Loading AI tools
হিন্দুদের দ্বারা অনুসৃত পঞ্জিকাবিশেষ উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
হিন্দু পঞ্জিকা বা হিন্দু পঞ্চাঙ্গ হল হিন্দু ধর্মে প্রথাগত ভাবে ব্যবহৃত চান্দ্র-নাক্ষত্র এবং নাক্ষত্র পঞ্জিকাসমূহের সমষ্টিগত নাম। আঞ্চলিক বৈচিত্র্যের কারণে হিন্দু পঞ্জিকার অসংখ্য সংস্করণ দেখা যায়। এদের মধ্যে অধিক প্রভাবশালী জাতীয় ও আঞ্চলিক হিন্দু পঞ্জিকাগুলি হল– নেপালের সরকারি নেপালি পঞ্জিকা এবং ভারতের বাংলা পঞ্জিকা, পঞ্জাবি পঞ্জিকা, ওড়িয়া পঞ্জিকা, মলয়ালম পঞ্জিকা, কন্নড় পঞ্জিকা, টুলু পঞ্জিকা, তামিল পঞ্জিকা, বিক্রম সংবৎ ও দাক্ষিণাত্যের কর্ণাটক, মহারাষ্ট্র, তেলঙ্গাণা আর অন্ধ্র প্রদেশের শালিবাহন পঞ্জিকা।[১]
এই নিবন্ধটি যাচাইযোগ্যতার জন্য প্রাথমিক উৎসের উপর প্রবলভাবে নির্ভর করে। |
আঞ্চলিক হিন্দু পঞ্জিকাগুলির একটি সাধারণ বৈশিষ্ট্য হল, বারোটি মাসের নাম সব পঞ্জিকাতেই একই আছে। যদিও বিভিন্ন অঞ্চলে বছরের প্রথম মাসটি বিভিন্ন। কম্বোডিয়া, লাওস, মায়ানমার, শ্রীলঙ্কা ও থাইল্যান্ডের বৌদ্ধ বর্ষপঞ্জি আর কিছু সৌর-চান্দ্র পঞ্জিকা হিন্দু পঞ্জিকারই প্রাচীন সংস্করণের উপর প্রতিষ্ঠিত।
বেশিরভাগ হিন্দু পঞ্জিকাই ৫ম ও ৬ষ্ঠ শতাব্দীতে গুপ্তযুগের আর্যভট্ট ও বরাহমিহিরের জ্যোতির্বিদ্যার ফসল। এই জ্যোতির্বিদ্যার মূল আধার ছিল প্রাচীন হিন্দু গ্রন্থ বেদাঙ্গ জ্যোতিষ, যাকে পরে সংস্কার করে সূর্য সিদ্ধান্ত গ্রন্থটি লিখিত হয়। মধ্যযুগের এই পঞ্জিকার আঞ্চলিক বৈচিত্র্য সৃষ্ট হতে থাকে। দ্বাদশ শতাব্দীতে দ্বিতীয় ভাস্কর জ্যোতির্বিদ্যার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেন। বর্ষপঞ্জির আঞ্চলিক সংস্করণে ওই গুপ্তযুগীয় গণনারই কিছু পার্থক্য দেখা যায়, তবে প্রতিটি সংস্করণের ভিত্তি মূলত হিন্দু সৌর-চান্দ্র পঞ্জিকা।
১৯৫৭ সালে সেই হিন্দু পঞ্জিকার ওপর ভিত্তি করেই ভারতের জাতীয় বর্ষপঞ্জি শক সংবৎ গঠিত হয়।
হিন্দু পঞ্চাঙ্গে, দিন বা দিবস হল দুটি সূর্যোদয়ের মধ্যবর্তী সময়। চাঁদের কৌণিক অবস্থানের (তিথি, নিচে দেখুন) ওপর ভিত্তি করে দিন নির্ধারণ করা হয়। এর জন্য আলাদা করে দিনের সংখ্যার কোনো প্রয়োজন হয় না।
দিন নির্ধারণের পাঁচটি অঙ্গ রয়েছে। যথা,
এই পাঁচটি বৈশিষ্ট্য বা অঙ্গ নিয়ে তৈরি হয় পঞ্চাঙ্গ (পঞ্চ + অঙ্গ)।
নক্ষত্র, যোগ এবং করণ সাধারণত জ্যোতিষ ও ধর্মীয় ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়।
নাক্ষত্র মাসের ১⁄৩০ অংশকে তিথি বলা হয়। সূর্য ও চাঁদের পারস্পরিক প্রতিটি ১২° কোণই হল প্রতিটি তিথি। এক-একটি তিথির দৈর্ঘ্য প্রায় ১৯ থেকে ২৬ ঘণ্টা হতে পারে।[২]
কোনো তিথির সময়সীমার মধ্যে একটি সূর্যোদয় পড়লে, সূর্যোদয়ের সময় থেকে ওই তিথি অনুযায়ী দিনটির তারিখ বা সংখ্যা নির্ধারিত হয়। একটি তিথির মধ্যে দুটো সূর্যোদয় পড়লে, দ্বিতীয় দিনটি অতিরিক্ত দিন হিসেবে গণ্য হয়। আবার তিথির ভেতরে কোনো সূর্যোদয় না থাকলে, ওই তিথির জন্য কোনো তারিখ দেওয়া হয় না।
সপ্তাহের সাতটি দিনের এক-একটি দিনকে বাসর বা বার বলে। পাশ্চাত্য সংস্কৃতিতে এই বারের ধারণা ও নামের সাথে হিন্দু বারগুলির গভীর মিল আছে।
সংখ্যা | দিনের সংস্কৃত নাম (দিনের প্রারম্ভ সূর্যোদয় থেকে) | নেপালি পঞ্জিকা | হিন্দি নাম | ভোজপুরি নাম | পঞ্জাবি নাম | বাংলা নাম | মরাঠি নাম | ওড়িয়া নাম | কন্নড় নাম | তেলুগু নাম | তামিল নাম | মলয়ালম নাম | গুজরাতি নাম | ইংরেজি ও লাতিন নাম (দিনের প্রারম্ভ ০০:০০ ঘণ্টায়) | গ্রহ |
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
১ | রবিবাসর रविवासर |
আইতবার आइतवार |
রবিবার रविवार |
এতবার एतवार |
ঐতবার ਐਤਵਾਰ |
রবিবার | রবিবার रविवार |
রবিবার ରବିବାର |
ভানুভার ಭಾನುವಾರ |
আদিবারম ఆదివారం |
ন্যায়িরু ஞாயிறு |
ন্জায়ার ഞായർ |
রবিবার રવિવાર |
সানডে Sunday |
রবি (সূর্য) |
২ | সোমবাসর सोमवासर |
Sombar सोमवार |
Somavār सोमवार |
Somār सोमार |
Somavār ਸੋਮਵਾਰ |
সোমবার | Somavār सोमवार |
Somabāra ସୋମବାର |
Sōmavāra ಸೋಮವಾರ |
Sōmavāraṁ సోమవారం |
Thingal திங்கள் |
Thinkal തിങ്കൾ |
Sōmavār સોમવાર |
Monday | সোম (চন্দ্র) |
৩ | মঙ্গলবাসর मंगलवासर |
Mangalbar मंगलवार |
Maṅgalavār मंगलवार |
Mangar मंगर |
Maṅgalavār ਮੰਗਲਵਾਰ |
মঙ্গলবার | Maṅgaḷavār मंगळवार |
