Loading AI tools
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
অ্যাঙ্গুইলা ( /æŋˈɡwɪlə/) ক্যারিবীয় অঞ্চলের একটি ব্রিটিশশাসিত বিদেশী অঞ্চল।[6] এটি লেসার অ্যান্টিলেসের লিওয়ার্ড দ্বীপপুঞ্জের সবচেয়ে উত্তরের অংশ, যা পুয়ের্তো রিকো ও ভার্জিন দ্বীপপুঞ্জের পূর্বে এবং সেন্ট মার্টিনের সরাসরি উত্তরে অবস্থিত।[7] অঞ্চলটি ১৬ কিলোমিটার (৯.৯ মাইল) দীর্ঘ ও ৩ কিলোমিটার (১.৯ মাইল)(প্রশস্ততম বিন্দুতে) প্রশস্ত অ্যাঙ্গুইলার প্রধান দ্বীপ এবং অনেকগুলি ছোট দ্বীপ ও কোরাল উপদ্বীপ নিয়ে গঠিত যেখানে স্থায়ী জনসংখ্যা নেই। এই অঞ্চলের রাজধানী হল দ্য ভ্যালি।[8] ভূখণ্ডের মোট ভূমির পরিমাণ ৩৫ বর্গকিলোমিটার (১৪ বর্গমাইল)[9] এবং জনসংখ্যা প্রায় ১৪,৭৩১ জন (২০১৮ )।[2][3]
অ্যাঙ্গুইলা | |
---|---|
ব্রিটিশশাসিত বিদেশী অঞ্চল | |
নীতিবাক্য: "একতা, শক্তি ও সহনশীলতা" | |
সংগীত: "ঈশ্বর রানীকে রক্ষা করুন" | |
জাতীয় সঙ্গীত: "ঈশ্বর অ্যাঙ্গুইলার মঙ্গল করুন" | |
অ্যাঙ্গুইলা-এর অবস্থান (লাল) | |
সার্বভৌম রাষ্ট্র | যুক্তরাজ্য |
ইংরেজ নিয়ন্ত্রণ | ১৬৬৭ |
সেন্ট ক্রিস্টোফার ও নেভিসের সাথে যৌথ ফেডারেশন | ১৮৭১ |
স্বাধীনতা অর্জন | ১২ জুলাই ১৯৬৭ |
ব্রিটিশ নিয়ন্ত্রণ পুনর্বহাল | ১৮ মার্চ ১৯৬৯ |
রাজধানী এবং বৃহত্তম শহর | দ্য ভ্যালি ১৮.২২৭২৩° উত্তর ৬৩.০৪৮৯৯° পশ্চিম |
দাপ্তরিক ভাষা | ইংরেজি |
নৃগোষ্ঠী (২০১১) | ৮৫.৩% কৃষ্ণাঙ্গ ৪.৯% হিসপানিক ৩.৮% বহুজাতিক ৩.২% শেতাঙ্গ ১% ইন্ডিয়ান ১.৯% অন্যান্য[1] |
বিশেষণ | অ্যাঙ্গুইলান |
সরকার | সাংবিধানিক রাজতন্ত্রের অধীনে সংসদীয় নির্ভরশীলতা |
• রাজা | দ্বিতীয় এলিজাবেথ |
• গভর্নর | দিলিনি দানিয়েল-সেলভারাত্নাম |
• সহকারী গভর্নর | পেরিন এ. ব্রাডলি |
• প্রিমিয়ার | এলিস ওয়েবস্টার |
আইনসভা | হাইজ অফ অ্যাসেম্বলি |
যুক্তরাজ্যের সরকার | |
• মন্ত্রী | তারিক আহমেদ |
আয়তন | |
• মোট | ৯১ কিমি২ (৩৫ মা২) |
• পানি/জল (%) | নগণ্য |
সর্বোচ্চ বিন্দু | ৭৩ মিটার (২৪০ ফুট) |
জনসংখ্যা | |
• ২০১৮ আনুমানিক | ১৪,৭৩১ [2][3] (র্যাংক করা হয়নি) |
• ২০১১ আদমশুমারি | ১৩,৪৫২ |
• ঘনত্ব | ১৩২/কিমি২ (৩৪১.৯/বর্গমাইল) (র্যাংক করা হয়নি) |
জিডিপি (পিপিপি) | ২০১৪ আনুমানিক |
• মোট | $৩১১ মিলিয়ন[4] |
• মাথাপিছু | $২৯,৪৯৩ |
জিডিপি (মনোনীত) | ২০২০ আনুমানিক |
• মোট | $৩০৭ মিলিয়ন[5] |
মুদ্রা | পূর্ব ক্যারিবীয় ডলার (এক্সসিডি(এক্সসিডি)) |
সময় অঞ্চল | ইউটিসি–৪ (এএসটি) |
তারিখ বিন্যাস | দিন/মাস/বছর |
গাড়ী চালনার দিক | বাম |
কলিং কোড | +১-২৬৪ |
যুক্তরাজ্যে পোস্টকোড | এআই-২৬৪০ |
আইএসও ৩১৬৬ কোড | এআই |
ইন্টারনেট টিএলডি | .এআই |
দ্বীপটির স্থানীয় আরাওক নাম হলোমালিওহানা।[7]
দ্বীপটির আকৃতির কারণে ইতালীয় শব্দ অ্যাংগুইলা থেকে এর নামকরন করা হয়েছে। শব্দটির অর্থ হচ্ছে, "বানমাছ"। শব্দটি ল্যাটিন শব্দ অ্যাংগুয়িস (অর্থ: "সাপ") থেকে উদ্ভুত।[10][8][10][11][12]
অ্যাঙ্গুইলা সর্বপ্রথম আমেরিন্ডিয়ান আদিবাসীদের দ্বারা উপনিবেশিত হয়। তাঁরা দক্ষিন আমেরিকা হতে স্থানান্তরিত হয়েছিলো।[13] আমেরিকান প্রাচীনকালের স্থানীয় প্রত্নবস্তু, যেগুলো অ্যাঙ্গুইলায় পাওয়া গেছে, সেগুলোর তারিখ খ্রিস্টপূর্ব ১৩০০ এর আশেপাশে। খ্রিস্টাব্দ ৬০০ হতে স্থায়িত্বের তারিখ পাওয়া যায়।[14][15] অ্যাংগুইলায় দুটি পাথরে খোদাই চিহ্নিত স্থান (পেট্রোগ্লিফ) রয়েছে: বড় বসন্ত ও ঝর্না গুহা। বড় বসন্তের পাথরের স্তরে ১০০ র বেশি খোদিত নকশা আছে (৬০০ হতে ১২০০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যকার)। বেশিরভাগ খাজকাটা নকশাই মুখাকৃতি নকশা গঠন করেছে।[16]
