ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ক্রিকেটার উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
হারম্যান ক্লারেন্স গ্রিফিথ (ইংরেজি: Herman Griffith; জন্ম: ১ ডিসেম্বর, ১৮৯৩ - মৃত্যু: ১৮ মার্চ , ১৯৮০) ত্রিনিদাদের অ্যারিমা এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন।
ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | হারম্যান ক্লারেন্স গ্রিফিথ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | অ্যারিমা, ত্রিনিদাদ | ১ ডিসেম্বর ১৮৯৩|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
মৃত্যু | ১৮ মার্চ ১৯৮০ ৮৬) ব্রিজটাউন, সেন্ট মাইকেল, বার্বাডোস | (বয়স|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | ডানহাতি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | ডানহাতি ফাস্ট | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল |
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
টেস্ট অভিষেক (ক্যাপ ৬) | ২৩ জুন ১৯২৮ বনাম ইংল্যান্ড | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ টেস্ট | ১২ আগস্ট ১৯৩৩ বনাম ইংল্যান্ড | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ঘরোয়া দলের তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বছর | দল | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯২১–১৯৪১ | বার্বাডোস | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ক্রিকইনফো, ২৭ ডিসেম্বর ২০১৬ |
ইংল্যান্ড সফরে দলের সর্বপ্রথম টেস্ট খেলায় অংশগ্রহণ করেন তিনি। ঐ সফরে দলের শীর্ষস্থানীয় বোলার ছিলেন হারম্যান গ্রিফিথ।
ক্যারিবীয় অঞ্চলের আন্তঃঔপনিবেশিক ক্রিকেটে সীমিত পর্যায়ের খেলা অনুষ্ঠিত হতো। ১৯২৩ সালে ইংল্যান্ড গমনকালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলে জর্জ ফ্রান্সিসের ন্যায় প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশগ্রহণবিহীন খেলোয়াড়কে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ১৯৪৩ সালে উইজডেন ক্রিকেটার্স অ্যালমেনাকে তার স্মরণীকায় উল্লেখ করা হয় যে, তিনি মাঠ কর্মকর্তার দায়িত্বে ছিলেন ও ঐ সফরে অধিনায়ক হ্যারল্ড অস্টিনের ঐকান্তিক আগ্রহের কারণেই জর্জ ফ্রান্সিসকে দলে ঠাঁই দেয়া হয়েছিল।[১]
ত্রিনিদাদের লেখক সি. এল. আর. জেমস ‘বিয়ন্ড এ বাউন্ডারী’ শীর্ষক গ্রন্থে ত্রিনিদাদীয় বংশোদ্ভূত ও বার্বাডোসের খেলোয়াড় হারম্যান গ্রিফিথের দল থেকে বাদ পড়া ও ফ্রান্সিসের ন্যায় দলে অজানা বোলারের অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি তুলে ধরেছিলেন। জেমস আরও উল্লেখ করেছেন যে, আমাদের কাছে মনে হয়েছে আরও একবার শ্রেণীবৈষম্যের শিকারে পরিণত হতে চলেছে।[২]
