Loading AI tools
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
পণ্ডিত যশরাজ (২৮ জানুয়ারি ১৯৩০ – ১৭ আগস্ট ২০২০) [4] ছিলেন হিন্দুস্তানি শাস্ত্রীয় সংগীতের মেওয়াতী বা যোধপুর ঘরানার একজন ভারতীয় কণ্ঠশিল্পী। [5] তিনি সুদীর্ঘ ৭৫ বৎসরের সঙ্গীত জীবনে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক খ্যাতি, অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মানে ভূষিত হয়েছেন। শাস্ত্রীয় এবং অর্ধ-শাস্ত্রীয় কণ্ঠ সঙ্গীত, শাস্ত্রীয় ও ভক্তিমূলক সঙ্গীত, বহু অ্যালবামে ও চলচ্চিত্র জগতে, হাভেলি সঙ্গীত ও মেওয়াতী ঘরানাকে জনপ্রিয় করতে অসামান্য অবদান রেখে গেছেন। পণ্ডিত যশরাজ ভারত, ইউরোপ, কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্র সহ বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীদের সঙ্গীত শিক্ষা দিয়েছেন।
পণ্ডিত যশরাজ | |
---|---|
জন্ম | |
মৃত্যু | ১৭ আগস্ট ২০২০ ৯০) | (বয়স
পেশা | সঙ্গীতশিল্পী,সঙ্গীত প্রশিক্ষক,তবলা বাদক |
দাম্পত্য সঙ্গী | মধুরা শান্তারাম ( বি.১৯৬২) |
সন্তান |
|
আত্মীয় | পণ্ডিত মণিরাম (ভ্রাতা) বসন্ত কুমার পণ্ডিত (ভ্রাতষ্পুত্র) |
পুরস্কার | See awards and honours |
সঙ্গীত কর্মজীবন | |
ধরন | হিন্দুস্তানি শাস্ত্রীয় সংগীত |
বাদ্যযন্ত্র | কণ্ঠসঙ্গীত,তবলা বাদন |
কার্যকাল | ১৯৪৫–২০২০[3] |
ওয়েবসাইট | www |
যশরাজ বৃটিশ ভারতের অধুনা হরিয়ানা রাজ্যের হিসার জেলার (বর্তমানে ফতেহাবাদ জেলার) পিলি মন্ডোরী গ্রামে এক মধ্যবিত্ত ব্রাহ্মণ পরিবারে সাঙ্গীতিক পরিবেশে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা পণ্ডিত মতিরাম ছিলেন শাস্ত্রীয় সঙ্গীতশিল্পী এবং মাতা কৃষ্ণ বাঈ। [6] তাঁদের তিন সন্তানের কনিষ্ঠ ছিলেন যশরাজ। ১৯৩৪ খ্রিস্টাব্দে যশরাজের বয়ঃক্রম যখন চার, তার পিতা মতিরাম মারা যান। কিন্তু ওই অল্প বয়সেই যশরাজ পিতার কাছে কণ্ঠসঙ্গীতের দীক্ষা নেন এবং পরবর্তীতে সাত বৎসর বয়সে জ্যেঠামশায়, সঙ্গীত জুটি 'যতীন-ললিত', নৃত্যশিল্পী সুলক্ষণা পণ্ডিত ও অভিনেত্রী বিজেতা পণ্ডিতের পিতা, পণ্ডিত প্রতাপ নারায়ণের কাছে তবলা বাজাতে শেখেন। পিতার মৃত্যুর পর তার জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা পণ্ডিত মণিরাম যশরাজের ইচ্ছানুসারে তাকে কণ্ঠসঙ্গীতেই তালিম দেন এবং ১৪ বৎসর বয়সেই কণ্ঠ সঙ্গীতে পারদর্শিতা অর্জন করেন [7][8]