অ্যাঙ্গুইলাকে সর্বপ্রথম ইউরোপিয়ারা কখন দেখেছিলো তা নির্দিষ্ট নয়: কিছু তথ্যউৎস দাবী করে, কলম্বাস ১৪৯৩ সালে তার দ্বিতীয় সমুদ্রাভিযানের সময়ই এটি দেখেছিলেন। যেখানে অন্য এক দল বর্ণনা করে, ১৫৬৪ সালে এর প্রথম ইউরোপিয়ো আবিষ্কারক ফ্রেঞ্চ নাগরিক হিগুনট নবলম্যান ও মার্চেন্ট রেনে গৌলেইন ডি লডোনিয়ের।[17] ১৯৩১ সালে ডাচ ওয়েস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এখানে একটি দূর্গ নির্মাণ করে। যাইহোক, ১৬৩৩ সালে স্পানিশ কর্তৃক দূর্গটি ধ্বংস হলে, কোম্পানি এখানে দূর্গ বন্ধ করে দেয়।[18]
ঐতিহাসিক হিসাব অনুসারে ১৬৫০ সালের প্রথমার্ধে ইংরেজ অভিবাসী সেইন্ট কিটস এর দ্বারা অ্যাংগুইলা প্রথম উপনিবেশিত হয়।[10][19][20]ঔপনিবেশিকরা তামাক উৎপাদন দৃষ্টিপাত করে এবং তুলার পরিমাণে কম নজর দেয়।[21]১৬৬৬ সালে সাময়িক সময়ের জন্য ফ্রেঞ্চরা দ্বীপটির অধিগ্রহণ নিয়ে নেয় কিন্তু পরবর্তী বছরই ট্রিটি অফ ব্রেডা এর শর্তানুসারে ফ্রেঞ্চরা দ্বীপটিকে আবার ইংরেজ অধীনে ফিরিয়ে দেয়।
ঐতিহাসিক হিসাব অনুসারে ১৬৫০ সালের প্রথমার্ধে ইংরেজ অভিবাসী সেইন্ট কিটস এর দ্বারা অ্যাংগুইলা প্রথম উপনিবেশিত হয়। ঔপনিবেশিকরা তামাক উৎপাদন দৃষ্টিপাত করে এবং তুলার পরিমাণে কম নজর দেয়। ১৬৬৬ সালে সাময়িক সময়ের জন্য ফ্রেঞ্চরা দ্বীপটির অধিগ্রহণ নিয়ে নেয় কিন্তু পরবর্তী বছরই ট্রিটি অফ ব্রেডা এর শর্তানুসারে ফ্রেঞ্চরা দ্বীপটিকে আবার ইংরেজ অধীনে ফিরিয়ে দেয়।[22] মেজর জন স্কট, যিনি ১৬৬৭ সালে সেপ্টেম্বরে অ্যাংগুইলা পরিদর্শন করেন, তিনি ১৬৬৮ সালের জুলাইতে লেখেন দ্বীপটি ত্যাগ করার পূর্বে দ্বীপের অবস্থা দারুণ ছিলো।[23] যুদ্ধকালে ২০০ বা ৩০০ লোক সেখানে পলায়ন করে। ১৬৮৮, ১৭৪৫ ও ১৭৯৮ সালে ফ্রেঞ্চ পুনরায় দ্বীপটি আক্রমণ করে, অনেক ক্ষতিসাধনও করে, কিন্তু দ্বীপটি করায়ত্ত করতে ব্যর্থ হয়।[24][25]
প্রথমদিকের ইউরোপিয় ঔপনিবেশিকরা তাঁদের সাথে আফ্রিকান দাসদের নিয়ে আসে। ঐতিহাসিকরা নিশ্চিত করে যে, অত্র অঞ্চলে আফ্রিকান দাস ১৭ শতকের প্রথমার্ধো বসবাস শুরু করে, তাছাড়াও ১৬০০ এর মাঝের দিকে সেনেগাল হতে দাসেরা সেন্ট কিটসে বাস করা শুরু করে।[26]
প্রথমদিকের ইউরোপিয় ঔপনিবেশিকরা তাঁদের সাথে আফ্রিকান দাসদের নিয়ে আসে। ঐতিহাসিকরা নিশ্চিত করে যে, অত্র অঞ্চলে আফ্রিকান দাস ১৭ শতকের প্রথমার্ধো বসবাস শুরু করে, তাছাড়াও ১৬০০ এর মাঝের দিকে সেনেগাল হতে দাসেরা সেন্ট কিটসে বাস করা শুরু করে।[27] ১৬৭২ পর্যন্ত নেভিস দ্বীপে দাসদের একটি ঘাটি তৈরি হয়, যারা লিওয়ার্ড দ্বীপের সেবক ছিলো।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] আফ্রিকানরা অ্যাংগুইলা দ্বীপে আসার সময়কালে সেখান ভালোভাবে বসবাস করা কঠিনই ছিলো। কাগজকলমের প্রমাণ অনুযায়ী ১৬৮৩ সালে যথেষ্ট আফ্রিকান উপস্থিতি ছিলো, কমপক্ষে ১০০ দাস লোক হবে। অনুমান করা হয় তারা মধ্য আফ্রিকা কিংবা পশ্চিম আফ্রিকা হতে এসেছিলো দ্বীপে।[28]
দাসদের চিনি গাছ লাগানোর জন্য জোরপূর্বক বাধ্য করা হতো, যেটিতে পরবর্তীতে জায়গা করে নেয় তামাক। তামাকই অ্যাংগুইলার প্রধান শস্যে পরিনত হয়। সময়ের পরিবর্তনে আফ্রিকান দাসেরা এবং তাঁদের বংশধরের সংখ্যা দ্বীপটিতে বেড়ে যায়। এবং আফ্রিকানদের সংখ্যা সাদা ঔপনিবেশিকদের ছাড়িয়ে যায়।
১৮০৭ সালে ব্রিটিশ সম্রাজ্যে আফ্রিকান দাস ব্যবসারা সমাপ্তি হয়ে যায় এবং ১৮৩৪ সালে পরিপূর্ণভাবে দাসেদের পক্ষে এটা আইনে রুপান্তরিত হয়। তখন অধিকাংশ তামাক চাষী সব বিক্রি দেয় কিংবা দ্বীপটি ছেড়ে চলে যায়। ওটনিবেশিক সময়ের প্রথমদিকে, অ্যাংগুইলা ব্রিটিশদের দ্বারা অ্যান্টিগা হয়ে শাসিত হতো। ১৮২৫ সালে সেইন্ট কিটসের ধারেকাছে দ্বীপটির শাসন নিয়ন্ত্রনের ব্যবস্থা করা হয়। অনেক অ্যাংগুইলিয়ানদের আপত্তি সত্ত্বেও ১৮২৫ সালে অ্যাংগুইলা সেন্ট কিটস ও নেভিসের সাথে যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনের শুরু করে।[29] অর্থনৈতিক স্থবিরতা ও ১৮৯০ এর কতিপয় খরার খারাপ প্রভাব এবং পরবর্তীতে ১৯৩০ এর চরম হতাশার কারণে অসংখ্য অ্যাংগুইলিয়ান দেশত্যাগ করে অন্যত্র গিয়ে উন্নতির আশায়।[30]
