Loading AI tools
পশ্চিমবঙ্গের একটি জেলা উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
মালদহ জেলা বা মালদা জেলা ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মালদহ বিভাগের একটি জেলা। ৩১ শ্রাবণ ১৩৫৪ বঙ্গাব্দে (১৭ আগস্ট ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে) পূর্বতন মালদহ জেলার অংশবিশেষ নিয়ে মালদহ জেলা স্থাপিত হয়৷ জেলাটির জেলাসদর ইংরেজ বাজার। মালদহ ও চাঁচল মহকুমা দুটি নিয়ে মালদহ জেলা গঠিত। জেলাটির অবস্থান পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতা থেকে ৩৮৭ কিলোমিটার (২৪০ মাইল) উত্তরে।
মালদহ জেলা মালদা জেলা | |
---|---|
পশ্চিমবঙ্গের জেলা | |
পশ্চিমবঙ্গে মালদহের অবস্থান | |
দেশ | ভারত |
রাজ্য | পশ্চিমবঙ্গ |
প্রশাসনিক বিভাগ | মালদহ |
সদরদপ্তর | ইংরেজ বাজার |
মহকুমা | ১৫টি |
সরকার | |
• লোকসভা কেন্দ্র | মালদা উত্তর, মালদা দক্ষিণ |
• বিধানসভা আসন | হাবিবপুর, গাজোল, চাঁচল, হরিশ্চন্দ্রপুর, মালতীপুর, রতুয়া, মানিকচক, মালদহ, ইংরেজ বাজার, মোথাবাড়ি, সুজাপুর, বৈষ্ণবনগর |
আয়তন | |
• মোট | ৩,৭৩৩ বর্গকিমি (১,৪৪১ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১) | |
• মোট | ৩৯,৮৮,৮৪৫ |
• জনঘনত্ব | ১,১০০/বর্গকিমি (২,৮০০/বর্গমাইল) |
• পৌর এলাকা | ৫,৪১,৬৬০ |
জনতাত্ত্বিক | |
• সাক্ষরতা | ৬১.৭৩ |
• লিঙ্গানুপাত | ৯৪৪ |
প্রধান মহাসড়ক | ৩৪ নং জাতীয় সড়ক, ৮১ নং জাতীয় সড়ক |
ওয়েবসাইট | [www |
মালদহ জেলার নামকরণ এই জেলার আদি বাসিন্দা ‘মলদ’ কৌমগোষ্ঠীর নাম থেকে। অন্যমতে ফার্সি ‘মাল’ (ধনসম্পদ) ও বাংলা ‘দহ’ শব্দদ্বয়ের সমন্বয়ে এই জেলার নামটির উৎপত্তি।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
বিশিষ্ট দার্শনিক ও বৈয়াকরণ পাণিনি তার লেখায় "গৌড়পুরা" নামক একটি প্রাচীন জনপদের কথা উল্লেখ করেন৷ সম্ভবতঃ উল্লেখিত জনপদটিই বর্তমানে মালদহ জেলায় উপস্থিত গৌড় অঞ্চল, যার বিস্তৃৃতি "পুরাতন গৌড় ও পাণ্ডুয়া (পুণ্ড্রবর্ধন)" অবধি৷ প্রাচীন ও মধ্যযুগ সমকালীন নগরদুটির অবস্থান মালদহ জেলার বর্তমান সদর ইংরেজ বাজারের উত্তর ও দক্ষিণে বলে অনুমান করা হয়৷
সাম্যাজ্যটির সীমানা বিস্তৃৃতি ও পরিবর্তনের প্রমাণ পৌরাণিক বিভিন্ন পুস্তিকাতে পাওয়া যায়৷ পুণ্ড্রনগর ছিলো মৌর্য সাম্রাজ্যের পূর্বপাশ্বীয় বিভাগীয় সদর৷ বর্তমান বাংলাদেশের বগুড়া জেলার মহাস্থানগড় নামক স্থান থেকে উদ্ধারীকৃৃৃত ব্রাহ্মী লিপিতে খোদাই করা এক শিলালেখ থেকে প্রমাণ পাওয়া যায় যে, গৌড় ও পুণ্ড্রবর্ধন অঞ্চল পূর্বে মৌর্য সাম্রাজ্যের অংশ ছিলো৷
সমুদ্রগুপ্তের এলাহাবাদ স্তম্ভ ও দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কিছু প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন থেকে বোঝা যায় যে সমগ্র উত্তর বঙ্গ থেকে কামরূপ গুপ্ত সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত ছিলো৷ সপ্তম শতাব্দীর প্রারম্ভে গুপ্ত সাম্রাজ্যের পতনের পর প্রায় তিন দশক যাবৎ কর্ণসুবর্ণের রাজা তথা গৌড়রাজ শশাঙ্ক স্বাধীনভাবে শাসনভার নেন৷
আবার অষ্টম শতাব্দীর মধ্যভাগ থেকে একাদশ শতাব্দীর শেষভাগ অবধি ঐ অঞ্চলে পাল সাম্রাজ্য বিস্তৃৃতিলাভ করে৷ পাল রাজারা ছিলেন বৌদ্ধ ধর্মের পৃৃৃষ্ঠপোষক৷ পাল বংশের শাসনকালে বরেন্দ্র ভূমির বৌদ্ধবিহার জগদল্লবিহার; নালন্দা, বিক্রমশিলা ও দেবীকোট বিহারের সমকক্ষে উন্নীত হয়৷[1]
