Loading AI tools
কুমারখালী উপজেলা বাংলাদেশের কুষ্টিয়া জেলার একটি প্রশাসনিক এলাকা। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার জীবনের এক উল্লেখযোগ্য অংশ এই উপজেলার শিলাইদহ অঞ্চলে কাটিয়েছেন এবং এখানেই তিনি গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থ রচনা করেছেন। এ কাব্যগ্রন্থের জন্য তিনি ১৯১৩ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পান। এই উপজেলায় বাংলা সাহিত্যের প্রথম মুসলিম ঔপন্যাসিক মীর মশাররফ হোসেন-এর বাস্তুভিটা রয়েছে।
কুমারখালী | |
---|---|
উপজেলা | |
মানচিত্রে কুমারখালী উপজেলা | |
স্থানাঙ্ক: ২৩°৫১′২৩.৩০″ উত্তর ৮৯°৬′৫৩.৩৬″ পূর্ব | |
দেশ | বাংলাদেশ |
বিভাগ | খুলনা বিভাগ |
জেলা | কুষ্টিয়া জেলা |
সংসদীয় আসন | ৭৮ কুষ্টিয়া-৪ |
সরকার | |
• সংসদ সদস্য | আব্দুর রউফ (বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ) |
আয়তন | |
• মোট | ২৫৮.৩৮ বর্গকিমি (৯৯.৭৬ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১) | |
• মোট | ৩,২৮,৪৫৭[1] |
সাক্ষরতার হার | |
• মোট | ৪৫.৩% |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
প্রশাসনিক বিভাগের কোড | ৪০ ৫০ ৭১ |
ওয়েবসাইট | দাপ্তরিক ওয়েবসাইট |
কুমারখালী উপজেলার আয়তন ২৫৮.৩৮ বর্গ কিলোমিটার (৬৩,৭৯৯ একর)।[2] ২৩°৪৪´ থেকে ২৩°৫৮´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°০৯´ থেকে ৮৯°২২´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশে এ উপজেলার অবস্থান।
কুমারখালী কুষ্টিয়া অঞ্চলের মধ্যে অপেক্ষাকৃত প্রাচীন জনপদ। পদ্ম গর্ভ থেকে এই অঞ্চলের উদ্ভব হয়েছে বলে ধারণা প্রচলিত আছে। কুমারখালীর বিস্তীর্ণ এলাকা যে একসময় নদী গর্ভে ছিল তার প্রমাণ মেলে ‘চড়াইকোল’ যুক্ত গ্রামনাম এবং কোল ও বিলের আধিক্য থেকে।
প্রশাসনিক কাঠামো পরিবর্তনের কারণে কুমারখালীর অবস্থান ও মর্যাদা বারবার পরিবর্তিত হয়েছে। থানা থেকে মহকুমায় উন্নীত হয়ে কুমারখালীকে আবারও থানায় পরিনত হতে হয়। ইংরেজ শাসনের পূর্বে কুমারখালী অঞ্চল ফরিদপুর ও যশোরের অন্তর্ভুক্ত ছিল। পরবর্তীকালে থানা কিংবা মহকুমা হিসেবে কুমারখালী যথাক্রমে রাজশাহী, পাবনা, নদীয়া ও সবশেষে কুষ্টিয়া জেলার অন্তর্ভুক্ত হয়। ১৮৫৭ সালে পাবনা জেলার অধীনে কুমারখালী, খোকসা, পাংশা ও বালিয়াকান্দী থানা নিয়ে কুমারখালী মহকুমার জন্ম। কিন্তু ১৮৭১ সালে নদীয়া জেলার কুষ্টিয়া মহকুমার সামিল হয়ে কুমারখালী মহকুমার মর্যাদা হারিয়ে পুনরায় থানায় পরিনত হয়। কুমারখালী থানার সদর দফতর ছিল পার্শ্ববর্তী ভালুকা গ্রামে। কুমারখালী এক সময় নাটোর-রাজ্যের অধীনে ছিল। পরে জোড়াসাঁকোর ঠাকুর-জমিদারির অন্তর্ভুক্ত হয়। কুমারখালী অঞ্চলে রাণী ভবানী ও তাঁর উত্তরপুরুষদের নির্মিত মঠ-মন্দির এবং জনহিতকর কর্মের কিছু নিদর্শন এখনো আছে।
