কৈকেয়ী
অযোধ্যার রাণী, ভরতের মাতা, রামের বিমাতা উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
অযোধ্যার রাণী, ভরতের মাতা, রামের বিমাতা উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
কৈকেয়ী (দেবনাগরী:कैकेयी) রাজা দশরথের অন্যতমা স্ত্রী এবং অযোধ্যার রাণী ছিলেন। কিন্তু তিনি মধ্যমা না কনিষ্ঠা রাণী ছিলেন তা নিয়ে বিতর্ক আছে। অযোধ্যাকাণ্ডে রাম বলেছেন কৈকেয়ী তাঁদের কনিষ্ঠামাতা (সর্গ ৫২, শ্লোক ৬১)।[1] কিন্তু অরণ্যকাণ্ডে রাম লক্ষ্মণকে বলেন ন তে অম্বা মধ্যমা তাত গর্হিতব্যা কথঞ্চন। তাম এব ইক্ষ্বাকু নাথস্য ভরতস্য কথাম কুরু (সর্গ ১৬, শ্লোক ৩৭) যার অর্থ “বৎস, মধ্যমা মাতার নিন্দা কদাচ কোরো না, ইক্ষ্বাকু নাথ ভরতের কথা বল।”[2] তিনি কেকয় দেশের রাজকুমারী ছিলেন এজন্য তাঁর নাম কৈকেয়ী। ইনি ভরতের মাতা ছিলেন।
কৈকেয়ী | |
---|---|
অযোধ্যার রাণী | |
দাম্পত্য সঙ্গী | দশরথ |
কৈকেয়ী কেকয়রাজ অশ্বপতির কন্যা ছিলেন। অশ্বপতি পাখির ভাষা বোঝার বরপ্রাপ্ত হয়েছিলেন কিন্তু এর শর্ত ছিল তিনি কারো কাছে সেই ভাষার অর্থ বলতে পারবেন না বললে তাঁর মৃত্যু হবে। একদিন তিনি এবং তাঁর স্ত্রী বাগানে ভ্রমণ করছিলেন এমন সময় অশ্বপতি এক জোড়া রাজহাঁসের কথোপকথন শুনে মুগ্ধ হয়ে হেসে ফেলেন। রাণী এতে খুব কৌতূহলী হয়ে এর কারণ জিজ্ঞাসা করতে থাকেন যদিও তিনি জানতেন তা করলে রাজার মৃত্যু হবে। তখন রাজা বুঝতে পারলেন তাঁর স্ত্রীর তাঁর প্রতি ভালোবাসা নেই বললেই চলে। এজন্য তিনি তাঁকে নির্বাসিত করেন। মাতৃহীন কৈকেয়ী দাসী ও ধাত্রীমাতা মন্থরার কাছে বেড়ে ওঠেন। যুবতী বয়সে তাঁর স্বয়ম্বরে তিনি দশরথকে বরণ করেন।[3] তিনি দশরথের সবচেয়ে প্রিয়া স্ত্রী ছিলেন।
দশরথ যে পুত্রকামেষ্ঠী যজ্ঞ করেন তাতে উৎপন্ন চরু খেয়ে কৈকেয়ী ভরতকে লাভ করেন। বিবাহের পর কৈকেয়ীর পিতৃগৃহের দাসী রূপে মন্থরা এসেছিল। রামের অভিষেকের খবরে সে হিংসাগ্রস্ত হয়ে কৈকেয়ীকেও হিংসাগ্রস্ত করার চেষ্টা করে। কিন্তু কৈকেয়ী বলেন রামে বা ভরতে বাহং বিশেষং নোপলক্ষ্যে। তস্মাৎ তুষ্টাস্মি যদ রাজা রামং রাজ্যেঽভিষেক্ষ্যতি।। যার অর্থ "আমি রাম বা ভরতে কোন প্রভেদ দেখি না, মহারাজ যে রামকে অভিষিক্ত করবেন তাতে আমি তুষ্ট।" (অযোধ্যাকাণ্ড সর্গ ৭, শ্লোক ৩৫) কিন্তু পরবর্তীতে মন্থরা তাঁকে প্ররোচিত করতে সমর্থ হয়। সে মনে করিয়ে দেয় একবার রাজা শম্বরাসুরের সাথে যুদ্ধে দারুণভাবে আহত হলে কৈকেয়ী তাঁকে সেবার মাধ্যমে সুস্থ্য করেছিলেন। তখন দশরথ তাঁকে একই সময়ে দুটি বর দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু কোন অভাব না থাকায় তিনি নেননি। সেই বর চাওয়ার সময় এসেছে। সে যেন প্রথম বরে ভরতকে সিংহাসনে বসায় এবং দ্বিতীয় বরে রামকে চৌদ্দ বছরের জন্য বনে পাঠায়। এদিকে দশরথ রামের অভিষেকের খবর কৈকেয়ীকে দিতে এসে শুনলেন তিনি ক্রুদ্ধ হয়ে ক্রোধভবনে গেছেন। তিনি সেখানে গিয়ে কৈকেয়ীর ক্রোধের কারণ জিজ্ঞাসা করলে কৈকেয়ী রাজাকে দেবাসুর যুদ্ধের কথা স্মরণ করতে বলেন তিনি বলেন তাঁর এখন বরপ্রাপ্তির সময় এসেছে। রাজাকে প্রতিজ্ঞা করিয়ে কৈকেয়ী এই বর চান যেন রামের বদলে ভরতের অভিষেক হয় ও রাম বনে যান। দশরথ অন্য বর দিতে চেলে তিনি আত্মহত্যা করতে চান।[4][5] রাম এই কথা জানার পর নির্দ্বিধায় পিতৃসত্য পালনে বনে যান; লক্ষ্মণ ও সীতা তাঁর অনুগমন করেন। দশরথ পুত্রশোকে প্রাণ হারান। ভরত মাতুলালয় থেকে এসে এই খবর জানতে পেরে কৈকেয়ীকে তীব্র ভাষায় ভর্ৎসনা করেন। শত্রুঘ্ন মন্থরাকে প্রহার করেন। কৈকেয়ী তাঁর ভুল বুঝতে পারেন এবং সবার সাথে তিনিও রামকে ফিরিয়ে আনতে যান। রামের অশ্বমেধ যজ্ঞের পর তাঁর মৃত্যু হয়।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.