পাল সাম্রাজ্যের পতনের পর উত্থান ঘটে সেন বংশের৷ সেনরাজারা আবার হিন্দু ধর্মের পৃৃষ্ঠপোষক ছিলেন৷ তাদের সাম্রাজ্য বৃৃদ্ধির ও শাসনের পদ্ধতি ছিলো কিছুটা যাযাবর প্রকৃতির ফলে বৌদ্ধ ধর্মের প্রসার কিছু ক্ষেত্রে হলেও হ্রাস পায় এবং একসময় লুপ্তপ্রায় হয়ে যায়৷ সেন বংশের শেষ রাজা লক্ষ্মণ সেনের কালে গৌড়ের নাম হয় লক্ষ্মণাবতী বা লখনৌতি৷ ১২০৪ খ্রিস্টাব্দে গৌড় বখতিয়ার খলজির দ্বারা আক্রান্ত হয় যাকে হারিয়ে মহারাজ লক্ষ্মণ সেন পুনরায় গৌড় উদ্ধার করেন। এরপরেও সেনবংশীয় বিশ্বরূপ সেন, কেশব সেন, মাধব সেন গৌড় শাসন করেছেন এবং "গৌড়েশ্বর" উপাধি নেন।
মধ্যযুগ সমকালীন সুলতানদের মধ্যে "ইলিয়াস শাহ, ফারুখ শাহ, সিকান্দার শাহ, আলাউদ্দিন হোসেন শাহ, নাসিরউদ্দিন নুসরাত শাহ ইত্যাদি উল্লেখ্য৷
ফিরোজ শাহ তুঘলক, গিয়াস উদ্দিনসহ বিভিন্ন দিল্লীর সুলতানদের দ্বারা মালদহ গৌড় বারবার আক্রান্ত হয়৷ মুসলিম শাসনকালের কিছু উল্লেখযোগ্য নিদর্শনগুলির মধ্যে ফিরোজ মিনার, আদিনা মসজিদ, কোতোয়ালী দরজা ইত্যাদি৷
আফগান সম্রাট শের শাহ সুরি একদা মালদা অঞ্চলে আধিপত্য বিস্তার করলেও তা মুঘল সম্রাট হুমায়ুন দ্বারা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়৷ গৌড় অঞ্চলখ্যাত আমের স্বাদে তৃৃপ্ত হয়ে তিনি এ অঞ্চলের নাম দেন "জান্নাতাবাদ"। মুঘল শাসনকালে পূর্বাঞ্চলীয় বাংলা-ভুক্তির সদর গঙ্গা প্রবাহের তারতম্য ও অন্যকিছু কারণে গৌড় থেকে ঢাকাতে স্থানান্তরিত করা হয়৷
১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দের পর মুসলিম সাম্রাজ্যের পতন ঘটে ও ব্রিটিশসহ কোচ রাজবংশের প্রভাব বাড়তে থাকে৷
১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দে পলাশীর যুদ্ধের পর ইংরেজ সরকার শাসনভার গ্রহণ করে ও তাঁরা মহানন্দা নদীর দক্ষিণ পাড়ে স্থিত হয় ৷ তারা প্রাথমিকভাবে সেখানে নীলচাষ , পরিবহন ও ব্যবসার কেন্দ্র ও কিছু সরকারি দপ্তর চালু করে ৷ উইলিয়াম ক্যারি-কে এই দায়িত্বভার দেওয়া হয় ৷ তাসত্ত্বেও গৌড়ের পুরোনো খ্যাতি ঐতিহ্য হারিয়ে যেতে থাকে।
ব্রিটিশ শাসনের আদিপর্বে মালদহ জেলার কোনো অস্তিত্ব ছিল না৷ ১৭৯৩ সালে মালদহ অবিভক্ত দিনাজপুর জেলার থানা রূপে প্রতিষ্ঠিত হয়।[2] পরবর্তীকালে ১৮১৩ খ্রিস্টাব্দে মালদহ গৌড় অঞ্চলে তীব্র প্রতিবাদের ফলে দিনাজপুর জেলার গাজোল, মালদা, হবিবপুর, বামনগোলা থানাগুলি; অবিভক্ত পূর্ণিয়া জেলার রতুয়া, হরিশ্চন্দ্রপুর, মানিকচক, কালিয়াচক থানাগুলি; অবিভক্ত রাজশাহী জেলার শিবগঞ্জ, চাঁপাই নবাবগঞ্জ, নাচোল, ভোলাহাট, গোমস্তাপুর থানাগুলি নিয়ে মালদহ জেলা গঠিত হয়৷ জেলাটির তিনটি মহকুমা ছিলো যথাক্রমে চাঁচল, মালদহ ও নবাবগঞ্জ৷
১৮৩২ খ্রিস্টাব্দে জেলাটি বিশেষ মর্যাদা পায়, ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে ম্যাজিস্ট্রেট কালেক্টর নিযুক্ত করা হয় এবং একটি সম্পূর্ণ জেলাতে উন্নীত হয় ৷ ১৮৭৬ অবধি জেলাটি রাজশাহী বিভাগের অন্তর্গত ছিলো , ১৯০৫ অবধি যা ভাগলপুর বিভাগভুক্ত করা হয় , যদিও পরবর্তীকালে স্বাধীনতালাভ পর্যন্ত অবিভক্ত মালদহ জেলা পুনরায় রাজশাহী বিভাগে অন্তর্ভুক্ত জেলা হিসাবে পরিগণিত হয় ৷ ১৯০৫ এ প্রথমবার বঙ্গভঙ্গের (বাংলা ভাগ) সময় মালদহ জেলা পূর্ববঙ্গ ও আসাম প্রদেশটির অংশ হিসাবে ঘোষিত হয় ৷ মালদহের ইতিহাসে রফিক মন্ডলের নেতৃৃত্বে নীল আন্দোলন এবং জিতুর সাহচর্যে সাঁওতালদের ঐতিহাসিক আদিনা মসজিদ দখল জাজ্জ্বল্যমান।
