Loading AI tools
বাংলাদেশি সঙ্গীতজ্ঞ ও সঙ্গীত লেখক উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
মোবারক হোসেন খান (২৭ ফেব্রুয়ারি ১৯৩৮ – ২৪ নভেম্বর ২০১৯) ছিলেন একজন বাংলাদেশি সংগীতশিল্পী ও সংগীত গবেষক।[1] উপমহাদেশের কৃতলক্ষণ এক সংগীত পরিবারে তাঁর জন্ম। স্বাধীনতা-উত্তরকালে তিনি বাংলাদেশ বেতার ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন। সংগীতে অবদানের জন্য নানান রাষ্ট্রীয় সম্মাননা-প্রতিমাননায় প্রশংসাপ্রাপ্ত হন। এর মধ্যে উল্লেখ্য হচ্ছে একুশে পদক (১৯৮৬), স্বাধীনতা পদক (১৯৯৪), এবং বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার (২০০২)।
মোবারক হোসেন খান | |
---|---|
জন্ম | |
মৃত্যু | ২৪ নভেম্বর ২০১৯ ৮১) ঢাকা | (বয়স
মৃত্যুর কারণ | বার্ধক্যজনিত রোগ |
জাতীয়তা | বাংলাদেশি |
শিক্ষা | ইতিহাস |
মাতৃশিক্ষায়তন | ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় |
পেশা | সরকারী কর্মকর্তা, সঙ্গীত গবেষক, লেখক |
কর্মজীবন | ১৯৬২- ২০০৫ |
উল্লেখযোগ্য কর্ম | সঙ্গীতের উপর মৌলিক গবেষণা এবং গ্রন্থ প্রকাশ |
দাম্পত্য সঙ্গী | ফওজিয়া ইয়াসমিন |
সন্তান | রিনাত ফওজিয়া (কন্যা) তারিফ হায়াত খান (পুত্র) তানিম হায়াত খান (পুত্র) |
পিতা-মাতা | ওস্তাদ আয়েত আলী খাঁ (পিতা) উমর-উন-নেসা খানম (মাতা) |
আত্মীয় | আলাউদ্দিন খাঁ (চাচা) আবেদ হোসেন খান (ভাই) বাহাদুর হোসেন খান (ভাই) |
পুরস্কার | একুশে পদক (১৯৮৬) স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার (১৯৯৪) বাংলা একাডেমি পুরস্কার (২০০২) |
ওয়েবসাইট | http://www.mobarakhossainkhan.com/ |
মোবারক হোসেন ১৯৩৮ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির (বর্তমান বাংলাদেশ) ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার শিবপুর গ্রামের এক সঙ্গীত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।[2] তাঁর পিতা ওস্তাদ আয়েত আলী খাঁ একজন প্রখ্যাত শাস্ত্রীয় সঙ্গীতশিল্পী এবং মাতা উমর-উন-নেসা। তাঁর চাচা ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ উপমহাদেশের প্রখ্যাত সঙ্গীতজ্ঞ। সাত ভাইবোনের মধ্যে মোবারক ষষ্ঠ এবং ভাইদের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ। তাঁর বড় তিন বোন আম্বিয়া, কোহিনূর, ও রিজিয়া এবং বড় দুই ভাই প্রখ্যাত সঙ্গীতজ্ঞ আবেদ হোসেন খান ও বাহাদুর হোসেন খান, এবং ছোট বোন মমতা।
পারিবারিক ঐতিহ্য অনুযায়ী বড় দুই ভাই সঙ্গীতে মগ্ন। তাই তাঁর পিতা চেয়েছিলেন তিনি যেন সঙ্গীতের পাশাপাশি পড়াশুনা করেন। এজন্য সঙ্গীতে দীক্ষা গ্রহণের পূর্বে তিনি মাইনর স্কুলে প্রথম থেকে ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত পাঠ গ্রহণ করেন। দেশ বিভাগের পূর্ব থেকে তাঁর পিতার গান শিখানোর উদ্দেশ্যে কুমিল্লা জেলায় যাতায়াত ছিল এবং ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর তাঁরা সপরিবারে সেখানে চলে যান। মোবারক সেখান কুমিল্লা জিলা স্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তি হন এবং সেখান থেকে ১৯৫২ সালে মেট্রিক পাস করেন। পরে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে বিএ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাস বিষয়ে এমএ ডিগ্রি লাভ করেন।
মোবারক হোসেনের কর্মজীবন শুরু হয় বাংলাদেশ বেতারের অনুষ্ঠান প্রযোজক হিসেবে ২০ অক্টোবর, ১৯৬২। পরে তিনি বেতারের পরিচালক হিসেবে ৩০ বছর কর্মরত ছিলেন। এরপরে তিনি বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর মহাপরিচালক পদে কর্মরত থাকেন ১৯৯২-১৯৯৬ পর্যন্ত। ২০০০ -২০০৫ পর্যন্ত তিনি একটি এনজিও-এর নির্বাহী পরিচালক ছিলেন। এছাড়াও ২০০০-২০০৪ তিনি নজ্রুল ইন্সটিটিউটের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলেন।
১৯৭৮ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত তিনি মোট ১৩৭টি গ্রন্থ প্রকাশ করেছেন। ১৯৮০ সালে তিনি সঙ্গীতের উপর প্রথম পান্ডুলিপি রচনা করেন। সঙ্গীত বিষয়ক লেখা কেউ প্রকাশের দায়িত্ব না নিতে চাইলে তা প্রকাশের দায়িত্ব নেন রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই। লেখালেখি সূত্রে পরিচয় হন কবি আল মাহমুদের সাথে। আল মাহমুদ তখন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সহকারী পরিচালক। তাঁর মাধ্যমে ১৯৮০ সালে শিল্পকলা একাডেমি থেকে প্রকাশ করেন তাঁর প্রথম সঙ্গীত বিষয়ক বই সংগীত প্রসঙ্গ। বিভিন্ন পত্রিকায় তাঁর সঙ্গীত বিষয়ক লেখা নিয়ে বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত হয় তাঁর দ্বিতীয় বই বাদ্যযন্ত্র প্রসঙ্গ। এরপর তিনি রচনা করেন সঙ্গীত মালিকা। এই বইটিও প্রকাশ করে বাংলা একাডেমি। পরবর্তীতে তিনি সঙ্গীত বিষয়ক মৌলিক গ্রন্থ ৩৩টি (এর মধ্যে ইংরেজিতে ৩টি), শিশুতোষ সঙ্গীত বিষয়ক ১৯টি গ্রন্থ রচনা করেন। মুক্তিযুদ্ধের উপরে লেখা তাঁর চারটি বই বিশেষভাবে উল্লেখ্য। এছাড়া তাঁর অনুদিত গ্রন্থের সংখ্যা ২৩টি, শিশুতোষ অনুবাদ গ্রন্থ ২০টি, শিশুতোষ গল্পের বই ৩৪টি, উপন্যাস ২টি, এবং আত্মজীবনীমূলক রচনা ২টি।
মোবারক হোসেন সঙ্গীতশিল্পী ফৌজিয়া ইয়াসমিনকে বিয়ে করেন। তাঁদের তিন সন্তান; কন্যা রিনাত ফৌজিয়া সঙ্গীতশিল্পী,[3] পুত্র স্থপতি তারিফ হায়াত খান এবং তানিম হায়াত খান।[4]
মোবারক হোসেন খান ২০১৯ সালের ২৪ নভেম্বর ৮১ বছর বয়সে বার্ধক্যজনিত রোগে মৃত্যুবরণ করেন।[2][7][8]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.