১৯৫২ সালে অ্যাঙ্গুইলায় সকল প্রাপ্তবয়স্কদের ভোটাধিকার শুরু হয়।[31] সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য (১৯৫৮-৬২) ওয়েস্ট ইন্ডিজ সংঘের অংশ হওয়ার পরে, সংযুক্ত রাষ্ট্র সেইন্ট কিটস-নেভিস-অ্যাঙ্গুইলার সাথে অ্যাঙ্গুউলা অংশ হয়ে ১৯৬৭ সালে সম্পূর্ণ আভ্যন্তরীণ স্বায়ত্তশাসন শুরু করে।[32] যাইহোক, বেশিরভাগ অ্যাঙ্গুলিয়ানদের উক্ত সংঘের অংশ হওয়ার ইচ্ছা ছিলো না, এবং সেইন্ট কিটসের আধিপত্য নিয়ে তাঁরা বিরক্তই ছিলো। ১৯৬৭ সালের ৩০ মে, দ্বীপ হতে সেইন্ট কিটসের পুলিশ সেনাদের জোরকরে বের করে দেয়। এবং একটি গণভোটের মাধ্যমে সেইন্ট কিটস হতে নিজেদের আলাদা করার ঘোষণা দেয়।[33][34][35] অটলিন হ্যারিংগার[36] ও রোনাল্ড ওয়েবস্টার অন্যদের সাথে এই ঘটনা পরিচালনা করে, যা অ্যাঙ্গুলিয়ান বিপ্লব নামে পরিচিতি পায়। স্বাধীনতা অর্জন অবশ্য এর লক্ষ্য ছিলো না, বরং উদ্দেশ্য ছিলো সেইন্ট কিটস ও নেভিস হতে মুক্তি এবং বির্টিশ উপনিবেশে প্রত্যাবর্তন করা।
পরবর্তীতে অচলাবস্থা কাটাতে আয়োজিত আলোচনা ব্যর্থ হওয়ায় দ্বিতীয় গণভোট হয়। তাতে অ্যাঙ্গুলিয়ানরা সেইন্ট কিটস হতে আলাদা হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ অব্যাহত রাখে। এবং প্রজাতন্ত্র অ্যাঙ্গুইলায় রোনাল্ড ওয়েবস্টারকে একতরফাভাবে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করা হয়। ব্রিটিশ দূত উইলিয়াম হুয়িটলক সেখানে অচলাবস্থা কাটাতে চেষ্টা চালায় এবং ব্যর্থ হয়। পরবর্তীকালে ১৯৬৯ এর মার্চে ৩০০ সৈন্য পাঠানো হয়। সেখানে ব্রিটিশ কর্তৃত্ব পুনপ্রতিষ্ঠিত হয় এবং ১৯৭১ সালের জুলাইয়ে অ্যাঙ্গুইলা কার্যাদেশ অনুসারে নিশ্চিত হয়।[37] ১৯৮০ সালে অ্যাঙ্গুইলা চূড়ান্তভাবে সেইন্ট কিটস ও নেভিস হতে পৃথক হয় এবং পৃথক একটি ব্রিটিশ ক্রাউন উপনিবেশ হয় (বর্তমানে ব্রিটিশ বৈদেশিক অঞ্চল)।[38][39][40][41] [42] তখন থেকে, অ্যাঙ্গুইলা রাজনৈতিকভাবে স্থিতিশীল আছে এবং পর্যটনে ও সমুদ্র উপকূল অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে একটা বড় সম্ভাবনা দেখছে।[43]
অ্যাঙ্গুইলা হলো সমতল ভূমি, ক্যারিবিয়ান সাগরের মাঝে প্রবাল ও চুনাপাথরে ভরা নিন্মতলীয় দ্বীপ, যেটি ১৬ মাইল (২৬ কি.মি.) লম্বা এবং ৩.৫ মাইল (৬ কি.মি. চওড়া।[44] এটি পুয়ের্তো রিকো ও ভার্জিন আইল্যান্ডের পূর্বে এবং সেইন্ট মার্টিনের সোজা পূর্বে যা অ্যাঙ্গুইলা চ্যানেলের মাধ্যমে আলাদা হয়ে আছে।[45][46] দ্বীপটির মাটি সাধারণত পাতলা ও দুর্বল ধরনের, ঝোপঝাড়, উষ্ণমন্ডলীয় গাছ ও শাকসবজির জন্য উপযুক্ত।[47] বিস্তৃত ভূখন্ড স্বাভাবিকভাবে নিন্মভূমি, এছাড়া উচ্চভূমি রয়েছে উপত্যকার কাছাকাছি এলাকায়; ক্রোকাস পাহাড়, অ্যাঙ্গুলিয়ার সর্বোচ্চ চূড়া, যার উচ্চতা ২৪০ ফুট (৭৩ মিটার), এটি শহরের পশ্চিমাংশে অবস্থিত।[48]
অ্যাঙ্গুইলা মূল দ্বীপ হতে খানিক দূরের অঞ্চলে আরো কিছু সংখ্যক ছোট ছোট দ্বীপ ও প্রবালদ্বীপ রয়েছে, যার বেশিরভাগই সরু আকারের ও বসবাসের উপযোগী নয়:
অ্যাঙ্গুইলায় আগ্নেয়গিরির উৎস[49] রয়েছে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে সাথে সাগরের জলে ডুবে যাচ্ছে।[50]
উত্তর পশ্চিমের আয়নবায়ু ক্রান্তীয় এ দ্বীপটিকে ঠান্ডা ও শুকনো রাখে।[51] বার্ষিক গড় তাপমাত্রা ৮০° ফারেনহাইট (২৭° সেলসিয়াস)। জুলাই-অক্টোবর হলো সবচেয়ে গরমের সময় এবং ডিসেম্বর-অক্টোবর হলো সবচেয়ে ঠান্ডা সময়।
বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাত ৩৫ ইঞ্চি (৮৯০ মিমি), যদিও এক ঋতু হতে অন্য ঋতুতে বা এক বছর হতে অন্য বছরে ভিন্ন হতে পারে।[52] দ্বীপটিতে আকস্মিক ক্রান্তীয় ঝড় ও হারিকেন ঝড় হয়ে থাকে, যা সাধারণত জুলাই-নভেম্বর সময়কালে ঘটে থাকে। ১৯৯৫ সালে হারিকেন লুইস হলে দ্বীপটি ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয় এবং হারিকেন লেনি হলে, দ্বীপটিতে ৫ হতে ২০ ফুট (১.৫ হতে ৬ মিটার) উচু ভয়ঙ্কর বন্যার সম্মুখীন হয়।