১৯৪৭ সালের দেশভাগ মালদহ জেলাকে সর্বাধিক প্রভাবিত করে৷ সিরিল র্যাডক্লিফের অদূরদর্শিতা ও দেশভাগের সীমানা অনিশ্চিত থাকার দরুন ১৯৪৭ এ ১২-১৫ আগস্টের মধ্যে এটা ঠিক করা যায় না যে মালদহ জেলা কোন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে যুক্ত হবে৷ এযাবৎ জেলাটির সুশাসন পূর্ববঙ্গের ম্যাজিস্ট্রেটের উপর বজায় থাকে৷ র্যাডক্লিফের পুনর্বিবেচনার পর ১৭ ই আগস্ট জেলাটির অধিকাংশ ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে যুক্ত করা হয় মালদহ জেলারূপে এবং নবাবগঞ্জ মহকুমা পূর্ববঙ্গে থেকে যায় রাজশাহী জেলার মহকুমারূপে৷
১৭০৩ বর্গকিলোমিটার ক্ষেত্রফল বিশিষ্ট অবিভক্ত মালদহ জেলার দক্ষিণপূর্ব ভাগ বর্তমানে বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগের অন্তর্ভুক্ত চাঁপাই নবাবগঞ্জ জেলা৷ আবার ৩৭৩৩ বর্গকিলোমিটার ক্ষেত্রফল বিশিষ্ট অবিভক্ত মালদহ জেলার সদর ও উত্তরপূর্ব ভাগ বর্তমানে ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মালদহ বিভাগের অন্তর্ভুক্ত মালদহ জেলা৷
জনচর্চিত আন্দোলনগুলির মধ্যে জিতু সাঁওতালের নেতৃত্বে ১৯৩২ সালে ঘটে যাওয়া আন্দোলনটি গুরুত্বপূর্ণ৷ তনিকা সরকারের মতো ঐতিহাসিকদের মতে এটি ছিলো মালদহে বসবাসরত উপজাতিগোষ্ঠীর অস্তিত্বের সংগ্রাম৷ সাঁওতাল ও তাদের জমিদার এ দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে মতবিরোধ শুরু হয় মূলত ১৯১০ সনে৷ যেহেতু বরেন্দ্র ভূমি অঞ্চলটি কৃৃষিভিত্তিক ও কৃৃষিতে যথেষ্ট উৎকৃৃষ্ট তাই সেখানকার জমিদাররা সাধারণের ওপর করের পরিমাণ বাড়াতে শুরু করে৷ ফলে সাঁওতাল জনজাতির লোকেদের পরিপূর্ণ জীবনযাপনে বাধা হয়ে উঠতে থাকে এই করের বোঝা এবং জমিদারদের আড়ম্বর দিন দিন বাড়তে থাকে৷ এভাবে জমিদারদের ওপর সাধারণের ক্ষোভ পুঞ্জীভূত হতে থাকে৷ ক্ষোভ মাত্রা অতিক্রম করে যখন বুলবুলচণ্ডীর জমিদার করের পরিমাণ বৃৃদ্ধির প্রস্তাব দেয়৷ ফলস্বরূপ, হবিবপুরের কোচকান্দাহার গ্রামের জিতু সাঁওতালের নেতৃত্বে সমস্ত সাঁওতালরা একত্রিত হতে থাকে৷ ১৯২৬ সনে সাঁওতালরা হিন্দুধর্মে দীক্ষিত হতে থাকে ও জিতু সাঁওতালের নেতৃৃত্বে 'জিতু সন্যাসীদল' গঠন করে৷ ১৯২৮ সনে দলটি শিখরপুরে সঞ্চিত সমস্ত মজুত শস্য লুঠ করে এবং এমন অাারো লুঠের খবর আসতে থাকে৷ পরে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের তত্ত্বাবধানে ও পুলিশ সুপিরের সহযোগিতায় ১৯৩২ সনে জিতু সহ তার ৬০ অনুগামীকে কারারুদ্ধ করা হয়৷
মালদহ জেলার রাধেশ চন্দ্র শেঠের সম্পাদনায় প্রকাশিত 'গৌড়বার্তা' ও 'গৌড়দূত' এবং কালীপ্রসন্ন চক্রবর্তীর 'মালদা সমাচার' পত্রিকার অবদান অনস্বীকার্য৷ ১৯৪৪ থেকে ৪৭ এর মধ্যে বহুবার পত্রিকাগুলিকে সরকারীভাবে বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও তা সফল হয় নি৷ কলকাতাকেন্দ্রিক স্বদেশী আন্দোলনকে ভালুকা , রতুয়া, মালদহ, হরিশ্চন্দ্রপুরে ছড়িয়ে দেওয়া সহ আইন অমান্য ও অসহযোগ আন্দোলনে মালদা জেলার ভুমিকা রয়েছে৷ ১৯১৪ থেকে মালদহের পুলিশ থানা ও সরকারি অফিসে দাঙ্গা ব্রিটিশ বিরোধী আকার ধারণ করে যা ১৯৩০ এর রতুয়াতে আন্দোলন ও অগ্নিসংযোগের দ্বারা তীব্র আকার ধারণ করে৷ তেভাগা আন্দোলনে মালদহ নারীবাহিনীর অবদান উল্লেখযোগ্য৷
মালদহ জেলার মৃৃত্তিকা সমতল প্রকৃতির যা জেলাটির উত্তর-দক্ষিণে প্রবাহিত মহানন্দা নদীর উভয়তীরে পরিলক্ষিত হয় ৷ অপরপক্ষে জেলাটির দক্ষিণভাগ গঙ্গার পললমৃৃত্তিকা সমৃদ্ধ ফলে অঞ্চলটি উর্বর ও কৃষিসমৃদ্ধ ৷ মালদহ জেলার ভূ-প্রকৃৃতি মূলত সমতল প্রকৃতির হলেও কিছুস্থানের উঁচু-নিচু ভূমি দেখতে পাওয়া যায় ৷ গঙ্গা ,মহানন্দা , টাঙ্গন ,পুনর্ভবা নদী ইত্যাদি প্রতুল নদীসমূহ উত্তর থেকে দক্ষিণে প্রবাহিত ৷ নদীগুলি যেমন কৃষিতে উন্নতির কারণ তেমনি তা কখনো বন্যার কারণ ও হয় ৷
