Loading AI tools
বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
অং শৈ প্রু চৌধুরী ছিলেন বান্দরবানের বোমাং সার্কেলের ১৫তম রাজা এবং রাজনীতিবিদ। পাকিস্তান আমল এবং স্বাধীন বাংলাদেশে তিনি বিভিন্ন সময় সংসদ সদস্য ও মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানের পক্ষে অবস্থান নেন এবং বিভিন্ন স্বাধীনতাবিরোধীদের তালিকায় তাঁর নাম এসেছে।[2][3]
অং শৈ প্রু চৌধুরী | |
---|---|
১৫তম বোমাং রাজা (সার্কেল প্রধান, বোমাং সার্কেল) | |
কাজের মেয়াদ ১৯ নভেম্বর ১৯৯৮ – ১ আগস্ট ২০১২ | |
পূর্বসূরী | মং শৈ প্রু চৌধুরী |
উত্তরসূরী | ক্য সাইন প্রু চৌধুরী |
প্রতিমন্ত্রী খাদ্য মন্ত্রণালয় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার | |
কাজের মেয়াদ ১৯৭৯ – ১৯৮১ | |
রাষ্ট্রপতি | জিয়াউর রহমান |
সংসদ সদস্য পার্বত্য চট্টগ্রাম-২ আসন (বান্দরবান) জাতীয় সংসদ | |
কাজের মেয়াদ ২ এপ্রিল ১৯৭৯ – ২৪ মার্চ ১৯৮২ | |
পূর্বসূরী | চাইথোয়াই রোয়াজা |
উত্তরসূরী | সংসদ বাতিল[1] |
মন্ত্রী সংখ্যালঘু, সমবায়, প্রাণিসম্পদ, মৎস্য এবং বন ও পরিবেশ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত ডা.আবদুল মোতালেব মালিক মন্ত্রিসভা পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক সরকার | |
কাজের মেয়াদ ১৭ সেপ্টেম্বর ১৯৭১ – ১০ ডিসেম্বর ১৯৭১ | |
রাষ্ট্রপতি | ইয়াহিয়া খান |
গভর্নর | ডা. আবদুল মোতালেব মালিক |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | ১ আগস্ট ১৯১৫ |
মৃত্যু | ৮ আগস্ট ২০১২ |
রাজনৈতিক দল | বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল |
দাম্পত্য সঙ্গী | আবাইন প্রু |
সন্তান | চহ্লা প্রু জেমি সাচিং প্রু জেরী |
প্রাক্তন শিক্ষার্থী | সেন্ট প্লাসিড্স হাই স্কুল চট্টগ্রাম; স্কটিশ চার্চ কলেজ, কলকাতা |
অং শৈ প্রু চৌধুরী ১৯১৫ সালে বান্দরবানের বোমাং রাজবাড়ীতে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা প্রয়াত রাজকুমার থুই অং প্রু, যিনি ছিলেন নবম বোমাং রাজা সাক হ্নাই ঞো এর পঞ্চম পুত্র। মাতা প্রয়াত রাজকুমারী হ্লা মো সাং।[3]
অং শৈ প্রু চট্টগ্রামের সেন্ট প্লাসিড বিদ্যালয়ে ইংলিশ মিডিয়ামে লেখাপড়া শুরু করেন। স্কুল জীবন শেষে কলকাতার স্কটিশ চার্চ কলেজে অধ্যয়ন করেন। সে সময় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে কলেজ জীবন অসমাপ্ত হয়ে যায়।[3]
১৯৪১ সালে চট্টগ্রাম ফ্রন্টিয়ার পুলিশ ফোর্সে সাব-ইন্সপেক্টর পদে যোগদান করেন। তিনি দীর্ঘদিন এই পদে কর্মকালীন প্রত্যন্ত পার্বত্য অঞ্চলে বিভিন্ন আবাসিক স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি বান্দরবানের লামা থানায় দুই দফায় দারোগা ছিলেন। ১৯৫০ সালে দ্বিতীয় শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট (সম্মানসূচক) হিসেবে দায়িত্ব পালন করে। পরবর্তীকালে চাকরি ছেড়ে সমবায় আন্দোলনে জড়িত হন।[3]
