইপোগ্লাইসেমিক এনসেফেলোপ্যাথি হিসেবে শনাক্ত করে। [29]
অনুসন্ধানটি এই অসুস্থতাটিকে হাইপোগ্লাইসিন-এ এবং মিথিলিনসাইকোপ্রোপাইলগ্লাইসিন এর বিষাক্ততা ও অপুষ্টিতে ভোগা শিশুদের খালি পেটে লিচু (বিশেষ করে কাঁচাগুলো) খাওয়ার সাথে সম্পর্কিত করে। [4]
সিডিসি'র রিপোর্টের পরামর্শ হল, অভিভাবকদের তাদের সন্তানের লিচু খাওয়ার পরিমাণ সীমিত করার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে এবং সন্ধ্যাকালীন খাবার দিতে হবে, যাতে অসুস্থতা প্রতিরোধ করার জন্য রক্তের শর্করার পরিমাণ যথেষ্ট বৃদ্ধি পায়। [28][29]
পূর্ববর্তী গবেষণাগুলি ভুলভাবে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছিল যে, চান্দিপুর ভাইরাসের ঘটনার মতো এটিও বাদুড়ের লালা, প্রস্রাব বা মল অথবা জীবাণু বাহক (যেমন: লিচু গাছে পাওয়া যায় এমন কীটপতঙ্গ অথবা বেলে মাছি ) দ্বারা দূষিত লিচুর সাথে সরাসরি সংস্পর্শের থেকে সংক্রমণ ঘটেছে। ২০১৭ সালের একটি গবেষণায় দেখা যায়, চাষাবাদে ব্যবহৃত কীটনাশক বাংলাদেশে ছোট বাচ্চাদের এনসেফেলোফাইটিস হওয়ার ও মৃত্যুর কারণ হতে পারে। [30][31]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.