Remove ads
চট্টগ্রাম সেনানিবাসের একটি পদাতিক ডিভিশন উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
২৪ পদাতিক ডিভিশন হচ্ছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি দল। চট্টগ্রাম বিভাগের দুটি পদাতিক ডিভিশনের মধ্যে এটি অন্যতম। এর সদর দপ্তর চট্টগ্রাম জেলার চট্টগ্রাম সেনানিবাসে অবস্থিত। এটি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সর্ববৃহৎ ডিভিশন। চট্টগ্রাম ভিত্তিক ডিভিশনের সদর দপ্তর চট্টগ্রাম সেনানিবাসে অবস্থিত। এটি চট্টগ্রামের পাশাপাশি বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলায় সেনাবাহিনী পরিচালিত কার্যক্রমের সাথে জড়িত। বাংলাদেশের পার্বত্য জেলাগুলিতে অবস্থিত বিভিন্ন ক্যান্টমেন্টে এর ৫টি ব্রিগেড আছে। ব্রিগেডগুলির মধ্যে একটি আর্টিলারি ও চারটি পদাতিক ব্রিগ্রেড।[২] এটি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সবচেয়ে বেশি নিয়োজিত সেনা নিয়ে গঠিত ডিভিশন।
২৪ পদাতিক ডিভিশন | |
---|---|
সক্রিয় | ১৯৭৬[১] - বর্তমান |
দেশ | বাংলাদেশ |
আনুগত্য | বাংলাদেশ |
শাখা | বাংলাদেশ সেনাবাহিনী |
ধরন | ডিভিশন |
আকার | ৩৫,০০০ - ৪০,০০০ |
গ্যারিসন/সদরদপ্তর | চট্টগ্রাম সেনানিবাস |
কমান্ডার | |
বর্তমান কমান্ডার | মেজর জেনারেল মিজানুর রহমান শামীম |
উল্লেখযোগ্য কমান্ডার | মেজর জেনারেল সাইফুল আবেদীন মেজর জেনারেল আতিকুর রহমান |
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পাঁচটি পদাতিক ব্রিগেড গঠন করা হয়। এদের মধ্যে ৬৫ পদাতিক ব্রিগেড ছিল একটি, যার সদর দপ্তর ছিলো চট্টগ্রামে। পরবর্তীতে ১৯৭৬ সালে এই ব্রিগেডকে ২৪ পদাতিক ডিভিশনে উন্নীত করা হয় এবং এই ডিভিশনের প্রথম কমান্ডার ছিলেন আতিকুর রহমান।[১][৩] মেজর জেনারেল মিজানুর রহমান শামীম হচ্ছেন এর বর্তমান জিওসি।[৪] এই ডিভিশন বৃহত্তর চট্টগ্রামের দুটি জেলা ছাড়াও পার্বত্য চট্টগ্রাম পর্যন্ত বিস্তৃত। ২৪ পদাতিক ডিভিশন হচ্ছে বাংলাদেশের সবথেকে বড় পদাতিক ডিভিশন। ১৯৯৭ সালে পার্বত্য শান্তি চুক্তির পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর এক লাখ ২০ হাজার সেনার ৩৫ থেকে ৪০ হাজার পদাতিক সেনা অর্থ্যাৎ দেশের ৩৩% সেনাবাহিনী এ ডিভিশনের অধীনে নিয়োজিত ছিল।[৫][৬]
পার্বত্য চট্টগ্রাম ভিত্তিক পাঁচটি ব্রিগ্রেড নিয়ে ২৪ পদাতিক ডিভিশন গঠিত। একটি আর্টিলারি ও অপর চারটি পদাতিক। ব্রিগ্রেডগুলি বিভিন্ন সেনানিবাসে নিয়জিত। এর মধ্যে ২৪ আর্টিলারি ও ৬৫ পদাতিক চট্টগ্রামের গুইমারা ও কাপ্তাইয়ে, অপর তিনটি তিনটি পার্বত্য জেলায় অবস্থিত।[২] -
স্বাধীনতাত্তোর সময়ে, পূর্ব বাংলার সর্বহারা পার্টি নবগঠিত আওয়ামী লীগ-সরকারের অন্যতম একটি বিরোধী দল হিসেবে আবির্ভূত হয়। ১৯৭৩ সালের এপ্রিল মাসে পূর্ব বাংলার জাতীয় মুক্তি ফ্রন্ট, ১১ গোষ্ঠীর একটি কোয়ালিশন গঠন করা হয়। এই ফ্রন্ট প্রতিষ্ঠার পর, দলটি বাংলাদেশ রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সশস্ত্র আন্দোলন ক্যাম্পেইন শুরু করে। এই দলটি ঢাকা, বরিশাল, ফরিদপুর, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, চট্টগ্রাম, সিলেট এবং কুমিল্লা জেলায় সক্রিয় ছিল। এরা আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ড পরিচালনা করে এবং দেশব্যাপী পুলিশ থানাসমূহে আক্রমণ চালায়।[৭][৮]
