Loading AI tools
ইন্দো-আর্য ভাষা উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
হিন্দুস্তানি[lower-alpha 2] (দেবনাগরী: हिन्दुस्तानी,[lower-alpha 3] ফার্সি-আরবি: ہندوستانی,[lower-alpha 4] প্রতিবর্ণীকরণ: Hindustānī, হিন্দুস্তানি উচ্চারণ: [ɦɪnd̪ʊst̪ɑːniː], আক্ষ. 'হিন্দুস্তান সম্বন্ধীয়')[14][15][3][4] অথবা কথ্য হিন্দী[16] (হিন্দি: बोलचाल हिन्दी, উর্দু: بول چال ہندی) হল উত্তর ভারত, দাক্ষিণাত্য ও পাকিস্তানে কথিত এবং লিঙ্গুয়া ফ্রাঙ্কা হিসেবে ব্যবহৃত একটি হিন্দার্য ভাষা।[17][18] হিন্দুস্তানি একটি বহুকেন্দ্রিক ভাষা যার হিন্দি (ব্যাপকভাবে সংস্কৃতায়িত) ও উর্দু (প্রবলভাবে ফার্সি–আরবায়িত) নামক দুটো প্রমিত ভাষারূপ রয়েছে। ফলে এটাকে হিন্দি–উর্দুও বলা হয়।[19][20][21] ভাষাটির কথ্যরূপ গুলো এই দুই প্রমিত রূপের মধ্যবর্তী একটি ভাষা বর্ণালীর মধ্যে পড়ে।[22][23] আধুনিককালে হিন্দুস্তানির তৃতীয় একটি প্রবল ইংরেজি-প্রভাবিত ভাষিকা দেখতে পাওয়া যায় যেটাকে প্রায়শই হিংলিশ বা উর্দিশ বলা হয়ে থাকে।[24][25][26][27][28]
হিন্দুস্তানি | |
---|---|
হিন্দি–উর্দু | |
| |
উচ্চারণ | [ɦɪnd̪ʊst̪ɑːniː] |
দেশোদ্ভব | ভারত ও পাকিস্তান |
অঞ্চল | হিন্দি বলয় (উত্তর ভারত), দাক্ষিণাত্য মালভূমি ও পাকিস্তান[1] |
জাতি | হিন্দুস্তানি জাতিগোষ্ঠী |
মাতৃভাষী | ১ম ভাষী: আনু. ২৫০ মিলিয়ন (২০১১ ও ২০১৭ শুমারি)[2] ২য় ভাষী: ~৫০০ মিলিয়ন (১৯৯৯–২০১৬)[2] |
ইন্দো-ইউরোপীয়
| |
পূর্বসূরী | শৌরসেনী প্রাকৃত
|
প্রমিত রূপ |
|
উপভাষা |
|
| |
স্বাক্ষরিত রূপ | ভারতীয়-পাকিস্তানি সাংকেতিক ভাষা (আইপিএসএল)[8] |
সরকারি অবস্থা | |
সরকারি ভাষা | |
নিয়ন্ত্রক সংস্থা |
|
ভাষা কোডসমূহ | |
আইএসও ৬৩৯-১ | hi – হিন্দিটেমপ্লেট:ISO639-1 – উর্দু |
আইএসও ৬৩৯-২ | hin – হিন্দিটেমপ্লেট:ISO639-2 – উর্দু |
আইএসও ৬৩৯-৩ | দুইয়ের মধ্যে এক:hin – হিন্দিurd – উর্দু |
গ্লোটোলগ | hind1270 [13] |
লিঙ্গুয়াস্ফেরা | 59-AAF-qa to -qf |
এলাকা (লাল) যেখানে হিন্দুস্তানি (দেহলবী বা কৌরবী) স্থানীয় ভাষা |
এটি ভারত ও পাকিস্তান রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ সংযোগরক্ষাকারী ভাষা।[17][29] সাধারণ কথায় উর্দু এবং হিন্দির মিশ্রিত ব্যবহারকে "হিন্দুস্তানি" বলা হয়। এই ভাষার উৎস দিল্লি অঞ্চলের খড়িবোলি উপভাষা; ফার্সি, আরবি, তুর্কি, ও সংস্কৃত ভাষা থেকে প্রচুর শব্দ এই ভাষায় গৃহীত হয়ে একটি বিরাট শব্দভাণ্ডার তৈরি করেছে।[30][31] এই ভাষার সরকারি প্রামাণ্য রূপদুটি হল হিন্দি ও উর্দু।[32] যদিও কথ্য হিন্দি ও উর্দুকে পরস্পর থেকে পৃথক করা দুষ্কর। এমনকি দুই ভাষার আদর্শ রূপের ব্যাকরণও অনেকটা সমরূপ। এদের পার্থক্য বোঝা যায় সাহিত্য ও অ্যাকাডেমিক ও ব্যবহারিক শব্দভাণ্ডারের রূপটি থেকে। উর্দু ভাষায় ফার্সি, আরবি ও তুর্কি প্রভাব বেশি; অন্যদিকে হিন্দি ভাষায় সংস্কৃতের প্রভাব অধিক।