Maṅgaḷabāra ମଙ୍ଗଳବାର |
Maṁgaḷavāra ಮಂಗಳವಾರ |
Maṁgaḷavāraṁ మంగళవారం |
Chevvai செவ்வாய் |
Chovva ചൊവ്വ |
Maṅgaḷavār મંગળવાર |
Tuesday | মঙ্গল |
৪ | বুধবাসর बुधवासर |
Budhabar बुधवार |
Budhavāra बुधवार |
Buddh बुध |
Buddhavār ਬੁੱਧਵਾਰ |
বুধবার | Budhavār बुधवार |
Budhabāra ବୁଧବାର |
Budhavāra ಬುಧವಾರ |
Budhavāraṁ బుధవారం |
Arivan (Tamil tradition) அறிவன் |
Budhan ബുധൻ |
Budhavār બુધવાર |
Wednesday | বুধ |
৫ | গুরুবাসর गुरुवासर বা বৃহস্পতিবাসর बृहस्पतिवासर |
Bihibar बिहिवार |
Guruvār गुरुवार |
Bi'phey बियफे |
Vīravār ਵੀਰਵਾਰ |
বৃহস্পতিবার | Guruvār गुरुवार |
Gurubāra ଗୁରୁବାର |
Guruvāra ಗುರುವಾರ |
Guruvāraṁ, Br̥haspativāraṁ గురువారం, బృహస్పతివారం, లక్ష్మీవారం |
Vyazhan வியாழன் |
Vyaazham വ്യാഴം |
Guruvār ગુરુવાર |
Thursday | দেবগুরু বৃহস্পতি |
৬ | শুক্রবাসর शुक्रवासर |
Sukrabar शुक्रवार |
Śukravār शुक्रवार |
Sukkar सुक्कर |
Śukkaravār ਸ਼ੁੱਕਰਵਾਰ |
শুক্রবার | Śukravār शुक्रवार |
Śukrabāra ଶୁକ୍ରବାର |
Śukravāra ಶುಕ್ರವಾರ |
Śukravāraṁ శుక్రవారం |
Velli வெள்ளி் |
Velli വെള്ളി |
Śukravār શુક્રવાર |
Friday | শুক্র |
৭ | শনিবাসর शनिवासर |
Sanibar शनिवार |
Śanivār शनिवार |
Sanichchar सनिच्चर |
Śanīvār ਸ਼ਨੀਵਾਰ Chhanicchharavār ਛਨਿੱਚਰਵਾਰ |
শনিবার | Śanivār शनिवार |
Śanibāra ଶନିବାର |
Śanivāra ಶನಿವಾರ |
Śanivāraṁ శనివారం |
Kaari (Tamil tradition) காரி |
Shani ശനി |
Śanivār શનિવાર |
Saturday | শনি |
সংস্কৃত শব্দ বাসরকে বিভিন্ন সংস্কৃত-জাত ও প্রভাবিত ভাষাতে বার বলা হয়। বারগুলির নাম বিভিন্ন ভারতীয় ভাষায় বিভিন্ন হতে পারে। তবে মূলত ওই বারের সাথে সম্পর্কিত মহাজাগতিক বস্তু বা গ্রহের নাম অনুযায়ী বারের নাম হয়।
সূর্যের অয়নবৃত্তকে ২৭টি নক্ষত্র-তে ভাগ করা যায়, এগুলির প্রত্যেকটি বাস্তবে কিছু তারামণ্ডল। নক্ষত্রগুলি গ্রহের পরিক্রমণকে এক-একটি নির্দিষ্ট তারার সাপেক্ষে চিহ্নিত করে। ২৭টি নক্ষত্রের মোট সময়কাল ২৭ দিন ৭৩⁄৪ ঘণ্টা। অতিরিক্ত ভগ্নাংশ সময়টি নিয়ন্ত্রিত হয় ২৮তম একটি নক্ষত্র দ্বারা, যার নাম অভিজিৎ। ঋগ্বেদের সময় (১৫০০ খ্রিঃপূঃ) থেকে নক্ষত্রের এই গণনা চলে আসছে।
অয়নবৃত্ত পশ্চিম থেকে পূর্ব দিক বরাবর ২৭টি নক্ষত্রে ভাগ করা হয়েছে। চিত্রা (Spica) নামক নক্ষত্রের ঠিক বিপরীত দিকে অবস্থিত একটি বিন্দুকে এই চক্রের আদিবিন্দু ধরা হয়েছে (মতান্তরও আছে)। একে বলা হয় মেষাদি; এই অবস্থা তখন আসে, যখন বিষুবরেখা অয়নবৃত্তকে ছেদ করে। একে মহাবিষুবও বলা হয়। বর্তমানে এটি মীন রাশিতে অবস্থান করছে, মেষ রাশির শুরু থেকে ২৮° আগে। মেষাদি ও বর্তমান বিষুবরেখার অবস্থানের পার্থক্যকে বলা হয় অয়নাংশ – মহাবিষুব তার নিরয়ণ অবস্থান থেকে কতটুকু বিচ্যুত হয়েছে, তার কৌণিক মান দিয়ে এটি গণনা করা হয়। একটি পুরো অয়নবৃত্ত পরিক্রমণের সময় ২৫৮০০ বছর। মোটামুটি ২৮৫ খ্রিস্টপূর্বাব্দে সূর্যসিদ্ধান্ত লিখবার সময় বিষুবরেখা ঠিক চিত্রা নক্ষত্রের বিপরীতে অবস্থান করেছিল।
নিচে নক্ষত্রসমূহের নাম ও মহাকাশে তাদের অবস্থানের একটি ছক দেওয়া হল। স্বাভাবিকভাবে এরও কিছু ভিন্ন সংস্করণ আছে। ছকের ডানদিকে সেই সংশ্লিষ্ট নক্ষত্রের আধুনিক বিজ্ঞানসম্মত নাম দেওয়া হয়েছে। এখানে লক্ষণীয় যে, নক্ষত্র শব্দটি কোনো একটি তারাকে নির্দেশ করে না, বরং শব্দটির দ্বারা কোনো একাধিক তারা-সমন্বিত তারামণ্ডলকে বোঝানো হয়। আসলে সংস্কৃতে একাধিক তারাকে একসাথে নক্ষত্র বলে।
# | নক্ষত্রের সংস্কৃত নাম | বাংলা নাম | মলয়ালম নাম | তামিল নাম | তেলুগু নাম | কন্নড় নাম | নক্ষত্রের পাশ্চাত্য নাম |
---|---|---|---|---|---|---|---|
১ | অশ্বিনী अश्विनी | অশ্বিনী | Ashvati അശ്വതി | Aswini அஸ்வினி | Aśvinī అశ్విని | Aśvinī ಅಶ್ವಿನಿ | β ও γ Arietis |
২ | ভরণী भरणी | ভরণী | Bharani ഭരണി | Barani பரணி | Bharani భరణి | Bharani ಭರಣಿ | ৩৫, ৩৯, ও ৪১ Arietis |
৩ | কৃত্তিকা कृत्तिका | কৃত্তিকা | Kārttika കാർത്തിക | Kārthikai கார்த்திகை | Krittika కృత్తిక | Kruthike ಕೃತಿಕೆ | Pleiades |
৪ | রোহিণী रोहिणी | Rohinī রোহিণী | Rōhini രോഹിണി | Rōhini ரோகிணி | Rōhini రోహిణి | Rōhini ರೋಹಿಣಿ | Aldebaran |