অ্যাঙ্গুইলা হল যুক্তরাজ্যের একটি অভ্যন্তরীণ স্ব-শাসিত সাগরীয় অঞ্চল।[53] দ্বীপটির রাজনীতি সংগঠিত হয সংসদীয় প্রতিনিধিত্বমূলক গণতান্ত্রিক নির্ভরতার কাঠামোতে, যার দ্বারা প্রধানমন্ত্রীই হচ্ছেন সরকার ও বিভিন্ন ধরনের বহুদলীয় পদ্ধতির প্রধান।[54]
দ্যা ইউনাইটেড নেশনশ কমিটি অন ডিকলোনাজেশন অ্যাঙ্গুইলাকে ইউনাইটেড নেশনশ তালিকায় অস্বশাসিত এলাকা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে। এ অঞ্চলের সংবিধান হলো ১ এপ্রিল ১৯৮৩ সালের অ্যাঙ্গুইলার সাংবিধানিক আইন (গৃহীত হয় ১৯৯০ সালে)।[55] সরকার ও বিধানসভা কর্তৃক ন্যস্ত বিধানিক ক্ষমতা অনুযায়ী সরকার নির্বাহী ক্ষমতা চালনা করে। কার্যনির্বাহী ও আইনসভা হতে বিচার বিভাগ স্বাধীন।[56]
ব্রিটিশ সাগরীয় অঞ্চল হওয়াতে অ্যাঙ্গুইলার সামরিক প্রতিরক্ষায় যুক্তরাজ্য দায়ী থাকে, যদিও বর্তমানে সেখানে কোন সক্রিয় সৈন্য সরবরাহ বা সশস্ত্র বাহিনী উপস্থিত নেই।[57][58] অ্যাঙ্গুইলায় অল্পসংখ্যক উপকূলীয় পুলিশ দল রয়েছে, যা প্রায় ৩২ জন কর্মী নিয়ে গঠিত। তারা ভিটি হেলম্যাটিক এম১৬০-ক্লাস ৫২-ফুট দ্রুতগামী পেট্রোল-চালিত নৌকা চালনা করে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] পুলিশি কাজের জন্য সমস্ত দ্বীপে রয়্যাল অ্যাঙ্গুইলা পুলিশ ফোর্স দায়িত্ব পালন করে।
২০০১ সালের আদমশুমারী অনুযায়ী, দ্বীপের বাসিন্দাদের বড় একটি অংশ কৃষ্ণাঙ্গ (৯০.০৮%), এদের বেশিরভাগই আফ্রিকা হতে আসা কৃষ্ণঙ্গদের বংশধর।[59] সংখ্যালঘুদের মধ্যে রয়েছে শ্বেত ৩.৭৪% এবং মিশ্র বর্ণের জাতি ৪.৬৫%।জনসংখ্যার ৭২% হলো অ্যাঙ্গুইলিয়ান এবং বাকি ২৮% অ-অ্যাঙ্গুইলিয়ান। অ-অ্যাঙ্গুলিয়ান জনসংখ্যার মাঝে অধিকাংশ হলো যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সেইন্ট কিটস ও নেভিস, ডমিনিকান প্রজাতন্ত্র, জ্যামাইকা এবং নাইজেরিয়ার নাগরিক।[60]
২০০৬ ও ২০০৭ সালে অ্যাঙ্গুইলায় প্রচুর সংখ্যায় চীনা, ভারতীয় এবং মেক্সিকান কর্মীদের ক্রমাগত আনতে দেখা যায়। তাঁদের আনা হয় মূলত বড় ধরনের পর্যটন উন্নয়নের জন্য। বাইরে থেকে কর্মী আনার কারণ, শ্রমের প্রয়োজন অনুসারে দ্বীপের স্থানীয় লোকজন সংখ্যায় পর্যাপ্ত ছিলো না।[61]
ইংরেজ ঔপনিবেশের শুরুর সময়ে খ্রিস্টীয় চার্চের উপস্থিতি সামঞ্জস্যপূর্ণ বা জোরালো ছিলো না; ইউরোপিয় এবং আফ্রিকানদের আধ্যাত্মিক ও ধর্ম চর্চা তাঁদের স্থানীয় গোড়ামির প্রতিফলন রূপ হয়।
১৮১৩ সালের শুরুতে, খ্রিস্টান ধর্মযাজকেরা আনুষ্ঠানিক ভাবে আফ্রিকান দাসদের মাঝে ধর্ম প্রচারণা করে এবং ধর্মান্তরিতদের মাঝে স্বাক্ষরতা উন্নয়ন করে।[62] ইংল্যান্ডের ওয়েসলেয়ান (পদ্ধতিবিদ) মিশনারি সোসাইটি ১৮১৭ সাল হতে সেখানে চার্চ ও বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা শুরু করে।[63]
২০০১ এর আদমশুমারি অনুসারে, খ্রিস্টান ধর্মই অ্যাঙ্গুইলার প্রধান ধর্ম, যার মধ্যে ২৯% জনসংখ্যা এ্যাংলিকেনিজম চর্চা করে; অন্য ২৩.৯% হলো মেথডিস্ট।[64] দ্বীপের অন্যান্য চার্চে সাত দিনের এডভেন্টিস, ব্যাপটিস্ট, রোমান ক্যাথোলিক (ডায়োসেস অফ সেইন্ট জন-ব্যাসেটেরে দ্বারা পরিবেশিত, দেখুন এন্টিগুয়া এবং বারবুডার সেইন্ট জন) অন্তর্ভুক্ত আছে।[65] এবং জিহোভাহ উইটনেসের একটি ক্ষুদ্র সম্প্রদায় আছে (০.৭%)। ১৯৯২ এবং ২০০১ এর মধ্যে, চার্চের ইশ্বর বিশ্বাসী ও পেনেকোস্টালের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পায়।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] দ্বীপটিতে কমপক্ষে ১৫ টি চার্চ রয়েছে। যদিও দ্বীপটিতে রাস্তাফারিয়ান ধর্মের লোক সংখ্যালঘু, তারপরও রবার্ট আথলায়ি রগার্সের জন্মস্থান হওয়াতে রাস্তাফারিয়ান ধর্মের অনুসারীদের জন্য অ্যাঙ্গুইলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ স্থান। রবার্ট আথলায়ি রগার্স হলেন পবিত্র গ্রন্থ পিবি এর রচয়িতা। রাস্তাফারিয়ান এবং আফ্রিকা কেন্দ্রিক বিশ্বাস রীতির ওপর পবিত্র পিবির শক্তিশালী প্রভাব রয়েছে।[66][67] খুব সম্প্রতি দ্বীপটিতে মুসলিম সংস্কৃতি কেন্দ্র খোলা হয়েছে।[68]
