Loading AI tools
পাকিস্তানের একটি প্রাক্তন প্রদেশ উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
পশ্চিম পাঞ্জাব হচ্ছে ১৯৪৭ সালে পাকিস্তানের স্বাধীনতার পর থেকে ১৯৫৫ সালে এক ইউনিট ব্যবস্থা গ্রহণের পূর্ব পর্যন্ত স্থায়ী পাকিস্তানের একটি প্রাক্তন প্রদেশ। এই প্রদেশটি বর্তমান ইসলামাবাদ রাজধানী অঞ্চল সহ পাঞ্জাব প্রদেশের বেশিরভাগ অঞ্চল জুড়ে ছিল। তবে বর্তমান পাঞ্জাব প্রদেশের অন্তর্ভুক্ত তৎকালীন বাহাওয়ালপুর রাজ্য পশ্চিম পাঞ্জাবের অন্তর্ভুক্ত ছিল না। পশ্চিম পাঞ্জাবের রাজধানী ছিল লাহোর। এই প্রদেশটি চারটি বিভাগ (লাহোর, সারগোদা, মুলতান এবং রাওয়ালপিন্ডি) নিয়ে গঠিত হয়েছিল। এই প্রদেশটির পূর্বে ছিল পূর্ব পাঞ্জাব ও জম্মু ও কাশ্মীর, দক্ষিণে বাহাওয়ালপুর রাজ্য, দক্ষিণ-পশ্চিমে বেলুচিস্তান এবং সিন্ধু প্রদেশ, উত্তর-পশ্চিমে খাইবার-পাখতুনখোয়া এবং উত্তর-পূর্বে ছিল আজাদ কাশ্মীর।
পশ্চিম পাঞ্জাব مغربی پنجاب | |||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রদেশ | |||||||||
১৪ আগস্ট ১৯৪৭–১৪ অক্টোবর ১৯৫৫ | |||||||||
রাজধানী | লাহোর | ||||||||
আয়তন | |||||||||
• | ২,০৫,৩৪৪ বর্গকিলোমিটার (৭৯,২৮৪ বর্গমাইল) | ||||||||
ইতিহাস | |||||||||
• প্রতিষ্ঠিত | ১৪ আগস্ট ১৯৪৭ | ||||||||
• বিলুপ্ত | ১৪ অক্টোবর ১৯৫৫ | ||||||||
| |||||||||
পাঞ্জাব সরকার |
১৯৪৮ সালে পাকিস্তানের স্বাধীনতার পরে ব্রিটিশ ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশকে দুটি নতুন প্রদেশে বিভক্ত করা হয়। পাঞ্জাবের মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ পশ্চিমাঞ্চল "পশ্চিম পাঞ্জাব" প্রদেশে রূপে পাকিস্তান অধিরাজ্যের তথা পাকিস্তানের অংশে পরিণত হয়। অন্যদিকে শিখ এবং হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ পূর্বাঞ্চল পূর্ব পাঞ্জাব রূপে ভারত অধিরাজ্য ভারতের ভারতের অংশ হিসেবে রয়ে যায়। ১৯৫০ সালে প্রদেশটির নাম সংক্ষিপ্ত করে শুধুমাত্র "পাঞ্জাব" করা হয়। প্রধানমন্ত্রী চৌধুরী মুহাম্মদ আলি ঘোষিত এক ইউনিট ব্যবস্থা অনুসারে ১৯৫৫ সালে পশ্চিম পাঞ্জাব প্রদেশ পশ্চিম পাকিস্তান প্রদেশে একীভূত হয়ে যায়। পরবর্তীতে ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনের প্রাক্কালে লিগাল ফ্রেমওয়ার্ক অর্ডার অনুসারে এক ইউনিট ব্যবস্থা বাতিল করার মাধ্যমে পশ্চিম পাকিস্তান প্রদেশ বিলীন হয়ে গেলে প্রাক্তন পশ্চিম পাঞ্জাব প্রদেশ এবং বাহাওয়ালপুর রাজ্য নিয়ে নতুন পাঞ্জাব প্রদেশ গঠন করা হয়।
পাকিস্তানের স্বাধীনতার সময় পশ্চিম পাঞ্জাবে সংখ্যাগুরু মুসলিম জনগোষ্ঠীর সাথে সাথে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সংখ্যালঘু হিন্দু এবং শিখ ছিল। তবে এই সংখ্যালঘুদের প্রায় সবাই পশ্চিম পাঞ্জাব ছেড়ে ভারতের পূর্ব পাঞ্জাবে চলে গিয়েছিল। একইভাবে পূর্ব পাঞ্জাবের সংখ্যালঘু মুসলিমদের অধিকাংশই ভারত ছেড়ে পশ্চিম পাঞ্জাবে চলে আসে।
