Loading AI tools
ভারতীয় জীববিজ্ঞানী উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
ড.কমল রণদিভে(পুরো নাম কমল জয়সিং রণদিভে) (৮ নভেম্বর ১৯১৭ - ১১ এপ্রিল ২০০১) ছিলেন একজন বিশিষ্ট ভারতীয় সেল জীববিজ্ঞানী তথা কোষ বিজ্ঞানী। কোষ বিজ্ঞান গবেষণায় যিনি ক্যান্সার ও ভাইরাসের মধ্যে সংযোগ অনুসন্ধানে সুবিদিত ছিলেন এবং তার গবেষণা সুদূরপ্রসারী সাফল্য এনে দিয়েছে। তিনিই প্রথম বিজ্ঞানী যিনি স্তন ক্যানসারের সঙ্গে বংশগতভাবে সংযোগ তুলে ধরেন। তিনি ইন্ডিয়ান উওমেন সায়েন্টিস্টস অ্যাসোসিয়েশন' (আইডব্লিউএসএ) তথা ভারতীয় মহিলা বিজ্ঞানী সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন। ১৯৬০-এর দশকে, তিনি মুম্বইয়ের ভারতীয় ক্যান্সার গবেষণা কেন্দ্রে ভারতের প্রথম টিস্যু কালচার গবেষণাগার প্রতিষ্ঠা করেন। [1] [2] [3]
কমল রণদিভে | |
---|---|
জন্ম | কমল সামার্থ ৮ নভেম্বর ১৯১৭ |
মৃত্যু | ১১ এপ্রিল ২০০১ ৮৩) | (বয়স
জাতীয়তা | ভারতীয় |
মাতৃশিক্ষায়তন | মুম্বই বিশ্ববিদ্যালয় |
পরিচিতির কারণ | ক্যানসার চিকিৎসায় গবেষণা |
দাম্পত্য সঙ্গী | জয়সিং ত্রিম্বক রণদিভে (বি. ১৯৩৯) |
পুরস্কার | পদ্মভূষণ |
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন | |
কর্মক্ষেত্র | কোষ জীবনবিজ্ঞান |
প্রতিষ্ঠানসমূহ | ক্যানসার রিসার্চ সেন্টার এবং টাটা মেমোরিয়াল হাসপাতাল |
১৯৬০-এর দশকে, তিনি মুম্বইয়ের ভারতীয় ক্যান্সার গবেষণা কেন্দ্রে ভারতের প্রথম টিস্যু কালচার গবেষণাগার প্রতিষ্ঠা করেন ।
কমল রণদিভে ১৯১৭ খ্রিস্টাব্দের ৮ই নভেম্বর পুনেতে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা জীববিজ্ঞানী শান্তাবাই দিনকর সামার্থ ছিলেন পুনের ফার্গুসন কলেজের অধ্যাপক এবং মাতা ছিলেন শান্তাবাই দিনকর সামার্থ। [1] তার পিতা চাইতেন তার তার সমস্ত সন্তান সুশিক্ষিত হোক এবং বিশেষকরে মেধাবী কমল যেন চিকিৎসা বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করে একজন সুচিকিৎসক হন। সেইমত পুনের হুজুরপাগা হাইস্কুলে পড়াশোনার পর [2] তিনি ফার্গুসন কলেজে জীববিজ্ঞান নিয়ে স্নাতকস্তরে ভর্তি হন এবং ১৯৩৪ খ্রিস্টাব্দে স্নাতক হন। এরপর তিনি পুনের কৃষি কলেজ থেকে ১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দে সাইটোজেনেটিক্সে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী লাভ করেন। ইতিমধ্যে ১৯৩৯ খ্রিস্টাব্দের ১৩ই মে তিনি গণিতজ্ঞ জে টি রণদিভেকে বিবাহ করে মুম্বই চলে যান। তাদের এক সন্তান অনিল জয়সিংহ রণদিভে [4]
বোম্বাইতে অবস্থানকালে তিনি টাটা মেমোরিয়াল হাসপাতালে কাজ করতেন। সেই সাথে তিনি ইন্ডিয়ান ক্যান্সার রিসার্চ সেন্টার (আই সি আর সি)-এর প্রতিষ্ঠাতা বিখ্যাত প্যাথলজিস্ট ভি.আর.খানোলকারের অধীনে গবেষণা করে বোম্বে ইউনিভার্সিটি থেকে ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দে পিএইচডি ডিগ্রী লাভ করেন। [2] [5] ড.খানোলকার তাকে আমেরিকান ইউনিভার্সিটি থেকে ফেলোশিপ নিতে উৎসাহিত করেন এবং তিনি জর্জ অটো গে'র অধীনে টিস্যু কালচার নিয়ে নতুন গবেষণা (HeLa নামক অমর কোষ বিষয়ে) করে পোস্টডক্টরাল ফেলোশিপ লাভ করেন ম্যারিল্যান্ডের বাল্টিমোরস্থিত জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।[2]