[33][34] ভারত বিভাগের পূর্বাবধি হিন্দুস্তানি, হিন্দি ও উর্দু সমার্থক ছিল। এই ভাষাগুলি এখন কেবলমাত্র হিন্দি অথবা উর্দু নামে পরিচিত।[35] উপমহাদেশের বাইরে বিভিন্ন অঞ্চলের অ-খড়িবোলি উপভাষার হিন্দি ভাষার নামেও ‘হিন্দুস্তানি’ শব্দটি ব্যবহৃত হয়। এগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য ফিজি হিন্দুস্তানি ও সুরিনাম ও ত্রিনিদাদের ক্যারিবীয় হিন্দুস্তানি।
বর্তমান উত্তর ভারতে মধ্য ইন্দো আর্য ভাষার একটি স্থানীয় অপভ্রংশ থেকে ৭ম থেকে ১৩ শতকের মধ্যে বর্তমান হিন্দুস্তানি ভাষার প্রাথমিক রূপের বিকাশ ঘটে।[36] ত্রয়োদশ শতকে উত্তর ভারতের দিল্লী সালতানাত শাসনের সময় আমির খসরু তার রচনাগুলিতে এই ভাষা ব্যবহার করেন (যা সেই সময়ে লিঙ্গুয়া ফ্রাঙ্কা ছিল) এবং একে হিন্দাভি (ফার্সি: ھندوی আক্ষরিক অর্থ "হিন্দু বা ভারতীয়দের") নামে আখ্যায়িত করেন।[36] ১৫২৬ সালে দিল্লি সালতানাত (যার মধ্যে বেশ কয়েকটি তুর্কী ও আফগান রাজবংশ ছিল[37]) মুঘল সাম্রাজ্য দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়।
যদিও মুঘলরা তিমুরিদ (গুরখানি) তুর্ক-মঙ্গোল বংশদ্ভূত ছিল[38], তারা পারস্যকৃত হয়, এবং বাবরের পর ফারসি ভাষা ধীরে ধীরে মুঘল সাম্রাজ্যের রাজ ভাষা হয়ে ওঠে।[39][40][41][42] এটি ভারতীয় উপমহাদেশের মধ্য এশিয়ার তুর্কি শাসকদের দ্বারা ফার্সি ভাষার প্রচলন,[43] এবং প্রথম দিকের তুর্ক-আফগান দিল্লি সালতানাতের এই ভাষার পৃষ্ঠপোষকতার অব্যাহত প্রক্রিয়ার একটি অংশ ছিল।[44]
অষ্টাদশ শতকে, মুঘল শাসনের শেষ সময় (যখন সাম্রাজ্যের ও এর সম্ভ্রান্তদের সমাজব্যবস্থায় ভাঙ্গন ধরে), শিক্ষিত উচ্চবিত্ত শ্রেণীর লোকেদের কাছে, বিশেষ করে উত্তর ভারতে খারিবলি ভাষার একটি প্রকরণ লিংগুয়া ফ্রাংকা হিসেবে ফারসির জায়গা দখল করতে থাকে। খারিবলি ভাষা দিল্লির স্থানীয় অপভ্রংশের একটি বংশধর। অবশ্য তখনও ফারসি ভাষা ক্ষুদ্র সময়ের জন্য এর পূর্ব-প্রাধান্য বজায় রাখে। খারিবলি ভাষার সেই প্রকরণটিকেই হিন্দুস্তানি (ফার্সি: ھندوستانی "of Hindustan") নামকরণ করা হয়।
সমাজ-রাজনৈতিক কারণগুলোর জন্য, যদিও খারিবলি ভাষার এই প্রকরণে অনেক ফারসি শব্দ ঢুকে যায়, তবুও এটি তখন একটি আভিজাত্য প্রকাশক উপভাষায় পরিণত হয়। এই উপভাষাটি ফার্সি ভাষায় জবান-ই উর্দু-ই মুয়ালা (রাজসভার ভাষা) বা জবান-ই উর্দু (সেনা শিবিরের ভাষা) নামে পরিচিত ছিল (উর্দু শব্দটি আসে তুর্কী শব্দ Ordū (শিবির) থেকে, এটি আবার ইংরেজি শব্দ horde এর সাথেও সম্পর্কিত, মুঘল সেনাদের সাধারণ ভাষা হিসেবে এই উপভাষার উৎপত্তির কারণে এর এই নাম রাখা হয়)। পরবর্তীতে এই ভাষার আরও উচ্চমাত্রায় পারস্যকৃত প্রকরণ তৈরি করা হয় যাকে রেখতা বা "মিশ্রিত" বলা হত।