অ্যাঙ্গুইলার ধর্মসমূহ[69]
শতকরা হিসেবে
ধর্ম | ১৯৯২ | ২০০১ | ২০১১ |
---|---|---|---|
অ্যাঙ্গলিকান | ৪০.৪ | ২৯.০ | ২২.৭ |
মেথোডিস্ট | ৩৩.২ | ২৩.৯ | ১৯.৪ |
পেন্টেকোস্টাল | – | ৭.৭ | ১০.৫ |
সাত দিনের এডভেন্টিস্ট | ৭.০ | ৭.৬ | ৮.৩ |
ব্যপটিস্ট | ৪.৭ | ৭.৩ | ৭.১ |
ক্যাথোলিক | ৩.২ | ৫.৭ | ৬.৮ |
চার্চ অফ গড | – | ৭.৬ | ৪.৯ |
জিহোভাহ'র হুয়িটনেস | – | ০.৭ | ১.১ |
রাস্তাফারিয়ান | – | ০.৭ | |
ইভানগেলিকাল | – | ০.৫ | |
প্লাইমাউথ ব্লেথরেন | – | ০.৩ | ০.১ |
মুসলিম | – | ০.৩ | |
প্রেসবাইটেরিয়ান | – | ০.২ | ০.২ |
হিন্দু | – | ০.৪ | |
যিউশ | – | ০.১ | |
নেই | – | ৪.০ | ৪.৫ |
অন্যান্য | ১০.৭ | ৩.৫ | |
উত্তর দেয়নি | ০.৭ | ০.৩ |
অধিকাংশ অ্যাঙ্গুইলিয়ানরা ইংরেজ প্রভাবিত স্বাভাবিক ইংরেজিতে কথা বলে, দৈনিক অ্যাঙ্গুইলা স্যান্ডি গ্রাউন্ডে পর্যালোচনা করে এতথ্য জানায়।[70] অন্যান্য ভাষার মধ্যে স্প্যানিশ, চাইনিজ এবং অন্য অভিবাসী সম্প্রদায়ের ভাষাতেও দ্বীপটিতে কথা বলা হয়ে থাকে। সর্বোপরি, স্বাভাবিক ইংরেজির পরে সবচেয়ে প্রচলিত ভাষা হলো দ্বীপটির নিজস্ব ইংরেজি-লেক্সিফায়ার ক্রেয়োল ভাষা (অ্যান্টিলিয়ান ক্রেয়োল সম্বন্ধে দ্বিধাদ্বন্ধ না হয়ে ('ফ্রেঞ্চ ক্রেয়োল'), ফ্রেঞ্চ দ্বীপপুঞ্জে বলা হয়, যেমন- মার্টিনিক এবং গুয়াডেলোউক)।[71] এটি স্থানীয় শর্তে "উপভাষায়" উল্লেখিত হয়। (উচ্চারণ ডায়ালেক), অ্যাঙ্গুইলা কথা বা "অ্যাঙ্গুলিয়ান। এটির প্রধান মূল রয়েছে প্রাথমিক সময়ের ইংরেজি ও পশ্চিম আফ্রিকার বিচিত্র ভাষায়। এবং এই ভাষার গাঠনিক ধারা অনুসারে, এটি পূর্বদিকের ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের ইংরেজিভাষী উপভাষার মত।[72]
ভাষাবিদদের মধ্যে যারা অ্যাঙ্গুইলিয়ান ভাষা ও অন্যান্য ক্যারিবিয়ান ক্রেয়োল ভাষার আদিস্থান সম্পর্কে উৎসুক, তাঁরা খুজে পেয়েছে - এসব ভাষার ব্যাকরণগত গঠন আফ্রিকান ভাষার সাথে চিহ্নিত করা যায়। অন্যদিকে কিছু ভাষা ইউরোপিয়ান ভাষার সাথে চিহ্নিত করা যায়। ১৭১০ সালে জোরপূর্বক যাদের অভিবাসী করা হয়, তাঁদের তিনটি এলাকা গুরুত্বসহকারে চিহ্নিত করা হয়েছে উক্ত ভাষার মূল বের করতে: দ্য গোল্ড কোস্ট, দ্য স্লেভ কোস্ট এবং উইন্ডওয়ার্ড কোস্ট।[73]
অ্যাঙ্গুইলার তথ্যসংরক্ষানাগার হতে পাওয়া সামাজিক ঐতিহাসিক তথ্য অনুযায়ী ধারণা করা যায় যে আফ্রিকান ও ইউরোপিয়ান হতে দুটি স্বতন্ত্র ভাষা আসে। কিন্তু, সম্ভবত দ্বীপে উপনিবেশের প্রাথমিক দিকে একটি কথার সাথে আরেকটি ঢেকে বদলে যায়। অ্যাঙ্গুইলিয়ানরা" বিশ্বাস করে সময় পরিবর্তনের সাথে মানুষের ভাষা হারিয়ে যায়। দাসত্ব রহিত করা হয়েছিলো এবং স্থানীয়রা নিচেদেরকে অ্যাঙ্গুলিয়ান সমাজের অন্তর্গত দেখা শুরু করে।
অ্যাঙ্গুইলায় ছয়টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে, একটি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় (আলবেনা লেক হডজ কমপ্রিহেনসিভ স্কুল), এবং দুটি প্রাইভেট স্কুল রয়েছে।[74] সেখানে একটি মাত্র গ্রন্থাগার আছে, দ্য এডিসন এল. হাজস এডুকেশন এন্ড লাইব্রেরি কমপ্লেক্স অফ দ্য অ্যাঙ্গুইলা পাবলিক লাইব্রেরি।[75] অ্যাঙ্গুইলাই ২০১১ সালে সেইন্ট জেমস স্কুল অফ মেডিসিন এর একটি শাখা প্রতিষ্ঠিত হয়।[76] এটি বেসরকারি এবং ইলিনলস এর পার্ক রিডজ এর মেডিকেল স্কুলের সদরদপ্তর।[77]
দ্বীপটিতে ইউনিভার্সিটি অফ ওয়েস্ট ইন্ডজ এর একটি মুক্ত ক্যাম্পাস রয়েছে।[78]
এই দ্বীপের সাংস্কৃতিক ইতিহাস শুরু হয় স্থানীয় টেইনো, আরাওক ও ক্যারিব হতে। তাঁদের প্রত্নবস্তু সারা দ্বীপ জুড়ে দেখা মেলে, যা ইউরোপিয় বাসিন্দারা আসার আগে জীবনের কথা বলতো।[79]
