লাখাই উপজেলা
হবিগঞ্জ জেলার একটি উপজেলা উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
হবিগঞ্জ জেলার একটি উপজেলা উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
লাখাই উপজেলা বাংলাদেশের হবিগঞ্জ জেলার একটি প্রশাসনিক এলাকা।[1][2]
লাখাই | |
---|---|
উপজেলা | |
মানচিত্রে লাখাই উপজেলা | |
স্থানাঙ্ক: ২৪°১৭′৩″ উত্তর ৯১°১২′৪৭″ পূর্ব | |
দেশ | বাংলাদেশ |
বিভাগ | সিলেট বিভাগ |
জেলা | হবিগঞ্জ জেলা |
প্রতিষ্ঠা | ১৯৮৪ |
হবিগঞ্জ ৩ | হবিগঞ্জ ৩ |
সরকার | |
• এমপি | আবু-জাহির (আওয়ামীলীগ) |
আয়তন | |
• মোট | ১৯৬.৫৬ বর্গকিমি (৭৫.৮৯ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০০১) | |
• মোট | ১,২০,৬৭৭ |
• জনঘনত্ব | ৬১০/বর্গকিমি (১,৬০০/বর্গমাইল) |
সাক্ষরতার হার | |
• মোট | ২৮.৭৫% |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
প্রশাসনিক বিভাগের কোড | ৬০ ৩৬ ৬৮ |
ওয়েবসাইট | দাপ্তরিক ওয়েবসাইট |
তিনটি বিভাগের সীমান্তে অবস্থিত এই উপজেলার উত্তরে কিশোরগঞ্জ জেলার অষ্টগ্রাম উপজেলা ও সিলেট বিভাগের হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং উপজেলা, দক্ষিণে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলা ও মাধবপুর উপজেলা, পূর্বে হবিগঞ্জ সদর উপজেলা, মাধবপুর উপজেলা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলা, পশ্চিমে কিশোরগঞ্জ জেলার অষ্টগ্রাম উপজেলা।
লাখাই উপজেলায় বর্তমানে ৬টি ইউনিয়ন রয়েছে। সম্পূর্ণ উপজেলার প্রশাসনিক কার্যক্রম লাখাই থানার আওতাধীন।[3]
ভারত বর্ষের আসাম বেঙ্গল প্রদেশের শেষ সীমানায় ছিল এই অঞ্চল । বর্তমানে লাখাই ইউনিয়নের স্বজনগ্রাম নামক স্থানে ছিল লাখাই আউটপোষ্ট । ১৯২২ খ্রিষ্টাব্দের ১০ জানুয়ারি তৎকালীন আসাম প্রাদেশিক সরকারের গেজেট নোটিফিকেশন নম্বর ১৭৬ জিকে-র মাধ্যমে লাখাই থানা প্রতিষ্ঠিত হয় মর্মে জানা যায় । তার আগে এ অঞ্চলের সাব রেজিষ্টি অফিস ছিল মাধবপুর উপজেলার চর ভাঙ্গা নামক স্থানে । ১৯৪৭ এর পরে এ অঞ্চলের সাব রেজিষ্ট্রি অফিস হয় হবিগঞ্জ মহকুমায় । ৪৭ এর পরে হবিগঞ্জ মহকুমার অধীনে এ অঞ্চলকে সার্কেল অফিসার রাজস্বের আওতায় আনা হয় । ১৯৬৪ সালে এ অঞ্চলকে সার্কেল অফিসার উন্নয়নের আওতায় আনা হয় এবং স্বজনগ্রাম নামক স্থানে সিও ডেভেলপমেন্ট লাখাই এর কার্যালয় স্থাপন করা হয় । সিও ডেভেলপমেন্ট এর কার্যালয়ের অধীনে অন্যান্য অফিস স্থাপন করা হয় । ১৯৮৩ সালে বিভিন্ন লোকের দরখাস্ত এবং বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের আবেদনের প্রেক্ষিতে লাখাইকে মনোনীত থানায় উন্নীত করা হয় এবং বামৈ ইউনিয়নের ভাদিকারা মৌজার কালাউক নামক স্থানে ১৯৮৩ সালের ১৫ ই এপ্রিল মানোন্নীত থানার ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করা হয় । প্রথম উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন জনাব বিবেকানন্দ পাল এবং প্রথম উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন বীর মুক্তিযুদ্ধা মরহম মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন । পরবর্তীতে ধীরে ধীরে কালাউক নামক স্থানেই উপজেলা পরিষদের সকল অফিস, বাসভবন প্রতিষ্ঠিত হয় ।[1][2]
জনশ্রুতি রয়েছে এটি ছিল খাসিয়া রাজার রাজত্বের শেষ সীমানা। লাখাই একটি খাসিয়া শব্দ যার অর্থ শেষ সীমানা। এ হিসেবেই অঞ্চলের নামকরণ লাখাই করা হয়েছে।
