কোভিড-১৯
পশুপাখীবাহী ভাইরাস সার্স-কভি-২ দ্বারা সৃষ্ট শ্বাস প্রশ্বাসের সংক্রামক রোগ / From Wikipedia, the free encyclopedia
করোনাভাইরাস রোগ ২০১৯ বা কোভিড-১৯ মানুষের একটি সংক্রামক ব্যাধি যা গুরুতর তীব্র শ্বাসযন্ত্রীয় রোগলক্ষণসমষ্টি সৃষ্টিকারী করোনাভাইরাস ২ (সার্স-কোভ - ২) নামক এক ধরনের ভাইরাসের আক্রমণে হয়ে থাকে।[8] এই ব্যাধিটি সর্বপ্রথম ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে চীনে শনাক্ত করা হয়। পরবর্তীতে ২০২০ সালের প্রারম্ভে ব্যাধিটি বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে এবং বৈশ্বিক মহামারীর রূপ ধারণ করে।[9][10] ব্যাধিটির সাধারণ উপসর্গ হিসেবে জ্বর, সর্দি এবং শ্বাসকষ্ট দেখা যায়। কিছু ক্ষেত্রে মাংসপেশীর ব্যথা, বারবার থুতু সৃষ্টি এবং গলায় ব্যথা দেখা যেতে পারে।[6][11] বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই উপসর্গগুলো নমনীয় আকারে দেখা যায়,[12] কিন্তু কিছু গুরুতর ক্ষেত্রে ফুসুফুস প্রদাহ (নিউমোনিয়া) এবং বিভিন্ন অঙ্গের বিকলতাও দেখা যায়।[9][13] সংক্রমিত হবার পরে এই ব্যাধিতে মৃত্যুর হার গড়ে ১.১%, যেখানে ২০ বছরের নিচের রোগীদের মৃত্যুর হার ০.২% এবং ৮০ বছরের ঊর্ধ্বে রোগীদের প্রায় ১৫%।[14][15][16]
করোনাভাইরাস রোগ ২০১৯ (কোভিড-১৯) | |
---|---|
প্রতিশব্দ |
|
কোভিড-১৯ লক্ষণসমূহ | |
উচ্চারণ | |
বিশেষত্ব | তীব্র শ্বসনতন্ত্র সংক্রমণ[5] |
লক্ষণ | জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট[6] |
জটিলতা | নিউমোনিয়া, আর্ডস, যকৃৎ বিকল |
কারণ | সার্স-কোভ-২ |
ঝুঁকির কারণ | প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ না করা |
রোগনির্ণয়ের পদ্ধতি | rRT-PCR পরীক্ষা, ইমিউনিঅ্যাসে, সিটি স্ক্যান |
প্রতিরোধ | সঠিকভাবে হাত ধোয়ার পদ্ধতি অনুসরণ, কাশি শিষ্টাচার, অসুস্থ মানুষ বা সাবক্লিনিক্যাল বাহকের সাথে সংস্পর্শ এড়ানো |
চিকিৎসা | উপসর্গবিশিষ্ট এবং সহায়তামূলক |
সংঘটনের হার | ৬১,২৫,২৬,৯৪৮[7] জন চিহ্নিত রোগী |
মৃতের সংখ্যা | ৬৫,২৮,১০৫ (নিশ্চিত রোগীর ১%)[7] |
এই রোগ সাধারণত সংক্রমিত ব্যক্তির হাঁচি-কাশির মাধ্যমে সৃষ্ট বায়ুকণা থেকে ছড়ায়।[17][18] এছাড়া সংক্রমিত ব্যক্তির জীবাণু হাঁচি-কাশির কারণে বা জীবাণুযুক্ত হাত দিয়ে স্পর্শ করার কারণে পরিবেশের বিভিন্ন বস্তুর পৃষ্ঠতলে লেগে থাকলে এবং সেই ভাইরাসযুক্ত পৃষ্ঠতল অন্য কেউ হাত দিয়ে স্পর্শ করে নাকে-মুখে-চোখে হাত দিলে করোনাভাইরাস নাক-মুখ-চোখের শ্লেষ্মাঝিল্লী দিয়ে দেহে প্রবেশ করে। আক্রান্ত হওয়ার ২-১৪ দিনের মধ্যে উপসর্গ দেখা দেয়; গড়ে ৫ দিনের মধ্যে উপসর্গ দেখা যায়। [19][20] সাধারণত নাক কিংবা গলার শ্লেষা পরীক্ষাগারে নিয়ে বিপরীত প্রতিলিপিকরণ পলিমার শৃঙ্খল বিক্রিয়ার (rRT-PCR) মাধ্যমে রোগনির্ণয় করা হয়। এছাড়াও স্বাস্থঝুঁকি, বক্ষের সিটি চিত্রগ্রহণের (সিটি স্ক্যানের) মাধ্যমে ফুসফুস প্রদাহের (নিউমোনিয়ার) উপস্থিতি এবং উপসর্গ থেকেও ব্যাধিটি নির্ণয় করা যায়।[21][22]
করোনাভাইরাস রোগ প্রতিরোধের জন্য ঘনঘন হাত ধোয়া, নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রাখা, এবং অন্য কোনও ব্যক্তির সাথে ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শ থেকে বিরত থাকা উচিত।[23] সাধারণ ও সুস্থ ব্যক্তির মুখোশ (মাস্ক) ব্যবহার না করলেও চলবে কিন্তু আক্রান্ত ব্যক্তি কিংবা আক্রান্ত হয়ে থাকতে পারেন এমন ব্যক্তি এবং তাদের পরিচর্যার লোকেদের চিকিৎসা-মুখোশ (মাস্ক) ব্যবহার অপরিহার্য।[24][25] কোভিড-১৯ এর কোনো টিকা কিংবা নির্দিষ্ট ভাইরাস নিরোধক নেই। উপসর্গুগলোর চিকিৎসা, সহায়ক যত্ন, অন্তরণ বা আইসোলেশন), এবং পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণই করণীয়।[26]
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ২০১৯-২০২০ করোনাভাইরাস এর আক্রমণকে বৈশ্বিক মহামারী[10] এবং আন্তর্জাতিক উদ্বেগের জনস্বাস্থ্য জরুরী অবস্থা (PHEIC) ঘোষণা করেছে।[27][28] ছয়টি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অঞ্চলে এই ব্যাধির স্থানীয় সংক্রমণ দেখা গেছে।[29]