দ্য অ্যাঙ্গুইলা ন্যাশনাল ট্রাস্ট (এএনটি) ১৯৮৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ১৯৯১ এর চলমান কার্যালয় চালু হয়। এটির দায়িত্ব থাকে দ্বীপটির ঐতিহ্য সংরক্ষণ করা, যেমন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য।[80] [তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
ক্যারিবিয়ান জুড়ে ছুটির দিন হলো সাংস্কৃতিক নির্দিষ্ট ব্যাপার। অ্যাঙ্গুইলার বেশিরভাগ গুরুত্বপূর্ণ ছুটির দিন হলো ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক গুরুত্বের - বিশেষ করে বন্ধন মুক্তির বার্ষিকী উদযাপন (আগে ছিলো পার্কে, আগস্টের সোমবার), গ্রীষ্মকালীন উৎসব হিসেবে উদযাপিত হতো, অথবা আনন্দমেলা।[81] ব্রিটিশ উৎসব সমূহ, রাণীর জন্মদিন পালিত হয়। [তথ্যসূত্র প্রয়োজন][82]
অ্যাঙ্গুইলার রান্নাবান্না মূলত স্থানীয় ক্যারিবিয়ান, আফ্রিকান, স্প্যানিশ এবং ইংরেজ রন্ধনপ্রণালী দ্বারা প্রভাবিত। সামুদ্রিক খাবার প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়, যার আছে প্রাউন, শিরিম্প, ক্রাব, স্পিনি, লবস্টার, কনচ, মাহি-মাহি, রেড স্নাপার, মার্লিন এবং গ্রোউপার।[83] নিজস্ব কায়দায় লবণ দিয়ে কডমাছ এখানকার প্রধান খাবার এবং এটি স্টিউস, ক্যাসেরোলস ও স্যুপে ব্যবহৃত হয়।[84] দ্বীপের আকার ক্ষুদ্র হওয়াতে পশুসম্পত্তি খুব কম এবং সেখানকার লোকজন পোল্ট্রি, শুকর, ছাগল, মুরগির মাংস এবং আমদানিকৃত গরুর মাংস খেয়ে থাকে। ছাগলের মাংস সেখানে খুব প্রচলিত খাবার যা দিয়ে বিভিন্ন রকম খাবার প্রস্তুত করে তাঁরা।[85] অ্যাঙ্গুইলার সবচেয়ে প্রচলিত খাবার হলো মটরশুটি এবং ভাত।[86]
দ্বীপের সীমাবদ্ধ জায়গা ও কৃষিকাজে সীমাবদ্ধতার কারণে প্রয়োজনীয় বেশির ভাগ সামগ্রী আমদানি করে আনতে হয়; অধিকাংশ মাচি বালুময় এবং অনুর্বর।[87] অ্যাঙ্গুইলায় কৃষিজ উৎপাদিত দ্রব্যের মধ্যে আছে টমেটো, মরিচ, চুন এবং অন্য কিছু লেবুসদৃশ সাইট্রাস ফল, পেঁয়াজ, রসুন, স্কোয়াশ সবজি, মটরশুটি এবং কলালু। শর্করা জাতীয় খাবার হলো আমদানিকৃত চাউল এবং অন্যান্য আমদানিকৃত খাবার বা স্থানীয় ভাবে উৎপাদিত, যার মাঝে আছে মিষ্টি আলু।[88]
অ্যাঙ্গুইলার লেখকদের উৎসাহিত করতে এবং দ্বীপের ইতিহাস সংরক্ষণের জন্য দ্য অ্যাঙ্গুইলা ন্যাশনাল ট্রাস্ট কার্যসূচির আয়োজন করে। ২০১৫ সালে, হাউজ অফ নেহেসি প্রকাশনী কর্তৃক প্রকাশিত লেখক লাসানা এম. সেকৌ রচিত হোয়ার আই সি দ্য সান - কনটেম্পোরারি পোয়েট্রি ইন অ্যাঙ্গুইলা এ নিউ এন্থোলজি প্রকাশিত হয়।[89] ৪৩ জন কবির মধ্যে রয়েছে রিটা সেলেস্টিন-কার্টি, বানকি ব্যানক্স, জন টি. হ্যারিংটন, প্যাটরিকা জে. এডামস, ফার্বিয়ান ফাহি, ড. অলুওকেমি লিন্ডা ব্যাঙ্কস এবং রিউয়েল বেন লেয়ি।[90]
ক্যারিবিয় বিভিন্ন সংগীত ক্ষেত্র দ্বীপটিতে জনপ্রিয়, যেমন রেজে, সোকা ও ক্যালিপসো।
অ্যাঙ্গুইলিয়ান সংস্কৃতিতে নৌকা চালনা খেলার গভীর সম্পর্ক আছে।[91] সেখানে নিয়মিত জাতীয় ছুটির দিনে পালতোলা নৌকা বাইচ আয়োজিত হয়, আনন্দমেলার মতো, এটি স্থানীয় তৈরি ও ডিজাইনকৃত নৌকা দ্বারা প্রতিদ্বন্ধিতা করা হয়। এসব নৌকার নাম রয়েছে এবং পৃষ্টপোষক রয়েছে, পৃষ্টপোষকেরা নৌকার পালে তাঁদের লোগো আঁকে।
প্রাক্তন ব্রিটিশ উপনিবেশন কালে ক্রিকেটও একটি জনপ্রিয় খেলা ছিলো। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট দলের খেলোয়ার ওমারি ব্যান্কসের বাড়ি এই অ্যাঙ্গুইলাতে। আবার ইংলিশ আঞ্চলিক হ্যাম্পশায়ারে প্রথম-শ্রেণির ক্রিকেট খেলতেন কার্ডিগান কনর, যিনি ২০০২ সালের অ্যাঙ্গুইলিয়ান কমনওয়েলথ গেমস দল 'চীফ ডি মিশন' (দলীয় প্রধান) ছিলেন। অন্যান্য বিখ্যাত খেলোয়ারদের মাঝে আছে ছেসনেই হিউজস, যিনি ইংল্যান্ডের ডার্বিশায়ার কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাবে ক্রিকেট খেলতেন।
অ্যাঙ্গুইলা ইয়েলস আরএফসি এর মাধ্যমে রাগবি ইউনিয়ন অ্যাঙ্গুইলাতে প্রতিনিধিত্ব করে। সেইন্ট মার্টিন টুর্নামেন্টে দ্য ইয়েলস ২০০৬ এর নভেম্বরে ফাইনাল নিশ্চিত করে এবং সেমি-ফাইনাল ২০০৭, ২০০৮, ২০০৯ ও ২০১০ এ চ্যাম্পিয়নশিপ নিশ্চিত করে।[92] ২০০৬ সালে স্কটিশ জাতীয় ক্লাবের দ্বিতীয় সারির মার্টিন ওয়েলস, ক্লাব স্পনসর ও এইআরএফস এর সভাপতি জনাব জ্যাকি রুয়ান এবং কানাডিয়ান মার্ক হ্যারিসকে নিয়ে দ্য ইয়েলস গঠিত হয় (টরোন্টো স্কটিশ আরএফসি)।