অং শৈ প্রু বান্দরবান সদরে প্রথম নির্বাচিত ইউনিয়ন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলা কাউন্সিলের প্রথম নির্বাচিত ভাইস চেয়ারম্যান। ১৯৭০ সালের ১৭ ডিসেম্বরের প্রাদেশিক নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে পার্বত্য চট্টগ্রামের দুটি আসনের মধ্যে বান্দরবান থেকে প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭১ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর গঠিত ডা. মালেক মন্ত্রিসভায় তিনি মন্ত্রী হিসেবে সংখ্যালঘু, সমবায়, প্রাণিসম্পদ বিভাগ, বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন। ১৪ ডিসেম্বর এই সরকারের পতন ঘটে এবং স্বাধীনতার পর দালাল আইনে কারাবন্দী হন। তবে জিয়াউর রহমানের আমলে মুক্তিলাভ করেন। ১৯৭৯ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে পুনরায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং জিয়াউর রহমান সরকারের খাদ্য প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।[4]
অন্যান্য রাজবংশে রাজপুত্রের রাজপদে অভিষিক্ত হওয়ার নীতি রয়েছে। কিন্তু বোমাং বংশে রাজপুত্র নন, রাজবংশের সবচেয়ে বয়োজ্যেষ্ঠ সদস্য বোমাং রাজপদের উত্তরাধিকারী হয়ে থাকেন। ষষ্ঠ বোমাং রাজা থেকে সবচেয়ে বয়োজ্যেষ্ঠ সদস্য রাজপদের অধিকারী হওয়ার ঐতিহ্য প্রবর্তিত হয়েছিল। কিন্তু ১৪তম বোমাং রাজা মং শৈ প্রু চৌধুরীর সময় কিছুটা ব্যতিক্রম হয়। ১৩তম বোমাং রাজা পর্যন্ত প্রজা ও রাজপরিবার রাজপদে রাজা হিসেবে অভিষেক বা অধিষ্ঠিত করে সরকারের স্বীকৃতি নেওয়ার ঐতিহ্য প্রচলিত ছিল। ১৯৫৯ সালে ১৩ তম বোমাং রাজা ক্য জ সাইন প্রু চৌধুরীর মৃত্যুর পর রাজপদের জন্য দুজন প্রতিদ্বন্দ্বী (মং শৈ প্রু এবং অং শৈ প্রু) থাকায় রাজা হিসেবে সরকার থেকে নিয়োগ দেওয়ার পর অভিষেক অনুষ্ঠান আয়োজনের রীতি চালু হয়।[5] রাজার আসনে বসা নিয়ে বোমাং রাজপরিবারের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব সেই সময় থেকেই শুরু। অং শৈ প্রুকে পেছনে ফেলে রাজার আসনে বসেন মং শৈ প্রু চৌধুরী। তিনি অং শৈ প্রু চৌধুরীর চেয়ে বয়সে মাত্র এক দিনের ছোটো ছিলেন। ১৯৯৬ সালে মং শৈ প্রু চৌধুরীর মৃত্যুর পর শেখ হাসিনা সরকার অং শৈ প্রু চৌধুরীকে তাঁর স্বাধীনতা-বিরোধিতা ও বিএনপি সমর্থনের কারণে রাজা না করে ১৩তম বোমাং রাজার পুত্র ক্য সাইন প্রু চৌধুরীকে (কে এস প্রু চৌধুরী) রাজা হিসেবে নিয়োগ দেয়। রাজা অং শৈ প্রু চৌধুরী সরকারের উপরিউক্ত সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রথমে সিভিল আপীল নং- ৮/৯৭ দায়ের করেন। অতঃপর সিভিল আপীলের বিরুদ্ধে মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের রীট পিটিশন নং- ৫১০১/১৯৯৬ দায়ের করেন। মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগের ১২/০১/১৯৯৭ইং প্রদত্ত আদেশে রীট পিটিশন খারিজ হয়।