৫ | মৃগশীর্ষ मृगशिर्ष | মৃগশিরা | Makayiram മകയിരം | Mirugasīridam மிருகசீரிடம் | Mrigaśira మృగశిర | Mrigaśira ಮೃಗಶಿರ | λ, φ Orionis |
৬ | আর্দ্রা आद्रा | আর্দ্রা | Ātira or Tiruvātira ആതിര (തിരുവാതിര) | Thiruvādhirai திருவாதிரை | Arudra ఆరుద్ర | Aridra ಆರಿದ್ರ | Betelgeuse |
৭ | পুনর্বসু पुनर्वसु | পুনর্বসু | Punartam പുണർതം | Punarpoosam புனர்பூசம் | Punarvasu పునర్వసు | Punarvasu ಪುನರ್ವಸು | Castor ও Pollux |
৮ | পুষ্য पुष्य | পুষ্যা (তিষ্যা) | Pūyam പൂയം | Poosam பூசம் | Puṣyami పుష్యమి | Puṣya ಪುಷ್ಯ | γ, δ ও θ Cancri |
৯ | আশ্লেষা आश्लेषा | অশ্লেষা | Āyilyam ആയില്യം | Ayilyam ஆயில்யம் | Aślesha ఆశ్లేష | Aślesha ಆಶ್ಲೇಷ | δ, ε, η, ρ, ও σ Hydrae |
১০ | মঘামাঘ मघा | মঘা | Makam മകം | Magam மகம் | Makha or Magha మఖ or మాఘ | Makha ಮಖ | Regulus |
১১ | পূর্ব ফাল্গুনী पूर्व फाल्गुनी | পূর্বফল্গুনী | Pūram പൂരം | Pooram பூரம் | Pūrva Phalguṇī or Pubba పూర్వా ఫల్గుణి or పుబ్బ | Pubba ಪುಬ್ಬ | δ ও θ Leonis |
১২ | উত্তর ফাল্গুনী उत्तर फाल्गुनी | উত্তরফল্গুনী | Utram ഉത്രം | Uthiram உத்திரம் | Uttara Phalguṇi or Uttara ఉత్తర ఫల్గుణి or ఉత్తర | Utthara ಉತ್ತರ | Denebola |
১৩ | হস্ত हस्त | হস্তা | Attam അത്തം | Astham அஸ்தம் | Hasta హస్త | Hasta ಹಸ್ತ | α, β, γ, δ ও ε Corvi |
১৪ | চিত্রা चित्रा | চিত্রা | Chittira (Chitra) ചിത്തിര (ചിത്ര) | Chithirai சித்திரை | Chittā or Chitrā చిత్తా or చిత్రా | Chitta ಚಿತ್ತ | Spica |
১৫ | স্বাতি स्वाति | স্বাতী | Chōti ചോതി | Swathi சுவாதி | Svāti స్వాతి | Svāti ಸ್ವಾತಿ | Arcturus |
১৬ | বিশাখা विशाखा | বিশাখা | Vishākham വിശാഖം | Visakam விசாகம் | Viśākha విశాఖ | Viśākhe ವಿಶಾಖೆ | α, β, γ ও ι Librae |
১৭ | অনুরাধা अनुराधा | অনুরাধা | Anizham അനിഴം | Anusham அனுஷம் | Anurādhā అనురాధా | Anurādhā ಅನುರಾಧ | β, δ ও π Scorpionis |
১৮ | জ্যেষ্ঠা ज्येष्ठा | জ্যেষ্ঠা | Kēṭṭa (Trikkēṭṭa) കേട്ട (തൃക്കേട്ട) | Kettai கேட்டை | Jyeṣṭha జ్యేష్ఠ | Jyeṣṭha ಜ್ಯೇಷ್ಠ | α, σ, ও τ Scorpionis |
১৯ | মূল मूल | মূলা | Mūlam മൂലം | Mūlam மூலம் | Mūla మూల | Mūla ಮೂಲ | ε, ζ, η, θ, ι, κ, λ, μ ও ν Scorpionis |
২০ | পূর্বাষাঢ়া पूर्वाषाढा | পূর্বাষাঢ়া | Pūrāṭam പൂരാടം | Pūradam பூராடம் | Pūrvāṣāḍha పూర్వాషాఢ | Pūrvāṣāḍha ಪೂರ್ವಾಷಾಢ | δ ও ε Sagittarii |
২১ | উত্তরাষাঢ়া उत्तराषाढा | উত্তরাষাঢ়া | Utrāṭam ഉത്രാടം | Uthirādam உத்திராடம் | Uttarāṣāḍha ఉత్తరాషాఢ | Uttarāṣāḍha ಉತ್ತರಾಷಾಢ | ζ ও σ Sagittarii |
২২ | শ্রবণ श्रवण | শ্রবণা | Tiruvōnam ഓണം (തിരുവോണം) | Tiruvōnam திருவோணம் | Śravaṇaṁ శ్రవణం | Śravaṇa ಶ್ರವಣ | α, β ও γ Aquilae |
২৩ | শ্রবিষ্ঠা বা ধনিষ্ঠা श्रविष्ठा or धनिष्ठा | ধনিষ্ঠা (শ্রবিষ্ঠা) | Aviṭṭam അവിട്ടം | Aviṭṭam அவிட்டம் | Dhaniṣṭha ధనిష్ఠ | Dhaniṣṭha ಧನಿಷ್ಠ | α থেকে δ Delphinus |
২৪ | শতভিষক্ বা শততারকা शतभिषक्/शततारका | শতভিষা | Chatayam ചതയം | Sadayam சதயம் | Śatabhiṣaṁ శతభిషం | Śatabhiṣa ಶತಭಿಷ | γ Aquarii |
২৫ | পূর্বভাদ্রপদা বা পূর্বপ্রোষ্ঠপদা पूर्वभाद्रपदा/पूर्वप्रोष्ठपदा | পূর্বভাদ্রপদ | Pūruruṭṭāti പൂരുരുട്ടാതി | Pūraṭṭādhi பூரட்டாதி | Pūrvābhādra పూర్వాభాద్ర | Pūrvābhādra ಪೂರ್ವಾ ಭಾದ್ರ | α ও β Pegasi |
২৬ | উত্তরভাদ্রপদা বা উত্তরপ্রোষ্ঠপদা उत्तरभाद्रपदा/उत्तरप्रोष्ठपदा | উত্তরভাদ্রপদ | Uttṛṭṭāti ഉത്രട്ടാതി | Uttṛṭṭādhi உத்திரட்டாதி | Uttarābhādra ఉత్తరాభాద్ర | Uttarābhādra ಉತ್ತರಾ ಭಾದ್ರ | γ Pegasi ও α Andromedae |
২৭ | রেবতী रेवती | রেবতী | Rēvati രേവതി | Rēvathi ரேவதி | Rēvati రేవతి | Rēvati ರೇವತಿ | ζ Piscium |
সংস্কৃত শব্দ যোগ-এর অর্থ "যুক্ত করা", কিন্তু জ্যোতির্বিদ্যায় শব্দটি "শ্রেণিবদ্ধ করা" অর্থে ব্যবহৃত হয়। প্রথম ক্ষেত্রে, মেষ রাশি বা মেষাদিকে আদিবিন্দু ধরে নিয়ে কোনো গ্রহের কক্ষপথের কৌণিক অবস্থান নির্ণয় করা যায়। একে ওই গ্রহের দ্রাঘিমা বলা হয়। তারপর সূর্যের দ্রাঘিমা ও চাঁদের দ্রাঘিমা যোগ করে, তাকে সরল করে ০° থেকে ৩৬০°-এর মধ্যে একটি মানে নিয়ে আসা হয় (মান ৩৬০°-এর বেশি হলে, তা থেকে ৩৬০ বিয়োগ করা হয়)। এই যোগফলকে ২৭টি ভাগে বিভক্ত করা হয়। প্রত্যেকটি ভাগ ৮০০’-এর সমান (এখানে ‘ বা মিনিট হল এক ডিগ্রির ১/৬০ অংশ)। এক-একটি ভাগকে যোগ বলা হয়। এদের নাম:
এরও একাধিক সংস্করণ উপলব্ধ। দিনের সূর্যোদয়ের সময় যে যোগ চলমান থাকে, তাকেই সংশ্লিষ্ট দিনের যোগ ধরে নেওয়া হয়।
করণ হল তিথির অর্ধেক। সূর্য ও চাঁদের মধ্যে ০° থেকে ৬° কোণ সম্পূর্ণ করতে যে কৌণিক দূরত্ব অতিক্রম করতে হয়, তা-ই হল করণ।
১টি তিথি = ২টি করণ। অর্থাৎ তিথি মোট ৩০টি হলে, করণের সংখ্যা মোট ৬০টি। কিন্তু ৩০টি তিথিকে সম্পূর্ণ করতে মোটে ১১টি করণই নির্দিষ্ট করা হয়েছে। এদের মধ্যে চারটি ধ্রুবকরণ (স্থির) ও সাতটি চরকরণ (চলমান)।
৪টি ধ্রুবকরণ হল:
৭টি চরকরণ হল:
সর্বদা কিন্তুঘ্ন করণ হয়। তাই এই করণটি ধ্রুব।
বৈদিক দিন শুরু হয় সূর্যোদয় দিয়ে। সূর্যোদয়ের সময় চলমান করণটিই হয় সারাদিনের নির্দিষ্ট করণ।
মাস গণনার দুটি প্রথা প্রচলিত রয়েছে। অমাবস্যান্ত (বা অমান্ত) প্রথাটি প্রধানত পশ্চিম ও দক্ষিণ ভারতে ব্যবহৃত হয় (অন্ধ্র প্রদেশ, গোয়া, গুজরাত, কর্ণাটক, মহারাষ্ট্র ও তামিলনাড়ু), চান্দ্র মাসের যে দিনটির সূর্যোদয়ের আগের তিথিটি অমাবস্যা হয়, সে দিনটি এই পদ্ধতিতে মাসের প্রথম দিন। অন্যদিকে, পূর্ণিমান্ত প্রথায় চান্দ্র মাসের পূর্ণিমার পরের দিনটিই হয় মাসের শুরুর দিন। এই প্রথাটির ব্যবহার ভারতের উত্তর ও পূর্বের রাজ্যগুলিতে দেখা যায় (পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, হিমাচল প্রদেশ, মধ্য প্রদেশ, পঞ্জাব, ওড়িশা, রাজস্থান ও উত্তর প্রদেশ)। দুটি প্রথায় মাসের নাম একই হলেও গণনায় পার্থক্য থাকার জন্য দুই পদ্ধতিতে মাসের প্রথম ও শেষ দিনের সময়কালের গড়ে ১৫ দিনের পার্থক্য দেখা যায়। ফলস্বরূপ, শ্রাবণ মাসের কিছু বিশেষ উৎসবের দিনক্ষণের মধ্যে পার্থক্য দেখা যায় দুই পদ্ধতিতে। অমাবস্যান্ত মাস অনুসরণকারীদের জন্য তাই শ্রাবণ মাসের শুরু ও উৎসবের নির্ঘণ্ট ১৫ দিন পিছিয়ে যায়।
একটি মাস দুটি পক্ষ নিয়ে গঠিত হয় ― শুক্লপক্ষ ও কৃষ্ণপক্ষ। প্রত্যেক তিথিতে ১৫টি দিন থাকে। দুটি পদ্ধতির ভিন্নতার জন্য পক্ষ গণনাতেও এর প্রভাব পড়ে:
কোনো মাসে যেই রাশি প্রবেশ করে, সেই রাশি অনুসারে সংশ্লিষ্ট মাসের সংখ্যা নির্ধারিত হয়। যে মাসে কোনো রাশি প্রবেশ করে না, সেই মাসকে বলে অধিক মাস (মলমাস)। একটি মাসে দুটি রাশি থাকলে দ্বিতীয় রাশিটি ক্ষয় মাস সৃষ্টি করে।
হিন্দু চান্দ্র পঞ্জিকায় ১২টি মাস রয়েছে (সংস্কৃত: मासाः)। এই পঞ্জিকায় বছর শুরু হয় চৈত্র মাস থেকে যেখানে হিন্দু পঞ্জিকা থেকে উদ্ভুত বিভিন্ন পঞ্জিকা যেমন বাংলা পঞ্জিকা শুরু হয় বৈশাখ মাস থেকে।[৩]
মাসের এই নামগুলি খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। প্রত্যেকটি মাসের নাম এসেছে সেই মাসের পূর্ণিমার দিনে চলমান নক্ষত্রের নাম থেকে। যেমন, যে মাসের পূর্ণিমায় চিত্রা নক্ষত্র থাকে, সেই মাসের নাম চৈত্র; পূর্ণিমায় অশ্বিনী নক্ষত্র অবস্থান করলে সেই মাস হয় আশ্বিন।
রাশি মোট ১২টি, প্রত্যেকটি রাশি এক-একটি মাসের জন্য। যে মাসে সূর্য মেষ রাশিতে গমন করে, সেই মাসটি হয় চৈত্র, এই মাসে মীন ও মেষ ― উভয় রাশিই দেখা যায়। যে মাসে সূর্য বৃষ রাশিতে গমন করে, সেই মাসের নাম হয় বৈশাখ, এই মাসেও মেষ ও বৃষ ― দুটি রাশিই থাকে। এই ভাবে অন্যান্যগুলি চলতে থাকে।
হিন্দু পঞ্জিকায় পুরুষোত্তম মাস নামে একটি অধিক ত্রয়োদশ মাস আছে। চান্দ্র ও সৌর পঞ্জিকার সামঞ্জস্য বিধানের জন্য এটিকে রাখা হয়েছে।
বিভিন্ন রাশিতে সূর্যের গমনের উপর ভিত্তি করে যে মাসচক্র গঠিত হয়েছে, তাকে সৌর মাস বলা হয়। গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী এদের স্থানের কোনো পরিবর্তন হয় না। নিচের ছকে সৌর মাস এবং তাদের সংশ্লিষ্ট ঋতু ও গ্রেগরীয় মাসের নাম দেওয়া হল:
রাশি (সৌর মাস) | ঋতু | মরাঠি নাম | বাংলা নাম | কন্নড় নাম | তেলুগু নাম | মলয়ালম্ নাম | তামিল নাম | গ্রেগরীয় সায়ন মাস |
---|---|---|---|---|---|---|---|---|
মেষ | গ্রীষ্ম | ग्रीष्म | গ্রীষ্ম | ಗ್ರೀಷ್ಮ ಋತು (Grīṣma Ṛtu) | గ్రీష్మ ఋతువు (Grīṣma Ṛtuvu) | ഗ്രീഷ്മം (Grīṣmam) | இளவேனில் (ilavenil) | এপ্রিল-মে |
বৃষ | মে-জুন | |||||||