মালদহ জেলার মাত্র ১৭ বর্গকিলোমিটার এলাকা বনভূমি আচ্ছাদিত যা উত্তরবঙ্গের অন্যান্য জেলাগুলির তুলনায় নগন্য ৷ দক্ষিণ ও মধ্যভাগে বিস্তৃত বনভূমিগুলির অধিকাংশ মহানন্দা ও কালিন্দী নদীর তটবরাবর অবস্থিত ৷
মালদহ জেলার ২১৮০ বর্গকিমি অঞ্চলজুড়ে কৃষি ও চারণক্ষেত্র বিস্তৃত ৷ ঊষর ভূমি ৯০১ বর্গকিমি জুড়ে বিস্তৃত ৷
মালদহ একটি কৃষিনির্ভর জেলা। বৃহৎ শিল্পে এই জেলা বিশেষ অনুন্নত হলেও এখানকার ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের বিশেষ খ্যাতি রয়েছে। সুলতানি যুগের বিভিন্ন স্থাপত্য নিদর্শনকে কেন্দ্র করে একটি উল্লেখযোগ্য পর্যটন শিল্পও এখানে বিকাশলাভ করেছে। মালদহের গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় উত্তরবঙ্গের দ্বিতীয় সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়। মালদা জেলা ফজলি আম-এর জন্য সুপরিচিত। আমের অন্যান্য প্রকারগুলি হলো গোপালভোগ, বৃৃন্দাবনী , ল্যাংড়া , ক্ষীরশাপাটি , কৃষ্ণভোগ ৷ এছাড়া পাটচাষ ও সিল্কের কাজ বহুল ৷ পশ্চিমবঙ্গে কাঁচা সিল্ক তৈরীতে মাালদার অবদান ৮৫% , যার বাজারদর মূল্য প্রায় ৪ কোটি ভারতীয় টাকা ৷
কৃৃষি ছাড়াও মালদহ, গৌড়-পান্ডুয়া বহু পুরানো ঐতিহ্য ও পর্যটনস্থল যা জেলাটির অর্থনীতীর অন্যতম উৎস৷
সমষ্টি উন্নয়ন ব্লক অনুযায়ী ভাষাভিত্তিক তালিকাবদ্ধ জনসংখ্যা নিম্নরূপ :
চাঁচল মহকুমাটিতে সর্বাধিক প্রচলিত ভাষাটি হলো বাংলা যা সমগ্র মহকুমার ১৩৩৮৩৭৯ জনের মধ্যে ১২৮২২৮৩(৯৫.৮১%) জনের মাতৃভাষা ৷
ক্রম | সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকের নাম | সর্বমোট জনসংখ্যা - ২০১১ | সর্বাধিক প্রচলিত ভাষা | দ্বিতীয় সর্বাধিক প্রচলিত ভাষা | তৃৃতীয় সর্বাধিক প্রচলিত ভাষা | চতুর্থ সর্বাধিক প্রচলিত ভাষা | অন্যান্য ভাষাসমূহের জনসংখ্যা | পাই চিত্র |
---|---|---|---|---|---|---|---|---|
১ | চাঁচল-১ | ২০৪৭৪০ | বাংলা - ২০৩২১৬ (৯৯.২৬%) | অন্যান্য - ১৫২৪ | ||||
২ | চাঁচল-২ | ২০৫৩৩৩ | বাংলা - ১৯৬৮০০ (৯৫.৮৪%) | সাঁওতালি - ৩৭৭৭ (১.৮৪%) | ওরাওঁ - ১৭১২ (০.৮৩%) | খোরঠা - ১১৫৮ (০.৫৬%) | অন্যান্য - ১৮৮৬ | |
৩ | রতুয়া-১ | ২৭৫৩৮৮ | বাংলা - ২৭০৬৩৬ (৯৮.২৭%) | খোরঠা - ২৩৫১ (০.৮৫%) | হিন্দী - ১৮৭২ (০.৬৮%) | অন্যান্য - ৫২৯ | ||
৪ | রতুয়া-২ | ২০২০৮০ | বাংলা - ১৯৬১৮১ (৯৭.০৮%) | খোরঠা - ৪৫০১ ( ২.২৮%) | অন্যান্য - ১৩৯৮ | |||
৫ | হরিশ্চন্দ্রপুর-১ | ১৯৯৪৯৩ | বাংলা - ১৯৩১৬৩ (৯৬.৮৩%) | হিন্দী - ২৮৫৯ (১.৪৩%) | ওরাওঁ - ১৫২৫ (০.৭৫%) | অন্যান্য - ১৯৪৬ | ||
৬ | হরিশ্চন্দ্রপুর-২ | ২৫১৩৪৫ | বাংলা - ২২২২৮৭ (৮৮.৪৪%) | খোরঠা - ১৪৮৭৫ (৫.৯২%) | হিন্দী - ৫৮৮৩ (২.৩৪) | সাভারা - ৩৩৯৭ (১.৩৫%) | সাঁওতালি - ২৮৭৪ (১.১৪%) , অন্যান্য - ২০২৯ |
মালদহ সদর মহকুমাটিতে সর্বাধিক প্রচলিত ভাষাটি হলো বাংলা যা সমগ্র মহকুমার ২৬৫০৪৬৬ জনের মধ্যে ২৩৪৮৯৭৯(৮৮.৬৩%) জনের মাতৃভাষা ৷
ক্রম | সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকের নাম | সর্বমোট জনসংখ্যা - ২০১১ | সর্বাধিক প্রচলিত ভাষা | দ্বিতীয় সর্বাধিক প্রচলিত ভাষা | তৃৃতীয় সর্বাধিক প্রচলিত ভাষা | চতুর্থ সর্বাধিক প্রচলিত ভাষা | অন্যান্য ভাষাসমূহের জনসংখ্যা | পাই চিত্র |
---|---|---|---|---|---|---|---|---|
১ | গাজোল | ৩৪৩৮৩০ | বাংলা - ২৭৫৪৩০ (৮০.১১%) | সাঁওতালি - ৫৬৬৮৯ (১৬.৪৯%) | কোড়া - ৩১৭৮ (০.৯২%) | হিন্দী - ২১০৪ (০.৬১%) | অন্যান্য - ৬৪২৯ | |