বিখ্যাত স্প্রিন্টার ঝার্নেল হিউজস এর জন্মস্থান অ্যাঙ্গুইলাতে। তিনি ২০১৫ হতে গ্রেট ব্রিটেনের প্রতিনিধিত্ব করছেন এবং ২০১৮-তে অনুষ্ঠিত কমনওয়েলথ গেমসে ইংল্যান্ডের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ২০১৮ তে ইউরোপিয় এথলেটিকস চ্যাম্পিয়নশীপে তিনি ১০০ মিটার দৌড়ে জয় লাভ করেন এবং একই চ্যাম্পিয়নশীপে ৪ x ১০০ মিটার দৌড়েও জেতেন। এছাড়া ২০১৮ তে কমনওয়েলথ গেমসে ইংল্যান্ডের হয়ে ৪ x ১০০ মিটার প্রতিযোগিতাও জেতেন। তিনি ২০২০ অলিম্পিক গেমসে গ্রেট ব্রিটেনর হয়ে একটি রৌপ্য মেডেলও জয় লাভ করেন।[93]
বেইজিং এর ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশীপে ব্রিটিশের হয়ে দীর্ঘ লাফে রৌপ্য মেডেল জেতা শারা প্রক্টর ২০১০ এর আগ পর্যন্ত অ্যাঙ্গুইলার হয়ে প্রতিনিধিত্ব করতো, ২০১০ সাল হতে তিনি গ্রেট ব্রিটেন ও ইংল্যান্ডের প্রতিনিধিত্ব করেন। অ্যাঙ্গুইলিয়ান পতাকা হাতেও তিনি কিছু মেডেল জয় লাভ করেন নাসাস গেমসে।[94]
কেইথ কনর, একজন ট্রিপল জাম্পার, তিনিও একজন অ্যাঙ্গুইলিয়ান। তিনি গ্রেট ব্রিটেন ও ইংল্যান্ডের প্রতিনিধিত্ব করে কতিপয় আন্তর্জাতি ক্ষেত্র যেমন কমনওয়েলথ এবং ইউরোপিয় গেমসে স্বর্ন মেডেল জয় লাভ করেন, এছাড়া কমনওয়েলথ গেমসে ব্রোঞ্জ মেডেল পান। পরবর্তীতে অস্ট্রেলিয়ান এথলেটিকসের প্রধান কোচ হন কেইথ কনর।[95]
অ্যাঙ্গুইলায় কিউবান গেছো ব্যাঙের আবাস রয়েছে (ওস্টেওপাইলাস সেপটেনট্রিওনালিস)।[96] লাল পেয়ে কচ্ছপের (ছেলোনয়িডিস কার্বোনারিয়া) প্রজাতি এখানে পাওয়া যায়, যা প্রকৃতভাবে দক্ষিণ আমেরিকা হতে এসেছে।[97] ৯০ শতকের মাঝামাঝি হারিকেনের জলের চাপে কারণে সবুজ ইগুয়ানাস (ইগুয়ানা ইগুয়ানা) আসে অ্যাঙ্গুইলায়।[98]
পাঁচ প্রজাতির বাদুড় উল্লেখ আছে অ্যাঙ্গুইলার সাহিত্যে - এক ডানার ভয়ঙ্কর দ্বীপ বাদুড় (মনোফাইলাস প্লেথোডন), এন্টিলিয়ান ফল-খেকো বাদুড় (ব্রাসিফাইলা ক্যাভারনারাম), জ্যামাইকান ফল বাদুড় (আর্টিবিউস জ্যামাইসেনসিস), মেক্সিকান চোঙ-কানের বাদুড় এবং মখমলে খোলা-লেজের বাদুড় (মলোসাস মলোসাস)।[99]
অ্যাঙ্গুইলার মাটি কৃষিকাজের জন্য অনুপযুক্ত এবং ২০১৯ সালে অ্যাঙ্গুইলার রপ্তানির হার খুবই সামান্য ছিলো। দ্বীপটিতে খুবই অল্প ভূমি-ভিত্তিক প্রাকৃতিক সম্পদ রয়েছে।[100] এখানে প্রধান ব্যবস্যা হলো পর্যটন, সমুদ্র সম্বন্ধীয় সংস্থা ও ব্যাংকিং, বীমা ও মাছ ধরা।[101]
অ্যাঙ্গুইলার মুদ্রা হলো পূর্ব ক্যারিবিয়ার ডলার, যদিও আমেরিকান ডলারও সেখানে প্রচুর চলন আছে।[103] যার বিনিময় হার ইউএস $১= ইসি $২.৭০
অর্থনৈতিক অবস্থা বিশেষ করে পর্যটন খাত ১৯৯৫ সালের শেষদিকে বিপত্তি পড়ে, সেপ্টেম্বরের হারিকেন লুইসের কারণে। হোটেলগুলোতে খুব ক্ষয়সাধিত হয় এবং সবকিছু পুনরুদ্ধার করা হয় ঐ বছরই। আরো একটি অর্থনৈতিক বিপর্যয় ঘটে ২০০০ সালের হারিকেন লেনির পরে।[104] ২০০৮ সালে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক সংকটের পূর্বেও অ্যাঙ্গুইলায় দারুণভাবে উন্নয়ন বাড়ছিলো, বিশেষত পর্যটন খাতে, যা বহুজাতিক কোম্পানিসমূহের সাথে বড় ধরনের উন্নয়নে অংশীদারত্ব চালনা করছিলো। অ্যাঙ্গুইলার পর্যটন খাতে দারুণভাবে প্রচারিত ও উন্নয়নসাধিত হয় যখন ২০১৪ সালে ওয়ার্ল্ড ট্রাভেল অ্যাওয়ার্ড কর্তৃক এটি স্বাগতিক দেশ হিসেবে নির্বাচন করা হয়। " পর্যটন শিল্পের অস্কার" নামে পরিচিত এ পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান কুইসিন আর্ট রিসোর্ট ও স্পা তে অনুষ্ঠিত হয় এবং ভিভিকা এ. ফক্স. এর মাধ্যমে স্বাগত করা হয়েছিলো। সেন্ট বার্টস, মালদ্বীপ এবং মরিশাসের মতো শীর্ষ-স্তরের প্রার্থীদের একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা থেকে অ্যাঙ্গুইলাকে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় বিলাসবহুল দ্বীপের গন্তব্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিল।[105]