মিথুন | বর্ষা | वर्षा | বর্ষা | ವರ್ಷ ಋತು (Varṣa Ṛtu) | వర్ష ఋతువు (Varṣa Ṛtuvu) | വർഷം (Varṣām) | முதுவேனில் (mudhuvenil) | জুন-জুলাই |
কর্কট | জুলাই-অগাস্ট | |||||||
সিংহ | শরৎ | शरद | শরৎ | ಶರದೃತು (Śaradṛtu) | శరదృతువు (Śaradṛtuvu) | ശരത് (Śarat) | கார் (kaar) | অগাস্ট-সেপ্টেম্বর |
কন্যা | সেপ্টেম্বর-অক্টোবর | |||||||
তূলা | হেমন্ত | हेमंत | হেমন্ত | ಹೇಮಂತ ಋತು (Hēmaṃta Ṛtu) | హేమంత ఋతువు (Hēmaṃta Ṛtuvu) | ഹേമന്തം (Hemantam) | குளிர் (kulir) | অক্টোবর-নভেম্বর |
বৃশ্চিক | নভেম্বর-ডিসেম্বর | |||||||
ধনু | শীত | शिशिर | শীত | ಶಿಶಿರ ಋತು (Śiśira Ṛtu) | శిశిర ఋతువు (Śiśira Ṛtuvu) | ശിശിരം (Śiśiram) | முன்பனி (munpani) | ডিসেম্বর-জানুয়ারি |
মকর | জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি | |||||||
কুম্ভ | বসন্ত | वसंत | বসন্ত | ವಸಂತ ಋತು (Vasaṃta Ṛtu) | వసంత ఋతువు (Vasaṃta Ṛtuvu) | വസന്തം (Vasaṃtam) | பின்பனி (pinpani) | ফেব্রুয়ারি-মার্চ |
মীন | মার্চ-এপ্রিল |
কোনো চান্দ্র মাসের পূর্ণিমার দিন যে নক্ষত্র থাকে, সেই নক্ষত্রের নাম থেকে মাসের সংস্কৃত নামগুলি এসেছে। সেই বিশেষ নক্ষত্রটি চিত্রা হলে মাসটির নাম চৈত্র। আবার পূর্ণিমা বিশাখা নক্ষত্রে পড়লে সেই মাসের নাম হয় বৈশাখ।
একই ভাবে জ্যেষ্ঠা, পূর্বাষাঢ়া, শ্রবণা, পূর্ব ভাদ্রপদ, অশ্বিনী (পূর্বনাম অশ্বযুজ) কৃত্তিকা, মৃগশিরা, পুষ্যা, মঘা, পূর্বফল্গুনী নক্ষত্রের নাম থেকে বাকি মাসের নামগুলি এসেছে।
যে চান্দ্র মাসে সূর্য একটি রাশি থেকে অন্য রাশিতে গমন করে না, বরং মাসজুড়ে একটি নির্দিষ্ট রাশিতেই অবস্থান করে, তাহলে সেই মাসটির নাম পরবর্তী মাসের নাম অনুসারে হয় এবং এর সাথে "অধিক" শব্দটি জুড়ে দেওয়া হয়। বাংলায় অধিক মাসকে মলমাস বলে। উদাহরণ হিসেবে, যদি কোনো মাসে সূর্য মেষ রাশিতে গমন না করে পূর্ববর্তী রাশিতেই স্থিত থাকে, তবে ওই মাসটির নাম হবে অধিক চৈত্র মাস বা চৈত্র মলমাস। পরবর্তী মাসে সূর্য অন্য রাশিতে আবার গমন করে, তাই সেই পরবর্তী মাসের নামের সাথে নিজ কিংবা শুদ্ধ শব্দটি জুড়ে দেওয়া হয়। ওপরের অ্যানিমেশনে দেখা যাচ্ছে, ২য় বর্ষে ভাদ্রপদ মাস পরপর দু'বার আসছে, প্রথমবার সূর্য পুরোপুরি সিংহ রাশিতে অবস্থান করে, অর্থাৎ মলমাস সৃষ্ট হয়।
মলমাসের অন্য নাম পুরুষোত্তম মাস। বলা হয়, ভগবান বিষ্ণু তার নাম অনুসারে এই মাসের নাম দেন। ১২টি হিন্দু মাস মিলে মোট ৩৫৪ দিন হয়, কিন্তু সূর্য সম্পূর্ণ একটি নিরয়ণ রাশিপথ ৩৬৫ ১⁄৪ দিনে সম্পন্ন করে। এর ফলে যে ১১ দিনের ফারাক তৈরি হয়, সেই অতিরিক্ত ১১ দিন প্রতি (২৯.৫৩/১০.৬৩) = ২.৭১ বছরে বা ৩২.৫ মাসে যোগ করে সমতা বিধান করা হয়। কার্তিক ও মাঘ মাসে কোনো মলমাস পড়ে না।
মলমাস চলাকালীন মচ্ছেগাওঁ নামে শহরে একটি মাসব্যাপী উৎসবের আয়োজন করা হয়। সাধারণ বিশ্বাস অনুযায়ী, মচ্ছেনারায়ণ-এর জলে এই সময় স্নান করলে সমস্ত পাপমোচন হয়।
একটি চান্দ্র মাসের মধ্যেই যদি সূর্য পরপর দুটি রাশিতে গমন করে, তবে ওই দুটি রাশি সাপেক্ষেই মাসটির নামকরণ করতে হয়, আর নামের আগে "ক্ষয়" শব্দটি বসানো হয়। ক্ষয় মাস নাম দেবার কারণ হল, এই ক্ষেত্রে দুটি রাশির জন্য একটি মাস নির্ধারিত হয়। কিন্তু স্বাভাবিক উপায়ে একটি চান্দ্র মাসে সূর্য একটি রাশিতেই গমন করলে, দুটি রাশির জন্য দুটি মাস নির্ধারণ করা হয়।
উদাহরণ হিসেবে, একই মাসে সূর্য মেষ ও বৃষ রাশিতে গমন করলে, সংশ্লিষ্ট মাসের নাম হবে চৈত্র-বৈশাখ ক্ষয় মাস। তখন চৈত্র ও বৈশাখ বলে কোনো আলাদা মাস থাকবে না।
ক্ষয় মাসের উপস্থিতি খুবই বিরল। আনুমানিক ১৯ থেকে ১৪১ বছর পর ক্ষয় মাসগুলি পুনরাবৃত্ত হয়। শেষ ক্ষয় মাস দেখা গিয়েছিল ১৯৮৩ সালে। সেই বছরে ১৫ই জানুয়ারি থেকে ১২ই ফেব্রুয়ারির সময়কাল ছিল পৌষ-মাঘ ক্ষয় মাস। ১৩ই ফেব্রুয়ারি থেকে আবার ফাল্গুন মলমাস শুরু হয়েছিল।
কোনো একটি চান্দ্র মাসে সূর্যের রাশি পরিবর্তন না হলে, কিন্তু পরবর্তী মাসে দু'বার রাশির পরিবর্তন হলে, সেক্ষেত্রে,
এই ঘটনার সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে। ১৩১৫ সালে শেষ দেখা গিয়েছিল। ৮ই অক্টোবর থেকে ৫ই নভেম্বর ছিল কার্তিক মলমাস। ৬ই নভেম্বর থেকে ৫ই ডিসেম্বর ছিল কার্তিক-মার্গশীর্ষ ক্ষয় মাস। ৬ই ডিসেম্বর থেকে আবার পৌষ শুরু হয়েছিল।