উক্ত আদেশের বিরুদ্ধে মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের আপীল বিভাগে অং শৈ প্রু আপীল দায়ের করলে আপীল বিভাগ মামলাটি গ্রহণ করে। ১১/১২/১৯৯৭ তারিখের আপিল শুনানিতে বেঞ্চ সভাপতি মাননীয় বিচারপতি মোস্তফা কামাল তাঁর আদেশ প্রদানের সময় নিম্নোক্ত বিষয়কে মামলার মূল বিবেচ্য বিষয় হিসেবে বিবেচনা করেন (ইংরেজিতে মূল আদেশ ও পর্যবেক্ষণের অংশবিশেষের বাংলা অনুবাদ):
আদালত কেবল এই বিষয়টিকেই বিবেচনা করবে যে রাজা নিয়োগে আইন, প্রচলিত ঐতিহ্য ও প্রতিষ্ঠিত রীতিনীতি মেনে চলা হয়েছে কি না। যদি মানা হয়ে থাকে, তবে বিচার বিভাগ কোন হস্তক্ষেপ করবে না। কিন্তু রীতিনীতির বাইরের কোন বিষয় যদি নির্বাহী সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করে তবে আদালতের অবশ্যই ক্ষমতা আছে বাছাইকে (বোমাং রাজা বাছাই) অবৈধ ঘোষণা করার। উপজাতীয় জনগণের কোন ধরনের সংবেদনশীলতাকে অগ্রাহ্য করা উচিত নয়।
অতঃপর মাননীয় বিচারপতি তার প্রদত্ত আদেশে উল্লেখ করেন:
পূর্বোল্লিখিত বিষয়গুলোর কারণে আমরা মনে করি না যে রুলের উত্তরদাতারা (নির্বাহী বিভাগের প্রতিনিধিরা) বোমাং রাজা নিয়োগে সঠিক ও প্রাসঙ্গিক বিবেচনা দ্বারা চালিত হয়েছে। বরং তারা কিছু অপ্রাসঙ্গিক বিষয়কে বিবেচনায় এনেছে যা পুরো নিয়োগ ও স্বীকৃতির প্রক্রিয়াকে কলুষিত করেছে।
তাই এই আপিল কোন আদেশ ছাড়াই গৃহীত হচ্ছে। ০৪/১১/১৯৯৬ তারিখে বাংলাদেশ গেজেটে প্রকাশিত বিতর্কিত প্রজ্ঞাপন (কে এস প্রুকে রাজা ঘোষণার প্রজ্ঞাপন) স্মারক নং-৩২/৯৬/২০৫ এর কোন আইনি বৈধতা থাকবে না। [6]
পরবর্তীতে অং শৈ প্রু নিজের বয়োজ্যেষ্ঠতার জোরে আপিল বিভাগে নিয়মানুযায়ী রাজা হওয়ার অধিকারের পক্ষে রায় পান। অবশেষে ১৯৯৮ সালের ১৯ নভেম্বর তিনি ১৫তম বোমাং রাজা হিসেবে অভিষিক্ত হন।[4]
১৯৭১ সালে বোমাং রাজপুত্র অং শৈ প্রু চৌধুরী ছিলেন বাংলাদেশের স্বাধীনতাবিরোধী। প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য ও মন্ত্রী এই রাজপুরুষ (তখন রাজা ছিলেন মং শৈ প্রু চৌধুরী) পাকিস্তানের পক্ষাবলম্বন করেন এবং হানাদার বাহিনীর সক্রিয় সদস্য ছিলেন। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে তিনি মুসলিম লীগের টিকিটে প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। তার পরিবারের অনেক সদস্য পাকিস্তানের পক্ষ অবলম্বন করে। তবে অং শৈ প্রু চৌধুরী স্বাধীনতার পর দালাল আইনে জেলে বন্দি হন (ইব্রাহিম পৃ. ৭৮)। হাসান হাফিজুর রহমান সম্পাদিত বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ: দলিলপত্র, সপ্তম খন্ডের ৫৪০ পৃষ্ঠায় আছে, "পূর্ব পাকিস্তান সরকারের তৎকালীন গভর্নর ডা.আবদুল মোতালেব মালেকের মন্ত্রিসভায় একজন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি হিসেবে মনোনীত হন অং শৈ প্রু চৌধুরী। প্রদেশের মনোনীত সংখ্যালঘু মন্ত্রী অং শৈ প্রু অন্য সবার সাথে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হননি। কারণ তিনি চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা আসার জন্য নির্দিষ্ট বিমানে আরোহণ করতে পারেননি। তাকে বন, সমবায় ও মৎস্য দফতরের দায়িত্ব দেয়া হয়। তিনি সংখ্যালঘু বিষয়ও দেখাশোনা করেছেন।"
