Loading AI tools
বিবর্তন তত্ত্বের দুর্বলতা উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
বিবর্তন বিরোধিতা একটি বিশ্বাসগত অথবা বৈজ্ঞানিক অবস্থান যা মানুষের উদ্ভবের ও বিকাশের বিবর্তন তত্ত্ব কে অস্বীকার করে। বিবর্তনবাদের ধারণা ঊনিশ শতকে দৃষ্টিগোচর হওয়ার পর বিজ্ঞানী, ধর্মতত্ববিদ এবং সাধারণ মানুষ স্ব স্ব দৃষ্টিকোণ থেকে এ তত্ত্বের বিরোধিতা শুরু করে। অধিকাংশ মানুষ পৃথিবীতে মানুষের আবির্ভাবকে ঈশ্বরের সিদ্ধান্ত ও অবদান বলে বিশ্বাস করে। এ বিশ্বাস সকল ধর্মগ্রন্থ সমর্থিত। বিবর্তনের মাধ্যমে মানুষের উদ্ভবের তত্ত্ব বৈজ্ঞানিকদের বিরোধিতারও সম্মুখিন হয় কারণ বিবর্তনবাদের বয়ান যৌক্তিক প্রতীয়মান হলেও এ মতবাদ প্রমাণ করা সম্ভব ছিল না।
এই নিবন্ধটির নিরপেক্ষতা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। |
এই নিবন্ধটির তথ্যসমূহের যথার্থতা সম্পর্কে বিতর্ক রয়েছে। |
এই নিবন্ধে একাধিক সমস্যা রয়েছে। অনুগ্রহ করে নিবন্ধটির মান উন্নয়ন করুন অথবা আলাপ পাতায় বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করুন।
|
চার্লস ডারউইন ১৮৫৯ সালে তার বই অন দ্য অরিজিন অব স্পিসিস প্রকাশ করেন। প্রথমে এটা বিজ্ঞানীদের সমালোচনার মুখে পড়ে কারণ তৎকালীন সময়ে জীবের পরিবর্তনের/জীবের উৎপত্তির/এক প্রজাতি থেকে আরেক প্রজাতির উদ্ভবের নানান ধারণা('এসব পরীক্ষণীয় ছিল না') প্রচলিত ছিল। কিন্তু অবশেষে বৈজ্ঞানিক মহল সম্পূর্ণভাবে একে স্বীকার করে নেয়। ১৯৪০ এর পরে মুলধারার জীববিজ্ঞানীরা সকল বিতর্কের ঊর্ধ্বে উঠে বিবর্তনকে স্বীকৃতি দেন কারণ তারা বিবর্তনকে(নব্য ডারউইন সংশ্লেষণ ও বিবর্তনের পক্ষে প্রমাণ উপস্থাপন করে) পর্যবেক্ষণ করেন। সেসময় থেকেই বিজ্ঞানীদের সংস্থার তুলনায় ধর্মীয় জায়গা থেকে অধিক সমালোচনা এসেছিল। সৃষ্টিবাদের নামে (এমন এক প্রকার বিশ্বাস যেখানে ধারণা করা হয় অসীম ক্ষমতাধর ঈশ্বর/সত্তা এই মহাজগৎ এবং জীবন সৃষ্টি করেছেন অলৌকিক ক্ষমতার দ্বারা)। নব্য সৃজনবাদীরা এক নতুন পথচলার সূচনা করে, যার নাম রাখা হয় সৃষ্টিবাদ বিজ্ঞান, নব্যসৃজনবাদ বিজ্ঞান, বুদ্ধিমান ডিজাইন ইত্যাদি। এইসব কিছু এমন এক বিশ্বাসের কথা বলে যেখানে জীবনকে অলৌকিক ক্ষমতাধরের নকশা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, বলা হয় এ মহাজগতের সব কিছুই সৃষ্টি হয়েছে কোনো বুদ্ধিমান ঈশ্বরের দ্বারা। তারা দাবী করেন এটা বিজ্ঞানসম্মত এবং সর্বসাধারণের এটা পড়া এবং শিক্ষা নেওয়া উচিত। এই সৃজনবাদ বনাম বিবর্তনবাদ বিতর্ক বহুদূর পর্যন্ত বিস্তৃত হয় এবং নতুন নতুন অভিযোগ বিবর্তনের বিরুদ্ধে (যেমন: স্বাভাবিক বিজ্ঞান মানছে না, নৈতিকতাহীন, সম্ভাবনা সূত্রের লঙ্ঘন এবং প্রমাণ ও ভিত্তিহীন ইত্যাদি) উত্থাপিত হতে থাকে। যাই হোক বৈজ্ঞানিক সম্প্রদায় তাদের এই সব অভিযোগকে নিন্দুকের অপব্যাখ্যা, ভিত্তিহীন বলে আখ্যায়িত করে।
১৯ শতকের শুরুতে বিবর্তনবাদের মত নানান মতবাদ ছিল। যার কোনোটাই সমালোচনার ঊর্ধ্বে ছিল না। যেমন ল্যামার্কের মতবাদ।(এমন এক প্রকার মতবাদ যেখানেও এক প্রজাতি থেকে অপর প্রজাতির পরিবর্তন দেখানো হয়েছে) এই মতবাদটি বৈজ্ঞানিকভাবে তীব্র বিরোধিতার সম্মুখীন হয়। উল্লেখযোগ্যভাবে জর্জস কার্ভিয়ার এর দ্বারা। তার সাথে সাথে হয় রাজনৈতিক ও ধর্মীয় বিরোধিতারও।[১] যখন চার্লস ডারউইন ১৮৫৯ সালে তার বই অন দ্য অরিজিন অব স্পিসিস প্রকাশ করেন, তিনি বৈজ্ঞানিক সংস্থাগুলোকে বুঝাতে সক্ষম হন সকল প্রজাতির উদ্ভব তার গোত্রের সাধারণ পুর্বপুরূষের থেকে হয়েছে। তৎকালীন অধিকাংশ প্রাকৃতিক নির্বাচনকে যুক্তিসংগত এবং অভিজ্ঞতানির্ভর পরীক্ষণীয় থিওরী বলে নেন। ডারউইনের ধারণা এটাই বিবর্তনকে জনসাধারণ এর গ্রহণ না করার এটাই প্রাথমিক কারণ।[২] ডারউইনের বিবর্তন নিয়ে প্রাথমিক আপত্তি ছিল বিজ্ঞান এবং ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ উভয়দিক থেকে। ডারউইনের সমসাময়িকরা জীবাশ্ম প্রমাণের উপর নির্ভর করে প্রজাতির পরিবর্তনকে স্বীকার করে নেন । দ্য এক্স ক্লাব গঠিত হয় বিবর্তনকে চার্চ এবং অপেশাদার কর্মী থেকে রক্ষা করতে।[৩] যদিও বিবর্তনের প্রক্রিয়া -প্রাকৃতিক নির্বাচন- প্রশ্নবিদ্ধ হয় বিকল্প মতবাদ ল্যামার্কিজম দ্বারা। এক প্রজন্ম থেকে অন্য প্রজন্মের হঠাৎ রূপান্তর (saltationism) এবং প্রাকৃতিক প্রলয়ংকারী দূর্যোগ মতবাদ(catastrophism)দ্বারা ডারউইনের ধীরে ধীরে নতুন প্রজাতিতে রূপান্তর মতবাদ (gradualistic) বিরোধিতার শিকার হয় । লর্ড ক্যালভিন বৈজ্ঞানিকভাবেই তার থার্মোডায়ানোমিক্স সূত্র দ্বারা। বিরোধিতা করেন। তৎকালীন ভূতাত্ত্বিকদের মতে পৃথিবীর বয়স ২৪ থেকে ৪০০ মিলিয়ন বছর। এ হিসাবকে তুলে ধরে ক্যালভিন বলেন,"এত অল্প সময়ে পৃথিবীতে এত জটিল প্রাণ সৃষ্টি সম্ভব নয়।" কিন্তু এই হিসাবটা সংশোধিত হয় ১৯০৭ সালে, যখন তেজস্ক্রিয় পদার্থ দেখায় পৃথিবীর বয়স বিলিয়ন বছরের চেয়েও বেশি। ফলে ভূবিজ্ঞানীদের দ্বারা ক্যালভিনের এই যুক্তি খণ্ডিত হয়।[৪][৫] ক্যালভিন নিজস্ব দৃষ্টিকোণ থেকে ঐশ্বরিক মতবাদ দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন।[৬] ডারউইন সুনির্দিষ্ট ভাবে যে গঠনগত বংশগতিবিদ্যার ব্যাখ্যা দেন তার কোনো সমর্থিত প্রমাণ তিনি দিতে পারেননি। বিবর্তন হচ্ছে বিজ্ঞানীরা এ বিষয়ে নিশ্চিত থাকলেও, কীভাবে হচ্ছে এই বিষয়ে বিজ্ঞানীরা অন্তত ১৮৮০ থেকে ১৯৩০ পর্যন্ত এক প্রকার অন্ধকারে ছিলেন [৭][৮] যতদিন না মেণ্ডেলের বংশগতিবিদ্যা আবিষ্কৃত হয় এবং নব্য বিবর্তনবাদের সূচনা হয়। নব্য সংশ্লেষণ নতুন নতুন প্রমাণ যেমন জিনতত্ত্ব দ্বারা সার্বজনীনভাবে স্বীকৃতি পায় জীববিজ্ঞানীদের মধ্যে। যা সুনিশ্চিত করে ডারউইনের ভবিষ্যতবাণীকে এবং এ বিষয়ে বাকি মতবাদকে বাতিল করে দেয়।[৯]
আমেরিকায় বিশেষ করে প্রটেস্টান্টরা, ১৮৬০ থেকে ১৮৭০ এর মধ্যে বিবর্তন নিয়ে তীব্র বিতর্ক শুরু করে। ১৮৭৩ সালে লুই এগাসিজের (Louis Agassiz) মৃত্যুর পরে এ বিতর্ক আরো বেড়ে যায় এবং ১৮০০ সালে "খৃস্টীয় বিবর্তন" নামে দল গঠিত হয়।[১০] ১৮৭১ সালে ব্রিটেনে দ্য ডিসেন্ট ম্যান (The Descent of Man) প্রকাশের পর এই বিতর্ক পুনরজ্জীবিত হয়, যা এক দশক ধরে চলে আসছিল। স্যার হেনরি চ্যাডউইকই প্রথম যিনি শিক্ষিত খ্রিষ্টানদের মধ্যে বিবর্তন স্বীকার করে বিবৃতি দেন। এর ফলে ১৮৭৬ সালে বিবর্তনবাদ গ্রহণযোগ্য এবং সম্মানিত মতবাদে পরিণত হয়।.[১০] ফ্রেডরিক টেম্পল "ধর্ম এবং বিজ্ঞানের মধ্যে সম্পর্ক'(১৮৮৪) শীর্ষক লেকচার দেন যেখানে আলোচনা করা হয়, কীভাবে বিবর্তন ধর্মের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ন।[১১] ক্যান্টারবারির আর্কবিশপদের সাথে ১৮৯৬ সালের মিটিং এটাই প্রমাণ করে যে খোদ প্রটেস্টান্টদের যাজক সম্প্রদায় বিবর্তনবাদ কে স্বীকার করে নিয়েছে।[১০]
এক দশক ধরে রোমান ক্যাথলিক চার্চ বিবর্তন নিয়ে কথাবলা এড়িয়ে যান। এরপর ক্যাথলিকরা বলেন বিবর্তন বাইবেলেরএর নিয়মমতই হচ্ছে। ভ্যাটিকান কাউন্সিল প্রথম বিবর্তনের সাথে ধর্মের যে সংঘর্ষ সেটা মিটমাটে প্রস্তাবনা দেন (১৮৬৯-৭০) সালে। অবশেষে তারা খুঁজে পান সবকিছুই সৃষ্টি হয়েছে শুন্য থেকে; তবে ঈশ্বরের দ্বারা। তারা তাদের এই বক্তব্য কে এক্সোকমিউনিকেশন (এটা এমন এক ধারা ছিল যা ধর্মের সাথে, ক্যাথলিক চার্চের সাথে সংঘর্ষপুর্ণ যে কোনো প্রকার প্রস্তাবনা, বই, মতবাদকে প্রকাশে বাধা দিত এবং এসবকিছুর বক্তাকে শাস্তির কাঠগড়ায় দাঁড় করাতো) এর কাছে পাঠানোর প্রস্তাবনাকে প্রত্যাখান করেন। ১৯৫০ সালে এনসাইক্লিকাল, পোপ পিয়াস XII এর "হিউম্যানি জেনেরিস"এ প্রথমবারের মত বিবর্তনবাদকে অফিসিয়ালী স্বীকার করেন।[১২] তারা বলেন মানুষ আদৌ অন্য কোনো প্রাণ থেকে বিবর্তিত কিনা, সে বিষয়ে তারা নিজেদের মত করে গবেষণা করবেন। কিন্তু আদম হাওয়া আর আত্মার বিষয়ে তারা গবেষণা করবেন কি না এই প্রশ্নকে তারা এড়িয়ে যান। পোপ জন পল II বলেন যে বিবর্তনবাদ শুধু মুখের কথার চেয়েও বেশি কিছু। বিবর্তনবাদই পারে কীভাবে এই বিশাল শরীর গড়ে উঠেছে তার ব্যাখ্যা করতে। কিন্তু পুনরায় আবার বলেন মানুষের আত্মা নিয়ে কোনো বস্তুবাদী ব্যাখ্যা দেওয়া মানুষের উচিত নয়।[১৩]