কথিত আছে, নবাব মুর্শিদকুলি খাঁ রাজস্ব সংগ্রহের জন্য কমরকুলি খাঁ-কে এই অঞ্চলের কালেক্টর নিযুক্ত করেন। তাঁর নামানুসারেই এই অঞ্চলের নাম হয় ‘কমরখালী’, যার অপভ্রষ্ট-রূপ বর্তমান ‘কুমারখালী’। কুমার নদীর খাল থেকে ‘কুমারখালী’ নামের উৎপত্তি এই ধারণাও কেউ কেউ পোষণ করেন।
কুমারখালী উপজেলা একটি পৌরসভা, ১১টি ইউনিয়ন, ১৮৭টি মৌজা ও ২০১টি গ্রাম রয়েছে। কুমারখালী উপজেলার প্রশাসনিক কার্যক্রম কুমারখালী থানার আওতাধীন।
নং | নাম |
---|---|
০১ | কয়া ইউনিয়ন |
০২ | শিলাইদহ ইউনিয়ন |
০৩ | জগন্নাথপুর ইউনিয়ন |
০৪ | সদকী ইউনিয়ন |
০৫ | নন্দলালপুর ইউনিয়ন |
০৬ | চাপড়া ইউনিয়ন |
০৭ | বাগুলাট ইউনিয়ন |
০৮ | যদুবয়রা ইউনিয়ন |
০৯ | চাঁদপুর ইউনিয়ন |
১০ | পান্টি ইউনিয়ন |
১১ | চরসাদীপুর ইউনিয়ন |
২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী কুমারখালী উপজেলার মোট জনসংখ্যা ৩,২৮,৪৫৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১,৬৩,৪৬১ জন ও মহিলা ১,৬৪,৯৯৬ জন। মোট পরিবার ৭৯,০০৮টি।[2] এখানে বুনো, বাঁশফোঁড় প্রভৃতি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে।
২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী কুমারখালী উপজেলায় সাক্ষরতার হার ৪৫.৩%।[2] এ উপজেলায় ১০টি কলেজ, ৩টি বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, ৫৩টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ১৪৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ২১টি মাদ্রাসা রয়েছে।
নং | নাম | ঠিকানা | ধরন |
---|---|---|---|
০১ | কুমারখালি সরকারি কলেজ | কুমারখালী | সরকারি |
০২ | বাঁশগ্রাম আলাউদ্দিন আহমেদ ডিগ্রী কলেজ | বাঁশগ্রাম | এমপিওভুক্ত |
০হ৩ | জি ডি শামসুদ্দিন আহমেদ কলেজিয়েট স্কুল | গোপালপুর | |
০৪ | আলাউদ্দিন আহমেদ ডিগ্রি কলেজ | আলাউদ্দিন নগর | |
০৫ | পান্টি ডিগ্রি কলেজ | পান্টি | |
০৬ | চৌরঙ্গী কলেজ | চৌরঙ্গী |
নং | নাম | ঠিকানা | ধরন |
---|---|---|---|
০১ | কুমারখালী সরকারি পাইলট বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় | কুমারখালী | সরকারি |
০২ | আলাউদ্দি আহমেদ মাধ্যমিক বিদ্যালয় | আলাউদ্দিন নগর | এমপিওভুক্ত |
০৩ | পান্টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় | পান্টি | |
০৪ | খোরশেদপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় | শিলাইদহ | |
০৫ | কয়া ইসলামীয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় | কয়া |
কুমারখালী উপজেলায় সড়কপথে মোট রাস্তার পরিমাণ ৮৮১ কিলোমিটার (পাকারাস্তা ১৪২ কিলোমিটার এবং কাঁচারাস্তা ৭৩৯ কিলোমিটার)। এছাড়া মোট রেলপথের দৈর্ঘ্য ১৯.৫ কিলোমিটার ও ২টি রেলস্টেশন রয়েছে। এ উপজেলার সাথে পাবনা জেলার সাথে যোগাযোগের জন্য রয়েছে শিলাইদহ-চরসাদীপুর ও কুমারখালী-যদুবয়রা ঘাট।
কুমারখালী উপজেলায় ১টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ১টি উপজেলা মাতৃমঙ্গল কেন্দ্র ও ১৪টি ইউনিয়ন পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র রয়েছে।