১৯২৫-২৬ মৌসুমে এমসিসি দলের বিপক্ষে বার্বাডোসের সদস্যরূপে খেলেন। বার্বাডোসের পক্ষে প্রথম খেলাটিতে নাটকীয় সফলতার সাথে তিনি ও তার ফাস্ট বোলিং সহযোদ্ধা জর্জ ফ্রান্সিসের নাম জড়িয়ে আছে। তারা উভয়েই এমসিসি দলের বিপক্ষে নয়টি করে উইকেট পেয়ে ইনিংস ব্যবধানে জয় এনে দেন।[৩]
১৯২৬ সালে ইম্পেরিয়াল ক্রিকেট কনফারেন্স সিদ্ধান্ত নেয় যে, ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রতিনিধিত্বমূলক খেলায় অংশগ্রহণকারী তিনটি নতুন দল - ভারত, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও নিউজিল্যান্ডের খেলাগুলো পরবর্তী সময় থেকে টেস্ট খেলারূপে গণ্য করা হবে। এরফলে এ প্রক্রিয়ায় প্রথম ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল ১৯২৮ সালে ইংল্যান্ড গমন করে। ১৯২৩ সালে ইংল্যান্ড গমনকারী জর্জ ফ্রান্সিস, বার্বাডিয়ান সঙ্গী গ্রিফিথ ও লিয়ারি কনস্ট্যান্টাইন - এ তিনজন ফাস্ট বোলার ঐ দলে ছিলেন।
তবে, সামগ্রিকভাবে এ সফরটি বেশ ব্যর্থতায় ভাস্বর ছিল। দলের পূর্বেকার সফরের তুলনায় এ দলটি সফর অত্যন্ত নিম্নমানের ছিল। প্রত্যেকই ইংল্যান্ড-ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যকার টেস্ট খেলা গুরুতর ভুল ছিল বলে উইজডেনে উল্লেখ করা হয়।[৪] দলটি অতিমাত্রায় তাদের ফাস্ট বোলার, স্লিপ ফিল্ডার ও উইকেট-রক্ষকের উপর নির্ভরশীল ছিল।
তিনজন ফাস্ট বোলারদের মধ্যে কেবলমাত্র গ্রিফিথই যৎকিঞ্চিৎ প্রভাববিস্তার করতে পেরেছিলেন। প্রথমবারের মতো ইংল্যান্ড সফরে তিন টেস্টে অংশ নিয়ে তিনি ১১ উইকেট দখল করেন যা যে-কোনো ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান বোলারের চেয়ে বেশি। ইংল্যান্ড তিন টেস্টে কেবলমাত্র ৩০ উইকেট বিলিয়ে দেয় ও প্রত্যেক টেস্টেই তারা ইনিংসের ব্যবধানে জয় পায়। ওভালে অনুষ্ঠিত চূড়ান্ত টেস্টে ৬/১০৩ পান যা তার ব্যক্তিগত সেরা বোলিং পরিসংখ্যান ছিল। একপর্যায়ে তিনি ৫/২১ পেয়েছিলেন ও ইংল্যান্ডকে ৩০১/২ থেকে ৩৩৩/৭-এ নিয়ে যান। সম্পূর্ণ সফরে অল-রাউন্ডার লিয়ারি কনস্ট্যান্টাইনের তুলনায় প্রথম-শ্রেণীর খেলাগুলোয় কম সফলতা পেয়েছেন। তাস্বত্ত্বেও ঐ সফরে ১০৩ উইকেট নিয়ে বোলিং গড়ে দ্বিতীয় স্থানে ছিলেন। অধিকাংশ সময়ই ১০ কিংবা ১১ নম্বরে ব্যাটিংয়ে নামতেন। সফরটিতে ৩০০-এর অধিক রান তুলে স্বীয় সক্ষমতা তুলে ধরেন। অনেকক্ষেত্রে বেশকিছু জুটি গড়ে প্রারম্ভিক ব্যাটিং বিপর্যয় রুখে দেন। ম্যানি মার্টিনডেল ও জর্জ ফ্রান্সিসের সাথে তিনি তার পেস বোলিংয়ে বিমোহিত করেন।[৫] অন্যদিকে কনস্ট্যান্টাইন টেস্ট খেলায় ব্যাট কিংবা বল হাতে ব্যর্থ হন। তবে, সকল প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নিয়ে ১৩৮১ রান ও ১০৭ উইকেট লাভ করেছিলেন তিনি। কিন্তু, ফ্রান্সিস টেস্ট কিংবা অন্য খেলাগুলোর কোনটিতেই তেমন ভূমিকা রাখতে পারেননি।