অ্যাঙ্গুইলার অর্থনৈতিক পদ্ধতি সাতটি ব্যাংকের সমন্বয়ে গঠিত,[106] দুইটি অর্থ সেবাদানকারী ব্যবসা, ৪০ টির বেশি কোম্পানি ম্যানেজার, ৫০ এর বেশি বীমা কারী, ১২ দালাল, ২৫০ এর বেশি মধ্যস্থতাকারী, ৫০ এর বেশি পারস্পরিক ফান্ড এবং আটটি ট্রাস্ট কোম্পানি।[107]
অ্যাঙ্গুইলা একটি জনপ্রিয় ট্যাক্স হ্যাভেন হয়ে উঠেছে, কোনো মূলধন লাভ, প্রতিপত্তি, লাভ, বিক্রয় বা কর্পোরেট কর নেই। ২০১১ এর এপ্রিলে এ দ্বীপরাষ্ট্র ব্যাপক ঘাটতির সম্মুখীন হয়, এটা ৩% " ইনটেরিম স্টাবিলাজেশন লেভি" এর সাথে পরিচিত করে, যা অ্যাঙ্গুইলার প্রথমবারেররমত আয়ের ওপর কর নির্ধারণ। অ্যাঙ্গুইলাই ০.৭৫% সম্পত্তি করও রয়েছে।[108]
প্রচুর ব্যয়ে আমদানিকৃত ডিজেলের ওপর নির্ভরতা কমাতে অ্যাঙ্গুইলা ব্যবহৃত শক্তির ১৫% সৌর শক্তি হতে অর্জনের লক্ষ্যরস্থির করেছে। এ অঞ্চলের ব্যবস্থাপনা পরিবর্তনের জন্য দ্য ক্লাইমেট এন্ড ডেভলপমেন্ট নলেজ নেটওয়ার্ক অ্যাঙ্গুইলার সরকারকে তথ্য সংগ্রহে সাহায্য করছে, যাতে করে দ্বীপটি তাঁর গ্রিডে নবায়নযোগ্য শক্তি যোগ করতে পারে।[109] বার্বাডোস নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহারে ভালো এগিয়েছে, কিন্তু অন্যান্য অনেক ছোট উন্নয়নশীল দ্বীপ রাষ্ট্র তাঁদের গ্রিডে নবায়নযোগ্য শক্তি উৎপাদন পরিকল্পনার প্রাথমিক ধাপে রয়েছে। অ্যাঙ্গুইলা নবায়নযোগ্য শক্তি অফিসের সমন্বয়কারী বেথ ব্যারী বলেছেন, "ছোট্ট একটি দ্বীপরাষ্ট্র হিসেবে আমরা বেশ ভালো এগিয়েছি। আমরা শক্তি নীতি ও জলবায়ু নীতি করেছি এবং কতিপয় বছর যাবৎ টেকসই শক্তি সরবরাহ প্রশ্নে আমাদের প্রচেষ্টা জোরদার করেছি। এই কারণে, এ বিষয়ে আমাদের কাছে প্রচুর তথ্য রয়েছে, যা অন্যান্য দ্বীপের সাথে ভাগ করে নিতে পারি।[110]
ক্লেইটন জে. লাইওড ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট (৪ জুলাই ২০১০ পর্যন্ত ওয়ালব্রেক এয়ারপোর্ট নামে পরিচিত) অ্যাঙ্গুইলায় সেবা প্রদান করে থাকে। বিমানবন্দরটিতে ৫,৪৬২ ফুট (১৬৬৫ মিটার) দৈর্ঘ্য প্রাথমিক রানওয়ে রয়েছে এবং মাঝারি আকারের বিমান চলাচল করতে পারে। স্থানীয় এয়ারলাইনের মাধ্যমে অঞ্চলভিত্তিক তালিকভুক্ত যাত্রী সেবা অন্যান্য ক্যারিবিয়ান দ্বীপের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করতে পারে।
২০২১ এর ডিসেম্বরে অ্যাঙ্গুইলা প্রথম আন্তর্জাতিক নিয়মিত জেট সেবা উদ্বোধন করে। আমেরিকান এয়ারলাইনসের পক্ষে ইউএস আমেরিকান ইগল মূলভূমি হতে নিয়মিত একটানা এমব্রেয়ার ১৭৫ আঞ্চলিক জেট সেবা অ্যাঙ্গুইলা হতে মিয়ামি[111] চালু করে, যখন অ্যাঙ্গুইলা অন্যান্য আন্তর্জাতিক বিমান বাহকদে আকৃষ্ট করার প্রচেষ্টা করছে।
অন্য বিমানপথের মধ্যে ট্রেডউইন্ড এভিয়েশন ও কেপ এয়ার বর্তমানে সেবা দিচ্ছে যাদের কর্মসূচি থাকে সান জুয়ান, পুয়েট্রো রিকো তে। অন্যান্য কিছু ছোট এয়ারলাইস ও সেখানে সেবা দিয়ে থাকে।
বিমানবন্দরটি বড়ধরনের সরু-আকারের জেট যেমন- বোয়িং ৭৩৭ এবং এয়ারবাস ৩২০ ও ধারণ করতে পারে। এবং একটি নতুন বেসরকারি জেট টার্মিনাল নির্মাণের সাথে বেসরকারি জেট সেবাও বাড়ছে।
ট্যাক্সি ছাড়া দ্বীপটিতে জনসাধারণের জন্য অন্য কোনো পাবলিক ট্রান্সপোর্ট নেই। রাস্তার বাম পাশ দিয়ে গাড়ি চলাচল করে।
সেইন্ট মার্টিন হতে অ্যাঙ্গুইলায় নিয়মিত ফেরি চলাচল করে। সেন্ট মার্টিনের ম্যারিগোটরহতে অ্যাঙ্গুইলার ব্লোয়িং পয়েন্টে যেতে সময় লাগে প্রায় বিশ মিনিট। ফেরি চলাচল আরম্ভ হয় সকাল ৭:০০ টায়। অ্যাঙ্গুইলার ব্লোয়িং পয়েন্ট হতে প্রিন্সেস জুলিয়ানা বিমানবন্দরে ভ্রমণ সহজ করতে সেখানে সনদ সেবাও রয়েছে। অ্যাঙ্গুইলা ও সেন্ট মার্টিনের মাঝে ভ্রমণ করার জন্য এটিই খুব পরিচিত উপায়।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.