২ | বামনগোলা | ১৪৩৯০৬ | বাংলা - ১১৪৭৭৮ (৭৯.৭৬%) | সাঁওতালি - ২৩০৯৫ (১৬.০৫%) | হিন্দী - ২০১৫ (১.৪০%) | ওরাওঁ - ১১৩৭ (০.৭৯%) | কুড়মালী - ১০৬০ (০.৭৪%) ,অন্যান্য - ১৮২১ | |
৩ | হবিবপুর | ২১০৬৯৯ | বাংলা - ১৪২৩৯৭ (৬৭.৫৮%) | সাঁওতালি - ৫৭৫৮৭ (২৭.৩৩%) | হিন্দী - ৬১১৩ (২.৯০%) | খোরঠা - ২৪২৮ (১.১৫%) | অন্যান্য - ২১৭৪ | |
৪ | মালদহ | ১৫৬৩৬৫ | বাংলা - ১৩০৩৯৩ (৮৩.৩৯%) | সাঁওতালি - ১৯৬৮৬ (১২.৫৯%) | হিন্দী - ৩৮১৭ (২.৪৪%) | অন্যান্য - ২৪৬৯ | ||
৫ | ইংরেজ বাজার | ২৭৪৬২৭ | বাংলা - ২৬৮৪৯৩ (৯৭.৭৭%) | হিন্দী - ২৮৭৩ (১.০৫%) | খোরঠা - ১৯৬২ (০.৭১%) | অন্যান্য - ১২৯৯ | ||
৬ | মানিকচক | ২৬৯৮১৩ | বাংলা - ২০৯৪৫৫ (৭৭.৬৩%) | খোরঠা - ৪৩৩৭৫ (১৬.০৮%) | কিশান - ৯৭৩৯ (৩.৬১%) | হিন্দী - ৬২১৮ (২.৩০%) | অন্যান্য - ১০২৬ | |
৭ | কালিয়াচক-১ | ৩৯২৫১৭ | বাংলা - ৩৮১২২৭ (৯৭.১২%) | খোরঠা - ১০৭৫৯ (২.৭৪%) | অন্যান্য - ৫৩১ | |||
৮ | কালিয়াচক-২ | ২১০১০৫ | বাংলা - ২০৮৮৪২ (৯৯.৪০%) | অন্যান্য - ১২৬৩ | ||||
৯ | কালিয়াচক-৩ | ৩৫৯০৭১ | বাংলা - ৩৫০০৫৬ (৯৭.৪৯%) | খোরঠা - ৫৮৯৭ ( ১.৬৪%) | অন্যান্য - ৩১১৮ | |||
১০ | পুরানো মালদহ পৌরসভা | ৮৪০১২ | বাংলা - ৭৮৩২৬ (৯৩.২৩%) | হিন্দী - ৫৪৭৯ (৬.৫২%) | অন্যান্য - ২০৭ | |||
১১ | ইংরেজ বাজার পৌরসভা | ২০৫৫২১ | বাংলা - ১৮৯৫৮২ (৯২.২৪%) | হিন্দি - ১৪২০৫ (৬.৯১%) | অন্যান্য - ১৭৩৪ |
সমষ্টি উন্নয়ন ব্লক অনুযায়ী বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী মানুষের সংখ্যা নিম্নরূপ[6] -
ক্রম | সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকের নাম | সর্বমোট জনসংখ্যা ২০১১ - ১৩৩৮৩৭৯ | হিন্দু ধর্মাবলম্বী জনসংখ্যা ২০১১ - ৩৯৫৫৩৩ (২৯.৫৫%) | ইসলাম ধর্মাবলম্বী জনসংখ্যা ২০১১ - ৯৩৯০০২ (৭০.১৬%) | খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী জনসংখ্যা ২০১১ - ৯৩২ (০০.০৭%) | শিখ ধর্মাবলম্বী জনসংখ্যা ২০১১ - ১৩৩ (০০.০১%) | বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী জনসংখ্যা ২০১১ - ৫৪ | জৈন ধর্মাবলম্বী জনসংখ্যা ২০১১ - ৩০০ (০০.০৩%) | অন্যান্য ধর্মাবলম্বী জনসংখ্যা ২০১১ - ২৪২৫ (০০.১৮%) | সংখ্যাগরিষ্ঠ ধর্ম ২০১১ - ইসলাম |
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
১ | চাঁচল-১ | ২০৪৭৪০ | ৫৮৫৭৫ (২৮.৬১%) | ১৪৫৮২৪ (৭১.২২%) | ১৭৮ | ১৮ | ৭ | ৫১ | ৮৭ | ইসলাম |
২ | চাঁচল-২ | ২০৫৩৩৩ | ৫৭১২৫ (২৭.৮২%) | ১৪৬২৯৯ (৭১.২৫%) | ১৫০ | ২১ | ৯ | ৫ | ১৭২৪ (০০.৮৪%) | ইসলাম |
৩ | রতুয়া-১ | ২৭৫৩৮৮ | ৯০৮০২ (৩২.৯৭%) | ১৮৪১৭৭ (৬৬.৮৮%) | ১৬১ | ৩৬ | ১৬ | ২৬ | ১৭০ | ইসলাম |
৪ | রতুয়া-২ | ২০২০৮০ | ৪২৮০২ (২১.১৮%) | ১৫৯০৫৫ (৭৮.৭১%) | ৮৬ | ২২ | ২ | ২ | ১১১ | ইসলাম |
৫ | হরিশ্চন্দ্রপুর-১ | ১৯৯৪৯৩ | ৮০৪১৭ (৪০.৩১%) | ১১৮৫২৩ (৫৯.৪১%) | ১৮০ | ১৮ | ৮ | ২০৯ | ১৩৮ | ইসলাম |
৬ | হরিশ্চন্দ্রপুর-২ | ২৫১৩৪৫ | ৬৫৮১২ (২৬.১৮%) | ১৮৫১২৪ (৭৩.৬৫%) | ১৭৭ | ১৮ | ১২ | ৭ | ১৯৫ | ইসলাম |
ক্রম | সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকের নাম | সর্বমোট জনসংখ্যা ২০১১ - ২৬৫০৪৬৬ | হিন্দু ধর্মাবলম্বী জনসংখ্যা ২০১১ - ১৫১৮৮১৯ (৫৭.৩০%) | ইসলাম ধর্মাবলম্বী জনসংখ্যা ২০১১ - ১১০৬১৪৯ (৪১.৭৩%) | খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী জনসংখ্যা ২০১১ - ১২২৭৭ (০০.৪৭%) | শিখ ধর্মাবলম্বী জনসংখ্যা ২০১১ - ৬১৪ (০০.০২%) | বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী জনসংখ্যা ২০১১ - ৩০৫ (০০.০১%) | জৈন ধর্মাবলম্বী জনসংখ্যা ২০১১ - ৩৩৯ (০০.০১%) | অন্যান্য ধর্মাবলম্বী জনসংখ্যা ২০১১ - ১১৯৬৩ (০০.৪৫%) | সংখ্যাগরিষ্ঠ ধর্ম ২০১১ - হিন্দু |