ধার্মিক মুসলমান, যারা কোরানে বর্ণিত সৃষ্টিতে বিশ্বাসী, তাদের থেকে শুরু করে শিক্ষিত মুসলমান সবার মধ্যেই বিবর্তনবাদ নিয়ে প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছিল। শিক্ষিত মুসলমানদের একাংশ অবশ্য এটাও ভাবতো বিবর্তন আল্লাহর নির্দেশেই হচ্ছে। নবম শতকে আল-জাহিয নামক একজন মুসলিম স্কলার এমন এক ধারণা দেন যার সাথে প্রাকৃতিক নির্বাচন মতবাদের ধারণা কিছুটা মিলে যায়।[১৪] যাইহোক, মুসলিম বিশ্বে বিবর্তনকে স্বীকার করার ব্যাপ্তি কম। যেহেতু বিবর্তনবাদ অনেকটাই বস্তবাদী ধারণাকে জোরালো করে বলে, মানবদেহের উৎপত্তির সাথে আদম হাওয়ার চিন্তাভাবনা ত্রুটিপূর্ণ। একইসাথে পশ্চিমাবিশ্বে যেসব মুসলিম লেখক প্রকাশক ছিলেন তারাও বিবর্তনবাদের বিপক্ষে অবস্থান নেন। যা তাদের লেখালেখিতে প্রতিফলন ঘটে।[১৫] যাইহোক, সারা বিশ্ব থেকে এখনও প্রচুর মুসলমান রয়েছেন যারা বিবর্তন তত্ত্বে বিশ্বাস করেন এবং এটিকে ইসলামী বিশ্বাসের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ বলে মনে করেন। এর মধ্যে রয়েছেন রানা দাজানি (জর্ডান)[১৬], মুহাম্মদ ইকবাল (পাকিস্তান)[১৭], নিধাল গেসুম (আলজেরিয়া)[১৮], ইসরার আহমেদ (পাকিস্তান)[১৯], টিও শানাভাস (ভারত)[২০], বাসিল আলতাই (ইরাক)[১৭], দাউদ আবদুল ফাত্তাহ ব্যাচেলর (মালয়েশিয়া)[১৭], ক্যানের তাসলামান (তুরস্ক)[২১], ডেভিড সলোমন জালাজেল (দাউদ সুলাইমান জালাজেল) (সৌদি আরব)[১৬], শোয়েব আহমেদ মালিক (যুক্তরাজ্য)[১৭], নুহ হা মিম কেলার(মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র)[২২], ইয়াসির ক্বাদি (পাকিস্তানি-আমেরিকান)[২৩], নাজির খান (আমেরিকান)[২৪], ইত্যাদি। বিবর্তনবাদ সম্পর্কে মুসলমানদের অবস্থানকে চার ভাগে ভাগ করা যায়: (১) অ-বিবর্তনবাদ (বিবর্তন তত্ত্বের সম্পূর্ণ প্রত্যাখ্যান) (২) মানব ব্যতিক্রমবাদ (মানুষ ব্যতীত পৃথিবীর সমস্ত জীবের সাধারণ পূর্বপুরুষে বিশ্বাস) (৩) আদমীয় ব্যতিক্রমবাদ (আদম, হাওয়া এবং তাদের প্রাচীনতম বংশধর ব্যতীত আধুনিক মানুষ সহ পৃথিবীর সমস্ত জীবের সাধারণ পূর্বপুরুষে বিশ্বাস) (৪) অ-ব্যতিক্রমবাদ (সমস্ত জীবের সাধারণ পূর্বপুরুষে বিশ্বাস, আদম ও হাওয়া সহ)।[১৭]
প্রধান প্রধান ধর্মের ধর্মযাজকগণ বিবর্তনবাদ বিরোধিতাকেই গ্রহণ করেন। তাদের কাছে প্রতীয়মান হয় এই ধারণা (যেখানে বলা হয়েছে প্রজাতি প্রাকৃতিক নির্বাচনের মাধ্যমে পরিবর্তন হয় এবং ভিন্ন ভিন্ন প্রজাতির একই পূর্বপুরুষ ছিল) "জেনেসিস একাউন্ট অব ক্রিয়েশন" এর সাথে সাংঘর্ষিক। বিশ্বাসীগণ ডারউইনিজমকে প্রচলিত মতবিরোধী বলে আক্রমণ করেন। উইলিয়াম প্যালের ওয়াচমেকার থিওরি একপ্রকার পরম মতবাদে পরিণত হয়, হয়ে উঠে সৃজনবাদীদের আন্দোলনের হাতিয়ার । যখন ডারউইনের থিওরী প্রকাশিত হয়, তখন থেকেই প্রাকৃতিক ধর্মতত্ববিদদের নানাবিধ বিরোধিতার শুরু হয়। তারা আরো একটা ধারণার সুচনা করেন যেখানে বলা হয় বিবর্তন নিয়ে এখনো গবেষণা চলছে তাই এটাকে ধ্রুব সত্য হিসাবে ধরার কোনো কারণ নাই। আল্লাহতে বিশ্বাস রাখাই এখন বেশি দরকার। এটাই প্রাথমিক এবং প্রধান দরকার। আর যদি বিবর্তন হয়েও থাকে তাহলে আল্লাহই একে পরিচালনা করছেন এবং মানুষকে সৃষ্টি করেছেন [২৫] এই অবস্থানটা খ্রিষ্টান সম্প্রদায় এবং বিবর্তন নিয়ে ইহুদিদের দর্শনবাদী ও একইসাথে নব্য ধর্মবিদরা গ্রহণ করে যার দর্শণ ছিল বাইবেল এবংতোরাহ রুপকভাবে হলেও বিবর্তনের ব্যাপারে বলছে, এইভাবেই তারা বিবর্তন এবং ধর্মের মধ্যে বিরোধিতাকে দূর করে। যাই হোক ১৯২০ সালে গোঁড়া খ্রিষ্টানেরা আমেরিকায় বাইবেলের রেফারেন্স টেনে তাদের তর্কের উন্নয়ন ঘটিয়ে শুরু করে বিবর্তনবাদ শিক্ষা দেওয়ার বিরোধিতা। তারা জানান বিবর্তনবাদ জার্মানির যুদ্ধাবস্থার হিংস্রতার শিক্ষা দেয় এবং ইহা ধর্ম ও নৈতিকতার জন্য হুমকিস্বরুপ। এই বিরোধিতাই ক্রমান্বয়ে সৃজনবাদ বনাম বিবর্তনবাদ প্রক্রিয়ায় রুপ নেয়। এবং সৃজনবাদীরা আপত্তি জানায় বিদ্যালয়ে বিবর্তনবাদ শিক্ষা দেওয়ার বিষয়ে। ১৯৬৮ সালে এপারসন ভি. আরকানসাস বলেন, "ধর্মীয় চিন্তাধারার উপর ভিত্তি করে বিবর্তনবাদ শিখানো নিষেধ করা মুলতঃ প্রতিষ্ঠিত মতবাদকে লঙ্ঘন করা বুঝায়।"[২৬]
এরপর থেকে সৃষ্টিবাদীরা বিবর্তনের বিরুদ্ধে নতুন নতুন অদ্ভুত আপত্তি জানায়, অভিযোগ করে বিবর্তনবাদ অবৈজ্ঞানিক, ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং ধর্মের বিরোদ্ধাচরণ করে।[২৭] সৃষ্টিবাদীরা গণতান্ত্রিকভাবে বিবর্তনের বিরুদ্ধে আপীল করেন। তারা এ বিষয়ে স্বচ্ছতা দাবী করে বলেন, বিবর্তনবাদ বিতর্কিত এবং বিজ্ঞানশিক্ষা শ্রেণিগুলোতে শিক্ষার্থীদের বিতর্কিত বিষয় শিখাচ্ছে।[২৮] যখন ১৯৯০ সালে সৃজনবাদ মুভমেন্ট হয় তাদের এইসমস্ত আপত্তি চরমমাত্রায় পৌছায় এবং কিটযমিলার বিদ্যালয় ২০০০ সালের পূর্ব পর্যন্ত বিবর্তনবাদের বিকল্প আখ্যা দিয়ে পড়ানো শুরু করে [২৯][৩০]
বিবর্তন শব্দটা এমনই যে, তাকে নিয়েই অস্পষ্টতা তৈরী হয়। জীববিজ্ঞানের ভাষায়: জীবের বংশবৃদ্ধির ক্ষেত্রে এক প্রজন্ম থেকে অপর প্রজন্মে জীনগত পরিবর্তনই বিবর্তন। কিন্তু এই শব্দটার বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিভিন্ন অর্থ আছে, বিবর্তনের শাব্দিক অর্থ পরিবর্তন ধরে নিয়ে একে বিভিন্ন জায়গায় ব্যবহার করা হয়, যেমন: সামাজিক বিবর্তন to stellar এবং মহাজাগতিক বিবর্তন। এর সবকিছুই জীববিজ্ঞানের বিবর্তনের সাথে সম্পৃক্ত নয়।যদি জীববিজ্ঞানের বিবর্তনের মুল শর্তগুলোর সাথে অন্য বৈবর্তনিক প্রকৃয়ার সংঘ্র্ষ হয়, তখন ভুল হবার সম্ভাবনা থাকে।যেমন অনেকেই মনে করে থাকেন বিবর্তনের সাথে abiogenesis অথবা Big Bang এর সম্পর্ক আছে। তাই তারা বিবর্তনের সাথে উক্ত বিষয়গুলোকে মিলানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু বিবর্তন এই বিষয়গুলো নিয়ে কোনো বক্তব্য দেয় না।[৩১]
সাধারণ ভাষায় বিবর্তন জীবের ধীর বা দ্রুততর উন্নয়ন বা সরল জীব থেকে জটিল জীবের যে উদ্ভব তাকে ব্যাখ্যা করে। বিবর্তনকে পিছনের দিকে চালিত করার পর সাদা চোখে দেখে মনে হয়, বিবর্তনের কোনো লক্ষ্য আছে, অথবা কারো নির্দেশে এটি পরিচালিত হচ্ছে, তবে এটা একটা ভুল ধারণা। বাস্তবতা হল বিবর্তনের কোনো লক্ষ্য থাকে না। বিবর্তন ঘটে জীবের এক প্রজন্ম থেকে অপর প্রজন্মে খুবই ধীরে ধীরে, যাতে করে নতুন প্রজন্ম পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে পারে, এবং প্রতিকূল পরিস্থিতির মোকাবেলা করতে পারে। এভাবে করে সে সে যোগ্য হয়ে উঠে পরিস্থিতির মোকাবেলা করতে। তবে যেসব প্রজাতি পরিস্থিতির সাথে খাপ খাইয়ে নিতে পারে না, সময়ের সাথে তারা বিলুপ্ত হয়ে যায়। জীববিজ্ঞানীরা কখনো মানুষের মত একটা প্রজাতিকেই বিবেচনা করে না, যে অনেক বেশি উন্নত এবং বিবর্তনের শেষ ধাপে অবস্থান করে। জীববিজ্ঞানিরা কখনো মানুষের মত একটাই প্রজাতি নিয়ে কাজ করে না,যে অন্য প্রজাতি থেকে উন্নত আর অনেক বেশি বিবর্তিত। নির্দিষ্ট কয়েকটি উৎস থেকে বস্তুনিষ্ঠতার পরিবর্তে মানবকেন্দ্রিকতা অনুসারে অমানব জীবসত্তারসমূহ মূল্যায়নের প্রবণতার কারণে অন্য বিষয়ের দিকে ইঙ্গিতের জন্য সমালোচনা করা হয়েছে।[৩২]
বিবর্তনে এটা অপরিহার্য নয় জীব ক্রমশ জটিল হবে। এই দৃষ্টিকোণ থেকে বলা যায় প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে জীব জটিল হবে এমনটা প্রয়োজনীয় নয়,বরং প্রাকৃতিক নির্বাচনের ফলে সুনির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে জীব জটিল হয় প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য। এবং পরিস্থিতির সাথে সংগতি রেখে জীবের এই জটিলতা বাড়তে পারে, কমতেও পারে এবং অপরিবর্তিও থাকতে পারে এবং এই তিনও প্রবণতা বিবর্তন প্রকৃয়ায় পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে।[৩২] সৃজনবাদীরা বিজ্ঞান দিয়ে বিবর্তনের বিরোধিতা করার বদলে প্রচলিত যুক্তি দিয়েই বিবর্তন তত্তের বিরোধিতা করে। এবং এসব যুক্তি দিয়েই অনেকে বিবর্তনকে খণ্ড বিখণ্ড করে ফেলে। যদিও জীববিজ্ঞানীরা এ নিয়ে কী বলছে তারা খুজে দেখে না (দেখুন straw man argument)।