লাখাই উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রামে একটি জঘন্যতম গণহত্যা চালানো হয় মুক্তিযুদ্ধের সময়। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর চালানো এই গণহত্যার নেতৃত্বে ছিলেন মোড়াকরি গ্রামের লিয়াকত রাজাকার।
প্রধানত সমতল ভূমি সেই সাথে রয়েছে প্রচুর জলাভূমি যেগুলিকে স্থানীয় ভাষায় হাওর বলে অভিহিত করা হয়।
পলি মাটি এবং দোআঁশ মাটি বিধৌত অঞ্চল।
লাখাই উপজেলা সিলেট বিভাগের অন্তর্ভুক্ত হলেও সিলেটের আঞ্চলিক ভাষার সাথে বাচনভঙ্গীগত কিছুটা অমিল থাকলেও শব্দগত দিক দিয়ে একই আঞ্চলিক ভাষাগোত্রের। অতীতকালে সিলেটের অন্যান্য অঞ্চলের মতই এ অঞ্চলেও প্রচুর সিলেটি নাগরী বর্ণমালার পুথির প্রচলন ছিলো।
পুরুষ: ৫৯,০২১ জন। মহিলা: ৬১,৬৫৬ জন।
মুসলিম: ১,০১,৫৭৫ জন। হিন্দু :১৯,০৩৩ জন। বৌদ্ধ : ০৬ জন। খ্রিষ্টান : ০৬ জন। অন্যান্য : ৫৭ জন।
লাখাই: ২২,৫৫৮ জন। মুড়াকরি: ২০,১৩৪ জন। মুড়িয়াউক: ১৯,৪০৫ জন। বামৈ: ২১,৮৪৪ জন। করাব: ১৭,৯৮০ জন। বুল্লা: ১৮,৭৫৬ জন।
মোট ভোটার সংখ্যাঃ ৮৩,৮৬২ জন পুরুষ ভোটার সংখ্যাঃ ৪১,০৩১ জন মহিলা ভোটার সংখ্যাঃ ৪২,৮৩১ জন বাৎসরিক জনসংখ্যা বৃদ্ধির হারঃ পরিবারের(খানার সংখ্যা): ২২,৫২৯ টি।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঃ বেসরকারী কলেজ : ০১টি। বেসরকারী উচ্চ বিদ্যালয় (বালক-বালিকা) : ০৯ টি। বেসরকারী উচ্চ বিদ্যালয় (বালিকা) : ০১ টি। সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় : ৫১ টি। রেজিষ্টার্ড বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় : ১৮ টি। কমিউনিটি বিদ্যালয় : ০১ টি। কিন্ডার গার্টেন : ০৫ টি। এর উলল্ল্যাখ যোগ্য- শেখ বানু শাহ, শাহ বায়েজিদ (রহ.) ইসলাম একাডেমী, এনজিও বিদ্যালয় সংখ্যা : ৪২ টি। এবতেদায়ী মাদ্রাসা : ০২ টি। আলিম মাদ্রাসা : ০১ টি। দাখিল মাদ্রাসা : ০১ টি। আনন্দ স্কুল : ৮০ টি। মসজিদ ভিত্তি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান : ২৮ টি।
উপজেলার অধিকাংশ মানুষের পেশা কৃষি । বর্ষা মৌসুমে এদের অনেকেই মৎস্য শিকারে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। কৃষির পরেই এ অঞ্চলের মানুষের প্রধান পেশা মাছ ধরা । লাখাই উপজেলার বিপুল সংখ্যক মানুষ ঢাকা, সিলেট, চট্টগ্রাম সহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে হোটেল ব্যবসা ও শ্রমিকের কাজ করেন। ঢাকা শহরের অধিকাংশ হোটেলে লাখাই উপজেলার শ্রমিকেরা কাজ করে । ঢাকায় অনেক হোটেলও আছে । কেউ কেউ বেল্ট বানিয়ে ঢাকায় বিক্রি করে । ঢাকায় কেউ কেউ পুরাতন জিনিস পত্র, লোহা লক্কর ফেরী করে বেড়ান । এ পেশাকে এ অঞ্চলে বলা হয় ভাংগাড়ির ব্যবসা । বিদেশে বিশেষত গ্রিস, ইতালি, ফ্রান্স, মধ্যপ্রাচ্য, ইংল্যান্ড এসব দেশেও অনেকে কাজ করেন । গ্রিসে বেশি সংখ্যক মানুষ থাকার কারণে এ উপজেলার একটি গ্রামকে গ্রিস গ্রামও বলা হয় । সরকারী চাকুরীজীবির সংখ্যা খুব কম যার অধিকাংশই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত । লাখাই উপজেলার ছোট বড় কোন ধরনের শিল্প কারখানা নেই। ক্ষুদ্র পর্যায়ের বেকারী সমূহে বানানো হয় বাকরখানি (পুরাতন ঢাকার একটি জনপ্রিয় খাবার)।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.