সাধারণ মাস, মলমাস ও ক্ষয় মাসের মধ্যে ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালনের জন্য সাধারণ মাস সবচেয়ে উৎকৃষ্ট। আশ্বিন মাসের শুক্লপক্ষের দশমী তিথিতে বিজয়াদশমী পালিত হয়। কোনো বছরে আশ্বিন মাসে মলমাস পড়লে, অর্থাৎ বছরে দুটো আশ্বিন মাস থাকলে, প্রথম মলমাসে ওই দিনে কোনো অনুষ্ঠান পালিত হবে না এবং দ্বিতীয় শুদ্ধ মাসে অনুষ্ঠানটি পালিত হবে। যদিও দ্বিতীয় মাসটি ক্ষয় আশ্বিন মাস হলে, উৎসবটি প্রথম মলমাসেই পালন করা বাঞ্ছনীয়।
ক্ষয় মাসের ক্ষেত্রে দুটো মাস একইসাথে পড়ে। এই অবস্থায় দুটি মাসের উৎসবগুলি ওই একই ক্ষয় মাসের মধ্যে স্থানান্তরিত করা হয়, যদি না পূর্বে কোনো মলমাস থেকে থাকে। মাঘ মাসের কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দশী তিথিতে মহাশিবরাত্রি ব্রত পালিত হয়। ১৯৮৩ সালে পৌষ ও মাঘ মাস মিলে পৌষ-মাঘ ক্ষয় মাস সৃষ্টি হয়েছিল। এর পরের মাস ছিল শুদ্ধ মার্গশীর্ষ। ওই বছরে শিবরাত্রি ব্রত পালিত হয়েছিল পৌষ-মাঘ ক্ষয় কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দশী তিথিতে।
মাস | মাসের দেবতা |
---|---|
অগ্রহায়ণ | কেশব |
পৌষ | নারায়ণ |
মাঘ | মাধব |
ফাল্গুন | গোবিন্দ |
চৈত্র | বিষ্ণু |
বৈশাখ | মধুসূদন |
জ্যৈষ্ঠ | ত্রিবিক্রম |
আষাঢ় | বামন |
শ্রাবণ | শ্রীধর |
ভাদ্র | হৃষীকেশ |
আশ্বিন | পদ্মনাভ |
কার্তিক | দামোদর |
হিন্দু পঞ্জিকায় চৈত্র মাসের শুক্লপক্ষের প্রতিপদের দিন বছরের শুরু বা নববর্ষ। কিন্তু চৈত্র মাসে মলমাস কিংবা ক্ষয়মাস থাকলে, বিধান অনুযায়ী কিছু সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়:
উপরের সমস্ত গণনায় অমাবস্যান্ত মানকে ধরা হয়েছে। কিন্তু অন্য একপ্রকার চান্দ্র-সৌর পঞ্জিকাও আছে, যেখানে মাসগুলির সজ্জারীতি পূর্বে বর্ণিত পঞ্জিকা থেকে কিছুটা আলাদা। যে দিনে সূর্যোদয়ের আগে পূর্ণিমা থাকে (অমাবস্যা নয়), সেই দিনটিকে মাসের শুরু বলে ধরে নেওয়া হয়। এই ক্ষেত্রে ওই চান্দ্র মাসের শেষও হয় পূর্ণিমা দিয়ে। একে পূর্ণিমান্ত মান বলে।
সংজ্ঞা থেকে অনেক অনুসিদ্ধান্ত পাওয়া যায়:
লক্ষণীয়:
এরপরে ভাদ্রপদ কৃষ্ণপক্ষ শুরু হয় স্বাভাবিক নিয়মেই।
এরপরে সাধারণভাবে মাঘ কৃষ্ণপক্ষ আরম্ভ হয়।
যদিও এইসব জটিল গণনার জন্য ধর্মীয় অনুষ্ঠানের দিনক্ষণের কোনো পরিবর্তন হয় না। যেহেতু দুই পদ্ধতিতে কৃষ্ণপক্ষের আগমনকালের তফাৎ থাকে, তাই যেসব অনুষ্ঠান কৃষ্ণপক্ষে থাকে, সেগুলোর মাসের নামের অদল-বদল করে দিলেই দুই পদ্ধতিতেই উৎসব একই দিনে পড়ে। সেই অনুসারে, অমাবস্যান্ত মান অনুযায়ী মহাশিবরাত্রি মাঘের কৃষ্ণ চতুর্দশীতে পালিত হয়। পূর্ণিমান্ত মান অনুযায়ী ব্রতটি একই দিনে পড়ে ঠিকই, কিন্তু দিনটির নাম ফাল্গুনের কৃষ্ণ চতুর্দশী।
হিন্দু পঞ্জিকায় (সৌর ও চান্দ্র-সৌর উভয়ই) বর্তমান যুগের প্রারম্ভিক দশা (শূন্যতম বর্ষের প্রথম দিনের শুরুর বিন্দু) অবস্থান করছে জুলিয়ান বর্ষপঞ্জির হিসেবে ১৮ই ফেব্রুয়ারি, ৩১০২ খ্রিস্টপূর্বাব্দে; আর প্রলেপ্টিক বর্ষপঞ্জির হিসেবে ২৩শে জানুয়ারি, ৩১০২ খ্রিস্টপূর্বাব্দে। পুরাণ অনুসারে, এই দিনেই শ্রীকৃষ্ণ বৈকুণ্ঠধামে প্রত্যাগমন করেন। সৌর ও চান্দ্র-সৌর ― উভয় পঞ্জিকাই এই তারিখ থেকে শুরু হয়। এরপরে যতগুলো বছর অতিক্রান্ত হয়েছে, তার ভিত্তিতে বছরের নাম দেওয়া হয়।
এটিই হিন্দু পঞ্জিকার একটি ব্যতিক্রমী ধর্ম। বেশিরভাগ বর্ষপঞ্জিই বর্তমান বছরের পূরণবাচক সংখ্যাটিকে বছরের চিহ্ন হিসাবে ধরে। মানুষের বয়স গণনা করা হয়, তার জন্মের পর কত বছর পার হয়েছে, তার ভিত্তিতে। কিন্তু হিন্দুরা এটা শুরুর থেকে করেন। ৩১শে অগাস্ট ২০১৪-য় হিন্দু পঞ্জিকার ৫১১৬ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে। সৌর পঞ্জিকার থেকে চান্দ্র-সৌর পঞ্জিকা কিছুটা আগে শুরু হয়, তাই প্রতি বছর একই দিনে বছর শুরু নাও হতে পারে।
সংখ্যাগত চিহ্ন ছাড়াও, হিন্দু পঞ্জিকায় ৬০টি বর্ষনামের একটি চক্র আছে, একে সংবৎসর বলা হয়। এই চক্র প্রথম বছরে শুনো হয়েছিল (যখন অতিক্রান্ত বর্ষের সংখ্যা শূন্য), এবং পর্যায়ক্রমে চলছে:
জুলিয়ান বর্ষপঞ্জির মতোই এই পদ্ধতিতেও অধিবর্ষ-এর ধারণা আছে। প্রতি চার বছর অন্তর, বছরে ৩৬৫ দিনের জায়গায় ৩৬৬ দিন থাকে। বছর শুরুর বিন্দুটি হল মেষাদি বা মেষ সংক্রান্তি (হিন্দু সৌরবর্ষে মেষ-এর প্রথম দিন)। এতে দিনের হিসেবও রাখা হয়। প্রথম দিন থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত ১৮৬৪০০০-এর বেশি দিন কেটে গিয়েছে। অর্থাৎ বর্তমান কলিযুগের (চতুর্যুগের ১/১০ অংশ) অনেকটা দিনই পার হয়ে গিয়েছে।