সৃজনবাদ এবং বিবর্তনের মধ্যে মূল সংঘর্ষ আদতে বিবর্তনের সংজ্ঞা নিয়ে। জীববিজ্ঞান অনুসারে বিবর্তন হল কোন প্রাণীকূলের জনসংখ্যার জিনেটিক পরিবর্তন; যা প্রজন্মান্তরে থেকে যায়। যাই হোক, বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিবর্তন শব্দটির ভিন্ন ভিন্ন অর্থ রয়েছে। সামজিক বিবর্তন থেকে শুরু করে আণবিক (molecular) বিবর্তন- এই সব ক্ষেত্রেই বিবর্তন শব্দটির ভিন্ন ভিন্ন ব্যবহার হয়। যখন জীববিজ্ঞানের বিবর্তনকে অন্য বিবর্তন প্রক্রিয়ার সাথে মিশিয়ে ফেলা হয় তখন সাধারনত বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়। যেমন প্রচলিত একটি ভুল ধারণা, বিবর্তনবাদ বিগ ব্যাং কিংবা জীবনের উৎসের ব্যাপারে আলোচনা করে।[৩০]
বিভিন্ন সময়ে; বিবর্তনকে বৈজ্ঞানিক বৈধতার কষ্টিপাথরে বারবার যাচাই করা হয়েছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে এটি বৈজ্ঞানিকভাবে বৈধ কিনা, সেই প্রশ্ন এবং অভিযোগ অনেকে করছেন।[৩৩][৩৪] অথবা চেষ্টা করা হচ্ছে বিবর্তনের বিকল্প হিসেবে অন্য কোনো মতবাদ যেমনঃ সৃজনবাদীতার বিকাশ ঘটানো।[৩৫][৩৬]
বিবর্তনের সমালোচনাকারীরা বিবর্তন শুধুমাত্র একটি থিওরী বা তত্ত্ব বলে দাবী করেন এবং তারা জোর দেন যে বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব কখনোই বাস্তব নয়। এই তত্ত্ব বিভ্রান্তিকরভাবে নিজেকে প্রকাশ করে এবং এর কোনো প্রমাণস্বাপেক্ষ না। তাই বিবর্তনবাদ ফ্যাক্ট নয়, শুধুই তত্ত্ব॥[৩৭] প্রচলিত ভাষায় তত্ত্ব আর বিজ্ঞানের ভাষায় তত্ত্বের মধ্যে বেশ পার্থক্য আছে। প্রচলিত ভাষায় তত্ত্বের অর্থ অনুমান হলেও বিজ্ঞানের ভাষায় থিওরী বা তত্ত্ব হচ্ছে এমন এক ব্যাখ্যা যার মাধ্যমে ভবিষ্যতবাণী করে প্রমাণের মাধ্যমে যাচাই করা যায় এবং অবশ্যই পরীক্ষা করে তার সত্যতা নিশ্চিত করতে হয়। বিবর্তনবাদ প্রজাতির বৈচিত্র্যতা এবং তাদের পুর্বপুরুষকে ব্যাখ্যা করে। এটা উচ্চতর বৈজ্ঞানিক প্রমাণ। বিবর্তনবাদের উদাহরণ হচ্ছে আধুনিক বিবর্তনীয় সমন্বয়, যা ডারউইনের প্রাকৃতিক নির্বাচন মতবাদ এবং মেণ্ডেলের বংশগতিবিদ্যার যুগপৎ উদাহরণ। অন্য যে কোনো মতবাদের মতই এই আধুনিক সমন্বয় ঘনঘন তর্ক-বিতর্ক, পরীক্ষা এবং বারবার বিজ্ঞানীদের দ্বারা সংশোধন হতে থাকে। সর্বশেষ গোটা বিজ্ঞান সমাজ ঐক্যবদ্ধভাবে এই সিদ্ধান্তে আসে যে এই মডার্ণ সিন্থেসিস বা আধুনিক সমন্বয় ঘটছে বিবর্তনের কারণে।[৩৭][৩৮]
সমালোচকরা এটাও বলেন যে বিবর্তন ফ্যাক্ট নয়।[৩৯] প্রচলিত অর্থে ফ্যাক্ট হচ্ছে, যা পর্যবেক্ষণ করা যায় এবং পর্যবেক্ষণ করেই সেখান থেকে তথ্য ও জ্ঞান অর্জন করা যায়। কিন্তু বিজ্ঞানে প্রমাণ স্বাপেক্ষে ফ্যাক্ট যে কোনো কিছু হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ জানামতে থিওরী যেমন "পৃথিবী সুর্যের চারদিকে ঘুরে" এবং "বস্তু উপর থেকে নিচে পরে অভিকর্ষের কারণে" হতে পারে "ফ্যাক্টস" যদিও এরা সম্পূর্ণভাবে তত্ত্বীয়। বিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে, বিবর্তনকেও "ফ্যাক্ট" বলা যায় একই কারণে, যেভাবে অভিকর্ষকে তত্ত্ব বলা হয়। বিবর্তনবাদ পর্যবেক্ষণলব্ধ প্রক্রিয়া, কারণ জীবের পপুলেশন সময়ের দ্বারা জীনগতভাবে পরিবর্তিত হয়। এইভাবেই বিবর্তনবাদকে ফ্যাক্ট বলা যেতে পারে। এই তত্ত্ব সমাজে প্রতিষ্ঠিত সত্য। এভাবেই বিজ্ঞানীদের কাছে বিবর্তনবাদ তত্ত্ব এবং ফ্যাক্ট উভয়ভাবেই স্বীকৃত হয় [৪০][৪১][৪২]
শুধুমাত্র পর্যবেক্ষণলব্ধ প্রমাণ ছাড়া কোন বৈজ্ঞানিক তত্ত্বই প্রমাণিত নয় বলে বিবর্তনবাদ এখনো অপ্রমাণিত এবং বিভ্রান্তিকর।[৪৩] এই পার্থক্যটি বৈজ্ঞানিক দর্শনের আলোকে গুরুত্বপূর্ণ, যেহেতু এতে নিশ্চয়তার অভাব আছে। বিজ্ঞানের কিছু কিছু শাখা যেমন গণিত কিংবা যুক্তিবিজ্ঞানে পর্যবেক্ষণলব্ধ দাবীকে মেনে নেয়া গেলেও প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে তা মেনে নেয়া যায় না। কেননা, এক্ষেত্রে সত্যতা যাচাই এবং সত্যতা প্রতিপাদিত সম্পূর্ণ ভিন্ন অর্থে ব্যবহৃত হয়। তাই বিবর্তনবাদ প্রমাণিত নয় কথাটি উল্লেখযোগ্যতাবিহীন হলেও খানিক সত্য। তাই বলে শুধু মাত্র তত্ত্ব বলে সম্পূর্ণ বিবর্তনবাদকে অস্বীকার করা অযৌক্তিক। বিভ্রান্তি বাড়ায় প্রমাণ শব্দটির চলিত অর্থ "বাধ্যতামূলক প্রমান" যাইহোক বিজ্ঞানীরা ববর্তনকে প্রমাণিত বলেই মেনে নেন।[৪৪]
বিবর্তন নিয়ে সৃজনবাদীদের একটা বক্তব্য হল এটা বিতর্কিত এবং কলহপ্রবণতাকে উষ্কে দেয়।[৪৫][৪৬] অতীতের সৃজনবাদীদের মত তারা বিবর্তনবাদের নাম-নিশানা মুছে ফেলতে চায় নাই, এবার তারা এক ভিন্ন কৌশলে হাঁটল। তারা বলতে শুরু করল, বিবর্তনবাদ যদিও বিতর্কিত তারপরেও তোমরা এটা শিখাও, তবে এই ব্যবস্থা করো যাতে শিক্ষার্থীরা নিজেদের ইচ্ছেমত বিবর্তনবাদ আর সৃজনবাদের মধ্যে বিষয় নির্বাচন করতে পারে।[৪৬][৪৭]
এই আপত্তিটা করেছিল ডিস্কভারি ইন্সটিটিউট নাম্নী এক প্রতিষ্ঠান। ওয়াশিংটনে অবস্থিত এই প্রতিষ্ঠান "বিতর্কিত বিষয় শেখাও" নামে একটা ক্যাম্পেইন করে। এর মাধ্যমে এরা মুলত বিদ্যালয়গুলোতে সৃজনবাদী ভাবনার বিকাশ ঘটাতে চাল এটা ছিল তাদের একপ্রকার কৌশল, যাদের একমাত্র ধ্যান জ্ঞান ছিল বিবর্তনবাদের শিক্ষা দেওয়া রোধ করা এবং বিশ্ব জুড়ে বস্তুবাদের প্রতি সাধারণ মানুষের যে পজিটিভ দৃষ্টিকোণ গড়ে উঠছে সেটাকে খ্রিষ্টান এবং বিশ্বাসীদের ধারণার সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ ভাবনা দিয়ে পাল্টে দেওয়া।[২৮] তাদের এ কার্যক্রম কিছুটা সফল হয়েছিল এবং যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কিছু বিদ্যালয়ে সৃজনবাদী শিক্ষা পড়ানো হয়েছিল বিবর্তনবাদের বিকল্প হিসাবে। অবশ্য ২০০১ সালে তাদের প্রচেষ্টা ব্যার্থ হয়ে যায়।[৪৮]
বিজ্ঞানীগণ এবং যুক্তরাষ্ট্রের আদালত সৃজনবাদীদের আপত্তিকে বাতিল করে দেন। তারা বলেন বিজ্ঞান কখনো জনপ্রিয়তার উপর নির্ভর করে না, নির্ভর করে গ্রহণযোগ্যতার উপরে। জীববিজ্ঞানীদের দেওয়া তথ্য, সেই তথ্যের স্বচ্ছতাই সিদ্ধান্ত নিবে বিজ্ঞানে কোন বিষয়টা গ্রহণযোগ্য কোনটা নয়। এখানে জনমত যাচাইয়ের প্রশ্নই উঠে না। এবং যদিও বিবর্তনবাদ জনগণের কাছে বিতর্কিত, প্রকৃত বিজ্ঞানীদের কাছে এবং বিজ্ঞানের জগতে এটা সকল বিতর্কের ঊর্ধ্বে।[৪৯][৫০]
এইবার সৃষ্টিবাদীরা এই যুক্তিকে খণ্ডন করতে গিয়ে ২০০৮ এর আগস্টে একটা বিবৃতি দেয়। সেখানে ৭৬১ জন বিজ্ঞানী স্বাক্ষর করেন। বিবৃতি ছিল ডারউইনিজম নিয়ে বৈজ্ঞানিক মতবিরোধ। এর উদ্দেশ্য ছিল বিবর্তন নিয়ে বৈজ্ঞানিকদের সমালোচনা আছে এটা দেখানো। এই বিবৃতিতে বিজ্ঞানীরা সরাসরি বিবর্তনকে কিন্তু অস্বীকার করেন নাই। সংশয় প্রকাশ করেছেন ক্রমাগত মিউটেশন এবং প্রাকৃতিক নির্বাচনের ফলে এই জটিল প্রাণ তৈরী সম্ভব কি না। প্রায় একই পিটিশন এবার বিবর্তনবাদীরা করেন, যার নাম ডারউইনিজমের প্রতি বিজ্ঞানীদের সমর্থন যেখানে চারদিনের মধ্যে ৭০০০ এর অধিক বিজ্ঞানী এর সমর্থনে সই করেন।[৫১] এবং প্রজেক্ট স্টীভ, "'a tongue-in-chee"' পিটিশনে ২৪শে মে ২০১৬ পর্যন্ত অন্তত ১,৩৯৩ জন বিজ্ঞানী বিবর্তনকে সমর্থন করেন[৫২]
সৃজনবাদীরা এক শতক ধরে একটাই কথা বলে আসছেন বিবর্তন শুধুই থিওরী। এরপর অবশ্য তারা ১৮০ ডিগ্রী ঘুরে বলতে থাকেন বিবর্তনের পক্ষে গ্রহণযোগ্য প্রমাণের অভাব আছে অথবা এটা প্রকৃতির নিয়মলে লঙ্ঘন করে।এই সব অভিযোগ বিজ্ঞানীদের দ্বারা বাতিল হয়ে যায়। বিজ্ঞানীরা সৃজনবাদীদের উদ্দেশ্যে বলেন আপনার যে আইডির কথা বলেন অথবা কেও সৃষ্টি করেছেন এই ধরনের ব্যাখ্যা দেন, সেগুলো মেনে নিব। কিন্তু এর আগে বিজ্ঞানের স্বাভাবিক নিয়ম অর্থাৎ আপনাদের দাবীর পক্ষে উপযুক্ত প্রমাণ দিতে হবে। তবেই বিবর্তনের বিকল্প হিসেবে সৃজনবাদীতাকে মেনে নেওয়া হবে। এটাও বলা হয়েছে যদি বিবর্তনের বিপক্ষে একটাও প্রমাণ থাকে তাহলে বিবর্তনবাদ বাতিল হবে। কিন্তু তা তো নেই। একইভাবে আইডি প্রতিষ্ঠা করতে হলেও আপনাদের প্রমাণ দেখাতে হবে।[৫৩]
কখনো কখনো অভিযোগ করা হয় অনেক বিজ্ঞান মহল বিবর্তন নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে।[৫৪] এর সাথে সাথে বলা হয় ডারউইন বিবর্তনবাদকে প্রত্যাহার করে নিয়েছে যখন তিনি ছিলেন মৃত্যুশয্যায়; কিন্তু এটা লেডি হোপ'স স্টোরি থেকে তৈরী একটা গালগপ্পো মাত্র।[৫৫] এইসব অভিযোগুলো স্বাভাবিকভাবে আপীলস টু অথরিটি দ্বারা বাতিল হয়ে গিয়েছিল।
