ভিটামিন সি
গুরুত্বপূর্ণ জৈব পুষ্টিপদার্থ ও ওষুধ উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
ভিটামিন-সি যার রাসায়নিক নাম অ্যাসকরবিক অ্যাসিড ( Ascorbic Acid )। এটি একটি জৈব অম্ল, যা শাকসবজি, ফল প্রভৃতিতে পাওয়া যায়। যার রাসায়নিক সংকেত C6H8O6 এটি সাদা দানাদার পদার্থ। মানুষসহ বিভিন্ন প্রাণী ও উদ্ভিদের জন্য একটি প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান। ‘ভিটামিন-সি’ দ্বারা মূলত এর একাধিক ভিটামারকে বোঝানো হয় যেগুলো প্রাণী ও উদ্ভিদের দেহে ভিটামিন-সি এর মত কাজ করে। এসব ভিটামারের মধ্যে অ্যাসকরবিক অ্যাসিডসহ এর বিভিন্ন লবণ ও ডিহাইড্রোঅ্যাসকরবিক অ্যাসিডের (dehydroascorbic acid) মত কিছু জারিত (oxidized) যৌগ বিদ্যমান। অ্যাসকরবেট বা অ্যাসকরবিক অ্যাসিড, এ দুয়ের যেকোন একটি দেহে প্রবেশ করলে প্রাকৃতিকভাবে দুটি পদার্থই প্রস্তুত হয়। এর কারণ, এরা pH এর মানের তারতম্যের সাথে একটি থেকে আরেকটিতে রূপান্তরিত হতে পারে। এটি কমপক্ষে আট রকমের উৎসেচক সংশ্লেষণ বিক্রিয়ায় কো-ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করে। উদাহরণস্বরূপ, এটি বিভিন্ন কোলাজেন সংশ্লেষণ বিক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যেগুলোর অভাবে স্কার্ভি রোগের উপসর্গসমূহ দেখা দেয়।[১] প্রাণীদের দেহে এই বিক্রিয়াসমূহ প্রধাণত ক্ষত-পূরণে ও কৈশিক রক্তনালী থেকে রক্তক্ষরণ বন্ধে প্রয়োজনীয় ভূমিকা পালন করে। অ্যাসকরবেট জারণজনিত পীড়ন (oxidative stress) রোধে একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে।[২]
![]() | |
![]() | |
রোগশয্যাসম্বন্ধীয় তথ্য | |
---|---|
অন্যান্য নাম | L-ascorbic acid |
এএইচএফএস/ ড্রাগস.কম | মুলতুম ভোক্তার তথ্য |
গর্ভাবস্থার শ্রেণি |
|
প্রয়োগের স্থান | oral |
এটিসি কোড |
|
আইনি অবস্থা | |
আইনি অবস্থা |
|
ফার্মাকোকাইনেটিক উপাত্ত | |
জৈবপ্রাপ্যতা | rapid & complete |
প্রোটিন বন্ধন | negligible |
বর্জন অর্ধ-জীবন | varies according to plasma concentration |
রেচন | renal |
শনাক্তকারী | |
আইইউপিএসি নাম
| |
সিএএস নম্বর | |
পাবকেম সিআইডি | |
আইইউপিএইচএআর/ বিপিএস | |
ড্রাগব্যাংক | |
কেমস্পাইডার | |
ইউএনআইআই | |
কেইজিজি | |
সিএইচইবিআই | |
সিএইচইএমবিএল | |
এনআইএআইডি কেমডিবি | |
ই সংখ্যা | E300 (অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ...) |
কমপটক্স ড্যাশবোর্ড (আইপিএ) | |
ইসিএইচএ ইনফোকার্ড | 100.000.061 |
রাসায়নিক ও ভৌত তথ্য | |
সংকেত | C6H8O6 |
মোলার ভর | 176.12 g/mole |
থ্রিডি মডেল (জেএসমোল) | |
ঘনত্ব | 1.694 g/cm3 |
গলনাঙ্ক | ১৯০ ডিগ্রি সেলসিয়াস (৩৭৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট) |
স্ফুটনাংক | ৫৫৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১,০২৭ ডিগ্রি ফারেনহাইট) |
এসএমআইএলইএস
| |
|
শারীরবৃত্তীয় কাজ
- কোলাজেন তৈরীতে সাহায্য করে। অস্থির গাঢ়ত্ব বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
- শরীরে লোহা শোষণে সাহায্য করে। হিমোগ্লোবিন অণুর গঠন বজায় রাখতে সাহায্য করে ও তা থেকে পরবর্তীতে বিলিরুবিন তৈরীতে সাহায্য করে।
- ট্রিপটোফ্যান, টাইরোসিন ইত্যাদি অ্যামিনো অ্যাসিড সংশ্লেষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
- অ্যাড্রেনালিন সহ বিভিন্ন ক্যাটেকোলামাইন এবং বিভিন্ন কর্টিকোস্টেরয়েড হরমোন উৎপাদনে ভূমিকা পালন করে।
- অ্যান্টিবডি তৈরীতে সাহায্য করে ও শ্বেত রক্তকণিকার জীবাণু ভক্ষণ ক্ষমতা বাড়িয়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
- অন্যান্য ভিটামিনের অসুখে জারি হওয়া থেকে রক্ষা করে থাকে।
- চোখে ছানি পরা, ক্যান্সার প্রতিরোধ, হৃৎপিন্ডের অসুখ সারাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
খাদ্য উৎস
লেবুজাতীয় ফল এই ভিটামিনের প্রধান উৎস। এছাড়া আমলকি, পেয়ারা, পালং শাক, বাঁধাকপি, টমেটো, আলুর খোসাতে ভিটামিন সি-এর আধিক্য পাওয়া গেছে।
দুধ থেকে খুবই সামান্য পরিমাণে ভিটামিন সি পাওয়া যায়।
প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য প্রতিদিন ৪০–৫০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি শরীরে প্রবেশ করলে শরীরে ভিটামিন-সি-এর ঘাটতি দেখা দেয় না। এছাড়া যেসকল মায়েরা গর্ভে সন্তান ধারণ করেন ও সন্তানকে স্তনপান করান তাদের জন্য ভিটামিন সি খুব দরকারী।
অভাবজনিত সমস্যা ও রোগ
১. যাদের শরীরে ভিটামিন-সি-এর অভাব রয়েছে, তারা খুব সহজে ক্লান্ত হয়ে পড়েন। শরীরে শক্তি কমে যায়, অবসন্ন হয়ে পড়েন।
২. শরীরে ভিটামিন-সি-এর ঘাটতি হলে বিরক্তিভাব দেখা দেয়। মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়।
৩. যাদের শরীরে ভিটামিন-সি-এর ঘাটতি হয়, তাদের হঠাৎ করে ওজন কমে যেতে পারে।
৪. ভিটামিন-সি-এর অভাব হলে গিঁটে ব্যথা বা পেশিতে ব্যথার সমস্যা হয়।
৫. ভিটামিন-সি-এর অভাব হলে দেহে কালশিটে দাগ পড়ে।
৬. ভিটামিন-সি দাঁত ও মাড়ির স্বাস্থ্যকে ভালো রাখে। এর ঘাটতি দেখা দিলে এসব অংশে সমস্যা হতে পারে।
৭. ত্বক ও চুল শুষ্ক হয়ে যাওয়াও ভিটামিন-সি-এর ঘাটতির লক্ষণ।
৮. ভিটামিন-সি-এর ঘাটতি হলে শরীরে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমে যায়।[৩]
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
Wikiwand - on
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.