Loading AI tools
বীর প্রতীক খেতাবপ্রাপ্ত বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের মুক্তিযোদ্ধা উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
আবদুর রশিদ (জন্ম: অজানা- মৃত্যু: ২০০৮) বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতা যুদ্ধে তার সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর প্রতীক খেতাব প্রদান করে। [1][2]
আবদুর রশীদ | |
---|---|
মৃত্যু | ২০০৮ |
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
নাগরিকত্ব | পাকিস্তান (১৯৭১ সালের পূর্বে) বাংলাদেশ |
পরিচিতির কারণ | বীর প্রতীক |
আবদুর রশিদের জন্ম ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলার তন্তর গ্রামে। বাবার নাম সুন্দর আলী ভূঁইয়া এবং মায়ের নাম করপুলের নেছা। তার স্ত্রীর নাম খোদেজা বেগম। তাদের তিন মেয়ে ও দুই ছেলে।
আবদুর রশিদ ইপিআরে চাকরি করতেন। ১৯৭১ সালে যশোর সেক্টরের ৪ নম্বর উইংয়ের অধীনে কর্মরত ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে ২৭ মার্চ বিদ্রোহ করে ঝাঁপিয়ে পড়েন যুদ্ধে। এরপর বিভিন্ন স্থানে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন। প্রতিরোধযুদ্ধ ও ভোমরার যুদ্ধে তার ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ।
সাতক্ষীরার অন্তর্গত ভোমরা এলাকা অবস্থিত ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে বিভিন্ন স্থানে প্রতিরোধযুদ্ধ করে এপ্রিল মাসের শেষে একদল মুক্তিযোদ্ধা অবস্থান নেন এখানে। বেশির ভাগ ইপিআর সদস্য। বাকি সবাই ছাত্র-যুবক। এই দলে ছিলেন আবদুর রশিদ। মে মাসের শেষ দিকে একদিন রাতে পাকিস্তান সেনাবাহিনী মুক্তিযোদ্ধাদের এই অবস্থানে আকস্মিক আক্রমণ করে। আবদুর রশিদসহ মুক্তিযোদ্ধারা আগে থেকেই প্রস্তুত ছিলেন। কারণ, তারা জানতেন পাকিস্তান সেনাবাহিনী যেকোনো সময় তাদের অবস্থানে আক্রমণ করবে। তারা অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে পাকিস্তানি আক্রমণ প্রতিহত করে পাল্টা আক্রমণ করেন। ফলে পাকিস্তানি সেনারা পিছিয়ে যেতে বাধ্য হয়। সকালে পাকিস্তানি সেনারা আবার আক্রমণ করে। এবারও মুক্তিযোদ্ধারা সফলতার সঙ্গে সেই আক্রমণ প্রতিরোধ করেন। সেখানে সীমান্ত রেখা বরাবর আছে বন্যা প্রতিরোধ বাঁধ। এর ওপর থেকে দেখা যায় অনেক দূর পর্যন্ত। মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থান ছিল ওই বাঁধের ওপর। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একটি ব্যাটালিয়নের কয়েকটি কোম্পানি একের পর এক সেখানে আক্রমণ চালায়। থেমে থেমে প্রায় ১৪ ঘণ্টা যুদ্ধ চলে।
শত্রুসেনারা বারবার আক্রমণ করেও মুক্তিযোদ্ধাদের বাঁধের ওপর থেকে উচ্ছেদ করতে ব্যর্থ হয়। বাঁধের ওপর সুবিধাজনক স্থান থেকে মুক্তিযোদ্ধারা তাদের বিভিন্ন স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র দিয়ে সুইপিং ফায়ার করেন। এতে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়ে। অনেক পাকিস্তানি সেনা হতাহত হয়। তাদের ব্যাটালিয়ন কমান্ডার আহত এবং একজন ক্যাপ্টেনসহ অনেকে নিহত হয়। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কত সেনা নিহত হয় এ সম্পর্কে সঠিক তথ্য মুক্তিযোদ্ধারা পাননি। তবে তারা জানতে পারেন, যুদ্ধে নিহত পাকিস্তানি সেনাদের মৃতদেহ ট্রাকে করে সাতক্ষীরা হয়ে যশোর সেনানিবাসে নেওয়া হয়। ভোমরা থেকে সাতক্ষীরা পর্যন্ত রক্ত পড়তে পড়তে মাটি ভিজে যায়। ভোমরার মাটিতে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর এই রক্তের দাগ অনেক দিন বিদ্যমান থাকে। সারা দিনের এই যুদ্ধে আবদুর রশিদসহ মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অসাধারণ রণকৌশল প্রদর্শন করেন। সেদিন মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে দুজন শহীদ ও কয়েকজন আহত হন। শহীদ দুজন মুক্তিযোদ্ধার একজন নিহত এক পাকিস্তানি ক্যাপ্টেনের মৃতদেহ নিজেদের অবস্থানে টেনে আনার সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন। পরে আরেকজন মুক্তিযোদ্ধা ওই ক্যাপ্টেনের মৃতদেহ টেনে আনতে সক্ষম হন।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.