নব্য সৃজনবাদীদের বিবর্তন নিয়ে একটা প্রচলিত অভিযোগ হচ্ছে: বিবর্তন বিজ্ঞানের ধারা অনুসরণ করে না,তাই এটা খাটি বিজ্ঞান নয়। একে বিজ্ঞানের শ্রেণিতে পাঠদান করা উচিত নয়। অথবা এর পাশাপাশি বিকল্প মতবাদ(যেমন সৃজনবাদ) পড়ানো উচিত।
সৃজনবাদীরা বিভিন্ন সময় বলে থাকেন,"বিবর্তন এক প্রকার ধর্ম, এটা বিজ্ঞান নয়।[২৭]
বিবর্তনকে ধর্ম বানাবার জন্য সৃজনবাদীরা প্রায়সই যে উদাহরণ ব্যবহার করে থাকে,তার মধ্যে একটি হল: বিবর্তনও এক প্রকার বিশ্বাস, এবং তাই বিবর্তনও এক প্রকার ধর্ম। বিবর্তনের সমর্থকরা ডারউইনকে নবী মানে, আর তারা অন্য যেকোনো বিকল্প মতবাদকে বাতিল করে দেয়।[৪৩][৫৬] এই ধরনের দাবীগুলো নব্য সৃজনবাদী আন্দোলনের সময় বেশ জনপ্রিয় হয়েছিল।[৪৯]
প্রতিউত্তরে বিবর্তন তত্তের সমর্থকরা বলেন কোনো বৈজ্ঞানিক দাবী এমনকি ডারউইনের তত্ত্বও অলঙ্ঘনীয় হিসেবে বিবেচিত হয় না। ডারউইনের যে মতবাদ সেটাও পরিবর্তিত হয়েছে। নব্য ডারউইনবাদ, নব্য বিবর্তন সংশ্লেষণ এর মত নতুন তত্ত্বের মাধ্যমে ডারউইনের মতবাদের বেশ কিছু জায়গা সংশোধিত হয়েছে।[৫৭][৫৮] সৃজনবাদীদের দাবী অনুসারে বিবর্তন পর্যবেক্ষণ করা যায় না,তাই এটা এক প্রকার বিশ্বাস। কিন্তু বাস্তবে বিবর্তন পর্যবেক্ষণ করা যায়। এবং এর সুনির্দিষ্ট প্রমাণ আছে, তাই বিবর্তন তত্ত্বকে বিশ্বাসের কোনো প্রয়োজন নেই।
জনসাধারণের কাছে বিবর্তন একটা ধর্ম এই দাবী ধোপে টিকে নি, কারণ ধর্মের বৈশিষ্ট্যই হচ্ছে আধ্যাত্মিক বিশ্বাস, যাকে নিয়ে কোনো প্রশ্ন করা যাবে না। কিন্তু বিবর্তন তত্ত্ব নিয়ে জনগণও ক্রমাগত প্রশ্ন উত্থাপন করছিলেন। বিবর্তনের সমর্থকরা বলেন, না এটা কোনো প্রমাণবিহীন তত্ত্ব,না এটা কোনো বিশ্বাসের ওপর প্রতিষ্ঠিত। যুক্তরাষ্ট্রের আদালতও সৃজনবাদীদের অভিযোগ নাকচ করে দেন:
বিবর্তন যদি ধর্ম অথবা ধর্মীয় বিশ্বাস হয়ে থাকে তবে বিবর্তন তত্ত্বকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ানো থেকে বিরত থাকতে হবে, তাই বলে অন্য কোনো ধর্মকে বিবর্তনবাদের বিরোধিতা করার জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ানো যাবে না। কিন্তু এই ক্ষেত্রে সুষ্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছে এবং কমন সেন্সের মাধ্যমে এটা পরিস্কার যে বিবর্তনতত্ত্ব কোনো ধর্ম নয় বরং এটা একটা প্রতিষ্ঠিত সত্য।এবং তাই স্কুল কলেজে বিবর্তন নিয়ে পাঠদান আইনের কোনো ধারাকে লঙ্ঘন করে না।[৫৯]
এর সাথে সম্পৃক্ত আরেকটা দাবী সৃজনবাদীরা করেন বিবর্তন তত্ত্ব নাস্তিকতা। (দেখুন নাস্তিকতাবাদ); সৃজনবাদীরা কখনো কখনো এই দুইটাকে একত্রিত করে একে "নাস্তিকের ধর্ম" বলেন (cf. humanism).[৬০]
১৯৭৬ সালে দার্শনিক কার্ল পোপার বলেছিলেন "ডারউইনিজম কোনো পরীক্ষণীয় বৈজ্ঞানিক মতবাদ নয়, বরং আধ্যাত্মিক গবেষণার বিষয়।"[৬১] পরবর্তীতে তিনি তার চিন্তাধারা পরিবর্তন করে বলেন ডারউইনের "প্রাকৃতিক নির্বাচনের এই মতবাদ পরীক্ষা করা কঠিন" যেভাবে উচ্চতর বিজ্ঞানের অনেক বিষয় পরীক্ষা করা যায় না।[৬২][৬৩]
চার্লস ডারউইন তার "on the origin of species" এর ৬ নং পরিচ্ছেদে বলেন "যদি এমনটা কখনো দেখা যায় যে প্রকৃতিতে কোনো জীবে জটিল অঙ্গ আছে কিন্তু সেটা অনেকগুলো ধারাবাহিক এবং অল্প অল্প পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে না গিয়ে হটাৎ করেই প্রকৃতিতে বিদ্যমান;তাহলে আমার এই তত্ব অবশ্যই ভেঙ্গে পরবে।"[৬৪]
বিবর্তনকে সমালোচনা করার জন্য অসংখ্য পদ্ধতি সৃজনবাদীরা প্রয়োগ করা শুরু করে।[৪৪] J. B. S. Haldane, when asked what hypothetical evidence could disprove evolution, replied "fossil rabbits in the Precambrian era."[৬৫][৬৬].উদাহরণস্বরুপ, মানুষের কাছে এক জোড়া ক্রোমোজোম কম আছে হোমিনিড গোত্রের বাকি সদস্যের তুলনায়। তখন একটা থিওরী বিবর্তনবাদের পক্ষের মানুষরা প্রয়োগ করলেন। তারা বললেন, হয় ফিউশনের ফলে দুইটা ক্রোমোজোম জোড়া লেগে গেছে বা একটি ক্রোমোজোম নষ্ট হয়ে গেছে। কিন্তু তা প্রমাণসাপেক্ষ ছিল না। কিন্তু ২০০৫ সালে ফিউশন তত্ত্ব প্রমাণিত হল ২ নং ক্রোমোজোম (মানবদেহ) এর র্বিন্যাস পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে। যেখানে দেখা গেল দুটি ক্রোমোজোমের ফিউশনের ফলেই একটি ক্রোমোজোম তৈরী হয়েছে। যা অন্যান্য প্রাইমেটে আলাদা। মানুষের ২ নং ক্রোমোজোমে ফিউশনের ফলাফল হিসেবে অতিরিক্ত নিষ্ক্রিয় টেলোমিয়ার এবংসেন্ট্রোমিয়ার আছে।[৬৭] সৃজনবাদীরা একটা দাবী করেছিল এইরকম যে যদি সত্যি সত্যি হোমো সেপিয়েন্সের পুর্বপুরুষ থাকে তাহলে ডিএনএ সিকুয়েন্স মডেল আবিষ্কারের পর দেখা যাবে মানুষের সাথে শিম্পাঞ্জী, এবং অন্যান্য প্রজাতির বনমানুষে বেশি মিল থাকবে। যদি মিল না থাকে তাহলে বুঝা যাবে সকল হোমিনিডের পুর্বপুরুষ একই নয়। পরবর্তীতে ডিএনএ এর বিন্যাস আমাদের দেখায় যে,মানুষের সাথে শিম্পাঞ্জীর ডিএনএ এর অনেক মিল রয়েছে(প্রায় ৯৫ থেকে ৯৮%)।[৬৮] হোমিনিড গোত্রের প্রচুর সংখ্যক মধ্যবর্তী ফসিল পাওয়া গিয়েছে[৬৯] এইভাবেই মানুষের বিবর্তন হয়েছে কি না এই প্রশ্নে শেষ পেরেকটি ঠুকে দেওয়া হয়।
সৃষ্টিবাদীদের একটা সাধারণ দাবী হল বিবর্তন কখনোই পর্যবেক্ষণ যোগ্য নয়।[৭০] এই বিষয়ে তাদের মতামত হলো কীভাবে বুঝব এটা বিবর্তনের ফলে হচ্ছে? (see the Defining evolution section above)। বিবর্তন যে ঘটছে এটা পর্যবেক্ষণ করা খুবই সহজ ব্যাপার। জনসংখ্যার ক্ষেত্রে জীনের গঠন উত্তরাধিকার থেকে উত্তরাধিকারে পরিবর্তন হয়। ফলের মাছি, ইদুর, এবং ব্যাকটেরিয়ার ক্ষেত্রে পরীক্ষাগারে [৭১] ও টিলাপিয়ার ক্ষেত্রে তার নিজস্ব বিচরণক্ষত্রে সরাসরী বিবর্তন পর্যবেক্ষিত হয়। পর্যবেক্ষণলব্ধ বিবর্তন এর পাঠ সুনির্দিষ্টভাবে ক্ষুদ্রতর জীব বিশেষত এন্টিবায়োটিক প্রতিরোধের এর মাধ্যমে নতুন নতুন উদাহরণ হাজির করে দেখাচ্ছে কীভাবে বিবর্তন হচ্ছে।[৭১][৭২]
এইসব ব্যাপক উদাহরণ দেখে সৃজনবাদীরা বলতে শুরু করেন, তাদের সকল আপত্তি শুধুমাত্র ম্যাক্রো ইভ্যুলেশনের ক্ষেত্রে, মাইক্রোইভ্যুলেশনের ক্ষেত্রে নয়।(অর্থাৎ এর মাধ্যমে মাইক্রো ইভুলেশন যে হচ্ছে সেটা তারা মেনে নেন)[৭৩][৭৪] বিভিন্ন সৃষ্টিবাদীদের সংগঠনগুলো বিবর্তনের ছোট ছোট উদাহরণের সাথে সম্পর্ক যেমন কুকুরের প্রজনন এর মত উদাহরণ গুলোর বিরুদ্ধে নীরব থাকে। এগুলো কেন হচ্ছে সেগুলো নিয়ে তাদের কোনো যুক্তিও নেই, তাদের সকল সমস্যা এবং আপত্তি ম্যাক্রো অর্থাৎ বড় বড় পরিবর্তন অর্থাৎ যেগুলো হতে বেশি সময় লাগে সেগুলো নিয়ে। কারণ সেগুলো সরাসরি পর্যবেক্ষণ করা যায় না। এগুলো শুধুমাত্র মাইক্রো বিবর্তনের প্রক্রিয়া থেকে অনুমান করা যায়, এবং ম্যাক্রো বিবর্তনের ফলে যেসব চিহ্ন রেখে যায় সেখান থেকে বুঝতে পারা যায়।
যাইহোক জীববিজ্ঞানীরা বলেন ম্যাক্রো এবং মাইক্রো উভয় বিবর্তনই পর্যবেক্ষণ লব্ধ।[৭৫][৭৬] উদাহরণস্বরূপ প্রজাত্যায়নকে, সরাসরি পর্যবেক্ষণ করা যায়।[৭৭] একইসাথে নব্য বিবর্তনীয় সংশ্লেষণবাদ ম্যাক্রো এবং মাইক্রো উভয় বিবর্তন পর্যবেক্ষণ করতে সহায়তা করে।[৪৪][৭৮] এর উদাহরণ হল চক্র প্রজাতি.
অতীতে ম্যাক্রো বিবর্তন অনুমান করা হত যেসব ঐতিহাসিক চিহ্ন জীবদেহে বিদ্যমান থাকত,তা দেখে। মধ্যবর্তী জীবাশ্ম যেগুলোকেও ঐতিহাসিক চিহ্ন বলে ধরা হত, যা দুই প্রজাতির জীবের মধ্যে সংযোগ ঘটাত, এরকম ফসিল হল আর্কিওপ্টেরিক্স যা সংযোগ ঘটিয়েছে পাখি এবং ডাইনোসর এর মধ্যে।[৭৯] অথবা সাম্প্রতিক আবিষ্কৃত Tiktaalik যা সংযোজন ঘটয়েছে পাখি এবং উভচর প্রাণীর মধ্যে।[৮০] সৃজনবাদীরা এইসব উদাহরণকে বাতিল করে দেন,তারা বলেন এগুলো মধ্যবর্তী ফসিল নয়,চেষ্টাচরিত্র করে যে কোনো একটা গ্রুপে এগুলোকে ফেলা যাবে। তারা বলেন মধ্যবর্তী ফসিল অনেকগুলো পাওয়া যাওয়ার কথা,কিন্তু তা পাওয়া যায় নি।[৮১] ডারউইন বুঝেছিলেন মধ্যবর্তী ফসিলের অভাবই তার তত্বের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা।
Why then is not every geological formation and every stratum full of such intermediate links? Geology assuredly does not reveal any such finely graduated organic chain; and this, perhaps, is the most obvious and gravest objection which can be urged against my theory. The explanation lies, as I believe, in the extreme imperfection of the geological record.