উন্মেষিত নতুন সাধারণ উপভাষা হিসেবে হিন্দুস্তানি ভাষা প্রচুর পরিমাণে ফারসি, আরবি ও তুর্কী শব্দ গ্রহণ করে। আর মুঘল বিজয়ের সাথে এটি উত্তর ভারতের বেশিরভাগ অঞ্চলেই লিঙ্গুয়া ফ্রাঙ্কা হিসেবে ছড়িয়ে পড়ে। পারসো-এরাবিক লিপিতেই লেখা হোক, আর দেবনাগরী লিপিতেই লেখা হোক,[45] পরবর্তী চার শতক ধরে এটি উত্তর ভারতের প্রাথমিক লিঙ্গুয়া ফ্রাঙ্কা বা সাধারণ ভাষা ছিল (যদিও বিভিন্ন অঞ্চলের ভিত্তিতে তার স্থানীয় ভাষার উপর এর শব্দতালিকা উল্লেখযোগ্য মাত্রায় নির্ভর করত) এবং মুসলিম রাজসভায় এটি ফার্সির পাশাপাশি লিখিত ভাষার মর্যাদা লাভ করে। উত্তরপ্রদেশের শহরগুলো যেমন দিল্লি, লখনউ, আগ্রার কবিদের কেন্দ্র করে এই ভাষার বিকাশ ঘটে।
জন ফ্লেচার হারস্ট তার ১৮৯১ সালে প্রকাশিত হওয়া গ্রন্থে উল্লেখ করেন, হিন্দুস্তানি বা শিবিরের ভাষা বা দিল্লির মুঘল দরবারের ভাষাকে ভাষাবিজ্ঞানীগণ আলাদা ভাষা হিসেবে বিবেচনা করেন না, বরং ফারসি ভাষা মিশ্রিত হিন্দি ভাষার একটি উপভাষা হিসেবে দেখেন। তিনি বলেন, "কিন্তু সবসময়ই আলাদা ভাষা হিসেবেই এর গুরুত্ব ছিল। এটি একাদশ ও দ্বাদশ শতকের মুসলিম শাসনের ভাষাগত ফলাফল, এবন এটি উত্তর ভারতের অনেক হিন্দুদের দ্বারা (গ্রাম্য বাংলা ছাড়া) এবং সারা ভারতের মুসলিম জনগোষ্ঠীর দ্বারা কথিত হয়।[46]
অষ্ঠাদশ শতকের শেষ থেকে ঊনবিংশ শতকে যখন ব্রিটিশরা ভারতীয় উপমহাদেশে উপনিবেশ তৈরি করে, তারা "হিন্দুস্তানি', 'হিন্দি' এবং 'উর্দু' শব্দগুলোকে একই বিষয় বোঝাতে ব্যবহার করত। তারা এটিকে ব্রিটিশ ভারতের প্রশাসনিক ভাষা হিসবে বিকাশ করে,[47] এবং বর্তমান ভারত এবং পাকিস্তানের সরকারি ভাষা হিসেবে একে প্রস্তুত করে দেয়। যদিও স্বাধীনতার পর 'হিন্দুস্তানি' শব্দটির ব্যবহার কমে গেছে, এবং এটি 'হিন্দি', 'উর্দু' বা 'হিন্দি-উর্দু' দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়েছে। আরও সম্প্রতি, 'হিন্দুস্তানি' শব্দটি বলিউড চলচ্চিত্রের চলিত ভাষা হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে, যা এখন ভারত ও পাকিস্তান উভয় রাষ্ট্রেই জনপ্রিয় এবং একে হিন্দি বা উর্দু কোনভাবেই স্পষ্ট করে চিহ্নিত করা যায় না।
নিম্নলিখিত হিন্দি এবং উর্দু ভাষাতে মানবাধিকার সনদের প্রথম ধারার নমুনা পাঠ্য:
انچھید ١ : سبھی منشیوں کو گورو اور ادھکاروں کے وشے میں جنمجات سؤتنترتا پراپت ہیں۔ انہیں بدھی اور انتراتما کی دین پراپت ہے اور پرسپر انہیں بھائی چارے کے بھاؤ سے برتاؤ کرنا چاہئے۔
বাংলায় উচ্চারণঃ
আন্তর্জাতিক ধ্বনিমূলক বর্ণমালায়ঃ
অনুবাদঃ
:دفعہ 1: تمام انسان آزاد اور حقوق و عزت کے اعتبار سے برابر پیدا ہوۓ ہیں۔ انہیں ضمیر اور عقل ودیعت ہوئی ہیں۔ اسلۓ انہیں ایک دوسرے کے ساتھ بھائی چارے کا سلوک کرنا چاہیۓ۔
বাংলায় উচ্চারণঃ
আন্তর্জাতিক ধ্বনিমূলক বর্ণমালায়ঃ
অনুবাদঃ
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.