হিন্দুধর্মে মোট সময়কাল চারটি যুগ-এ বিভক্ত।[৪][৫] চারটি যুগ হল:
ইংরেজিতে এদের যথাক্রমে স্বর্ণ (Golden), রৌপ্য (Silver), ব্রোঞ্জ (Bronze) এবং লৌহ (Iron) যুগ বলা হয়। চারটি যুগে ক্রমান্বয়ে ধর্ম, জ্ঞান, শিক্ষা, পরম জ্ঞান, জীবনকাল এবং মানসিক ও দৈহিক শক্তির অবনমন ঘটে বলে বিশ্বাস।[৬][৭] আনুমানিক পাঁচ হাজার বছর আগে কলিযুগ আরম্ভ হয়েছিল।[৮][৯] দ্বাপর, ত্রেতা ও সত্য যুগের সময়কাল কলিযুগের থেকে যথাক্রমে দুই, তিন ও চারগুণ বেশি।[৮][১০]
সাধারণ বিশ্বাস অনুযায়ী, এক হাজার ও অন্য এক হাজার (মোট দু'হাজার) চতুর্যুগের মোট সময়কাল সৃষ্টিকর্তা ব্রহ্মার যথাক্রমে এক দিন ও রাত হিসেবে ধরা হয়। ব্রহ্মা ওইরূপ "দিবস" দিয়ে গঠিত ১০০ বছর বেঁচে থাকেন।[১১] অন্তিমকাল উপস্থিত হলে তিনি তার সৃষ্টিসমেত পরমাত্মায় বিলীন হয়ে যান।
বৈদিক যুগ থেকে হিন্দু পঞ্জিকার প্রচলন চলে আসছে। বেদে পঞ্জিকার গঠন সম্পর্কে অনেক তথ্য পাওয়া যায়। ষষ্ঠ বেদাঙ্গ, যাকে জ্যোতিষও বলা হয়, তাতে সমস্ত রকম পঞ্জিকার ধারণা পাওয়া যায়। পরবর্তী বৈদিক যুগে হিন্দু পঞ্জিকার উন্নয়নে আর্যভট্ট (৫ম শতাব্দী), বরাহমিহির (৬ষ্ঠ শতাব্দী) ও ভাস্করের (১২শ শতাব্দী) মতো অনেক ভারতীয় জ্যোতির্বিদ অবদান রাখেন।
হিন্দু পঞ্জিকার গঠন সম্পর্কে সর্বাপেক্ষা স্বচ্ছ ধারণা দেয় সূর্য সিদ্ধান্ত নামে গ্রন্থটি। এর রচনাকাল সঠিক জানা যায়নি। যদিও কারোর অভিমতে, এটি ১০ম শতাব্দীতে রচিত হয়েছিল।
প্রাচীন বৈদিক পঞ্জিকায় বছরের শুরু হত অগ্রহায়ণ (অগ্র = প্রথম + অয়ন = সূর্যের গতি) বা মার্গশীর্ষ মাস দিয়ে। এই মাসে সূর্য বিষুবরেখাকে অতিক্রম করে। এই মাসের অপর নাম মার্গশীর্ষ এসেছে ৫ম নক্ষত্র মৃগশিরার (ল্যাম্ডা ওরিঅনের কাছে) নাম থেকে। পৃথিবীর অক্ষের ধীর সরণের জন্য বিষুবরেখা বর্তমানে মীন রাশিতে অবস্থান করছে, অর্থাৎ প্রথম মাসের নাম চৈত্র। হাজার-হাজার বছর ধরে বিষুবরেখার এই সরণের জন্য ভারতীয় উপমহাদেশের নানা অঞ্চলে নানা মাস দিয়ে বছর শুরু করার প্রথা চালু হয়। কিছু পঞ্জিকা (যেমন, বিক্রম সংবৎ) চৈত্র মাসকে বছরের শুরু ধরে নিয়েছে, এই চৈত্র মাসেই বর্তমান বিষুবরেখা অবস্থান করছে। আবার কিছু পঞ্জিকা বৈশাখ মাসকে বর্ষারম্ভ মেনে নিয়েছে (যেমন, বঙ্গাব্দ)। অগ্রহায়ণ থেকে চৈত্র ― অর্থাৎ বিষুবরেখার সরণ হয়েছে চার মাস। আর পৃথিবীর অক্ষের সম্পূর্ণ সরণের সময়কাল ২৫,৮০০ বছর। এর থেকে গণনা করে বোঝা যায়, আনুমানিক চার হাজার কিংবা পাঁচ হাজার খ্রিস্টপূর্বাব্দে বিষুবরেখা অগ্রহায়ণে অবস্থান করছিল।
১৯৫২ সালে ভারতীয় পঞ্জিকা পুনর্গঠন বিভাগ দেশজুড়ে ৩০টিরও বেশি সুসংগঠিত পঞ্জিকাকে চিহ্নিত করেছিল। এদের প্রত্যেকটিই সূর্য সিদ্ধান্তের পৃথক পৃথক সংস্করণ, ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় ব্যবহৃত হত। এদের মধ্যে দুটি বহুল ব্যবহৃত পঞ্জিকা হল বিক্রম সংবৎ ও শালিবাহন পঞ্জিকা এবং তাদের আঞ্চলিক সংস্করণসমূহ। তামিলনাড়ুতে তামিল পঞ্জিকা নামে একটি সৌর পঞ্জিকা ব্যবহৃত হয় এবং কেরলে ব্যবহৃত হয় কোল্লবর্ষম্ পঞ্জিকা।
ভারতে বহুল প্রচলিত দুটি পঞ্জিকার মধ্যে বিক্রম সংবৎ বর্তমানে নেপালের জাতীয় পঞ্জিকা এবং ভারতের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলে ব্যবহৃত হয়। শালিবাহন বা শক সংবৎ অন্ধ্র প্রদেশ, কর্ণাটক, মহারাষ্ট্র ও গোয়ায় প্রচলিত।
৫৬ খিষ্টপূর্বাব্দে উজ্জয়িনীর সম্রাট বিক্রমাদিত্য শকদের সাথে যুদ্ধে তার বিজয় উপলক্ষে বিক্রম সংবৎ চালু করেন। ঠিক একইভাবে ৭৮ খ্রিষ্টাব্দে সাতবাহন রাজা গৌতমীপুত্র সাতকর্ণী শকদের পরাজিত করে শক সংবৎ চালু করেন।
বিক্রম ও শালিবাহন ― উভয় পঞ্জিকায় চান্দ্র-সৌর পঞ্জিকা, এতে বছর বারোটি মাসে বিভক্ত, আবার প্রতিটি মাস দুটি পক্ষে বিভক্ত: শুক্লপক্ষ ও কৃষ্ণপক্ষ;প্রথম পক্ষে চন্দ্রকলার বৃদ্ধি হয়, অপর পক্ষে ক্ষয় হয়। অর্থাৎ, যে পক্ষ অমাবস্যা দিয়ে শুরু ও পূর্ণিমা দিয়ে শেষ হয়, সেটি হয় শুক্লপক্ষ, বিপরীতক্রমে পূর্ণিমা দিয়ে শুরু হয়ে অমাবস্যায় শেষ হলে, পক্ষের নাম হয় কৃষ্ণপক্ষ।