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
১ | গাজোল | ৩৪৩৮৩০ | ২৫৬১৭৫ (৭৪.৫১%) | ৮১১৫৬ (২৩.৬০%) | ৪০২১ (১.১৭%) | ৭২ | ৩৫ | ১৩ | ২৩৫৮ (০০.৬৯%) | হিন্দু |
২ | বামনগোলা | ১৪৩৯০৬ | ১২৯৪৬০ (৮৯.৯৬%) | ১২৭৭১ (০৮.৮৮%) | ১২৬১ (০০.৮৮%) | ২০ | ৬ | ১৫ | ৩৭৩ | হিন্দু |
৩ | হবিবপুর | ২১০৬৯৯ | ২০০০৭৪ (৯৪.৯৬%) | ২৬৯২ (০১.২৮%) | ৪২৭২ (০২.০৩%) | ৩৫ | ৩৭ | ৫ | ৩৫৮৪ (০১.৭০%) | হিন্দু |
৪ | মালদহ | ১৫৬৩৬৫ | ১০৯৪৫৭ (৭০.০০%) | ৪৪৭২৭ (২৮.৬০%) | ১২২৮ (০০.৭৮%) | ৭২ | ৩১ | ৭ | ৮৪৩ | হিন্দু |
৫ | ইংরেজ বাজার | ২৭৪৬২৭ | ১৩২৭৪৬ (৪৮.৩৪%) | ১৪১৪১০ (৫১.৪৯%) | ১৮৮ | ৩৯ | ১৭ | ১৫ | ২১২ | ইসলাম |
৬ | মানিকচক | ২৬৯৮১৩ | ১৫০৯৭৫ (৫৫.৯৬%) | ১১৮৩৯১ (৪৩.৮৮%) | ১৩৯ | ২৫ | ১৭ | ১৯ | ২৪৭ | হিন্দু |
৭ | কালিয়াচক-১ | ৩৯২৫১৭ | ৪১৪৫৬ (১০.৫৬%) | ৩৫০৪৭৫ (৮৯.২৯%) | ১৫৯ | ২৮ | ২৯ | ৬৮ | ৩০২ | ইসলাম |
৮ | কালিয়াচক-২ | ২১০১০৫ | ৭১১৭৫ (৩৩.৮৮%) | ১৩৮৬৩২ (৬৫.৯৮%) | ৭২ | ২২ | ১৬ | ১৭ | ১৭১ | ইসলাম |
৯ | কালিয়াচক-৩ | ৩৫৯০৭১ | ১৭৫৯৭৪ (৪৯.০১%) | ১৮২১৩১ (৫০.৭২%) | ২৩৩ | ১২৭ | ২৮ | ২১ | ৫৫৭ | ইসলাম |
১০ | পুরানো মালদহ পৌরসভা | ৮৪০১২ | ৭২৬১৭ (৮৬.৪৪%) | ১১১১১ (১৩.২৩%) | ৯৪ | ৬৮ | ১৫ | ১০ | ৯৭ | হিন্দু |
১১ | ইংরেজ বাজার পৌরসভা | ২০৫৫২১ | ১৭৮৭১০ (৮৬.৯৫%) | ২২৬৫৩ (১১.০২%) | ৬১০ | ১০৬ | ৭৪ | ১৪৯ | ৩২১৯ (০১.৫৭%) | হিন্দু |
২০১১ সালের জনগননা অনুসারে মালদা জেলার জনসংখ্যা ৩,৯৮৮,৮৪৫ [7] যেটি লাইবেরিয়ার জনসংখ্যার সমান [8] অথবা ইউনাইটেড স্টেট অফ অরেগনর সমান।[9] ভারতে ৬৪০টি জেলার মধ্যে জনসংখ্যা অনুসারে এটির স্থান ৫৮তম।[7] জেলার জনঘনত্ব ১,০৭১ জন প্রতি বর্গকিলোমিটার (২,৭৭০ জন/বর্গমাইল)।[7] ২০০১-২০১১ তে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ২১.২২%। [7] মালদার লিঙ্গানুপাত প্রতি ১০০০ পুরুষে ৯৪৪ জন নারী[7] এবং সাক্ষরতার হার ২০০১ সালে ৫০.২৮% থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০১১ সালে ৬১.৭৩% (পুরুষ সাক্ষরতা ৬৬.২৪% ও নারী সাক্ষরতা ৫৬.৯৬%) হয়েছে।[7] শিশু সংখ্যা (০-৬ বৎসর অবধি) ৬০৯০৪০ , যা সমগ্র জনসংখ্যার ১৫.২৭% ৷
মালদহ জেলাটি রাজধানী নগর কলকাতা সহ রাজ্যের ও ভিনরাজ্যের পার্শ্ববর্তীজেলাগুলির সাথে পরিবহন ব্যবস্থার মাধ্যমে যুক্ত ৷
মালদহ জেলাতে সমগ্র রেলপথের দৈর্ঘ ৯৫ কিলোমিটার ৷ কিছু গুরুত্বপূর্ণ রেলস্টেশন ও জংশনগুলি হল -
মালদহ জেলাটিতে ১৩৩ কিলোমিটার জাতীয় সড়ক ও ৬৭ কিলোমিটার রাজ্য সড়ক বিস্তৃৃত ৷ এছাড়াও ১০৮৩ কিলোমিটার জেলা সড়ক ও ৪৩৪০ কিলোমিটার অন্যান্য গ্রামীণ সড়ক দীর্ঘায়িত ৷ জাতীয় সড়কগুলি হলো - ৩৪ নং, ৮১ নং, ১৩১-এ নং ও ১২ নং
রাজ্য সড়কটি হলো - ১০ নং
মালদা বিমানবন্দরটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের ইংরেজ বাজারের মধ্যস্থল থেকে ৩ কিমি দূরে অবস্থিত। বিমানবন্দরটি ৩৫০ একর এলাকায় ১৪৫০ মিটার লম্বা ও ৩০ মিটার প্রস্থ বিশিষ্ট রানওয়ে আছে। এই বিমানবন্দরে হেলিকপ্টার সহ মধ্যমবর্গের বিমান নামতে পারে। মালদা বিমানবন্দর থেকে কলকাতা ও বালুরঘাটের জন্যে সাপ্তাহিক বিমান পরিষেবা উপলব্ধ।
মালদহ-রাজশাহী সড়কের মাধ্যমে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে যোগযোগ তৈরি হয় যার ভারতীয় স্থলসীমান্তবিন্দুটি মহদীপুরে অবস্থিত ৷ও এখানে চেকপোস্ট অবস্থিত ।