ডারউইম আপীল করেন Darwin appealed to the limited collections then available, the extreme lengths of time involved, and different rates of change with some living species differing very little from fossils of the Silurian period. এর পরবর্তী সংস্করণে তিনি বলেন "that the periods during which species have been undergoing modification, though very long as measured by years, have probably been short in comparison with the periods during which these same species remained without undergoing any change."[৮২] ডারউইনের সেই দিনের অনেক পরিবর্তন ঘটেছে। পাওয়া গিয়েছে মধ্যবর্তী অসংখ্য ফসিল। এবং এই জাতীয় সমস্যার সমাধান করা হয়েছে punctuated equilibrium নামক নতুন থিওরী দ্বারা। which predicts a primarily stable fossil record broken up by occasional major speciations.[৮৩][৮৪]
যেহেতু অনেক মধ্যবর্তী ফসিলের সরাসরি উদাহরণ পাওয়া গিয়েছে, সৃজনবাদীরা তাদের চিন্তাভাবনার সংস্করণ করে, তৈরী করে "created kinds," রবং নতুন নাটকের প্রদর্শন করে। তারা বলতে থাকে এইসব ঘটনা যে আদৌ ঘটেছে সেটা কে দেখেছে? [৮৫] একটা ইশতেহার অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠেyoung Earth creationist Ken Hamএর দ্বারা:"তুমি কী সেখানে ছিলে?" তারা বলতে থাকেন যেহেতু ঈশ্বর ছাড়া আর কেওই এইসব ঘটনা কে স্পষ্টভাবে দেখেনি,তাই বৈজ্ঞানিক দাবীগুলো ফটকাবাজি অথবা নিছক গল্প।[৮৬][৮৭] জীবের genomes এর ডিএনএর সিকুয়েন্স থেকে একটি স্বাধীন পরীক্ষা করা হয়, অন্যান্য জীবের মধ্যে আন্তঃসম্পর্কের যে ভবিষ্যতবাণী করা হয়েছিল তা সঠিক কিনা সেটা জানার জন্য। সেই পরীক্ষার ফলাফল দেখায় প্রত্যকের মধ্যে আন্তঃসংযোগ আছে। অর্থাৎ আছে স্বাধীন পুর্বপুরুষ।[৮৮][৮৯]
কিছু কিছু ক্ষেত্র যেমন নভোবিজ্ঞান অথবা আবহাওয়া বিজ্ঞান এর ক্ষেত্রে সরাসরি পর্যবেক্ষণ অথবা ল্যাবে পরীক্ষণ কঠিন, এমনকি কখনো কখনো অসম্ভবও। বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়াগুলো তারপরেও নির্ভর করে পর্যবেক্ষণ ও যৌক্তিক অনুমানের উপরে।এইসব ক্ষেত্রে সততার সাথে করা পর্যবেক্ষণ থেকে নতুন থিওরীর জন্ম হয়, এবং এ থিওরী ব্যবহৃত হয় নতুন অবসারভেশনের ফলে যে ফলাফল আসবে তার ভবিষ্যত বাণীতে। যদি নতুন পর্যবেক্ষণ থিওরীর ভবিষ্যত বানীর সাথে কোনোরুপ সংঘর্ষ করে, তাহলে সেই থিওরীকে পুনর্বার বিশ্লেষণ করা হয়,অথবা বাদ দিয়ে সেখানে নতুন থিওরীর আবির্ভাব ঘটে যদি এর চাইতে ভাল বিকল্প থিওরী থাকে যা নতুন পর্যবেক্ষণ কে ব্যাখ্যা করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ নিউটনের মহাকর্ষ সুত্র প্রতিস্থাপিত হয়েছিল আলবার্ট আইনস্টাইন এর সাধারণ আপেক্ষিকতাবাদ দ্বারা.[৯০]
একটা প্রাসঙ্গিক আপত্তি বিবর্তনের বিরুদ্ধে হচ্ছে বিবর্তন অনির্ভরযোগ্য প্রমাণের উপর প্রতিষ্ঠিত। বিতর্কের সারমর্ম হল বিবর্তন প্রমাণিত নয়। এমনকি এর বিরুদ্ধে উল্লেখযোগ্য প্রমাণও পাওয়া যায় না।তার সাথে সাথে বলা হয় বিবর্তনের আগাগোড়া পুরোটাই ধাপ্পাবাজি আর মিথ্যাচারে ভরপুর।
এবার বিতর্ক সক্রিয় হয় বিবর্তনের নির্ভরযোগ্যতার বিরুদ্ধে, সৃষ্টিবাদীরা বলতে থাকেন অতীতেও গুরুত্বপূর্ণ scientific revolutions(বৈজ্ঞানিক বৈপ্লবিক তত্ব) গুলো মিথ্যা হয়ে গেছে। যদিও প্রাথমিকভাবে সেগুলোকে প্রায় নিশ্চিত বলে ধরা হত। তারা এইরুপে দাবী করতে থাকে সাম্প্রতিক সময়ের বিবর্তনবাদ বিপ্লব ঘটিয়ে দিবে ভবিষ্যতে একটাই বিষয়ের উপর নির্ভর করে। আর সে বিষয়টা হল "বিপদের সময়ের তত্ব"(সৃষ্টিবাদের বিকল্প বুঝাতে এই বাক্য ব্যবহার করা হয়েছে) [৯২]
সমালোচকরা বিতর্কের জন্য হাজির করেন বিজ্ঞানের ইতিহাসে ধাপ্পাবাজি Piltdown Man(পিল্টডাউন মানবকে) এক প্রকার জালিয়াতি। তারা বলতে থাকেন যেহেতু অতীতে বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গী থাকার কারণে বিবর্তনের উপর প্রমাণ নিয়ে বিজ্ঞানীরা ভুল করেছেন এবং কতিপয় গণ জালিয়াতি করেছেন, একইভাবে সাম্প্রতিককালের বিবর্তনও মিথ্যাচার ও ধাপ্পাবাজির উপর প্রতিষ্ঠিত। বিবর্তনের অনেকপ্রমাণই অভিযুক্ত হয়েছে বিভিন্ন সময়ে ও এগুলো প্রতারণাপুর্ণ। তারা এই ব্যাপারে অন্তর্ভুক্ত করেন Archaeopteryx, peppered moth melanism, and Darwin's finchesকে। এইসব দাবীগুলো পরবর্তীতে যুক্তি দিয়ে খণ্ডন করা হয়।[৯৩][৯৪][৯৫][৯৬]
এটাও দাবী করা হয় যে বিবর্তনের যে সব টুকরো প্রমাণ পাওয়া গেছে তা হল ভ্রান্ত এবং অকেজো, Ernst Haeckel' এর মত। যিনি ১৯ শতকে ভ্রূণদ্বয়ের মধ্যে তুলনামুলক চিত্র একেছিলেন যা recapitulation theory নামে পরিচিতি পায়। ("ontogeny recapitulates phylogeny"), যেটা শুধুমাত্র ভুলই ছিল না বরং ধোকাবাজিও ছিল।[৯৭] Molecular biologist Jonathan Wells সমালোচনা করেন জীববিজ্ঞান পাঠ্যবইয়ের,অভিযোগ করেন যে তারা এমন কিছু প্রমাণের ভিত্তিতে বিবর্তন বাদ চাপিয়ে দিতে চাইছে শিক্ষার্থী দের উপর যেসব প্রমাণ ভিত্তিহীন বলে প্রমাণিত।(হেকেলের ধারণাকেই তিনি জনসম্মুখে হাজির করেন) [৯৫] এর প্রতিবাদে National Center for Science Education বলেন কোনো বইই যে ওয়ালস রিভিউ করে নাই এটা হল তার প্রমাণ। রিভিউ করলেই সে বুঝত তার এই দাবীটা মিথ্যা। হ্যাকেলের ড্রইং একটা ঐতিহাসিক পাঠ, এই বিষয়টা নিয়ে পাঠ্যপুস্তকে আলোচনা করা হয়েছে কেন তার চিত্রাংকন ভুল ছিল সেই বিষয়ে, সঠিক এবং সাম্প্রতিক হালনাগাদ হওয়া চিত্রই পাঠ্যপুস্তকে তুলে ধরা হয়েছে। অথচ এটা ভুলভাবে উপস্থাপিত হয়েছে ওয়ালের দ্বারা [৯৮]
সৃজনবাদীরা দাবী করেন যে বিবর্তনবাদ অনিশ্চয়তা নীতির ওপর নির্ভর করে। এবং অতীত সম্বন্ধে কোনো তথ্য দিতে পারে না। উদাহরণস্বরুপ পদার্থের বয়স নির্ধারণের জন্য যে radioactive decay র উপর নির্ভর করা হয় তা সম্পূর্ণভাবে অবিশ্বস্ত। Radiocarbon dating নির্ভর করে carbon-14 র আইসোটোপের উপর। আইসোটোপ থেকে নির্ধারিত এই ফলাফল সম্পূর্ণভাবে সমালোচিত হয়।প্রথমদিকে এটা এত বেশি সমালোচিত হতে যে সমালোচকরা বলতে শুরু করে যে এটা সম্পূর্ণভাবে অন্যায্য অনুমানের নীতি uniformitarianismর উপর অবস্থিত। পাথরের ক্ষয়ের হার থেকে বয়স নির্ধারণ করা পাথরটা closed system হিসেবে কাজ করে। এইরুপ তর্কবিতর্কের নিষ্পত্তি ঘটে বিজ্ঞানীদের দ্বারা যখন স্বাধীনভাবে করা অন্যান্য গবেষণায় এবং ভিন্ন পদ্ধতিতে পাথরের বয়স নির্ধারণ করতে গেলে সবগুলার ফলাফল একই আসে।[১০০] একইরকম অভিযোগ আছে জীবাশ্মকে ঘিরে। অভিযোগ করা হয় জীবাশ্মের প্রমাণ নির্ভরযোগ্য নয়। অভিযোগ করা হয় ফসিল রেকর্ডে বিশাল গ্যাপ আছে।[১০১][১০২] that fossil-dating is circular (see the Unfalsifiability section above), or that certain fossils, such as polystrate fossils, are seemingly "out of place." Examination by geologists have found polystrate fossils to be consistent with in situ formation.[১০৩] অনেকসময় এটাও অভিযোগ করা হয় বিবর্তনবাদের কিছু বৈশিষ্ট্য catastrophism দের (cf. নুহের প্লাবন)কে সমর্থন করে। কিন্তু বিবর্তনবাদের gradualistic punctuated equilibrium কে সমর্থন করে না।[১০৪] যদিও এটাই ব্যাখ্যা করে কেন ফসিলের মধ্যে এত গ্যাপ আছে।[১০৫]
কিছু প্রাচীন এবং জনপ্রিয় অভিযোগ বিবর্তনের বিরুদ্ধে আছে, যেমনঃ-বিবর্তন প্রকৃতিতে বিদ্যমান এই জটিলতা ব্যাখ্যা করতে পারে কি না, বলা হয় বিবর্তন কখনো এই প্রাণের বৈচিত্র্যতা ব্যাখ্যা করতে পারে না,অর্থাৎ কোনো এক বুদ্ধিমান সত্তা এই সব কিছুকে নিয়ন্ত্রণ করছে, Abrahamic religions(আব্রাহামিক ধর্মানুসারে) হয়ত বা কোনো ঈশ্বর।
একটা প্রচলিত আপত্তি বিবর্তন বিরোধীদের দেখা যায়,বলা হয়: জীবন এর এই নীলনকশা যা বৈচিত্র্যতায় ভরপুর তা কী ভাগ্যের ফেরে তৈরী হয়ে গেছে? তারা বলেন, জীবনের এই বৈচিত্র্যতা কোনো বুদ্ধিমান সত্তার ইচ্ছানুসারে পরিচালনা হওয়া ছাড়া আর কোনোভাবে হতে পারে না, এবং এর সম্ভাবনাও অনেক কম। আর সবকিছুর পেছনে যেহেতু কারণ থাকে, অতএব এই মহাবিশ্ব তৈরি হওয়ার পেছনেও কারণ আছে। আর ঈশ্বরই হলেন সেই আদি কারণ। তার ইচ্ছানুসারেই এই জীববৈচিত্র্য তৈরী হয়েছে।[১০৬] তারা আরো এক কাঠি সরেস হয়ে বলেন বিবর্তন কখনো জটিল কাঠামো গঠন করতে পারে না। (দেখুন Creation of complex structures). এইধারণা অনুসারে বিবর্তনের মাধ্যমে জীবন গঠিত হওয়া ততটাই অসম্ভব যতটা অসম্ভব "সামুদ্রিক ঝড়ের মাধ্যমে এলোমেলো ধাক্কায় Boeing 747 টাইপ কোনো বিমান গঠিত হওয়া।"এ দাবীটা প্রথম করেছিলেন জ্যোতিঃবিজ্ঞানী Fred Hoyle। এই দাবীটা জনপরিচিতি পায় হয়েলের fallacy নামে।[১০৭] হয়েল একজন ডারউইনিস্ট ছিলেন, ছিলেন নাস্তিক এবং বিশ্বাস বিরোধী, কিন্তু তিনি এক হাইপোথিসের জন্ম দেন যার নাম panspermia, যেখানে বলা হয় প্রাণের প্রথম সূচনা হয়েছে outer space এ, এবং প্রাকৃতিক নানা ঘটনা যেমন ধূমকেতু, উল্কা, গ্রহাণুর মাধ্যমে প্রাথমিক জীবন তৈরী হওয়ার প্রয়োজনীয় বস্তু পৃথিবীতে এসে পৌঁছেছে। হয়েলের এই যুক্তির সাথে সৃজনবাদীদের ধারণার সাথে পুরোপুরি না মিললেও কিছুটা মিলে যায়, সৃজনবাদীদের যুক্তির মুল ধারণা হল একজন ঈশ্বর হচ্ছেন পরম কারণ,যার সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্য আছে এই মহাবিশ্ব তৈরীর পিছনে। এই দাবীর পিছনে তারা ১৮ শতকের বহুল প্রচলিত যুক্তি দার্শনিক উইলিয়াম প্যালের ঘড়ি নির্মাতার উপমা ব্যবহার করে, তারা বলে একটা ঘড়ির যে জটিল কলকব্জা আছে তা এমনি এমনি তৈরী হতে পারে না,এর পিছনে ঘড়ি নির্মাতার সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্য থাকে,এর ফলেই এত জটিল একটা যন্ত্র তৈরী হয়। একইভাবে এই মহাবিশ্বের এই সীমাহীন জটিলতা দেখে বুঝা যায় কোনোভাবেই এই মহাবিশ্ব কোনো কারণ বা উদ্দেশ্য বিহীনভাবে তৈরি হয় নাই। এর পিছনেও ইন্টেলিজেন্ট এজেন্টের হাত আছে।ইন্টেলিজেন্ট ডিজাইনের এই দাবী নব্য সৃজনবাদের প্রাণকেন্দ্র হয়ে উঠে। এর মাধ্যমে সৃজনবাদীরা তাদের এই মতবাদকে নিছক দর্শন আর বিশ্বাস থেকে উপরের স্তরে নিয়ে গিয়ে বৈজ্ঞানিক মতবাদ বলে আখ্যায়িত করে। এবং একে বিবর্তনের পাশাপাশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ানোর দাবী জানায় [২৬][৪৯]
