জান্নাতুল বাকি
সৌদি আরবের মদিনায় অবস্থিত একটি কবরস্থান উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
সৌদি আরবের মদিনায় অবস্থিত একটি কবরস্থান উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
জান্নাতুল বাকি (আরবি: مقبرة البقيع, The Baqi Cemetery) আরবীতে বলা হয়- বাকিউল গারকাদ, মাকবারাতুল বাকি। সৌদি আরবের মদিনায় অবস্থিত একটি কবরস্থান। এটি মসজিদে নববির দক্ষিণ পূর্ব দিকে অবস্থিত। ইমাম মালিকের কথামতে জান্নাতুল বাকিতে অন্তত দশ হাজার সাহাবার কবর রয়েছে।[1]
এই কবরস্থানটি ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এখানে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর অনেক আত্মীয় ও সাহাবিকে দাফন করা হয়েছে। হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এই কবরস্থানে বেশ কয়েকবার এসেছেন। জান্নাতুল বাকির পেছনে একসময় একটি ইহুদি কবরস্থান ছিল। পরবর্তীতে উমাইয়া আমলে তা জান্নাতুল বাকির অংশে পরিণত করা হয়।[2]
মুহাম্মদ হিজরত করে মদিনা আসার সময় জান্নাতুল বাকির স্থান সবুজ বৃক্ষ আচ্ছাদিত ছিল। মুহাম্মাদ এর স্ত্রী আয়েশা (রা.) বলেছেন, ‘হজরত রাসূলুল্লাহ শেষ রাতে জান্নাতুল বাকির দিকে বেরিয়ে যেতেন এবং বলতেন, ‘হে (কবরের) মুমিন সম্প্রদায়! তোমাদের প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক, তোমাদের নিকট এসেছে যা তোমাদেরকে ওয়াদা দেওয়া হয়েছিল, কাল কিয়ামত পর্যন্ত তোমরা অবশিষ্ট থাকবে এবং ইনশাআল্লাহ নিশ্চয়ই আমরাও তোমাদের সঙ্গে মিলিত হবো। হে আল্লাহ! তুমি বাকিউল গারদবাসীদের ক্ষমা করে দাও।’ - সহিহ মুসলিম [1]
মসজিদে নববি নির্মাণের সময় তিনি মসজিদের স্থানটি দুজন এতিম শিশুর কাছ থেকে কিনে নেন। তার এক সাহাবি আসাদ বিন জারারার মৃত্যুর পর মুহাম্মদ সা. কবরস্থানের জায়গা নির্ধারণ করেন। আসাদ বিন জারার ছিলেন এখানে দাফন হওয়া প্রথম আনসার ব্যক্তি। উসমান বিন মাজুন এখানে দাফন হওয়া প্রথম মুহাজির ব্যক্তি।
তৃতীয় খলিফা উসমান ইবনে আফফানের মৃত্যুর পর তাকে এখানে দাফন করা হয়। তখন তার কবরটি পার্শ্ববর্তী ইহুদি কবরস্থানের মধ্যে পড়ে। খলিফা প্রথম মুয়াবিয়া তার সম্মানে এই স্থানকে জান্নাতুল বাকির অংশ করে নেন। উমাইয়া খিলাফতের সময় তার কবরের উপর প্রথম গম্বুজ নির্মিত হয়। অন্যান্য সময়েও এখানকার বিভিন্ন কবরের উপর গম্বুজ ও স্থাপনা নির্মিত হয়েছে। পরে তা ভেঙ্গে দেয়া হয়।
প্রতিবছর হজের সময় মদিনায় অবস্থানরত কোনো হজ্জ পালনকারীর মৃত্যু হলে জান্নাতুল বাকিতে দাফন করা হয়। এছাড়াও মদিনার বাসিন্দারাও মারা গেলে এখানে দাফনের সুযোগ পায়। তবে মুহাম্মাদ -এর সাহাবাদের ইতিহাস সংরক্ষণের অংশ হিসেবে এ কবরস্থানের শুরুর অংশে যাদের সমাহিত করা হয়েছে তাদের স্থানে এখন আর নতুন করে কাউকে কবরস্থ করা হয় না। সৌদি সরকারের তত্ত্ববধানে জান্নাতুল বাকী জিয়ারতের জন্য ফজর ও আসরের নামাজের পর খুলে দেয়া হয়। এসময় মুসলিম পুরুষরা জিয়ারতের জন্য ভেতরে যেতে পারে। ইসলামি শরিয়তে নারীদের কবর জেয়ারত করা বৈধ নয় মর্মে তাদের যেতে দেয়া হয় না।[1] হাদিস বিশারদগণ জেয়ারতের সময় জান্নাতুল বাকিতে সমাহিতদের প্রতি অনির্দিষ্টভাবে সবাইকে একসঙ্গে সালাম দেওয়া ও তাদের জন্য দোয়া করার পক্ষে মত দিয়েছেন।
১৯২৬ সালে আবদুল আজিজ ইবনে সৌদের শাসনামলে জান্নাতুল বাকির মাজারগুলো ধ্বংস করা হয়। একই বছর মক্কার জান্নাতুল মুয়াল্লা কবরস্থানের মাজারগুলোও ধ্বংস করা হয়। জান্নাতুল মুয়াল্লায় হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ)এর প্রথম স্ত্রী হযরত খাদিজা (রাঃ) সহ আরও অন্যান্য আত্মীয়ের কবর রয়েছে। এসময় বহির্বিশ্বের মুসলিম সম্প্রদায় প্রতিবাদ জানালেও এসব স্থাপনা ধ্বংস করে ফেলা হয়।
ফাতিমা বিনতে আসাদ]], [[মুহাম্মদ এর চাচি ও আলি ইবনে আবি তালিব। আলি ইবনে আবি তালিবের মা। সমশ্রেণীর অন্যান্য আত্মীয়ের মধ্যে রয়েছেন সাফিয়া ও আতিকা ]]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.