যশরাজ তার তারুণ্যের বেশিভাগ সময়ই হায়দ্রাবাদে কাটান এবং সেখান থেকে গুজরাতের সানন্দে যাতায়াত করতেন মেওয়াতী ঘরানা শিছতে। [9] শাস্ত্রীয় সঙ্গীতপ্রিয় ঠাকুর সাহেব নামে পরিচিত সানন্দের মহারাজ জয়ন্তসিং বাঘেলার জন্য যশরাজ সঙ্গীত পরিবেশন করেছিলেন এবং তার কাছেও তালিম নেন। [10][11]
১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দে যশরাজ কলকাতায় এবং বেতারে শাস্ত্রীয় সঙ্গীত পরিবেশন করেন। [9]
১৯৬২ খ্রিস্টাব্দে চিত্রপরিচালক ভি শান্তারামের কন্যা মধুরা শান্তারামকে বিবাহ করেন। এদের পরিচয় ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দে মুম্বইয়ে হয়েছিল। তারা প্রথমদিকে কলকাতায় বসবাস করতেন। ১৯৬৩ খ্রিস্টাব্দে তারা মুম্বই চলে যান। তাদের দুই সন্তান - পুত্র সারঙ্গদেব পণ্ডিত ও কন্যা দুর্গা যশরাজ। এবং তিন নাতি। [8] ২০০৯ খ্রিস্টাব্দে তার স্ত্রী মধুরা "সঙ্গীত মার্তান্ড পণ্ডিত যশরাজ" একটি ছবি তৈরি করেন। [12] এবং ২০১০ খ্রিস্টাব্দে "আজ তুজা আশীর্বাদ" নামে প্রথম মারাঠি ছবির পরিচালনা করেন। এই ছবিতে তার স্বামী ও লতা মঙ্গেশকর কণ্ঠদান করেন। [13][14]
যশরাজ প্রথমে কণ্ঠসঙ্গীতে শিক্ষা নেন পণ্ডিত পিতার কাছে। পিতার মৃত্যুর পর জ্যেঠামশায় পণ্ডিত প্রতাপ নারায়ণ তবলা বাদনের শিক্ষা দেন। কিন্তু কণ্ঠসঙ্গীতে তার আগ্রহের জন্য প্রায়ই তার জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা পণ্ডিত মণিরামের সঙ্গে থেকে একক সঙ্গীত পরিবেশন করতে শিখেছেন। পরে বেগম আখতারের অনুপ্রেরণায় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের শিক্ষা নেন।
যশরাজ চৌদ্দ বৎসর বয়সে গায়ক হিসাবে প্রশিক্ষণ শুরু করেন এবং প্রতিদিন দিনে ১৪ ঘণ্টা গান গাওয়ার অভ্যাস করতেন। তবে তিনি প্রথম মঞ্চে আসেন ২২ বৎসর বয়সে কাঠমান্ডুতে নেপালের রাজা ত্রিভুবন বীর বিক্রম শাহের দরবারে। এর আগে অবশ্য তিনি বেতারে পারফর্মিং আর্টিস্ট হিসাবে কিছুদিন কাজ করেন। [15]
প্রথমদিকে পণ্ডিত মণিরামের কাছে ধ্রুপদী স্টাইলে শিক্ষা লাভ করলেও পরে জয়বন্ত সিংহ বাঘেলার কাছে কণ্ঠসঙ্গীতে তালিম নেন। মেওয়াতি ঘরানার শিক্ষা নেন গোলাম কাদির খান এবং আগ্রা ঘরানার শিক্ষা নেন স্বামী বল্লভদাস দামুলজির কাছে। [15]
যশরাজ মেওয়াতি ঘরানায় পারদর্শিতা অর্জনের পর খেয়াল গানে কিছুটা নমনীয়তার সাথে ঠুমরি হাল্কা স্টাইলের নিজস্ব উপাদান যোগ করেন। এজন্য সঙ্গীতসমাজে প্রথমদিকে সমালোচিত হলেও, প্রখ্যাত সঙ্গীত সমালোচক এস কালিদাসের মতে, সেগুলির সাধারণভাবে গৃহীত হয়েছে। [15]
