Loading AI tools
বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের ব্যারিষ্টার উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
ব্যারিস্টার সারা হোসেন (জন্ম: ১৯৬৩) একজন বাংলাদেশী আইনজীবী, যিনি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টে ওকালতি করেন। তার সময়ের ৭০ ভাগ ব্যয়িত হয় জনস্বার্থে ও মানবধিকার সংক্রান্ত মামলা-মোকদ্দমা পরিচালনায়। তিনি বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের (ব্লাস্ট) অবৈতনিক নির্বাহী পরিচালক হিসাবে কর্মরত। তিনি ইসলামী ফতোয়া মোতাবেক শাস্তি প্রদানের বিরোধী।
ব্যারিস্টার সারা হোসেন | |
---|---|
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
মাতৃশিক্ষায়তন | অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় |
পেশা | আইনজীবী |
দাম্পত্য সঙ্গী | ডেভিড বার্গম্যান |
পিতা-মাতা | কামাল হোসেন, হামিদা হোসেন |
তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কর্তৃক ঘোষিত ২০১৬ সালে আন্তর্জাতিক সাহসী নারী পুরস্কার প্রাপ্তদের মধ্যে অন্যতম।[1] সারা হোসেন নারীর প্রতি সহিংসতা বিষয়ে বাংলাদেশের প্রথম বিস্তৃত আইন গঠনের ক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছিলেন, যা ২০১০ সালে আইনে পরিণত হয় [Domestic Violence (Prevention and Protection) Act ২০১০] Act)]। তিনি ফতোয়া সহিংসতার চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্যে পরিচিতি অর্জন করেন। যেখানে মহিলা এবং মেয়েদের অবজ্ঞাপূর্ণ ও সহিংস শাস্তি দেওয়ার জন্য ফতোয়া জারি করা হওয়ার কথা তিনি বলেছেন ।[2] তিনি ধর্ষণ এবং যৌন হামলায় শিকার নারীদের আইনগত মামলায় দুই আঙুল পরীক্ষার পদ্ধতির বিরোধিতা করেন। সারা 'সম্মান': লিন ওয়েলচম্যানের সাথে মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধ, দৃষ্টান্ত এবং সহিংসতা সহ-সম্পাদনা করেন।[3]
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালে পাকিস্তান থেকে মুক্ত হওয়ার পর লণ্ডন-দিল্লী হয়ে ১০ জানুয়ারী সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে এসেছিলেন। ৮ জানুয়ারী ১৯৭১ পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের রাওয়ালপিণ্ডী থেকে লণ্ডনগামী বিশেষ ফ্লাইটে তার সহযাত্রী ছিলেন কিশোরী সারা হোসেন।
সৈয়দা সারা হোসেন বরিশালের শায়েস্তাবাদের একটি সম্ভ্রান্ত বাঙ্গালী মোসলমান জমিদার খান্দানে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা কামাল হোসেন ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম আইনমন্ত্রী, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং কলকাতার সৈয়দ আশরফ হোসেনের ফরজন্দ। তাঁর পরদাদা সৈয়দ সাদত হোসেন সাদু মিঞা বিয়ে করেছিলেন শায়েস্তাবাদের নবাব খান বাহাদুর মীর মোয়াজ্জেম হোসেনের মেয়ে নবাবজাদী সৈয়দা সালেহা খাঁতুনকে।[4] তাঁর দাদা সৈয়দ আহাম্মদ হোসেন ছিলেন কলকাতার একজন চিকিৎসক এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহ্রাওয়ার্দীর আত্মীয়।[5] মানবাধিকার কর্মী ও শিক্ষাবিদ হামিদা হোসেন তার মা।[6]
