কানাইলাল ভট্টাচার্য (২২ আগস্ট ১৯০৯ - ২৭ জুলাই ১৯৩১) ছিলেন ভারতের ব্রিটিশবিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন অন্যতম ব্যক্তিত্ব এবং অগ্নিযুগের বিপ্লবী।[1]

দ্রুত তথ্য কানাইলাল ভট্টাচার্য, জন্ম ...
কানাইলাল ভট্টাচার্য
Thumb
বিপ্লবী কানাইলাল ভট্টাচার্য
জন্ম১৯০৯ সাল
মৃত্যু২৭ জুলাই, ১৯৩১
পরিচিতির কারণস্বাধীনতা সংগ্রামী বিপ্লবী
আন্দোলনব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলন
বন্ধ

প্রাথমিক জীবন

কানাইলাল ভট্টাচার্যের জন্ম পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার মজিলপুরে। তার পিতার নাম নগেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য।[2] মাতার নাম কাত্যায়নী দেবীI চার ভাইয়ের মধ্যে তিনি ছিলেন সেজো। দুই দাদা কলকাতায় সামান্য চাকরী করতেন। কানাইলাল সেখানে ইলেকট্রিকের কাজ শিখতেন এবং দাদার একটি মুদির দোকানেও বসতেন। দোকানে বসেই তিনি কয়েকটি স্বদেশী বই পড়েন। বালেশ্বরের যুদ্ধ, চট্টগ্রামের অস্ত্রাগার লুন্ঠন প্রভৃতি ঘটনা তাঁকে আলোড়িত করে। ১৯৩১ সালের প্রথম দিকে জয়নগর মজিলপুর ব্যায়াম সমিতির প্রথম বাৎসরিক প্রতিষ্ঠা দিবসের উৎসবে সভাপতির পদ অলংকৃত করেন সুভাষ চন্দ্র বসু। তাঁকে স্বেচ্ছাসেবকরা বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজ এর মাধ্যমে অভিবাদন জানায়। ওই কুচকাওয়াজে প্ল্যাটুন কমান্ডার হিসেবে অংশ নিয়েছিলেন কানাইলাল। ওই দিনই তিনি মন্মথ ঘোষ ও সুনীল চট্টোপাধ্যায় এর হাত ধরে স্বাধীনতা বিপ্লব আন্দোলনে যোগ দেন এবং পরের দিনই দীক্ষিত হন। তিনি বিপ্লবী সাতকড়ি বন্দ্যোপাধ্যায় এর মতো সুপরিচিত বিপ্লবীদের সংস্পর্শে আসেন। তিনি মজিলপুর জে এম ট্রেনিং স্কুলে পড়াশুনা করেন।

গার্লিক হত্যা

কানাইলাল ভট্টাচার্য বিমল গুপ্ত ছদ্মনামে দীনেশ গুপ্তরামকৃষ্ণ বিশ্বাসের ফাঁসির দণ্ডাদেশকারী বিচারক গার্লিককে ২৭ জুলাই, ১৯৩১ তারিখে আলিপুর জর্জ কোর্টের কক্ষের মধ্যেই ৩৮ বোরের কোল্ট জুপিটার রিভলভার থেকে গুলি চালিয়ে হত্যা করেন এবং সঙ্গে থাকা পটাশিয়ম সায়্নাইড মুখে ঢেলে নেন ।[3] উপস্থিত পুলিশের গুলিতে তার শরীর ঝাঁজরা হয়ে যায়। তার পকেটে একখণ্ড কাগজ পাওয়া যায়। তাতে লেখা ছিলো "ধ্বংস হও; দীনেশ গুপ্তকে ফাঁসি দেওয়ার পুরস্কার লও" ইতি ----- বিমল গুপ্ত। মেদিনীপুরের ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট পেডির হত্যার ব্যাপারে পুলিস বিমল দাশগুপ্তকে খুঁজে বেড়াচ্ছিল। তিনি ছদ্মনাম নিয়ে নিজ জীবনের বিনিময়ে বিমল দাশগুপ্তকে রক্ষা করার চেষ্টা করেন। পুলিস দীর্ঘদিন তার প্রকৃত পরিচয় উদ্ধার করতে পারেনি।[2] এমনকি শনাক্তকরণের সময় কানাইলালের মহীয়সী মাতা কাত্যায়নী দেবীও তার দেহকে অস্বীকার করে বলেন "এ তার কানু নয়"। উল্লেখ্য এই ঘটনার আগের দিন অর্থাৎ ২৬ জুলাই ভোরে কসবা উত্তরপাড়ার বিল ধরে ডিঙ্গি চড়ে তপসিয়ায় ধাপার মাঠে এসে এক জঙ্গলে সুনীল চট্টোপাধ্যায়, জিতেন ঘোষ, প্রভাত ঘোষের উপস্থিতিতে টার্গেট প্র্যাকটিস করেন কানাইলাল | তার কিছুদিন আগেই তিনি টাইফয়েড থেকে উঠেছেন | নামহীন, পরিচয়হীন শহীদ হয়ে থেকে, অপর এক বিপ্লবীকে বাঁচিয়ে যাওয়ার এই চেষ্ঠা ইতিহাসে বিরল। কানাইলাল ভট্টাচার্য বেঙ্গল ভলেন্টিয়ার্স দলের সদস্য ছিলেন।[4] তিনি বিপ্লবী নেতা সাতকড়ি বন্দ্যোপাধ্যায়ের কর্মী। সাতকড়িবাবুই তাকে একাজে পাঠান।[5]

সম্মাননা

এই দেশপ্রেমিকের স্মৃতিতে "আলীপুর বেকার রোড"-এর নাম পরিবর্তন করে "বিপ্লবী কানাইলাল ভট্টাচার্য সড়ক" নামকরণ করা হয়েছে। মজিলপুরের একটি রাস্তাও তার নামে নামকরণ করা হয়েছে। মজিলপুরের দত্ত বাজারে তার পূর্বপুরুষের বাড়ির কাছে তার একটি ব্রোঞ্জের মূর্তি রয়েছে।

তথ্যসূত্র

Wikiwand in your browser!

Seamless Wikipedia browsing. On steroids.

Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.

Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.