শেখ মুজিবুর রহমানের অনুরোধে তৎকালীন ৬৫ পদাতিক ব্রিগেড কমান্ডার কাজী গোলাম দস্তগীর তার প্রশাসনিক এলাকায় একটি কাউন্টার-আক্রমণ অভিযানের নেতৃত্ব দেন যেটি বাংলাদেশের সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী এবং বিমানবাহিনীর সামরিক অভিযানের মধ্যে প্রথম সম্মিলিত সফল অভিযান যা “অপারেশন ড্রাগন ড্রাইভ” নামে পরিচিত এবং এই অভিযানটি পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকার “সর্বহারা” বিচ্ছিন্নতাবাদী অস্ত্রধারীদের বিরুদ্ধে পার্বত্য চট্টগ্রামে পরিচালিত হয়।[৯]
২৯ মে ১৯৮১ সালে জিয়াউর রহমান চট্টগ্রামের আঞ্চলিক বিএনপির একটি নিজ-দলীয় বিবাদের সমাধানে সহায়তা করার জন্য সেখানে যান। জিয়া এবং তার সাথের সদস্যরা সারা রাত চট্টগ্রাম সেনানিবাসে অবস্থিত চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে অবস্থান করেন। ৩০ মে প্রথম প্রহরে, ২৪শ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি, মেজর জেনারেল আবুল মঞ্জুরের নেতৃত্বে তাকে হত্যা করা হয়। তার ছয় দেহরক্ষী এবং দুজন সহযোগীকেও হত্যা করা হয়।[১০]
গ্রেফতার করার পর শীঘ্রই মঞ্জুরকে হত্যা করা হয়।[১১] একটি সামরিক ট্রাইব্যুনালে ১৮ জন অফিসারকে সম্মুখীন করা হয়, এসময় সামরিক আদালতে ১৩জনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ এবং ৫জনকে কারাদণ্ড প্রদান করা হয়।[১২]
পার্বত্য চট্টগ্রাম সংঘাত মূলত একটি রাজনৈতিক সহিংসতা এবং সশস্ত্র বিদ্রোহ ছিল যা পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতিদের স্বায়ত্তশাসন এবং অধিকারের পরিপ্রেক্ষিত পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি কর্তৃক বাংলাদেশ সরকার এবং অস্ত্রধারী, শান্তি বাহিনীর মধ্যে সংগঠিত হয়।
১৯৭৭ সালে শান্তি বাহিনী সরকারি বাহিনীর লোকদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র আন্দোলন গড়ে তোলে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪শ পদাতিক ডিভিশন এই সশস্ত্র কাউন্টার অভিযানে অংশগ্রহণ করে। ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত ২০ বছর এই সংঘাত চলতে থাকে যতক্ষণ না সরকার এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তিতে স্বাক্ষর করে।[১৩][১৪] ১৯৯৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সন্তু লারমা বিধিসম্মতভাবে শান্তি বাহিনী ভেঙে দেন। প্রায় ১৫০০ বিদ্রোহী তাদের অস্ত্রশস্ত্র আত্মসমর্পণ করে।[১৫]
বাংলাদেশের সামরিক বাহিনী, বাংলাদেশ পুলিশ, বাঙ্গালী বসবাসকারী, শান্তি বাহিনী এবং এর সমর্থনকারীদের বিরুদ্ধে জাতিগত হত্যা সহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়েছে।[১৬]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.