Loading AI tools
ব্রিটিশ বিরোধী বাঙালি বিপ্লবী উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
বিমল দাশগুপ্ত (২৯ এপ্রিল ১৯১০- ৩ মার্চ ২০০০) একজন ভারতীয় সশস্ত্র বিপ্লববাদী ছিলেন।
ভারতীয় সশস্ত্র বিপ্লবী বিমল দাশগুপ্ত | |
---|---|
জন্ম | ২৯ এপ্রিল, ১৯১০ |
মৃত্যু | ৩ মার্চ, ২০০০ |
আন্দোলন | ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন |
পিতা-মাতা |
|
তার জন্ম বাংলাদেশের বরিশাল জেলার ঝালকাঠিতে। পিতা কবিরাজ অক্ষয়কুমার দাশগুপ্ত। কবিরাজি চিকিৎসার সূত্রে পিতা মেদিনীপুর এসে বসবাস শুরু করেন। বিমল দাশগুপ্ত ১২/১৩ বছর বয়েস থেকেই বিপ্লবী আন্দোলনের সাথে যোগাযোগ রাখতেন। সশস্ত্র সংগ্রামে অংশগ্রহণ করবার আগে ১৯২০ সালে অসহযোগ আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন। মেদিনীপুর হিন্দু স্কুলের ছাত্র ছিলেন[1]।
১৯২৮ সালে সুভাষচন্দ্র বসু বিপ্লবী দীনেশ গুপ্তকে বেঙ্গল ভলেন্টিয়ার্সের মেদিনীপুর শাখার দায়িত্ব দেন। দীনেশ গুপ্তের অক্লান্ত চেষ্টায় মেদিনীপুর জেলায় বিপ্লবী আন্দোলন অন্য মাত্রা পায়। বিমল দাশগুপ্ত হয়ে ওঠেন দীনেশ গুপ্তের মন্ত্রশিষ্য। লবণ আইন অমান্যের সময় জেলাশাসক জেমস পেডি দীঘা সমুদ্রতীরে সত্যাগ্রহীদের ওপর পাশবিক অত্যাচার চালিয়েছিল। এর প্রতিশোধ নিতে বিপ্লবীরা সিদ্ধান্ত নেন পেডি হত্যার। জ্যোতিজীবন ঘোষের সাথে বিমল দাশগুপ্ত এই দায়িত্ব পান। ১৯৩১ খ্রিষ্টাব্দের ৭ এপ্রিল মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুলে প্রদর্শনী দেখতে এলে পেডি সাহেব এই দুই বিপ্লবীর গুলিতে নিহত হয়। দুজনেই পালাতে সক্ষম হন। বিমল দাশগুপ্ত আত্মগোপন করে ঝরিয়া অঞ্চলের কয়লাখনি তে চাকরি নেন ও পরে কলকাতার মেটিয়াবুরুজেও থাকতেন, পুলিশ সন্ধান পায়নি[2]।
ক্লাইভ স্ট্রীটে ১৯৩২ সালের ২৯ অক্টোবর বিমল দাশগুপ্ত কলকাতায় ইউরোপীয় অ্যাসোসিয়েশনের অফিসে ঢুকে সকাল সাড়ে এগারোটায় তাঁর রিভলবার থেকে প্রেসিডেন্ট মিঃ ই ভিলাসকে গুলি করেন। মিঃ ভিলাস আক্রমণ থেকে বেঁচে গিয়েছিলেন তবে বিমলকে তখন ঘরের ভিতরে আরও দু'জন ইউরোপিয়ান ধরে ফেলেছিল। বিচারে তিনি হিজলি ও চট্টগ্রামে ইউরোপীয় সন্ত্রাসের প্রতিশোধ নিতেই এ অপরাধ করেছেন বলে স্বীকার করেন। ১৯৩২ সালের ১২ নভেম্বর বিমলকে দশ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
পেডি মার্ডার কেসের আসামী হিসেবে পুলিশ তাকে শেষ পর্যন্ত খুঁজে পেল। কারণ বিপ্লবী কানাইলাল ভট্টাচার্য গার্লিককে হত্যা করেন ও শহীদ হন এই বিমল দাশগুপ্ত (বা বিমল গুপ্ত) নাম নিয়ে যাতে করে পুলিশ আসল বিমল দাশগুপ্ত কে খোঁজা ছেড়ে দেয়। শহীদ কানাইলাল ভট্টাচার্যের নামহীন হয়ে থেকে যাওয়া ও অন্য এক বিপ্লবীকে পুলিশের হাত হতে বাঁচিয়ে যাওয়ার এই আত্মত্যাগ ইতিহাসে বিরল[3]। সুভাষচন্দ্রের উদ্যোগে তিনজন ব্যারিস্টার দাঁড়িয়েছিলেন স্পেশাল ট্রাইবুন্যালে বিপ্লবীদের পক্ষে। জ্যোতিজীবন ঘোষ প্রমাণাভাবে ছাড়া পেলেন এবং সওয়ালের সময় প্রধান সাক্ষী সুশীল দাস জানান 'পেডি হত্যাকারী বিমল দাশগুপ্ত নয়'। বিমল দাশগুপ্তকে বাঁচাতে মেদিনীপুরের রাজা নরেন্দ্রলাল খান সুশীল দাসকে একথা বলতে নির্দেশ দেন। পেডি হত্যায় খালাস পেলেও ভিলিয়ার্স হত্যা মামলায় দশ বছর কারাদণ্ড হয় তার[1]।
১৯৩২ খ্রিষ্টাব্দের মাঝামাঝি তাকে আন্দামান সেলুলার জেলে পাঠানো হয়। ১৯৩৬ সালে সেখানে রাজনৈতিক বন্দীর মর্যাদার দাবীতে অনশন করেন। সুভাষচন্দ্র ও মুজফফর আহমেদের মধ্যস্থতায় অনশন প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। ১৯৩৮ সালে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয় যদিও মুক্তি পাননি। চার বছর বাংলা দেশের বিভিন্ন জেলে বন্দীজীবন যাপন করেন বিমল দাশগুপ্ত[1]।
১৯৪২ সালে মুক্তিলাভ নিজ বাড়ি মেদিনীপুরেই জমিজমা দেখাশোনা করতেন। স্বাধীনতার পরে আনন্দবাজার পত্রিকার সেলস ইনস্পেকটর হিসেবে কিছুদিন কাজ করেছেন।
৩ মার্চ ২০০০ সালে মারা যান এই অগ্নিযুগের বিপ্লবী।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.