গফরগাঁও উপজেলা
ময়মনসিংহ জেলার একটি উপজেলা উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
ময়মনসিংহ জেলার একটি উপজেলা উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
গফরগাঁও উপজেলা বাংলাদেশের ময়মনসিংহ জেলার একটি প্রশাসনিক এলাকা। তাছাড়া পল্লি কবি জসীম উদ্দিন এর নকশী কাঁথার মাঠ এ জায়গাকে নিয়ে রচিত। এছাড়াও গফরগাঁও বেগুন এর জন্য দেশব্যাপী বিখ্যাত।
গফরগাঁও | |
---|---|
উপজেলা | |
মানচিত্রে গফরগাঁও উপজেলা | |
স্থানাঙ্ক: ২৪°২৫′২″ উত্তর ৯০°৩২′৪৪″ পূর্ব | |
দেশ | বাংলাদেশ |
বিভাগ | ময়মনসিংহ বিভাগ |
জেলা | ময়মনসিংহ জেলা |
সংসদীয় আসন | ময়মনসিংহ-১০ (১৫৫ নং) |
সরকার | |
• সংসদ সদস্য | পদশূন্য |
আয়তন | |
• মোট | ৪০১.১৬ বর্গকিমি (১৫৪.৮৯ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১)[১] | |
• মোট | ৪,১৩,৪৮৮ |
• জনঘনত্ব | ১,০০০/বর্গকিমি (২,৭০০/বর্গমাইল) |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
প্রশাসনিক বিভাগের কোড | ৩০ ৬১ ২২ |
ওয়েবসাইট | দাপ্তরিক ওয়েবসাইট |
ময়মনসিংহ জেলা সদর থেকে রেলপথে ও সড়কপথে গফরগাঁও উপজেলা সদরের দূরত্ব ৩৯ কিলোমিটার এবং রাজধানীর ঢাকা থেকে ৮৬ কিলোমিটার। গফরগাঁও-এর বুক চিরে রেল পথটি বয়ে গেছে রাজধানী ঢাকা থেকে উত্তরাঞ্চলের দিকে, জগন্নাথগঞ্জ ঘাট, বাহাদুরাবাদ ঘাটের এবং পূর্বে ঝারিয়া ঝাঁজাইল, মোহনগঞ্জের দিকে। এর উত্তরে ত্রিশাল উপজেলা ও নান্দাইল উপজেলা, দক্ষিণে গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলা ও কাপাসিয়া উপজেলা, পূর্বে নান্দাইল উপজেলা ও কিশোরগঞ্জ জেলার হোসেনপুর উপজেলা, পাকুন্দিয়া উপজেলা, পশ্চিমে ভালুকা উপজেলা।
গাফফার খান নামক জনৈক সেনানায়কের নামে 'গফরগাঁও' নামের উৎপত্তি। ধারণা করা হয় মুঘল সেনাপতি রাজা মানসিংহ ও বাংলার বারো ভুঁইয়াদের নেতা ঈসা খানের সম্মুখ যুদ্ধটি ব্রহ্মপুত্র ও শীতলক্ষ্যা নদীর সম্মিলনস্থলে বর্তমান ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও উপজেলার সম্পূর্ণ দক্ষিণ প্রান্তের বাঁশিয়া গ্রামের মোঘল বাড়ী থেকে টাঙ্গাব গ্রামের সিমানা পর্যন্ত দীর্ঘ হয়। গফরগাঁওয়ের ১৫টি ইউনিয়নের মধ্যে ১৪টি ইউনিয়ন ভাওয়াল পরগনাধীন এবং পূর্বাংশ চর আলগী ইউনিয়ন আঠারবাড়ি জমিদার প্রশাসনের অন্তর্ভুক্ত ছিল। এ অঞ্চল ঐতিহাসিক 'রণভাওয়াল' (গফরগাঁও, ভালুকা, শ্রীপুর ও কাপাসিয়ার অংশবিশেষ তথা ভাওয়ালের উত্তরাংশের প্রাচীন জনপদ) জনপদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল। ১৮১৩ সালে গফরগাঁও থানা গঠিত হয় এবং ১৯৮৩ সালে এর উপজেলা কার্যক্রম শুরু হয়। ১৯১৭ সালে গফরগাঁয়ের পশ্চিমাংশ নিয়ে ভালুকা উপজেলা সৃষ্টি করা হয়।
গফরগাঁও উপজেলায় বর্তমানে ১টি পৌরসভা, ২টি থানা ও ১৫টি ইউনিয়ন রয়েছে।[২]