দুই পঞ্জিকাতে ১২টি মাসের নাম ও তাদের ক্রমও একই; যদিও নববর্ষ পালিত হয় ভিন্ন ভিন্ন সময়ে। আবার পঞ্জিকা দুটিতে "শূন্যতম বর্ষ"ও আলাদা। বিক্রম সংবতে এই শূন্যতম বছরটি হল ৫৬ খ্রিস্টপূর্বাব্দ, শালিবাহনে ৭৮ খ্রিস্টাব্দ। বিক্রম সংবতে বছরের শুরু হয় বৈশাখ (এপ্রিল) মাসে (যদিও গুজরাতে কার্তিক মাসে হয়)। শালিবাহন পঞ্জিকায় বছর শুরু করা হয় চৈত্র মাসে (অক্টোবর-নভেম্বর), উগাদি বা গুড়ি পাড়বা উৎসবের মধ্য দিয়ে।
এছাড়াও দুটি পঞ্জিকার মধ্যে আরও কিছু পার্থক্য রয়েছে: শালিবাহন পঞ্জিকায় মাসের প্রথম পক্ষ হয় শুক্লপক্ষ আর দ্বিতীয় তথা শেষ পক্ষ হয় কৃষ্ণপক্ষ, বিক্রম সংবতে এর বিপরীত ঘটনাটি ঘটে। সেই অনুযায়ী, শালিবাহন মাস অমাবস্যা দিয়ে শেষ ও শুরু হয়, কিন্তু বিক্রম সংবতের মাসে সেটা হয় পূর্ণিমা দিয়ে (বিক্রম সংবৎ মেনে চললেও গুজরাতি পঞ্জিকা একটি ব্যতিক্রম, এতে যে কোনো মাস, এমনকি নববর্ষও, শুরু ও শেষ হয় অমাবস্যা তিথি দিয়ে)।
গুজরাতে বিক্রম সংবৎ বর্ষের শেষ দিনে দীপাবলি পড়ে, ঠিক পরের দিনটিই নববর্ষ হিসেবে পালিত হয়। স্থানীয় ভাষায় একে অন্নকূট বা নূতন বর্ষ্ বা বেসতুঁ বরস বলে। উত্তর ভারতে প্রচলিত হিন্দু পঞ্জিকায় বছর শুরু হয় চৈত্র শুক্ল প্রতিপদ (মার্চ-এপ্রিল) দিয়ে।
ভারতে প্রচলিত পঞ্জিকাগুলির মধ্যে সংবৎ হল এক বিশেষ ধরনের পঞ্জিকা:
বেশিরভাগ ভারতীয় উৎসবই প্রথম দুটি পঞ্জিকার নির্দেশে পালিত হয়। সংক্রান্তি (নিরয়ণ সৌর) ও নববর্ষের (সায়ন সৌর; পয়লা বৈশাখ, বৈসাখী) মতো অল্পসংখ্যক কিছু উৎসব সৌর রীতিতে আয়োজিত হয়।
নিচে শক সংবৎ অনুযায়ী ভারতীয় মাসগুলি দেওয়া হয়েছে। শক ও চৈত্রাদি বিক্রম সংবৎ বছর চৈত্র মাস থেকে শুরু হয়: এই রীতিটি ভারতের উত্তর প্রদেশ, রাজস্থান, মহারাষ্ট্র ও অন্যান্য কিছু অঞ্চলে প্রচলিত। গুজরাতে কার্তিকাদি বিক্রম সংবৎ বছর প্রচলিত, যা কার্তিক মাস দিয়ে শুরু হয়।
# | ভারতীয় | গ্রেগরীয় |
---|---|---|
১ | চৈত্র | মার্চ-এপ্রিল |
২ | বৈশাখ | এপ্রিল-মে |
৩ | জ্যৈষ্ঠ | মে-জুন |
৪ | আষাঢ় | জুন-জুলাই |
৫ | শ্রাবণ | জুলাই-অগাস্ট |
৬ | ভাদ্র | অগাস্ট-সেপ্টেম্বর |
৭ | আশ্বিন | সেপ্টেম্বর-অক্টোবর |
৮ | কার্তিক | অক্টোবর-নভেম্বর |
৯ | মার্গশীর্ষ (অগ্রহায়ণ) | নভেম্বর-ডিসেম্বর |
১০ | পৌষ | ডিসেম্বর-জানুয়ারি |
১১ | মাঘ | জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি |
১২ | ফাল্গুন | ফেব্রুয়ারি-মার্চ |
বিষুববৃত্তকে মেষাদি (০°) থেকে শুরু করলে প্রতিটি নক্ষত্র ১৩° ২০' কৌণিক স্থান দখল করে। প্রত্যেক মাসের পূর্ণিমার দিনে যেই নক্ষত্র থাকে, তার নাম অনুসারে মাসের নাম দেওয়া হয়।
ভারতের কালচক্রগুলি হল:[১২][১৩]
প্রতি তিন বছরে একটি অতিরিক্ত মাস যোগ করে নিরয়ণ ও সায়ন বর্ষের মধ্যে সামঞ্জস্য রাখা হয়। এই অতিরিক্ত মাসকে "অধিক মাস" বলে। পূর্ব ভারতে একে মলমাস বলে।
ভারতীয় পঞ্জিকার তারিখকে সাধারণ জুলিয়ান বর্ষপঞ্জির তারিখে রূপান্তরিত করতে অনেক জটিল গণনা করতে হয়। আনুমানিক খ্রিস্টীয় তারিখে পৌঁছোতে:
১৯৫৭ সালে শালিবাহন পঞ্জিকার একটি রূপভেদকে সংস্কার ও ব্যবহারযোগ্য করে তাকে ভারতীয় জাতীয় পঞ্জিকার মর্যাদা দেওয়া হয়েছিল। এই পঞ্জিকা শালিবাহন শক পঞ্জিকার উপর ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত, এর প্রথম মাস চৈত্র এবং বছর গণনা শুরু হয়েছিল ৭৮ খ্রিষ্টাব্দে। এই পঞ্জিকায় প্রতিমাসে দিনসংখ্যার কোনো পরিবর্তন হয় না। এতে অধিবর্ষের ব্যবস্থাও আছে।
১৫৮৪ সালে প্রবর্তিত বাংলা পঞ্জিকা বা বঙ্গাব্দ পূর্ব ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা ও অসম রাজ্যে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। ১৯৬৬ সালে বর্তমান বাংলাদেশে এই পঞ্জিকার কিছুটা সংস্কার করে বাংলাদেশের জাতীয় পঞ্জিকা হিসেবে মেনে নেওয়া হয়, এতেও প্রত্যেক মাসে দিনসংখ্যা অপরিবর্তিত আর অধিবর্ষ আছে। নেপালে বিক্রম সংবৎ প্রচলিত। মায়ানমার, কম্বোডিয়া, লাওস, শ্রীলঙ্কা ও থাইল্যান্ডে প্রায় বৌদ্ধ পঞ্জিকার মতো একই মাস ও সময়কালযুক্ত বর্ষপঞ্জি ব্যবহৃত হয়।
হুইটেকার্স অ্যালামনাক-কে প্রমাণ বা নির্দেশক হিসেবে ধরে নিলে, দেখা যায় গ্রেগরীয় সাল ২০০০ খ্রিষ্টাব্দ নিম্নলিখিত পঞ্জিকার বছরগুলির সাথে সমান হয়:
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.