জ্ঞানের অভাব থাকায় এই ধরনের বিতর্ক করা যায়, বিবর্তনবাদের সমর্থকরা সাধারণত বলে থাকেন বিবর্তন কেবল চান্সের খেলা নয়, বরং এটা একপ্রকার রাসায়নিক বিক্রিয়া, প্রাকৃতিক ঘটনা। এটাই যুক্তিযুক্ত অলৌকিক ঈশ্বর থাকার তুলনায়। মুলত প্রাকৃতিক নির্বাচনের এই বাছাই পর্ব চলেছে জীনগত ভাবে, প্রকৃতির সাথে তাল মিলানোর জন্য জীনের পরিবর্তনই বিবর্তনের গতি নির্ধারণ করেছে। বাস্তবতা হল সৃজনবাদীরা ইন্টেলিজেন্ট এজেন্টের কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেন না। দেখাতে পারেন না এই জটিল মহাবিশ্ব তৈরীর পিছনে যে জটিল সত্তা আছে তার বাস্তব প্রমাণ।[১০৯] It is also argued that there is insufficient evidence to make statements about the plausibility or implausibility of abiogenesis, that certain structures demonstrate poor design, and that the implausibility of life evolving exactly as it did is no more evidence for an intelligence than the implausibility of a deck of cards being shuffled and dealt in a certain random order.[৪৯][১০৮]
এটা উল্লেখযোগ্য প্রথম জীবনের উদ্ভব হওয়া যাকে abiogenesis বলা হয়, তা বিবর্তনের অংশ নয়, তাই চান্সের ফলে প্রথম প্রাণের সূচনা নিয়ে যে বিতর্ক আছে তা উদ্ভব বিজ্ঞান এর অন্তর্ভুক্ত, বিবর্তনের নয়। প্রকৃতপক্ষে বিবর্তন নিয়ে মানুষ যে ভুল ধারণার স্বীকা র হয় তা হল তারা উদ্ভব বিজ্ঞানের সাথে বিবর্তনকে গুলিয়ে ফেলে এবং ভাবে বিবর্তন এবায়োজেনেসিসের উপাদান অথবা এবায়োজেনেসিস বিবর্তনের পূর্বসূরি। কখনো কখনো এরা বিবর্তনের সাথে বিগ ব্যাং কেও মিলিয়ে ফেলে।[৩১]
জৈবরসায়নবিদ মাইকেল বেহে বলেন, সাম্প্রতিক সময়ের বিবর্তনবাদ সৃষ্টির জটিল গঠন ব্যাখ্যা করতে পারে না, বিশেষ করে মাইক্রোবায়োলজিতো পারেই না। এর উপর ভিত্তি করে তিনি বলেন " এই জটিল গঠনগুলো বুদ্ধিমান সত্তা দ্বারা তৈরী।."[১১০]
পরবর্তীতে সমালোচক রা বিভিন্ন দাবী করত থাকেন বিবর্তন consciousness, hominid intelligence, instincts, emoions, metamorphosis, photosynthesis, homosexuality, music, language, religion, morality, and altruism(see altruism in animals) এইসব বিষয় গুলো ব্যাখ্যা করতে পাের না।[১১১] যদিও বিবর্তনের সাহায্যে এর অনেকগুলোই বিশেষ করে hominid intelligence, instinct, emotion, photosynthesis, language, and altruism, বেশ ভালোভাবেই ব্যাখ্যা করা যায় । বিবর্তনের সমর্থকরা দাবী করেন অন্য কোনো বিকল্প মতবাদ দিয়ে জীববিজ্ঞানের এতগুলো ঘটনাকে ব্যাখ্যা করা যায় না।[১১২]
সৃজনবাদীরা বিবর্তনের বিরুদ্ধে আরেকটা ভিত্তির উপর দাড়িয়ে দ্বিমত পোষণ করেন, তা হল বিবর্তন নিশ্চিত ভাবে অবিবর্তনীয় প্রক্রিয়া যেমন abiogenesis, Big Bang, অথবা meaning of life কে ব্যাখ্যা করতে পারে না। এই সব উদাহরণ কে সামনে রেখে বলা হলবিবর্তনকে' পুন:সংজ্ঞায়িত করে নির্দেশ করতে হবে পুরো মহাবিশ্বেরগঠন সম্বন্ধে। যদি বিজ্ঞানের অন্য কোনো থিওরী মহাবিশ্বের বিবর্তনেরসাথে না মিলে তাহলে বিজ্ঞানের সকল তত্ত্ব ভেঙে পরবে। এই কারণেই বিবর্তনের জীববিজ্ঞানের ক্ষেত্র ছেড়ে চলে যাওয়া উচিত, এবংদার্শনিকের বিতর্কের একটা বিষয় হওয়া উচিত।[১১৩]
জ্যোতির্বিজ্ঞানী Fred Hoyle (ফ্রেড হয়েল) এবং Chandra Wickramasinghe cosmic ancestry এর মাধ্যমে এসকল যুক্তিকে খণ্ডন করেন[১১৪][১১৫][১১৬][১১৭][১১৮][১১৯].[১২০][১২১]
পুর্বের তুলনায় বিবর্তন বিরোধিতা আরো বেশি বেড়ে যায়, দাবী করা হয় বিবর্তন শুধু অবৈজ্ঞানিকই নয় অকল্পনীয় এবং এটা অসম্ভব, কারণ এটা প্রাকৃতিক নিয়মের সাথে সাংঘর্ষিক এবং এটা পৃথিবীতে বিদ্যমান জীববৈচিত্র্য তৈরী করতে পারবে না।
ত্রুটি: কোন উদ্ধৃতি লেখা হয়নি (বা একটি নামহীন প্যারামিটারে প্রকৃত লেখায় সমান চিহ্ন ব্যবহৃত হয়েছে)
নব্য বিবর্তনীয় তত্ত্ব অনুসারে, প্রাকৃতিক নির্বাচন এবং জিন প্রবাহের যুগপৎ ক্রিয়ার মাধ্যমে সমগ্র জৈবিক ব্যবস্থা ধীরে ধীরে বিবর্তিত হয়। উইলিয়াম প্যালের কাছে চোখের মত অঙ্গ ঈশ্বরের নকশা বলে মনে হয়েছে। আর তার মত সৃষ্টিবাদীরা অনুমান করেছেন চোখের বিবর্তন এবং অন্যান্য জটিল অঙ্গের বিবর্তন সম্পূর্ণভাবে অসম্ভব। ডারউইন বলেছেন:
যদি আমরা জটিল এবং আপাত নিঁখুত চোখ থেকে অনেক পূর্বের সরল এবং অনিঁখুত একটি চোখের ধাপগুলোকে ধাপে ধাপে সাজাই, তাহলে আমরা দেখব প্রতিটা পর্যায় তার মালিকের কাছে সমানভাবে প্রয়োজনীয়। এই ধাপে ধাপে চোখের বিবর্তনের সময়ে যদি একটুও এদিক সেদিক হত এবং এই পরিবর্তিত প্রকরণ যদি জীবকে সুবিধা দিত ও উত্তরাধিকার সুত্রে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে প্রকরণ বাহিত হওয়ার দরুণ প্রাকৃতিক নির্বাচনের কারণে জটিল এবং নিখুত চোখ তবুও সৃষ্টি হত। যদিও এটি বিশ্বাস করা কঠিন কিন্তু এমনটাই বাস্তবতা।[১২২]
একইভাবে ethologist and বিবর্তনীয় জীববিজ্ঞানী রিচার্ড ডকিন্স পালকএর বিবর্তনের বিষয়ে The Atheism Tapes নামক এক সাক্ষাৎকারে বলতে গিয়ে বলেন
সরীসৃপের আঁইশ থেকে পাখির পালকের বিবর্তনের বহুধা বিস্তৃত ক্রমপর্যায় আছে [অর্থাৎ, সরীসৃপের আঁইশ থেকে হঠাৎ করে পাখির পালক তৈরী হয় নি, অনেকগুলো ধাপ পার হয়ে এসেছে] এবং প্রতিটা ক্রম প্রজাত্যায়নের সময় প্রজাতিকে সুবিধা দিয়েছে। যদি কেও একজন এই ক্রমপর্যায়গুলো ভাবতে না পারে, তবে সেটা তার সমস্যা, প্রাকৃতিক নির্বাচনের নয়। সরীসৃপের আঁইশ; যা তার জন্য অন্তরক হিসেবে কাজ করত সেই আঁইশ বিবর্তিত হয়ে ফুয়োফুয়ো পাখির পালকে রূপান্তরিত হয়। পালকের প্রথমদিককার অবস্থা আইশ সরীসৃপকে উষ্ণ রাখত। অর্থাৎ এখন পালকের যে কাজ, পূর্বে তার কাজ সম্পূর্ণ ভিন্ন ছিল।
বিবর্তনের প্রাথমিক ধারণামতে সরল অঙ্গ থেকে জটিল অঙ্গ রুপান্তরিত হয়েছে, তাই বিবর্তন বিরোধীরা ভেবেছেন জটিল বা বহুকোষী অঙ্গ যেমন চোখ বা পাখির ডানার মত অঙ্গগুলো সম্পূর্ণভাবে এপর্যায়ে আসার পূর্বে তা অসম্পূর্ণ বা অর্ধেক ছিল, এবং এ অসম্পূর্ণ অঙ্গের অধিকারীরা প্রকৃতিতে টিকে ছিল। এবিষয়টিকে মাথায় রেখে বিবর্তন বিরোধীদের প্রশ্ন অনেকটা এইরকম "কী দরকার একটা অর্ধেক চোখ দিয়ে?" অথবা "কী দরকার অর্ধেক ডানার?"[১২৩] প্রাকৃতিক ভাবেই চোখের বিবর্তন এবং অন্যান্য জটিল অঙ্গের বিবর্তন সম্ভব তা গবেষকরা সুনিশ্চিত করেছেন।[১২৪][১২৫] সৃজনবাদীরা কোনো নকশাকারী ছাড়া এইধরনের জটিল গঠনের বিবর্তন হওয়া অসম্ভব এধরনের যুক্তিতে অনড় থাকেন। এরকম অবস্থায় সাম্প্রতিক সময়ে তাদের দাবী নতুন মোড়ে বাক নেয়; যখন মাইকেল বেহে অহ্রাসযোগ্য জটিলতা নামক ধারণাকে ব্যবহার করে সৃজনবাদী আন্দোলনে ভিন্ন মাত্রা যুক্ত করেন।[২৬] জৈবরসায়নবিদ মাইকেল বেহের মতে সাম্প্রতিক সময়ের বিবর্তন তত্ত্ব বিশেষত অনুজীব পর্যায়ে জটিল গঠনকে ব্যাখ্যা করতে পারে না। এই যুক্তি অনুযায়ী কোনো "বুদ্ধিমান সত্তা দ্বারা উদ্দেশ্যপূর্ণভাবে" এই ধরনের জটিল গঠন নির্মিত হয়েছে।[১১০]
অহ্রাসযোগ্য জটিলতা এমন একটা ধারণা, যেখানে বলা হয় প্রাকৃতিকভাবে সরল প্রাণ থেকে জটিল প্রাণ বিবর্তিত হয়ে আসতে পারে না। কীভাবে বৃহত্তম প্রত্যঙ্গগুলো বিবর্তিত হলো এনিয়ে বিবর্তনবিরোধী বিতর্ক প্রথমদিকে চলমান ছিল। কিন্তু বেহের অহ্রাসযোগ্য জটিলতা ধারণার মাধ্যমে তিনি কোষীয় এবং জৈবরাসায়নিক পর্যায়েও বিবর্তনের অসারতা প্রমাণের উদ্দেশ্যে নানাবিধ যুক্তি উত্থাপন করতে শুরু করেন। যেমন তিনি রক্ততঞ্চন, প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, এবং ব্যাকটেরিয়ার ফ্লাজেলাম নিয়ে বলতে গিয়ে বলেন, এগুলো এতটাই জটিল এবং একে অপরের উপর এমনভাবে নির্ভরশীল যে তারা কখনোই সহজ সরল ব্যবস্থা থেকে নিজে নিজে বিবর্তিত হয়ে আসতে পারে না।[১২৬]
ত্রুটি: কোন উদ্ধৃতি লেখা হয়নি (বা একটি নামহীন প্যারামিটারে প্রকৃত লেখায় সমান চিহ্ন ব্যবহৃত হয়েছে)
বেহে যে বছর অহ্রাসযোগ্য জটিলতা বিষয়ক ধারণা প্রস্তাব করেন, সেই বছরই জীববিজ্ঞানে নব নব উন্নয়ন ঘটার দরুণ ফ্লাজেলার বিবর্তন কীভাবে হয়েছে বিজ্ঞানীরা তা আরো নিবিড়ভাবে বুঝতে শুরু করেন।[১২৭] যার ফলে বেহের যুক্তি স্বাভাবিকভাবেই খণ্ডিত হয়ে যায়।[১২৮][১২৯] অহ্রাসযোগ্য জটিলতার মুল ধারণা হচ্ছে সরল অবস্থা থেকে জটিল অবস্থা বিবর্তনীয় পথপরিক্রমায় আসতে পারে না, কিন্তু যুক্তি এগজাপশনের (পূর্বোক্ত প্রজাতির পুরাতন অঙ্গ বিবর্তনের মাধ্যমে উত্তর প্রজাতিতে এমনভাবে অভিযোজিত হয়, যা সম্পূর্ণ নতুন ধরনের কাজ করে) মত বিবর্তনীয় কলাকৌশল ও "ভারার" ব্যবহারের মাধ্যমে পরাস্ত হয়। এখানে ভারা বলতে বুঝানো হয়েছে, কোনো প্রত্যঙ্গের এমন কোনো বৈশিষ্ট্য যা হয়তো পূর্বে সেই জীবের জন্য প্রয়োজনীয় ছিল, কিন্তু পরবর্তীকালে বিবর্তনের কালচক্রে সেই বৈশিষ্ট্যের প্রয়োজনীয়তা ফুরিয়ে যাওয়ায় প্রত্যঙ্গটি উক্ত কাজ করা থেকে নিবৃত্ত হয়।[১৩০] বেহে অহ্রাসযোগ্য জটিলতা নিয়ে যত প্রকার উদাহরণ ব্যবহার করেছেন, তার প্রতিটা বিষয় নিয়ে সম্ভাবনাময় বিবর্তনবাদ আলোচনা করেছে এবং সে অবস্থায় কীভাবে বিবর্তন হতে পারে, তা ব্যাখা করার চেষ্টা করেছে।[১২৮][১৩১][১৩২]
অনেক পর্বের প্রাণীদের জীবাশ্ম রেকর্ড থেকে জানা যায়, ক্যাম্ব্রিয়ান বিষ্ফোরণ হয়েছিল, আজ থেকে ৫৪ কোটি ২০ লক্ষ বছর আগে[১৩৩] যার প্রভাবে অনেক পর্বের প্রাণী বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল।[note ১][১৩৪] এর ফলে অন্যান্য জীবে বৈচিত্র্য সৃষ্টি হয়।[note ২] ক্যাম্ব্রিয়ান বিষ্ফোরনের পূর্বে বেশিরভাগ জীব সরল ছিল; কলোনি গঠন করে থাকত। অর্ডার অব ম্যাগনিটিউড দ্বারা ৭ থেকে ৮ কোটি বছর ধরে এই বৈচিত্র্য চলতে থাকে।[note ৩] আজকের জীবজগতে যে বৈচিত্র্য দেখা যায়, তার সুচনা ক্যাম্ব্রিয়ান বিষ্ফোরণের পরেই শুরু হয়েছিল।[১৩৭][১৩৮]