অক্সফোর্ড ও কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শৌখিন খেলোয়াড়দের নিয়ে গড়া হার্লেকুইন্স দলের বিপক্ষে মৌসুমের শেষ প্রথম-শ্রেণীর উৎসব ক্রিকেট খেলায় ব্যাট হাতে হারম্যান গ্রিফিথ তার সেরা খেলা উপহার দেন। দ্বিতীয় ইনিংসে শেষ উইকেট জুটিতে ফ্রান্সিসের সাথে ৭৩ রান যুক্ত করেন।[৬]
১৯৩১ সালের শীত মৌসুমে ফ্রান্সিস, গ্রিফিথ ও কনস্ট্যান্টাইন - এ তিনজন ফাস্ট বোলারকে নিয়ে প্রথমবারের মতো অস্ট্রেলিয়া গমন করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল। ১৯২৮ সালে বিদেশ সফরে ইংল্যান্ড গমন করে যে ধরনের সফলতা পেয়েছিল সে তুলনায় অস্ট্রেলিয়ায় তারা কম সফল হয়।
পাঁচ টেস্টের গড়া সিরিজের প্রথম চার টেস্টের তিনটিতেই দলটি স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার কাছে ইনিংস ব্যবধানে পরাজিত হয়। তবে, সিরিজের পঞ্চম ও চূড়ান্ত টেস্টে তিনজন ফাস্ট বোলারই দলের স্বল্প ব্যবধানের বিজয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।[৭] প্রথম বোলার হিসেবে টেস্ট ক্রিকেটে ডোনাল্ড ব্র্যাডম্যানকে শূন্য রানে প্যাভিলিয়নে ফেরৎ পাঠান তিনি। ৪ মার্চ, ১৯৩১ তারিখে অস্ট্রেলিয়া সফরে সিডনিতে অনুষ্ঠিত পঞ্চম টেস্টে এ ঘটনা ঘটান।[৮] এরফলে অস্ট্রেলীয়রা লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ হয় এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথমবারের মতো ও সামগ্রিকভাবে দ্বিতীয় জয় পায়।
১৯৩৩ সালে ইংল্যান্ড সফরে যান ও নিজস্ব ৪০তম জন্মদিনের অল্প কয়েকদিন পূর্বে তিন টেস্ট উইকেট তুলে নেন। সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে ক্ল্যারি গ্রিমেটকে সর্বাধিক ছয়বার আউট করেছেন তিনি।[৯]
তার সম্মানার্থে দ্য গার্ডিয়ান জেনারেল ইন্স্যুরেন্স হারম্যান গ্রিফিথ প্রাইমারি স্কুলস ক্রিকেট প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৮০ সাল থেকে এ প্রতিযোগিতাটি সাংবার্ষিকভিত্তিতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।[১০]
জুন, ১৯৮৮ সালে বার্বাডিয়ান ৫০ সেন্টের স্ট্যাম্পের বার্বাডোস ক্রিকেটে বাকলের সাথে তার প্রতিকৃতি তুলে ধরা হয়। শুরুতে বার্টো বার্টলেটের প্রতিকৃতি সংবলিত ১০১ বার্বাডীয় ৫০সি স্ট্যাম্পে প্রকাশ করা হয়। ব্রিজটাউনের পার্সেল পোস্ট অফিস থেকে এ ভুল হয়েছিল। ৬ জুন, ১৯৮৮ তারিখ সোমবার সকাল ৯টার পূর্বেই এগুলো উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে ১১ জুলাই, ১৯৮৮ তারিখে হারম্যান গ্রিফিথের চিত্র সংবলিত সঠিক ৫০সি স্ট্যাম্প প্রকাশ করা হয়েছিল। ১০১ সিরিজের বার্টলেটের স্ট্যাম্পগুলো বেশ উঁচু দামে বিক্রয় হয়েছিল।
১৮ মার্চ, ১৯৮০ তারিখে ৮৬ বছর বয়সে সেন্ট মাইকেলের ব্রিজটাউনে হারম্যান গ্রিফিথের দেহাবসান ঘটে।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.