Loading AI tools
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক যোগাযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ভারত ও হিন্দুধর্ম পূর্ব এশিয়া ও ভারতীয় উপমহাদেশের অনেক দেশের উপর প্রভাব বিস্তার করেছিল। এর ফলে অনেক হিন্দু দেবদেবীর পূজা বিদেশি রাষ্ট্রগুলিতে প্রচলিত হয়। এই দেবদেবীদের অন্যতম হলেন গণেশ।[1] ভারতের বাইরে হিন্দুদের গণেশ পূজার মধ্যে আঞ্চলিক প্রভেদ দেখা যায়। প্রাচীন যুগের হিন্দু ধ্যানধারণাগুলির অনুসরণ আজও বিশ্বের প্রধান ধর্মগুলিতে লক্ষিত হয়।
গণেশ পূজার বিশেষ প্রচলন ছিল বহির্ভারতে বাণিজ্যে যাওয়া বণিক ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে।[2] মোটামুটি খ্রিস্টীয় ১০ম শতাব্দীর পর থেকে বিনিময়ের নতুন কার্যক্রম বিকশিত হয়, বাণিজ্য গিল্ডগুলি গড়ে ওঠে এবং মুদ্রাবিনিময়ের পুনরুজ্জীবন ঘটে। এই সময় থেকেই বণিক সমাজে গণেশ প্রধান দেবতা রূপে পূজিত হতে থাকেন।[3] যে প্রাচীনতম লিপিতে গণেশকে অন্যান্য সকল দেবতার আগে আবাহন করা হয়েছে, সেটি ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের লেখ।[4]
অধিকাংশ জৈন ধর্মাবলম্বী গণেশের পূজা করেন। তাঁদের বিশ্বাস, গণেশ কুবেরের কিছু কিছু দায়িত্ব পালন করেন।[5] জৈন ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে বাণিজ্যের বিশেষ যোগ থাকায় তাঁদের কাছে গণেশ পূজার ধারণাটি বেশ গ্রহণযোগ্য হয়।[6]
জৈনধর্মের আনুশাসনিক ধর্মশাস্ত্রে গণেশ পূজার কোনো উল্লেখ নেই।[7] জৈন সাহিত্যে গণেশের প্রাচীনতম উল্লেখটি পাওয়া যায় হেমচন্দ্রেরঅভিধানচিন্তামণি গ্রন্থে (খ্রিস্টীয় ১২শ শতাব্দীর তৃতীয় পর্যায়)। এই গ্রন্থে গণেশের বিভিন্ন নাম উল্লিখিত হয়েছে। যেমন, হেরম্ব, গণবিঘ্নেশ ও বিনায়ক। এই গ্রন্থের বিবরণ অনুসারে, গণেশ গজানন, লম্বোদর, পরশুধারী ও মুষিকবাহন।[8]
বর্ধমানসূরি রচিত শ্বেতাম্বর জৈন গ্রন্থ আচারদিনকর (১৪১২ খ্রিস্টাব্দ) অনুসারে, দেবতারাও কাঙ্ক্ষিত দ্রব্য অর্জনের জন্য গণপতিকে প্রসন্ন রাখেন। এই গ্রন্থে আরও বলা হয়েছে যে, যে কোনো শুভ অনুষ্ঠান ও নতুন কাজ শুরু করার আগে তাঁকে পূজা করা হয়। এই প্রথা এখনও শ্বেতাম্বর জৈন সম্প্রদায়ে বেশ জনপ্রিয়। এই গ্রন্থ থেকে গণপতি বিগ্রহ প্রতিষ্ঠার বিধিও পাওয়া যায়।[8]
যদিও দিগম্বর ধর্মগ্রন্থগুলিতে গণেশের এই জনপ্রিয়তা দেখা যায় না। অধুনা ওড়িশার উদয়গিরি ও খণ্ডগিরি গুহাসমূহে খোদিত দুটি মধ্যযুগীয় মূর্তি এবং মথুরায় প্রাপ্ত একটি প্রাচীন মূর্তি ছাড়া কোনো দিগম্বর তীর্থস্থানে গণেশের মূর্তি নেই।[8]
গণেশের যে প্রাচীনতম জৈন মূর্তিটি পাওয়া যায়, সেটি মথুরায় আবিষ্কৃত হয়েছে। এই মূর্তিতে গণেশের সঙ্গে জৈন যক্ষী অম্বিকাকে (গৌরীর জৈন নাম) দেখা যায়।[9] এটি খ্রিস্টীয় ৯ম শতাব্দীর মূর্তি।[10] রাজস্থান ও গুজরাতের জৈন মন্দিরগুলিতে গণেশের বিগ্রহ দেখা যায়।[11] ১০ম শতাব্দীতে ঘনেরবে নির্মিত মহাবীর মন্দিরে এবং ১১শ শতাব্দীতে রাজস্থানের ওসিয়ানের জৈন মন্দিরে গণেশের মূর্তি দেখা যায়।
বৌদ্ধধর্মেও গণেশের উল্লেখ পাওয়া যায়। এই ধর্মে শুধুমাত্র বৌদ্ধ দেবতা বিনায়ক রূপেই গণেশের উল্লেখ নেই, বরং হিন্দু দেবতা রূপেও বিনায়কের উল্লেখ আছে।[12] গুপ্ত যুগের শেষ পর্যায়ের বৌদ্ধ ভাস্কর্যে গণেশের মূর্তির সন্ধান পাওয়া যায়।[13] বৌদ্ধ দেবতা রূপে বিনায়কের মূর্তিটি বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নৃত্যরত। এই রূপটির নাম ‘নৃত্য গণপতি’। উত্তর ভারতে এই রূপটি জনপ্রিয় ছিল। পরবর্তীকালে তা নেপালে গৃহীত হয় এবং তারও পরে তিব্বতে গৃহীত হয়।[14] মালয় দ্বীপমালার চণ্ডী সুকুহ মন্দিরে নৃত্যরত গণেশের একটি মূর্তি দেখা যায়।
এই অনুচ্ছেদটি খালি। আপনি এখানে যোগ করে সাহায্য করতে পারেন। |
এই অনুচ্ছেদটি খালি। আপনি এখানে যোগ করে সাহায্য করতে পারেন। |
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.