মুল সমস্যাটা হলো প্রাকৃতিক নির্বাচন ধীরগতিতে হয়; যেখানে একটি পর্ব তৈরী হতে একটি শ্রেণী তৈরীর চেয়ে বেশি সময় লাগে, একটি শ্রেণি তৈরী হতে একটি বর্গ তৈরীর চেয়ে বেশি সময় লাগে, একটি বর্গ তৈরী হতে একটি গোত্র তৈরীর চেয়ে বেশি সময় লাগে, একটি গোত্র তৈরী হতে একটি গণ তৈরীর চেয়ে বেশি সময় লাগে, একটি গণ তৈরী হতে একটি প্রজাতি তৈরীর চেয়ে বেশি সময় লাগে। [১৩৯] কিন্তু দেখা যাচ্ছে খুব বেশি সময় ছাড়াই উচ্চতর পর্যায়ের ট্যাক্সা তৈরী হয়ে গিয়েছে। যা থেকে বুঝা যায়, এক্ষেত্রে বিবর্তনীয় কলাকৌশল কিছুটা ভিন্নভাবে কাজ করেছে।[১৪০]
সাধারণ মতে অনেক কারণই ক্যামব্রিয়ান বিস্ফোরণ শুরু করতে সাহায্য করেছিল, কিন্তু এই কারণগুলো কীভাবে একত্রে কাজ করেছিল সে বিষয়ে কোন সর্বজন স্বীকৃত মত নেই।[১৪১] কিন্তু এখনও ক্যাম্ব্রিয়ান বিস্ফোরণ একটি বিতর্কের বিষয় হয়েই রয়েছে। এর আপাত ফসিল রেকর্ড সঠিক, তবে কিছু প্রশ্ন, যেমন কেন এটা এত দ্রুত ঘটল, কেন এই পর্ব পর্যায়ে ঘটেছে, কেন তখন এতগুলো পর্ব এতে জড়িত ছিল কিন্তু এরপর একটাও ছিল না-এগুলোর উত্তর খোঁজার জন্য গবেষণা চলছে।[১৪২]
জীববিজ্ঞানী পিযে মায়ার পরিবেশে অক্সিজেন বৃদ্ধির ঘটনাকে সারসংক্ষেপণ করে বলেন:[১৪৩] "পরিবেশগত পরিবর্তনের ফলে, বিশেষ করে বিভিন্ন পতঙ্গের বিবর্তনের ফলে ভূত্বকের বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটছিল এবং সেসব পতঙ্গ পুষ্টিকে মাটিতে প্রোথিত করছিল। পরিবেশে বৃদ্ধি পাচ্ছিল অক্সিজেন; যা সেই পুষ্টিকে জ্বালানি হিসাবে কাজ করছিল;[১৪৪][১৪৫][১৪৬] এর ফলে দূরবর্তী যেসব প্রাণী নতুন করে সৃষ্টি বা বিবর্তিত হচ্ছিল; তাদের বেঁচে থাকার জন্য নতুন পরিবেশ সৃষ্টি হচ্ছিল। সুযোগ হচ্ছিল বাস্তুসংস্থানগত নব নব প্রতিযোগিতার এবং বিবর্তনীয় প্রক্রিয়া বহুকোষী জীবের শেণিবিন্যাসে বিস্তৃতপরিসরে রদবদল ঘটাতে মুখ্য ভূমিকা পালন করছিল।" আণবিক অক্সিজেনের (O2) বৃদ্ধি সুরক্ষিত ওজন স্তর তৈরীতে ভূমিকা রেখেছিল। এই ওজন স্তর (O3) সূর্য থেকে আগত ক্ষতিকর আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মি থেকে রক্ষা পেতে মুখ্য ভূমিকা পালন করে।[১৪৭]
"'প্রসঙ্গতঃ আমাদের শরীরের কোন অংশ কেমন হবে থেকে শুরু করে গায়ের রং কেমন হবে নির্ধারণ করে আমাদের শরীরের DNA এ তে অবস্থিত জীন। তাই এখানে নতুন তথ্য বলতে বুঝানো হয়েছে, জীনে অবস্থিত তথ্যের সংযোজনকেই'" আরেকটা আপত্তি সৃষ্টিবাদীরা করে তা হল বিবর্তনের পরিচালনাকারী mutation কখনোই নতুন information(তথ্যের) জন্ম দিতে পারে না।সৃজনবাদী যেমন William A. Dembski, Werner Gitt, এবং Lee Spetner রা এই ইস্যুতে information theory ব্যবহার করলেন বিবর্তনবাদকে নস্যাৎ করতে। Dembski বলেন জীবন প্রদর্শন করে specified complexity(সুনির্দিষ্ট জটিলতার) এবং বিবর্তন একজন intelligent agent ছাড়া কোনোভাবেই উত্তরাধিকারের জীনে সেইসব নতুন তথ্যের জন্ম দিতে পারে না যেসব তথ্য সুনির্দিষ্ট জটিল অঙ্গ গঠন করে।[১৪৮]
এইদাবী পুরোপুরিই বৈজ্ঞানিকদের সম্প্রদায় দ্বারা বাতিল করা হয়। বিবর্তনের দ্বারা নতুন নতুন তথ্য প্রতিনিয়তই তৈরী হচ্ছে, যখন জীনের ডুপ্লিকেশন বা আদর্শ মিউটেশন ঘটছে। নাটকীয় নতুন উদাহরণ আছেঃ একেবারেই স্বতন্ত্র্য বৈশিষ্ট্যের উদ্ভব ঘটেছে মিউটেশনের দ্বারা, যা সাম্প্রতিক বছরে পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে। বিবর্তনের ফলে nylon-eating bacteria তৈরী করেছে নতুন enzymes যার ফলে পদার্থকে আরো দক্ষতার সাহায্যে সে পরিপাক করতে পারে, এই এনজাইম আগে ছিল না।[১৪৯][১৫০] প্রকৃতপক্ষে একটা জীব পরিবেশের সাথে সংগতি রেখে পরিবর্তিত হবে, এখানে আলাদা কোনো সত্তার প্রয়োজন নেই।মুলত একটা সুনির্দিষ্ট পরিবেশে একটা জীব নিজেকে টিকিয়ে রাখতে কীভাবে সার্ভাইভ করে সেই তথ্যই জীনোমে গঠিত হয়, এখানে তথ্যের সৃষ্টি হয়না, বরং তথ্য সংগৃহীত হয় পরিবেশ থেকে নিজস্ব উপায়ে। মিউটেশনের ফলে অভিযোজিত জীব যদি পরিবেশের সাথে টিকে থাকতে পারে, তাহলে স্বাভাবিক ভাবে বংশবিস্তার করে,অথবা বিলুপ্ত হয়ে যায়।[১৫১]
প্রায় একইরকম বিতর্ক আছে বিবর্তনের বিরুদ্ধে যে প্রায় সকল মিউটেশনই ক্ষতিকর।[১৫২] কিন্তু বেশিরভাগ মিউটেশন হল নিরপেক্ষ মিউটেশন neutral, আর বাকি মিউটেশনগুলো উপকারীও হতে পারে আবার ক্ষতিকারকও হতে পারে, তবে এটা নির্ভর করে পরিবেশের উপর, যে মিউটেশনটা একটা পরিবেশে ক্ষতিকর, সেই একই মিউটেশন অন্য পরিবেশে গিয়ে উপকারীও হতে পারে।[১৫৩]
সৃজনবাদীদের আরেকটা আপত্তি হল বিবর্তনবাদ তাপগতিবিদ্যার দ্বিতীয় সুত্র লঙ্ঘন করে। [১৫৪][১৫৫] এই সূত্র মতে, " সাম্যবস্থা না থাকলে বদ্ধ ব্যবস্থায় এনট্রপি সময়ের সাথে সাথে বাড়তে থাকবে, যতক্ষণ না তাপীয় বিশৃঙ্খলা সর্বোচ্চ অবস্থায় পৌছায়". অন্যকথায় একটি বদ্ধ ব্যবস্থায় এনট্রপি (ভৌত ব্যবস্থায় শক্তি ছড়িয়ে পরার একটি পরিমাপক, এনট্রপি যত বাড়বে যান্ত্রিক কাজ করা তত কঠিন হয়ে পরবে) হয় বাড়বে না হয় স্থিতিশীল থাকবে কিন্তু কমবে না। সৃজনবাদীদের অভিযোগ, বিবর্তনবাদ পদার্থবিজ্ঞানের নিয়ম লঙ্ঘন করছে, কারণ বিবর্তন সংঘটিত হতে হলে সময়ের সাথে সাথে এনট্রপি কমবে, যা অসম্ভব। [১৫৬][১৫৭]
সৃজনবাদীদের এই দাবী সমালোচিত হয়; কারণ তাপগতিবিদ্যার দ্বিতীয় সুত্র বদ্ধ ব্যবস্থার (যার চারপাশে কখনো পদার্থ অথবা শক্তির রুপান্তর ঘটে না) জন্য প্রযোজ্য। পক্ষান্তরে জীবকূল হচ্ছে উন্মুক্ত ব্যবস্থা, কারণ জীবের ক্ষেত্রে পারিপার্শ্বিকতার সাপেক্ষে শক্তি এবং পদার্থের ক্রমাগত পরিবর্তন ঘটে। উদাহরণস্বরুপ প্রাণী খাদ্য গ্রহণ করে বর্জ্য পদার্থ নিঃসরণ করে। তাপ নিঃসরণ করে এবং শোষণ করে। সূর্য আমাদের এ পৃথিবীতে প্রতি নিয়ত শক্তির যোগান দিয়ে চলেছে। সেই শক্তিকে কাজে লাগিয়ে জীবদেহে কোষের বৃদ্ধি ঘটে, এবং কালের পরিক্রমায় বিবর্তনও ঘটে। শুধুমাত্র জীবদেহের দিকে তাকিয়ে থাকলে মনে হবে যে এনট্রপি কমেছে। কিন্তু ঠিকমত হিসেব-নিকেশ করলে বোঝা যায়, এই ‘আপাতঃ এনট্রপি’ কমাতে গিয়ে শক্তির যোগানটা পড়ছে অনেক বেশি। কাজেই এনট্রপির আসলে নীট বৃদ্ধিই ঘটছে [১৫৮][১৫৯][১৬০]
যদিও তাপগতিবিদ্যার দ্বিতীয় সূত্র গণিতের একটা অংশ, এই বিতর্ককে পরিমাণজ্ঞাপক হিসাব দ্বারা বিশ্লেষণ করা যায়।[১৬১][১৬২] পদার্থবিজ্ঞানী ড্যানিয়েল এফ. স্টাইয়ের এই বিশ্লেষণ করেন, তিনি বলেন "জৈব বিবর্তনে পরিমাণদ্বারা হিসাব থেকে এটাই প্রতীয়মান হয়, তাপগতিবিদ্যার দ্বিতীয় সুত্রের সাথে বিবর্তনবাদের কোনো বিরোধ নেই। ."[১৬১]
গণিতজ্ঞ জ্যাসন রোসেনহাউজ একটি প্রকাশিত চিঠিতে বলেন:
এটা বাস্তব যে প্রাকৃতিক বলগুলোই নিয়মিতভাবেই স্থানীয় এনট্রপির পরিমাণ কমায়। পানি বরফে পরিণত হয়, নিষিক্ত ডিমের কুসুম থেকে বাচ্চা তৈরী হয়, গাছ সুর্যের আলো ব্যবহার করে, কার্বন ডাই অক্সাইড আর পানির সাহায্যে চিনি/শর্করা এবং অক্সিজেন তৈরী করে।কিন্তু আমরা কখনো এগুলোকে ব্যাখ্যা করতে ঐশ্বরিক হস্তক্ষেপের আহবান করি না [...] তাপগতিবিদ্যা কখনোই ডারউইনিজমের প্রতি আমাদের আস্থা হ্রাস করে না।[১৬৩]
অন্য সাধারণ অভিযোগ বিবর্তনের বিরুদ্ধে করা হয়, যেমন বিবর্তন খারাপ বিশ্বাস, চরিত্র এবং ঘটনার দিকে নিয়ে যায়। বলা হয়, বিবর্তন শিক্ষাদান মুল্যবান নৈতিকতার বিলোপ সাধন করে, প্রতিপালন করায় ধর্মহীনতা অথবা নাস্তিকতাবাদের। একে বিবেচনা করা হয়, আপীল টু কন্সিকুয়েন্স ( লজিক্যাল ফ্যালাসির একটি অংশ) হিসেবে।
জীববিজ্ঞানের শ্রেণিবিভাগ অনুযায়ী মানুষকে প্রাণী হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।[১৬৪][১৬৫] সৃজনবাদী জে. রেণ্ডল-শর্ট (J. Rendle-Short) ক্রিয়েশন ম্যাগাজিনে বলেন যদি মানুষ বিবর্তন সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে তবে আশা করা যায় তারা জন্তুর মতই ব্যবহার করবে। কিন্তু মানুষের আচরণ ভিন্ন রকম।[১৬৬] তাই বিবর্তন অর্থহীন। কিন্তু জন্তু আর মানুষের মধ্যে পার্থক্য আছে, বিবর্তনের ধাপে মানুষ সক্ষম হয় জ্ঞান অর্জন করতে এবং তাদের আচরণ নানান ধরনের সামাজিক আচরণের সাথে মিল রেখে পরিবর্তিত হয়। তৈরী হয় নতুন সামাজিক আচরণ। তাই মানুষ অন্য মানুষের সাথে কথা বলার সময় সামাজিক আদব কায়দা বজায় রাখতে পারে।[১৬৭]
১৯১৭ সালে ভার্নন কেলগ প্রকাশ করেন Headquarters Nights: A Record of Conversations and Experiences at the Headquarters of the German Army in France and Belgium যা ফ্রান্স এবং বেলজিয়ামের হেডকোয়ার্টারে জার্মান আর্মির সাথে অভিজ্ঞতা এবং বিভিন্ন কথোপকথনের রেকর্ড। এই রেকর্ড এটাই দেখায় "whole-hearted acceptance of the worst of Neo-Darwinism, the Allmacht of natural selection applied rigorously to human life and society and Kultur. (নাজি জার্মানির গ্রাম্য সংস্কৃতি)" এর কারণে জার্মান বুদ্ধিজীবিরা সম্পূর্ণভাবে মনে করেন- শক্তিমান যা সিদ্ধান্ত নিবে তাই ঠিক(মাৎসন্যায়)।[১৬৯] এ বিষয়টা রাজনীতিবিদ উইলিয়াম জেনিংস ব্রায়ানকে গভীরভাবে প্রভাবিত করে। তিনি ডারউইনিজমকে আমেরিকার বিরুদ্ধে নৈতিক আঘাত হিসেবে দেখেন। তিনি ব্যাপক প্রচারণা চালান বিবর্তনবাদের বিরুদ্ধে। তার ক্যাম্পেইন স্কোপস ট্রায়ালে (একটি বিচার) সর্বোচ্চ প্রভাব বিস্তার করে, যার ফলে কার্যত ১৯৬০ সাল পর্যন্ত বেশিরভাগ পাবলিক স্কুলগুলোতে বিবর্তন নিয়ে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান নিষিদ্ধ ছিল।
আর. আলবার্ট মোলার, জেয়ার যিনি লুইসভিলের (Louisville) সাউদার্ন ব্যাপ্টিস্ট থিওলজিকাল সেমিনারের সভাপতি ছিলেন। ২০০৫ সালের ৮ই আগস্ট এই বিষয়ের উপর এনপিআরে Taking Issue নামক রচনামুলক সিরিজে ধারাবাহিকভাবে লিখেন, " শিক্ষা, গর্ভপাত, পরিবেশবাদ, সমকামিতা এই বিষয়গুলো নিয়ে বিবর্তনবাদ বিতর্ক করে..... বিবর্তন দাঁড়িয়ে রয়েছে মোরাল রিলেটিভিজমের উপর এবং এটি ঐতিহ্যবাহী প্রথাসমুহের বিরোধী"।[১৭০][১৭১]