ভাষাবিদ জর্জ আব্রাহাম গ্রিয়ারসন তাঁর বহু খণ্ডে রচিত লিঙ্গুইস্টিক সার্ভে অফ ইন্ডিয়া (ভারতের ভাষাগত জরিপ, ১৯০৪-১৯২৮) বইয়ে বিভিন্ন উপভাষা নিয়ে আলোচনা করেছেন। সেখানে তিনি সেই সময়ে "পশ্চিম পাঞ্জাবি" নামে অভিহিত ভাষাটিকে, পাঞ্জাবি থেকে আলাদা ভাষা হিসাবে বিবেচনা না করে একই হিসেবে বিবেচনা করেছিলেন। "পশ্চিম পাঞ্জাবি" তখন লাহোরের উত্তর, পশ্চিম এবং দক্ষিণে (বর্তমান পাকিস্তানি পাঞ্জাব) কথ্য হত। (লাহোরের স্থানীয় উপভাষা হল পাঞ্জাবির "মাঝি উপভাষা", যা দীর্ঘকাল ধরে প্রমিত পাঞ্জাবি সাহিত্যের ভিত্তি ছিল।) আব্রাহাম গ্রিয়ারসন এই সচরাচরভাবে পরিচিত ভাষার নাম "লহন্দা" রাখার প্রস্তাব করেন এবং তিনি এই সুসংগত উপভাষা গুচ্ছের নাম রাখেন দক্ষিণ লহন্দা, উত্তর লহন্দা ও পশ্চিম লহন্দা। দক্ষিণ লহন্ডা বর্তমানে সরাইকি নামে পরিচিত যা মুলতান, ডেরা গাজী খান এবং বাহাওয়ালপুর বিভাগে কথাবার্তায় ব্যবহৃত হয়। উত্তর লহন্দা বর্তমানে পোটোয়ারি নামে পরিচিত যা রাওয়ালপিন্ডি বিভাগে কথাবার্তায় ব্যবহৃত হয়। পশ্চিম লহন্দা বর্তমানে হিন্দকো নামে পরিচিত যা খাইবার-পাখতুনখোয়ার সীমান্তবর্তী অঞ্চলে কথাবার্তায় ব্যবহৃত হয়।
পশ্চিম পাঞ্জাবের গভর্নর এবং মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তর ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট থেকে ১৯৫৫ সালের ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত স্থায়ী ছিল। এই প্রদেশের প্রথম গভর্নর স্যার ফ্রান্সিস মুডি এবং প্রথম মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন ছিলেন নবাব ইফতেখার হুসাইন খান মামদুত। ১৯৫৫ সালে এক ইউনিট ব্যবস্থার অধীনে তৎকালীন পাকিস্তানের পশ্চিম অংশ তথা বর্তমান পাকিস্তানের সবগুলো প্রদেশ একত্রিত করে পশ্চিম পাকিস্তান প্রদেশ গঠন করা হলে উভয় দপ্তরই বিলুপ্ত করা হয়। পশ্চিম পাঞ্জাবের শেষ গভর্নর মোশতাক আহমদ গুরমণি সদ্য প্রতিষ্ঠিত পশ্চিম পাকিস্তান প্রদেশের প্রথম গভর্নর হন।
কার্যকাল | পশ্চিম পাঞ্জাবের গভর্নর [1] |
---|---|
১৫ আগস্ট ১৯৪৭ – ২ আগস্ট ১৯৪৯ | স্যার ফ্রান্সিস মুডি |
২ আগস্ট ১৯৪৯ – ২৪ নভেম্বর ১৯৫১ | সরদার আবদুল রব নিশতার |
২৪ নভেম্বর ১৯৫১ – ২ মে ১৯৫৩ | ইবরাহিম ইসমাইল চুন্দ্রিগড় |
২ মে ১৯৫৩ – ২৪ জুন ১৯৫৪ | মিয়া আমিনুদ্দিন |
২৬ সেপ্টেম্বর ১৯৫৪ – ২৬ নভেম্বর ১৯৫৪ | হাবিব ইব্রাহিম রহমতুল্লাহ |
২৭ নভেম্বর ১৯৫৪ – ১৪ অক্টোবর ১৯৫৫ | নবাব মোশতাক আহমদ গুরমণি |
১৪ অক্টোবর ১৯৫৫ | পশ্চিম পাঞ্জাব প্রদেশে বিলুপ্ত করা হয় |
কার্যকাল | পশ্চিম পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী [1] | রাজনৈতিক দল |
---|---|---|
১৫ আগস্ট ১৯৪৭ – ২৫ জানুয়ারি ১৯৪৮ | নবাব ইফতেখার হুসাইন খান মামদুত | |
২৫ জানুয়ারি ১৯৪৯ – ৫ এপ্রিল ১৯৫২ | গভর্নরের শাসন | |
৫ এপ্রিল ১৯৫২ – ৩ এপ্রিল ১৯৫৩ | মিয়া মুমতাজ দৌলতানা | মুসলিম লীগ |
৩ এপ্রিল ১৯৫৩ – ২১ মে ১৯৫৫ | মালিক ফিরোজ খান নুন | মুসলিম লীগ |
২১ মে ১৯৫৫ – ১৪ অক্টোবর ১৯৫৫ | আব্দুল হামিদ খান দস্তি | |
১৪ অক্টোবর ১৯৫৫ | পশ্চিম পাঞ্জাব প্রদেশে বিলুপ্ত করা হয় |
বর্তমানে পাকিস্তানে পশ্চিম পাঞ্জাব শব্দটি লাহোর কিংবা মধ্য অঞ্চল ছাড়া পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের পুরো অংশটি বুঝাতে করতে ব্যবহৃত হয়।[2] অন্যদিকে ভারতে এই শব্দটি দ্বারা প্রায়ই পুরো পাকিস্তানি পাঞ্জাবকে বোঝানো হয়ে থাকে।[3]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.