সকল ধর্মের উৎসবই খুব আনন্দ সহকারে উৎযাপিত হয় ৷ তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য-
মালদহ জেলার কিছু বিখ্যাত মেলা -
'কুসুম' হলো ১৮৯০ এর দশকে শ্রী রাধেশ চন্দ্র শেঠের সম্পাদনায় প্রকাশিত মালদহ জেলার প্রথম মাসিক সংবাদ মাধ্যম ৷ লোক-সংস্কৃৃতির অঙ্গ গম্ভীরা হলো নাটক উপস্থাপনের এক অনন্য প্রকার ৷ এর মাধ্যমে প্রধাণত প্রাত্যহিক দিনের সুখ-দুঃখ বা অন্তর্দেশীর সংবাদ প্রচার করা হয় ৷ এছাড়াও আলকাপ ও কবিগান উল্লেখযোগ্য ৷ বঙ্গদেশের প্রাচীন ও অধুনালুপ্ত শাস্ত্রীয় নৃৃত্য তথা গৌড়ীয় নৃত্যের উৎপত্তি মালদহ জেলাতেই ৷
গম্ভীরা মালদহ জেলার একটি ঐতিহাসিক ও ঐতিহ্যপুর্ণ অনুষ্ঠান ৷ এ অঞ্চলে গম্ভীরার প্রচলন সুপ্রাচীন ৷ বিশেষত চৈত্রের শেষ সপ্তাহে তিনদিনব্যাপী এই অনুষ্ঠান উৎযাপিত হয় ৷ 'গম্ভীরা' এটি একধরনের গান যা হিন্দু শাস্ত্রের দেবতা শিবের সাথে সম্পর্কযুক্ত ৷ বর্তমানে এটি একটি বিশেষ তালে নাচের সাথে উপস্থাপিত হয় যায় মুলচরিত্রগুলি তথা নাতি ও দাদামশাই(নানা)কে দেখা যায় সমাজের কোনো এক দিক নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা করতে ৷ গম্ভীরায় নাচের সময় নাচিয়েদের কাঠের মুখোশ ব্যবহার করতে দেখা যায় ৷
মালদহ জেলায় প্রসিদ্ধ অপর একটি বাঙালী লোকাচার হলো আলকাপ ৷ মালদহ ছাড়াও মুর্শিদাবাদ বীরভূম ও রাজশাহীতেও এর প্রচলন আছে ৷ আল মানে অংশবিশেষ আর কাপ বলতে কাব্যকে বোঝানো হয় ৷ এটি নাচ গান ও নাটকের এক সংমিশ্রণ যেখানে মুলত দুধরনের চরিত্র দেখা যায় , একটি গুরু চরিত্র অপরটি চাকরের চরিত্র এছাড়া সাাথে থাকে গায়েন , দোহার ও সমবেতসঙ্গীতশিল্পীরা ৷ অালকাপ ৫ টি খণ্ডে উপস্থাপন করা হয় - আসর বন্দনা , ছড়া , কাপ , বৈঠকি গান ও খেমটা পালা ৷ এর মাধ্যমে গ্রাম্য সমাজ চরিত্রকে ফুটিয়ে তোলা হয় ৷
শিক্ষার ক্ষেত্রে মালদহ জেলা সমগ্র পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের অন্যান্য জেলার তুলনায় অনগ্রসর ৷ কিছু অগ্রগণ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের *
শোভানগর উচ্চ বিদ্যালয় (উচ্চ মাধ্যমিক)
মালদহ জেলা দুটি মহকুমাতে বিভক্ত
১) চাঁচল মহকুমা
চাঁচল মহকুমার অবস্থান জেলাটির উত্তর পশ্চিমে যা ৬ টি তহশিল বা সমষ্টি উন্নয়ন ব্লক নিয়ে গঠিত৷
তহশিলটি ১০০ টি গ্রামের সমন্বয়ে তথা ৮ টি গ্রামপঞ্চায়েত নিয়ে গঠিত; যথাক্রমে - অলিহণ্ডা, চাঁচল, খরবা, মকদমপুর, ভগবানপুর, কালীগ্রাম, মহানন্দাপুর, মোতিহারপুর৷ সদরটি চাঁচলে অবস্থিত৷
তহশিলটি ৯২ টি গ্রামের সমন্বয়ে তথা ৭ টি গ্রামপঞ্চায়েত নিয়ে গঠিত; যথাক্রমে - ভাকরি, ধানগাড়া-বিষাণপুর, গৌড়হণ্ডা, ক্ষেমপুর, চন্দ্রপাড়া, জালালপুর, মালতীপুর৷ সদরটি মালতীপুরে অবস্থিত৷
তহশিলটি ১০১ টি গ্রামের সমন্বয়ে তথা ১০ টি গ্রামপঞ্চায়েত নিয়ে গঠিত; যথাক্রমে - বাহারাল, চাঁদমণি ১ ও ২, মহানন্দাতলা, ভাদো, বিলাইমারি, দেবীপুর, রতুয়া, কাহালা, সামসি৷ সদরটি রতুয়াতে অবস্থিত৷
তহশিলটি ৫১ গ্রামের সমন্বয়ে তথা ৮ টি গ্রামপঞ্চায়েত নিয়ে গঠিত; যথাক্রমে - আড়াইডাঙা, পরাণপুর, পুখুরিয়া, শ্রীপুর ১ ও ২, মহারাজগঞ্জ, পীরগঞ্জ, সম্বলপুর৷ সদরটি পুখুরিয়াতে অবস্থিত৷
তহশিলটি ১০৫ টি গ্রামের সমন্বয়ে তথা ৭ টি গ্রামপঞ্চায়েত নিয়ে গঠিত; যথাক্রমে - ভিঙ্গোলে, কুশিধা, রসিদাবাদ, বারুই, মহেন্দ্রপুর, তুলসীহট্ট, হরিশ্চন্দ্রপুর৷ সদরটি হরিশ্চন্দ্রপুরে অবস্থিত৷