কুমারখালী উপজেলার জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৪২.২৬%, অকৃষি শ্রমিক ৮.০৬%, শিল্প ৯.৬৩%, ব্যবসা ১৮.৫২%, পরিবহন ও যোগাযোগ ৫.৩২%, চাকরি ৫.৮৮%, নির্মাণ ২.১৭%, ধর্মীয় সেবা ০.২২%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.২৯% এবং অন্যান্য ৭.৬৫%।
কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৪৬.০২%, ভূমিহীন ৫৩.৯৮%। শহরে ২৪.৩৫% এবং গ্রামে ৪৭.৫১% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।
প্রধান কৃষি ফসল ধান, গম, পাট, আখ, ভূট্টা।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি নীল, কাউন, যব।
প্রধান ফল-ফলাদি আম, নারিকেল, কাঁঠাল, লিচু, তাল।
মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার এ উপজেলায় মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগি খামার এবং হ্যাচারি ও নার্সারি রয়েছে।
কুমারখালী উপজেলায় মোট ৫,৯৯৩টি (বড়- ৯টি, মাঝারি- ২৭০টি এবং ক্ষুদ্র- ৫,৭১৪টি) সশিল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এখানকার উল্লেখযোগ্য শিল্প প্রতিষ্ঠান গুলো-
কুমারখালী উপজেলায় ৪৪০টি মসজিদ, ৬২টি মন্দির ও ৬টি গির্জা রয়েছে।
কুমারখালী উপজেলায় প্রাচীন নিদর্শনাদির মধ্যে রয়েছে:
১৯৭১ সালের ২৩ মার্চ কুমারখালীতে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়। ৬ আগস্ট মুক্তিযোদ্ধারা স্থানীয় একজন রাজাকারের বাড়ি আক্রমণ করতে গেলে ৫ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। এছাড়াও মুক্তিযুদ্ধের সময় যদুবয়রা ইউনিয়নের বরইচারা গ্রামে পাকবাহিনী ও স্থানীয় রাজাকারদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে একজন রাজাকার নিহত হয়। ৯ ডিসেম্বর কুমারখালী উপজেলা শত্রুমুক্ত হয়। এ উপজেলায় ৩৯ জন মুক্তিযোদ্ধা ও ৬ জন বীরাঙ্গনা রয়েছেন। কুমারখালীতে ০২টি গণকবর আছে।
পদ্মা গড়াই বিধৌত সমতল অঞ্চল। নদী অববাহিকায় নবগঠিত বিস্তীর্ণ চরাঞ্চল। তাছাড়া পুরাতন ভূমি এলাকায় তুলনামূলক নিচু বিল অঞ্চল রয়েছে। কুমারখালী উপজেলায় অনেকগুলো নদী রয়েছে।
নদীগুলো হল:
কুমারখালী উপজেলাটি গড়াই নদীর তীরে অবস্থিত।[3][4]
কুমারখালী উপজেলার উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিবর্গ:
সংসদীয় আসন | জাতীয় নির্বাচনী এলাকা | সংসদ সদস্য | রাজনৈতিক দল |
---|---|---|---|
৭৮ কুষ্টিয়া-৪ | কুমারখালী উপজেলা ও খোকসা উপজেলা | সেলিম আলতাফ জর্জ | বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ |
ক্রম নং | পদবী | নাম |
---|---|---|
০১ | উপজেলা চেয়ারম্যান | আব্দুল মান্নান খান |
০২ | ভাইস চেয়ারম্যান | মোহাম্মদ সাইদুর রহমান |
০৩ | মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান | মেরিনা আক্তার মেরিনা |
০৪ | উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা |
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.