দেশে ফিরে তিনি পুনরায় যোগ দেন ইন্ডিয়ান ক্যান্সার রিসার্চ সেন্টারে এবং সিনিয়ার রিসার্চ অফিসার হিসাবে কর্মজীবন শুরু করেন। তিনি বোম্বেতে এক্সপেরিমেন্টাল বায়োলজি ল্যাবরেটরি এবং টিস্যু কালচার ল্যাবরেটরি প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। [6] ১৯৬৬ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত তিনি ভারতীয় ক্যান্সার গবেষণা কেন্দ্রের অস্থায়ী পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন [6] ১৯৬০ এর দশকের গোড়ার দিকে, তিনি মুম্বইয়ের ভারতীয় ক্যান্সার গবেষণা কেন্দ্রে ভারতের প্রথম টিস্যু কালচার গবেষণাগার প্রতিষ্ঠা করেন। ফলে জীববিজ্ঞান এবং রসায়নের ক্ষেত্রে কার্সিনোজেনেসিস, সেল বায়োলজি এবং ইমিউনোলজিতে নতুন গবেষণার পথ প্রশস্ত হয়। তার কর্মজীবনে অন্যতম কৃতিত্ব হল- ক্যান্সারের প্যাথোফিজিওলজির উপর গবেষণা যা লিউকেমিয়া, স্তন ক্যান্সার এবং খাদ্যনালী ক্যান্সারের মতো রোগের কারণগুলির অনুসন্ধান সফল হয় এবং সুদূরপ্রসারী হয়। তা গবেষণার আরেকটি উল্লেখযোগ্য প্রাপ্তি ছিল ক্যান্সার এবং হরমোন এবং টিউমার ভাইরাস সম্পর্কের সংবেদনশীলতার এক সংযোগ খুঁজে বের করা। কুষ্ঠ টিকা বিবর্তন এর সাথে সম্পর্কিত ব্যাকটেরিয়া তার মৌলিক গবেষণা ফলে ছিল কুষ্ঠ । [2] তিনি ভারতীয় নারী বিজ্ঞানীদের ক্যান্সার গবেষণায় বিশেষ করে নারী ও শিশুদের মধ্যে ক্যান্সারের বিষয়ে কাজ করার জন্য তিনি সচেষ্ট ছিলেন। এরকম একটি প্রজেক্ট ছিল শিশুদের অধ্যয়ন সংক্রান্ত "ইমিউনোহেমাটোলজি অফ ট্রাইবাল ব্লাড" এর উপর। [6]
কমল রণদিভে যখন বোম্বেতে টাটা মেমোরিয়াল ক্যান্সার হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন প্যাথলজি বিভাগে গবেষণার যে বিবরণী ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দের ফেব্রুয়ারি প্রস্তুত করেন তা ছিল - স্তন ক্যানসারের সংবেদনশীলতা লক্ষ্য করতে চারটি প্রজাতির স্বাভাবিক স্তন্যপায়ী ইঁদুরের উপর তুলনামূলক রূপবিদ্যা খতিয়ে দেখার রিপোর্ট। রিপোর্ট করেছিলেন যা বিশেষ মনোযোগ আকর্ষণ করেছিল। এটিতে বংশগতি, সন্তানের জন্মদান, হিস্টোলজিকাল গঠন এবং অন্যান্য কারণগুলির সাথে রোগের প্রত্যক্ষ যোগ বা সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা ছিল। [7] শিশুদের মধ্যে ম্যালিগন্যান্সির জেনেরিক উৎসের এবং রক্তের অস্বাভাবিক অবস্থা, যা ডিসক্রেশিয়াস নামে পরিচিত তারও বিশেষ উল্লেখ ছিল [8]
কমল রণদিভে ১৯৮৯ খ্রিস্টাব্দে আহমেদনগরে সত্য নিকেতন নামে এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সাহায্যে মহারাষ্ট্রের আকোলা নামক এক তালুকে উপজাতি সম্প্রদায়ের শিশুদের অপুষ্টি নিয়ে এক সমীক্ষায় নমুনা সংগ্রহ করেন। [9]
তিনি ভারতীয় মহিলা সমিতির তত্ত্বাবধানে সরকারী স্পনসরকৃত প্রকল্পের মাধ্যমে রাজপুর এবং আহমেদনগরের নিকটবর্তী গ্রামে মহিলাদের স্বাস্থ্য ও চিকিৎসার বিষয়ে পরামর্শও দিতেন ।। [10]
কমল রণদিভে চিকিৎসা বিজ্ঞানে অবদানের জন্য ১৯৮২ খ্রিস্টাব্দে ভারত সরকারের তৃতীয় সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মাননা পদ্মভূষণ লাভ করেন [11] ১৯৬৪ খ্রিস্টাব্দে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল কাউন্সিলের থেকে স্বর্ণপদক ও ১৫ হাজার টাকার নগদ সম্বলিত প্রথম রৌপ্য জয়ন্তী রিসার্চ পুরস্কার পান [12] ১৯৬৪ খ্রিস্টাব্দেই মাইক্রো-বায়োলজিতে বিষয়ে অবদানের জন্য জি.জে.ওয়াতুমুল ফাউন্ডেশন পুরস্কারে ভূষিত হন।। [13]
তিনি ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিকেল রিসার্চ (ICMR) এর একজন ইমেরিটাস মেডিকেল সায়েন্টিস্ট ছিলেন। তিনি ৮৩ বছর বয়সে ১১ এপ্রিল ২০০১ পরলোকগমন [14]
২০২১ খ্রিস্টাব্দের ৮ই নভেম্বর কমল রণদিভের ১০৪ তম জন্মবার্ষিকীতে গুগল ডুডলের মাধ্যমে শ্রদ্ধা জানায়। [15] [16] [17]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.