সারা ১৯৮৮ সালে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনশাস্ত্রে স্নাতক (অনার্স) ডিগ্রি অর্জন করেন এবং অনারেবল সোসাইটি অফ মিডল টেম্পল থেকে কলড টু দ্যা বার হবার মাধ্যমে ব্যারিস্টার-অ্যাট-ল সনদ লাভ করেন।[7] তিনি ১৯৯২ সালে বাংলাদেশের সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের এবং ২০০৮ সালে আপিল বিভাগের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন।সারা ১৯৯৭ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত দক্ষিণ এশিয়া বিভাগে ইন্টারাইটস সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক এনজিও তে আইন কর্মকর্তা হিসাবেও কাজ করেছিলেন। আন্তর্জাতিক ও তুলনামূলক মানবাধিকার আইনের ব্যবহার সম্পর্কিত মানবাধিকার ইউরোপীয় আদালত এবং হিউম্যান রাইটস সম্পর্কিত আন্ত-আমেরিকান কমিশন এবং মানবাধিকার কমিটি সহ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক আদালতের সামনে মানবাধিকার মামলা মোকদ্দমার সমর্থন করা। তিনি এসওএএস-এর ইসলামিক ও মধ্য প্রাচ্যের আইন কেন্দ্রের সাথে সম্মানের অপরাধ সম্পর্কিত একাধিক দেশীয় গবেষণায়ও কাজ করেছিলেন। [8] বাংলাদেশের সংবিধান প্রণেতাদের একজন ও আইনজীবী ডক্টর কামাল হোসেন এর আইনসেবা দানকারী ফার্ম ড. কামাল হোসেন অ্যাণ্ড এসোসিয়েটস এর একজন অংশীদার হলেন সারা।[7]
জুলাই ২০১৮ সালে, জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল ইসরাইলি সেনাবাহিনী কর্তৃক কমপক্ষে ১৪০ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যার তদন্তের জন্য তিন সদস্যের তদন্ত কমিশনে (ডেভিড ক্রেন এবং কারি বেটি মুরঙ্গির পাশাপাশি) সভাপতি হিসেবে সারাকে নিয়োগ দেয়া হয়।[9]
ব্লাস্ট ছাড়াও সারা ঢাকা ভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা আইন-ও-সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। পূর্বে তিনি দক্ষিণ এশিয়া মহিলা তহবিলের (এসএইচএফ) বোর্ডের সদস্য ছিলেন। হোসেন আন্তর্জাতিক আইন কমিশন (আইসিজে) এর কমিশনার হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি বর্তমানে আন্তর্জাতিক আইন সমিতি (আইএলএ) এর মানবাধিকার কমিটির সদস্য এবং জেন্ডার জাস্টিস অন উইমেন ইন্টারন্যাশনাল কোয়ালিশনের (ডব্লিউআইসিজি) উপদেষ্টা কমিটির সদস্য, হোসেন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার অঙ্গনের একজন পরিচিত ব্যক্তি।
২০১৬ সালে, "মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি" সারাকে নিরলস আইনজীবী হিসেবে বাংলাদেশে নির্বোধকে কণ্ঠ দেওয়ার জন্য "মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি দ্বারা আন্তর্জাতিক নারী সাহসী পুরস্কার পেয়েছিলেন।" [10] ২০০৮ সালে সারা ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম "ইয়ং গ্লোবাল লিডার" হিসাবে সারাকে ভূষিত হন। [11] এবং ২০০৭ সালে আমেরিকা নিউইয়র্ক, দ্য এশিয়া সোসাইটি দ্বারা "এশিয়া ২১ ফেলো" হন। [12] সারা ২০০৫ সালে হিউম্যান রাইটস আইনজীবী পুরস্কার হিসাবে অনন্যা শীর্ষ দশ পুরস্কার পেয়েছিলেন। শীর্ষস্থানীয় মহিলা পুরস্কার আইনজীবী কমিটি ফর হিউম্যান রাইটস (বর্তমানে মানবাধিকার প্রথম)।
সারা বাংলাদেশের রাজনীতিবিদ ও সংবিধান লেখক ডঃ কামাল হোসেনের মেয়ে। কামাল ১৯৯২ সালে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশের রাজনৈতিক দল গণফোরামের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সারা ব্রিটিশ মানবাধিকার কর্মী ডেভিড বার্গম্যানের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তিনি বাংলাদেশে অবস্থিত যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্তকারী সাংবাদিক। তিনি বাংলাদেশের ইংরেজি দৈনিক নিউজ এজ -এর প্রতিবেদক হিসেবে কাজ করেন। বার্গম্যান বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত যুদ্ধাপরাধের প্রতিবেদনের জন্য খ্যাতি পান।.[13][14][15][16]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.