হেনরি এম. মরিস একজন প্রকৌশলী অধ্যাপক, তিনি ক্রিয়েশন রিসার্চ সোসাইটি এবং ইনস্টিউট অফ ক্রিয়েশন রিসার্চের এর প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। তিনি দাবী করেন বিবর্তন তত্ত্ব হচ্ছে পৌত্তলিকতাবাদ ধর্মের একটা অংশ যা Tower of Babel এর থেকে উৎপন্ন;- প্লেটো ওএরিস্টটল এর দর্শনের সাথে সংগতিপূর্ণ একটি বিষয়। এটি সমাজকে যুদ্ধাবস্থা থেকে যৌনতার দিকে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ ভাবে দায়ী। তার মতে এর প্রভাবে একক পরিবারগুলোতে ভাঙন ধরবে।[১৭২] তিনি আরো দাবী করেন, বিবর্তন তত্ত্বে বিশ্বাস করার জন্য সামাজিক অসুস্থতা যেমন: অপরাধ, কৈশোরে গর্ভধারণ, সমকামিতা, গর্ভপাত, নৈতিকতাহীনতা, যুদ্ধ, এবং গণহত্যা ঘটতে পারে।[১৭৩]
সেন্টার ফর রিক্লেইমিং আমেরিকা ফর ক্রিস্ট (The Center for Reclaiming America for Christ) এর Rev. জেমস কেনেডি এবং কোরাল রিডজ মন্ত্রী দাবী করেন ডারউইন এবং শুধুমাত্র ডারউইনবাদই আডলফ হিটলার এর নৃসংশতার কারণ। কেনেডির দলিলপত্রে একটা পুস্তিকার শিরোনাম ছিল Darwin's Deadly Legacy, কেনেডি বলেন "To put it simply, no Darwin, no Hitler(যদি এটাকে সহজভাবে দেখি, তাহলে ডারউইন নেই তো হিটলারও নেই)" তিনি বলেন "harmful effects that evolution is still having on our nation, our children, and our world (বিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব এখনো আমাদের জাতি,আমাদের সন্তান আমাদের দুনিয়া বয়ে বেড়াচ্ছে)।" কেনেডি আরো বলেন, "We have had 150 years of the theory of Darwinian evolution, and what has it brought us? Whether Darwin intended it or not, millions of deaths, the destruction of those deemed inferior, the devaluing of human life, increasing hopelessness.(আমাদের ১৫০ বছর ধরে বিবর্তনবাদ আছে, এবং এটা আমাদের কী দিয়েছে? লক্ষাধিক মৃত্যু? তাদের উপর নির্ভরশীল বাকিদের জীবনে বিভীষিকা নেমে আসা? মানুষের জীবনের মূল্য হ্রাস? হতাশার পরিমাণ বৃদ্ধি? ডারউইনের কী এই অভিপ্রায় ছিল,নাকি অন্যকিছু?"[১৭৪][১৭৫][১৭৬] ডিসকভারী ইনস্টিটিউশনের Center for Science and Culture সহকর্মী Richard Weikart অন্যান্য সৃজনবাদীদের মত একই দাবী করেন:[১৭৭][১৭৮][১৭৯] এই দাবীটা একটা দলিলপত্রের উপর ভিত্তি করে তৈরী: Expelled: No Intelligence Allowed (2008) যা সৃজনবাদী ধারণাকেই ব্যক্ত করে। Anti-Defamation League(যারা হিটলারের গণহত্যার স্বীকার হওয়া ইহুদীদের নিয়ে কাজ করে) বলেন the Holocaust নিয়ে কুযুক্তিগুলো ব্যাপকহারে ব্যবহার হচ্ছে এবং মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা চলছে"... ইহুদীদের গণহত্যার পিছনে অনেক জটিল কারণ প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে। এই নৃসংশতম গণহত্যা বাস্তবায়নের জন্য হিটলারের ডারউইন বা বিবর্তনতত্ত্ব প্রয়োজন ছিল না।ডারউইন বা বিবর্তনতত্ত্ব হিটলারের এই চরমপন্থার পাগলামীকে ব্যাখ্যা করতে পারে না। উপরন্তু ইহুদীদের বিরোধিতা বহুবছর থেকে চলে আসছে,এমনকি যখন ডারউইন একটা শব্দও লিখে নাই।"[১৭৬][১৮০]
তরুণ সৃজনবাদী কেন্ট হভিণ্ড সাম্যবাদ, সমাজতন্ত্র, প্রথম বিশ্বযুদ্ধ, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ , বর্ণবাদ, হলোকস্ট, স্ট্যালিনের যুদ্ধাপরাধ, ভিয়েতনাম যুদ্ধ, এবং পল পটের হত্যার মাঠ এইসবকিছুর জন্য বিবর্তনকে দায়ী করেন। তিনি আরো বলেন, সমাজে অপরাধপ্রবণতা যেমন বিবাহপূর্ব মা হয়ে যাওয়া ও অন্যান্য সামাজিক অসুস্থতা বিবর্তনে বিশ্বাস রাখার কারণেই বাড়ছে।[৭০] হভিণ্ডের সন্তান এরিক হভিন্ড দাবী করেন ট্যাটু আকা,শরীরে ধাতব পদার্থ দয়ে চিহ্ন তৈরী করা,বিবাহপূর্বক সঙ্গম, অবৈধ বাচ্চার জন্ম দেওয়া,যৌন রোগসমূহ (STD), ডিভোর্সের জন্য বিবর্তনবাদ দায়ী।[১৮১]
বিবর্তনবাদের সমর্থকরা এইসব যুক্তিকে খণ্ডন করেন। Gregory S. Paul নামক একজন লেখকের গবেষণা প্রকাশিত হয়, সেখানে তিনি দেখান, ধর্মীয় বিশ্বাস (যেখানে অন্তর্ভুক্ত ছিল সৃজনবাদে বিশ্বাস এবং বিবর্তনবাদে অবিশ্বাস) সুনির্দিষ্টভাবে সম্পৃক্ত সামাজিক অবক্ষয় এমনকি ক্রাইমের সাথেও।[১৮২] The Barna Group যুক্তরাজ্যের খ্রিষ্টাণ সম্প্রদায় এবং খ্রিষ্টান নন এই দুই সম্প্রদায়ের মধে একটা জরিপ করেন যেখানে দেখা যায় উভয়ের মধ্যে বিবাহবিচ্ছেদের হার একইরকম। একইসাথে দেখা যায় Baptists ও Pentecostals যারা বিবর্তনবাদ কে প্রত্যাখ্যান করেছে এবং সৃজনবাদকে গ্রহণ করেছে এই দুই গোষ্ঠির মধ্যে বিবাহবিচ্ছেদের হার সর্বোচ্চ।[১৮৩]
Michael Shermer argued in Scientific American in October 2006 that evolution supports concepts like family values, avoiding lies, fidelity, moral codes and the rule of law.[১৮৪] He goes on to suggest that evolution gives more support to the notion of an omnipotent creator, rather than a tinkerer with limitations based on a human model, the more common image subscribed to by creationists. Careful analysis of the creationist charges that evolution has led to moral relativism and the Holocaust yields the conclusion that these charges appear to be highly suspect.[১৮৫] Such analyses conclude that the origins of the Holocaust are more likely to be found in historical Christian anti-Semitism than in evolution.[১৮৬][১৮৭]
Evolution has been used to justify Social Darwinism, the exploitation of "lesser breeds without the law" by "superior races," particularly in the nineteenth century.[১৮৮] Strong, typically European, nations successfully expanded their empires, and as such, these strong nations could be said to have "survived" in the struggle for dominance.[১৮৮] With this attitude, Europeans, with the exception of Christian missionaries, seldom adopted the customs and languages of local people under their empires.[১৮৮]
সৃজনবাদীদের আরেকটা অভিযোগ হল বিবর্তনে বিশ্বাস করা মানেই নাস্তিকতা।[১৮৯] এটাও সাধারণত দাবী করা হয় যারা এই বিবর্তন থিওরীর যারা বক্তা তারা সবাই "বস্তবাদী নাস্তিক"[১৯০] ডেভিস এ. ইয়াং বলেন; সৃজনবাদী বিজ্ঞান তার নিজের জন্যই ক্ষতিকর। তিনি বলেন " যদি আমরা বিজ্ঞানের ব্যানারে আস্তিকদের নিয়ে আসা একটা অপ্রমাণিত বিষয় শিখাতে জোর করি, তাহলে আমরা কী সত্যি বিশ্বাস করি যারা খ্রিষ্টান নয় তাদের খ্রিষ্টানদের প্রতি সম্মান বাড়বে?"[১৯১] যাইহোক, বিবর্তনবাদ এক পাগলা ঘোড়া। এটা কোনো নিয়ম মানে না। ঐশ্বরিক কোনো কিছুর হস্তক্ষেপেরও এর প্রয়োজন নেই। দার্শনিক রবার্ট টি. পিনক বলেন বিবর্তনবাদ প্লাম্বিং এর তুলনায় বেশি নাস্তিকতাবাদী নয়।[১৯২]রচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয় এর জীববিজ্ঞানের অধ্যাপক এইচ এলেন অর লিখেন:
ত্রুটি: কোন উদ্ধৃতি লেখা হয়নি (বা একটি নামহীন প্যারামিটারে প্রকৃত লেখায় সমান চিহ্ন ব্যবহৃত হয়েছে)
ধীরে ধীরে অনেক ধর্মই বিবর্তনের সাথে সমঝোতা করে নেয়। তাদের সমঝোতামুলক বক্তব্য ছিল, "বিবর্তন হচ্ছে মানি কিন্তু তা হচ্ছে ঈশ্বরের হস্তক্ষেপে।"[১৯৩] মোলেন মাটসুমুরা অব দ্য ন্যাশনাল সেন্টার ফর সায়েন্স এডুকেশন এর গবেষণায় দেখা গিয়েছে "আমেরিকানদের মধ্যে ১২টা বৃহত্তম খ্রিষ্টান শ্রেণিগুলোর মধ্যে ৮৯.৬% ই বিবর্তনবাদী শিক্ষাকে সমর্থন করে" এই চার্চগুলোর মধ্যে ছিল"ইউনাইটেড মেথোডিস্ট চার্চ, জাতীয়তাবাদী ব্যাপ্টিস্ট সংগঠন, যুক্তরাষ্ট্র, ইভানজেলিকাল লুথেরান চার্চ ইন আমেরিকা, প্রেসবাইটেরিয়ান চার্চ (যুক্তরাষ্ট্র), যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয়তাবাদী ব্যাপ্টিস্ট কনভেনশন, আফ্রিকান মেথোডিস্ট এপিস্কোপাল চার্চ, রোমান ক্যাথলিক চার্চ, এপিসকোপাল চার্চ ইত্যাদি."[১৯৪] ২০০০ সালে পিপল ফর দ্য আমেরিকান ওয়ের করা একটা পোলে দেখা যায় আমেরিকার জনগণের ৭০% মনে করে বিবর্তনবাদ ঈশ্বর দ্বারা নিয়ন্ত্রিত।[১৯৫]
আরেকটা রিপোর্ট নেচার জার্নালে প্রকাশিত হয়, যেখানে দেখা যায় আমেরিকান বিজ্ঞানীদের মধ্যে(across various disciplines) প্রায় ৪০ শতাংশ বিবর্তন এবং সচল দেবতা (theistic evolution)(যিনি বিবর্তন নিয়ন্ত্রণ করছে) উভয়েই বিশ্বাস করে।[১৯৬] একইরম ফলাফল আসে যখন আমেরিকার আমজনতার উপর একটি জরিপ করা হয়। সেখানেও বিজ্ঞানীদের ৪০ শতাংশ বিশ্বাস করেন ঈশ্বর প্রার্থনার জবাব দেন এবং বিশ্বাস করেন অনৈতিকতায়।[১৯৭] জরিপে দেখা যায় বিজ্ঞানীদের ৫৫ শতাংশ নাস্তিক সংশয়বাদী, অথবা কোনো ধর্মের নয়-কিন্তু বিশ্বাসী। যেসব বিজ্ঞানীরা বিবর্তনে সমর্থন করেন তাদের মধ্যে নাস্তিকতা কোনো প্রভাব ই ফেলে নি প্রায় একইরকম ফলাফল প্রকাশ পায় ১৯৯৭ সালে আমেরিকার জনগণ এবং বিজ্ঞানীদের উপর করা গ্যালোপ জরিপ এর মাধ্যমে [১৯৮]
Group[১৯৮] | বিশ্বাস করেন young Earth creationism | বিশ্বাস করেন God-guided evolution | বিশ্বাস করেন evolution without God guiding the process |
---|---|---|---|
আমেরিকার জনগণ' | ৪৪% | ৩৯% | ১০% |
আমেরিকার বিজ্ঞানী* | ৫% | ৪০% | ৫৫% |
*যারা বিবর্তনের সাথে সম্পর্কহীন কিন্তু কম্পিউটার সায়েন্স, কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার, পদার্থ বিজ্ঞান, শারীরবিজ্ঞান, ব্যবসায়িক প্রশাসনে উচ্চতর ডিগ্রি আছে তাদের ও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।[১৯৮] |
সংরক্ষণশীলরা তারপরেও আপত্তি করতেই থাকেন, তারা বলতেই থাকেন বিবর্তনবাদ এমন একটি ধারণার বারবার পুনর্জাগরণ ঘটাচ্ছে যার মাধ্যমে ঈশ্বরের হস্তক্ষেপ কে বাতিল করা হচ্ছে। জীবে বৈচিত্র্য এমনকি মানুষের উদ্ভব কে বিবর্তন ব্যাখ্যা করে যা বিশ্বাসের মূলে কুঠারাঘাত করে একই সাথে জীবের উদ্ভবের ব্যাখা তাদের সৃষ্টিবাদী মিথের সাথে না মিলায় তাদের আপত্তির কোনোভাবেই সমাধান হচ্ছিল না। যাই হোক তারপরও কয়েকটা ধর্ম যেমন ক্যাথলিক চার্চ বিবর্তনের সাথে মিল রেখে তাদের বিশ্বাসের (জীবের উদ্ভবের ব্যাখ্যার) সংস্কার করেছে।[১৩][১৯৯]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.