গফরগাঁও উপজেলায় দুইটি রেলওয়ে স্টেশন রয়েছে। একটি গফরগাঁও রেলওয়ে স্টেশন অপরটি হলো মশাখালী রেলওয়ে স্টেশন।
ড. দীনেশচন্দ্র সেন কর্তৃক বৃহত্তর ময়মনসিংহের মৈমনসিংহ গীতিকা সংগ্রহকালে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন ছাত্র পল্লীকবি জসীম উদ্দীনকে এই এলাকায় নিয়োজিত করেন। গফরগাঁও অবস্থানকালে জসীম উদদীনের সাথে স্থানীয় রূপাই মিয়ার ঘনিষ্ঠতা হয়। রূপাই মিয়ার জীবনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে তিনি তার প্রখ্যাত কাব্যগ্রন্থ নকশী কাঁথার মাঠ রচনা করেন।
এখানে জারি, সারি, বাউল ও কেচ্ছাগান নিয়মিত চর্চা হয়। ষাটের দশক পর্যন্তও ঘেঁটুগানের চর্চা এই অঞ্চলে নিয়মিত হতো। তাছাড়া প্রায়ই নৌকা বাইচ হয়ে থাকে।
২০১১ সালের জনশুমারি অনুসারে গফরগাঁওয়ের জনসংখ্যা ৪,১৩,৪৮৮ জন।[৩] জনসংখ্যার ৫১% নারী, পুরুষ ৪৯%। উপজেলার ১৮ বছরের নিচে জনসংখ্যা ১৮৪,৬৩৩ জন। প্রতি বর্গকিলোমিটারে ১০৩০ জন মানুষ বাস করে। বর্তমানে গফরগাঁওয়ে প্রায় ৫ লক্ষের অধিক মানুষ বসবাস করে।
গফরগাঁও উপজেলায় সড়ক ও রেলপথে আসা যায়। ঢাকা থেকে রেলপথে গফরগাঁও উপজেলা সদরের দূরত্ব ৮৬ কি.মি. এবং সড়কপথে ৯২ কি.মি.। ময়মনসিংহ থেকে গফরগাঁও উপজেলা সদরের দূরত্ব রেলপথে ও সড়কপথে ৩৮ কি.মি.।
গফরগাঁওয়ের যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রধানত রেলকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে। এছাড়া সড়কপথেও লোকজন যাতায়াত করে থাকেন। গফরগাঁও রেলওয়ে স্টেশন উপজেলার প্রধান রেলস্টেশন। এছাড়া মশাখালী নামে আরেকটি রেল স্টেশন রয়েছে। গফরগাঁওয়ে ৭টি আন্তঃনগর সহ মোট ১২টি ট্রেন অর্থাৎ যাত্রাপথের সবগুলো ট্রেন যাত্রাবিরতি করে থাকে। গফরগাঁওয়ে একটি বাস স্ট্যান্ড রয়েছে। বর্তমানে ঢাকা, ময়মনসিংহ ও পাশ্ববর্তী জেলা-উপজেলা সমূহের সাথে আরো নতুন নতুন রাস্তা যুক্ত হয়ে এর যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটেছে। ফলে এখন সহজেই গফরগাঁও আসা যায়।
গফরগাঁও উপজেলা মুলত কৃষিপ্রধান। এখানে ধান, পাট, গম, ডাল ইত্যাদি খাদ্যশস্য ও অর্থকরী ফসল জন্মে থাকে। তাছাড়া ভুট্টা, গম, মসুর ইত্যাদি রবিশস্যও খুব ভাল জন্মে। গফরগাঁওয়ের বেগুন যা 'লাফা বাইগুন' নামে স্থানীয়ভাবে পরিচিত, তা গফরগাঁও পৌরসভা সংলগ্ন চর আলগী ইউনিয়নের কেবল চরমসলন্দ গ্রামে উৎপন্ন হয়। রাজধানীসহ দেশব্যাপী এর কদর রয়েছে। বর্তমানে উৎপাদন ব্যয় বাজারজাতকরণের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয় বলে এর উৎপাদন অনেকাংশে হ্রাস পেয়েছে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
গফরগাঁও উপজেলায় প্রায় ৮টি নদ-নদী রয়েছে। সেগুলো হচ্ছে–ব্রহ্মপুত্র নদ, শীতলক্ষ্যা নদী, বানার নদী, শিলাই নদী, সুতিয়া নদী, জলগাবা বলেশ্বর, বাইলনা, দইনা, পাগারিয়া প্রভৃতি।[৪][৫]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.