যশরাজ মূর্ছনার আদলে এক গায়ক এবং এক গায়িকা সহযোগে যুগলবন্দির এক অভিনব রূপ সৃষ্টি করেছিলেন, সেটি "যশরঙ্গী" নামে পরিচিতি লাভ করে। এছাড়াও তিনি আবিরী, তোড়ি, পটদীপাকি সহ অনেক বিরল রাগ রচনা করেছেন। [16]
তিনি চলচ্চিত্রের জন্যও শাস্ত্রীয় ও আধা শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে কণ্ঠ দিয়েছেন। সেগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল - ১৯৬৬ সালের 'লড়কী সাহ্যদ্রী কী' ছবিতে আহির ভৈরব রাগে বসন্ত দেসাই সুরারোপিত 'বন্দনা করো', ১৯৭৫ সালে বীরবল মাই ব্রাদার ছবিতে ভীমসেন জোশীর সাথে দ্বৈত কণ্ঠে এবং বিক্রম ভাট পরিচালিত ভৌতিক সিনেমা '১৯২০' এক গীতিনাট্য বড়া তুমসে হ্যাঁয় বড়া।,[17][18]
যশরাজ তার পিতার স্মরণে হায়দ্রাবাদে পণ্ডিত মতিরাম সঙ্গীত সমারোহ নামে বার্ষিক সঙ্গীত উৎসবের সূচনা করেন। ১৯৭২ খ্রিস্টাব্দ হতে প্রতি বৎসর উৎসবটি অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।[9][19][20]
২০১৭ খ্রিস্টাব্দের ২৮ শে জানুয়ারি নভারসা ডিউন্ডে নামের এক প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান পণ্ডিত যশরাজের ৮৭তম জন্মদিন এবং সঙ্গীত জীবনের আশি বৎসর উপলক্ষে নতুন দিল্লির জওহরলাল নেহরু সেটডিয়ামে মাই জার্নি: এন ইনটিমেট ইভনিং উইথ পণ্ডিত যশরাজ শীর্ষক এক সন্ধ্যাকালীন শাস্ত্রীয় সঙ্গীত সম্মেলনের আয়োজন করে। তিনি একটি স্থায়ী সম্মান গ্রহণ করেন। [21]
পণ্ডিত যশরাজ যখন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করেছিলেন তখন সেখানে কোভিডের সংক্রমণের কারণে লকডাউনে চলছিল। [22] কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের কারণে তিনি ২০২০ খ্রিস্টাব্দের ১৭ ই আগস্ট এ নিউ জার্সিতে তার বাড়িতে প্রয়াত হন। [23][24] পরে তার মৃতদেহ এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানে মুম্বই আনা হয় [25] এবং ভিল পার্লের পবন হ্যান্স শ্মশানে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় অন্তেষ্টি সম্পন্ন করা হয়। [1][2]
পু লা দেশপান্ডে আজীবন সম্মাননা পুরস্কার (২০১২) [৫৫]
কনসার্ট ভ্যাঙ্কুভার খণ্ড ১ এবং ২ (১৯৯৭) [ডিস্কোগ্রাফি ৬] মালহার - আ ডাউনার অফ মিউজিক (২০০৫) [ডিস্কোগ্রাফি ৭] পণ্ডিত জসরাজের ধ্যান সঙ্গীত [ডিস্কোগ্রাফি ৮]
মুলতানি ও দিন-কি-পুর্য [ডিস্কোগ্রাফি 1] শ্রী কৃষ্ণ অনুরাগ (২০০০) [ডিস্কোগ্রাফি ১০]
মহেশ্বর মন্ত্র (২০০২) [ডিস্কোগ্রাফি ১৭]
রাগ ত্রিবেণী এবং মুলতানি লাইভ [ডিস্কোগ্রাফি 21]
সঙ্গীত/লাইভ স্টুগার্ট '৮৮ দ্বারা উপাসনা [ডিস্কোগ্রাফি ২৩]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.