তহশিলটি ৭৪ টি গ্রামের সমন্বয়ে তথা ৯ টি গ্রামপঞ্চায়েত নিয়ে গঠিত; যথাক্রমে - দৌলতপুর, দৌলতনগর, সুলতাননগর, চাঁদপুর(ইসলামপুর), মশালদহ, ভালুকা, মালিওর ১ ও ২, সাদলিচক৷ সদরটি বারদুয়ারীতে অবস্থিত৷
মালদহ সদর মহকুমার অবস্থান জেলাটির পূর্ব ও দক্ষিণ পশ্চিমে যা ৯ টি তহশিল বা সমষ্টি উন্নয়ন ব্লক ও দুটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত৷
তহশিলটি ৮৯ টি গ্রামের সমন্বয়ে তথা ১১ টি গ্রামপঞ্চায়েত নিয়ে গঠিত; যথাক্রমে - চৌকি মীরদাদপুর, এনায়েৎপুর, মানিকচক, নূরপুর, উত্তর চণ্ডীপুর, দক্ষিণ চণ্ডীপুর, গোপালপুর, মথুরাপুর, ধরমপুর, হীরানন্দপুর, নাজীমপুর৷ সদরটি মনিকচকে অবস্থিত৷
তহশিলটি ৫৫ টি গ্রামের সমন্বয়ে তথা ১৪ টি গ্রামপঞ্চায়েত নিয়ে গঠিত; যথাক্রমে - আলিনগর, গয়েশবাড়ি, কালিয়াচক ১ ও ২, শিলামপুর ১ ও ২, আলিপুর ১ ও ২, জালালপুর, মোজামপুর, সুজাপুর নওদা-যদুপুর, জালুয়াবাধাল, বামনগ্রাম-মশিমপুর৷ সদরটি কালিয়াচকে অবস্থিত৷
তহশিলটি ৬৫ টি গ্রামের সমন্বয়ে তথা ৯ টি গ্রামপঞ্চায়েত নিয়ে গঠিত; যথাক্রমে - বাঙ্গীটোলা, রাজনগর, উত্তর লক্ষ্মীপুর, গঙ্গাপ্রসাদ, রথবাড়ি, মোথাবাড়ি, উত্তর পঞ্চানন্দপুর ১ ও ২, হামিদপুর৷ সদরটি মোথাবাড়িতে অবস্থিত৷
তহশিলটি ৭৩ টি গ্রামের সমন্বয়ে তথা ১৪ টি গ্রামপঞ্চায়েত নিয়ে গঠিত; যথাক্রমে - আকন্দবাড়ীয়া, ভগবানপুর, লক্ষ্মীপুর, বখরাবাদ, চারি অনন্তপুর, বেদ্রাবাদ, পারদেওনাপুর-শোভাপুর, গোলাপগঞ্জ, বীরনগর ১ ও ২, কৃষ্ণপুর, শাহবাজপুর, কুম্ভিরা, সহবানচক৷ সদরটি দরিয়াপুরে অবস্থিত৷
তহশিলটি ১৩২ টি গ্রামের সমন্বয়ে তথা ১১ টি গ্রামপঞ্চায়েত নিয়ে গঠিত; যথাক্রমে - অমৃতি, যদুপুর ১ ও ২, কোতোয়ালি, নরহট্ট, বিনোদপুর, মহদীপুর, শোভানগর, ফুলবাড়ীয়া, কাজীগ্রাম, মিলকী৷ সদরটি মিলকীতে অবস্থিত৷
তহশিলটি ১১৫ টি গ্রামের সমন্বয়ে তথা ৬ টি গ্রামপঞ্চায়েত নিয়ে গঠিত; যথাক্রমে - ভাবুক, মহিষবাথানী, মুচিয়া, যাত্রাডাঙা, মঙ্গলবাড়ি, সাহাপুর৷ সদরটি কালুদেওয়ানে অবস্থিত৷
তহশিলটি ২৯১ টি গ্রামের সমন্বয়ে তথা ১৫ টি গ্রামপঞ্চায়েত নিয়ে গঠিত; যথাক্রমে - আলাল, চকনগর, কর্কচ, রাণীগঞ্জ ১ ও ২, বাইরগাছি ১ ও ২, দেওতলা, মাঝড়া, শাহজাদপুর, গাজোল ১ ও ২, পাণ্ডুয়া, শলাইডাঙা, বাবুপুর৷ সদরটি গাজোলে অবস্থিত৷
তহশিলটি ২৮৭ টি গ্রামের সমন্বয়ে তথা ১১ টি গ্রামপঞ্চায়েত নিয়ে গঠিত; যথাক্রমে - আকতাইল, বুলবুলচণ্ডী, জাজাইল, ঋষিপুর, ধুমপুর, শ্রীরামপুর, বৈদ্যপুর, হাবাবপুর, মঙ্গলপুর, কাঁতুরকা, আইহো৷ সদরটি হবিবপুরে অবস্থিত৷
তহশিলটি ১৪২ টি গ্রামের সমন্বয়ে তথা ৬ টি গ্রামপঞ্চায়েত নিয়ে গঠিত; যথাক্রমে - বামনগোলা, গোবিন্দপুর-মহেশপুর, পাকুয়াহাট, চাঁদপুর, মদনহাটি, জগদলা৷ সদরটি পাকুয়াহাটে অবস্থিত৷
উত্তর দিনাজপুর জেলার ইটাহার সমষ্টি উন্নয়ন ব্লক; দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার হরিরামপুর, বংশিহারী, তপন সমষ্টি উন্নয়ন ব্লক; মুর্শিদাবাদ জেলার ফারাক্কা, সামশেরগঞ্জ সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকের সাথে মালদহ জেলার সীমানা বন্টিত৷
বিহারের কাটিহার জেলার পরাণপুর, বারসোই, অজমগড়, আমদাবাদ তহশিল ও ঝাড়খণ্ডের সাহেবগঞ্জ জেলার রাজমহল, উদুয়া তহশিলের সাথে মালদহ জেলার সীমানা বন্টিত৷
বাংলাদেশের চাঁপাই নবাবগঞ্জ জেলার ভোলাহাট, গোমস্তাপুর, শিবগঞ্জ উপজেলা ও নওগাঁ জেলার সাপাহার, পরশা উপজেলার সাথে মালদহ জেলার আন্তর্জাতিক সীমানা বন্টিত৷
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.