Loading AI tools
বীর উত্তম খেতাবপ্রাপ্ত বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের মুক্তিযোদ্ধা উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
শরফুদ্দীন আহমেদ (জন্ম: অজানা - মৃত্যু: ১০ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭২) বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতা যুদ্ধে তার সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর উত্তম খেতাব প্রদান করে। [1]
শরফুদ্দীন আহমেদের পৈতৃক বাড়ি কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী উপজেলার সুলতানপুর গ্রামে। তার বাবার নাম মো. শামসুল আলম এবং মায়ের নাম হাসিনা আলম। চার ভাইবোনের মধ্যে তিনি ছিলেন দ্বিতীয়।
১৯৬৭ সালে বিমান চালানোর বাণিজ্যিক লাইসেন্স পান শরফুদ্দীন আহমেদ। ১৯৭১ সালে পূর্ব পাকিস্তান কৃষি বিভাগের প্ল্যান্ট প্রটেকশন কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করতেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি মে মাসে ভারতে যান। সেপ্টেম্বর মাসের শেষদিকে মুক্তিবাহিনীর বিমান উইং গঠিত হলে তাকে এতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। বিমান উইংয়ের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসেবে তিনি প্রশিক্ষণ নেন অটার বিমান দিয়ে যুদ্ধ করার। প্রথম অপারেশনের সুযোগ পান ৫ ডিসেম্বর। পরে তিনি অটার বিমান দিয়ে ৭ ও ৮ ডিসেম্বর মৌলভীবাজারে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর অবস্থানে আক্রমণ চালান।[2]
১৯৭১ সালের ৫ ডিসেম্বর কুশিয়ারা নদীর তীরে ভারতের ছোট এক বিমান ক্ষেত্র থেকে আকাশে উড়ল ছোট একটি বিমান—‘অটার’। বিমানের চালকের আসনে শরফুদ্দীন আহমেদ ও আকরাম আহমেদ (বীর উত্তম)। আরও আছেন একজন গানার। বিমানে আছে রকেট ও মেশিনগান। স্বল্পগতির বিমানটি সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশের ভেতরে ঢুকে এগিয়ে যেতে থাকল লক্ষ্যস্থলের দিকে। শরফুদ্দীন আহমেদ ও আকরাম আহমেদ যতটা সম্ভব কৌশলে বিমান চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। একসময় তারা পৌঁছে গেলেন লক্ষ্যস্থলে। তারপর আকাশের নির্দিষ্ট স্থানে বারবার চক্কর দিয়ে কয়েকটি রকেট ছুড়লেন। একই সময় গানার মেশিনগান দিয়ে গুলি করলেন। নিচে ভূমিতে থাকা পাকিস্তানি সেনারা জীবন বাঁচাতে ছোটাছুটি করতে থাকল। বিস্ফোরিত রকেটের স্প্লিন্টার ও গুলিতে নিহত এবং আহত হলো অনেক পাকিস্তানি সেনা। মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত পর্যায়ে মুক্তিবাহিনী মিত্রবাহিনীর সহযোগিতায় বৃহত্তর সিলেট মুক্ত করার জন্য যৌথভাবে অভিযান শুরু করে। তারা সীমান্ত অতিক্রম করে আটগ্রাম-চরখাই-সিলেট, জাফলং-ছোটখেল-গোয়াইনঘাট-কোম্পানিগঞ্জ-সালুটিকর-সিলেট এবং ছাতক-গোবিন্দগঞ্জ-লামাকাজিঘাট-সিলেট অক্ষ ধরে অগ্রসর হতে থাকেন। এ সময় পাকিস্তানি সেনারা সীমান্ত এলাকা থেকে পশ্চাদপসরণ করে বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেয়। তারা মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীকে প্রবল বাধা দিতে থাকে। এতে মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর অগ্রযাত্রা শ্লথ হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় পাকিস্তানি অবস্থানে বিমান থেকে হামলার প্রয়োজন হয়। তখন মুক্তিবাহিনীর নবগঠিত বিমান উইং পাকিস্তানি অবস্থানের ওপর বিমান থেকে হামলা করে মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীকে সাহায্য করতে থাকে। কুশিয়ারা নদীর তীরে এক স্থানে পাকিস্তানিরা বিপুল সেনা সমাবেশ ঘটায়। ওই পথ দিয়ে মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর যোদ্ধারা অগ্রসর হচ্ছিলেন। শরফুদ্দীন আহমেদ ও আকরাম আহমেদ সাহসিকতার সঙ্গে পাকিস্তানি অবস্থানে হামলা চালিয়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেন। বিমান হামলায় বিপুলসংখ্যক পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়। আহতও হয় অনেক। এরপর পাকিস্তানি সেনাদের মনোবল ভেঙে পড়ে। সেদিন ওই বিমান হামলা পরিচালনা ছিল যথেষ্ট ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ, স্বল্পগতির অটার বিমানটি যেকোনো সময় পাকিস্তানি সেনাদের মেশিনগানের গুলিতে ভূপতিত হতে পারত। [3]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.