Loading AI tools
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
ছানি হলো চোখের এমন একটি সমস্যা বা অসুখ যেখানে চোখের লেন্স অস্বচ্ছ বা ঘোলা হয়ে যায়, ফলে দেখতে অসুবিধা হয়।[7]
ছানি | |
---|---|
চেরা বাতির সাহায্যে পরীক্ষায় দেখা একটি চোখের ছানির বিবর্ধিত দৃশ্য | |
বিশেষত্ব | চক্ষুচিকিৎসাবিজ্ঞান |
লক্ষণ | বিবর্ণ রঙ, ঝাপসা দৃষ্টি, আলোর চারপাশে বর্ণবলয় দেখা, উজ্জ্বল আলোতে সমস্যা, রাতে দেখতে সমস্যা [1] |
জটিলতা | পড়ে যাওয়া, বিষাদগ্রস্থতা, অন্ধত্ব [2][3] |
রোগের সূত্রপাত | ধীরে ধীরে[1] |
কারণ | বার্ধক্য, মানসিক আঘাত, বিকিরণের প্রভাব, চোখের অস্ত্রোপচারের পরে, বংশগত[4][5] |
ঝুঁকির কারণ | ডায়াবেটিস, তামাকজাত ধূমপান, দীর্ঘক্ষণ রোদের প্রভাব, মদ্যপান[1] |
রোগনির্ণয়ের পদ্ধতি | চক্ষু পরীক্ষা[1] |
প্রতিরোধ | রোদ চশমা, সঠিক খাদ্যাভ্যাস, ধূমপান ত্যাগ[1] |
চিকিৎসা | চশমা, ছানি অস্ত্রোপচার[1] |
সংঘটনের হার | ৬০ মিলিয়ন (২০১৫)[6] |
চোখে ছানি প্রধানত চারটি কারণে হতে পারে :
বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে মানুষের শরীরে বিভিন্ন জটিল জৈব-রাসায়নিক পরিবর্তন হতে থাকে। এর প্রভাবে চোখের লেন্স আস্তে আস্তে অস্বচ্ছ হয়ে দৃষ্টিতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। দৃষ্টি শক্তির এই অসুবিধা যদি স্বল্প পরিমানে থাকে, তবে চশমা ব্যবহারের মাধ্যমে কিছুদিন চালিয়ে নেয়া যেতে পারে। ছানি ধীরে ধীরে পরিপক্ব হতে থাকে এবং একটা নির্দিষ্ট সময় পর অপারেশনের মাধ্যমে ছানি অপসারন করতে হয়। ছানি কতটা পরিপক্ব তার উপর ভিত্তি করে একে তিনভাগে ভাগ করা হয় :
শরীরের যেসব অসুখের প্রভাবে চোখে ছানি পড়তে পারে :
মূল অসুখটাও চোখে, যার প্রভাবে পরবর্তীতে ছানি পড়তে শুরু করে :
যে চোখে আঘত লেগেছে, সেই চোখেই ছানি পড়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই একচোখে ছানি পড়ার এটা অন্যতম কারণ। চোখের ভেতরে কিছু ঢুকে গেলে, ভারী কোন বস্তুর দ্বারা আঘাত পেলে, অবলোহিত রশ্মি বা অন্য কোন বিকিরনের (X-ray) ফলে এধরনের ছানি পড়তে পারে।
ছানি পড়ার কারণ যাই থাকুক, চশমা দিয়ে যদি দৈনন্দিন কাজ করা না যায় তাহলে অপারেশন করে ছানি অপসারন করতে হবে। প্রধানত তিন ধরনের অপারেশন করা হয়ে থাকে :
এটা সর্বাধুনিক প্রযুক্তি, এখানে খুবই ছোট ছিদ্রের মাধ্যমে ছানি অপসারন করা হয়। এরপর কৃত্রিম লেন্স (Foldable Intra-Ocular Lens) সংযোজন করা হয়। এই পদ্ধতির সুবিধা হল : চোখে সেলাই দেবার প্রয়োজন সাধারনত পড়ে না, রোগী দ্রুত আরোগ্য লাভ করে এবং অপারেশন পরবর্তী জটিলতা হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। অত্যন্ত দামী ফ্যাকো মেশিন এবং এটা চালানোর জন্য প্রশিক্ষন ও দক্ষতা প্রয়োজন, তাই এই অপারেশন কিছুটা ব্যয়বহুল।
এই পদ্ধতিতে চোখের সাদা অংশে বিশেষভাবে কেটে সেই পথে ছানি বের করে আনা হয়। তারপর কৃত্রিম লেন্স (Foldable or Rigid Intra-Ocular Lens) সংযোজন করা হয়। কাটা স্থানটি খুবই ছোট হওয়ায় এবং কাটার সময় বিশেষভাবে ভালবের মত ব্যবস্থা রাখা হয় বলে কাটা স্থানে সেলাই দেয়ার প্রয়োজন পড়ে না।
এক্ষেত্রে চোখের স্বচ্ছ কর্নিয়া ও সাদা অংশ (Sclera) এর মাঝ বরাবর কেটে ছানি বের করে আনা হয়। তারপর কৃত্রিম লেন্স (Foldable or Rigid Intra-Ocular Lens) সংযোজন করা হয়। কাটা স্থানটি সেলােই দিয়ে আটকে দেয়া হয়।
২৫০০ বছর পূর্বে খ্রিস্টপূর্ব ৫ম শতাব্দীতে প্রাচীন ভারতের আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক সুশ্রুত ,সুশ্রুত সংহিতা ছানির শল্যচিকিৎসার প্রথম বর্ণনা করেন। ফলো-আপ চিকিৎসার মধ্যে রয়েছে চোখের ব্যান্ডেজ করা এবং উষ্ণ মাখন দিয়ে চোখ ঢেকে রাখা।[8]
২৯ খ্রিস্টাব্দে প্রাচীন রোমে ছানি এবং তাদের চিকিৎসার উল্লেখ ল্যাটিন বিশ্বকোষবিদ আউলাস কর্নেলিয়াস সেলসাসের রচনা ডি মেডিসিনে পাওয়া যায়। রোমান যুগে চোখের অস্ত্রোপচারের প্রত্নতাত্ত্বিক প্রমাণও রয়েছে।[9]
২য় শতাব্দীর বিশিষ্ট গ্রীক চিকিৎসক, সার্জন এবং দার্শনিক পারগামনের গ্যালেন, আধুনিক ছানি অস্ত্রোপচারের মতো একটি অপারেশন করেছিলেন।গ্যালেন একটি সুই-আকৃতির যন্ত্র ব্যবহার করে চোখের ছানি-আক্রান্ত লেন্স অপসারণ করার চেষ্টা করেছিলেন।[10]
মুসলিম চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ আম্মার আল-মাওসিলি, তার দ্য বুক অফ চয়েস ইন অফথালমোলজিতে, প্রায় ১০০০ সালে লিখিত, রোগীর উপর পরীক্ষা করার সময় তার একটি সিরিঞ্জের উদ্ভাবন এবং ছানি নিষ্কাশনের কৌশল সম্পর্কে লিখেছেন।[11]
১৪২৮ সালে আবিথর ক্রেসকাস, একজন ইহুদি চিকিত্সক এবং আরাগনের ক্রাউনের জ্যোতিষী,আরাগনের রাজা দ্বিতীয় জন এর ছানি অপসারণ করে, তার দৃষ্টিশক্তি পুনরুদ্ধার করেছিলেন
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.