চাকমা রাজা ত্রিদিব রায় এবং বোমাং রাজা অং শৈ প্রু’র নাম বাংলাদেশে বিভিন্ন সময়ে তৈরি যুদ্ধপরাধীর তালিকায় রয়েছে।[7][8][9]
তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামের সমবায় আন্দোলনের অগ্রদূত। এ সময় সংগঠনের মাধ্যমে এলাকার সাধারণ মানুষকে সুদখোর মহাজনদের শোষণ থেকে নিষ্কৃতি পাওয়ার ব্যাপারে অনন্য অবদান রাখেন। জনসেবা কাজে সফল নেতৃত্বের জন্য ১৯৬২ সালের শ্রেষ্ঠ সমবায়ী হিসেবে পুরস্কার লাভ করেন এবং ১৯৬৮ সালে তদানীন্তন সরকার কর্তৃক টি.কে. খেতাবে ভূষিত হন। স্বাধীনতা উত্তর সময়েও জাতীয় সংসদের সদস্য ও মন্ত্রী পদে অধিষ্ঠিত হয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রভূত উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের সূচনা করেন।বান্দরবান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়,বান্দরবান সরকারি কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠায় অবদান রাখেন। তাছাড়া ক্যাডেট কলেজ,কারিগরিও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য উচ্চশিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পার্বত্যবাসীদের জন্য ভর্তির সংরক্ষিত আসন ব্যবস্থা, টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা, ফায়ার ব্রিগেড স্থাপন ও বান্দরবানকে জেলা পর্যায়ে উন্নীতকরণে এই নেতার অগ্রণী ভূমিকা রয়েছে।[3]
অং শৈ প্রু নিজের মামাতো বোন আবাইন প্রু এর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তিনি ৬ পুত্র ও ২ কন্যার পিতা হন। তাঁর জ্যেষ্ঠ পুত্র চহ্লাপ্রু জেমি বর্তমান রাজার পর বোমাং রাজপরিবারে দ্বিতীয় জ্যেষ্ঠ সদস্য এবং বোমাং রাজসিংহাসনের প্রথম উত্তরাধিকারী। তাঁর আরেক পুত্র সাচিং প্রু জেরী বর্তমানে বান্দরবান জেলা বিএনপির সভাপতি এবং একসময় জাতীয় সংসদের সদস্য ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। সাবেক নারী সাংসদ মা ম্যা চিং তাঁর নিকটাত্মীয়াা।[4]
বোমাং রাজা অং শৈ প্রু চৌধুরী ২০১২ সালের ৮ আগস্ট বুধবার সকাল সাড়ে ৯টায় নিজ বাড়িতে বার্ধক্যজনিত কারণে তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৮ বছর। অং শৈ প্রু চৌধুরীর মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার গভীর শোক প্রকাশ করেছিলেন। শোকবার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাজা অং শৈ প্রু চৌধুরী বান্দরবান পার্বত্য জেলার বিভিন্ন সম্প্রদায়ের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক উন্নয়নে বিরাট অবদান রেখেছেন। তাঁর মৃত্যুতে পার্বত্যবাসী একজন নিবেদিতপ্রাণ ব্যক্তিত্বকে হারাল।[10]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.