গৌড়ীয় নৃত্য
বঙ্গীয় শাস্ত্রীয় নৃত্যকলা / From Wikipedia, the free encyclopedia
গৌড়ীয় নৃত্য একধরনের ভারতীয় বাঙালি ঐতিহ্যগত শাস্ত্রীয় নৃত্যকলা,[1][2][3]যা ভারতীয় উপমহাদেশে প্রাচীনকালে বঙ্গীয় অঞ্চলের মন্দিরগুলিতে উদ্ভূত হয়েছিল।[4] গৌড়ীয় নৃত্য বঙ্গের প্রাচীন কাব্যকারদের দ্বারা উল্লেখিত হয়েছে। এই নৃত্য প্রাচীন কবিদের দ্বারা গৌড়ীয় সংগীতের রাগ ও তাল অনুসারে রচিত ও সুরাপিত গানের মাধ্যমে ধর্মীয় গল্প প্রকাশ করেছিল, বিশেষ করে বৈষ্ণবধর্ম। গৌড়ীয় নৃত্য প্রদর্শনগুলি হিন্দু দেবতা শিব ও গণেশ সম্পর্কিত অন্যান্য ঐতিহ্যের ধারণাগুলিও প্রকাশ করেছে, সেইসঙ্গে শাক্ত ধারণা।
গৌড়ীয় নৃত্যের তাত্ত্বিক ভিত্তির খোঁজ প্রাচীন সংস্কৃত গ্রন্থ নাট্যশাস্ত্রে পাওয়া যায়; গৌড়ীয় রীতির মন্দির ভাস্কর্যে এবং হিন্দু, বৌদ্ধ ও জৈন ধর্মের সঙ্গে সম্পর্কিত প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানগুলিতে নৃত্যের ভঙ্গি দ্বারা প্রাচীনকালে এর অস্তিত্ব প্রমাণিত হয়েছে। ভারত ঔপনিবেশিক শাসন থেকে স্বাধীনতা লাভের পর থেকে এর পুনরুজ্জীবন, পুনর্গঠন ও সম্প্রসারণ করা করেছিল।
গৌড়ীয় নৃত্য ঐতিহ্যগতভাবে পরিবেশন শিল্পকলার একটি নৃত্য-নাট্যের ধারা, যেখানে শিল্পী(রা) ও সঙ্গীতজ্ঞরা প্রাচীন সংস্কৃত সাহিত্যে বর্ণিত প্রতীকী পোশাক, শরীরের গতিবিধি, অভিনয় (অভিব্যক্তি) এবং মুদ্রা (ভঙ্গিমা ও ইশারা ভাষা) ব্যবহার করে একটি গল্প – একটি আধ্যাত্মিক বার্তা বা হিন্দু গ্রন্থ থেকে ভক্তিমূলক কবিতা – পরিবেশন করে। নৃত্যের সংসর্গী সংগীত ও একজন গায়ক থাকে, এবং সাধারণত নৃত্যশিল্পীর গুরু পরিবেশিত নৃত্যানুষ্ঠানের পরিচালক হিসেবে উপস্থিত থাকেন। একটি গৌড়ীয় নৃত্য পরিবেশনের মধ্যে রয়েছে নৃত্ত (শুদ্ধ নৃত্য), নৃত্য (একক অভিব্যক্তিমূলক নৃত্য) এবং নাট্য (দলগত নাটকীয় নৃত্য)।
বাঙালি নৃত্যশিল্পী মহুয়া মুখোপাধ্যায়, এই গৌড়ীয় নৃত্যের পুনঃনির্মাণ করেছেন।[3][5] এই নৃত্যকলা ভিত্তিক গবেষণার জন্য সংস্কৃতি মন্ত্রানালয় কর্তৃক গবেষণামূলক বৃত্তি প্রদান করা হয়,[6][7] যা মূলত স্বীকৃত ভারতীয় শাস্ত্রীয় নৃত্যের ক্ষেত্রে প্রদান করা হয়।[5] রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় ও ওকলাহোমা বিশ্ববিদ্যালয় এটিকে শাস্ত্রীয় নৃত্যের ধরন হিসাবে স্বীকৃতি প্রদান করেছে।[8][9][10][11][12]